রাজশাহী মহানগরীর ধরমপুর আলমের মোড় এলাকায় জাহিদুল ইসলাম পলাশ বিদ্যুৎ দুর্ঘটনায় দুই পা হারিয়েছিলেন প্রায় ১০ বছর। পলাশের বয়স ২২ বছর। এই অবস্থায় পাস করেছেন এসএসসি ও এইচএসসি।
পড়াশোনার মাঝেও কম্পিউটারের প্রশিক্ষণ নিয়ে কিছুদিন ফ্রিল্যান্সার হিসেবে কাজ করেছেন। তবে সেখানে সুবিধা করতে পারছিলেন না তিনি। এরপরই তিনি যোগ দেন রাজশাহী ফুডপান্ডার রাইডার হিসেবে। এতেই বদলে গেছে তার জীবন।
রাজশাহীতে পলাশের মতো এমন শিক্ষিত যুবক অনেকে। তাদের অধিকাংশের খণ্ডকালীন চাকরি হিসেবে প্রথম পছন্দ এখন অনলাইন ফুড ডেলিভারি।
অথচ অনলাইনে খাবার সরবরাহ নিয়ে কয়েক বছর আগেও তেমন আগ্রহ ছিল না কারও। এ মাধ্যমে ক্রেতা মিলবে, এটা নিয়ে বিক্রেতাদের ছিল নানা সন্দেহ। আবার চাহিদা মতো কেউ বাড়িতে খাবার সরবরাহ করবে, এটাতেও আস্থা ছিল না সাধারণ ক্রেতাদের।
তবে সম্প্রতি করোনার মধ্যে বদলে গেছে এই ধারণা। বিভাগীয় শহরটিতে দিন-দিন জনপ্রিয় হচ্ছে ফুড ডেলিভারি। এ পেশায় ঝুঁকছেন শিক্ষিত যুবকরা।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, রাজশাহীতে এ পেশায় আছেন অন্তত ৮০০ জন। ছোট-বড় মিলিয়ে ৪৮টি প্রতিষ্ঠান এ ব্যবসায় সম্পৃক্ত। চাহিদা এতটাই বেশি অনেক শিক্ষিত যুবক চাইলেও সুযোগ পাচ্ছেন না।
রাজশাহী শহরের বড় রাস্তা থেকে শুরু করে গলি পথগুলোতে প্রায় সময়ই চোখে পড়ে কোনো না কোনো প্রতিষ্ঠানের ডেলিভারি ম্যান। সব থেকে বেশি চোখে পড়ে ফুডপান্ডার। তবে রাজশাহীর কিছু নতুন উদ্যোক্তাদেরও বিভিন্ন কোম্পানির নামে ডেলিভারি করতে দেখা গেছে।
পলাশ জানান, দুর্ঘটনার পর তিনি হাসপাতালে সাত মাস ভর্তি ছিলেন। তার বাম পা হাঁটুর নিচ থেকে কেটে ফেলতে হয়েছে। কাটতে হয়েছে ডান পায়ের তিনটি আঙুল। এ পা কাজ করে না। কোনো অনুভূতি নেই। আগে তিনি হুইলচেয়ারে চলতেন। পরে তৈরি করেন একটি ব্যাটারিচালিত ছোট রিকশা। সেই রিকশা নিয়েই তিনি হয়েছেন ফুডপান্ডার রাইডার।
তিনি বলেন, ‘ফুডপান্ডার রাইডারদের দেখতাম তারা খাবার নিয়ে ছুটে চলছেন। আমিও উৎসাহী হই। ফুডপান্ডার রাজশাহী অফিসে যাই। প্রথমে তারা আমাকে কাজ দিতে আগ্রহী হয়নি। আমি তাদের আশ্বাস দিলে তারা আমাকে চাকরি দেয়। বর্তমানে এক শিফটে তিন ঘণ্টা করে কাজ করছি। প্রায় এক বছর ধরে এই পেশায় ভালোই আয় করছি।’
পলাশের মতো আরেক রাইডার জাওয়াদ সজল এসেছিলেন রাজশাহীর সাহেববাজার এলাকায় খাবার দিতে। তিনি বলেন, ‘পড়াশোনার পাশাপাশি আমরা বিভিন্ন কাজ করে থাকি। তবে এই পেশাটি বেশ ভালো। এখানে আয়ও বেশি হয়।
‘আমাদের প্রায় বন্ধু-বান্ধবই পার্টটাইম জব হিসেবে এই পেশায় আছি। গড়ে প্রতিদিন ৫০০ থেকে ৭৫০ টাকা আয় হয়। এ জন্য আমাদের সময় দিতে হয় ৩ থেকে ৪ ঘণ্টা।’
নগরীর লক্ষ্মীপুরে রেস্তোরাঁ থেকে খাবার নিচ্ছিলেন সজিব আলী। তিনি আগে রিকশা চালাতেন। এখন সাইকেল কিনে এ পেশায় এসেছেন।
