করোনাভাইরাস সংক্রমণের গতি কমে আসা ও শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের টিকা নেয়া সাপেক্ষে আগামী অক্টোবরের শুরুতে আবাসিক হল খুলে দিতে সংস্কার ও সৌন্দর্যবর্ধন কাজের গতি বাড়িয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।
প্রশাসনের এমন তোড়জোড় দেখে শিক্ষার্থীরা আশা করছেন, তাদের অপেক্ষার পালা শেষ হচ্ছে।
এ ছাড়া, হল খোলার পর শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও জাতীয় নীতিমালার আলোকে স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউর (এসওপি) প্রণয়ন করেছে হল প্রশাসন। সেই এসওপি এরইমধ্যে প্রভোস্ট কমিটির সভায় পাস হয়েছে।
উপাচার্যের অনুমোদন পেলেই নতুন এই নীতিমালায় চলবে করোনা পরবর্তী শিক্ষা কার্যক্রম।
নতুন নীতিমালায় হলগুলোতে গণরুম না রাখার পরিকল্পনার কথা বলেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
প্রভোস্ট স্ট্যান্ডিং কমিটির সভাপতি ও বিজয় একাত্তর হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক আব্দুল বাছির নিউজবাংলাকে বলেন, ‘হল খুললে একসঙ্গে অনেক শিক্ষার্থীকে গাদাগাদি করে থাকতে দেয়া হবে না। যারা হলের বৈধ শিক্ষার্থী, যাদের টিকা নেয়া হয়েছে, কেবল তারাই হলে উঠতে পারবেন। যাদের ছাত্রত্ব শেষ, তাদের হল ছেড়ে দিতে হবে। সেসব ফাঁকা আসনে গণরুমের শিক্ষার্থীদের বরাদ্দ দেয়া হবে।’
সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহ থেকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে প্রথম ধাপে অনার্স চতুর্থ বর্ষ ও মাস্টার্সের শিক্ষার্থীদের জন্য আবাসিক হল খুলে দেয়ার কথা জানিয়েছে। তাদের পরীক্ষা শেষ হলে নভেম্বরে দ্বিতীয় ধাপে অনার্স প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীদের হলে তোলার পরিকল্পনা করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।
অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহেই চতুর্থ বর্ষ ও মাস্টার্সের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বাকি শিক্ষার্থীরাও হলে উঠে যাওয়ার চেষ্টা করতে পারে। এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কী ভাবছে, জানতে চাইলে আব্দুর বাছির বলেন, ‘আমাদের কোন পুলিশ, বিজিবি বা র্যাব নেই। শিক্ষার্থীরাই আমাদের পরম অবলম্বন। বিশ্ববিদ্যালয়ের শত বছরের সংস্কৃতি মেনে আশা করি তারা নির্দেশনা মেনে চলবে।’
আবাসিক হলগুলোতে শুরু হয়েছে ব্যাপক সংস্কার কাজ। রোববার বিশ্ববিদ্যালয়ের আটটি আবাসিক হলে গিয়ে দেখা যায়, স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করতে প্রত্যেক হলের প্রবেশপথে বসানো হচ্ছে হাত ধোয়ার বেসিন। দীর্ঘদিনের ধুলোয় মলিন ডায়নিং ক্যান্টিন, ক্যাফেটেরিয়া, রিডিং রুম ধুয়ে মুছে পরিষ্কার করা হচ্ছে।
পরিবর্তন করা হয়েছে টয়লেট ও গোসলখানার ভাঙা পাইপ, কমোড। অনেক দেয়ালে নতুন পলেস্তারা দিয়ে করা হচ্ছে রং। বাগানে লাগানো হচ্ছে নতুন ফুলগাছ, কেটে ছোট করা হচ্ছে মাঠের ঘাস।
১৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে হলগুলোর প্রাধ্যক্ষদের এসব কাজ সম্পন্ন করার জন্য মৌখিক নির্দেশনা দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। নির্ধারিত সময়ে প্রস্তুতি শেষ করতে ছুটির দিনেও কাজ চলছে পুরোদমে।
