× হোম জাতীয় রাজধানী সারা দেশ অনুসন্ধান বিশেষ রাজনীতি আইন-অপরাধ ফলোআপ কৃষি বিজ্ঞান চাকরি-ক্যারিয়ার প্রযুক্তি উদ্যোগ আয়োজন ফোরাম অন্যান্য ঐতিহ্য বিনোদন সাহিত্য শিল্প ইভেন্ট উৎসব ধর্ম ট্রেন্ড রূপচর্চা টিপস ফুড অ্যান্ড ট্রাভেল সোশ্যাল মিডিয়া বিচিত্র সিটিজেন জার্নালিজম ব্যাংক পুঁজিবাজার বিমা বাজার অন্যান্য ট্রান্সজেন্ডার নারী পুরুষ নির্বাচন রেস অন্যান্য আফগানিস্তান ১৫ আগস্ট কী-কেন স্বপ্ন বাজেট আরব বিশ্ব পরিবেশ বিশ্লেষণ ইন্টারভিউ মুজিব শতবর্ষ ভিডিও যৌনতা-প্রজনন মানসিক স্বাস্থ্য অন্যান্য উদ্ভাবন প্রবাসী আফ্রিকা ক্রিকেট শারীরিক স্বাস্থ্য আমেরিকা দক্ষিণ এশিয়া সিনেমা নাটক মিউজিক শোবিজ অন্যান্য ক্যাম্পাস পরীক্ষা শিক্ষক গবেষণা অন্যান্য কোভিড ১৯ ইউরোপ ব্লকচেইন ভাষান্তর অন্যান্য ফুটবল অন্যান্য পডকাস্ট বাংলা কনভার্টার নামাজের সময়সূচি আমাদের সম্পর্কে যোগাযোগ প্রাইভেসি পলিসি

বাংলাদেশ
Rohingya issue will not disappear until resolved EU
google_news print-icon

সমাধান না হওয়া পর্যন্ত অদৃশ্য হবে না রোহিঙ্গা ইস্যু: ইইউ

সমাধান-না-হওয়া-পর্যন্ত-অদৃশ্য-হবে-না-রোহিঙ্গা-ইস্যু-ইইউ
কক্সবাজারের উখিয়ায় একটি রোহিঙ্গা ক্যাম্প। ছবি: এএফপি
ঢাবি অধ্যাপক ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, ‘ইইউ মিয়ানমারের সঙ্গে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে এবং এটি চীন ও থাইল্যান্ডের পর মিয়ানমারের তৃতীয় বৃহত্তম বাণিজ্য অংশীদার। আমি এখানে ব্যবসায়িক আগ্রহ এবং রাজনীতি দেখে বুঝতে পারি, ইইউ তার ব্যবসায়িক স্বার্থের কারণে রোহিঙ্গা ইস্যুতে মিয়ানমারকে সত্যিকার অর্থে চাপ দিতে পারছে না।’

চলমান করোনা মহামারি সংকট ও আফগান পরিস্থিতি বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটের জন্য চ্যালেঞ্জ হলেও রোহিঙ্গা ইস্যুর স্থায়ী সমাধান না হওয়া পর্যন্ত এটি এজেন্ডা থেকে অদৃশ্য হবে না বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশে ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের (ইইউ) বিদায়ী রাষ্ট্রদূত রেন্সজে তিরিঙ্ক।

তিনি বলেছেন, ‘আমার কাছে ম্যাজিক রেসিপি বা ক্রিস্টাল বল নেই যে, নিমেষে এই পরিস্থিতির উন্নতি হবে। কিন্তু আমি নিশ্চিত করে বলতে পারি, এটি (রোহিঙ্গা ইস্যু) এজেন্ডা থেকে অদৃশ্য হয়ে যাবে না।’

বৃহস্পতিবার ‘বাংলাদেশ-ইউরোপীয় ইউনিয়ন সম্পর্কের ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা’ শীর্ষক অনলাইন আলোচনায় মূল বক্তা হিসেবে ইইউ দূত এসব কথা বলেন।

কসমস গ্রুপের প্রতিষ্ঠান কসমস ফাউন্ডেশন অ্যাম্বাসেডর লেকচার সিরিজের অংশ হিসেবে এই ওয়েবিনার আয়োজন করে।

বর্তমানে আফগানিস্তানের পরিস্থিতিও খুব গুরুত্বপূর্ণ উল্লেখ করে রাষ্ট্রদূত তিরিঙ্ক বলেন, ‘এর মানে এই নয় যে, রোহিঙ্গা ইস্যু অদৃশ্য হয়ে যাবে। আমি এটি অনুসরণ করতে থাকব।’

আলোচনায় উদ্বোধনী বক্তব্য দেন কসমস ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান এনায়েতুল্লাহ খান। সভাপতিত্ব করেন প্রখ্যাত কূটনীতিক ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক পররাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টা ড. ইফতেখার আহমেদ চৌধুরী।

এ ছাড়া আলোচক প্যানেলে আরও উপস্থিত ছিলেন সিপিডির বিশিষ্ট ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য, বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সাবেক সভাপতি ড. রুবানা হক, পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ড. জিয়াদি সাত্তার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ইমতিয়াজ আহমেদ এবং কসমস ফাউন্ডেশনের ইমেরিটাস উপদেষ্টা সাবেক রাষ্ট্রদূত তারিক এ করিম।

এনায়েতুল্লাহ খান ক্রমবর্ধমান যুক্তরাষ্ট্র-চীন দ্বন্দ্ব, করোনা মহামারি, জলবায়ু পরিবর্তন এবং আফগানিস্তান-সংকটের মতো বিষয়গুলো তুলে ধরে বলেন, ‘মনে হচ্ছে রোহিঙ্গা শরণার্থী ইস্যুটি মানুষের মন থেকে অদৃশ্য হয়ে যাচ্ছে।’

রোহিঙ্গা ইস্যুকে অত্যন্ত জটিল উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘ভারত, চীন ও জাপান এই তিনটি গুরুত্বপূর্ণ দেশের সহযোগিতা ছাড়া রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধান করা যাবে বলে আমি মনে করি না।’

ইইউ রাষ্ট্রদূতের কাছে তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, ‘মিয়ানমারের সৃষ্ট এই সমস্যা সমাধানে ইইউ বাংলাদেশকে কী সহায়তা করতে পারে?’

