রাজধানীর কামরাঙ্গীরচরে কিশোরদের ধারালো অস্ত্রের আঘাতে সানোয়ার হোসেন (১৮) নামের এক যুবক নিহত হয়েছেন।
আচারওয়ালার ঘাট এলাকায় সোমবার রাত ৮টার দিকে কোপে আহত সানোয়ারের মৃত্যু হয় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে।
সানোয়ার কামরাঙ্গীরচরের বাঁশতলা এলাকায় জাবেদ নামের একজনের বাড়িতে পরিবারের সঙ্গে ভাড়া থাকতেন। তার বাবার নাম ওমর চান। দুই ভাইয়ের মধ্যে সানোয়ার ছিলেন বড়।
পরিবারের সদস্য ও পুলিশের কাছ থেকে জানা যায়, রাতে আচারওয়ালার ঘাট এলাকা দিয়ে যাওয়ার পথে ১৫ থেকে ২০ কিশোর সানোয়ারের পথ রোধ করে। কিছু বুঝে ওঠার আগেই ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে জখম করে তাকে রাস্তায় ফেলে রেখে যায় কিশোররা।
স্থানীয় লোকজনের কাছ থেকে খবর পেয়ে সানোয়ারের বাবাসহ স্বজনরা দ্রুত ঘটনাস্থলে যান। পরে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে তাকে ঢামেক হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে যান তারা। সেখানে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
নিহতের চাচা সোহেল মিয়া নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমার ভাতিজা মাস্কের ব্যবসা করে। সে রাতে কেন ওখানে যায়, এটা আমরা বলতে পারব না। কিন্তু যারা হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে তাদের নাম বলতে পারব না। তারা ওই এলাকার চিহ্নিত।
‘যারা ওকে উদ্ধার করে নিয়ে এসেছেন তারাই বলতে পারবে এই ঘটনার সাথে কারা জড়িত। তারা যে কেউ হোক না কেন, যে দলেরই হোক, আমরা এই হত্যাকাণ্ডের বিচার চাই।’
ঢামেক পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ বাচ্চু মিয়া জানান, যারা ভুক্তভোগীকে ঢামেকে নিয়ে আসে, তাদের মধ্যে ছয়জনকে আটক করা হয়েছে। বিষয়টি কামরাঙ্গীরচর থানাকে অবগত করা হয়েছে। সানোয়ারের মরদেহ জরুরি বিভাগের মর্গে রাখা হয়েছে।
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় সাজা বাড়িয়ে হাইকোর্টের দেওয়া ১০ বছরের কারাদণ্ডের বিরুদ্ধে বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার আপিলের ওপর শুনানি শেষ হয়েছে।
আদালত বুধবার রায় ঘোষণার জন্য দিন ঠিক করেছে।
প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে আপিল বিভাগের বেঞ্চ আজ আপিলের শুনানি শেষে রায় ঘোষণার জন্য দিন ঠিক করে আদেশ দেন।
আদালতে বেগম খালেদা জিয়ার পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়নুল আবেদীন, ব্যারিস্টার এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন, ব্যারিস্টার বদরুদ্দোজা বাদল, ব্যারিস্টার মো. রুহুল কুদ্দুস কাজল ও ব্যারিস্টার কায়সার কামাল। এ ছাড়াও বেগম খালেদা জিয়ার পক্ষে বিপুলসংখ্যক আইনজীবী আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান, অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মোহাম্মদ আরশাদুর রউফ ও অনিক আর হক। আর দুদকের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মো. আসিফ হাসান।
আপিল শুনানিতে খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা সর্বোচ্চ আদালতকে জানান, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট গঠনের ক্ষেত্রে খালেদা জিয়া সই-স্বাক্ষর করেছেন, এমন কোনো নথি প্রসিকিউশন দেখাতে পারেনি। আর টাকা কোথা থেকে এসেছে, তাও দেখাতে পারেনি। আর যে অর্থ আত্মসাৎ বলা হয়েছে, তা ব্যাংক হিসাবে রক্ষিত আছে এবং সেই টাকা সেখানে অনেক বেড়েছে।
