একটা লোক ৩০ কিলোমিটার কাঁচা-পাকা সড়ক একা মেরামত করেছেন সারা জীবন ধরে। তার নাম রবি মিয়া। তার খোঁজে এলাকায় গিয়ে লোকজনের কাছে জানতে চাইলে অনেকে পাল্টা প্রশ্ন করেন, ‘কোন রবি মিয়া? পাগল রবি মিয়া?’
খেয়ালি আর জেদি রবি মিয়ার বয়স এখন ৮০ ছুঁই ছুঁই। বার্ধক্যজনিত রোগ বাসা বেঁধেছে শরীরে। চাইলেও আগের মতো ছুটতে পারেন না। সারা দিনে কাটে বিছানায় শুয়ে।
এখনও সন্তানদের সাহায্য নিয়ে হেঁটে চলে যান ঘরের বাইরে। খুঁজে খুঁজে বের করেন কোন গাছের গোড়ায় আগাছা জন্মেছে, কোথায় একটু মাটি কেটে দিতে হবে।
রবি মিয়া কাজপাগল। এলাকার ছোট-বড় সবার কাছে ‘রবি ভাই’ হিসেবে পরিচিত। মৌলভীবাজারের রাজনগর উপজেলার ফতেহপুর ইউনিয়নের সোয়াবালি গ্রামে তার বাড়ি, যদিও বর্তমানে বসবাস উপজেলার টেংরা ইউনিয়নের পূর্ব ইলাসপুর গ্রামে।
রবি মিয়া সারা জীবন কাটিয়ে দিয়েছেন হাতে দা আর কাঁধে কোদাল নিয়ে। তার এলাকার আশপাশের তিনটি ইউনিয়নের ৩০ কিলোমিটার রাস্তায় স্বেচ্ছাশ্রমে কাজ করে গেছেন। কয়েক হাজার গাছ লাগিয়েছেন বিভিন্ন বাড়ির রাস্তার পাশে, বাড়ির আঙিনায় এমনকি লোকজনের ঘরের ফাঁকে ফাঁকে লাউ, কুমড়াসহ বিভিন্ন গাছ লাগিয়ে দিতেন।
এলাকার মানুষজনের চোখে, রবি মিয়া পাগল। কোথায় থাকতেন, কোথায় যেতেন কেউ জানত না। সব সময় তাকে দেখা যেত কোথাও রাস্তা ঠিক করছেন বা গাছ লাগিয়ে দিচ্ছেন অথবা ঝোপঝাড় পরিষ্কার করে দিচ্ছেন।
৩০ কিলোমিটার সরকারি রাস্তায় যেখানেই ভাঙন দেখা দিত, সেখানেই কোদাল হাতে হাজির রবি মিয়া। রাস্তার ভাঙন ঠিক করে দেওয়া, বৃষ্টির পানি জমে গেলে তা চলে যাওয়ার রাস্তা করে দেওয়া, বিভিন্ন ধরনের গাছ রোপণ করা- এটাই তার কাজ ছিল।
শুধু যে সরকারি জায়গায় কাজ করতেন, তা না। মানুষের বাড়ি বাড়ি গিয়েও একই কাজ করে দিতেন তিনি।
দুই স্ত্রীর ঘরে রবি মিয়ার আট সন্তান। কিন্তু কাউকে লেখাপড়া করাতে পারেননি। তা নিয়েও তার আফসোস নেই। পৈতৃক কিছু সম্পত্তি ছিল, তা বিক্রি করে পরিবারের খরচ চালিয়েছেন। কারণ নিজে স্বেচ্ছায় কাজ করেই কাটিয়ে দিয়েছেন। নিজের বা পরিবারের জন্য আয়-রোজগার করতে পারেননি।
টেংরাবাজার ইউনিয়নের পূর্ব ইসলামপুর গ্রামে গিয়ে দেখা মেলে রবি মিয়ার। টিনের ছাউনির ছোট একটি ঘরে মেঝেতে শুয়ে আছেন। সাংবাদিক পরিচয় দিতেই লাঠি হাতে নিয়ে বের হয়ে এলেন। রুগ্ণ শরীর। উস্কখুস্ক লম্বা চুলে অনেকটা বাউল ভাব।
কেমন আছেন জানতে চাইলে আফসোস করে বললেন, ‘কাজ করতে পারি না। বাইরে যেতে পারি না। এলাকার কত রাস্তা হয়তো ভেঙে আছে, বর্ষার কারণে পানি জমে আছে, কিন্তু আমি ঠিক করে দিতে পারছি না। হাঁটতে গেলেই মাথা ঘুরে।’
