স্থানীয় রাজনৈতিক নেতাদের নজরে আসতে নিজেদের মোটরসাইকেল থাকা দরকার। এমন চিন্তা থেকে টাকার সন্ধান করতে থাকেন হৃদয় হোসেন, সাদ্দাম হোসেন ও নাজমুল হোসেন নামের তিন তরুণ।
পরিবারের সামর্থ্য না থাকায় তারা সিদ্ধান্ত নেন কাউকে জিম্মি করে মুক্তিপণের মাধ্যমে টাকা আদায় করবেন। আর ওই টাকা দিয়েই রাজনৈতিক নেতাদের দৃষ্টিতে আসতে মোটরসাইকেল কিনবেন তারা।
জিম্মি করার মতো লোক খুঁজতে থাকেন তারা। সেই সঙ্গে তিনজনই সিদ্ধান্ত নেন, অপহরণকৃত ব্যক্তিকে তুলে নেয়ার পর প্রথমে হত্যা করবেন এবং হত্যার শিকার ব্যক্তির পরনের পোশাক চিহ্ন হিসেবে রেখে দিয়ে মুক্তিপণ আদায় করবেন।
এমন সিদ্ধান্তের একপর্যায়ে এলাকার দুজনকে টার্গেট করেন তারা। কিন্তু বয়সে বড় হওয়ায় তারা টার্গেট পরিবর্তন করে আল আমিন নামে সাত বছরের এক শিশুকে বেছে নেন।
তাকে কৌশলে অপহরণ করেন ওই তরুণেরা। এরপর কালক্ষেপণ না করে পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী তাকে তারা হত্যা করেন, কিন্তু শেষ পর্যন্ত রক্ষা হয়নি। ভারতে পালিয়ে যাওয়ার আগে তারা ধরা পড়েন পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) জালে। ঘটনাটি মানিকগঞ্জের সিঙ্গাইর উপজেলার।
শনিবার দুপুরে রাজধানীর ধানমন্ডিতে পিবিআই সদরদপ্তরে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান সংস্থাটির মানিকগঞ্জ ইউনিটের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এম কে এইচ জাহাঙ্গীর আলম।
শিশু অপহরণ ও বস্তায় মরদেহ
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জাহাঙ্গীর আলম জানান, গত ২৮ আগস্ট সকাল ৯টার দিকে শিশু আল-আমিন মানিকগঞ্জে তার বাড়ির সামনে কাঁচা রাস্তার ওপর বাইসাইকেল চালানোর জন্য বের হয়। কিন্তু এক ঘণ্টা পার হলেও সে বাড়িতে ফিরে না আসায় তার মা খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। বাড়ির আশপাশ ও সম্ভাব্য সব জায়গায় খোঁজাখুঁজি করেও শিশুটিকে পাওয়া যায়নি। পরদিন তার বাবা শহিদুল ইসলাম সিংগাইর থানায় গিয়ে ছেলের নিখোঁজসংক্রান্ত জিডি করেন।
৩১ আগস্ট সকাল ১০টার দিকে প্রতিবেশীরা বেরুন্ডি গ্রামে টেমা মিয়ার পরিত্যক্ত ভিটায় একটি বাঁশঝাড়ের মাঝে শিশুর পরিহিত গেঞ্জির অংশ, প্যান্ট ও মাছির আনাগোনা দেখতে পান। সন্দেহ হওয়ায় বাঁশপাতা সরিয়ে মাটি খুঁড়ে একটি প্লাস্টিকের বস্তায় আলামিনের মৃতদেহ পান স্বজনরা।
যেভাবে অভিযুক্তদের ধরা হলো
পিবিআইয়ের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জাহাঙ্গীর আলম বলেন, শিশু আল-আমিন হত্যাসংক্রান্ত বিষয়ে ওই দিন বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হলে তা সেটি তাদের নজরে আসে। তারা ছায়া তদন্ত শুরু করেন এবং ঘটনার সম্ভাব্য সব তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করেন। সেই সঙ্গে স্থানীয় লোকজনকে চলে জিজ্ঞাসাবাদ।
শিশু আল-আমিনের সেদিনের চলাফেরার সার্বিক বিষয় বিবেচনায় নিয়ে হৃদয়, সাদ্দাম ও নাজমুল নামে তিনজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ হেফাজতে নেয়া হয়। জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে তারা হত্যার কথা স্বীকার করেন। পরে শনিবার সকালে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
