আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলের উত্তরে পাঞ্জশির উপত্যকা দখলের লড়াইয়ে এক দিনে প্রায় ৬০০ তালেবান যোদ্ধা নিহত হয়েছে বলে দাবি করেছে বিদ্রোহীরা।
স্থানীয় সময় শনিবার এসব তালেবান সদস্য নিহত হয় বলে দাবি করেন ন্যাশনাল রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট অফ আফগানিস্তানের মুখপাত্র ফাহিম দাশতি।
রাশিয়ার সংবাদমাধ্যম স্পুৎনিকের প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে ফাহিম দাশতির একটি টুইটবার্তা তুলে ধরা হয়। ওই টুইটে ফাহিম বলেন, ‘(শনিবার) সকাল থেকে পাঞ্জশিরের বিভিন্ন জেলায় প্রায় ৬০০ তালেবানকে নির্মূল করা হয়েছে। এক হাজারের বেশি তালেবান ধরা পড়েছে বা আত্মসমর্পণ করেছে।’
বিদ্রোহীদের মুখপাত্রের বরাত দিয়ে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, আফগানিস্তানের অন্য প্রদেশগুলো থেকে প্রয়োজনীয় সামগ্রী পেতে বেগ পেতে হচ্ছে তালেবানকে।
গত ১৫ আগস্ট আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুল দখলের মধ্য দিয়ে দেশটির ক্ষমতার প্রায় পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নেয় তালেবান। তবে পাঞ্জশির উপত্যকার নিয়ন্ত্রণ নিতে পারেনি সংগঠনটি।
১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত সময়কার শাসনেও পাঞ্জশিরের দখল নিতে পারেনি তালেবান।
উপত্যকার নিয়ন্ত্রণ নিতে শনিবারও বিদ্রোহীদের সঙ্গে তুমুল লড়াই হয়েছে তালেবানের। লড়াইয়ে দুই পক্ষ এগিয়ে থাকার কথা জানালেও এর স্বপক্ষে জোর প্রমাণ দিতে পারেনি কেউই।
তালেবানের মুখপাত্র বিলাল করিমি বলেন, উপত্যকার খিঞ্জ ও উনাবাহ জেলা নিয়ন্ত্রণে এসেছে।
এর মধ্য দিয়ে পাঞ্জশির প্রদেশের সাত জেলার চারটি তালেবানের নিয়ন্ত্রণে বলে দাবি করেছেন তিনি।
‘মুজাহিদরা (তালেবান যোদ্ধা) এখন (প্রদেশের) কেন্দ্রের দিকে এগোচ্ছে’, টুইটে বলেন করিমি।
তালেবান মুখপাত্রের ওই বক্তব্য অবাস্তব মনে হয় স্থানীয় বিদ্রোহী আহমদ মাসুদের অনুগত যোদ্ধাদের সংগঠন ন্যাশনাল রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্টের বক্তব্যে।
সংগঠনটির ভাষ্য, তাদের যোদ্ধারা খাওয়াক গিরিপথে ‘শত শত সন্ত্রাসীকে’ ঘিরে ফেলেছে। দাশতে রেওয়াক এলাকায় সামরিক যান ও সরঞ্জাম রেখে পালিয়েছে তালেবান।
ফেসবুকে দেয়া এক পোস্টে বিদ্রোহীদের নেতা মাসুদ জানান, তারা শক্ত হাতে উপত্যকা ধরে রেখেছেন।
আফগানিস্তানের হেরাতে অধিকারের দাবিতে রাস্তায় নামা নারীদের ‘আমাদের সম্মানিত বোনেরা’ সম্বোধন করে মাসুদ বলেন, এ বিক্ষোভের মধ্য দিয়ে এটা প্রমাণ হয়েছে, আফগানরা ন্যায়ের দাবি ছেড়ে দেয়নি। এতে এ-ও প্রমাণ হয় যে তারা কোনো হুমকির পরোয়া করে না।
আরও পড়ুন:সুনামগঞ্জের ছাতকের ঐতিহ্যবাহী জাউয়া বাজার ইজারাকে কেন্দ্র করে দুপক্ষের সংঘর্ষের আশঙ্কায় ১৪৪ ধারা জারি ধারা জারি করা হয়েছে।