পাশ থেকে রবি মিয়ার ছেলে যাবেদ মিয়া জানান, ‘বাইরে যেতে না পারলেও বাড়িতে ঠিকই প্রতিদিন গাছের পরিচর্চা করেন। কোদাল নিয়ে কাজ শুরু করেন। এসব না করলে তার ভালো লাগে না। আমরাও বুঝতে পারি, আব্বার সুখ কাজে। তাই ঘর থেকে ধরে বাইরে এনে গাছের চারার পাশে রাখি। তিনি সব অসুখ ভুলে কাজে ডুবে থাকেন।’
রবি মিয়া এবং তার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে আলাপ করে জানা যায়, আজ থেকে প্রায় ৪০ বছর আগে রবি মিয়া একদিন দেখেন, তার এলাকায় শিশু এবং নারীরা একটা রাস্তা খুব কষ্ট করে কাদা মাড়িয়ে পার হচ্ছেন। অনেকটা জায়গা ছিল ভাঙা। রবি মিয়া কোদাল নিয়ে একাই ৪ থেকে ৫ দিন ধরে পাশের জমি থেকে মাটি এনে রাস্তা ঠিক করে দেন।
সেই থেকে একটা ৩০ থেকে ৩৫ বছর প্রতিদিন কোথাও না কোথাও তিনি রাস্তা ঠিক করে গেছেন। আশপাশের তিনটি ইউনিয়নের ৩০ কিলোমিটারের বেশি রাস্তায় ছিল তার বিচরণ। হাজার হাজার গাছ লাগিয়েছেন, আবার সেগুলোর যত্ন নিয়েছেন।
কোনো দিন কিছু পাওয়ার আশায় এই কাজ করেননি। শুধু নিজের মনের শান্তির জন্য করেছেন। কাজ করলেই তিনি দুনিয়ার সুখ পেতেন। তবে গাছের কথা উঠতেই রেগে গেলেন রবি মিয়া। একটু চড়া সুরে বলে উঠলেন, ‘চোর সবাই চোর। আমি এত এত গাছ লাগিয়েছি, কিন্তু এইগুলা নাই। আগের দিন লাগিয়ে পরের দিন গিয়ে দেখতাম চুরি হয়ে গেছে। অনেক গাছ তো বড় হওয়ার পরেও চুরি হয়েছে।’
তবে শুরুর দিকে অন্যরকম অভিজ্ঞতা ছিল রবি মিয়ার। মানুষ ভাবত, তার বিশেষ কোনো মতলব বা ধান্দা আছে, নয় তো কেউ এভাবে কাজ করে না। সবাই যখন বুঝতে পারল, কোনো স্বার্থ নেই, তখন পাগল উপাধি দিল। রবি মিয়ার বাড়ির পাশের মোকামবাজারের প্রতিটি মানুষের কাছে প্রিয় মানুষ রবি মিয়া।
এই বাজারের ব্যবসায়ী জাফর মিয়া বললেন, রবি মিয়া এখন বৃদ্ধ হয়ে গেছেন, দাঁড়াতে পারেন না ঠিকমতো। যত দিন শরীরের সঙ্গে যুদ্ধ করে কাজ করতে পেরেছেন, তত দিন তিনি স্বেচ্ছায় কাজ করে গেছেন।
বাজারে বিভিন্ন দোকান ঘরের পাশে যে খালি জায়গা থাকত, তাতে তিনি বিভিন্ন গাছ লাগিয়ে দিতেন। এমনকি বাড়ি বাড়ি গিয়ে সবজির গাছও লাগিয়েছেন। এই কাজের পেছনে তার কোনো চাওয়া ছিল না।
জাফর মিয়া বলেন, ‘এমন মানুষ দেশে আর আছে কিনা জানি না। এই মানুষটিকে রাষ্ট্রীয়ভাবে পুরস্কৃত করা উচিত। এতে অন্যরা উৎসাহ পাবে।’
প্রচারবিমুখ রবি মিয়ার বিষয়টি নিয়ে অবগত স্থানীয় প্রশাসন। রাজনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা প্রিয়াঙ্কা পাল জানান, ‘আমি শুনেছি, তিনি এই এলাকায় অনেক কাজ করেছেন। বয়স্ক ভাতাসহ বিভিন্নভাবে সহযোগিতা পাচ্ছেন বলে আমি জেনেছি। তার প্রয়োজনে আমরা সব সময় পাশে থাকব। রবি মিয়ার মতো মানুষ এই সমাজে বিরল। নিজের খেয়ে কেউ স্বেচ্ছায় ৩০ কিলোমিটার রাস্তা ঠিক করে দেবে– এমনটা আসলে আমরা ভাবতেই পারি না।’