তারা জানান, এ মামলার বিচারে সংবিধান ও আইন অনুসরণ করা হয়নি। মামলাটি আইনগত, মৌখিক, এমনকি শোনা সাক্ষ্য-প্রমাণহীন। সর্বোপরি অনুমাননির্ভর ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এ মামলায় খালেদা জিয়াসহ অন্যদের সাজা দেওয়া হয়েছে।
জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়নুল আবেদীনসহ শুনানিতে অংশ নেওয়া আইনজীবীরা মামলায় খালেদা জিয়া খালাস পাবেন বলে আশা প্রকাশ করেন।
ফৌজদারি কার্যবিধির ৩৪২ ধারায় বিচারিক আদালতে খালেদা জিয়ার জবানবন্দি সর্বোচ্চ আদালতের শুনানিতে পড়ে শোনাতে গিয়ে কেঁদে ফেলেন ব্যারিস্টার কায়সার কামাল।
ওই সময় আদালতে পিনপতন নীরবতায় উপস্থিত অনেক আইনজীবীকেও আবেগাপ্লুত হতে দেখা যায়।
এর আগে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে বেগম খালেদা জিয়ার করা লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে করা আবেদন) গত ১১ নভেম্বর মঞ্জুর করে ১০ বছরের কারাদণ্ড স্থগিতের আদেশ দেন বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলামের নেতৃত্বাধীন তিন বিচারপতির আপিল বিভাগ।
শুনানিতে দুদকের আইনজীবী মো. আসিফ হাসান আদালতকে বলেছিলেন, ‘জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টের টাকা কিন্তু আত্মসাৎ হয়নি। জাস্ট ফান্ডটা মুভ হয়েছে। তবে সুদে আসলে অ্যাকাউন্টেই টাকাটা জমা আছে। কোনো টাকাটা ব্যয় হয়নি।’
অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান এ মামলায় খালেদা জিয়ার দেওয়া ৩৪২ ধারায় বক্তব্য তুলে ধরে সর্বোচ্চ আদালতকে বলেন, ‘কবি কাজী নজরুল ইসলামের সেই রাজবন্দির জবানবন্দির প্রতিফলন বেগম খালেদা জিয়ার বক্তব্যে উঠে এসেছে। আর খালেদা জিয়া প্রধানমন্ত্রীর এতিম তহবিল সংক্রান্ত কোনো অনুদান গ্রহণ বা বিতরণের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন না বলা হয়েছে।’
বিগত শেখ হাসিনা সরকারের সময়ে ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি বকশীবাজারে কারা অধিদপ্তরের প্যারেড গ্রাউন্ডে স্থাপিত ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫-এর বিচারক ড. মো. আখতারুজ্জামান জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় বেগম খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেন। একই সঙ্গে খালেদা জিয়ার ছেলে ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, মাগুরার সাবেক এমপি কাজী সালিমুল হক কামাল, ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ, ড. কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী ও মমিনুর রহমানকে ১০ বছর করে কারাদণ্ড দেন আদালত।
একই বছরে ২৮ মার্চ খালেদা জিয়ার সাজা বৃদ্ধি চেয়ে দুদকের করা আবেদনে রুল জারি করেন হাইকোর্ট। এরপর সাজা বৃদ্ধিতে দুদকের আবেদনে জারি করা রুল যথাযথ ঘোষণা করে ২০১৮ সালের ৩০ অক্টোবর বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত একটি হাইকোর্ট ডিভিশন বেঞ্চ খালেদা জিয়ার সাজা পাঁচ বছর থেকে বাড়িয়ে ১০ বছর করেন।
শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের পতনের পর জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার দণ্ড মওকুফ করেছেন রাষ্ট্রপতি।
রাষ্ট্রপতির এ ক্ষমার পরেও মামলা দুটি আইনগতভাবে লড়ার কথা জানিয়ে বিএনপির আইনজীবীরা বলেন, বেগম খালেদা জিয়া আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। রাষ্ট্রপতি তার সাজা মওকুফ করেছেন। তবে সেখানে ক্ষমার কথা আছে। খালেদা জিয়া ক্ষমার প্রতি বিশ্বাসী নন। তিনি অপরাধ করেননি; তিনি ক্ষমাও চাননি। তাই এটা আইনগতভাবে মোকাবিলা করবেন।