হল সংস্কারের কাজের অগ্রগতির বিষয়ে সলিমুল্লাহ মুসলিম (এসএম) হলের প্রধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মুজিবুর রহমান বলেন, শিক্ষার্থীদের হাত ধোয়া নিশ্চিত করতে আমাদের হলের প্রবেশ পথে নতুন করে একটি বেসিন বসিয়েছি। প্রতিটি ওয়াশরুমকে নতুন করে সংস্কার করা হয়েছে। আমাদের সংস্কার কাজের প্রায় ৭০ শতাংশ শেষ হয়েছে। আশা করি, বাকি কাজগুলো ১০ তারিখের আগেই শেষ করতে পারব।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. মো. আকরাম হোসেন বলেন, ‘পুরোদমে হল খোলার প্রস্তুতি চলছে, ছুটির দিনেও কাজ চলমান। হলের ২-৩ জন সিনিয়র হাউজ টিউটর সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণ করছেন। ১০ সেপ্টেম্বরে মধ্যে আমাদের হল পূর্ণাঙ্গ প্রস্তুত হবে। যখনই হল খুলে দেয়ার সিদ্ধান্ত আসবে, তখনই আমরা হল খুলে দিতে পারব।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মো. আখতারুজ্জামান বলেন, ‘হল খোলার বিষয়ে আমরা যে পরিকল্পনা নিয়েছি, সেই মোতাবেক আমরা অগ্রসর হচ্ছি। প্রাধ্যক্ষদের যেভাবে প্রস্তুতি নিতে বলা হয়েছে, তারা সেভাবে কাজ করছেন।’
করোনাকালে যেভাবে চলবে আবাসিক হল
বিশ্ববিদ্যালয় খোলার পর শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিতে নেয়া হয়েছে নতুন স্ট্যান্ডার্ড এসওপি।
প্রভোস্ট স্ট্যান্ডিং কমিটির সভাপতি আবদুল বাছির বলেন, ‘হল প্রশাসন ও ছাত্রদের মাধ্যমেই মূলত এই এসওপি বাস্তবায়ন করা হবে। এসওপি তিনটা অংশে বিভক্ত। এগুলো হলো আবাসন, স্বাস্থ্যবিধি ও চিকিৎসা।
নীতিমালায় আবাসনের বিষয়ে বলা হয়েছে, একজন আবাসিক শিক্ষার্থী কোনোভাবে মেঝেতে থাকতে পারবে না। রুমের আশপাশ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। বড় রুমে সর্বোচ্চ চারজন শিক্ষার্থী থাকতে পারবে।
স্বাস্থ্যবিধির পরিকল্পনা নিয়ে বলা আছে, প্রতি শিক্ষার্থীকে রুম থেকে বের হলে অবশ্যই মাস্ক ব্যবহার করতে হবে। হলে প্রবেশের সময় বেসিনে হাত ধুয়ে প্রবেশ করতে হবে। যেখানে সেখানে কফ-থুতু ফেলা যাবে না। মসজিদ-ক্যান্টিন এসব জায়গায় ভিড় এড়িয়ে চলতে হবে।
হলে প্রবেশের পর কোনো শিক্ষার্থী সংক্রমিত হলে যদি গুরুতর অসুস্থ না হয় তবে প্রশাসনকে আগেই জানাতে হবে। কোনো শিক্ষার্থীর করোনা পজিটিভ হলে তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিক্যাল সেন্টারে কোয়ারেন্টিনে রাখা হবে।
তবে আক্রান্তের সংখ্যা বেশি হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শারীরিক শিক্ষা কেন্দ্রের অতিথি কক্ষগুলো মেডিক্যাল সেন্টারের সঙ্গে সমন্বয় করে সেগুলোকে চিকিৎসা কেন্দ্রে রূপান্তর করা হবে।
এ ছাড়া কোনো শিক্ষার্থীর উন্নত চিকিৎসার প্রয়োজন হলে তাদেরকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে চিকিৎসা দেয়া হবে।
অছাত্ররা থাকতে পারবে না আবাসিক হলে
বিশ্ববিদ্যালয়ের হল খোলার পর ছাত্রত্ব নেই এরকম শিক্ষার্থীদের হলে না রাখার বিষয়ে ভাবছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
প্রভোস্ট স্ট্যান্ডিং কমিটির সদস্য সচিব ও প্রক্টর অধ্যাপক একেএম গোলাম রব্বানী বলেন, ‘যাদের ছাত্রত্ব নেই, তারা হলে থাকতে আসবে কেন এই প্রশ্নটা তাদেরও করতে হবে। তাদের পড়াশুনা শেষ, তারা তাদের মতো করে কর্মজীবনে প্রবেশ করবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রত্ব শেষ- এমন কেউ হলে থাকলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
