২০১৭ সালে বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটির পোস্ট ডক্টরাল ফেলোশিপ পান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষাবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ফিরোজা ইয়াসমীন।
ফেলোশিপের শর্ত অনুযায়ী, এক বছরের মধ্যে গবেষণাকর্মটি শেষ করার কথা ছিল তার। সেটি চার বছরেও সম্পন্ন করতে পারেননি এ অধ্যাপক। এ কারণ দেখিয়ে ফেলোশিপের জন্য দেয়া অর্থ ফেরত চেয়েছে সোসাইটি।
এশিয়াটিকের ভাষ্য, তিনবার চিঠি দেয়ার পরও ফেলোশিপের অর্থ ফেরত দেননি অধ্যাপক ফিরোজা।
অন্যদিকে ফিরোজার অভিযোগ, এশিয়াটিক সোসাইটি সব গবেষকদের সঙ্গে সমান আচরণ করছে না। অন্য গবেষকদের সময় বাড়িয়ে দেয়া হলেও তার ক্ষেত্রে সেটি হয়নি।
তিনি বলেন, ‘আমি এ কাজ করতে চাই। সোসাইটিকে বলেছি যেন আমাকে সময় বাড়িয়ে দেয়া হয়। কিন্তু তারা আমাকে সময় দিচ্ছে না।
‘অথচ আমার সাথেই যারা ফেলোশিপ পেয়েছে, তাদের মধ্যে দুইজনকে টাইম এক্সটেনশন দেয়া হয়েছে। এটি এক ধরনের স্বেচ্ছাচারিতা।’
২০১৭ সালে পোস্ট ডক্টরাল ফেলোশিপের জন্য এশিয়াটিক সোসাইটির বিজ্ঞপ্তির পরিপ্রেক্ষিতে আবেদন করেন ফিরোজা ইয়াসমীন। যাচাই-বাছাই ও ভাইভা শেষে একই বছরের ৫ এপ্রিল এ অধ্যাপককে ফেলোশিপ দেয়া হয়।
এশিয়াটিক সোসাইটি জানায়, সমাজ ও ভাষা বিজ্ঞানের ওপর ফিরোজাকে দেয়া হয় ফেলোশিপ। শর্ত অনুযায়ী ২০১৮ সালের এপ্রিলের মধ্যে তার গবেষণাকর্মটি শেষ করে প্রতিবেদন জমা দেয়ার কথা। কিন্তু তিনি তার গবেষণাকর্মটি এ সময়ের মধ্যে জমা দিতে পারেননি।
সোসাইটির ভাষ্য, নির্ধারিত সময়ে কাজটি শেষ না করায় অনুদানের অর্থ ফেরত দিতে ২০২০ সালের ২৩ নভেম্বর থেকে চলতি বছরের ১৫ জুলাই পর্যন্ত তিনবার চিঠি দেয়া হয় ফিরোজাকে। এরপরও এ অর্থ ফেরত দেননি তিনি।
সোসাইটি সূত্রে জানা যায়, ফেলোশিপের জন্য বরাদ্দকৃত অর্থ কয়েক ধাপে তুলতে হয়। ফিরোজা শুধু প্রথম ধাপের অর্থই তুলেছেন। এ সংখ্যাটা ৬২ হাজার ৫০০ টাকা। এ অর্থই ফেরত দিতে সোসাইটি থেকে তাকে চিঠি দেয়া হয়েছে।
ফিরোজা ইয়াসমীনের গবেষণা অনুদানের অর্থ ফেরত না দেয়ার বিষয়টি অবহিতকরণের জন্য সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক সাব্বির আহমেদ গত ২৬ আগস্ট সংস্থার সব সদস্যকে চিঠি দেন।
কী আছে চিঠিতে
এশিয়াটিক সোসাইটির চিঠির একটি কপি নিউজবাংলার হাতেও এসেছে। এতে বলা হয়, ‘ফেলোশিপের শর্তানুযায়ী, ২০১৮ সালের এপ্রিল মাসের মধ্যে গবেষণাকর্মটি সম্পন্ন করে প্রতিবেদন জমা দেয়ার কথা থাকলেও ফিরোজা ইয়াসমীন নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সেটি জমা দিতে ব্যর্থ হন। শর্তানুযায়ী, এই গবেষণার মেয়াদ কোনো অবস্থাতেই বাড়ানোর বিধান ছিল না।’