জবাবে রাষ্ট্রদূত তিরিঙ্ক বলেন, ‘মিয়ানমারকে অবশ্যই প্রথমে একটি রাজনৈতিক সমাধান খুঁজে বের করতে হবে। তবে এটি খুবই দুঃখজনক যে ১ ফেব্রুয়ারি মিয়ানমারে একটি সামরিক অভ্যুত্থান ঘটে, যা সত্যিই এই অলোচনার ক্ষেত্রে এক বিরাট ধাক্কা।’

জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে এ নিয়ে চলা তৎপরতা সম্পর্কে রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘দুর্ভাগ্যবশত তারা সেখানকার পরিস্থিতি দেখেছে এবং এটি খুব ইতিবাচক নয়।’

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ, ভারত, চীন এবং জাপানের সঙ্গে অংশীদার হিসেবে আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার জন্য আমরা যোগাযোগ করছি। এটি আমাদের সব সময় এজেন্ডায় থাকে।’

আন্তর্জাতিক সহায়তা সংস্থা এবং জাতিসংঘের মাধ্যমে ইইউ রোহিঙ্গা সংকট এবং বাংলাদেশের কক্সবাজার জেলার স্থানীয় সম্প্রদায়ের জীবন-জীবিকার সহায়তায় উল্লেখযোগ্য তহবিল দিয়ে আসছে।

রোহিঙ্গা ইস্যুকে অর্থনৈতিক স্বার্থ থেকে বিচ্ছিন্ন করতে হবে এমন পরামর্শ দিয়ে অধ্যাপক ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, ‘মহামারি এবং রোহিঙ্গা দুটি বিষয় এখন বাংলাদেশের জন্য বড় উদ্বেগ এবং এই দুটি বিষয় বাংলাদেশের রাজনৈতিক অর্থনীতির সাথে জড়িত। বাংলাদেশ চায় রোহিঙ্গা ইস্যু এবং টিকা কূটনীতিতে ইইউ সক্রিয় ভূমিকা পালন করুক।’

সমাধান না হওয়া পর্যন্ত অদৃশ্য হবে না রোহিঙ্গা ইস্যু: ইইউ
বৃহস্পতিবার ‘বাংলাদেশ-ইউরোপীয় ইউনিয়ন সম্পর্কের ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা’ শীর্ষক অনলাইন আলোচনায় বক্তব্য রাখছেন ইইউ রাষ্ট্রদূত রেন্সজে তিরিঙ্ক

তিনি বলেন, ‘ইউরোপের মূল্যবোধ, আইনের শাসন, সরকার পদ্ধতি এবং মানবাধিকারের প্রশ্নে মিয়ানমারের সঙ্গে ইইউর সম্পর্কের বিষয়টি আসলে মেলানো যায় না।

‘আমি বুঝতে পারছি না ইইউ পার্লামেন্ট কেন বর্তমান মিয়ানমারের সামরিক কর্মকর্তাদের উদ্ভট গণতন্ত্রকে সহায়তা করে। ইইউ মিয়ানমারের নির্বাচনেও সহায়তা করেছে। সামরিক কর্মকর্তারা যখন সংসদে বসেন তখন এটা গণতন্ত্র থাকে না। ইইউকে আরও কঠিন হওয়া উচিত ছিল এবং এটা নিয়ে প্রশ্ন তোলা যেত।’

অধ্যাপক ইমতিয়াজ বলেন, ‘বাংলাদেশ চায় রোহিঙ্গা ইস্যু এবং টিকা কূটনীতিতে ইইউ সক্রিয় ভূমিকা পালন করুক।’

তিনি বলেন, ‘যখন মিয়ানমারের কথা আসে প্রায় ৯০০ মানুষ হত্যার পরও ইইউ এখনও মিয়ানমারের সঙ্গে প্রায় একই ধরনের সম্পর্কের মধ্যে রয়েছে। আপনারা কেবল কিছু সামরিক কর্মকর্তাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন, যারা কখনোই ইইউ দেশগুলোতে যায় না এবং তাদের কোনো ব্যাংক অ্যাকাউন্টও নেই। আপনারা খুব সম্প্রতি মিয়ানমারকে ঋণ পরিশোধেও সহায়তা করেছেন।’

অধ্যাপক ইমতিয়াজ বলেন, ‘ইইউ মিয়ানমারের সঙ্গে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে এবং এটি চীন ও থাইল্যান্ডের পর মিয়ানমারের তৃতীয় বৃহত্তম বাণিজ্য অংশীদার। আমি এখানে ব্যবসায়িক আগ্রহ এবং রাজনীতি দেখে বুঝতে পারি, ইইউ তার ব্যবসায়িক স্বার্থের কারণে রোহিঙ্গা ইস্যুতে মিয়ানমারকে সত্যিকার অর্থে চাপ দিতে পারছে না।’