আরও পড়ুন:দেশের বৃহত্তর স্বার্থে চলতি বছরের আগস্টের মধ্যে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজন করতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছে বিএনপি।
দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘আমরা মনে করি এ বছরের মাঝামাঝি সময়ে নির্বাচন আয়োজন করা সম্ভব।’
দলটির স্থায়ী কমিটির বৈঠকের পরের দিন মঙ্গলবার সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ দাবির কথা জানান।
এর আগে সোমবার রাতে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠকে অংশ নেন নেতারা।
চলতি বছরের মাঝামাঝি সময়ে নির্বাচন আয়োজনে পদক্ষেপ নিতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার, নির্বাচন কমিশন ও রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি আহ্বান জানান ফখরুল।
তিনি বলেন, ‘আমরা মনে করি, যেহেতু নির্বাচন কমিশন গঠন করা হয়েছে এবং প্রশাসনে আপেক্ষিক স্থিতিশীলতা ফিরে এসেছে, তাই নির্বাচন পেছানোর কোনো কারণ নেই।’
বিএনপির বর্ষীয়ান এ রাজনীতিক বলেন, সরকার গঠিত নির্বাচন সংস্কার কমিশনও বুধবার তাদের প্রতিবেদন উপস্থাপন করবে।
ফখরুল বলেন, ‘তাই নির্বাচন পেছানোর কোনো যৌক্তিকতা আছে বলে আমরা মনে করি না। যত বিলম্ব হবে, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংকট তত গভীর হবে।’
বিএনপি মহাসচিব আরও বলেন, তারা দীর্ঘদিন ধরে বলে আসছেন যে, নির্বাচিত সরকারের কোনো বিকল্প নেই। কারণ এটি গণতন্ত্রের ভিত্তি।
আরও পড়ুন:ঝিনাইদহ ক্যাডেট কলেজের প্রাক্তন ক্যাডেটদের সংগঠন ঝিনাইদহ এক্স ক্যাডেটস অ্যাসোসিয়েশনের (জেক্সকা) দেশের বিভিন্ন স্থানে মাসব্যাপী কম্বল বিতরণ কার্যক্রমের সমাপনী দিন ছিল সোমবার।
ওই দিন দুপুর ১২টার দিকে রাজধানীর মোহাম্মদপুরে পথশিশুদের শিক্ষাঙ্গন ‘ছায়াতল বাংলাদেশ’-এ প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল মামুনের সভাপতিতে দুই শতাধিক পথশিশু শিক্ষার্থীর মাঝে কম্বল বিতরণ করা হয়।
কম্বল বিতরণ করেন জেক্সকার প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক বোরহান উদ্দিন খান, ভাইস প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক ডা. আবুল বাশার, খুরশিদ আল মেহের, জেনারেল সেক্রেটারি গালিব মোহাম্মদ, ডেপুটি জেনারেল সেক্রেটারি সাব্বির আহমেদ, কালচারাল সেক্রেটারি ডা. বাপ্পা ঘোষ শাওনসহ সংশ্লিষ্টরা।
অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন ছায়াতলের প্রতিষ্ঠাতা বি এম সোহেল রানা।
জেক্সকা সম্প্রতি ঝিনাইদহ, যশোর, চুয়াডাঙ্গা, খুলনা ও ঢাকা শহরের বিভিন্ন এলাকায় দুই হাজার দুস্থ ও অসহায় মানুষের মধ্যে কম্বল বিতরণ করে।
আরও পড়ুন:
বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির নেতারা স্থানীয় সরকার নির্বাচন নিয়ে আলোচনাকে জাতীয় নির্বাচনের সময়ক্ষেপণ মনে করছেন বলে জানিয়েছে বাসস।
বৈঠক সংশ্লিষ্ট একটি সূত্রের বরাত দিয়ে মঙ্গলবার এ তথ্য জানায় রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থাটি।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির জরুরি বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয় সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত।
গুলশানে দলের চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত ওই বৈঠকে লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে সভাপতিত্ব করেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
