সিসিটিভি ক্যামেরা লাগিয়ে প্রশাসনিক ও গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের ওপর নজরদারি করতে গিয়ে ধরা পড়েছে ৪৯৭ জন দালাল।
সারা দেশের বিভিন্ন জেলার পাসপোর্ট অফিস, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) ও সরকারি হাসপাতালে অভিযান চালিয়ে রোববার তাদের আটক করেছে র্যাব ও ভ্রাম্যমাণ আদালত।
আটকের পর ২৪৮ জনকে অর্থদণ্ড ও ২৪৯ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেয়া হয়েছে।
র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন রোববার দুপুরে জানান, চট্টগ্রামের পাঁচলাইশে আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের বাইরে ক্লোজড সার্কিট টেলিভিশন (সিসিটিভি) ক্যামেরা লাগিয়ে দালালরা প্রশাসনের কর্মকর্তা ও গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের মনিটর করছে বলে সংবাদমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে সারা দেশে বিআরটিএ, পাসপোর্ট অফিস ও সরকারি হাসপাতালগুলোতে একযোগে অভিযান শুরু করে র্যাব।
তিনি বলেন, ‘সকাল থেকে সারা দেশে অভিযান শুরু হয়। র্যাবের ১৫টি ব্যাটালিয়ন একযোগে অভিযানে নামে।
‘পাসপোর্ট অফিস, বিআরটিএ কার্যালয় ও সরকারি হাসপাতালসহ যেখানেই দালালদের দৌরাত্ম্য, সেখানেই অভিযান পরিচালনা করছে র্যাব। অভিযানে র্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের নেতৃত্বে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালিত হয়।’
ঢাকা
দালালির অভিযোগে ঢাকা থেকে ৯৬ জন্য দালালকে আটক করা হয়েছে বলে জানিয়েছে র্যাব।
তাদের মধ্যে ১৫ জনকে আগারগাঁও পাসপোর্ট অফিস এলাকা থেকে ও ১৫ জনকে কেরানীগঞ্জের পাসপোর্ট অফিস এলাকা থেকে আটক করে র্যাব-২ ও ১০।
কেরানীগঞ্জের বিআরটিএ অফিস থেকে র্যাব-১০ আটক করেছে ৩৬ জনকে।
ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল এলাকা থেকে দালাল সন্দেহে ৩০ জনকে আটক করেছে র্যাব-৩-এর একটি দল।
র্যাবের কর্মকর্তারা নিউজবাংলাকে আটকের বিষয়টি জানায়।
চট্টগ্রাম
চট্টগ্রাম নগরীর বালুচরা এলাকার বিআরটিএ অফিসে রোববার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে অভিযান চালিয়ে ৩০ জনকে আটক করেছে র্যাব-৭।
র্যাব-৭-এর সিনিয়র সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) নুরুল আবছার নিউজবাংলাকে বলেন, ‘সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে বিআরটিএর এই কার্যালয়ে অভিযান চালিয়ে দালাল ও প্রতারক চক্রের ৩০ সদস্যকে আটক করা হয়েছে।
‘তাদের কাছে লাইসেন্স সম্পর্কিত কিছু কাগজপত্র ও টাকা পাওয়া গেছে। তাদের যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। যাচাই শেষে আটক ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
বরিশাল
বরিশাল নগরীর বিভাগীয় পাসপোর্ট অফিস, শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল ও বরিশাল জেনারেল হাসপাতালে অভিযান চালিয়ে ১৭ জনকে দালালকে আটক করেছে ভ্রাম্যমাণ আদালত।
জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মারুফ দস্তগীরের নেতৃত্বে রোববার সকাল থেকে অভিযান চালানো হয়।
র্যাব-৮-এর উপপরিচালক মেজর জাহাঙ্গীর আলম জানান, দালাল প্রতিরোধে অভিযান চালিয়ে শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল থেকে পাঁচজনকে আটক করে একমাসের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।
