বাংলাদেশের সোনালি আঁশ পাটের ‘সোনালি দিন’ ফিরে আসার যে সম্ভাবনা দেখা দিয়েছিল, সে আশায় এখন গুড়েবালি। ভবিষ্যতে এই খাত থেকে বেশি বিদেশি মুদ্রা দেশে আসার কোনো লক্ষ্মণও দেখছেন না রপ্তানিকারকরা।
গত ২০২০-২১ অর্থবছরে অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে ১১৬ কোটি ১৫ লাখ (১.১৬ বিলিয়ন) ডলারের পাট ও পাটজাত পণ্য রপ্তানি করে পণ্য রপ্তানি তালিকায় চামড়াকে পেছনে ফেলে দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছিল এই খাত। আগের অর্থবছরের (২০১৯-২০) চেয়ে রপ্তানি বেড়েছিল ৩১ দশমিক ৬৩ শতাংশ।
কিন্তু বছর ঘুরতেই সেই সুদিন ফুরিয়ে গেছে। এক ধাক্কায় পঞ্চম স্থানে নেমে এসেছে পাট খাত।
২০২১-২২ অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে (জুলাই-আগস্ট) মাত্র ১২ কোটি ৭৬ লাখ ডলারের পাট ও পাটজাত পণ্য রপ্তানি করেছে বাংলাদেশ। এই অংক গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ৩৪ দশমিক ৬৬ শতাংশ কম। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে আয় কমেছে আরও বেশি – ৪৭ দশমিক ৪৩ শতাংশ।
অর্থাৎ এই দুই মাসে পাট খাত থেকে যে বিদেশি মুদ্রা অর্জনের লক্ষ্য ধরা হয়েছিল, তার অর্ধেক মাত্র এসেছে।
পাটকল মালিক ও রপ্তানিকারকরা বলছেন, আন্তর্জাতিক বাজারে পাট পণ্যের চাহিদা কমে গেছে। বেড়ে গেছে পলি ফাইবারের চাহিদা। সে কারণে পাট পণ্যের দাম ৩০ থেকে ৩৫ শতাংশ কমে গেছে। সে কারণে রপ্তানিতেও ধস নেমেছে।
বিশ্ব বাজারে পাট পণ্যের চাহিদা না বাড়লে দামও বাড়বে না। সে কারণে আগামী দিনগুলোতে এ খাতের রপ্তানি আয় বাড়ার কোনো সম্ভাবনা দেখছেন না রপ্তানিকারকরা।
রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) বৃহস্পতিবার রপ্তানি আয়ের হালনাগাদ যে তথ্য প্রকাশ করেছে, তাতে দেখা যায়, ২০২১-২২ অর্থবছরের জুলাই-আগস্ট সময়ে পাট ও পাটজাত পণ্য রপ্তানি থেকে ১৬ কোটি ৭৬ লাখ ডলার আয় করেছে বাংলাদেশ। গত বছরের একই সময়ে আয় হয়েছিল ১৯ কোটি ৫৪ লাখ ডলার। এই দুই মাসের লক্ষ্যমাত্রা ধরা ছিল ২৪ কোটি ২৯ লাখ ডলার।
এ হিসাবে জুলাই-আগস্ট সময়ে রপ্তানি কমেছে ৩৪ দশমিক ৬৬ শতাংশ। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে আয় কমেছে ৪৭ দশমিক ৪৩ শতাংশ।
এই দুই মাসে পাটসুতা (জুট ইয়ার্ন) রপ্তানি হয়েছে ৭ কোটি ৯৫ লাখ ডলারের; আয় কমেছে ৪৩ দশমিক ৮৭ শতাংশ। গত অর্থবছরে পাটসুতা রপ্তানিতে ৪১ দশমিক ৬১ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছিল।
জুলাই-আগস্ট সময়ে পাটের তৈরি বস্তা, চট ও থলে রপ্তানি হয়েছে ১ কোটি ৪৬ লাখ ২০ হাজার ডলার। আয় কমেছে ২৯ দশমিক ৫১ শতাংশ। গত অর্থবছর শেষে বেড়েছিল ৩০ দশমিক ১৫ শতাংশ।
পাট ও পাটসুতা দিয়ে হাতে তৈরি বিভিন্ন পণ্য রপ্তানি করে আয় হয়েছে ১ কোটি ৭৩ লাখ ৬০ হাজার ডলার; প্রবৃদ্ধি কমেছে ২২ শতাংশ। অথচ গত অর্থবছরে ১০ শতাংশ বেড়েছিল।
তবে, এই দুই মাসে কাঁচাপাট রপ্তানি ৩ দশমিক ৩৯ শতাংশ বেড়েছে; রপ্তানি হয়েছে ২ কোটি ৪ লাখ ১০ হাজার ডলার। গত বছরের জুলাই-আগস্ট সময়ে রপ্তানি হয়েছিল ১ কোটি ৯৭ লাখ ৪০ হাজার ডলারের কাঁচাপাট।