চিঠিতে বলা হয়, নিয়ম অনুযায়ী ফিরোজার বিষয়টি ২০২০ সালের ২৯ অক্টোবর সোসাইটির রিসার্চ অ্যান্ড সেমিনার কমিটির সভায় আলোচনা হয়। গবেষণার অগ্রগতি সম্পর্কে পর্যালোচনা করে ফিরোজা অনুদানের অর্থ নির্ধারিত গবেষণাকর্মে ব্যবহার করতে ব্যর্থ হয়েছেন মর্মে নিশ্চিত হয় সোসাইটি। এর পরিপ্রেক্ষিতে তাকে দেয়া অনুদান বাতিলের সুপারিশ করা হয়।
এশিয়াটিকের কাউন্সিল সে সুপারিশ ২০২০ সালের ১৪ নভেম্বর অনুমোদন করলে ফিরোজা ইয়াসমীনকে চিঠির মাধ্যমে ফেলোশিপের অর্থ ফেরত দিতে বলা হয়।
চিঠিতে আরও বলা হয়, ‘উক্ত গবেষণা অনুদানের সময়সীমা ছিল এক বছর, যা অনির্দিষ্ট সময়ের জন্য কোনোক্রমেই বর্ধিত হতে পারে না। অধিকন্তু এই দীর্ঘ সময়ে তার সঙ্গে সম্পাদিত চুক্তির শর্তানুযায়ী তিনি গবেষণা কর্মের কোনো দৃশ্যমান অগ্রগতির প্রতিবেদন সোসাইটিতে জমা দিতে ব্যর্থ হন। ফলে তাকে প্রদত্ত ফেলোশিপ সোসাইটির কাউন্সিলের সিদ্ধান্তক্রমে বাতিল হয়।’
ফিরোজা ইয়াসমীনের ভাষ্য
এ বিষয়ে অধ্যাপক ফিরোজা ইয়াসমীন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ফেলোশিপে বলা ছিল, ২০১৭ সালের এপ্রিল থেকে ২০১৮ সালের এপ্রিলের মধ্যে গবেষণাকাজের অগ্রগতি জানার জন্য সোসাইটি আমার সাথে চার মাস পরপর মিটিং করবে, কিন্তু সেই এক বছরে তারা আমার সাথে কোনো যোগাযোগই করেনি। ২০১৯ সালে এসে তারা আমার সাথে যোগাযোগ করে।
‘সে সময় সোসাইটি থেকে আমাকে ডাকা হয়। আমি বলেছি, আমাকে সময় দেন; আমি কাজ করব। তারা রাজিও হয়েছিল। কিন্তু যখনই আমি ২০২০ সালে সোসাইটির কাউন্সিল নির্বাচন করি এবং হেরে যাই, এরপর থেকেই তাদের আচরণ পরিবর্তন হয়ে যায়।’
ফিরোজা বলেন, ‘নির্দিষ্ট সময়ের বাইরে অতিরিক্ত সময় দেয়া গবেষণায় কমন নেচার। এশিয়াটিক সোসাইটিও অনেক গবেষককে অতিরিক্ত সময় দিয়েছে। এমনকি আমার সাথেই যারা ফেলোশিপ পেয়েছে তাদের মধ্যে দুইজনকে টাইম এক্সটেনশন দেওয়া হয়েছে।
‘শুধু আমাকেই দেয়া হচ্ছে না। কারণ আমি সোসাইটির কাউন্সিল নির্বাচন করেছি। আমার মনে হচ্ছে, এই নির্বাচন করাই আমার অপরাধ।’
ফিরোজা বেগম আরও বলেন, ‘সোসাইটি থেকে আমাকে ব্যর্থ বলা হচ্ছে। কিন্তু আমি তো ব্যর্থ না। আমি তো বলিনি আমি কাজটি করতে পারব না।
‘চলতি বছরের গত ২৯ জুলাই আমার গবেষণাকাজের একটি খসড়া চ্যাপ্টারও সোসাইটিতে জমা দিয়েছি।’
এশিয়াটিক সোসাইটি মানসিক নির্যাতন করছে অভিযোগ করে অধ্যাপক ফিরোজা বলেন, ‘গত দুই বছর যাবত এশিয়াটিক সোসাইটি আমাকে মানসিক নির্যাতন এবং সামাজিক হেনস্তার মধ্যে রেখেছে, যেটি আমি প্রত্যাশা করি না।
‘আমি সেদিনের অপেক্ষায় আছি, যেদিন এশিয়াটিক সোসাইটি সকল রিসার্চারের জন্য সমান আচরণ প্রদর্শন করবে, যেটি বর্তমান কাউন্সিল করছে না।’
এশিয়াটিকের সাধারণ সম্পাদক কী বলছেন
ফিরোজার অভিযোগের বিষয়ে এশিয়াটিক সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক সাব্বির আহমেদের সঙ্গে কথা হয় নিউজবাংলার।
