করোনাভাইরাস সংক্রমণের গতি কমে আসা ও শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের টিকা নেয়া সাপেক্ষে আগামী অক্টোবরের শুরুতে আবাসিক হল খুলে দিতে সংস্কার ও সৌন্দর্যবর্ধন কাজের গতি বাড়িয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।
প্রশাসনের এমন তোড়জোড় দেখে শিক্ষার্থীরা আশা করছেন, তাদের অপেক্ষার পালা শেষ হচ্ছে।
এ ছাড়া, হল খোলার পর শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও জাতীয় নীতিমালার আলোকে স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউর (এসওপি) প্রণয়ন করেছে হল প্রশাসন। সেই এসওপি এরইমধ্যে প্রভোস্ট কমিটির সভায় পাস হয়েছে।
উপাচার্যের অনুমোদন পেলেই নতুন এই নীতিমালায় চলবে করোনা পরবর্তী শিক্ষা কার্যক্রম।
নতুন নীতিমালায় হলগুলোতে গণরুম না রাখার পরিকল্পনার কথা বলেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
প্রভোস্ট স্ট্যান্ডিং কমিটির সভাপতি ও বিজয় একাত্তর হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক আব্দুল বাছির নিউজবাংলাকে বলেন, ‘হল খুললে একসঙ্গে অনেক শিক্ষার্থীকে গাদাগাদি করে থাকতে দেয়া হবে না। যারা হলের বৈধ শিক্ষার্থী, যাদের টিকা নেয়া হয়েছে, কেবল তারাই হলে উঠতে পারবেন। যাদের ছাত্রত্ব শেষ, তাদের হল ছেড়ে দিতে হবে। সেসব ফাঁকা আসনে গণরুমের শিক্ষার্থীদের বরাদ্দ দেয়া হবে।’
সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহ থেকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে প্রথম ধাপে অনার্স চতুর্থ বর্ষ ও মাস্টার্সের শিক্ষার্থীদের জন্য আবাসিক হল খুলে দেয়ার কথা জানিয়েছে। তাদের পরীক্ষা শেষ হলে নভেম্বরে দ্বিতীয় ধাপে অনার্স প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীদের হলে তোলার পরিকল্পনা করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।
অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহেই চতুর্থ বর্ষ ও মাস্টার্সের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বাকি শিক্ষার্থীরাও হলে উঠে যাওয়ার চেষ্টা করতে পারে। এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কী ভাবছে, জানতে চাইলে আব্দুর বাছির বলেন, ‘আমাদের কোন পুলিশ, বিজিবি বা র্যাব নেই। শিক্ষার্থীরাই আমাদের পরম অবলম্বন। বিশ্ববিদ্যালয়ের শত বছরের সংস্কৃতি মেনে আশা করি তারা নির্দেশনা মেনে চলবে।’
আবাসিক হলগুলোতে শুরু হয়েছে ব্যাপক সংস্কার কাজ। রোববার বিশ্ববিদ্যালয়ের আটটি আবাসিক হলে গিয়ে দেখা যায়, স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করতে প্রত্যেক হলের প্রবেশপথে বসানো হচ্ছে হাত ধোয়ার বেসিন। দীর্ঘদিনের ধুলোয় মলিন ডায়নিং ক্যান্টিন, ক্যাফেটেরিয়া, রিডিং রুম ধুয়ে মুছে পরিষ্কার করা হচ্ছে।
পরিবর্তন করা হয়েছে টয়লেট ও গোসলখানার ভাঙা পাইপ, কমোড। অনেক দেয়ালে নতুন পলেস্তারা দিয়ে করা হচ্ছে রং। বাগানে লাগানো হচ্ছে নতুন ফুলগাছ, কেটে ছোট করা হচ্ছে মাঠের ঘাস।
১৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে হলগুলোর প্রাধ্যক্ষদের এসব কাজ সম্পন্ন করার জন্য মৌখিক নির্দেশনা দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। নির্ধারিত সময়ে প্রস্তুতি শেষ করতে ছুটির দিনেও কাজ চলছে পুরোদমে।