সংঘর্ষ এড়াতে শনিবার ভোর ৬টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত ফৌজদারি কার্যধারার এক আদেশে ১৪৪ ধারা জারি করেন ছাতক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট গোলাম মুস্তাফা মুন্না।
আদেশে বলা হয়েছে, “যেহেতু ছাতক উপজেলাধীন ‘জাউয়া বাজার’ ইজারাকে কেন্দ্র করে বিবাদমান পক্ষসমূহের মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে এবং এর ফলে আইন শৃঙ্খলার মারাত্মক অবনতিসহ রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশঙ্কা বিদ্যমান রয়েছে মর্মে অফিসার ইন- চার্জ, ছাতক থানা, সুনামগঞ্জ থেকে প্রতিবেদন পাওয়া গিয়েছে।
“সেহেতু সার্বিক আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণের স্বার্থে আমি গোলাম মুস্তাফা মুন্না, এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার, ছাতক, সুনামগঞ্জ আমার উপর অর্পিত ক্ষমতাবলে আগামী ২০ এপ্রিল সকাল ৬ ঘটিকা হতে রাত ১২ ঘটিকা পর্যন্ত জাউয়া বাজার এলাকা এবং তার আশেপাশের এলাকায় ফৌজদারি কার্যবিধি, ১৮৯৮ এর ১৪৪ ধারা জারি করলাম।”
আদেশ অনুযায়ী, এ সময় উক্ত এলাকায় সব ধরনের আগ্নেয়াস্ত্র বহন ও প্রদর্শন, লাঠি বা দেশীয় কোনো অস্ত্র বহন বা প্রদর্শন, যে কোনো ধরনের মাইকিং বা শব্দযন্ত্র ব্যবহার, পাঁচ বা তার অধিক সংখ্যক ব্যক্তির একসঙ্গে চলাফেরা, সভা সমাবেশ, মিছিল ইত্যাদি নিষিদ্ধ থাকবে।
ঈদুল ফিতরকেন্দ্রিক যাত্রায় দেশের সড়ক-মহাসড়কে ৩৯৯টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৪০৭ জন নিহত ও এক হাজার ৩৯৮ জন আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি।
যাত্রীদের স্বার্থ সংরক্ষণ নিয়ে কাজ করা সংস্থাটির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী শনিবার সকালে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য তুলে ধরেন।
ঈদযাত্রায় অন্যান্য পথে দুর্ঘটনার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘একই সময়ে রেলপথে ১৮টি দুর্ঘটনায় ২৪ জন নিহত, ২১ জন আহত হয়েছে। নৌপথে দুটি দুর্ঘটনায় সাতজন নিহত, পাঁচজন আহত হয়েছে।
‘সড়ক, রেল ও নৌপথে সর্বমোট ৪১৯টি দুর্ঘটনায় ৪৩৮ জন নিহত ও ১ হাজার ৪২৪ জন আহত হয়েছে।’
যাত্রী কল্যাণ সমিতির সমিতির সড়ক দুর্ঘটনা মনিটরিং সেলের প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে মোজাম্মেল বলেন, ‘প্রতি বছর ঈদকেন্দ্রিক সড়ক দুর্ঘটনা আশঙ্কাজনক হারে বেড়ে যাওয়ায় সংগঠনটি ঈদযাত্রায় সড়ক দুর্ঘটনা, অতিরিক্ত ভাড়া আদায় ও যাত্রী হয়রানীর বিষয়টি দীর্ঘদিন যাবত পর্যবেক্ষণ করে আসছে। পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, এবারের ঈদে লম্বা ছুটি থাকায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ২০ শতাংশ মানুষের বেশি যাতায়াত হয়েছে। বর্তমান সরকারের বিগত ১৫ বছরে ধারাবাহিক উন্নয়নের ফলে দেশের সড়ক-মহাসড়কের অবস্থা আগের তুলনায় ভালো থাকায় যানবাহনে গতি বেড়েছে।