ক্যাম্পাসে স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করা ও হলগুলোতে যাতে শিক্ষার্থীরাই থাকে, তা নিশ্চিত করতে বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্রিয়াশীল ১৩টি ছাত্র সংগঠনের নেতাদের নিয়ে ৭ সেপ্টেম্বর পরিবেশ কমিটির সভা ডেকেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
সেদিন রাত ৯টায় ভার্চুয়াল ওই সভায় বিশ্ববিদ্যালয়ের হল প্রাধ্যক্ষরাও যুক্ত থাকবেন বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক একেএম গোলাম রব্বানী।
ক্যাম্পাসে স্বাস্থ্যবিধি মানার ক্ষেত্রেও ছাত্রসংগঠনগুলো এবং পরিবেশ পরিষদ একমত হয়ে সহযোগিতা করবে বলে আশা প্রকাশ করেন প্রক্টর।
আরও পড়ুন:বুয়েট শিক্ষার্থী শহীদ আবরার ফাহাদ স্মৃতি স্মরণে বুয়েট সংলগ্ন পলাশী গোলচত্বরে আগ্রাসন বিরোধী আট স্তম্ভ আজ উদ্বোধন করা হয়েছে।
ইসলামিক ওয়ার্ল্ড এডুকেশনাল, সায়েন্টিফিক অ্যান্ড কালচারাল অর্গানাইজেশন (আইসেস্কো)-এর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ড. রাহিল কামার আজ ৫ অক্টোবর ২০২৫ রবিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খানের সঙ্গে তাঁর কার্যালয়ে সাক্ষাৎ করেন। এসময় একই সংস্থার ফাহমিদা ফাইজা তাঁর সঙ্গে ছিলেন।
সাক্ষাৎকালে তাঁরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং আইসেস্কোর মধ্যে যৌথ সহযোগিতামূলক শিক্ষা ও গবেষণা প্রকল্প গ্রহণের সম্ভাব্যতা নিয়ে আলোচনা করেন। এছাড়া, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘আইসেস্কো চেয়ার’ প্রতিষ্ঠার বিষয়ে তাঁরা ফলপ্রসূ আলোচনা করেন।
উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খান শিক্ষা ও গবেষণার উন্নয়নে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন খ্যাতিমান সংস্থার সঙ্গে অংশীদারিত্ব ও নেটওয়ার্কিং গড়ে তোলার উপর গুরুত্বারোপ করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আসা এবং এই বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে যৌথ সহযোগিতামূলক শিক্ষা ও গবেষণা কার্যক্রম গ্রহণে আগ্রহ প্রকাশ করায় তিনি আইসেস্কো প্রতিনিধিদলের সদস্যদের ধন্যবাদ জানান।
বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কর্মরত এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের ৫০০ টাকা বাড়ি ভাড়া বাড়ার প্রজ্ঞাপনকে প্রত্যাখ্যান করেছে এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণপ্রত্যাশী জোট। একই সঙ্গে ২০ শতাংশ বাড়িভাড়ার দাবিতে আগামী ১২ অক্টোবর থেকে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি পালন করবেন এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীরা।
জানা যায়, গতকাল রোববার অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের বাড়িভাড়া বাড়ানোর পরিপত্র ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়েছে। অর্থ মন্ত্রণালয়ের প্রবিধি শাখার উপসচিব মোসা. শরীফুন্নেসা স্বাক্ষরিত পরিপত্রে বলা হয়, বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কর্মরত এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের বাড়িভাড়া ভাতা শর্ত পালন সাপেক্ষে ১ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে ১ হাজার ৫০০ টাকা নির্ধারণ করা হলো।
এ নিয়ে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণপ্রত্যাশী জোট সভাপতি এবং বাংলাদেশ মাদরাসা শিক্ষক-কর্মচারী ফোরামের সদস্যসচিব অধ্যক্ষ দেলাওয়ার হোসেন আজিজী।