হল সংস্কারের কাজের অগ্রগতির বিষয়ে সলিমুল্লাহ মুসলিম (এসএম) হলের প্রধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মুজিবুর রহমান বলেন, শিক্ষার্থীদের হাত ধোয়া নিশ্চিত করতে আমাদের হলের প্রবেশ পথে নতুন করে একটি বেসিন বসিয়েছি। প্রতিটি ওয়াশরুমকে নতুন করে সংস্কার করা হয়েছে। আমাদের সংস্কার কাজের প্রায় ৭০ শতাংশ শেষ হয়েছে। আশা করি, বাকি কাজগুলো ১০ তারিখের আগেই শেষ করতে পারব।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. মো. আকরাম হোসেন বলেন, ‘পুরোদমে হল খোলার প্রস্তুতি চলছে, ছুটির দিনেও কাজ চলমান। হলের ২-৩ জন সিনিয়র হাউজ টিউটর সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণ করছেন। ১০ সেপ্টেম্বরে মধ্যে আমাদের হল পূর্ণাঙ্গ প্রস্তুত হবে। যখনই হল খুলে দেয়ার সিদ্ধান্ত আসবে, তখনই আমরা হল খুলে দিতে পারব।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মো. আখতারুজ্জামান বলেন, ‘হল খোলার বিষয়ে আমরা যে পরিকল্পনা নিয়েছি, সেই মোতাবেক আমরা অগ্রসর হচ্ছি। প্রাধ্যক্ষদের যেভাবে প্রস্তুতি নিতে বলা হয়েছে, তারা সেভাবে কাজ করছেন।’
করোনাকালে যেভাবে চলবে আবাসিক হল
বিশ্ববিদ্যালয় খোলার পর শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিতে নেয়া হয়েছে নতুন স্ট্যান্ডার্ড এসওপি।
প্রভোস্ট স্ট্যান্ডিং কমিটির সভাপতি আবদুল বাছির বলেন, ‘হল প্রশাসন ও ছাত্রদের মাধ্যমেই মূলত এই এসওপি বাস্তবায়ন করা হবে। এসওপি তিনটা অংশে বিভক্ত। এগুলো হলো আবাসন, স্বাস্থ্যবিধি ও চিকিৎসা।
নীতিমালায় আবাসনের বিষয়ে বলা হয়েছে, একজন আবাসিক শিক্ষার্থী কোনোভাবে মেঝেতে থাকতে পারবে না। রুমের আশপাশ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। বড় রুমে সর্বোচ্চ চারজন শিক্ষার্থী থাকতে পারবে।
স্বাস্থ্যবিধির পরিকল্পনা নিয়ে বলা আছে, প্রতি শিক্ষার্থীকে রুম থেকে বের হলে অবশ্যই মাস্ক ব্যবহার করতে হবে। হলে প্রবেশের সময় বেসিনে হাত ধুয়ে প্রবেশ করতে হবে। যেখানে সেখানে কফ-থুতু ফেলা যাবে না। মসজিদ-ক্যান্টিন এসব জায়গায় ভিড় এড়িয়ে চলতে হবে।
হলে প্রবেশের পর কোনো শিক্ষার্থী সংক্রমিত হলে যদি গুরুতর অসুস্থ না হয় তবে প্রশাসনকে আগেই জানাতে হবে। কোনো শিক্ষার্থীর করোনা পজিটিভ হলে তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিক্যাল সেন্টারে কোয়ারেন্টিনে রাখা হবে।
তবে আক্রান্তের সংখ্যা বেশি হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শারীরিক শিক্ষা কেন্দ্রের অতিথি কক্ষগুলো মেডিক্যাল সেন্টারের সঙ্গে সমন্বয় করে সেগুলোকে চিকিৎসা কেন্দ্রে রূপান্তর করা হবে।
এ ছাড়া কোনো শিক্ষার্থীর উন্নত চিকিৎসার প্রয়োজন হলে তাদেরকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে চিকিৎসা দেয়া হবে।
অছাত্ররা থাকতে পারবে না আবাসিক হলে
বিশ্ববিদ্যালয়ের হল খোলার পর ছাত্রত্ব নেই এরকম শিক্ষার্থীদের হলে না রাখার বিষয়ে ভাবছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