চলতি বছরের ২৯ জুলাই গবেষণার একটি অংশ জমা দেয়া নিয়ে ফিরোজার বক্তব্যের বিষয়ে অধ্যাপক সাব্বির বলেন, ‘ফিরোজা ইয়াসমীন যখন একটি অংশ জমা দিয়েছেন, এর আগেই তার প্রজেক্টটি কাউন্সিলের সিদ্ধান্ত মোতাবেক বাতিল হয়ে যায়। কাউন্সিলের মিটিংয়ে কারো রিসার্চ গ্রান্ট বাতিল হয়ে যাওয়ার পর সে রিসার্চের একটি অংশ জমা দেয়া, এটি ম্যাটার করে না।’
২০১৭ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত সোসাইটি থেকে ফিরোজার সঙ্গে যোগাযোগ না করার বিষয়ে সাব্বির আহমেদ বলেন, ‘সোসাইটির কাজের কারণে হয়তো উনার সাথে যোগাযোগ করা হয়নি। কিন্তু চার মাস পর পর রিপোর্ট জমা দেয়া উনার দায়িত্বের মধ্যে পড়ে। কনট্রাক্টে সেভাবেই লিখা আছে। সেটি তো উনি করেননি।’
সাব্বির বলেন, ‘এটি একটি মিউচ্যুয়াল কনট্রাক্ট। রিসার্চ ছাড়াও সোসাইটির অনেক কাজ থাকে। সেগুলোও আমাদের করতে হয়। কিন্তু আমরা উনাকে জানাইনি বলে উনি জমা দিবেন না, এটি কখনো কোনো রিসার্চ গ্রান্টে হয় কি না, আমি জানি না।’
দুজন গবেষকের সময় বাড়ানো নিয়ে ফিরোজা ইয়াসমীনের বক্তব্যের বিষয়ে সোসাইটির পরিচালক বলেন, ‘এটি খুবই অন্যায় এবং আপত্তিকর অভিযোগ। যে দুজনের সময় এক্সটেনশন করা হয়েছে, তাদের একজন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের এবং অন্যজন বারডেম হাসপাতালের ডাক্তার। সে সময় উনাদের কাজে যথেষ্ট অগ্রগতি ছিল।
‘তাদের কাজের অগ্রগতিতে রিসার্চ এবং সেমিনার কমিটি সন্তুষ্ট ছিল। আর উনাদের গবেষণার সুপারভাইজারও ভালো রিপোর্ট দিয়েছে। তাই আমরা তাদেরকে একবার সময় বাড়িয়ে দিয়েছি।’
টাকা ফেরতের বিষয়ে অধ্যাপক সাব্বির বলেন, ‘এখানে কারও প্রতি কোনো বৈষম্য করা হয়নি। সোসাইটির নিয়ম মেনেই সব সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। উনাকে টাকা ফেরত দিতেই হবে।
‘এখন উনি যদি টাকা ফেরত না দেয়, তাহলে বিষয়টা সোসাইটির কাউন্সিলের মিটিংয়ে উঠবে। সেখানেই পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।’
আরও পড়ুন:এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফলাফলে সন্তুষ্ট না হওয়া শিক্ষার্থীদের খাতা চ্যালেঞ্জ বা ফল পুনর্নিরীক্ষণের আবেদন শুরু হয়েছে।
আজ শুক্রবার থেকে আগামী ১৭ জুলাই পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা ফল পুনঃনিরীক্ষণের আবেদন করতে পারবে।
আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
শুধু টেলিটক সিম ব্যবহার করে ফল পুনর্নিরীক্ষণের আবেদন করতে পারবেন শিক্ষার্থীরা। এক্ষেত্রে প্রতি বিষয়ের জন্য নির্ধারিত আবেদন ফি লাগবে ১৫০ টাকা।
পুনর্নিরীক্ষণের আবেদন করতে মোবাইলের মেসেজ অপশনে গিয়ে টাইপ করতে হবে- RSC<Space> Board Name (First 3 letters)<Space>Roll<Space>Subject Code লিখে পাঠিয়ে দিতে হবে ১৬২২২ নাম্বারে। একাধিক Subject Code Type এর ক্ষেত্রে কমা (,) ব্যবহার করতে হবে। যেমন-১০১,১০২,১০৩।