এসপি জাহাঙ্গীর আলম আরও বলেন, ‘জিজ্ঞাসাবাদে ওই তিন তরুণ জানান, অবৈধভাবে অর্থ উপার্জনের জন্য যে কাউকে অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায় করার পরিকল্পনা করেন তারা। এ জন্য তারা তিনজন প্রথমে এলাকার অন্য দুটি শিশুর যেকোনো একজনকে অপহরণের পরিকল্পনা করেন। কিন্তু তাদের বয়স বেশি হওয়ায় অপহরণের চিন্তা বাদ দেয়া হয়।’
তিনি বলেন, ‘তাদের মুক্তিপণ আদায়ের পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী গ্রেপ্তার আসামি হৃদয় শিশু আল-আমিনকে বন্যার পানি দেখানোর কথা বলে সাপের ভিটায় (বড় বাঁশঝাড়) নিয়ে যান। সেখানে নাজমুল আগেই অবস্থান করেন। তারা দুজন প্রথমে আল-আমিনকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন। এরপর নাজমুলের কাছে থাকা প্লাস্টিকের বস্তার মধ্যে মৃতদেহ ঢুকিয়ে ফেলেন।
‘আল-আমিনের পরনের গেঞ্জি ও প্যান্ট তারা মুক্তিপণ আদায়ের প্রমাণ হিসেবে খুলে রাখেন। এরপর মরদেহের বস্তাটি বাঁশঝাড়ের কাছাকাছি জায়গায় প্রায় হাঁটু পানিতে ডুবিয়ে রেখে একটি মুরগির নিটারের (বর্জ্য) বস্তা দিয়ে চাপা দেন। এ সময় নাজমুলের ফোন থেকে সাদ্দামকে ফোন দিয়ে হৃদয় বলেন যে কাজ হয়ে গেছে।’
ঘটনার পর আল-আমিনের ব্যবহৃত সাইকেল দিনের বেলায় হৃদয় ও নাজমুল লুকিয়ে রাখেন এবং ওই দিন রাতে হৃদয়দের বাড়ির পশ্চিম পাশে পুকুরে ফেলে দেন। তারা ২৮ আগস্ট আল-আমিনকে হত্যা করলেও ৩০ আগস্ট হৃদয় যে ডোবায় বস্তা পুঁতে রেখেছিলেন সেই বস্তা পানির নিচ থেকে তুলে পাশেই শুকনা জায়গায় মাটিতে গর্ত করে আবারও পুঁতে রাখেন। যে কারণে স্থানীয়রা ওই দিন মৃতদেহ খুঁজে পান।
এসপি জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘ওই তরুণদের পরিকল্পনা ছিল শিশুটিকে হত্যার পর নতুন সিম থেকে শিশুর স্বজনদের ফোন দিয়ে মুক্তিপণ আদায় করবেন। কিন্তু সাদ্দাম ঘটনার দিন নতুন সিম সংগ্রহ করতে না পারায় আল-আমিনের বাবার সাথে যোগাযোগ করতে পারেননি তারা। তাই তারা মুক্তিপণও চাইতে পারেননি। মুক্তিপণ চাওয়ার আগেই স্থানীয়রা শিশুটির মৃতদেহ পেয়ে যাওয়ায় তারা এলাকা ছেড়ে পালানোর সিদ্ধান্ত নেন।’
তিনি বলেন, ‘তারা পালানোর জন্য প্রথমে মানিকগঞ্জ থেকে সাভারের একটি হোটেলে ওঠেন। সেখানে হোটেল বয়ের ফোন থেকে ওই শিশুর বাবার কাছে ৩০ লাখ টাকা মুক্তিপণ চান হৃদয়, কিন্তু তারা ভয়ে ছিলেন যেকোনো সময় ধরা পড়বেন। তাই মুক্তিপণ চাইলেও তারা ওই দিন সাভার থেকে যশোরের বেনাপোল সীমান্তে চলে যান।
‘তারা চেয়েছিলেন সেখানে অবৈধভাবে ভারতে পালিয়ে যাবেন, কিন্তু নিরাপত্তা বাহিনীর কড়া নজরদারি এবং অবৈধভাবে প্রবেশের জন্য যাদের সহযোগিতা প্রয়োজন তাদের পর্যাপ্ত টাকা দিতে না পারায় তারা পালিয়ে ভারত যেতে ব্যর্থ হন। পরে সেখান থেকে তারা রাজবাড়ীতে পালিয়ে যান। সেখানে আত্মগোপনে থাকার চেষ্টা করলেও পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে গিয়ে পিবিআইয়ের জালে ধরা পড়েন।’
আরও পড়ুন:কদিন ধরেই তীব্র গরম। দেশের কোথাও মাঝেমধ্যে বৃষ্টি হচ্ছে, তবে গরম অবশ্য কমছে না। আবহাওয়া আপাতত এমনই থাকবে।
শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে এ তথ্য দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, কুমিল্লা ও কিশোরগঞ্জ অঞ্চলসহ ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের দু-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে।
এতে বলা হয়, একই সঙ্গে কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলাবৃষ্টি হতে পারে। এ ছাড়া দেশের অন্যত্র অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে।
অধিদপ্তর বলছে, রাজশাহী, পাবনা ও টাঙ্গাইল জেলাসহ খুলনা বিভাগের ওপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ এবং চাঁদপুর ও মৌলভীবাজার জেলাসহ ঢাকা ও রাজশাহী বিভাগের অবশিষ্টাংশ ও বরিশাল বিভাগের ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সারা দেশে দিনের তাপমাত্রা সামান্য বৃদ্ধি পেতে পারে এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। জলীয় বাষ্পের আধিক্যের কারণে অস্বস্তি বৃদ্ধি পেতে পারে।
আবহাওয়ার সার্বিক পর্যবেক্ষণে বলা হয়, লঘুচাপের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে।
আগামী পাঁচ দিনের পূর্বভাসে বলা হয়েছে, তাপপ্রবাহ প্রায় একই রকম থাকতে পারে। আবহাওয়ায় তেমন পরিবতর্তন আসবে না।
দেশে চলমান দাবদাহ শুক্রবার থেকে পরবর্তী ৭২ ঘণ্টা অব্যাহত থাকতে পারে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর।
রাষ্ট্রীয় সংস্থাটি শুক্রবার তাপপ্রবাহের সতর্কবার্তায় এ কথা জানায়।
আবহাওয়াবিদ ড. মুহাম্মদ আবুল কালাম মল্লিক স্বাক্ষরিত সতর্কবার্তায় বলা হয়, ‘দেশের ওপর দিয়ে চলমান তাপপ্রবাহ আজ (১৯ এপ্রিল, ২০২৪) হতে পরবর্তী ৭২ ঘণ্টা অব্যাহত থাকতে পারে এবং তাপমাত্রা আরও বৃদ্ধি পেতে পারে।
‘জলীয় বাষ্পের আধিক্যের কারণে অস্বস্তি বৃদ্ধি পেতে পারে।’
৭২ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাস
আবহাওয়া অধিদপ্তর শুক্রবার সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ৭২ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে সিনপটিক অবস্থা নিয়ে বলেছে, লঘুচাপের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে রয়েছে।
তাপপ্রবাহ বা দাবদাহের বিষয়ে বলা হয়, বাগেরহাট, যশোর, চুয়াডাঙ্গা ও কুষ্টিয়া জেলার ওপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। অন্যদিকে দিনাজপুর, রাঙ্গামাটি, চাঁদপুর, খুলনা, সাতক্ষীরা, বরিশাল ও পটুয়াখালী জেলা এবং ঢাকা ও রাজশাহী বিভাগের ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। এটি অব্যাহত থাকতে পারে।
আরও পড়ুন:প্রথম ধাপের উপজেলা নির্বাচনে মোট বৈধ প্রার্থী দাঁড়িয়েছে এক হাজর ৭৮৬ জন। মাঠ পর্যায় থেকে পাঠনো তথ্য একীভূত করার পর এ তথ্য জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনের অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ।
তিনি জানান, প্রথম ধাপে চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছিলেন এক হাজার ৮৯০ জন। এদের মধ্যে বাছাইয়ে ১০৪ জনের মনোনয়নপত্র বাতিল, আর বৈধতা পেয়েছে এক হাজার ৭৮৬ প্রার্থীর।
নির্বাচন কমিশন ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, রিটার্নিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ১৮ থেকে ২০ এপ্রিল পর্যন্ত আপিল করা যাবে। আপিল নিষ্পত্তি ২১ এপ্রিল, প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময় ২২ এপ্রিল। এরপর প্রতীক বরাদ্দ ২৩ এপ্রিল এবং ১৫০ উপজেলায় ভোটগ্রহণ হবে আগামী ৮ মে।