প্রভোস্ট স্ট্যান্ডিং কমিটির সদস্য সচিব ও প্রক্টর অধ্যাপক একেএম গোলাম রব্বানী বলেন, ‘যাদের ছাত্রত্ব নেই, তারা হলে থাকতে আসবে কেন এই প্রশ্নটা তাদেরও করতে হবে। তাদের পড়াশুনা শেষ, তারা তাদের মতো করে কর্মজীবনে প্রবেশ করবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রত্ব শেষ- এমন কেউ হলে থাকলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
ক্যাম্পাসে স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করা ও হলগুলোতে যাতে শিক্ষার্থীরাই থাকে, তা নিশ্চিত করতে বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্রিয়াশীল ১৩টি ছাত্র সংগঠনের নেতাদের নিয়ে ৭ সেপ্টেম্বর পরিবেশ কমিটির সভা ডেকেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
সেদিন রাত ৯টায় ভার্চুয়াল ওই সভায় বিশ্ববিদ্যালয়ের হল প্রাধ্যক্ষরাও যুক্ত থাকবেন বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক একেএম গোলাম রব্বানী।
ক্যাম্পাসে স্বাস্থ্যবিধি মানার ক্ষেত্রেও ছাত্রসংগঠনগুলো এবং পরিবেশ পরিষদ একমত হয়ে সহযোগিতা করবে বলে আশা প্রকাশ করেন প্রক্টর।
আরও পড়ুন:এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফলাফলে সন্তুষ্ট না হওয়া শিক্ষার্থীদের খাতা চ্যালেঞ্জ বা ফল পুনর্নিরীক্ষণের আবেদন শুরু হয়েছে।
আজ শুক্রবার থেকে আগামী ১৭ জুলাই পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা ফল পুনঃনিরীক্ষণের আবেদন করতে পারবে।
আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
শুধু টেলিটক সিম ব্যবহার করে ফল পুনর্নিরীক্ষণের আবেদন করতে পারবেন শিক্ষার্থীরা। এক্ষেত্রে প্রতি বিষয়ের জন্য নির্ধারিত আবেদন ফি লাগবে ১৫০ টাকা।
পুনর্নিরীক্ষণের আবেদন করতে মোবাইলের মেসেজ অপশনে গিয়ে টাইপ করতে হবে- RSC<Space> Board Name (First 3 letters)<Space>Roll<Space>Subject Code লিখে পাঠিয়ে দিতে হবে ১৬২২২ নাম্বারে। একাধিক Subject Code Type এর ক্ষেত্রে কমা (,) ব্যবহার করতে হবে। যেমন-১০১,১০২,১০৩।
উল্লেখ্য, চলতি বছরের এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফলাফল গতকাল বৃহস্পতিবার প্রকাশিত হয়েছে। এ বছর দেশের ১১টি শিক্ষা বোর্ডে গড় পাসের হার ৬৮ দশমিক ৪৫ শতাংশ।
এ বছর এসএসসি পরীক্ষায় শতভাগ পরীক্ষার্থী পাস করা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংখ্যায় বড় ধরনের অবনতি লক্ষ করা গেছে। গত বছরের শতভাগ পাস করা প্রতিষ্ঠানের তুলনায় এবার সেই সংখ্যা দাঁড়িয়েছে এক-তৃতীয়াংশেরও নিচে।
ফল বিশ্লেষণে দেখা গেছে, মাত্র ৯৮৪টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শতভাগ শিক্ষার্থী পাস করেছেন। অথচ, গত বছর অর্থাৎ, ২০২৪ সালে শতভাগ পাস করা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ছিল ২ হাজার ৯৬৮টি। সেই হিসাবে এবার শতভাগ পাস করা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কমেছে ১ হাজার ৯৮৪টি।
অন্যদিকে, ১৩৪টি প্রতিষ্ঠানের কোনো পরীক্ষার্থী পাস করতে পারেনি। গতবছর শতভাগ ফেল করা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ছিল ৫১টি। সে হিসেবে শতভাগ ফেল করা প্রতিষ্ঠান বেড়েছে ৮৩টি।
বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) দুপুরে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড ঢাকা, রাজশাহী, কুমিল্লা, যশোর, চট্টগ্রাম, বরিশাল, সিলেট, দিনাজপুর ও ময়মনসিংহ এবং বাংলাদেশ মাদরাসা শিক্ষা বোর্ড ও বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ড একযোগে ফল প্রকাশ করেছে।