উল্লেখ্য, চলতি বছরের এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফলাফল গতকাল বৃহস্পতিবার প্রকাশিত হয়েছে। এ বছর দেশের ১১টি শিক্ষা বোর্ডে গড় পাসের হার ৬৮ দশমিক ৪৫ শতাংশ।
এ বছর এসএসসি পরীক্ষায় শতভাগ পরীক্ষার্থী পাস করা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংখ্যায় বড় ধরনের অবনতি লক্ষ করা গেছে। গত বছরের শতভাগ পাস করা প্রতিষ্ঠানের তুলনায় এবার সেই সংখ্যা দাঁড়িয়েছে এক-তৃতীয়াংশেরও নিচে।
ফল বিশ্লেষণে দেখা গেছে, মাত্র ৯৮৪টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শতভাগ শিক্ষার্থী পাস করেছেন। অথচ, গত বছর অর্থাৎ, ২০২৪ সালে শতভাগ পাস করা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ছিল ২ হাজার ৯৬৮টি। সেই হিসাবে এবার শতভাগ পাস করা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কমেছে ১ হাজার ৯৮৪টি।
অন্যদিকে, ১৩৪টি প্রতিষ্ঠানের কোনো পরীক্ষার্থী পাস করতে পারেনি। গতবছর শতভাগ ফেল করা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ছিল ৫১টি। সে হিসেবে শতভাগ ফেল করা প্রতিষ্ঠান বেড়েছে ৮৩টি।
বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) দুপুরে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড ঢাকা, রাজশাহী, কুমিল্লা, যশোর, চট্টগ্রাম, বরিশাল, সিলেট, দিনাজপুর ও ময়মনসিংহ এবং বাংলাদেশ মাদরাসা শিক্ষা বোর্ড ও বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ড একযোগে ফল প্রকাশ করেছে।
বিগত বছরগুলোর মতো এবার ফল প্রকাশ ঘিরে কোনো ধরনের আনুষ্ঠানিকতা রাখা না হলেও সার্বিক বিষয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড ঢাকার সভাকক্ষে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় কথা বলেন বাংলাদেশ আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটি ও ঢাকা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. খন্দকার এহসানুল কবির।
এবার এসএসসি ও সমমান পরীক্ষা শুরু হয়েছিল গত ১০ এপ্রিল। পরীক্ষা শেষ হয় ১৩ মে। চলতি বছর ৯টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডের অধীনে এসএসসি পরীক্ষায় ১৪ লাখ ৯০ হাজার ১৪২ জন শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেছে, যার মধ্যে ছাত্র ৭ লাখ ১ হাজার ৫৩৮ জন এবং ছাত্রী ৭ লাখ ৮৮ হাজার ৬০৪ জন।
এ ছাড়াও মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডের অধীনে ২ লাখ ৯৪ হাজার ৭২৬ জন এবং কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে ১ লাখ ৪৩ হাজার ৩১৩ জন পরীক্ষার্থী ছিল।
উল্লেখ্য, গত বছরের তুলনায় এবার প্রায় এক লাখ পরীক্ষার্থী কম ছিল। এবার ফল তৈরি হয়েছে বাস্তব মূল্যায়ন নীতিতে।