তিনি বিদায়ী ইইউ রাষ্ট্রদূতকে ব্রাসেলসে ফিরে যাওয়ার পর রোহিঙ্গা ইস্যুকে অর্থনৈতিক স্বার্থ থেকে বিচ্ছিন্ন করার চেষ্টা করার আহ্বান জানান।

অধ্যাপক ইমতিয়াজ আরও বলেন, ‘শুধুমাত্র ব্যবসায়িক স্বার্থের কারণে ইইউ মিয়ানমারের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে যাবে না, যদিও ইরান ও উত্তর কোরিয়াসহ বিশ্বের বেশ কয়েকটি দেশে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘যতক্ষণ না পরিস্থিতি আরও উন্নত হয় যুক্তরাষ্ট্রের মতো ইইউ আফগানিস্তানের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে পারে, কিন্তু মিয়ানমারে তা করবে না। ৯০০ এরও বেশি লোক নিহত হয়েছে, কিন্তু আপনারা এখনও সেদিকে যাননি।’

তিনি বলেন, ‘নেদারল্যান্ডস ছাড়া ইইউ দেশগুলোর কেউই আন্তর্জাতিক আদালতে গাম্বিয়াকে প্রকাশ্যে সহায়তা করেনি। যদিও ইইউ সাময়িক রায়কে স্বাগত জানিয়েছে, কিন্তু তারা সহায়তা করছে না।’

অধ্যাপক ইমতিয়াজ বলেন, ‘দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর গণহত্যা ইস্যুতে সামগ্রিকভাবে ইউরোপ খুবই সক্রিয় ছিল, কিন্তু এখানে যখন মিয়ানমারের কথা আসে তখন তারা চুপ থাকছেন।’

এই আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞ বলেন, 'উইঘুরদের বিরুদ্ধে গণহত্যার ক্ষেত্রে আপনি চীনের সমালোচনাকারী, কিন্তু মিয়ানমারের ক্ষেত্রে আপনি চুপ। সুতরাং আমি মনে করি এটি দিন দিন ক্ষতির কারণ হচ্ছে এবং একপর্যায়ে জনগণ ইউরোপকে গুরুত্বসহকারে নেবে না এবং তাদের স্বার্থ ক্ষতিগ্রস্ত হবে।’

তিনি বলেন, ‘দ্বিতীয় উপায়টি হলো রোহিঙ্গা প্রবাসীদের নাগরিক সত্তা গঠনে সহায়তা করা। কারণ ইউরোপে বিশেষ করে জার্মানি, যুক্তরাজ্য এবং ফ্রান্সসহ বেশ কয়েকটি দেশে রোহিঙ্গা সংগঠন রয়েছে। ইউরোপের রোহিঙ্গা প্রবাসীরা বেশ সক্রিয় এবং ভালো অবস্থানে রয়েছেন।’

অধ্যাপক ইমতিয়াজ বলেন, ‘যখন একটি দেশ গণহত্যা করে তখন তা দ্বিপক্ষীয় সমস্যা হিসেবে থাকে না। কারণ সংজ্ঞা অনুসারে এটি অভ্যন্তরীণ সমস্যা হয়ে দাঁড়ায়। তাই আমি মনে করি, ইইউর একত্রিত হওয়ার সময় এসেছে এবং রোহিঙ্গাদের অংশগ্রহণে একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলন ডাকা উচিত। ওই সম্মেলন থেকে একটি নাগরিক সত্তা গঠন করা যেতে পারে।’

মিয়ানমারের ভূরাজনীতিতে ভারত, চীন এবং জাপান এই তিনটি দেশ গুরুত্বপূর্ণ বলেও ইমতিয়াজ আহমেদ উল্লেখ করেন।

তিনি বলেন, ‘রাষ্ট্রদূত তিরিঙ্ক যখন ব্রাসেলসে ফিরে যাবেন তখন সমস্যাটি সমাধানের জন্য সক্রিয়ভাবে কাজ করতে পারেন। কারণ রোহিঙ্গাদের দুর্দশা তিনি নিজের চোখে দেখেছেন।’

সাবেক রাষ্ট্রদূত তারিক করিম বলেন, ‘দুটি বড় সমস্যাগ্রস্ত দেশ মিয়ানমার এবং আফগানিস্তানের পাশে বাংলাদেশের অবস্থান। এই দুটি সমস্যা সমগ্র অঞ্চলকে অস্থিতিশীল করে তুলতে পারে। এর প্রভাব দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় নিরাপত্তায় এবং বিশ্বব্যাপী অনেক প্রভাব ফেলবে।’

তিনি ইইউকে শুধু বিশ্বব্যাপী নয়, দক্ষিণ এশিয়া এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় তাদের ভূমিকা পুনর্মূল্যায়নের আহ্বান জানান।

রাষ্ট্রদূত তিরিঙ্ক অন্যান্য অংশীদারদের সঙ্গে আলোচনায় রোহিঙ্গা ইস্যুতে বাংলাদেশকে সক্রিয় সহযোগিতা দেয়ার আশ্বাস দিয়ে আলোচনা শেষ করেন।

আরও পড়ুন:
বজ্রাঘাতে ২ রোহিঙ্গার মৃত্যু
কারাগারে ৯ রোহিঙ্গা দালাল
রোহিঙ্গারা কি স্থায়ী হয়ে যাবে
বোয়ালখালীতে ৭৪ রোহিঙ্গা আটক
ভাসানচর থেকে পালানোর সময় আটক ১১

মন্তব্য

আরও পড়ুন

বাংলাদেশ
Attempts to bring Sheikh Hasina back will continue Touhid Hossain

শেখ হাসিনাকে ফিরিয়ে আনার প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে: তৌহিদ হোসেন