জেনারেল হাসপাতাল থেকে আটক পাঁচজনের মধ্যে একজনকে একমাসের কারাদণ্ড, একজনকে ৫ হাজার টাকা জরিমানা ও বাকিরা ছাত্র হওয়ায় মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেয়া হয়েছে।
পাসপোর্ট অফিস থেকে যে সাতজনকে আটক করা হয়েছে তাদের একজনের নামে মামলা হয়েছে। বাকিদের একমাসের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মারুফ দস্তগীর বলেন, ‘জেলা প্রশাসনের মাসিক সভায় দালাল নির্মূলে নাগরিক কমিটির নেতারা দাবি তোলেন। তাদের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে আমরা নগরের বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালিয়েছি।’
ময়মনসিংহ
ময়মনসিংহে বিআরটিএ অফিসে অভিযান চালিয়ে দালালির অভিযোগে ১৪ জনকে আটক করেছে র্যাব।
রোববার বেলা ১১টার দিকে এক ঘণ্টার অভিযানে তাদের আটক করা হয়।
র্যাব-১৪-এর ময়মনসিংহ কার্যালয়ের কোম্পানি কমান্ডার মেজর আখের মোহাম্মদ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আটক ব্যক্তিরা দীর্ঘদিন ধরে বিআরটিএর ড্রাইভিং লাইসেন্স ও গাড়ির ফিটনেস সনদ পাইয়ে দেয়ার কথা বলে গাড়িচালক ও মালিকদের কাছ থেকে টাকা নিতেন। এ সম্পর্কে আমরা তথ্য পাওয়ার পর তাদের আটক করতে অভিযান চালাই।’
জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মনোরঞ্জন বর্মনের নেতৃত্বে চালানো অভিযানে আটক ১৪ জনের মধ্যে ১১ জনকে ১১ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড দেয়া হয়েছে। বাকিরা মোটর মালিক সমিতি ও মোটর শ্রমিক ইউনিয়ন থেকে নিয়োগপ্রাপ্ত হওয়ায় তাদের মুচলেকার বিনিময়ে ছেড়ে দেয়া হয়।
ময়মনসিংহ বিআরটিএর মোটরযান পরিদর্শকের দাবি, ‘আমাদের কার্যালয়ের সঙ্গে কোনো ধরনের দালালের সম্পৃক্ততা নেই। এরা সাধারণ মানুষের দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে বিআরটিএ কার্যালয়ের বাইরে অপতৎপরতা চালিয়ে আসছিল। আমরা কারো কাছ থেকে বাড়তি টাকা নেই না।’
টাঙ্গাইল
টাঙ্গাইল সদর হাসপাতাল, পাসপোর্ট অফিস ও বিআরটিএ অফিস থেকে ২৭ জনকে আটক করেছে র্যাব-১২।
র্যাব-১২-এর কোম্পানি কমান্ডার লেফটেন্যান্ট কমান্ডার আব্দুল্লাহ আল মামুন নিউজবাংলাকে জানান, রোববার দুপুর থেকে অভিযান চালিয়ে টাঙ্গাইলের ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতাল থেকে ১২ জনকে, পাসপোর্ট অফিস থেকে আটজনকে ও বিআরটিএ অফিস থেকে সাতজনকে দালালির অভিযোগে আটক করা হয়।
এরপর ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে জেলা সিনিয়র সহকারী কমিশনার গোলাম মাসুম তাদের সাতদিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেন।
র্যাবের এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে জানান কোম্পানি কমান্ডার আব্দুল্লাহ আল মামুন।
কুমিল্লা
কুমিল্লায় পাসপোর্ট ও বিআরটিএ অফিসে দালালির অভিযোগে ১২ জনকে আটক করেছে ভ্রাম্যমাণ আদালত।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট গোলাম মোস্তফার ভ্রাম্যমাণ আদালত রোববার সকাল নয়টা থেকে বেলা সাড়ে তিনটা পর্যন্ত অভিযান পরিচালনা করেন।
র্যাব-১১-এর কোম্পানি কমান্ডার সাকিব হোসেন নিউজবাংলাকে জানান, বিআরটিএ অফিস, রেসকোর্স ও নোয়াপাড়া থেকে চারজন পাসপোর্ট দালাল ও আটজন বিআরটিএ দালালকে আটক করা হয়।
তাদের বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড ও জরিমানা করা হয়েছে। জরিমানা থেকে আদায় করা হয়েছে ২ লাখ ৮৯ হাজার ৪৫০ টাকা।
মানিকগঞ্জ
মানিকগঞ্জ সদর হাসপাতালে দালালির অভিযোগে নয়জনকে আটক করেছে ভ্রাম্যমাণ আদালত।