গত ৩০ জুন শেষ হওয়া ২০২০-২১ অর্থবছরে পাট ও পাটজাত পণ্য রপ্তানি থেকে ১১৬ কোটি ১৪ লাখ ডলার আয় করেছিল বাংলাদেশ। টাকার অংকে (প্রতি ডলার ৮৪ টাকা ৮০ পয়সা) এই অর্থের পরিমাণ ছিল প্রায় ১ হাজার কোটি টাকা। ওই রপ্তানি আগের অর্থবছরের (২০১৯-২০) চেয়ে ৩১ দশমিক ৬৩ শতাংশ বেশি ছিল।
এর আগে এক বছরে এ খাত থেকে এত বেশি বিদেশি মুদ্রা কখনই আসেনি।
স্থানীয় বাজারে পাটে দাম বেশ চড়া
দেশে এখন পাটের ভরা মৌসুম চলছে। রপ্তানি বাজারে মন্দা চললেও স্থানীয় বাজারে পাটের দাম বেশ চড়া। দেশের বিভিন্ন বাজারে প্রতি মণ (৪০ কেজি) পাট ২ হাজার ৮০০ থেকে ৩ হাজার ৪০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে।
দেশের সব জেলাতেই কম-বেশি পাটের চাষ হয়। তবে সবচেয়ে বেশি পাটের চাষ হয় ফরিদপুর জেলায়।
ফরিদপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক হজরত আলী নিউজবাংলাকে বলেন, জেলায় এবার ৮৫ হাজার ৭৭ হেক্টর জমিতে পাটের আবাদ হয়েছে। গত মৌসুমে আবাদ হয়েছিল ৮৪ হাজার ৪২৭ হেক্টর জমিতে। তার আগের মৌসুমে আবাদ হয়েছিল ৮০ হাজার হেক্টর জমিতে।
গত মৌসুমে পাটের ভালো দাম পাওয়ায় এবার কৃষকরা বেশি জমিতে চাষ করেছেন বলে জানান হজরত আলী।
এই মৌসুমে ফরিদপুর জেলায় ১ লাখ ৮৮ হাজার মেট্টিক টন পাট উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে বলে জানান তিনি।
ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলার পাট ব্যবসায়ী বাবলু মিয়া নিউজবাংলাকে বলেন, বাজারে প্রতি মণ পাট ২ হাজার ৮০০ থেকে ৩ হাজার ৪০০ টাকা দরে কিনছেন তারা।
গতবারের চেয়ে দাম বেশি কেন, জানতে চাইলে বাবলু বলেন, ‘গত অর্থবছরে প্রচুর পাটজাত পণ্য রপ্তানি হয়েছিল। এবারও হবে বলে আশা সবার; সে কারণেই দাম বেশি।’
ফরিদপুরের সালথা উপজেলার পাটচাষি শুক্কুর মোল্লা নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এবার পাট উৎপাদনে খরচ বেশি হয়েছে। বাজারে দামও বেশি। সব পাট এখনও বেচিনি। দেখি আরও দাম বাড়ে কিনা। গতবার তো মৌসুমের পর পাটের দাম বেড়ে ৬ হাজার টাকা ছাড়িয়ে গিয়েছিল।’
গতবার ভরা মৌসুমে দেশের বিভিন্ন হাট-বাজারে প্রতি মণ পাট ২ হাজার ২০০ থেকে ২ হাজার ৫০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়েছিল। তবে মৌসুম শেষে ডিসেম্বরের দিকে প্রতি মণ পাটের দাম বেড়ে ৬ হাজার ৭০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়। মে মাস পর্যন্ত ওই বাড়তি দামে বাজারে পাট বিক্রি হয়।
পাটের সেই সুদিন আর নেই
বাংলাদেশ পাটপণ্য রপ্তানিকারক সমিতির (বিজেজিইএ) চেয়ারম্যান সাজ্জাদ হোসাইন সোহেল নিউজবাংলাকে বলেন, ‘গত অর্থবছরে রপ্তানি বাড়ায় আমরা আশায় বুক বেঁধেছিলাম, আমাদের সোনালী আঁশ পাটের সুদিন হয়তো ফিরে আসতে শুরু করেছে। কিন্তু এখন মনে হচ্ছে, সে আশায় গুড়েবালি।
‘সবাই আশা করেছিল, কোভিড-১৯ মহামারি পরিবেশের ক্ষেত্রে নতুন ভাবনার জন্ম দেওয়ায় পাট পণ্যের চাহিদা অনেক বেড়ে যাবে। এ খাতের সম্ভাবনাও দেখা দেবে নতুন করে। কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে, বিভিন্ন দেশের ক্রেতারা পাটের পরিবর্তে কটন ও সিল্ক দিয়ে তৈরি পণ্য কিনছে। পলি ফাইবারও ব্যবহার করছে অনেকে। পাটজাত পণ্যের দাম অনেক বেড়ে যাওয়ায় এ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিলেন তারা।’