শেখ হাসিনাকে ফিরিয়ে আনার প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে: তৌহিদ হোসেন

ভারতে অবস্থানরত ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রত্যার্পণ বিষয়ে বাংলাদেশের কূটনৈতিক প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন।

বৃহস্পতিবার এক সাংবাদিক ব্রিফিংয়ে তিনি বলেন, ‘(প্রত্যার্পণের জন্য দিল্লিকে) আমরা একটি চিঠি পাঠিয়েছি। প্রয়োজনে বিষয়টি নিয়ে আবারও উদ্যোগ নেওয়া হবে।’

তবে এ বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের ‘অনুশোচনা’ আছে কি না- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা ‘অনুশোচনা’ শব্দটিকে ‘লোডেড টার্ম’ হিসেবে বর্ণনা করে বলেন, ‘কে কতটুকু অনুতপ্ত, তা আমি জানি না। তবে আমরা বিষয়টিকে এভাবেই দেখছি যে, প্রয়োজনে বিষয়টি নিয়ে আবারও উদ্যোগ নেওয়া হবে।’

উল্লেখ্য, গত বছরের ডিসেম্বর মাসে বাংলাদেশ সরকার ভারতের কাছে একটি কূটনৈতিক নোট পাঠায়, যেখানে প্রত্যার্পণের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সংযুক্ত করা হয়। ভারত সরকার তখন তা গ্রহণের বিষয়টি স্বীকার করে।

পানি বণ্টন ইস্যুতে এক প্রশ্নের জবাবে তৌহিদ হোসেন বলেন, দীর্ঘ প্রতীক্ষিত তিস্তা চুক্তি এবং আগামী বছর মেয়াদোত্তীর্ণ হতে চলা ৩০ বছর মেয়াদি গঙ্গা পানি বণ্টন চুক্তি নবায়নের মতো বিষয়গুলো দ্বিপাক্ষিক আলোচনার মাধ্যমেই সমাধান করতে হবে বলে তিনি গুরুত্বারোপ করেন।

‘এই বিষয়গুলো আলোচনার মাধ্যমে সমাধানযোগ্য এবং আমরা সেই পথেই এগোচ্ছি,’ বলেন উপদেষ্টা।

সম্প্রতি ঢাকা, বেইজিং ও ইসলামাবাদের মধ্যে অনুষ্ঠিত একটি বৈঠককে গণমাধ্যমে সার্কের বিকল্প জোট হিসেবে প্রচার করার বিষয়টিকেও নাকচ করে দেন মো. তৌহিদ হোসেন।

তিনি স্পষ্ট করে বলেন, এই ব্যাখ্যা মোটেও সঠিক নয়। তিনি আরও যোগ করেন, ‘বৈঠকটি কখনোই সার্কের বিকল্প ছিল না। এটি ছিল সহযোগিতার কিছু ক্ষেত্র নিয়ে আলোচনার জন্য একটি বৈঠক এবং এটি কোনোভাবেই কোনো জোট নয়।’

মন্তব্য

বাংলাদেশ
The Feni program will turn around 

ঘুরে দাঁড়াবে ফেনী কর্মসূচির সমাপ্তি 

বন্যা পুনর্বাসনে অর্ধ কোটি টাকার ঘর নির্মাণ-মেরামত 
ঘুরে দাঁড়াবে ফেনী কর্মসূচির সমাপ্তি 

ফেনীর বন্যা পরবর্তী পুনর্বাসনে সম্মিলিত প্ল্যাটফর্ম ‘ঘুরে দাঁড়াবে ফেনী’ কর্মসূচির আনুষ্ঠানিক সমাপ্তি ঘোষণা হয়েছে। গত বুধবার সন্ধ্যায় শহরের এক রেস্টুরেন্টে সাংবাদিকদের সাথে মত বিনিময়ের মাধ্যমে সফল সমাপ্তি টানা হয়। গত ১০ মাসে এ কর্মসূচির আওতায় গৃহনির্মাণ ও মেরামতে প্রায় ৬০ লাখ টাকার সহায়তা প্রদান করা হয়েছে। যা বেসরকারি উদ্যোগে বেশ বড় কার্যক্রম। এরমধ্যে নতুন ঘর নির্মাণ করা হয়েছে ২০ টি, মেরামত হয়েছে ২৫ টি ঘর। এরমধ্যে দুটি মাদ্রাসা ভবন রয়েছে। এছাড়াও ২৫টি পরিবারকে ২ বান্ডেল করে টিন ও নগদ ২০ হাজার করে দেয় হয়েছে নিজ নিজ ঘর মেরামতের জন্য। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত এমন ১০ জনকে দেয়া হয় ক্ষুদ্র ব্যবসার পুঁজি। চিকিৎসা অনুদান দেয়া হয়েছে আরও ২০ জনকে।

এ উদ্যোগের অন্যতম সমন্বয়ক শরিফুল ইসলাম অপুর পরিচালনায় পুরো প্রকল্পের বিস্তারিত তুলে ধরেন সমন্বয়ক ও সংবাদকর্মী আসাদুজ্জামান দারা। এ সময়ে অর্থ সহায়তা প্রদানকারি ১৯ টি সংগঠন ও প্রতিষ্ঠানের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা হয়।