জেলা প্রশাসকের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শাহ মোহাম্মদ যোবায়ের রোববার সকালে তাদের আটক করেন।
র্যাব-৪-এর মানিকগঞ্জের কোম্পানি কমান্ডার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার উনু মং নিউজবাংলাকে জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সকালে ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট মানিকগঞ্জ জেলা হাসপাতালে অভিযান পরিচালনা করা হয়। হাসপাতাল চত্বর থেকে চারজন পুরুষ ও পাঁচজন নারীকে আটক করা হয়।
এরপর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ওই চার পুরুষকে সাতদিনের কারাদণ্ড ও পাঁচ নারীকে ৫ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড দেন। একইসঙ্গে ওই নারীদের কাছ থেকে মুচলেকা নেয়া হয়েছে।
নোয়াখালী
নোয়াখালীতে পাসপোর্ট অফিসের সামনে থেকে আটজনকে আটক করেছে র্যাব। র্যাব জানিয়েছে, তারা সেখানে দালালি করেন।
বেগমগঞ্জ উপজেলার গাবুয়ায় রোববার বেলা সাড়ে ১১টা থেকে দুপুর পর্যন্ত র্যাবের নেতৃত্বে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান চালানো হয়।
ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সৈকত রায়হান জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়। তাদের কাছ থেকে সে সময় পাসপোর্টের বিভিন্ন কাগজপত্র উদ্ধার করা হয়। তারা দালালির কথা স্বীকারও করেছেন।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আরও জানান, ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে তাদের তিন থেকে সাতদিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।
হবিগঞ্জ
হবিগঞ্জের পাসপোর্ট অফিসে দালালির অভিযোগে র্যাব ও জেলা প্রশাসনের অভিযানে আটক করা হয়েছে ছয়জনকে।
শহরের ২ নম্বর পুল এলাকায় পাসপোর্ট অফিসের সামনে থেকে রোববার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত তাদের আটক করা হয়।
ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শামছুদ্দিন মো. রেজা নিউজবাংলাকে জানান, আটক ছয়জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড ও জরিমানা করা হয়েছে।
নীলফামারী
র্যাবের অভিযানে নীলফামারীর বিআরটিএ অফিসে দালালির অভিযোগে পাঁচজনকে আটক করা হয়েছে।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের নেজারত ডেপুটি কালেক্টর (এনডিসি) রমিজ আলমের ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে রোববার দুপুরে তাদের প্রত্যেককে ৫০০ টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে। একই সঙ্গে মুচলেকা নেয়া হয়েছে।
র্যাবের কোম্পানি কমান্ডার পুলিশ সুপার সৈয়দ রফিকুল ইসলাম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমাদের কাছে এ বিষয়ে অভিযোগ ছিল। সে কারণে আজ সেখানে অভিযান পরিচালনা করা হয়।’
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট বলেন, ‘আটক পাঁচজন বিআরটিএ অফিসে সেবা নিতে আসা বিভিন্ন যানবাহন মালিক ও চালকদের কাজ দ্রুত করে দেয়া ও বিভিন্ন সমস্যা সমাধানের জন্য প্রলুব্ধ করে অর্থ আদায় করত। সবাই জরিমানা পরিশোধ করে মুচলেকা দিয়েছে।’
ভোলা
ভোলা সদর হাসপাতালে দালালির অভিযোগে চারজনকে আটক করে ১৫ দিনের কারাদণ্ড দিয়েছে ভ্রাম্যমাণ আদালত।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নুসরাত ফাতেমা চৌধুরীর আদালত রোববার দুপুরে তাদের কারাদণ্ড দেন।