তিনি বলেন, ‘গত বার যে আমাদের রপ্তানি ৩২ শতাংশের মতো বেড়েছিল, তা কিন্তু দাম বেশি হওয়ার কারণে। পরিমাণগত দিক দিয়ে এ খাতের রপ্তানি বাড়েনি। যে বেশি আয় হয়েছিল, সেটা আসলে দাম বেশি হওয়ার কারণে হয়েছে।’
চলতি অর্থবছরের শুরুতে পাট খাতের রপ্তানি কমার আরেকটি কারণ ব্যাখ্যা করে সাজ্জাদ হোসাইন বলেন, ‘গতবার আমাদের পাটের স্থানীয় বাজার খুবই অস্থির ছিল। উৎপাদন কম হয়েছিল। ভরা মৌসুমে প্রতি মণ পাট ২ হাজার ১০০ থেকে ২ হাজার ৩০০ টাকা থাকলে মৌসুমের পর নভেম্বর-ডিসেম্বরে পাটের দাম সাড়ে ৬ হাজার টাকা ছাড়িয়ে যায়। মে মাস পর্যন্ত সেই দাম ছিল। তখন অতো বেশি দামে মিল মালিকরা পাট কেনেনি। অনেক মিল বন্ধ ছিল। রপ্তানি অর্ডার নেয়নি। সে কারণেই এখন পাট খাত থেকে রপ্তানি আয় কম আসছে।
‘গত অর্থবছরের শেষের দিকে (মে-জুন) যে অর্ডারগুলো নেওয়া হয়েছিল, সেগুলোর রপ্তানি আয়ই নতুন অর্থবছরের জুলাই-আগস্ট মাসে এসেছে। যেহেতু অর্ডার কম ছিল; সে কারণে আয়ও কম এসেছে।’
একই কথা বলেন বেসরকারি পাটকল মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ জুট স্পিনার্স অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান করিম জুট মিলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জাহিদ মিয়া।
নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘গতবার স্থানীয় বাজার অস্থির হওয়ার কারণে মিল মালিক ও রপ্তানিকারকরা রপ্তানি বাজার নিয়ে সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা করতে পারেননি। সে কারণেই এবার রপ্তানিতে হোঁচট খেয়েছে। আমার মনে হয় না, গত অর্থবছরের মতো পাট খাত থেকে রপ্তানি আয় আর কখনও দেশে আসবে। এতোদিন, ইউরোপ-আমেরিকাসহ বিভিন্ন দেশের মানুষ পরিবেশের বিষয়টি মাথায় রেখে পাটের তৈরি বস্তা, চট ও থলে ব্যবহার বাড়িয়ে দিয়েছিল। কিন্তু হঠাৎ করে তারা আবার পলি ফাইবার, কটন ও সিল্কের তৈরি পণ্য কেনা বাড়িয়ে দিয়েছে। জানি না, পাটের রপ্তানি বাজারের ভবিষ্যৎ কী হবে।’
পঞ্চম স্থানে নেমে গেছে পাট
ইপিবির তথ্যে দেখা যায়, ২০২১-২২ অর্থবছরের জুলাই-আগস্ট সময়ে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য রপ্তানি থেকে ১৭ কোটি ৪৭ লাখ ডলার আয় করেছে বাংলাদেশ। যা গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ১৩ শতাংশ বেশি।
এই দুই মাসে কৃষি পণ্য রপ্তানি থেকে আয় হয়েছে ২০ কোটি ৭২ লাখ ডলার। প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১৬ দশমিক ২৫ শতাংশ।
হোম টেক্সটাইল রপ্তানি থেকে জুলাই-আগস্ট সময়ে আয় হয়েছে ১৭ কোটি ৫০ লাখ ডলার। গত বছরের একই সময়ের চেয়ে আয় বেড়েছে ৪ দশমিক ১৮ শতাংশ।
অন্যদিকে বরাবরের মতোই সবচেয়ে বেশি বিদেশি মুদ্রা এসেছে তৈরি পোশাক রপ্তানি থেকে ৫৬৪ কোটি ডলার। মোট রপ্তানির ৮২ শতাংশের বেশি এসেছে এই খাত থেকে।
এই দুই মাসের হিসাবে দেখা যাচ্ছে, গত অর্থবছরের বাংলাদেশের রপ্তানি পণ্য তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে থাকা পাট খাতকে পেছনে ফেলে দ্বিতীয় স্থান দখল করেছে কৃষি পণ্য। তৃতীয় স্থানে আছে চামড়া। চতুর্থ হোম টেক্সটাইল। আর পঞ্চম স্থানে নেমে এসেছে পাট খাত।
আরও পড়ুন:শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ৪৪তম শাহাদাৎ বার্ষিকী উপলক্ষে গত ০২ জুন, সোমবার আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করে জনতা ব্যাংক জাতীয়তাবাদী অফিসার কল্যাণ সমিতি।