রিকশার থেকে এতে আয় বেশি জানিয়ে তিনি বলেন, ‘লকডাউনে যখন বের হতে পারছিলাম না, তখন খাবার ডেলিভারি চলছিল। এটি দেখে আমি এই পেশায় এসেছি। এখন আগের থেকে বেশ ভালোই রোজগার হচ্ছে।’
তিনি জানান, পেশা বদলানোয় প্রথমে একটু ঝামেলায় পড়তে হয়েছিল। তবে পড়াশোনা জানা থাকায় বুঝে নিয়ে এখন ভালো মতোই কাজ করছেন। সময়মতো খাবারও ডেলিভারি দিচ্ছেন।
অনলাইনে নিয়মিত খাবার অর্ডার দেন রাজশাহীর একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মী আরিফুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘সময় কম থাকে, তাই বাসায় গিয়ে খেতে পারি না। তাই খাবারের সময় হবার আগে অর্ডার দিই। তারা খাবার দিয়ে যায়। আমরা সময় মতো সেই খাবার পেয়ে যাই। সেবাটা বেশ ভালো।’
ফুডপান্ডার রাজশাহীর শিফট ম্যানেজমেন্ট এক্সিকিউটিভ রকিবুল হাসান রবিন বলেন, ‘আমাদের এখানে প্রতিদিনই কাজের জন্য মানুষ আসে। বর্তমানে আমাদের রাইডার আইডি আছে প্রায় ৬০০। তাদের মধ্যে কাজ করে ৪০০ জন। গড়ে প্রতিদিন কাজ করে ২০০ জন।
‘ভালো চাহিদা আছে এ পেশায়। আমরা মাঝেমধ্যেই রাইডার বাড়াচ্ছি।’
রাজশাহীর প্রথম খাবার ডেলিভারি ওয়েবসাইট ফুডশাহী। এটি এখন অ্যাপে চলে এসেছে। প্রতিষ্ঠানটির ম্যানেজিং ডিরেক্টর আতিকুল হক বলেন, ‘প্রতিদিনই এই কাজের চাহিদা বাড়ছে। এতে ভালো আয় হচ্ছে। আমার প্রতিষ্ঠানে এখন ২৫ জন কাজ করে।
‘তবে বিদেশি প্রতিষ্ঠানের কারণে এটি পিছিয়ে আছে। আমাদের সরকারি সহযোগিতা দরকার। তাহলে দেশি প্রতিষ্ঠানগুলো এগিয়ে যাবে। আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশে ফুডপান্ডা ৩ নম্বর অবস্থানে আছে। অথচ এই দেশে ১ নম্বরে। কারণ আমাদের দেশি প্রতিষ্ঠানের প্রতি সরকারের কোনো উদ্যোগ নেই।’
ফুড অ্যহোলিকের সিইও মুরশেদ জামান বলেন, ‘আমার এখানে ৪৯ জন কাজ করে। বিদেশি প্রতিষ্ঠানের সাথে আমরা পারছি না। তারা ধামাকা অফার দিচ্ছে। এ জন্য আমরা পারছি না। আমরা বেশ কিছু সমস্যায় আছি। আমরা সরকারের কাছে প্রণোদনা চাই না। আমাদের ঋণের ব্যবস্থা করে দিলেই হবে।
‘আমাদের ভ্যাট দিতে হয়। আবার খাবারটা কেনার সময় কাস্টমারের ভ্যাট দিতে হয়। তাহলে দুইবার ভ্যাট দিতে হচ্ছে। এগুলো ঠিক করলে, সরকারি নজরদারি থাকলে, ভালো কিছু করা সম্ভব।’
তিনি আরও বলেন, ‘এ পেশায় অনেকেই আছেন স্টুডেন্ট। তারা মাসে বাড়তি আয় করছেন। গড়ে কেউ কেউ মাসে ১৮ হাজার টাকা পর্যন্ত আয় করছেন। এটির মাধ্যমে ভালো কর্মসংস্থান হচ্ছে। এ বিষয়ে সরকারের নজর বাড়লে আরও উন্নতি হবে এই সেক্টরের।’
আরও পড়ুন:মৌলভীবাজারে বিশেষ ক্ষমতা আইনে করা নাশকতা মামলায় জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সাবেক উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান মিজান ও জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক এমএ মুহিতসহ ১৪ নেতাকর্মীকে কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত।