ভ্রাম্যমাণ আদালতের বেঞ্চ সহকারী আব্দুল হাদি নিউজবাংলাকে জানান, দালালরা দীর্ঘদিন ধরে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের নানা রকম হয়রানি করছিল। সেই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে র্যাব ও পুলিশকে নিয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত অভিযান চালায়।
জয়পুরহাট
ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে র্যাব-৫ জয়পুরহাটের বিআরটিএ ও পাসপোর্ট অফিসের সামনে থেকে তিনজনকে আটক করেছে।
রোববার বেলা সাড়ে ১১টা থেকে ৩টা পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়।
র্যাব-৫-এর কোম্পানি কমান্ডার লেফটেন্যান্ট কমান্ডার মো. তৌকির নিউজবাংলাকে জানান, আটক দালালরা গাড়ি ও ড্রাইভিং লাইসেন্স এবং পাসপোর্ট করে দেয়ার কথা বলে টাকা হাতিয়ে নিতেন। অনেক সময় টাকা নিয়ে প্রতারণাও করতেন।
সরকারি কাজে বিঘ্ন ঘটানো ও সরকারি আদেশ অমান্য করায় তাদের আটক করে কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড দেয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন:অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশের পর নিরাপত্তাহীনতায় পুনরায় বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের সময় গারো পাহাড় সীমান্তে মানব পাচারকারী চক্রের দুই সদস্যসহ ৭ জনকে আটক করেছে বিজিবি।
সোমবার (২৫ আগস্ট) সকাল পৌণে সাতটার দিকে শেরপুরের ঝিনাইগাতি উপজেলার নকশি সীমান্ত পথে নকশি ক্যাম্পের টহলরত বজিবি সদস্যরা তাদের আটক করে বিকেলে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে।
বিষয়টি ২৬ আগষ্ট সকালে বিজিবি পক্ষ থেকে নিশ্চিত করা হয়।
আটককৃতরা হলো মানব পাচারকারী চক্রের সদস্য নালিতাবাড়ী উপজেলার পোড়াগাঁও ইউনিয়নের বুরুঙ্গা গ্রামের নুরুল ইসলামের ছেলে রমজান আলী (২৪) ও আসমত আলীর ছেলে রাসেল (১৬)। আটক অনুপ্রবেশকারীরা হলো, নড়াইল জেলার কালিয়া থানার বোমবাঘ গ্রামের শামীম শেখ (২৩), আফসানা খানম (২২), রুমা বেগম (৩২), মিলিনা বিশ্বাস (২৮) ও তিন বছর বয়সী শিশু কাশেম বিশ্বাস।
বিজিবি এক প্রেসবিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানায়, মাথাপিছু ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকার বিনিময়ে গত ২৩ আগস্ট রাতের আধারে নালিতাবাড়ীর সীমান্ত এলাকা দিয়ে অবৈধ পথে নারী এবং শিশুসহ ৫ বাংলাদেশীকে ভারতে পাঠায় মানব পাচারকারী রমজান আলী ও রাসেল। কিন্তু ভারতীয় পুলিশের তৎপরতায় নিরাপত্তাহীনতায় পড়ে এ পাঁচ বাংলাদেশী। এ কারণে ২৫ আগষ্ট সোমবার সকাল পৌণে সাতটার দিকে ঝিনাইগাতির নকশি সীমান্তের কালিমন্দির এলাকা দিয়ে পুনরায় তারা বাংলাদেশে প্রবেশ করে। এসময় টহলরত বিজিবি সদস্যরা টের পেয়ে সবাইকে আটক করে। পরে মানব পাচারে জড়িত দুইজনের বিরুদ্ধে মানব পাচার প্রতিরোধ ও দমন আইনে এবং অন্য ৫ জনের বিরুদ্ধে অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশের অপরাধে নালিতাবাড়ী থানায় মামলা দায়ের করা হয় এবং সবাইকে নালিতাবাড়ী থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
ময়মনসিংহ বিজিবি’র ৩৯ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেঃ কর্ণেল মেহেদী হাসান বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, বিজিবির পক্ষ থেকে এ ধরনের অভিযান চলমান থাকবে।
ঝালকাঠিতে গ্রাহকদের চাহিদা বিবেচনায় এনে ব্রান্ডশপ লোটো ও লি কুপার প্রতিষ্ঠানটি তাদের ১৩২তম ফ্লাগশিপ আউটলেট উদ্বোধন করেছে।