বিগত বছরগুলোর মতো এবার ফল প্রকাশ ঘিরে কোনো ধরনের আনুষ্ঠানিকতা রাখা না হলেও সার্বিক বিষয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড ঢাকার সভাকক্ষে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় কথা বলেন বাংলাদেশ আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটি ও ঢাকা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. খন্দকার এহসানুল কবির।
এবার এসএসসি ও সমমান পরীক্ষা শুরু হয়েছিল গত ১০ এপ্রিল। পরীক্ষা শেষ হয় ১৩ মে। চলতি বছর ৯টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডের অধীনে এসএসসি পরীক্ষায় ১৪ লাখ ৯০ হাজার ১৪২ জন শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেছে, যার মধ্যে ছাত্র ৭ লাখ ১ হাজার ৫৩৮ জন এবং ছাত্রী ৭ লাখ ৮৮ হাজার ৬০৪ জন।
এ ছাড়াও মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডের অধীনে ২ লাখ ৯৪ হাজার ৭২৬ জন এবং কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে ১ লাখ ৪৩ হাজার ৩১৩ জন পরীক্ষার্থী ছিল।
উল্লেখ্য, গত বছরের তুলনায় এবার প্রায় এক লাখ পরীক্ষার্থী কম ছিল। এবার ফল তৈরি হয়েছে বাস্তব মূল্যায়ন নীতিতে।
এ বছর ঢাকা শিক্ষাবোর্ডের অধীনে ৮টি কেন্দ্রে বিদেশি পরীক্ষার্থীরা অংশ নিয়েছেন, পাসের হার ৮৭ দশমিক ৩৫ শতাংশ।
৮টি কেন্দ্র থেকে মোট ৪২৭ জন পরীক্ষার্থী অংশ নিয়েছিলেন।
তাদের মধ্যে ৩৭৩ জন উত্তীর্ণ হয়েছেন আর অনুত্তীর্ণ পরীক্ষার্থী ৫৪ জন। ১টি প্রতিষ্ঠানের শতভাগ শিক্ষার্থী পাস করেছেন।
বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) দুপুর ২টার দিকে ঢাকা, রাজশাহী, কুমিল্লা, যশোর, চট্টগ্রাম, বরিশাল, সিলেট, দিনাজপুর ও ময়মনসিংহ এবং বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড ও বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ড একযোগে এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফল প্রকাশ করেছে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড।
এবার সারাদেশে মোট পাসের হার ৬৮ দশমিক ৪৫ শতাংশ এবং জিপিএ ফাইভ পেয়েছেন এক লাখ ৩৯ হাজার ৩২ জনে। গত বছর পাসের হার ছিল ৮৩ দশমিক শূন্য ৩ শতাংশ। আর জিপিএ ফাইভ পেয়েছিল এক লাখ ৮২ হাজার ১২৯ জন।
এ বছর সারা দেশের ৯টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ড, মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড ও কারিগরি শিক্ষা বোর্ডে ১৯ লাখ ৩৬ হাজার ৫৭৯ পরীক্ষার্থী অংশ নিয়েছেন। মোট উপস্থিতি ছিল ১৯ লাখ আট হাজার ৮৬ জন। তাদের মধ্যে উত্তীর্ণ পরীক্ষার্থীর সংখ্যা তেরো লাখ তিন হাজার ৪২৬ জন।
বাংলাদেশ মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডের অধীনে চলতি বছরের দাখিল পরীক্ষায় পাসের হার ৬৮ দশমিক ৯ শতাংশ। এ বোর্ডে সারাদেশে জিপিএ-৫ পেয়েছেন ৯ হাজার ৬৬ জন।
বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) দুপুর ২টার দিকে এ ফল প্রকাশ করা হয়।