নিজের ফেসবুক আইডিতে দেওয়া এক পোস্টে তিনি লিখেছেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের বাড়িভাড়া ৫০০ টাকা বাড়ার একটি প্রজ্ঞাপন ছড়িয়ে পড়েছে। আমরা এই প্রজ্ঞাপণের ব্যাপারে অর্থ মন্ত্রণালয়ে কথা বলে নিশ্চিত হয়েছি যে প্রজ্ঞাপনটি সঠিক। আমরা ৫০০ টাকা বাড়িভাড়া বাড়ার প্রজ্ঞাপনকে এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণপ্রত্যাশী জোটের পক্ষ থেকে প্রত্যাখ্যান করছি।
তিনি আরো লিখেছেন, ১৩ আগস্ট এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণপ্রত্যাশী জোটের নেতাদের সঙ্গে শিক্ষা উপদেষ্টার নেতৃত্বে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মিটিংয়ের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ২০ শতাংশ বাড়িভাড়া, ১ হাজার ৫০০ টাকা মেডিক্যাল ভাতা এবং কর্মচারীদের জন্য ৭৫ শতাংশ উৎসব ভাতার প্রজ্ঞাপণের দাবিতে পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী আগামী ১২ অক্টোবর থেকে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে লাতাগার অবস্থান কর্মসূচি পালন করবেন এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীরা।
তিনি উল্লেখ করেন, শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে শিক্ষক কর্মচারীদের ২০ শতাংশ অনুযায়ী বাড়িভাড়ার ফাইল অর্থ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের উপসচিব সাইেয়দ এ জেড মোরশেদ আলী।
এর আগে এমপিওভুক্ত শিক্ষায় বৈষম্য নিরসন, সরকারি নিয়মে বাড়িভাড়া, চিকিৎসা ভাতা, শতভাগ উৎসব ভাতা ও জাতীয়করণের দাবিতে গত ১৩ আগস্ট জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে প্রায় এক লাখ শিক্ষক-কর্মচারী মহাসমাবেশ করেন।
ধর্ম উপদেষ্টা আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেছেন, মাদ্রাসা শিক্ষায় এই উপমহাদেশে ঢাকা আলিয়া মাদ্রাসার অবদান উল্লেখযোগ্য। আমি একজন মাদ্রাসার ছাত্র হিসেবে গর্ববোধ করি।
বুধবার রাজধানীর বকশিবাজারে সরকারি মাদ্রাসা-ই-আলিয়ার প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।
ধর্ম উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশসহ এই উপমহাদেশে মাদ্রাসা শিক্ষার ঐতিহ্য শত বছরের পুরনো। যুগে যুগে এই শিক্ষাব্যবস্থা অনেক আধুনিকায়ন হয়েছে। সুশিক্ষার মাধ্যমে এই ঐতিহ্য ধরে রাখতে হবে।
আ ফ ম খালিদ হোসেন আরো বলেন, বাংলাদেশে আলিয়া মাদ্রাসার মতো আড়াইশো বছরের ঐতিহ্য সম্ভবত কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নেই। আলিয়া মাদ্রাসা থেকে সাবেক প্রেসিডেন্ট আব্দুর রহমান বিশ্বাসসহ বহু আলেম-ওলামা বেরিয়ে গেছেন।
তিনি বলেন, এই উপমহাদেশে, মাদ্রাসা শিক্ষা না থাকলে ইসলামের ঐতিহ্য আদর্শ তমুদ্দিন কোন কিছুই বজায় রাখা সম্ভব হতো না। তাই সামাজিক মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠায় মাদ্রাসা শিক্ষার বিকল্প নেই।
তিনি বলেন, মাদ্রাসা থেকে শিক্ষা নিয়ে সমাজে ধর্মীয় মূল্যবোধের বিকাশ ঘটাতে হবে মাদ্রাসার ছাত্রদেরকে। এই শিক্ষাকে ছোট করে দেখলে চলবে না। এর ঐতিহ্য শত বছরের।
উপদেষ্টা আরো বলেন, মাদ্রাসা হল আলেম-ওলামা তৈরীর কারখানা। বর্তমান সরকার মাদ্রাসা শিক্ষার আধুনিকায়নের পাশাপাশি ধর্মীয় শিক্ষাকে গুরুত্ব দিচ্ছে।