বৃহস্পতিবার দুপুরে মৌলভীবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতে হাজির হয়ে জামিন আবেদন করলে তা নামঞ্জুর করে বিচারক তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
উচ্চ আদালতের মঞ্জুরকৃত জামিন শেষ হওয়ায় তারা আদালতে হাজির হন।
মৌলভীবাজার মডেল থানায় ২০২৩ সালের নভেম্বর ও ডিসেম্বর মাসে করা দুটি রাজনৈতিক মামলার ১৪ জন আসামি হাজির হলে আদালত তাদের সবার জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে প্রেরণ করে।
মামলার অন্যান্য আসামিরা হলেন- জেলা বিএনপির সহ-সাধারণ সম্পাদক মুহিতুর রহমান হেলাল, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মাহমুদুর রহমান, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলে সাবেক সভাপতি ও পৌর কাউন্সিলর স্বাগত কিশোর দাস চৌধুরী, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব আহমেদ আহাদ, যুবদলের এমএ নিশাদ, যুবদলের সিরাজুল ইসলাম পিরুন, স্বেচ্ছাসেবক দলের নুরুল ইসলাম, যুবদলের ওয়াহিদুর রহমান জুনেদ, স্বেচ্ছাসেবক দলের আব্দুল হান্নান, স্বেচ্ছাসেবক দলের রোহেল আহমেদ, স্বেচ্ছাসেবক দলের মামুনুর রশিদ ও যুবদলের জাহেদ আহমেদ।
মৌলভীবাজার জেলা আদালত পুলিশের পরিদর্শক মো. ইউনুছ মিয়া জানান, ২০২৩ সালে নাশকতার অভিযোগে করা মামলায় মৌলভীবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতে হাজির হয়ে জামিন আবেদন করেন আসামিরা। আদালত শুনানি শেষে আবেদন নামঞ্জুর করে তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
চলতি গ্রীষ্ম মৌসুমের শুরু থেকেই উচ্চ তাপমাত্রায় আলোচনায় রয়েছে চুয়াডাঙ্গা জেলা। মৃদু, মাঝারি, তীব্র থেকে অতি তীব্র তাপমাত্রা দেখছে জেলাবাসী। মাঝে তাপমাত্রা সামান্য কমলেও ফের অতি তীব্র তাপপ্রবাহে পুড়ছে দেশের পশ্চিমের এই জেলা।
চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া অফিস জানায়, বৃহস্পতিবার বিকেল ৩টায় জেলার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৪২ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তার মানে জেলায় আবারও অতি তীব্র তাপপ্রবাহের কবলে পড়েছে এই জেলা।
আগের দিন বুধবারও এখানে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে গেছে। ওইদিন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ৪১ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তার আগের দিন তাপমাত্রা নেমেছিল ৩৯ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। সেই তীব্র তাপপ্রবাহ বৃহস্পতিবার এসে অতি তীব্র তাপপ্রবাহে রূপ নিয়েছে।
জেলা জুড়ে অতি তীব্র তাপপ্রবাহে জনজীবনে অস্বস্তি আরও বেড়েছে। স্বস্তি মিলছে না কোথাও। তীব্র গরমে একটু স্বস্তি পেতে দিনের অধিকাংশ সময় মানুষ গাছের ছায়ায় আশ্রয় নিচ্ছে।