জনতা ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত উক্ত সভায় পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান মুহঃ ফজলুর রহমান প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন। ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোঃ মজিবর রহমান, উপব্যবস্থাপনা পরিচালক মোঃ গোলাম মরতুজা, মোঃ ফয়েজ আলম ও মোঃ আশরাফুল আলম বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন। সংগঠনের সভাপতি সাইফুল আবেদিন তালুকদারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উক্ত সভা সঞ্চালনায় ছিলেন কার্যকরী সভাপতি শাহ জাহান ও সাধারণ সম্পাদক মোঃ ইকবাল হোসেন। অনুষ্ঠানে সংগঠনের সিনিয়র সহসভাপতি এস. এফ. এম. মুনির হোসেন, সহসভাপতি মজিবুর রাহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ ছানোয়ার হোসেনসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ ও প্রধান কার্যালয়ের নির্বাহী, কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। সভা শেষে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের মাগফেরাত কামনা করে বিশেষ দোয়া অনুষ্ঠিত হয়।
১০ লাখ টাকা পর্যন্ত সঞ্চয়পত্র কেনায় আয়কর রিটার্ন জমার প্রমাণপত্র দেখাতে হবে না। আবার ক্রেডিট কার্ড নেওয়ার সময় রিটার্ন জমার প্রমাণপত্র লাগবে না। ট্রেড লাইসেন্স নিতেও রিটার্ন জমার প্রমাণপত্র লাগবে না। বাজেটে রিটার্ন জমার প্রমাণপত্র দাখিলের বাধ্যবাধকতায় কিছু পরিবর্তন আনা হয়েছে।
আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে রিটার্ন জমার প্রমাণপত্রের বাধ্যবাধকতায় এসব পরিবর্তন আনা হয়েছে। এত দিন ৪৬টি সেবায় রিটার্ন জমার প্রমাণপত্র দেখানোর বাধ্যবাধকতা ছিল।
এখন ১১ ধরনের সেবা নিতে রিটার্ন দাখিলের প্রমাণপত্র দেখাতে হবে না। শুধু কর শনাক্তকরণ নম্বরধারীদের (টিআইএন) সিস্টেম জেনারেটেড প্রত্যয়নপত্র দাখিল করলেই হবে। ওই ১১টি সেবা হলো সিটি করপোরেশন বা পৌরসভা এলাকায় নতুন ট্রেড লাইসেন্স গ্রহণে; সমবায় সমিতির নিবন্ধন প্রাপ্তিতে; সাধারণ বিমার তালিকাভুক্ত সার্ভেয়ারের নতুন লাইসেন্স গ্রহণে; ক্রেডিট কার্ড গ্রহণ ও নবায়নে; চিকিৎসক, দন্ত চিকিৎসক, আইনজীবী, চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট, কস্ট অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট অ্যাকাউন্ট্যান্ট, চার্টার্ড সেক্রেটারি, আইনজীবী ও কর আইনজীবী, অ্যাকচুয়ারি, প্রকৌশলী, স্থপতি, সার্ভেয়ার হিসেবে কোনো স্বীকৃত পেশাজীবী সংস্থার সদস্যপদ গ্রহণে; পাঁচ লাখ টাকার অধিক পোস্ট অফিস সঞ্চয়ী হিসাব খোলায়; এমপিওভুক্তির মাধ্যমে সরকারের কাছ থেকে দশম গ্রেড বা তদূর্ধ্ব পদমর্যাদার কর্মচারীর কোনো অর্থ প্রাপ্তিতে; স্বাভাবিক ব্যক্তি করদাতাদের ক্ষেত্রে মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিস বা মোবাইল ব্যাংকিং বা ইলেকট্রনিক উপায়ে টাকা স্থানান্তরের মাধ্যমে এবং মোবাইল ফোনের হিসাব রিচার্জের মাধ্যমে কমিশন, ফি বা অন্য কোনো অর্থ প্রাপ্তিতে; স্ট্যাম্প, কোর্ট ও কার্টিজ পেপারের ভেন্ডর বা দলিল লেখক হিসেবে লাইসেন্স নিবন্ধন ও তালিকাভুক্তিতে; ত্রি-চক্র মোটরযানের নিবন্ধন, মালিকানা পরিবর্তন বা ফিটনেস নবায়নে; ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে ই-কমার্স ব্যবসার ক্ষেত্রে লাইসেন্সিং অথরিটির কাছ থেকে লাইসেন্স গ্রহণে।