এ বছর ঢাকা শিক্ষাবোর্ডের অধীনে ৮টি কেন্দ্রে বিদেশি পরীক্ষার্থীরা অংশ নিয়েছেন, পাসের হার ৮৭ দশমিক ৩৫ শতাংশ।
৮টি কেন্দ্র থেকে মোট ৪২৭ জন পরীক্ষার্থী অংশ নিয়েছিলেন।
তাদের মধ্যে ৩৭৩ জন উত্তীর্ণ হয়েছেন আর অনুত্তীর্ণ পরীক্ষার্থী ৫৪ জন। ১টি প্রতিষ্ঠানের শতভাগ শিক্ষার্থী পাস করেছেন।
বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) দুপুর ২টার দিকে ঢাকা, রাজশাহী, কুমিল্লা, যশোর, চট্টগ্রাম, বরিশাল, সিলেট, দিনাজপুর ও ময়মনসিংহ এবং বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড ও বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ড একযোগে এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফল প্রকাশ করেছে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড।
এবার সারাদেশে মোট পাসের হার ৬৮ দশমিক ৪৫ শতাংশ এবং জিপিএ ফাইভ পেয়েছেন এক লাখ ৩৯ হাজার ৩২ জনে। গত বছর পাসের হার ছিল ৮৩ দশমিক শূন্য ৩ শতাংশ। আর জিপিএ ফাইভ পেয়েছিল এক লাখ ৮২ হাজার ১২৯ জন।
এ বছর সারা দেশের ৯টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ড, মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড ও কারিগরি শিক্ষা বোর্ডে ১৯ লাখ ৩৬ হাজার ৫৭৯ পরীক্ষার্থী অংশ নিয়েছেন। মোট উপস্থিতি ছিল ১৯ লাখ আট হাজার ৮৬ জন। তাদের মধ্যে উত্তীর্ণ পরীক্ষার্থীর সংখ্যা তেরো লাখ তিন হাজার ৪২৬ জন।
বাংলাদেশ মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডের অধীনে চলতি বছরের দাখিল পরীক্ষায় পাসের হার ৬৮ দশমিক ৯ শতাংশ। এ বোর্ডে সারাদেশে জিপিএ-৫ পেয়েছেন ৯ হাজার ৬৬ জন।
বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) দুপুর ২টার দিকে এ ফল প্রকাশ করা হয়।
চলতি বছরের এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার প্রকাশিত ফলাফলে দেখা গেছে, এ বছর দেশের ১১টি শিক্ষা বোর্ডে গড় পাসের হার ৬৮ দশমিক ৪৫ শতাংশ। গত বছর অর্থাৎ, ২০২৪ সালে গড় পাসের হার ছিল ৮৩ দশমিক ০৪ শতাংশ। সে হিসাবে পাসের হার অনেক কমেছে।
ছাত্রীদের পাসের হার ৭১.০৩ শতাংশ এবং ছাত্রদের পাসের হার ৬৫.৮৮ শতাংশ। সেই হিসাবে এবারও পাসের হারে এগিয়ে রয়েছেন ছাত্রীরা। এ নিয়ে টানা ১০ বছর এসএসসিতে পাসের হারে এগিয়ে ছাত্রীরা।
সাউথইস্ট ইউনিভার্সিটি (SEU) সামার সেমিস্টার ২০২৫-এ ভর্তি হওয়া নতুন শিক্ষার্থীদের স্বাগত জানাতে ২ ও ৩ জুলাই ২০২৫ তারিখে বিশ্ববিদ্যালয়ের মাল্টিপারপাস দুইদিনব্যাপী নবীন বরণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন একাডেমিক স্কুলের উদ্যোগে চারটি পৃথক সেশনের মাধ্যমে আয়োজিত এই ওরিয়েন্টেশন প্রোগ্রামের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের একাডেমিক যাত্রাকে স্বাগত জানানোর পাশাপাশি গুরুত্বপূর্ণ দিকনির্দেশনা প্রদান করা হয়।