‘দেশের সবকটি সড়ক-মহাসড়কের পাশাপাশি পদ্মা সেতুতে মোটরসাইকেলের অবাধ চলাচলের কারণে মোট যাত্রীর সাত দশমিক পাঁচ শতাংশ মোটরসাইকেলে যাতায়াত করেছে। সরকারের বিভিন্ন নিয়ন্ত্রক সংস্থা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মাঠে থাকলেও অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের নৈরাজ্য ও পথে পথে যাত্রী হয়রানি চরমে উঠেছিল। গণপরিবহনগুলোতে ঈদকে কেন্দ্র করে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের নৈরাজ্যর কারণে বাসের ছাদে, ট্রেনের ছাদে, খোলা ট্রাকে, পণ্যবাহী পরিবহনে যাত্রী হয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দরিদ্র লোকজনের ঈদে বাড়ি যেতে হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘ঈদযাত্রা শুরুর দিন ৪ এপ্রিল থেকে ঈদ শেষে কর্মস্থলে ফেরা ১৮ এপ্রিল পর্যন্ত বিগত ১৫ দিনে ৩৯৯টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৪০৭ জন নিহত ও ১ হাজার ৩৯৮ জন আহত হয়েছে। বিগত ২০২৩ সালের ঈদুল ফিতরে ৩০৪টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৩২৮ জন নিহত ও ৫৬৫ জন আহত হয়েছিল।
‘বিগত বছরের সঙ্গে তুলনা করলে এবারের ঈদে সড়ক দুর্ঘটনা ৩১ দশমিক ২৫ শতাংশ, প্রাণহানি ২৪ দশমিক ০৮ শতাংশ, আহত ১৪৭ দশমিক ৪৩ শতাংশ বেড়েছে।’
আরও পড়ুন:সারা দেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেতে পারে ও সেই সঙ্গে অস্বস্তি বাড়তে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
রাষ্ট্রীয় সংস্থাটি শনিবার সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ৭২ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে এমন বার্তা দিয়েছে।
পূর্বাভাসে সিনপটিক অস্থান নিয়ে বলা হয়েছে, পশ্চিমা লঘুচাপের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে।
শনিবারের তাপমাত্রা নিয়ে পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, সারা দেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা সামান্য বৃদ্ধি পেতে পারে। জলীয় বাষ্পের আধিক্যের কারণে অস্বস্তি বাড়তে পারে।
তাপপ্রবাহ নিয়ে বলা আছে, রাজশাহী, পাবনা ও টাঙ্গাইল জেলাসহ খুলনা বিভাগের ওপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ এবং চাঁদপুর ও মৌলভীবাজার জেলাসহ ঢাকা ও রাজশাহী বিভাগের অবশিষ্টাংশ এবং বরিশালের ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে যা অব্যাহত থাকতে পারে।
বৃষ্টিপাত নিয়ে বলা আছে, ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের দু এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রবৃষ্টি হতে পারে। এ ছাড়া দেশের অন্য স্থানে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে।