আরও পড়ুন:মানিকগঞ্জের শিবালয়ে স্থানীয় মোহামেডান ইয়ুথ ক্লাবের উদ্যোগে শহীদ জিয়া স্মৃতি ফুটবল টুর্ণামেন্ট শুরু হয়েছে । উক্ত খেলা উদ্বোধন করেন, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল ( বিএনপি) কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও জেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটির ১ নং সদস্য , জেলা বিএনপির সাবেক সাধারন সম্পাদক এসএ জিন্নাহ কবির ।
শনিবার (৫ জুলাই) বিকাল ৪ টায় শিবালয় সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে শহীদ জিয়া স্মৃতি ফুটবল টুর্ণামেন্ট উদ্বোধন করা হয় ।
বিশেষ অতিথি ছিলেন, মানিকগঞ্জ জেলা যুবদলের আহবায়ক কাজী মোস্তাক হোসেন দিপু, জেলা বিএনপির সাবেক কৃষি বিষয়ক সম্পাদক ও উপজেলা বিএনপি'র সহ-সভাপতি এবং জেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটির সদস্য মো: লোকমান হোসেন, উপজেলা বিএনপি সভাপতি রহমত আলী লাভলু, সম্পাদক মিজানুর রহমান লিটন, সাংগঠনিক সম্পাদক নাসির উদ্দিন, জেলা কৃষকদলের সহ-সভাপতি মাসুদুর রহমান মাসুদ,জেলা বিএনপির সাবেক প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক ও দৌলতপুর উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারন সম্পাদক মো: ফেরদৌস রহমান, উপজেলা যুবদলের আহবায়ক মো: হোসেন আলী, উপজেলা সেচ্ছাসেবক দলের আহবায়ক মো: শহিদুল ইসলাম ।
এছাড়া উপস্থিত ঘিওর উপজেলা বিএনপির স্থানীয় সরকার বিষয়ক সম্পাদক মো: রাজা মিয়া মেম্বার, জেলা যুবদলের যুগ্ম আহবায়ক আসিফ ইকবাল রনি, জেলা যুবদলের যুগ্ম আহবায়ক আখতারুজ্জামান আক্তার, জেলা যুবদলের যুগ্ম আহবায়ক মামিনুল ইসলাম মমিন, জেলা যুবদলের সদস্য মোসলেম উদ্দিন,জেলা ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক সাকিব খান অয়ন, জেলা ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারন সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম জিহাদ প্রমূখ । সভাপতিত্ব করেন,মোহামেডান ইয়ুথ ক্লাবের ইঞ্জিনিয়ার মহিদুর রহমান কাজল ।
প্রধান অতিথি এসএ জিন্নাহ কবির বলেন, শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়া রহমান এবং বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া এদেশে প্রথম ফুটবল খেলাকে আন্তর্জার্তিক পর্যায়ে নিয়ে যান। তাদের চেষ্টায় সার্ফ ফুটবল টুর্ণামেন্ট আয়োজন করার সম্ভব হয়। মাদক মুক্ত সমাজ গড়তে যুব সমাজকে খেলার মাঠে আনতে হবে । মাদক মুক্ত সমাজ গড়তে হলে খেলাধুলার বিকল্প নাই ।