২ জুলাই প্রথম সেশনে সাউথইস্ট ইউনিভার্সিটির স্কুল অব সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং (SSE) এর অধীনে কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং (CSE) বিভাগের শিক্ষার্থীদের স্বাগত জানানো হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন ডেটাসফট সিস্টেমস বাংলাদেশ লিমিটেড-এর প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মঞ্জুর মাহমুদ। একই দিনে দ্বিতীয় সেশনে SSE-এর আওতাধীন আর্কিটেকচার, ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং (EEE), এবং টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থীদের জন্য ওরিয়েন্টেশন প্রোগ্রাম অনুষ্ঠিত হয়। এ সেশনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন, বাংলাদেশ (IEB)-এর টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং ডিভিশনের চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার মোহিউদ্দিন আহমেদ (সেলিম)।
৩ জুলাই তৃতীয় সেশনে স্কুল অব আর্টস অ্যান্ড সোশ্যাল সায়েন্সেস (SASS) অর্থনীতি, ইংরেজি ও বাংলা বিভাগের নতুন শিক্ষার্থীদের স্বাগত জানায়। এ সেশনে প্রধান অতিথি ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের প্রফেসর এবং SANEM-এর চেয়ারম্যান অধ্যাপক বাজিউল হক খোন্দকার।
সেদিনই চতুর্থ ও শেষ সেশনে সাউথইস্ট বিজনেস স্কুল (SBS) তাদের বিবিএ ও এমবিএ প্রোগ্রামে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীদের জন্য ওরিয়েন্টেশন আয়োজন করে। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মো. মাহবুবুর রহমান, এফসিএ, অ্যাডিশনাল ম্যানেজিং ডিরেক্টর এবং সিটি ব্যাংক পিএলসি-এর সিএফও। তিনি শিক্ষার্থীদের উদ্ভাবনী চিন্তাভাবনা এবং নেতৃত্বের গুনাবলী অর্জনের আহ্বান জানান।
সবগুলো সেশনে সভাপতিত্ব করেন সাউথইস্ট ইউনিভার্সিটির ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. ইউসুফ মাহবুবুল ইসলাম। এছাড়া প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. এম. মোফাজ্জল হোসেন এবং রেজিস্ট্রার মেজর জেনারেল মো. আনোয়ারুল ইসলাম, SUP, ndu, psc (অব.) শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বক্তব্য রাখেন। বিভিন্ন সেশনে সংশ্লিষ্ট স্কুলের ডিন ও বিভাগের চেয়ারম্যানগণও উপস্থিত ছিলেন।
এই ওরিয়েন্টেশন প্রোগ্রামগুলোর মূল লক্ষ্য ছিল নতুন শিক্ষার্থীদের বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক পরিবেশ, মূল্যবোধ ও বিভিন্ন সুবিধার সঙ্গে পরিচিত করিয়ে দেওয়া, যাতে তারা একটি প্রাণবন্ত বিশ্ববিদ্যালয় জীবন শুরু করতে পারে।