আগামী ২০২৫-২৬ অর্থ বছরের প্রস্তাবিত বাজেটে সরকারি কর্মচারীদের জন্য বিশেষ সুবিধার পরিমাণ বৃদ্ধির প্রস্তাব করেছেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ।
আজ সোমবার (২ জুন) বাংলাদেশ টেলিভিশনে ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট বক্তৃতায় অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ এ কথা বলেন। এটি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রথম ও দেশের ইতিহাসে ৫৪তম বাজেট।
২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট ঘোষণার সময় অর্থ উপদেষ্টা বলেন, আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য মোট ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ের প্রস্তাব করছি, যা জিডিপির ১২.৭ শতাংশ। এর মধ্যে পরিচালনসহ অন্যান্য খাতে মোট ৫ লাখ ৬০ হাজার কোটি টাকা এবং বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে ২ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করছি।
তিনি বলেন, এ প্রসঙ্গে উল্লেখ করতে চাই যে, ২০১৫ সালের পর এখন পর্যন্ত বেতন কাঠামো প্রণীত না হওয়ার বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে এবারের বাজেটে সরকারি কর্মচারীদের জন্য বিশেষ সুবিধার পরিমাণ বৃদ্ধির প্রস্তাব করছি।
ঘরে বসে যেসব ক্রেতারা কেনাকাটা করতে চান, তাদের জন্য অনলাইন প্ল্যাটফর্ম থেকে কেনাকাটা আগামী অর্থবছর থেকে খানিকটা ব্যয়বহুল হতে পারে।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ই-প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে পণ্য বিক্রয় থেকে কমিশনের ওপর ভ্যাট বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ করতে চাইছে। সেক্ষেত্রে অনলাইন প্ল্যাটফর্মে পণ্যের দাম বেশি হতে পারে।
চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরে এই ভ্যাটের হার ছিল ৫ শতাংশ।
জুলাই অভ্যুত্থানে বদলে যাওয়া বাংলাদেশে ভিন্ন বাস্তবতায় এবার সংসদের বাইরে ভিন্ন আঙ্গিকে পেশ হলো বাজেট। এবার সংসদ না থাকায় সংসদের আলোচনা বা বিতর্কের কোনো সুযোগ থাকছে না। উপদেষ্টা পরিষদের অনুমোদন নিয়ে অর্থ উপদেষ্টা বাজেট উপস্থাপন করার পর ৩০ জুন তা রাষ্ট্রপতির অধ্যাদেশ আকারে কার্যকর করা হবে।
তবে অতীতের রেওয়াজ মেনে বাজেট ঘোষণার পরদিন সংবাদ সম্মেলনে এসে বাজেট নিয়ে বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেবেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ। এছাড়া পুরো জুন মাসজুড়ে অংশীজনদের মতামত নেওয়ার কথাও তিনি বলেছেন।
মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে বিগত মাসগুলোতে সরকারের ধারাবাহিক সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি অবলম্বন করায় এবং সরকারি ব্যয় উল্লেখযোগ্য পরিমাণে হ্রাস পাওয়ায় মূল্যস্ফীতি হ্রাস পেয়েছে। এই ধারা অব্যাহত থাকলে চলতি জুন মাসেই পয়েন্ট টু পয়েন্ট মূল্যস্ফীতি ৮ শতাংশে নেমে আসবে।
অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ আজ সোমবার ২০২৫-২৬ অর্থ বছরের প্রস্তাবিত বাজেট বক্তৃতায় এ কথা বলেন। তার এ বক্তৃতা বাংলাদেশ টেলিভিশনে সরাসরি সম্প্রচার করা হচ্ছে।
অর্থ উপদেষ্টা বলেন, গত বছরের আগস্ট মাসে আমাদের সরকার যখন দেশ পরিচালনার দায়িত্বভার গ্রহণ করে তখন আমাদের সামনে সবচাইতে বড় চ্যালেঞ্জ ছিল নিয়ন্ত্রণহীন মূল্যস্ফীতির লাগাম টেনে ধরে মানুষকে স্বস্তি দেয়া।
তিনি বলেন, ‘মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে বিগত মাসগুলোতে আমরা ধারাবাহিকভাবে সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি অবলম্বন করেছি। এর ফলে নীতি সুদের হার ১৫০ বেসিস পয়েন্ট বৃদ্ধি পেয়ে এখন ১০ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। মুদ্রানীতির আওতায় গৃহীত কার্যক্রমকে সহায়তা করতে সংকোচনমূলক রাজস্বনীতি অনুসরণ করা হয়েছে। অপ্রয়োজনীয় ব্যয় কমিয়ে আনায় সার্বিকভাবে সরকারি ব্যয় উল্লেখযোগ্য পরিমাণে হ্রাস পেয়েছে। এর ইতিবাচক প্রভাব ইতোমধ্যে দৃশ্যমান হয়ে উঠতে শুরু করেছে। পয়েন্ট টু পয়েন্ট মূল্যস্ফীতি ২০২৪ সালের ডিসেম্বর মাসের ১০.৮৯ শতাংশ থেকে হ্রাস পেয়ে ২০২৫ সালের এপ্রিল মাসে ৯ দশমিক ১৭ শতাংশে নেমে এসেছে। আশার কথা হলো এবারের রমজান মাসে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের বাজার স্মরণকালের মধ্যে সবচাইতে স্থিতিশীল ছিল। এ ধারা অব্যাহত থাকলে এই জুন মাসেই পয়েন্ট টু পয়েন্ট মূল্যস্ফীতি ৮ শতাংশের কোঠায় নেমে আসবে। মূল্যস্ফীতির সাথে এ লড়াইয়ের ফলে আমাদের জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার অন্যান্য বছরের তুলনায় কিছুটা কম হতে পারে।’
মূল্যস্ফীতির নিম্নমুখী ধারা অব্যাহত রাখার ক্ষেত্রে বৈদেশিক মুদ্রার বিপরীতে টাকার বিনিময় হার স্থিতিশীল থাকা জরুরি উল্লেখ করে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ স্থিতিশীল থাকা অত্যাবশ্যক। প্রবাস আয়ের প্রবৃদ্ধি আশাব্যঞ্জক হওয়ায় এবং রপ্তানি স্থিতিশীল থাকায় বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ এপ্রিল মাসে বৃদ্ধি পেয়ে ২৭.৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে উন্নীত হয়েছে, যা টাকার বিনিময় হার স্থিতিশীল রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। সে কারণে আমরা বিগত ১৪ মে তারিখে বাজারভিত্তিক মুদ্রা বিনিময় হার চালু করেছি।
১৯৪৪ সালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ-পরবর্তী আর্থিক অস্থিরতা সামাল দিতে গঠিত হয় আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল বা আইএমএফ। এর মূল লক্ষ্য ছিল বৈশ্বিক মুদ্রানীতি সমন্বয় সাধন, আন্তর্জাতিক বাণিজ্যকে উৎসাহ দেওয়া এবং উন্নয়নশীল দেশগুলো অর্থনৈতিক বিপর্যয় থেকে রক্ষা করা। বহু দেশ সংকটে পড়ে এই সংস্থার দ্বারস্থ হয়েছে- কেউ সাময়িকভাবে রক্ষা পেয়েছে, কেউ আবার দীর্ঘমেয়াদি ঋণনির্ভরতার ফাঁদে পড়ে গেছে।
আজ, যখন বৈশ্বিক অর্থনৈতিক ভারসাম্য ক্রমশ পশ্চিমকেন্দ্রীকতা থেকে সরে পূর্ব ও দক্ষিণে ছড়িয়ে পড়ছে, তখন আইএমএফ তার প্রাসঙ্গিকতা ও নৈতিক অবস্থান নিয়ে এক নতুন প্রশ্নের সম্মুখীন।
ঋণ সহায়তা, নাকি ঋণের ফাঁদ?