দীর্ঘ ১০ মাসব্যাপী জেলার প্রত্যন্ত এলাকায় ঘুরে ঘুরে বেসরকারি উদ্যোগে এ বিশাল কার্যক্রম পরিচালনার মাধ্যমে অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন হয়েছে বলে উপস্থিত সংবাদকর্মীরা মতামত দেন। সাংবাদিকদের মধ্যে থেকে মতামত ব্যক্ত করেন শাহজালাল ভুইয়া, আরিফুর রহমান, সফিউল্লাহ রিপন, কপিল মাহমুদ, এম এ আকাশ। ঘর গ্রহণকারীদের পক্ষে বক্তব্য রাখেন ছাগলনাইয়া লাংগল মোড়া গ্রামের জাহিদ হাসান।

ঘুরে দাঁড়াবে ফেনীর সমন্বয়কদের মধ্য থেকে বক্তব্য রাখেন নাসির উদ্দিন সাইমুম ও জালাল উদ্দিন বাবলু৷ এছাড়াও সমন্বয়কদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মহিবুল হক রাসেল, হারুন উর রশিদ, শান্তি চৌধুরী, মুহাম্মদ আবু তাহের ভুইয়া, ইমন উল হক, রিয়াজ উদ্দিন রবিন, কামরুল হাসান রানা, ওসমান গনি রাসেল ও মোহাইমিন তাজিম।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Chittagong senior lawyer Bir freedom fighter Mirza Kashir Uddin Ahmed died

চট্টগ্রামের প্রবীণ আইনজীবী বীর মুক্তিযোদ্ধা মির্জা কছির উদ্দিন আহমেদ মারা গেছেন

চট্টগ্রামের প্রবীণ আইনজীবী বীর মুক্তিযোদ্ধা মির্জা কছির উদ্দিন আহমেদ মারা গেছেন

বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) সকাল সাতটায় চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতালের সিসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির এই প্রবীণ সদস্যের বয়স হয়েছিল ৭৭ বছর।

অ্যাডভোকেট মির্জা কছির উদ্দিন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক হওয়ার পর চট্টগ্রাম আইন কলেজ থেকে এলএলবি পাস করে আইন পেশায় নিয়োজিত হন। ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে তিনি সক্রিয়ভাবে অংশ নেন। মুক্তিযুদ্ধের পর তিনি বাংলাদেশ ছাত্রলীগ চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলার প্রতিষ্ঠাকালীন সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। পরে আমৃত্যু তিনি চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের আইনবিষয়ক সম্পাদক ছিলেন।

মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, দুই পুত্র ও দুই কন্যা রেখে গেছেন। তার তিন ছেলে-মেয়েই আইনপেশায় নিয়োজিত। বড় ছেলে সাবেক সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মির্জা শোয়েব মুহিত সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী। সাতকানিয়ার প্রয়াত চিকিৎসক মোহাম্মদ আবুল ফয়েজ মরহুমের বড় ভাই। দৈনিক চট্টগ্রাম প্রতিদিনের সম্পাদক হোসাইন তৌফিক ইফতিখার তার ভাতিজা।

চট্টগ্রাম আদালত ভবনে মরহুমের প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয় বেলা সাড়ে ১২টায়। এতে অংশ নেন সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ মো. নুরুল ইসলাম ও মহানগর দায়রা জজ মো. হাসানুল ইসলাম। আরও অংশ নেন চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতি সভাপতি আবদুস সাত্তার, সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ হাসান আলী চৌধুরীসহ জ্যেষ্ঠ আইনজীবীরা, জামায়াতের কর্মপরিষদের সদস্য শাহজাহান চৌধুরী, চট্টগ্রাম জামায়াতে মহানগরের আমির নজরুল ইসলামসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ।

মরহুমের গ্রামের বাড়ি সাতকানিয়ার উপজেলার মাদার্শার দেওদীঘি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে দ্বিতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় তাকে রাষ্ট্রীয় মার্যাদায় পুলিশের একটি চৌকস দল ‘গার্ড অফ অনার’ প্রদান করে। এতে উপস্থিত ছিলেন সাতকানিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মিল্টন বিশ্বাস, সাতকানিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জাহেদুল ইসলাম, উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ফারিস্তা করিম, সাতকানিয়া উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের নেতৃবৃন্দ।

বিকালে তৃতীয় ও শেষ জানাজার পর মাদার্শা বুড়িপুকুর মসজিদের পারিবারিক কবরস্থানে তাঁকে দাফন করা হয়।

বিভিন্ন মহলের শোক

অ্যাডভোকেট মির্জা কছির উদ্দিনের মৃত্যুতে পুষ্পস্তবক দিয়ে শ্রদ্ধাঞ্জলি ও শোক জানিয়েছে— সাতকানিয়া উপজেলা প্রশাসন, চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতি, সাতকানিয়া উপজেলা আইনজীবী সমিতি, সাতকানিয়া উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, সম্মিলিত আইনজীবী সমন্বয় পরিষদ-চট্টগ্রাম, সাতকানিয়া-লোহাগাড়া সাংবাদিক ফোরাম, চট্টগ্রামের নেতৃবৃন্দ, সাতকানিয়া ল’ইয়ার্স সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট এএসএম বজলুর রশিদ মিন্টু।

এছাড়া সাতকানিয়ায় কর্মরত সাংবাদিকদের মধ্যে সুকান্ত বিকাশ ধর, দিদারুল আলম, জাহেদ হোসাইন, হারুনর রশিদ, ইকবাল মুন্না, তারেক হোসাইন, সাইফুল ইসলাম, মিনহাজ বাঙালি, মো.আরিফুল ইসলাম, মামুনুল হক, মোহাম্মদ হোছাইন, মাসুদুল করিম, টিআই খাইরু,লোহাগাড়ার তাজউদ্দীন, দেলোয়ার হোসেন রশিদীসহ বিভিন্ন সাংবাদিক সংগঠন গভীর শোক জানিয়েছে।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Cabs human bond in Chittagong demanding relief on rice legs