৪৫তম বিসিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের ভাইভা শুরু হবে আগামী ৮ জুলাই থেকে। বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানায় বাংলাদেশ পাবলিক সার্ভিস কমিশন পিএসসি।
এবার চাকরি প্রত্যাশীরা তাদের আবেদনের পছন্দক্রম পরিবর্তন করতে পারবেন কিংবা আবেদনের ক্রমও বহাল রাখতে পারবেন সাক্ষাৎকারে অংশগ্রহণ করার আগে। তবে পছন্দক্রম পরিবর্তনের ফরমটি তাৎক্ষণিক চাকরিপ্রার্থীদের সরাসরি হাতে সরবরাহ করা হবে এবং তা পূরণ করে সাক্ষাৎকার বোর্ডে জমা দিতে হবে।
৪৫তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষায় সাময়কিভাবে উত্তীর্ণ প্রার্থীদের মধ্যে সাধারণ ক্যাডারে ২০৬ জন, সাধারণ ও কারিগরি /পেশাগত উভয় ক্যাডারে ১৮১ জন এবং শুধু কারিগরি/পেশাগত ক্যারের পদগুলোর ৬৫ জনসহ মোট ৪৫২ জন প্রার্থীর সাক্ষাৎকারের সময়সূচি প্রকাশ করা হয়েছে, যা কমিশনের ওয়েবসাইটে পাওয়া যাবে।
বাংলাদেশে চীন দূতাবাস কর্তৃক আয়োজিত বাংলাদেশ উচ্চশিক্ষা প্রতিনিধিদলের সঙ্গে চীন সফরে যোগদান করবেন কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ। আগামী ৬ জুলাই থেকে ১১ জুলাই পর্যন্ত (ভ্রমণ সময় ব্যতীত) মোট ৬ দিনের সফরে যাচ্ছেন তিনি।
বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। গত পহেলা জুলাই শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব এএসএম কাশেম স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনও জারি করা হয়।
মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, ভ্রমণ সংক্রান্ত সকল খরচ বাংলাদেশে গণপ্রজাতন্ত্রী চীন দূতাবাস বহন করবেন। এতে বাংলাদেশ সরকার বা বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনও আর্থিক সম্পৃক্ততা থাকবেন না। মন্ত্রণালয়কে অবহিত করে ভ্রমণ শেষে দেশে ফিরে কর্মস্থলে যোগদান করবেন। ভ্রমণের একটি প্রতিবেদন তাঁর প্রত্যাবর্তনের ১৫ (পনের) কার্যদিবসের মধ্যে মন্ত্রণালয়ে পাঠাতে হবে। এছাড়া উপাচার্যের অনুপস্থিতিতে বিশ্ববিদ্যালয়ে উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম. ইয়াকুব আলী উপাচার্যের নিয়মিত দায়িত্ব পালন করবেন।
ইবি উপাচার্যের ব্যক্তিগত সচিব (পিএস) গোলাম মাহফুজ মঞ্জু জানান, উপাচার্যের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। আগামী ৬ তারিখে উপাচার্যের সফরে যাবেন। তিনি উচ্চশিক্ষা বিষয়ক ইউজিসির চেয়ারম্যানের অধীনে একটি প্রতিনিধি দলের সঙ্গে যাচ্ছেন।
ইবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ জানান, ‘উচ্চশিক্ষা বিষয়ক ইউজিসির অধীনে একটা বড় প্রতিনিধিদল নিয়ে চীন সফরে যাওয়া হচ্ছে। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি), চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি), সিলেট বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (সাস্ট) উপাচার্যগণ সঙ্গে থাকবেন।
মন্তব্য