অপপ্রচার রোধে প্রশিক্ষণের প্রয়োজন হলে ভারতীয় প্রতিষ্ঠানের সহায়তা নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত।
বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে প্রতিমন্ত্রীর নিজ দপ্তরে ভারতের হাইকমিশনার প্রণয় কুমার ভার্মার সৌজন্য সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন।
আরাফাত বলেন, ‘অপপ্রচার রোধে ভারতের কিছু প্রতিষ্ঠান কাজ করে। তারা কীভাবে কাজ করে, তাদের অভিজ্ঞতা এবং প্রক্রিয়া-পদ্ধতি বিনিময় জানা-বোঝার চেষ্টা করব। এক্ষেত্রে কোনো প্রশিক্ষণের প্রয়োজন হলে আমরা তাদের কাছ থেকে সহায়তা নেব।’
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ এবং ভারতের মধ্যে যেসব কো-অপারেশন আছে, সেসব নিয়ে আলোচনা হয়েছে। বিশেষ করে বিটিভিতে দুই ঘণ্টার একটি চাংক নিয়ে আমরা আন্তর্জাতিক সংবাদ বিশ্লেষণ, চলমান ঘটনাপ্রবাহ এবং সংবাদ উপস্থাপনা শুরু করতে যাচ্ছি। সেক্ষেত্রে ভারতের যে সংবাদ সংস্থাগুলো আছে, বিশেষ করে এএনআইয়ের সঙ্গে কোলাবরেশন করা যায় কি না, তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
‘যেহেতু বিটিভি ইন্ডিয়াতে দেখানো হয়, সেহেতু দুই ঘণ্টার এ চাংক আমরা ধীরে ধীরে দুই, তিন, চার ঘণ্টা পর্যন্ত বাড়াব। আমরা আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী করতে চাচ্ছি, যেখানে দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশের খবর থাকবে। এর বাইরেও বিভিন্ন দেশের খবর থাকবে।’
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা চেষ্টা করব ভারতীয় দর্শকদের আকৃষ্ট করতে। এ ছাড়া ইন্ডিয়ান ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন নিয়ে ইনস্টিটিউশন আছে, তাদের সঙ্গে কোলাবরেশন করা, বিভিন্ন ধরনের প্রোগ্রাম ও ট্রেনিং করা।’
‘সম্প্রতি মুজিব শিরোনামের যে সিনেমাটি সহ-প্রযোজনা হয়েছে, এমন অন্য কোনো সিনেমায় সহ-প্রযোজনার সুযোগ আছে কি না তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে’- যোগ করেন প্রতিমন্ত্রী।
ভারতের সিনেমা যেহেতু বাংলাদেশের বাজারে চলে সেহেতু বাংলাদেশেরও ভালো মানের সিনেমা ভারতে চালানোর বিষয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘দর্শককে জোর করে কিছু দেখানো যায় না। বাজারে কোনো জিনিসের চাহিদা থাকলে তা স্বয়ংক্রিয়ভাবেই যাবে-আসবে। সিনেমা যেহেতু প্রোডাক্ট, সেহেতু ভারতের বাজারে দর্শক থাকলে অবশ্যই যাবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘যে বিষয়গুলো নিয়ে আমাদের আরও কো-অপারেশনের সুযোগ আছে, সেসব নিয়ে আমরা আলোচনা করেছি। আমি মনে করি- বাংলাদেশ এ বিষয়ে বেশি লাভবান হবে। কারণ ভারতের ফিল্মে, টেলিভিশনে বা অন্যান্য জায়গায় যে অভিজ্ঞতা আছে, তা আমরা যত বেশি নেয়ার চেষ্টা করা যায়। দেশের উন্নয়নের জন্য এসব জরুরি।’
আরও পড়ুন:সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতি অর্জনে অবদান রাখতে এবং দেশকে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলায় পরিণত করায় অবদান রাখতে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী সবকিছু করছে।
বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অফ ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ (বিআইআইএসএস) মিলনায়তনে ‘ডিফেন্স ডিপ্লোমেসি: স্ট্র্যাটেজি ফর বাংলাদেশ’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। সূত্র: ইউএনবি
সেনাপ্রধান বলেন, ‘মাতৃভূমিকে রক্ষা করা, দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষা করা আমাদের কর্তব্য এবং আমরা তার জন্য প্রস্তুত আছি। আমরা সবকিছুই করছি।’
বঙ্গবন্ধুর পররাষ্ট্র নীতির বাণী ‘সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারও সঙ্গে বৈরিতা নয়’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এই পররাষ্ট্রনীতি বাস্তবায়নে আমরা সবকিছু করছি।’
জাতীয় নিরাপত্তা বজায় রেখে টেকসই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির ওপর গুরুত্বারোপ করে সেনাপ্রধান বলেন, ‘কূটনীতি যেকোনো ধরনের জাতীয় স্বার্থ অর্জনের প্রচেষ্টা ছাড়া আর কিছুই নয়।’
বেসামরিক শক্তির সহায়তায় সেনাবাহিনী কীভাবে দেশে গঠনমূলক কর্মকাণ্ড, দেশ-বিদেশে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা এবং অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করছে সে কথাও উল্লেখ করেন তিনি।
সেনাপ্রধান বলেন, ‘যেখানেই সুযোগ আছে, তা প্রত্যক্ষ হোক বা পরোক্ষ, আমরা সুযোগ গ্রহণ করি এবং বাংলাদেশের স্বার্থে সবকিছু করি।’
সামরিক কূটনীতির কথা বলতে গিয়ে জেনারেল শফিউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘আরও সম্পদ ও বাজেট বরাদ্দ করে তাদের সক্ষমতা বাড়াতে হবে। আমরা জানি কীভাবে এটা করতে হয়। কিন্তু আমাদের এটা করার সামর্থ্য থাকা উচিত।’
মিয়ানমার ইস্যু প্রসঙ্গে সেনাপ্রধান বলেন, ‘মিয়ানমারের সামরিক নেতাদের কেউ কেউ আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞার মুখোমুখি হচ্ছেন এবং এখানে নিজেদের সমস্যায় ফেলার ঝুঁকি রয়েছে।
‘এক বন্ধুকে খুশি করার জন্য আমরা আরেক বন্ধুর বিরোধিতা করতে পারি না। বেশকিছু বিষয় রয়েছে যা আমাদের খেয়াল করতে হবে। এসব ঘটনার প্রভাবও বিবেচনায় নেয়া হয়েছে। আমরা আমাদের সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি এবং আমরা সঠিক পথেই রয়েছি।’
জেনারেল শফিউদ্দিন বলেন, দূর থেকে চালানো যায় এমন কিছু যানবাহন দেশেই তৈরি হচ্ছে যা বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর জন্য বেশ উপকারে আসবে। আগে এসব যন্ত্রপাতি আমদানি করতে হতো। তাই এখন আমাদের প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় হচ্ছে।’
সেনাপ্রধান বলেন, ‘বাংলাদেশ সেনাবাহিনী কেবল যুদ্ধে লড়াই করাই শেখে না, বরং জাতীয় স্বার্থে কীভাবে যুদ্ধ প্রতিরোধ বা এড়াতে হয় তা-ও জানে। আমরা সঠিক পথেই আছি এবং আমরা আমাদের দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হবো না।’
একইসঙ্গে তিনি বলেন, ‘দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষা করা সামরিক বাহিনীর প্রধান দায়িত্ব। এটি তারা কখনও ভুলে যায় না এবং এ কাজে সবসময় তাদের প্রস্তুত থাকতে হবে।