বৈঠকে আলোচনার বিষয়ে সূত্রের বরাত দিয়ে বাসস জানায়, বর্তমানে স্থানীয় সরকার নির্বাচনের যে আলোচনা বা চিন্তা, সেটি জাতীয় নির্বাচনের সময়ক্ষেপণ বলে বৈঠকে আলোচনায় নেতারা মত প্রকাশ করেন। তাদের মতে, অন্তর্বর্তী সরকারের উচিত স্থানীয় সরকার নির্বাচনের চিন্তা বাদ দিয়ে জনআকাঙ্ক্ষা অনুযায়ী চলতি বছরের মাঝামাঝিতেই জাতীয় নির্বাচনের ব্যবস্থা করা এবং এর সকল আয়োজন সম্পন্ন করা।
ওই সূত্র আরও জানায়, বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে বিএনপি নেতারা সভা-সেমিনারের মধ্য দিয়ে নির্বাচনের এ দাবিকে শিগগিরই সামনে নিয়ে আসবেন।
চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের মাঝপথে এসে শতাধিক পণ্য ও সেবার ওপর মূল্য সংযোজন কর (মূসক) বা ভ্যাট এবং সম্পূরক শুল্ক বাড়িয়েছে সরকার। গত বৃহস্পতিবার রাতে এ সংক্রান্ত দুটি অধ্যাদেশ জারি করা হয়।
বৈঠকে এ ভ্যাট এবং ট্যাক্স বৃদ্ধির ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করা হয়েছে বলে জানিয়েছে সূত্রটি।
বিএনপি নেতারা মনে করেন, রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় কোনো নির্বাচিত সরকার থাকলে তারা কোনোভাবে জনগণের দুর্ভোগ বাড়ানোর কারণ হয়ে দাঁড়াত না। তারা জনঘনিষ্ঠ এবং দৈনন্দিন জীবনের সঙ্গে সম্পৃক্ত পণ্যে এভাবে ভ্যাট-ট্যাক্স বাড়াত না।
স্থায়ী কমিটির বৈঠকের বিষয়ে বিস্তারিত জানাতে সংবাদ সম্মেলন ডেকেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে মঙ্গলবার দুপুরে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে।
বৈঠকে যুক্তরাজ্যে চিকিৎসারত বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার চিকিৎসা ও তার শারীরিক অবস্থা নিয়ে পর্যালোচনা করা হয়। দলের চেয়ারপারসনের স্বাস্থ্য ক্রমাগত উন্নতির দিকে থাকায় শুকরিয়া আদায় করেন বিএনপি নেতারা।
নেতাদের একজন বলেন, ‘ধীরে ধীরে ম্যাডামের স্বাস্থ্যের উন্নতি হওয়া আমাদের জন্য সুখবর। ম্যাডাম এখন খুব প্রফুল্ল আছেন। তিনি হাসপাতালে পারিবারিক পরিমণ্ডলে বেশ ভালো সময় কাটাচ্ছেন।’
গত ৮ জানুয়ারি খালেদা জিয়াকে যুক্তরাজ্যের লন্ডনের দ্য ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়। তিনি অধ্যাপক প্যাট্রিক কেনেডির তত্ত্বাবধানে চিকিৎসাধীন।
বৈঠকে স্থায়ী কমিটির সদস্যদের মধ্যে ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, ড. আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সালাউদ্দিন আহমেদ, বেগম সেলিমা রহমান ও হাফিজ উদ্দিন আহমেদ উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠকে লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যোগ দেন স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস ও অধ্যাপক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন।
আরও পড়ুন:দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ সেনাবাহিনীর হাতে হস্তান্তর ও আবাসন নিশ্চিতসহ চার দফা দাবিতে ২৪ ঘণ্টার অধিক সময় ধরে গণঅনশন করছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) শিক্ষার্থীরা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ফটকে তালা ঝুলিয়ে দেন শিক্ষার্থীরা। তালা মারা হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক ভবনেও। ঘোষণা করা হয়েছে কমপ্লিট শাটডাউন।
অনশনরত শিক্ষার্থীদের সমর্থনে কমপ্লিট শাটডাউন কর্মসূচি ঘোষণা করেন শিক্ষকরা। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের ফটকসহ একাধিক ভবনে তালা মারার মাধ্যমে তারা এ কর্মসূচি শুরু করেন।