আরও পড়ুন:ঢাকার সাভারে দৈনিক যুগান্তরের এক সাংবাদিকের ওপর ঝাঁঝালো রাসায়নিক নিক্ষেপ করেছে দুর্বৃত্তরা।
অফিস শেষে বাসায় ফেরার পথে কলমা এলাকায় শুক্রবার রাত আনুমানিক পৌনে ১২টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
ভুক্তভোগী ইকবাল হাসান ফরিদ দৈনিক যুগান্তরের অপরাধবিষয়ক প্রতিবেদক।
ঘটনার পর গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় ফরিদকে চিকিৎসার জন্য প্রথমে সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এবং পরে এনাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
সাংবাদিক ইকবাল হাসান ফরিদ বলেন, ‘রাতে অফিস শেষে ঢাকা থেকে সাভারের বাসায় ফিরছিলাম। আনুমানিক পৌনে ১২টার দিকে বাসার অদূরে অন্ধকার গলিতে পৌঁছালে পেছন থেকে একজন মুখোশধারী যুবক আমাকে নাম ধরে ডাক দেয়। ডাক শুনে দাঁড়ানোর পর মুখোশধারী দুই যুবক স্থানীয় দুই জনপ্রতিনিধির নাম উল্লেখ করে আমাকে আগামী এক মাসের মধ্যে সাভার এলাকা ছেড়ে চলে যাওয়ার নির্দেশ দেয়। এলাকা ছেড়ে না গেলে সপরিবারে আমাকে হত্যা করবে বলে হুমকি দেয় তারা।
‘এরপর কিছু বুঝে ওঠার আগে পেছন থেকে তাদের একজন মরিচের গুঁড়াসদৃশ এক প্রকার ঝাঁঝালো কেমিক্যাল আমার মাথায় ও চোখে-মুখে ছিটিয়ে দেয় এবং আমাকে ধাক্কা দিয়ে মাটিতে ফেলে দিয়ে চলে যায়। ঝাঁঝালো কেমিক্যাল ছিটিয়ে দেয়ার পর চোখে-মুখে ও শরীরে প্রচণ্ড জ্বালাপোড়া শুরু হলে তাৎক্ষণিকভাবে আমি অসুস্থ হয়ে পড়ি। পরে আমাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘দুর্বৃত্তরা সাভারের যে দুইজন জনপ্রতিনিধির নাম উল্লেখ করে আমাকে হুমকি দিয়েছে, তাদের কারও সঙ্গে আমার পরিচয়, যোগাযোগ কিংবা কোনো ধরনের বিরোধ নেই। তৃতীয় কোনো পক্ষ ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের লক্ষ্যে তাদের নাম ব্যবহার করে থাকতে পারে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঠিক তদন্তে প্রকৃত ঘটনা বেরিয়ে আসবে।’
এদিকে ঘটনাস্থল পরিদর্শনের পাশাপাশি হাসপাতালে অসুস্থ সাংবাদিক ফরিদকে দেখতে যায় সাভার মডেল থানা পুলিশ।
সাভার মডেল থানার ওসি মোহাম্মদ শাহজামান বলেন, ‘তদন্ত করে দুর্বৃত্তদের খুঁজে বের করে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
আরও পড়ুন:কাঠফাটা রোদ আর ভ্যাপসা গরমে প্রকৃতি যেন পুড়ে যাচ্ছে। এমন বৈরী আবহাওয়াতে কুমিল্লার কৃষকরা মেতে উঠেছেন রোরো ধান ঘরে তোলার উৎসবে। পাকা ধানের ঘ্রাণে মোহিত হচ্ছে চারপাশ।
কুমিল্লা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, চলতি বছর কুমিল্লায় এক লাখ ৬১ হাজার ৭৯০ হেক্টর জমিতে বোরোর আবাদ হয়েছে। এ মৌসুমে ব্রি ধান ৯৬, ব্রি ধান ৮৯, ব্রি ধান ৯২ ও বঙ্গবন্ধু ধান ১০০ আবাদে কৃষকের আগ্রহ বৃদ্ধি পেয়েছে।