স্থানীয় মোহামেডান ইয়ুথ ক্লাব আয়োজিত টুর্ণামেন্টে নক-আউট পদ্ধতিতে আটটি দল অংশ নিচ্ছে। উদ্বোধনী খেলায় টাইব্রেকারে মানিকগঞ্জ কৈট্রা ফিউচার ফুটবল একাডেমী ৫-৪ গোলে পাবনার নবযুগ মিলন সমিতিকে হারায়। রেফারি ছিলেন আবুল কালাম।
শেরপুরে নালিতাবাড়ী উপজেলার কাটাবাড়ী সীমান্তের বিদ্যুতায়িত হয়ে আরও একটি একটি বন্যহাতি নিহত হয়েছে। বনবিভাগের মধুটিলা রেঞ্জের আওতাধীন এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয়দের কাছ থেকে খবর পেয়ে শনিবার (৫ জুলাই) সকালে বনবিভাগের লোকজন ঘটনাস্থলে গিয়ে হাতিটির মরদেহ উদ্ধার করে।
খাদ্যের সন্ধানে পাহাড় থেকে নেমে আসা হাতিটি বৈদ্যুতিক ফাঁদে পড়ে নিহত হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে বনবিভাগ।
মধুটিলা রেঞ্জের রেঞ্জার দেওয়ান আলী ঘটনাটি নিশ্চিত করে জানিয়েছেন, হাতিটির শুড়ে পোড়া ক্ষতের দাগ রয়েছে। এটির বয়স ১৫ থেকে ২০ বছর হবে। এটি একটি মাদি হাতি। এ ব্যাপারে পরবর্তী প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, সাম্প্রতিককালে মধুটিলা রেঞ্জের আওতাধীন এলাকায় খাদ্যের সন্ধানে বন্যহাতি লোকালয়ে নেমে আসার ঘটনা বৃদ্ধি পেয়েছে। খেতে ফসল না থাকায় হাতির দল বাড়িঘরেও হানা দিচ্ছে। এতে স্থানীয়ভাবে অনেক পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছিল। যেখানে বন্যহাতির দেহটি পড়ে ছিল, সেখানে কোনো ধরনের বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম না থাকলেও হাতিপাগাড় ক্যাম্পের আশপাশে অনেক বসতি ও বাড়িঘর রয়েছে।
এ নিয়ে চার মাসের কম সময়ের ব্যবধানে মধুটিলা রেঞ্জ এলাকায় তিনটি বন্যহাতির মরদেহ উদ্ধার করল বনবিভাগ।
এর আগে গত ২০ মার্চ পূর্ব সমশ্চুড়া গ্রামের লালনেংগড় এলাকায় বিদ্যুতায়িত হয়ে নিহত একটি বন্যহাতির মরদেহ উদ্ধার করা হয়। তারপর গত ২৯ মে দাওধারা পাহাড় থেকে সদ্যোজাত একটি হাতিশাবকের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
ঘন ঘন হাতির মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় উদ্বেগ জানিয়েছেন পরিবেশ ও প্রকৃতিপ্রেমীরা।
নিধারঞ্জন কোচ নামে এক অধিকারকর্মী নিজের ফেসবুক ওয়ালে শনিবার নিহত হাতির মরদেহের ছবি পোস্ট করে প্রশ্ন ছুড়ে দিয়ে লিখেছেন, ‘আবারো বন্যহাতির মৃত্যু। এর শেষ কোথায়? হাতি-মানুষের দ্বন্দ্ব নিসনে সরকারি উদ্যোগ কী? ক্ষতিপূরণ প্রদানই কি যথেষ্ট? হাতি-মানুষের সহাবস্থানের পথ খুঁজতে খুঁজতে এশিয়ান হাতি নাই হয়ে যাবে!’