গরমের প্রভাবে বাড়ছে রোগবালাই। গরমজনিত রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে হাসপাতালে। তীব্র তাপদাহে ব্যাহত হচ্ছে কৃষিকাজ। শ্রমজীবী খেটে খাওয়া মানুষ কাজে যেতে পারছে না। নষ্ট হচ্ছে ধান, কলা, আম, লিচুসহ মৌসুমী ফসল।
গোপালপুর গ্রামের কৃষক হান্নান আলী বলেন, ‘এই তাপে মাটে উঠতি ফসল নষ্ট হয়ি যাচ্চি। আর রোদির তাতে মাটে দাঁড়ানু যাচ্চি না। ধানের ক্ষেতে বেশি সেচ লাগচি। তাও আবার দিনের বেলায় পাম্পে পানি উটচি না। রাতি দিতি হচ্চি।’
চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জামিনুর রহমান বলেন, ‘আজ (বৃহস্পতিবার) তাপমাত্রা কয়েক ডিগ্রি বেড়েছে। জেলায় তীব্র তাপপ্রবাহ রূপ নিয়েছে অতি তীব্র তাপপ্রবাহে। সহসা বৃষ্টি হওয়ার কোনো পূর্বাভাস নেই। চলতি এপ্রিল মাসের শেষ দিন পর্যন্ত আবহাওয়ার এমন পরিস্থিতি থাকতে পারে।
আরও পড়ুন:কক্সবাজারের টেকনাফের সাবরাং ইউনিয়নের শাহপরীর দ্বীপে ঘরে ঢুকে এক নারী ও তার মেয়েকে বিবস্ত্র করে নির্যাতনের লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে।
গত সোমবারের ঘটনায় বৃহস্পতিবার টেকনাফ মডেল থানায় অভিযোগটি করেন ছেনুয়ারা বেগম নামের নারী।
লিখিত অভিযোগে বলা হয়, গত সোমবার রাত দুইটার দিকে শাহপরীর দ্বীপের পূর্ব উত্তরপাড়া এলাকার নুর মোহাম্মদের স্ত্রী ছেনুয়ারা বেগমের ঘরের দরজা ভেঙে আয়ুব খানের নেতৃত্বে ১০ থেকে ১৫ জন প্রবেশ করেন। তারা ছেনুয়ারা ও তার মেয়ের হাত-পা বেঁধে মুখে কাপড় ঢুকিয়ে এলোপাতাড়ি লাথি ও ঘুষি মারেন। একপর্যায়ে মা ও মেয়ে উভয়কে বিবস্ত্র করেন আইয়ুব ও তার লোকজন।
অভিযোগে আরও বলা হয়, হামলাকারীরা ভয়ভীতি প্রদর্শন করে স্বর্ণ ও টাকা ছিনিয়ে নিয়ে যান। যাওয়ার সময় তাদের বিরুদ্ধে নির্যাতনের বিষয়ে কাউকে জানানো হলে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে চলে যান৷
এ বিষয়ে ছেনুয়ারা বেগম বলেন, ‘সন্ত্রাসী আয়ুব খানের নেতৃত্বে ১০ থেকে ১৫ জন যুবক আমার বাড়িতে ভয়ভীতি দেখিয়ে প্রবেশ করে। পরে বাড়ি থেকে আমাকে জোরপূর্বক কয়েকজন লোক বের করে রশি দিয়ে বেঁধে রাখে এবং আমার মেয়েকে নির্যাতন করে স্বর্ণ ও টাকা নিয়ে যায়। তাদের বিরুদ্ধে ঘটে যাওয়া বিষয়ে কাউকে বললে মেরে ফেলা হবে বলে চলে যায়।’
থানায় অভিযোগের পর আয়ুব হুমকি দিয়েছে জানিয়ে ছেনুয়ারা বলেন, ‘সেই আয়ুব খান মোবাইল ফোনের মাধ্যমে বলে, মামলা হলে কী হবে? জামিন নিয়ে বাহির হয়ে আমাকে আর আমার মেয়েকে মেরে ফেলা হবে বলে প্রাণনাশের হুমকি-ধমকি দিচ্ছে। এ বিষয়ে আমি টেকনাফ মডেল থানায় লিখিত অভিযোগ করেছি।’
এ বিষয়ে সাবরাং ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য রেজাউল করিম রেজু বলেন, ‘আমি বিষয়টি শুনেছি এবং সঠিক তদন্ত করে পুলিশকে সহযোগিতা করব।’