আইএমএফ সাধারণত এমন শর্তে ঋণ দেয়, যার মধ্যে থাকে কঠোর ব্যয়সংযম, ভর্তুকি হ্রাস, মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ এবং বাজারমুখী সংস্কার; কিন্তু এই শর্তগুলো অনেক সময় জনজীবনে মারাত্মক প্রভাব ফেলে। স্থানীয় শিল্প ধসে পড়ে, বৈষম্য বেড়ে যায় এবং সাধারণ মানুষের জীবন আরও কঠিন হয়ে ওঠে। আর্জেন্টিনার অভিজ্ঞতা এর এক উল্লেখযোগ্য উদাহরণ। ২০১৮ সালে আইএমএফ ইতিহাসের বৃহত্তম ঋণ প্যাকেজ ৫৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার অনুমোদন করে। ফল ছিল বিপরীত- মুদ্রাস্ফীতি ৫০ শতাংশ ছাড়িয়ে যায়, দারিদ্র্য আরও বেড়ে যায় এবং দেশটি আবার মন্দার মুখে পড়ে।
এই অভিজ্ঞতা প্রমাণ করে শুধু অর্থনৈতিক সমীকরণ দিয়ে কোনো দেশের সামাজিক বাস্তবতা নির্ধারণ চলে না।
আইএমএফের নীতিনির্ধারণ কাঠামো এখনো দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ-পরবর্তী শক্তির ভারসাম্যের প্রতিচ্ছবি। উন্নত দেশগুলো (বিশেষত যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন) সংগঠনের ভোটের অধিকাংশ নিয়ন্ত্রণ করে। ফলে দরিদ্র ও উন্নয়নশীল দেশগুলোর অংশগ্রহণ প্রায় অনুপস্থিত। এই গণতান্ত্রিক ঘাটতি আজ দক্ষিণের রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে গভীর অসন্তোষ ও অবিশ্বাসের জন্ম দিচ্ছে।
বিকল্প প্রতিষ্ঠানের উত্থান
এই প্রেক্ষাপটে বিকল্প আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো যেমন- নিউ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (NDB), এশিয়ান ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংক (AIIB) এবং ল্যাটিন আমেরিকান রিজার্ভ ফান্ড (FLAR) নতুন করে আশার আলো দেখাচ্ছে। (NDB) এর সহায়তা তুলনামূলকভাবে শর্তমুক্ত এবং অংশগ্রহণমূলক। এখানে প্রতিটি দেশের ভোটের ও প্রতিনিধিত্বের সমান সুযোগ আছে, যা উন্নয়নশীল দেশগুলো আরও আগ্রহী করে তুলেছে। এই প্রতিষ্ঠানগুলো এখন শুধু আর্থিক বিকল্প নয়- এরা এক নতুন উন্নয়ন দর্শনের বাহক। সেই দর্শনে উন্নয়ন নির্ধারিত হয় স্থানীয় বাস্তবতা ও প্রয়োজনকে কেন্দ্র করে, বাইরের চাপ বা রূঢ় শর্ত নয়।
বিশ্ব আজ বহুমেরু। অর্থনৈতিক শক্তি ছড়িয়ে পড়ছে নানা অঞ্চলে। এই বাস্তবতায় টিকে থাকতে হলে আইএমএফকে নিজস্ব কাঠামো ও দর্শনে রূপান্তর আনতে হবে। প্রয়োজন গভর্ন্যান্সের সংস্কার, নীতিনির্ধারণে সমান অংশগ্রহণ, এবং সর্বোপরি সহানুভূতিশীল ঋণ নীতিমালা।
আইএমএফ যদি সত্যিই বৈশ্বিক আর্থিক স্থিতিশীলতার অভিভাবক হতে চায়, তাহলে তাকে হতে হবে আরও অন্তর্ভুক্তিমূলক, ন্যায়ভিত্তিক, এবং আঞ্চলিক বাস্তবতাসম্মত এটি শুধু আইএমএফের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার প্রশ্ন নয়; এটি ভবিষ্যৎ প্রজন্মের অর্থনৈতিক ন্যায়বিচার ও সার্বিক উন্নয়নের প্রশ্ন।