সিলেটের ওসমানীনগরে এনা ও ইউনিক পরিবহনের দুটি বাসের সংঘর্ষে ঘটনাস্থলেই একজন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন অন্তত ১০ জন।
শনিবার (৫ জুলাই) সকাল ৬টার দিকে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের কুরুয়া বাজারের পাশে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত রাজু মিয়ার (২৬) বাড়ি ফরিদপুর জেলার তারাকান্দা থানায়। তিনি ইউনিক বাসের হেলপার ছিলেন।
দুর্ঘটনায় আহতদের মধ্যে অন্তত দুজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সিলেট থেকে ছেড়ে আসা ইউনিক পরিবহনের বাসের সঙ্গে ঢাকা থেকে আসা এনা পরিবহনের বাসটির সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলেই ইউনিকের হেলপার রাজু মিয়ার নিহত হন। বেপরোয়া গতিতে ভুল পাশ থেকে এসে এনা পরিবহনের ওই কোচটি এ দুর্ঘটনা ঘটায় বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান।
দুর্ঘটনার খবর পেয়ে ফায়াস সার্ভিস, ওসমানীনগর থানা পুলিশ ও শেরপুর হাইওয়ে পুলিশ এসে হতাহতদের উদ্ধার করে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়।
দুর্ঘটনার পর কুরুয়া বাজারের দুই পাশে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে কয়েক কিলোমিটার যানজট দেখা দেয়। পরে সকাল সোয়া ১০টার দিকে দুর্ঘটনাকবলিত গাড়ি দুটি সরিয়ে যানজট নিরসন করে পুলিশ।
শেরপুর হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু তাহের দেওয়ান জানান, দুই গাড়ির সংঘর্ষ হলে বিকট শব্দে স্থানীয়রা এগিয়ে গিয়ে প্রাথমিক উদ্ধারকাজ শুরু করেন। পরে স্থানীয় থানা পুলিশ, হাইওয়ে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা তাতে যোগ দেন।
তিনি আরও জানান, হাইওয়ে পুলিশ রাজুর লাশ উদ্ধার করে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে। বাস দুটিকে রাস্তা থেকে সরিয়ে যান চলাচল স্বাভাবিক করা হয়েছে।
কেশবপুরের ঐতিহ্য কালোমুখো হনুমান খাদ্য সংকট ও বন উজাড় হয়ে যাওয়ায় বিভিন্ন এলাকায় চলে যাচ্ছে। প্রয়োজনীয় খাবার না পেয়ে মারাও যাচ্ছে। কালোমুখো হনুমান রক্ষার দাবি উঠেছে।
জানা গেছে, একসময় কেশবপুরে ছিল কালোমুখো হনুমানের অভয়ারণ্য। বন উজাড় হয়ে যাওয়ায় এবং খাদ্য সংকটে সময়ের গতির সঙ্গে কমে যাচ্ছে হনুমান। বর্তমানে ১৮০ থেকে ২০০টি হনুমান কেশবপুরে রয়েছে বলে স্থানীয় বন বিভাগ জানায়। এখান থেকে ৪/৫ বছর আগে ছিল ২৫০ থেকে ৩০০ টি। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, দেশ বিভক্তির আগে ভারতের মাড়োয়াররা ব্যবসা বাণিজ্যের জন্য যশোরের কেশবপুরে বসবাসের পাশাপাশি আসা-যাওয়া করত। এ সময় তাদের যানবাহনে করে দুটি কালোমুখো হনুমান ভারত থেকে কেশবপুরে আসে। সেই থেকে হনুমানের এখানে পত্তন শুরু হয়। ওই এক জোড়া হনুমান থেকে এখানে শত শত হনুমানের কালের আবর্তনে ওরা আজ বিলুপ্তির পথে। একসময় কেশবপুর অঞ্চলে ঘন বনজঙ্গল ছিল। এসব বনের ফল ও লতাপাতা খেয়ে ওরা জীবিকা নির্বাহ করত। বর্তমানে জনসংখ্যা বৃদ্ধির পাশাপাশি বন উজাড়সহ ঘনবসতি এবং এলাকায় অবৈধ ইটভাটায় গিলে খাচ্ছে এসব বনের কাঠ। এতে উজাড় হচ্ছে বন। এদিকে কেশবপুর উপজেলায় পল্লীবিদ্যুতের তারে কভার সিস্টেম না থাকায় প্রায়ই বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে ওরা মারা যাচ্ছে। খাদ্য সংকটের কারণে কেশবপুরের হনুমান দেশের বিভিন্ন এলাকায় চলে যাচ্ছে।
উপজেলা বন বিভাগের কর্মকর্তা মোনায়েম হোসেন বলেন, কেশবপুর এলাকায় বনজঙ্গল কমে যাওয়ার কারণে হনুমানের খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছে। ওদের রক্ষায় সরকারিভাবে খাদ্য সরবরাহ করা হচ্ছে।
কেশবপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার রেকসোনা খাতুন বলেন, হনুমান রক্ষায় সরকারিভাবে খাদ্য সরবরাহ করা হয়। এ ছাড়া বিভিন্ন এনজিও ব্যক্তি গত ভাবেও অনেকেই খাদ্য দেয়, যার কারণে ওরা গ্রামাঞ্চল ছেড়ে বর্তমানে শহরে বেশি বিচরণ করছে।
নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন করোনা আক্রান্ত এক বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছে।
করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত জেবল হক (৮০) কবিরহাট উপজেলার চাপরাশিরহাট ইউনিয়নের লামছি গ্রামের মৃত গনু মিয়ার ছেলে।
বুধবার (২ জুলাই) সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেন নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. রাজীব আহমেদ চৌধুরী। এর আগে, গতকাল মঙ্গলবার (১ জুলাই) রাত ১০টার দিকে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের করোনা ইউনিটে তার মৃত্যু হয়।
ডা. রাজীব আহমেদ চৌধুরী বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা আক্রান্ত হয়ে এক বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছে। গত মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে ওই বৃদ্ধ হাসপাতালে ভর্তি হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত ১০টার দিকে মারা যান তিনি। এদিকে গত ২৪ ঘন্টায় নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের এক জনের নমুনা পরীক্ষায় একজনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছে।
এ বিষয়ে জেলা সিভিল সার্জন ডা.মরিয়ম সিমি বলেন, মারা যাওয়া ব্যক্তি সকালে হাসপাতালে ভর্তি হয়। দুপুরে তার করোনা শনাক্ত হওয়ার পর সেখানে রাতে তার মৃত্যু হয়। এখন পর্যন্ত নোয়াখালীতে মোট ৩ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। কিট সল্পতার কারণে উপজেলা পর্যায়ে করোনা টেস্ট এখনো শুরু করা হয়নি।
সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের নেতৃত্ব নিয়ে চলমান বিরোধের জেরে ক্লাবের সভাপতি আবুল কাশেমসহ সাংবাদিকদের উপর অতর্কিত হামলার ঘটনা ঘটেছে। এতে অন্তত ৩০ সাংবাদিক আহত হয়েছেন।