শাটডাউন কর্মসূচি ঘোষণা করায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সব বিভাগ ও ইনস্টিটিউটে ক্লাস, পরীক্ষা বন্ধসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রমও বন্ধ রয়েছে।
সকাল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ফটক, শহীদ সাজিদ অ্যাকাডেমিক ভবন, বিজ্ঞান অনুষদ, আর্টস ফ্যাকাল্টির ভবনগুলোতে তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে। এতে স্থবির হয়ে পড়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব কার্যক্রম।
এদিকে অনশনে বসা বিশ্ববিদ্যালয়ের ১১ শিক্ষার্থী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
এ ব্যাপারে অনশনরত শিক্ষার্থী মাহফুজুর রহমান বলেন, ‘আমাদের দাবি না মানা পর্যন্ত আমরা অনশন ভাঙব না। সবার কাছে অনুরোধ, আপনারা যারা অনশন করছেন না, আপনারা ক্লাস-পরীক্ষা বয়কট করুন। আমাদের দাবি পূরণ করেই আমরা বাড়ি যাব।’
অনশনরত শিক্ষার্থী ফয়সাল মুরাদ বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সময় নির্ধারণ করে দিতে পারছে না। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি এসে যৌক্তিক সময় দিলে আমরা অনশন ভাঙব।’
জবি শাখা ছাত্র অধিকার পরিষদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সোহান প্রামাণিক বলেন, ‘আমরা আর লাল ফিতার দৌরাত্ম্য মানব না। এখানেই বসে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।’
সার্বিক বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. রেজাউল করিম বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো নিয়ে কাজ করছি। প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ হয়েছে; চিঠির কপিও এসেছে।
‘আমরা শিক্ষার্থীদের দাবির সঙ্গে একমত। যৌক্তিক সময় দিয়ে কাজ সম্পন্ন করব।’
এদিকে চলমান গণঅনশনরত শিক্ষার্থীরা প্রশাসনকে এক ঘণ্টার আল্টিমেটাম দেন। এ সময়ের মধ্যে দাবি পূরণ না হলে সচিবালয় অভিমুখে পদযাত্রার ঘোষণা দেন তারা।
এর আগে রোববার সকাল থেকে দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ সেনাবাহিনীকে হস্তান্তরসহ তিন দফা দাবিতে গণঅনশন কর্মসূচি শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। কর্মসূচিতে সারা দিন অভুক্ত থেকে ১৫ শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়েছেন।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, প্রশাসন এখনও চিকিৎসা ব্যয় ঠিকভাবে দিচ্ছে না। তাদের চিকিৎসাসহ বিভিন্ন খরচ শিক্ষার্থীদের টাকায় হচ্ছে। এ প্রশাসন সব দিক দিয়ে ব্যর্থ।
তারা দাবি পূরণ হওয়া পর্যন্ত কর্মসূচি চালিয়ে যাবেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনো ক্লাস হতে দেবেন না।
এদিকে শিক্ষার্থীদের চলমান আন্দোলনের দাবির প্রতি পূর্ণ একাত্মতা প্রকাশ করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতি।
অনশনরত শিক্ষার্থীদের অনুরোধে উপাচার্য অধ্যাপক মো. রেজাউল করিমও রোববার রাতে তাদের সঙ্গে অনশনস্থলে বসে পড়েন। ওই অনশনে একাত্মতা জানাতে রোববার গভীর রাতে হল থেকে বেরিয়ে প্রায় অর্ধশত ছাত্রী শহীদ মিনারের সামনে এসে বসে পড়েন।
শিক্ষার্থীদের দাবি
১. সেনাবাহিনীর কাছে দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ হস্তান্তরের চুক্তি অনতিবিলম্বে স্বাক্ষর করতে হবে।
২. পুরান ঢাকার বাণী ভবন ও ড. হাবিবুর রহমান হলের স্টিল বেইজড ভবনের কাজ দ্রুত শুরু এবং শেষ করতে হবে।
৩. শিক্ষার্থীদের জন্য অস্থায়ী আবাসনের ব্যবস্থা।
৪. যতদিন আবাসনের ব্যবস্থা না হয়, ততদিন পর্যন্ত ৭০ শতাংশ শিক্ষার্থীর আবাসন ভাতা নিশ্চিত করতে হবে।