জুলাই অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের দুর্নীতি, ব্যাংক জালিয়াতি, করখেলাপি ও পাচার হওয়া অর্থ জব্দ কর তা বাজেটে অন্তর্ভুক্ত করার পরমর্শ দিয়েছেন বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মানীয় ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। এ সময়ে এবারের বাজেট গতানুগতিক হতে যাচ্ছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
শনিবার (৩১ মে) রাজধানীর এফডিসিতে ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রাক-বাজেট ছায়া সংসদ বিতর্ক প্রতিযোগিতায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
এই অর্থনীতিবিদ বলেন, ‘বিগত সরকারের আমলে দুর্নীতি, ব্যাংক জালিয়াতি, করখেলাপি ও পাচারকৃত অর্থ জব্দের মাধ্যমে বাজেটে অন্তর্ভুক্ত করলে তা হতে পারে এবারের বাজেটের একটি অভিনব উৎস।’
‘গত সরকারের রেখে যাওয়া বিদেশি ঋণের চাপ খুবই ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় ছিল। এই সরকারের এই সময়ে অন্যতম সাফল্য ৫০০ কোটি (৫ বিলিয়ন) ডলার পরিশোধ করে বিদেশি ঋণের চাপ কমিয়ে আনা,’ যোগ করেন তিনি।
দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, ‘এই ঋণ বিলিয়ন ডলার করে বছর বছর বাড়ছিল। সামগ্রিকভাবে এই সরকারের সাফল্যের জায়গাটা হলো বহির্খাত, রেমিট্যান্স, রপ্তানি, দায়-দেনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখা, মজুদ বাড়ানো ও টাকার মূল্যমান স্থিতিশীল রাখা।’
তবে আসন্ন ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট গতানুগতিক হতে যাচ্ছে বলে মনে করেন এই অর্থনীতিবিদ। তিনি বলেন, ‘খেলাপি ঋণ আদায়, পাচার হওয়া অর্থ ফেরত এবং করের আওতা বাড়ানোর মতো নতুন কোনো কিছু না থাকায় এবারের বাজেটে কোনো চমক থাকছে না।’
‘যে প্রকল্পগুলো সরকারের কাছে আছে, তা অতিমূল্যায়িত ও তার ৪০ শতাংশ ব্যয়ই ভুয়া। আগের যে প্রকল্পগুলো থেকে রক্তক্ষরণ হতো, সেগুলো অব্যাহত আছে,’ বলেন তিনি।
সিপিডির এই সম্মানীয় ফেলো বলেন, ‘রাজস্ব ব্যয় সঠিকভাবে না করলে করদাতাদের উৎসাহ থাকে না। আমাদের কর কাঠামো বৈষম্যনির্ভর। আমাদের বৈদেশিক খাতে কিছুটা স্থিতিশীলতা অর্জিত হলেও ব্যক্তি খাতে স্থিতিশীলতা ও বিনিয়োগ এখনো আশানুরূপ অর্জিত হয়নি।’
ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি নামের একটি বিতর্ক সংগঠন এই প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছে। এতে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনটির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ।
‘রাজস্ব আহরণ বৃদ্ধি করা আসন্ন বাজেটের প্রধান লক্ষ্য হওয়া উচিত’ শীর্ষক ছায়া সংসদে ময়মনসিংহের আনন্দ মোহন কলেজকে পরাজিত করে ঢাকার বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস এন্ড টেকনোলজির বিতার্কিকরা বিজয়ী হন।
মন্তব্য