অভিযোগ তদন্ত কর্মকর্তা উপপরিদর্শক (এসআই) মোহাম্মদ সোহেল বলেন, ‘আমি ঘটনার সত্যতা পেয়েছি এবং আমি মামলা করার জন্য ওসি বরাবর সুপারিশ করেছি।’
টেকনাফ মডেল থানার ওসি ওসমান গণি বলেন, ‘আরও গভীরভাবে তদন্ত করে দোষীদের গ্রেপ্তার করা হবে।’
আরও পড়ুন:চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জে সোনামসজিদ স্থলবন্দরে দায়িত্ব পালনকালে রুহুল আমিন নামে এক ট্রাফিক ইন্সপেক্টরের মৃত্যু হয়েছে। তার বাড়ি যশোরের বেনাপোলে। বাবার নাম কোরবান আলী।
নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের অধীন সোনামসজিদ স্থলবন্দরে ট্রাফিক ইন্সপেক্টরের দায়িত্ব পালন করছিলেন তিনি।
শিবগঞ্জ থানার ওসি সাজ্জাদ হোসেন জানান, সোনামসজিদ স্থলবন্দরের পানামা পোর্ট লিংক লিমিটেডের মধ্যে ট্রাক পরিদর্শন শেষে দুপুর পৌনে ১টার অফিস কক্ষে ফিরে অসুস্থ হয়ে পড়েন রুহুল আমিন। সহকর্মীরা তাকে দ্রুত শিবগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
চাঁপাইনবাবগঞ্জের সিভিল সার্জন এসএম মাহমুদুর রশিদ জানান, ট্রাফিক ইন্সপেক্টর রুহুল আমিন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আনার আগেই মারা যান। হাসপাতালে যারা নিয়ে এসেছিলেন তারা বলেছেন যে তিনি তৃষ্ণার্ত ছিলেন, পানি খেতে চেয়েছিলেন।
তবে তার মৃত্যু যে হিট স্ট্রোকে হয়েছে এটা এখনই নিশ্চিত করে বলা যাবে না। অন্য কোনো রোগেও তার মৃত্যু হয়ে থাকতে পারে। তবে এখন যেহেতু প্রচণ্ড গরম চলছে তাই এটার প্রভাব থাকতে পারে।
রাজশাহীর বাগমারায় ভাড়া বাসায় আটকে রেখে এক মাস ধরে এক তরুণীকে ধর্ষণ ও নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে।
বুধবার রাতে উপজেলার তাহেরপুর পৌর এলাকার হরিফলার মোড়ের একটি বাসা থেকে ওই তরুণীকে উদ্ধার ও এ ঘটনায় অভিযুক্ত একজনকে আটক করেছে পুলিশ।
আটক রাজু হোসেন (২৫) পেশায় চা দোকানি। তিনি তাহেরপুর পৌরসভার হরিফলা মহল্লার আবদুর রাজ্জাক শাহের ছেলে।
পুলিশ জানায়, অসুস্থ অবস্থায় তরুণীকে বাগমারা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেয়ার পর রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান-স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) স্থানান্তর করা হয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, ওই তরুণীর বাড়ি ফরিদপুর জেলায়। ফোনে রাজুর সঙ্গে তার পরিচয় ও প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। গত ২৪ মার্চ বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ফোনে ভুক্তভোগী তরুণীকে তাহেরপুরে নিয়ে আসেন রাজু। পরে তাকে নিয়ে ভাড়া বাসায় ওঠেন রাজু। সেখানে আটকে রেখে এক মাস ধরে রাজু ওই তরুণীকে ভয় দেখিয়ে ও মারধর করে ধর্ষণ করেন।