উপদেষ্টা বলেন, মাদ্রাসা ছাত্রদেরকে প্রকৃত ধর্মীয় শিক্ষা গ্রহণ করে বাস্তব জীবনে নিজেদের প্রতিভার বিকাশ করাতে হবে। তবেই জীবনে সফলতা সম্ভব।
তিনি বলেন ঢাকা আলিয়া মাদ্রাসার বর্তমান শিক্ষার্থীদেরকে সুশিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে দেশকে এগিয়ে নিতে হবে।সূত্র : বাসস
বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কর্মচারী নিয়োগের ক্ষমতা হারানোর পর এবার প্রধান ও সহকারী প্রধান শিক্ষক পদেও নিয়োগের ক্ষমতাও হারাচ্ছে পরিচালনা পর্ষদ বা ‘গভর্নিং বডি’ ও ‘ম্যানেজিং কমিটি’।
এসব পদে সরকারের তদারকিতে নিয়োগ সুপারিশ প্রক্রিয়া পরিচালনা করা হবে। কোনো প্রক্রিয়ায় বা কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে এ কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে তা নির্ধারণে কমিটি গঠন করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
গতকাল মঙ্গলবার সাংবাদিকদের নিয়ে আয়োজিত এক কর্মশালায় এ তথ্য জানান বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ-এনটিআরসিএর চেয়ারম্যান মো. আমিনুল ইসলাম।
বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধান ও সহকারী প্রধান পদে নিয়োগ সুপারিশ প্রক্রিয়া নিয়ে এনটিআরসিএ চেয়ারম্যান বলেন, ‘সিদ্ধান্ত একটা হয়েছে, আগে প্রধান শিক্ষক, সহকারী প্রধান শিক্ষক, অধ্যক্ষ, উপাধ্যক্ষ পদগুলোতে ম্যানেজিং কমিটি বা গভর্নিং বডি নিয়োগ দিত, এখন এ পদগুলোতে সরকার নিয়োগ দেবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘শিক্ষা মন্ত্রণালয় একটা কমিটি করে দিয়েছে। কমিটি এটা নির্ধারণ করবে, এ পদগুলোতে কোন আদলে নিয়োগ দেবে, কারা করবে, এনটিআরসিএ করবে না, অন্য কেউ করবে কোনটাই এখনও সিদ্ধান্ত হয়নি।’
এ কমিটিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়, এনটিআরসিএ, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর, মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তর ও কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের প্রতিনিধিরা দায়িত্ব পালন করছেন বলেও তুলে ধরেন তিনি।
আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘এ সব পদে নিয়োগে কোন নীতিমালা বা নিয়ম অনুসরণ করা হবে তা এ কমিটি নির্ধারণ করবে।’
আপাতত বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধান ও সহকারী প্রধান শিক্ষক পদের নিয়োগ প্রক্রিয়া স্থগিত রাখা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রবেশ পর্যায়ের শিক্ষক ও প্রভাষক পদে প্রার্থীদের নিয়োগ সুপারিশ করার দায়িত্ব এনটিআরসিএ এর হাতে থাকলেও প্রতিষ্ঠান প্রধান, সহকারী প্রধান ও কর্মচারী পদে নিয়োগের ক্ষমতা ছিল পরিচালনা পর্ষদের হাতে।
গত সোমবার প্রকাশিত এক পরিপত্রে বেসরকারি স্কুল ও কলেজের কর্মচারী পদে নিয়োগ সুপারিশ কমিটির সভাপতি পদ থেকে ‘গভর্নিং বডি’ ও ‘ম্যানেজিং কমিটি’ সরিয়ে ডিসিদের এ দায়িত্ব দেয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ।
বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রবেশ পর্যায়ের নিয়োগ সুপারিশ প্রক্রিয়া নিয়ে জানাতে এ কর্মশালা আয়োজন করে এনটিআরসিএ।
কর্মশালায় এনটিআরসিএ সদস্য এরাদুল হক, মুহম্মদ নূরে আলম সিদ্দিকী, পরিচালক তাসনিম জেবিন বিনতে শেখ, সংস্থাটির সচিব এ এম এম রিজওয়ানুল হক ও সংবাদকর্মীরা অংশ নেন।
ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটি ডিবেট ক্লাব আয়োজিত “জাতীয় বিতর্ক প্রতিযোগিতা ২০২৫”-এর গ্র্যান্ড ফিনালে ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান আজ সোমবার, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫ বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজাকুল হায়দার হলে অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের মাননীয় উপাচার্য প্রফেসর ড. ফরিদ আহমদ সোবহানীর সভাপতিত্বে, প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের মাননীয় উপাচার্য প্রফেসর ড. মোহাম্মদ কামরুল আহসান। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটির বোর্ড অব ট্রাস্টিজের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান আবুল কাসেম হায়দার।
এছাড়া বক্তব্য রাখেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার প্রফেসর মো. শামসুল হুদা, রেজিস্ট্রার ড. আবুল বাশার খান, ডিবেট ক্লাবের কো-অর্ডিনেট ও আইন বিভাগের লেকচারার মেহেরবা সাবরিন, এবং ক্লাবের সভাপতি আইন বিভাগের শিক্ষার্থী সাবিত ইবনে মাহমুদ। অনুষ্ঠানে বিভিন্ন অনুষদের ডিন, বিভাগীয় প্রধান, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তাবৃন্দসহ অসংখ্য শিক্ষার্থীর উপস্থিতি অনুষ্ঠানকে প্রাণবন্ত করে তোলে।
৩২ টি কলেজের অংশগ্রহণে ইন্টার-কলেজ প্রতিযোগিতার ফাইনাল-এ সরকারি বাংলা কলেজ ও সরকারি বিজ্ঞান কলেজ মুখোমুখি হয়। তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতার মাধ্যমে সরকারি বিজ্ঞান কলেজ বিজয়ী হয় এবং সরকারি বাংলা কলেজ রানার আপের গৌরব অর্জন করে। এ পর্বে সেরা বিতার্কিক নির্বাচিত হন সরকারি বাংলা কলেজের শিক্ষার্থী ইমন আহমেদ।
অন্যদিকে, ২৮ টি বিশ্ববিদ্যালয়ের অংশগ্রহণে ইন্টার-ইউনিভার্সিটি প্রতিযোগিতার ফাইনাল-এ নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি এবং বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয় (বুটেক্স) এর মধ্যে লড়াই হয়। এই প্রতিযোগিতায় বুটেক্স বিজয়ী হয় এবং নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি রানার আপ হয়। এ পর্বের সেরা বিতার্কিক নির্বাচিত হন নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী আলভি সালমান।
আয়োজকরা জানান, এ প্রতিযোগিতার মূল উদ্দেশ্য হলো দেশের তরুণ প্রজন্মকে যৌক্তিকতা, মুক্তচিন্তা ও নেতৃত্বের চর্চায় অনুপ্রাণিত করা।
জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো (বিএমইটি) এবং শিল্পখাতের অংশীজনদের যৌথ সহযোগিতায় কোরিয়ান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (কোইকা) নতুন পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপ চালু করবে।
বাংলাদেশের তরুণদের জন্য উপযুক্ত কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করাই বিশেষায়িত প্রশিক্ষণ কর্মসূচি বাস্তবায়ন উদ্যোগের লক্ষ্য।
এ লক্ষ্যে রোববার ঢাকায় এক হোটেলে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. নেয়ামত উল্যা ভূঁইয়া। সরকার ও উন্নয়ন সহযোগী সংস্থার শীর্ষ কর্মকর্তা এবং শিল্পখাতের প্রতিনিধিরাও অংশ নেন।
কোইকা'র পক্ষ থেকে জানানো হয়, এ অংশীদারিত্ব বাংলাদেশে অন্তর্ভুক্তিমূলক ও টেকসই উন্নয়ন ত্বরান্বিত করবে। শিল্পখাতের অভিজ্ঞতা এবং বিএমইটি-এর নেটওয়ার্ককে কাজে লাগিয়ে এ কর্মসূচি প্রাসঙ্গিক ও ফলপ্রসূ কারিগরি প্রশিক্ষণ নিশ্চিত করবে।
মন্তব্য