এক্সপ্রেস লেদার প্রোডাক্ট লিঃ এর ডেপুটি ম্যানেজিং ডাইরেক্টর কাজী জাভেদ ইসলাম সহ কোম্পানির অন্যান্য কর্মকর্তাবৃন্দ ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গদের সাথে নিয়ে ফিতা কেটে আউটলেটটি উদ্বোধন করেন ঝালকাঠির পুলিশ সুপার উজ্জ্বল কুমার রায়।
পৌর শহরের সাধনার মোড়ে মঙ্গলবার ২৬ আগষ্ট সকাল ১০টায় লোটো ও লি কুপারের ফ্ল্যাগশিপ আউটলেটদ্বয়ের শুভ উদ্বোধন আনুষ্ঠানে ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ, বিভিন্ন পর্যায়ের গ্রাহক ও গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
ঝালকাঠিতে কোম্পানীর এ যাত্রার প্রথম দিনে স্থানীয় ফ্যাশন সচেতন তরুণ তরুণীরা তাদের পছন্দের পন্য কালেকশন বেছে নিতে ভীর জমায়।
কোম্পানীর পক্ষ থেকে জানানো হয় প্রথম তিনদিনের প্রতিদিন প্রথম ৩০ জন পাবেন ৫০% ছাড়, ২য় ৩০ জন পাবেন ৪০% ছাড়, ৩য় ৩০ জন পাবেন ৩০% ছাড়, ৪র্থ ৩০ জন পাবেন ২০% ছাড় এবং তৎপরবর্তী সকল কাস্টমার পাবেন ১০% ছাড়। এই বিশেষ ছাড় ২৬শে আগষ্ট থেকে শুরু হয়ে ২৮ তারিখ পর্যন্ত চলমান থাকবে
নওগাঁয় সপ্তম শ্রেণীর এক মাদ্রাসা শিক্ষার্থীকে আটক রেখে ধর্ষণ মামলায় আ: সালাম (৩৮) নামে এক আসামীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। একই সঙ্গে এক লাখ টাকা অর্থদন্ড ও অনাদায়ে আরও ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
রোববার (২৪ আগস্ট) দুপুর ১২টার দিকে নওগাঁর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিচারক মেহেদী হাসান তালুকদার এ রায় দেন।
যাবজ্জীবনপ্রাপ্ত আ: সালাম সদর উপজেলার বর্ষাইল মধ্যপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। রায় ঘোষণার সময় তিনি আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
আদালত সূত্রে জানা যায়, ভিকটিম ওই শিক্ষার্থীর পরিবার পত্নীতলা উপজেলায় ভাড়া থাকতেন। ভাঙ্গারী ব্যবসার সুবাদে আসামী আ: সালামও পাশাপাশি একটি বাড়িতে ভাড়া থাকতেন। ভিকটিম মাদ্রাসায় যাওয়া আসার পথে আ: সালাম বিভিন্ন সময় কু-প্রস্তাব দিতো এবং রাস্তাঘাটে বিরক্ত করতো। বিষয়টি জানাজানি হলে আসামী আ: সালাম ওই ভিকটিমের পরিবারকে গালিগালাজ ও ভয়ভীতি দেখাতো। এরই একপর্যায়ে ২০২২ সালের ১১ জুলাই বিকেল তিনটার দিকে আসামী আ: সালাম একটি বাজার এলাকা থেকে ওই শিক্ষার্থীকে অপহরণ করে নওগাঁ সদর উপজেলার ভবানীপুর দক্ষিন পাড়া গ্রামের মোজাফ্ফর রহমানের ভাড়া বাড়িতে আটক রেখে একাধিকবার ধর্ষণ করে। বিষয়টি বুঝতে পেরে ওই শিক্ষার্থীর বাবা পত্নীতলা থানায় অভিযোগ করলে র্যাব ওই বাড়ি থেকে আসামিকে গ্রেফতার ও মেয়েকে উদ্ধার করে। পরে তদন্তকারী কর্মকর্তা তদন্ত শেষে ঘটনার সত্যতা থাকায় আসামী আ: সালামসহ চার জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে। আদালত ১৭ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহন শেষে আজ আ: সালামকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড এবং একই সঙ্গে এক লাখ টাকা অর্থদন্ড ও অনাদায়ে আরও ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেয়। বাকি আসামীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমানিত না হওয়ায় তাদেরকে খালাস দেওয়া হয়।
মামলার এ রায়ে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী রেজাউল করিম সন্তোষ প্রকাশ করেন। আসামী পক্ষের আইনজীবী ফাহমিদা কুলসুম উচ্চ আদালতে আপিল করার কথা জানান।