চলতি বছরের এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার প্রকাশিত ফলাফলে দেখা গেছে, এ বছর দেশের ১১টি শিক্ষা বোর্ডে গড় পাসের হার ৬৮ দশমিক ৪৫ শতাংশ। গত বছর অর্থাৎ, ২০২৪ সালে গড় পাসের হার ছিল ৮৩ দশমিক ০৪ শতাংশ। সে হিসাবে পাসের হার অনেক কমেছে।
ছাত্রীদের পাসের হার ৭১.০৩ শতাংশ এবং ছাত্রদের পাসের হার ৬৫.৮৮ শতাংশ। সেই হিসাবে এবারও পাসের হারে এগিয়ে রয়েছেন ছাত্রীরা। এ নিয়ে টানা ১০ বছর এসএসসিতে পাসের হারে এগিয়ে ছাত্রীরা।
সাউথইস্ট ইউনিভার্সিটি (SEU) সামার সেমিস্টার ২০২৫-এ ভর্তি হওয়া নতুন শিক্ষার্থীদের স্বাগত জানাতে ২ ও ৩ জুলাই ২০২৫ তারিখে বিশ্ববিদ্যালয়ের মাল্টিপারপাস দুইদিনব্যাপী নবীন বরণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন একাডেমিক স্কুলের উদ্যোগে চারটি পৃথক সেশনের মাধ্যমে আয়োজিত এই ওরিয়েন্টেশন প্রোগ্রামের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের একাডেমিক যাত্রাকে স্বাগত জানানোর পাশাপাশি গুরুত্বপূর্ণ দিকনির্দেশনা প্রদান করা হয়।
২ জুলাই প্রথম সেশনে সাউথইস্ট ইউনিভার্সিটির স্কুল অব সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং (SSE) এর অধীনে কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং (CSE) বিভাগের শিক্ষার্থীদের স্বাগত জানানো হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন ডেটাসফট সিস্টেমস বাংলাদেশ লিমিটেড-এর প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মঞ্জুর মাহমুদ। একই দিনে দ্বিতীয় সেশনে SSE-এর আওতাধীন আর্কিটেকচার, ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং (EEE), এবং টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থীদের জন্য ওরিয়েন্টেশন প্রোগ্রাম অনুষ্ঠিত হয়। এ সেশনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন, বাংলাদেশ (IEB)-এর টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং ডিভিশনের চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার মোহিউদ্দিন আহমেদ (সেলিম)।
৩ জুলাই তৃতীয় সেশনে স্কুল অব আর্টস অ্যান্ড সোশ্যাল সায়েন্সেস (SASS) অর্থনীতি, ইংরেজি ও বাংলা বিভাগের নতুন শিক্ষার্থীদের স্বাগত জানায়। এ সেশনে প্রধান অতিথি ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের প্রফেসর এবং SANEM-এর চেয়ারম্যান অধ্যাপক বাজিউল হক খোন্দকার।
সেদিনই চতুর্থ ও শেষ সেশনে সাউথইস্ট বিজনেস স্কুল (SBS) তাদের বিবিএ ও এমবিএ প্রোগ্রামে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীদের জন্য ওরিয়েন্টেশন আয়োজন করে। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মো. মাহবুবুর রহমান, এফসিএ, অ্যাডিশনাল ম্যানেজিং ডিরেক্টর এবং সিটি ব্যাংক পিএলসি-এর সিএফও। তিনি শিক্ষার্থীদের উদ্ভাবনী চিন্তাভাবনা এবং নেতৃত্বের গুনাবলী অর্জনের আহ্বান জানান।
সবগুলো সেশনে সভাপতিত্ব করেন সাউথইস্ট ইউনিভার্সিটির ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. ইউসুফ মাহবুবুল ইসলাম। এছাড়া প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. এম. মোফাজ্জল হোসেন এবং রেজিস্ট্রার মেজর জেনারেল মো. আনোয়ারুল ইসলাম, SUP, ndu, psc (অব.) শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বক্তব্য রাখেন। বিভিন্ন সেশনে সংশ্লিষ্ট স্কুলের ডিন ও বিভাগের চেয়ারম্যানগণও উপস্থিত ছিলেন।