আরও পড়ুন:পুরান ঢাকার বকশীবাজারে আলিয়া মাদ্রাসার মাঠে অস্থায়ী আদালত বসানোর প্রতিবাদে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ প্রদর্শন করছেন স্থানীয় লোকজন ও শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীরা বুধবার রাতভর আন্দোলন করেন। বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টায় এ প্রতিবেদন লেখার সময়ও তারা সড়ক অবরোধ করে রাখেন। টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করতে দেখা যায় তাদের।
বিডিআর বিদ্রোহের জন্য আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে স্থাপিত অস্থায়ী বিশেষ আদালতের আজ বিচারকাজ হওয়ার কথা। ভোরে পুলিশ ও এপিবিএন সদস্যরা সেখানে গেলে তাদের ঢুকতে বাধা দেন শিক্ষার্থীরা।
এতে আদালতের সামনের সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। আশপাশের সড়কগুলোতেও যানজট লেগে যায়।
ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের সামনের সড়ক, বকশীবাজার মোড় ও আশপাশের গলির প্রবেশমুখ বাঁশ দিয়ে আটকে রাখেন শিক্ষার্থীরা। তাতে বকশীবাজার মোড় থেকে শিক্ষা বোর্ড ও চকবাজারের সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
শফিউল্লাহ নামের এক ছাত্র বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে সিটি করপোরেশন এ মাঠ দখল করে রেখেছিল। কিন্তু জুলাই বিপ্লবের পর এই মাঠ আর কারও হতে দেব না।
‘আমাদেরই থেকে যাবে। আমাদের দাবি পূরণ না হলে তীব্র আন্দোলন গড়ে তুলব।’
অবরোধের বিষয়ে জানতে চাইলে চকবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রেজাউল হোসেন বলেন, আলিয়া মাদ্রাসার মাঠে পুলিশকে ঢুকতে বাধা দিচ্ছেন স্থানীয় লোকজন ও ছাত্ররা। পুলিশ সেখানে অবস্থান করছে। পরিস্থিতি শান্ত করতে আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।
২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি ঢাকার পিলখানায় তৎকালীন বিডিআর সদরদপ্তরে বিদ্রোহের ঘটনায় ৫৭ সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৪ জন নিহত হন। দেশের গণ্ডি পেরিয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আলোড়ন তোলে ওই ঘটনা।
আরও পড়ুন:ফেলানী দিবসে সীমান্ত হত্যার প্রতিবাদে রাজধানীর গুলশানের বিচারপতি শাহাবুদ্দিন আহমেদ পার্কে ‘বর্ডার দ্যাট ব্লিডস’ শিরোনামের আলোকচিত্র প্রদর্শনীর উদ্বোধন করা হয়েছে।
দৃকের আয়োজনে পারভেজ আহমদ রনির একক আলোকচিত্র প্রদর্শন করা হচ্ছে এ প্রদর্শনীতে।
২০১১ সালের ৭ জানুয়ারি ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ ফেলানীকে গুলি করে হত্যা করে পাঁচ ঘণ্টা কাঁটাতারে ঝুলিয়ে রাখে। প্রায় দেড় দশক কেটে গেলেও ফেলানী হত্যার বিচার হয়নি। তার স্মরণে প্রদর্শনীটির আয়োজন হচ্ছে।
ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে এখন পর্যন্ত ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী প্রায় ১ হাজার ৪০০ বেসামরিক বাংলাদেশি নাগরিককে হত্যা করে।
পারভেজ আহমদ রনি ২০১২ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের নানা সীমান্তে এ বিষয়ের ওপর টানা কাজ করেছেন। সেখান থেকে বাছাই করা ২৪টি ছবি বর্ডার দ্যাট ব্লিডসে প্রদর্শন করা হচ্ছে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ও মানবাধিকারকর্মী আদিলুর রহমান খান, দৃক পিকচার লাইব্রেরির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও আলোকচিত্রী শহিদুল আলম ও আয়োজন সংশ্লিষ্টরা।
প্রদর্শনীটি ৯ জানুয়ারি পর্যন্ত সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য