জয়পুরহাটের আক্কেলপুর উপজেলার রায়কালী ইউনিয়নের বালুকাপাড়া গ্রামে রাগের মাথায় স্ত্রীকে তালাক দিয়ে পুনরায় তাকে বিয়ে করায় এক দম্পতিকে দেড় বছর ধরে 'সমাজচ্যুত' করে রাখা হয়েছে। শুধু তাই নয়, এ বিষয়ে নালিশ দেওয়ার জের ধরে পেটানো হয় দিনমজুর আব্দুল জলিল প্রামানিককে। প্রতিপক্ষের লোকজনের মারধরে এতে তার বাম হাতের হাঁড় ভেঙে গেছে।
এঘটনায় তিনি একটি থানায় অভিযোগ করেছেন। গত মঙ্গলবার রাতে সেটি মামলাটি হিসেবে রের্কড করা হয়। তবে মামলার এজাহারে সমাজচ্যুত করে রাখার বিষয়টি উল্লেখ করা হয়নি।
সরেজমিনে বালুকাপাড়া গ্রামে গিয়ে আব্দুল জলিলকে ১৮ মাস ধরে সমাজচ্যুত করে রাখার তথ্য জানা গেছে। আব্দুল জলিলের সমাজচ্যুত করার ঘটনাটি স্থানীয় রায়কালী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. আব্দুর রশীদ মন্ডলও অবগত আছেন। তিনি দুই পক্ষকে ইউপি কার্যালয়ে ডেকেও সমাজচ্যুত করে রাখার বিষয়টি সমাধান করতে পারেনি।
গ্রামবাসী ও ভুক্তভোগী পরিবার সূত্রে জানা যায়, ২০২৪ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি পারিবারিক কলহের কারণে আব্দুল জলিল প্রামানিক রাগের মাথায় তার স্ত্রীকে তালাক দেন। এঘটনার ২৯ দিন পর তিনি আবারও স্ত্রীকে বিয়ে করেন। এ ঘটনায় গ্রাম্য মাতব্বরেরা ক্ষুব্ধ হয়ে আব্দুল জলিল প্রামানিকের পরিবারকে সমাজচ্যুত করে রাখেন। সেই সময় জলিল প্রামানিক বিষয়টি আক্কেলপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও)কে জানান। ইউএনও রায়কালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুর রশীদ মণ্ডলকে বিষয়টি সমাধানের দায়িত্ব দেন। ইউপি চেয়ারম্যান উভয়পক্ষকে নিয়ে ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে বৈঠকে বসেছিলেন। তবে কার্যত কোন কোনো সমাধান করতে পারেননি। এতে গ্রাম্য মাতব্বরেরা আব্দুল জলিলের ওপর আরও ক্ষুব্ধ হন। সমাজচ্যুত করে রাখা আব্দুল জলিল গত ১৫ আগস্ট রাত আটটার দিকে গ্রামের মসজিদের দিকে রওনা হন। এসময় মাতব্বরেরা তাকে দুই দফায় প্রচন্ড মারধর করেন। এতে তার বাম হাতের হাঁড় ভেঙে যায়। তিনি চিকিৎসা নিয়ে থানায় আট জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন।
বালুকাপাড়া গ্রামের বাসিন্দা আজিজুল ইসলাম বলেন, দেড় বছর আগে আব্দুল জলিল তার স্ত্রীকে তালাক দিয়েছিলেন। কয়েক দিন পর আবার সংসার শুরু করেন। এনিয়ে গ্রামের মাতব্বরেরা আব্দুল জলিল প্রামানিককে সমাজচ্যুত করেন। এনিয়ে কথা কাটাকাটির জেরে মারপিটের ঘটনা ঘটেছে।
স্থানীয় বৃদ্ধা লুৎফন নেছা বলেন, আমি কাজ করতে পারিনি। আব্দুল জলিলের বউ আমার বাড়িতে এসে জবাই করা মুরগির তরকারি রান্না করে দিয়েছিল। আমি জলিলের বাড়িতে গিয়ে এক বাটি মুরগির মাংসের তরকারি দিয়ে এসেছি। এতে আমাকেও সমাজচ্যুত করার হুমকি দিয়েছিল।
বালুকাপাড়া গ্রামের মোড়ের দোকানি হাফিজার রহমান বলেন, বউকে তালাক দেওয়ার ঘটনায় আব্দুল জলিল প্রামানিককে গ্রামের মাতব্বরেরা সমাজচ্যুত করেছেন। আব্দুল জলিল গ্রামের সামাজিক কোন কর্মকান্ডে অংশ নিতে দেয় না।