এক পর্যায়ে নির্যাতনের শিকার তরুণী অসুস্থ হয়ে পড়লে পাশের বাড়ির লোকজন টের পেয়ে স্থানীয় কাউন্সিলরকে জানান। তিনি থানায় খবর দিলে বুধবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে পুলিশ ওই বাসা থেকে তরুণীকে উদ্ধার করে। পরে ওই এলাকা থেকে রাজুকে আটক করে পুলিশ। রাতেই তরুণী বাদী হয়ে অপহরণ, ধর্ষণ ও নির্যাতনের অভিযোগে নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে একটি মামলা করেন।
রাজশাহী জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ও মুখপাত্র রফিকুল আলম জানান, মেয়েটার ওপর পাশবিক নির্যাতন চালানো হয়েছে। আটক তরুণের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অপরাধের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে। পুলিশ তদন্ত করছে। তদন্ত শেষে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
মুন্সীগঞ্জের লৌহজংয়ে পদ্মা নদীতে বুধবার রাতের আঁধারে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের সময় দুটি ড্রেজার জব্দ করেছে নৌ-পুলিশ।
মাওয়া নৌ ফাঁড়ির ইনচার্জ মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান বৃহস্পতিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি জানান, রাতের আঁধারে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের খবর পেয়ে উপজেলার মেদিনীমণ্ডল ইউনিয়নের যশিলদিয়ায় বুধবার রাত দেড়টার দিকে পদ্মা নদীতে অভিযান চালানো হয়। ওই সময় নিয়ম অমান্য করে বালু উত্তোলন করায় ওই দুটি ড্রেজার জব্দ করা হয়।
তিনি আরও জানান, ড্রেজার জব্দ করার সময় কাউকে আটক করা সম্ভব হয়নি। জব্দকৃত ড্রেজার দুটির বিষয়ে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।
মেহেরপুরের গাংনীতে সেচ পাম্পের সুইচ দিতে গিয়ে বিদুৎস্পৃষ্ট হয়ে আবদুল হান্নান (৭৫) নামের কৃষকের মৃত্যু হয়েছে।
উপজেলার বামন্দী ইউনিয়নের দেবীপুর দক্ষিণপাড়ায় বৃহস্পতিবার সকাল নয়টার দিকে এ দুর্ঘটনাটি ঘটে।
প্রাণ হারানো আবদুল হান্নান দেবীপুর দক্ষিণপাড়ার খোদা বক্সের ছেলে।
এসব তথ্য নিশ্চিত করে ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) সদস্য হিরোক আহমেদ বলেন, ‘আজ সকালে আবদুল হান্নান নিজ গ্রামের মাঠে অবস্থিত সেচ পাম্পের সুইচ দিতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্টের শিকার হয়ে ঘটনাস্থলেই মৃত্যুবরণ করেন। পরে স্থানীয়রা মরদেহটি ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করে নিজ বাড়ি দেবীপুরে নিয়ে আসে।’
বামন্দী পুলিশ ক্যাম্প ইনচার্জ উপপরিদর্শক (এসআই) শরীফুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ‘বিদুৎস্পৃষ্টে মৃত্যুর সংবাদ পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে এসে প্রাথমিক তদন্ত শেষ করেছি। বতর্মানে মরদেহটি পরিবারের কাছে রয়েছে।’
মন্তব্য