‘উদ্দেশ্য রাতারাতি পরিবর্তন হতে পারে। কিন্তু সক্ষমতা রাতারাতি পরিবর্তন হয় না। আজ আপনি আমার বন্ধু, আগামীকাল বন্ধু না-ও হতে পারেন। কিন্তু জাতীয় স্বার্থ, মাতৃভূমি রক্ষায় আমাদের সক্ষমতা থাকতে হবে- পররাষ্ট্রনীতির এই আদেশ আমাদের সবার জন্য সমান।’
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন বিআইআইএসএস চেয়ারম্যান রাষ্ট্রদূত এ এফ এম গওসোল আযম সরকার ও মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মো. আবু বকর সিদ্দিক খান।
আরও পড়ুন:বাংলাদেশের সীমান্ত রক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড বাংলাদশের (বিজিবি) মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি এলাকা পরিদর্শন করেছেন।
বিজিবি মহাপরিচালক বৃহস্পতিবার সকালে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ১১ বিজিবি ব্যাটালিয়ন সদর দপ্তরের কোয়ার্টার গার্ড পরিদর্শন শেষে বিজিবি কার্যালয় পরিদর্শন করেন। দুপুরে মিয়ানমারের রাখাইন থেকে পালিয়ে আসা বর্ডার গার্ড সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আশ্রয় নেয়া প্রতিবেশী দেশটির জান্তা বাহিনীর সদস্যদের খোঁজখবর নেন তিনি।
পরে তিনি ১১ বিজিবির অধীন চাকঢালা বিওপি (বর্ডার অবজারবেশন পোস্ট) পরিদর্শন করেন। এ সময় তিনি মিয়ানমার থেকে জান্তা বাহিনীর সদস্যদের পালিয়ে আসার স্পটগুলো সম্পর্কে খোঁজখবর নেন। সীমান্তে বিজিবিকে সর্বোচ্চ সতর্ক থাকতে নির্দেশ দেন।
পরিদর্শনকালে বিজিবি মহাপরিচালকের সঙ্গে ছিলেন কক্সবাজার রিজিয়ন কমন্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ মোরশেদ আলমসহ বিজিবি রামুর সেক্টর ও অধীনস্ত বিজিবি ব্যাটালিয়নে নাইক্ষ্যংছড়ি ১১ বিজিবি’র জোন কমন্ডার ও অধিনায়ক লে. কর্নেল সাহল আহমদ এসিসহ বিজিবির কর্মকর্তারা।
বান্দরবানে কুকি চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে যৌথ অভিযানে গ্রেপ্তার হওয়া ৫৩জনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে আদালত। রুমা থানার দুটি মামলায় বৃহস্পতিবার এই আদেশ দেয়া হয়। পাশাপাশি এক নারীকে জেল গেটে জিজ্ঞাসাবাদসহ মামলায় ৫৭জনকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
বান্দরবান সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মোহাম্মদ নাজমুল হোছাইন বৃহস্পতিবার দুপুরে মামলার শুনানি শেষে এই আদেশ দেন।
আদালতে আসামি পক্ষে একাধিক আইনজীবী উপস্থিত ছিলেন। আইনজীবীরা জানান, রুমা থানার জিআর মামলা নং- ৪ ও ৭ মামলায় পুলিশ আসামিদের আদালতে হাজির করে রিমান্ড চেয়ে আবেদন করে। আদালত উভয় পক্ষের শুনানি শেষে ৫৩জনের রিমান্ড মঞ্জুর করে। এর মধ্যে ৫২জনকে দু’দিন করে রিমান্ড এবং একজনকে জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দেয়া হয়।
এর আগে বান্দরবান জেলা কারাগার থেকে কঠোর নিরাপত্তায় ১৮জন নারী ও ৩৯জন পুরুষ বন্দিকে দুটি গাড়িতে করে আদালতে হাজির করা হয়। সম্প্রতি বান্দরবানের রুমায় সোনালী ব্যাংকে লুটের ঘটনায় তাদেরকে রুমা উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এদিকে বান্দরবানে চলমান যৌথ অভিযানে সন্দেহভাজন আরও একজনকে আটক করা হয়েছে। এ পর্যন্ত ৬৬জনকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
মন্তব্য