আব্দুল জলিল প্রামানিক বলেন, আমি রাগের মাথায় স্ত্রী তালাক দিয়েছিলাম। ২৯ দিন পর আবার বিয়ে পড়ে নিয়েছি। একারণে গ্রামের মাতব্বর রকি খান, মিল্টন খাঁ, আবু সুফিয়ানসহ আরও ১০-১২ জন আমাকে সমাজচ্যুত করেছেন। রাগের মাথায় স্ত্রীক। তালাক দিলে পুনরায় বিয়ে করা যাবে ঢাকার একজন মুফতির মতামত নিয়ে আসার পরও তারা মানেনি। তারা বলছে হিল্লা বিয়ে ছাড়া আমার বিয়ে বৈধ হবে না। তারা আমাকে দীর্ঘ দেড় বছর ধরে গ্রামের মসজিদে নামাজ আদায়ে করতে ও জানাজায় শরিক হতে বা দেননি। মিলাদ মাহফিল দাওয়াত দেওয়ার মাতব্বরদের চাপে পর ফিরিয়ে নেওয়া হয়েছে। এমনকি গ্রামের কারও জমিতে দিনমজুরি কাজও করতে পারব না বলে লোকজন জানিয়ে দেন। একারণে কেউ আমাকে কাজে নেয় না। সমাজচ্যুত করার জের ধরে মসজিদে যাওয়ার সময় মাতব্বরদের একাংশের লোকজন আমাকে মেরে হাত ভেঙে দিয়েছেন।
গ্রামের মাতব্বদের একজন মো. মিল্টন খাঁ। তিনি আব্দুল জলিলের দায়ের করা মামলার দুই নম্বর আসামি। তাকে তার বাড়িতে পাওয়া যায়নি। মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আব্দুল জলিল সমাজ বিরোধী কাজ করেছেন। একারণে গ্রামের লোকজন তাকে সমাজচ্যুত করেছেন। আব্দুল জলিল সমাজ বিরোধী কি কাজ করেছেন এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, আব্দুল জলিল তার স্ত্রীকে তালাক দিয়ে আবার স্ত্রীকে নিয়েছেন। এটা সমাজ বিরোধী কাজ।
আক্কেলপুর রায়কালী ইউপির চেয়ারম্যান আব্দুর রশীদ মন্ডল বলেন, আব্দুল জলিল মুক্তিযোদ্ধার সন্তান। তিনি রাগের মাথায় স্ত্রীকে তালাক দিয়েছিলেন। এঘটনায় গ্রামের মাতব্বরেরা আব্দুল জলিলকে সমাজচ্যুত করেন। আব্দুল জলিল ইউএনও স্যারের কাছে অভিযোগ দিয়েছিলেন। ইউএনও স্যার আমাকে ঘটনাটি সমাধানের দায়িত্ব দিয়েছিলেন। উভয়পক্ষকে ইউপি কার্যালয়ে ডেকে নিয়ে বৈঠক করেছি। আব্দুল জলিল যেন সামাজিকভাবে মিশতে পারে সেটি বলেছি। সমাজচ্যুতের ঘটনার জের ধরে আব্দুল জলিলকে মারধর করা হয়েছে। এতে তার বাম হাত ভেঙেছে বলে জেনেছি।
আক্কেলপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম বলেন, আব্দুল জলিল প্রামানিক থানায় একটি অভিযোগ দিয়েছিলেন। অভিযোগটি তদন্ত করে ঘটনার সত্যতা পাওয়ায় সেটি মামলা হিসেবে রের্কড করা হয়েছে। আসামি আট জনের মধ্যে ইতিমধ্যে আদালত থেকে পাঁচজন আসামি জামিন নিয়েছেন, অন্য আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ২০২৫-২০২৬ অর্থবছরের জুলাই মাসে ২৭,২৪৯ কোটি টাকা রাজস্ব আদায় করেছে। বিগত ২০২৪-২০২৫ অর্থ বছরের একই মাসে রাজস্ব আদায়ের পরিমাণ ছিল ২১,৯১৬ কোটি টাকা। জুলাই-২০২৫ মাসে বিগত জুলাই-২০২৪ মাসের তুলনায় ৫,৩৩৩ কোটি টাকা বেশি রাজস্ব আদায় হয়েছে। জুলাই ২০২৫ মাসে রাজস্ব আদায়ের প্রবৃদ্ধির হার ২৪.৩৩%।
জুলাই’২৫ মাসে সবচেয়ে বেশি রাজস্ব আদায় হয়েছে স্থানীয় পর্যায়ের মূসক থেকে। এ খাত থেকে আদায় হয়েছে ১১,৩৫২ কোটি টাকা। গত অর্থবছরের জুলাই’২৪ মাসে এই খাতে আদায়ের পরিমান ছিল ৮,৫৭১ কোটি টাকা। জুলাই ২০২৫ মাসে স্থানীয় পর্যায়ের মূসক আদায়ের প্রবৃদ্ধির হার ৩২.৪৫%।
আয়কর ও ভ্রমন কর খাতে জুলাই’২৫ মাসে রাজস্ব আদায় হয়েছে ৬,২৯৫ কোটি টাকা যা জুলাই’২০২৪ মাসের একই খাতে আদায়কৃত ৫,১৭৫ কোটি টাকার চাইতে ১,১২০ কোটি টাকা বেশি। আয়কর ও ভ্রমন করের ক্ষেত্রে জুলাই ২০২৫ মাসের আদায়ের প্রবৃদ্ধির হার ২১.৬৫%।
২০২৫-২০২৬ অর্থবছরের জুলাই মাসে আমদানি ও রপ্তানি খাতে রাজস্ব আদায় হয়েছে ৯,৬০২ কোটি টাকা। গত অর্থবছরের জুলাই’২৪ মাসে এই খাতে আদায় ছিল ৮,১৭০ কোটি টাকা, প্রবৃদ্ধির হার ১৭.৫২%।
রাজস্ব আদায়ের এ ধারা ভবিষ্যতে অব্যাহত রাখার জন্য আয়কর, মূল্য সংযোজন কর এবং কাস্টমস শুল্ক-কর আদায়ে নিয়োজিত কর্মকর্তা-কর্মচারিদের প্রচেষ্টা আরো জোরদার করার জন্য জাতীয় রাজস্ব বোর্ড নানাবিধ কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করবে।