গত ১৩ এপ্রিল দেবিদ্বার উপজেলার ইউসুফপুর ইউনিয়নের ইউসুফপুর গ্রামে বোরো ধান কাটার উদ্বোধন করেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কুমিল্লার উপপরিচালক আইউব মাহমুদ। তিনি জানান, বোরো ধান তোলার উৎসবে শুরু হয়েছে। ভালো ফলনে খুশি কৃষকরা।
তিনি বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড় মিধিলি ও মিগজাউমের আঘাতে রবি ফসলের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে কৃষকদের মৌসুমের শুরু থেকেই আধুনিক উফশী জাত ও হাইব্রিড জাতের বোরো ধান আবাদে উদ্বুদ্ধ করা হয়। বিদ্যুৎ সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে সমন্বয়ের মাধ্যমে সেচ নিশ্চিতকরণ, কালবৈশাখি ঝড়, অতিবৃষ্টি, তাপদাহ, রোগ-বালাইয়ের প্রাদুর্ভাবসহ নানা প্রতিকূলতা ছিল।
‘নিয়মিত মাঠ পরিদর্শন ও সঠিক পরামর্শ প্রদানের মাধ্যমে এখন পর্যন্ত মাঠের সার্বিক পরিস্থিতি ভালো লক্ষ্য করা যাচ্ছে। এ বছর বোরো মৌসুমে ভালো ফলন আশা করা হচ্ছে।’
জেলার দেবিদ্বার এলাকা ঘুরে শুক্রবার দেখা যায়, ফসলের মাঠে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা। জমিতে ব্রি ধান ৯৬ জাতের একটি জমিতে প্রতি হেক্টরে ফলন পাওয়া গেছে ৪ দশমিক ১৮ টন।
কৃষি বিভাগের পরামর্শে প্রথমবারের মতো ব্রি ধান ৯৬ জাতটি চাষ করেছেন কৃষক আবুল কালাম আজাদ। মাত্র ১৩০ দিনের জীবনকালে বাম্পার ফলন পেয়ে বেজায় খুশি তিনি।
দেবিদ্বার উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ বানিন রায় জানান, এ বছর দেবিদ্বার উপজেলায় ১২ হাজার ৬৯০ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়েছে। যা গত বছর ছিল ১২ হাজার ৬৩০ হেক্টর। বোরো ধানে ব্রি ধান ২৮ এর পরিবর্তে একই জীবনকালের, তবে অধিক ফলনের ব্রি ধান ৯৬ চাষের পরামর্শ প্রদান ও উদ্বুদ্ধকরণ কার্যক্রম চলমান ছিল।
তিনি জানান, স্বর্ণা ধানের মতো রঙের এ ধানটিতে প্রোটিনের পরিমাণ ১০ দশমিক ৮ শতাংশ ও এমাইলোজের পরিমাণ ২৮ শতাংশ হওয়ায় ভাত খেতে সুস্বাদু ও ঝরঝরে।
আরও পড়ুন:মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানের ভেতর দিয়ে যাওয়া শ্রীমঙ্গল-ভানুগাছ সড়কে রাস্তা পারাপারের সময় গাড়িচাপায় পিষ্ট হয়ে প্রাণ গেছে ১২ ফুট লম্বা একটি অজগরের।
মাগুরছড়া খাসিয়াপুঞ্জির সামনে বৃহস্পতিবার রাতে এ ঘটনা ঘটে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
বন বিভাগের ভাষ্য, অজগরটিকে মাটিচাপা দেয়া হয়েছে।
বন্যপ্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ জানায়, লাউয়াছড়ায় বনের ভেতরে যানবাহন চলাচলের জন্য বন বিভাগ দিকনির্দেশনা দিয়ে সাইনবোর্ড লাগিয়েছে, কিন্তু কেউ সেটা মানে না। যেভাবে খুশি সেভাবে চলাচল করে সব ধরনের গাড়ি। ধারণা করা হচ্ছে কোনো এক সময় রাস্তায় চলাচলকারী গাড়ির চাপায় ১২ফুট লম্বা অজগরটি পিষ্ট হয়ে বৃহস্পতিবার রাতে মারা যায়।