ভাতের পাতে স্বস্তির দাবিতে চট্টগ্রামে ক্যাবের মানববন্ধন

ভাতের পাতে স্বস্তির দাবিতে চট্টগ্রামে ক্যাবের মানববন্ধন

চালের ক্রমাগত অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধিতে সার্বিক মূল্যস্ফীতি বৃদ্ধি ও খাদ্য নিরাপত্তায় ঝুঁকি বাড়ার কারণে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন চট্টগ্রামের নাগরিক সমাজের বিভিন্ন প্রতিনিধিরা। অবিলম্বে চালের বাজার নিয়ন্ত্রণে পদক্ষেপ গ্রহনের জন্য সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছেন তারা। তাদের ভাষ্য, প্রতি সপ্তাহেচালরে দাম ২-৫ টাকা করে বাড়িয়ে সর্বশেষ ভরামৌসুমে ৮-১০ টাকা বাড়ার কারণে সাধারণ মানুয়েরখাদ্য নিরাপত্তা হুমকরি মুখে পড়েছে। সরকার নিত্যপণ্যের বাজার তদারকিতে কিছু উদ্যোগথাকলেও চালে বাজার নিয়ন্ত্রণে সেধরণের দৃশ্যমান উদ্যোগ না থাকায় চালের অসাধু ব্যবসায়ীরাতাদের ইচ্ছা মতো দাম বাড়ায় ও কমায়। আবার খোলা বাজারে চাল বিক্রি (ওএমএস) ও টিসিবিরফ্যামিলি র্কাড র্কাযক্রমও সক্রিয় নয়। সেকারণে খাদ্য নিরাপত্তা নিয়ে জনজীবনে তীব্রসংকট নেমে এসেছে। বৃহস্পতিবার (০৩ জুলাই) নগরীর জামালখান প্রেসক্লাব চত্ত্বরে “ভাতের পাতে স্বস্তি ফেরাও” স্লোগান নিয়ে আয়োজিত প্রতিবাদী মানববন্ধনে বিভিন্ন বক্তারা উপরোক্ত দাবি জানান।

যুব ক্যাব চট্টগ্রাম মহানগরেরসভাপতি আবু হানিফ নোমানের সঞ্চালনায় বাংলাদেশ খাদ্য নিরাপত্তা নেটওয়ার্ক (খানি), কনজ্যুমারস অ্যাসোসয়িশেন অব বাংলাদশে (ক্যাব) চট্টগ্রাম, প্রাণ ও আইএসডইি বাংলাদেশ এর উদ্যোগে আয়োজিত অনুষ্ঠানে সংহতি জানিয়ে বক্তব্যরাখনে ক্যাব কেন্দ্রিয় কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম নাজের হোসাইন, বিশিষ্ট সাংবাদিক ও চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি এম নাসিরুল হক, এডাব চট্টগ্রামের সাবেক সভাপতিও বিশিষ্ট নারী নেত্রী জেসমিন সুলতানা পারু ও বাংলাদেশ হিউম্যান রাইটস ফাউন্ডেশনের মহাসচিবঅ্যাডভোকেট জিয়া হাবিব আহসানসহ বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিনিধিরা।

সমাবেশে চালের মূল্য ও সার্বিক মুল্যস্ফীতির নয়িন্ত্রণেসংকটপূর্ণ অবস্থা নিরসনে তারা কৃষকের কাছ থেকে সরকারের সরাসরি চাল ক্রয়ের আওতা বৃদ্ধি, দরিদ্র ও ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীর জন্য রেশনিং ব্যবস্থাচালু, বাজার, উৎপাদন, মূল্য নির্ধারণ এবং ভোগের সক্ষমতা বৃদ্ধির মাধ্যমে ক্ষুদ্র কৃষকের স্বার্থ রক্ষায়পদক্ষেপ গ্রহণ, ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীর খাদ্য নিরাপত্তার সহায়তায়টিসিবি এবং ওএমএস কর্মসূচির আওতাবৃদ্ধির মাধ্যমে প্রয়োজনভিত্তিক সহায়তার উদ্যোগ ও মিল, করপোরেট গ্রুপসহ চালের বাজার যথাযথমনিটরিং এবং সিন্ডিকেট এর অপতৎপরতা রোধ করার মাধ্যমে দ্রুত বাজার পরিস্থিতিনিয়ন্ত্রণ করে চালের মূল্য ক্রেতাদের নাগালের মধ্যে আনার দাবি জানান।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Wildlife killing on the key campus is on the rise