অভিযোগ উঠেছে, ক্লাবের কথিত সভাপতি মাদকাসক্ত আওয়ামী দোসর আবু সাঈদ ও সাধারণ সম্পাদক আব্দুল বারীর নেতৃত্বে আল ইমরান ও অমিত ঘোষ বাপ্পাসহ ভাড়াটে সন্ত্রাসী ও মাদকাসক্তরা এই হামলা চালায়।
সোমবার (৩০ জুন) সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সামনে এই হামলায় ইন্ডিপেনডেন্ট টেলিভিশনের সাংবাদিক ও প্রেসক্লাবের সভাপতি আবুল কাশেম, ভোরের আকাশের সাংবাদিক আমিনুর রহমান, ডিবিসি নিউজের সাংবাদিক বেলাল হোসেন, অনির্বানের সোহরাব হোসেনসহ অন্তত ৩০ সাংবাদিক গুরুতর আহত হয়েছেন।
হামলার শিকার সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সভাপতি আবুল কাশেম বলেন, আমরা শান্তিপূর্ণভাবে প্রেসক্লাবে একটি সভা করার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। ঠিক সেই মুহূর্তে আবু সাঈদ ও আব্দুল বারীর নেতৃত্বে আলিপুর থেকে আনা ভাড়াটে সন্ত্রাসী ও মাদকাসক্তরা আমাদের উপর পরিকল্পিতভাবে হামলা করে। তাদের হামলায় আমাদের অন্তত ৩০ জন সাংবাদিক ও সদস্য আহত হয়েছেন।
তিনি আরও অভিযোগ করেন, আবু সাঈদ ও আব্দুল বারী দীর্ঘদিন ধরে অবৈধভাবে প্রেসক্লাব দখল করে রেখেছেন এবং তাদের মতের বিরুদ্ধে গেলেই এভাবে হামলা ও নির্যাতন চালানো হয়।
এই ন্যাক্কারজনক হামলার ঘটনায় সাতক্ষীরার সাংবাদিক মহলে তীব্র ক্ষোভ ও উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। সাংবাদিকরা অবিলম্বে হামলাকারীদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনার জোর দাবি জানিয়েছেন।
ঘটনার পর থেকে প্রেসক্লাব এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
কুমিল্লার দাউদকান্দি পৌরসভার ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট ঘোষণা করা হয়েছে। বাজেট ঘোষণা করেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও দাউদকান্দি পৌর প্রশাসক রেদওয়ান ইসলাম।
সোমবার (৩০ জুন) দুপুরে পৌরসভা হলরুমে এ বাজেট ঘোষণা করা হয়। বাজেটে সর্বমোট আয় ৪২ কোটি ৯১ লাখ ৫৯ হাজার টাকা ও মোট ব্যয় ৩৬ কোটি ৭৪ হাজার টাকা প্রস্তাব করা হয়। পৌর প্রশাসক রেদওয়ান ইসলাম তার প্রস্তাবিত বাজেটে ২০২৫-২৬ অর্থ বছরে রাজস্ব খাত থেকে ১৩ কোটি ২৩ লাখ ৪১ হাজার ৩ শত ৩১ টাকা ও উন্নয়ন খাত থেকে ২৯ কোটি ৬৮ লাখ ১৮ হাজার ৪৫ টাকা আহরনের লক্ষমাত্রা নির্ধারন করা হয়েছে। বাজেটে উদ্ধৃত্ত ধরা হয়েছে ৬ কোটি ১৭ লাখ ২ হাজার ৩ শত ৭৮ টাকা।
এছাড়াও বাজেটে খাতওয়ারী ব্যয়ের হিসেবে দেখা যায় রাজস্ব খাতে ব্যয় ৯ কোটি ৫৯ লাখ ৫৭ হাজার টাকা এবং উন্নয়ন ব্যয় দুই কোটি ১৫ লাখ টাকা ধরা হয়েছে।
এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা.হাবিবুর রহমান,পৌরসভার নির্বাহী কর্মকর্তা তাজুল ইসলাম, হিসাবরক্ষক শাহাদাত হোসেনসহ পৌরসভার অন্যান্য কর্মকর্তারা।
মন্তব্য