বন্যপ্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের রেঞ্জ কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘লাউয়াছড়া বনের মাগুরছড়া খাসিয়াপুঞ্জির সামনে শ্রীমঙ্গল-ভানুগাছ সড়কে শুক্রবার সকালে অজগর সাপকে মৃত অবস্থায় দেখেন স্থানীয়রা।
‘খবর পেয়ে বন বিভাগের লোকজন মৃত অজগরটিকে উদ্ধার করে জানকীছড়ায় মাটিচাপা দেন।’
কিশোরগঞ্জের আলোচিত পাগলা মসজিদের দানবাক্স খুলে এবার ২৭ বস্তা টাকা পাওয়া গেছে, যেগুলোর গণনা চলছে এ মুহূর্তে।
জেলা শহরের ঐতিহাসিক মসজিদটিতে ৯টি দানবাক্স আছে, যেগুলো প্রতি তিন মাস পরপর খোলা হয়। রমজানের কারণে এবার এবার খোলা হয়েছে চার মাস ১০ দিন পর।
অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও দানবাক্স খোলা কমিটির আহ্বায়ক কাজী মহুয়া মমতাজের তত্ত্বাবধানে জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ ও পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ রাসেল শেখের উপস্থিতিতে সকাল সাড়ে সাতটার দিকে দানবাক্সগুলো খোলা হয়। এবার ৯টি দানবাক্স খুলে ২৭ বস্তা টাকা পাওয়া গেছে।
এখন চলছে গণনার কাজ। গণনা শেষে টাকার পরিমাণ বলা যাবে।
ডিসি মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, সকাল সাড়ে সাতটার দিকে মসজিদ পরিচালনা কমিটির সদস্যদের উপস্থিতিতে ৯টি দানবাক্স খোলা হয়েছে। এসব দানবাক্সে ২৭ বস্তা টাকা পাওয়া গেছে।
এসপি মোহাম্মদ রাসেল শেখ জানান, কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে পাগলা মসজিদের দানবাক্সগুলো খোলা হয়েছে। টাকা গণনা শেষে ব্যাংকে পৌঁছে দেয়া পর্যন্ত পুলিশ সদস্যরা নিরাপত্তায় নিয়োজিত থাকবেন।
টাকা গণনার কাজে জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা, কর্মচারীরা ছাড়াও মাদ্রাসার ১১২ ছাত্র, ব্যাংকের ৫০ কর্মী, মসজিদ কমিটির ৩৪ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ১০ জন সদস্য অংশ নিয়েছেন।
দানবাক্সগুলো খোলার পর গণনা দেখতে মসজিদের আশপাশে ভিড় করছেন উৎসুক মানুষ। তাদের মধ্যে অনেকে এসেছেন দূরদুরান্ত থেকে।
এর আগে ২০২৩ সালের ৯ ডিসেম্বর তিন মাস ২০ দিন পর দানবাক্সগুলো খোলা হয়েছিল। তখন ২৩টি বস্তায় ছয় কোটি ৩২ লাখ ৫১ হাজার ৪২৩ টাকা পাওয়া গিয়েছিল।
ঐতিহাসিক এ মসজিদের দানবাক্সে একসঙ্গে এত টাকা পাওয়াটা তখন ছিল নতুন রেকর্ড। এবার সে রেকর্ড ছাড়িয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
মসজিদটিতে নিয়মিত হাঁস-মুরগি, গরু-ছাগলসহ বিভিন্ন ধরনের জিনিসপত্র দান করেন বিভিন্ন জেলা থেকে আসা অসংখ্য মানুষ।
জেলা শহরের হারুয়া এলাকায় নরসুন্দা নদীর তীরে প্রায় ১০ শতাংশ জমিতে পাগলা মসজিদ গড়ে ওঠে। সম্প্রসারণের পর মসজিদের আওতাভুক্ত জমির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে তিন একর ৮৮ শতাংশে।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য