চবি ক্যাম্পাসে বন্যপ্রাণী হত্যা বেড়েই চলছে

ধরাছোঁয়ার বাইরে অপরাধীরা
চবি ক্যাম্পাসে বন্যপ্রাণী হত্যা বেড়েই চলছে

সবুজ অরণ্য, পাহাড়, ঝর্ণার বিদ্যাপীঠ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) যেমন সৌন্দর্যের স্বর্গভূমি তেমনি অসংখ্য বন্যপ্রাণী, পাখির আবাসস্থল। তবে এখানে অবাধেই চলছে বন্যপ্রাণী হত্যা। শাস্তির আওতায়ও আসছে না অপরাধীরা। ২০১২ সালে দেশের জীববৈচিত্র্য, বন ও বন্যপ্রাণীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করার উদ্দেশ্যে প্রণয়ন করা হয়েছিল বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইন। যেখানে বন্যপ্রাণী শিকার, হত্যা, কেনাবেচা, বা এদের আবাসস্থল ধ্বংস নিষিদ্ধ করা হয়। এছাড়া এই আইন লঙ্ঘনের জন্য শাস্তির বিধান রয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে জরিমানা, কারাদণ্ড। বাংলাদেশের সংবিধানের ১৮(ক) অনুচ্ছেদেও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণের কথা বলা হয়েছে। তবে এই আইনের কার্যকর প্রয়োগ নেই চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে। মায়া হরিণ, শূকর, বন মোরগ, অজগরসহ অসংখ্য বন্যপ্রাণীর এই আবাস্থলে নিয়মিতই হচ্ছে প্রাণী হত্যা। এসব প্রাণী হত্যা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করতে দেখা গিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক- শিক্ষার্থীদের। বিশেষজ্ঞরাও জানাচ্ছেন শঙ্কার কথা। গত ২৪ জুন চবির ইতিহাস বিভাগের প্রভাষক মো. নুরুল হামিদ কানন একটি মৃত শূকরের ৪১ সেকেন্ডের ভিডিও পোস্ট করে লিখেন, ‘শূকর পর্যন্ত রক্ষা পাচ্ছে না আপনাদের হাত থেকে। আজ বিশ্ববিদ্যালয়ের অগ্রণী ব্যাংকের উত্তর পাশের ব্রিজের নিচে একটি বন্য শূকরকে মাথায় আঘাত করে রাতে মেরে ফেলা হয়েছে। যারা এমন গর্হিত কাজ করেন তারা পরিবেশ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাভাবিক জীববৈচিত্র্যের জন্য ক্ষতিকর।’ বুধবার (০২ জুলাই) সালমান শাহরিয়ার নামের এক শিক্ষার্থী লেখেন, ‘বুধবার (০২ জুলাই) রাত ১২টার দিকে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের কাটা পাহাড় সড়কে গাড়ির ধাক্কায় একটি চিতা বিড়ালের মৃত্যু হয়। চিতা বিড়াল বিপন্ন প্রজাতির প্রাণীর মধ্যে লাল তালিকায় আছে। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে চিতা বিড়ালের উপস্থিতি আছে জানা ছিল না। অজগর, মায়া হরিণ, বন্য শূকর, শিয়াল এসবের কথাই আগে জানা ছিল। তবে এই চিতা বিড়ালটির মৃত্যু কয়েকটি ভাবনার জন্ম দিয়েছে। ’

তিনি আরও লিখেন, ‘আজকের চবি যেখানে প্রতিষ্ঠিত এটা মূলত বন্য প্রাণীদেরই এলাকা। আমরা তাদের এলাকা দখল করেই বিশ্ববিদ্যালয় তৈরি করেছি। যেহেতু এখানে জ্ঞান বিজ্ঞানের চর্চা হয় সেহেতু এখানে বসবাসরত প্রাণীগুলোর প্রতিও আমাদের কিছু দায়িত্ব আছে। তাদের নিরাপদ, ঝঞ্ঝাটহীন জীবনের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কিছু ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।’

শিক্ষার্থীদের মতে, ‘ মধ্যরাতে প্রাণীদের চলাচল ও খাবার সন্ধানের সময়। এই সময়ে যানবাহনের চলাচল সীমিত করা দরকার। উচ্চগতিতে গাড়ি চালানোও বন্ধ করে দেওয়া উচিত। প্রাণীর নিরাপদ আবাস গড়তে ক্যাম্পাসের ভেতরে গাড়ি চালকদেরও কিছু নির্দেশনা জানানো উচিত। তা ছাড়া জরিপ করে বন্যপ্রাণীদের বাসস্থান সংরক্ষণ ও জীবনযাপনের সহায়ক পরিবেশ তৈরি করা দরকার। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণী বিশেষজ্ঞ শিক্ষক, গবেষকদের মতামত নিয়ে এই কাজগুলো বাস্তবায়ন করা উচিত।’

জানতে চাইলে প্রাণীবিজ্ঞানী অধ্যাপক ড. মো. মনজুরুল কিবরীয়া বলেন, ‘বন্যপ্রাণীগুলো যখন রাতে চলাচল করে তখন এগুলোর চোখে লাইট পড়লে তারা দেখতে পায় না। তখন গাড়ি চালকরা হয়তো ইচ্ছাকৃতভাবেই তাদের মেরে দেয়। আমাদের এখানে যখন রাস্তা দিয়ে প্রাণীগুলো চলাচল করে, তখন তাদের রক্ষা করার চেয়ে মেরে ফেলার মানসিকতাই বেশি কাজ করে। আমি বিদেশের ক্যাম্পাসগুলোতে দেখেছি বন্যপ্রাণী রক্ষার উদ্যোগ নেওয়া হয়। আমাদের এখানে বন্যপ্রাণী সংরক্ষণের জন্য উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন। বিলবোর্ড, প্লেকার্ড , কিংবা সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য যা যা প্রয়োজন তা আমরা করব। এনিয়ে আমরা প্রশাসনেরও দৃষ্টি আকর্ষণ করব।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপউপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মো. কামাল উদ্দিন বলেন, ‘চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ কমিটি আছে। আমাদের ক্যাম্পাস অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আলাদা। এখানে অনেক বন্যপ্রাণীর বসবাস আছে। এগুলো সচরাচর দেখা যায়। বিশ্ববিদ্যালয়ের জীববৈচিত্র্য রক্ষায় আমরা পরিবেশ আইন, বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইন মেনে চলি। এর আগেও বন্যপ্রাণী হত্যার দায়ে অনেককে শাস্তির আওতায় আনা হয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে বন্যপ্রাণী হত্যার যে ঘটনা ঘটেছে তা তদন্ত করে দেখা হবে। বিশ্ববিদ্যালয় আইন ও বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইনের আওতায় অবশ্যই অপরাধীদের শাস্তির আওতায় আনা হবে। এছাড়া বন্যপ্রাণী সংরক্ষণে সচেতনতা সৃষ্টির জন্য সংশ্লিষ্ট বিভাগ এবং কমিটিকে আমরা নির্দেশনা দিব।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Fake Certificate