এই ওরিয়েন্টেশন প্রোগ্রামগুলোর মূল লক্ষ্য ছিল নতুন শিক্ষার্থীদের বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক পরিবেশ, মূল্যবোধ ও বিভিন্ন সুবিধার সঙ্গে পরিচিত করিয়ে দেওয়া, যাতে তারা একটি প্রাণবন্ত বিশ্ববিদ্যালয় জীবন শুরু করতে পারে।
৪৫তম বিসিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের ভাইভা শুরু হবে আগামী ৮ জুলাই থেকে। বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানায় বাংলাদেশ পাবলিক সার্ভিস কমিশন পিএসসি।
এবার চাকরি প্রত্যাশীরা তাদের আবেদনের পছন্দক্রম পরিবর্তন করতে পারবেন কিংবা আবেদনের ক্রমও বহাল রাখতে পারবেন সাক্ষাৎকারে অংশগ্রহণ করার আগে। তবে পছন্দক্রম পরিবর্তনের ফরমটি তাৎক্ষণিক চাকরিপ্রার্থীদের সরাসরি হাতে সরবরাহ করা হবে এবং তা পূরণ করে সাক্ষাৎকার বোর্ডে জমা দিতে হবে।
৪৫তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষায় সাময়কিভাবে উত্তীর্ণ প্রার্থীদের মধ্যে সাধারণ ক্যাডারে ২০৬ জন, সাধারণ ও কারিগরি /পেশাগত উভয় ক্যাডারে ১৮১ জন এবং শুধু কারিগরি/পেশাগত ক্যারের পদগুলোর ৬৫ জনসহ মোট ৪৫২ জন প্রার্থীর সাক্ষাৎকারের সময়সূচি প্রকাশ করা হয়েছে, যা কমিশনের ওয়েবসাইটে পাওয়া যাবে।
বাংলাদেশে চীন দূতাবাস কর্তৃক আয়োজিত বাংলাদেশ উচ্চশিক্ষা প্রতিনিধিদলের সঙ্গে চীন সফরে যোগদান করবেন কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ। আগামী ৬ জুলাই থেকে ১১ জুলাই পর্যন্ত (ভ্রমণ সময় ব্যতীত) মোট ৬ দিনের সফরে যাচ্ছেন তিনি।
বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। গত পহেলা জুলাই শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব এএসএম কাশেম স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনও জারি করা হয়।
মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, ভ্রমণ সংক্রান্ত সকল খরচ বাংলাদেশে গণপ্রজাতন্ত্রী চীন দূতাবাস বহন করবেন। এতে বাংলাদেশ সরকার বা বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনও আর্থিক সম্পৃক্ততা থাকবেন না। মন্ত্রণালয়কে অবহিত করে ভ্রমণ শেষে দেশে ফিরে কর্মস্থলে যোগদান করবেন। ভ্রমণের একটি প্রতিবেদন তাঁর প্রত্যাবর্তনের ১৫ (পনের) কার্যদিবসের মধ্যে মন্ত্রণালয়ে পাঠাতে হবে। এছাড়া উপাচার্যের অনুপস্থিতিতে বিশ্ববিদ্যালয়ে উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম. ইয়াকুব আলী উপাচার্যের নিয়মিত দায়িত্ব পালন করবেন।
ইবি উপাচার্যের ব্যক্তিগত সচিব (পিএস) গোলাম মাহফুজ মঞ্জু জানান, উপাচার্যের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। আগামী ৬ তারিখে উপাচার্যের সফরে যাবেন। তিনি উচ্চশিক্ষা বিষয়ক ইউজিসির চেয়ারম্যানের অধীনে একটি প্রতিনিধি দলের সঙ্গে যাচ্ছেন।
ইবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ জানান, ‘উচ্চশিক্ষা বিষয়ক ইউজিসির অধীনে একটা বড় প্রতিনিধিদল নিয়ে চীন সফরে যাওয়া হচ্ছে। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি), চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি), সিলেট বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (সাস্ট) উপাচার্যগণ সঙ্গে থাকবেন।
মন্তব্য