সম্মানিত করদাতাগণ আইনের যথাযথ পরিপালন নিশ্চিত করে যথাযথ পরিমান কর পরিশোধের মাধ্যমে দেশ গড়ার কাজের অন্যতম অংশীদার হবেন মর্মে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড আশাবাদী।
কুমিল্লা নাঙ্গলকোটে ইউপি সদস্য আলাউদ্দিনকে বাড়ির সামনে থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যার ঘটনায় প্রধান আসামিকে ঢাকার হাতিরঝিল রেল মগবাজার রেলগেট এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। শুক্রবার দিনগত রাতে অভিযানটি শেষ করে র্যাব।
গ্রেফতারকৃত আসামী শেখ ফরিদ (৪৫) নাঙ্গলকোট উপজেলার বক্সগঞ্জ আলীয়ারা গ্রামের আবুল খায়েরের ছেলে।
শনিবার সকাল সাড়ে দশটার দিকে কুমিল্লা অশোকতলা এলাকায় র্যাব অফিসে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য দেন
র্যাব ১১ এর কুমিল্লার কোম্পানি কমান্ডার মেজর সাদমান ইবনে আলম।
মেজর সাদমান জানান, নাঙ্গলকোটের আলিয়ারা গ্রামে দুই পরিবারের মধ্যে বংশপরম্পরায় একটি বিরোধ চলে আসছিল। গেল গেল ২৫ জুলাই গরুর ঘাস খাওয়া কে কেন্দ্র করে দুই পরিবারের মধ্যে সংঘর্ষ হয়।
সেদিন দফায় দফায় সংঘর্ষে উভয় পক্ষের ১৫ জন গুলিবিদ্ধসহ ২৫ জন আহত হয়।
এ ঘটনার রেশ ধরে গেলো ৩ আগস্ট দুপুরে আলিয়ারা গ্রামের বাসিন্দা আলাউদ্দিন তার চাচাতো ভাইয়ের জানাজার নামাজ শেষে বাড়ি ফেরার পথে দুর্বৃত্তরা তাকে একটি সিএনজিতে তুলে নিয়ে গুলি ও কুপিয়ে হত্যা করে।
পরে এ ঘটনায় ৫ আগস্ট নিহতের ছেলে বাদী হয়ে নাঙ্গলকোট থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
কাপ্তাই হ্রদের পানির উচ্চতা বিপদসীমা অতিক্রম করায় নির্ধারিত সময়ের আগেই খোলা হয়েছে কাপ্তাই পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সব জলকপাট। সোমবার (৫ আগস্ট) রাত ১২টা ২ মিনিটে হঠাৎ পানি বাড়তে থাকায় জরুরি ভিত্তিতে কেন্দ্রের ১৬টি জলকপাট ৬ ইঞ্চি করে খুলে দেওয়া হয়।
কর্ণফুলি পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী মাহমুদ হাসান জানান, রাতে লেকের পানির উচ্চতা ১০৮.০৫ ফুট ছুঁয়ে গেলে বিপদসীমা অতিক্রম করে। এতে প্রতি সেকেন্ডে ৯ হাজার কিউসেক পানি কর্ণফুলি নদীতে প্রবাহিত হচ্ছে।
তিনি বলেন, “প্রথমে সোমবার (৪ আগস্ট) বিকেল ৩টায় পানি ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে আমরা পরের দিন মঙ্গলবার সকাল ৯টায় জলকপাট খোলার ঘোষণা দিয়েছিলাম। কিন্তু হঠাৎ অতিরিক্ত পানি প্রবাহের কারণে নির্ধারিত সময়ের আগেই সোমবার রাতেই জলকপাট খুলে দিতে হয়। তবে পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।”
তিনি আরও জানান, কাপ্তাই বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ৫টি ইউনিট বর্তমানে সচল রয়েছে, যেগুলোর মাধ্যমে আরও ৩২ হাজার কিউসেক পানি লেক থেকে কর্ণফুলিতে গিয়ে পড়ছে। সবমিলিয়ে পানি নিঃসরণের হার এখন প্রতি সেকেন্ডে ৪১ হাজার কিউসেক।
ভাটি এলাকার জনসাধারণের উদ্দেশে তিনি বলেন, “পানি প্রবাহ বাড়লেও আতঙ্কের কোনো কারণ নেই। পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে রয়েছে, এবং প্রয়োজনে আমরা আগেভাগেই ব্যবস্থা নেব।”
স্থানীয় প্রশাসন এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকেও এ বিষয়ে আগেই অবহিত করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেন কর্তৃপক্ষ।
মন্তব্য