জাল সনদে চাকরি করার অভিযোগ

জাল সনদে চাকরি করার অভিযোগ

সাতক্ষীরা নবারুণ উচ্চমাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল মালেক গাজীর বিরুদ্ধে জাল সনদ এবং ভুয়া ও মিথ্যা তথ্য দিয়ে পদ গ্রহণসহ তার বিরুদ্ধে নানা অভিযোগের সত্যতা পেয়েছেন তদন্ত কমিটি। তদন্ত প্রতিবেদনে আব্দুল মালেক গাজীর বিরুদ্ধে কেন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না তা জানতে চেয়ে দশ কর্মদিবসের মধ্যে কারণ দর্শানোর জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করেছে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। গত ২৯ জুন ২০২৫ তারিখে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তর ঢাকার শিক্ষা কর্মকর্তা (মাধ্যমিক-১) মো. নিজাম উদ্দিন স্বাক্ষরিত স্মারকে এ তথ্য ওঠে এসেছে। এতে বলা হয়, সাতক্ষীরা জেলার সদর উপজেলাধীন নবারুণ বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল মালেক গাজীর বিরুদ্ধে জাল সনদ এবং ভুয়া ও মিথ্যা তথ্য দিয়ে পদ গ্রহণ ও বিভিন্ন দুর্নীতির বিষয়ে আনীত অভিযোগের তদন্ত প্রতিবেদন প্রেরণ করেছেন। এ অবস্থায় তদন্ত প্রতিবেদনের মতামতের আলোকে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগগুলোর প্রমাণিত হওয়ায় জনবল কাঠামো ও এমপিও নীতিমালা ২০২১ এর ১৮.১ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী আপনার বিরুদ্ধে কেন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না সে মর্মে পত্র প্রাপ্তির দশ কর্মদিবসের মধ্যে জবাব প্রেরণ করার জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Two students took the exam in Sakhipur and left the body

সখীপুরে মায়ের লাশ রেখে পরীক্ষা দিলেন ২ শিক্ষার্থী

সখীপুরে মায়ের লাশ রেখে পরীক্ষা দিলেন ২ শিক্ষার্থী

পুরো বাড়িতে শোকের মাতম। শোকে স্বজনেরা লাশ দাফনের প্রস্তুতি নিচ্ছে। এমন অবস্থায় মায়ের লাশ বাড়িতে রেখে বৃহস্পতিবার (০৩ জুলাই) এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন দুই শিক্ষার্থী। পরীক্ষা শেষে বাড়িতে ফিরে মায়ের লাশ দাফনে অংশ নেবে তারাও। হাতিয়া ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ রহিজ উদ্দিন এবং সানস্টার ইনস্টিটিউট অব টেকনিক্যাল অ্যান্ড বিএম কলেজের অধ্যক্ষ নাছির উদ্দিন বিষয় দুটি নিশ্চিত করেছেন।

ঘটনাটি ঘটেছে টাঙ্গাইলের সখীপুর উপজেলায়। উপজেলার হাতিয়া ডিগ্রি কলেজের শিক্ষার্থী সায়মা আক্তার এবং সানস্টার ইনস্টিটিউট অব টেকনিক্যাল অ্যান্ড বিএম কলেজের শিক্ষার্থী লাবনী আক্তারের মা মারা গেছেন।

মা হারানো সায়মা আক্তার সখীপুর সরকারি কলেজ কেন্দ্রে এবং লাবনী আক্তার সখীপুর আবাসিক মহিলা কলেজ কেন্দ্রে থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে। বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার আগে অশ্রুসিক্ত চোখে কেন্দ্রে আসেন তারা।

স্থানীয় লোকজন জানায়, উপজেলার হতেয়া গ্রামের মো. রায়হান মিয়ার মেয়ে সায়মা আক্তারের-মা শিল্পী আক্তার (৪০) কিডনীজনিত সমস্যার কারণে ২ জুলাই রাত ৩টার দিকে নিজ বাড়িতেই মারা যান। তার এক ছেলে ও এক মেয়ে। অন্যদিকে উপজেলার কচুয়া পশ্চিমপাড়া এলাকার আব্দুল মান্নান মিয়ার মেয়ে লাবনী আক্তার। তার মা সফিরন (৪৫) বুধবার (০২ জুলাই) রাত সাড়ে ৯টার দিকে মারা যান। তিনি তিন মেয়ে ও এক ছেলের জননী ছিলেন। উভয়ে পরিবারের ছোট সন্তান।

লাবনীর মায়ের জানাজা সকাল সাড়ে ১১টার অনুষ্ঠিত হয় অন্যদিকে সায়মার মায়ের জানাজা বাদ যোহর অনুষ্ঠিত হয়।

হাতিয়া ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ রহিজ উদ্দিন বলেন, সায়মা মেধাবী শিক্ষার্থী। তবে মায়ের লাশ বাড়িতে রেখে পরীক্ষা দিতে আসা সত্যি কষ্টদায়ক। আল্লাহ যেন তার সহায় হোন।

মন্তব্য

p
উপরে