ক্লিনফিড ছাড়া অক্টোবর থেকে দেশে কোনো বিদেশি চ্যানেল চলতে পারবে না বলে জানিয়েছেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী হাছান মাহমুদ।
সচিবালয়ে বৃহস্পতিবার দুপুরে অ্যাসোসিয়েশন অফ টেলিভিশন চ্যানেল ওনার্সের (অ্যাটকো), টিভি চ্যানেল ডিস্ট্রিবিউটর ও কেবল অপারেটর প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান মন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘এর কোনো ব্যত্যয় হলে আইন প্রয়োগ ও লাইসেন্স বাতিল করা হবে।’
মন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের দেশে যেসব বিদেশি চ্যানেল আছে, আইন অনুযায়ী তারা ক্লিনফিড চালাতে বাধ্য, কিন্তু বারবার তাগাদা দেয়া সত্ত্বেও ওই সমস্ত চ্যানেল তাদের এন্ড থেকে ক্লিনফিড করে এখানে পাঠাচ্ছে না।
ক্লিনফিড নিশ্চিত করা হলে দেশে কোনো বিদেশি টেলিভিশন চ্যানেলের সম্প্রচারে বিদেশি কোনো বিজ্ঞাপন বা অন্যান্য কোনো বাণিজ্যিক কনটেন্ট থাকবে না। বিষয়টি নিশ্চিত করতে দীর্ঘদিন ধরে দাবি জানিয়ে আসছিল অ্যাটকো, টিভি চ্যানেল ডিস্ট্রিবিউটর ও কেবল অপারেটররা।
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী বলেন, ‘আমরা আজকে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছি এবং ঐক্যমতে পৌঁছেছি যে ৩০ সেপ্টেম্বরের পরে আমাদের দেশে কোনো অবস্থাতেই ক্লিনফিড ছাড়া বিদেশি চ্যানেলকে আমরা চালাতে দিতে পারি না এবং ৩০ সেপ্টেম্বরের পরে এক্ষেত্রে আইন প্রয়োগ করা হবে।’
ঢাকা ও চট্টগ্রামে ১ ডিসেম্বর থেকে কেবল অপরাটেরদের ডিজিটাল সেটাপ বক্সের মাধ্যমে টেলিভিশন সংযোগ দিতেও নির্দেশ নিয়েছেন মন্ত্রী। এ বছরের ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে ঢাকা এবং চট্টগ্রাম শহরে কেবল নেটওয়ার্কিং সিস্টেম ডিজিটালাইজড করার কথা থাকলেও করোনার কারণে সেটি করা সম্ভব হয়নি বলে জানান তিনি।
মন্ত্রী বলেন, ‘আজকে আমরা আলোচনা করে সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছি যে, ঢাকা এবং চট্টগ্রাম শহরে ৩০ নভেম্বরের মধ্যে কেবল অপারেটিং সিস্টেম ডিজিটালাইজড করা হবে। সেটি বাস্তবায়ন করার ক্ষেত্রে সরকারের পক্ষ থেকে একটি পরিপত্র জারি করা হবে গ্রাহকদের অবহিত করার জন্য। ৩০ নভেম্বরের পর ঢাকা ও চট্টগ্রামে যে অ্যানালগ সম্প্রচার সিস্টেম আছে সেটা কাজ করবে না। ডিজিটাল সেটাপ বক্সের মাধ্যমে সম্প্রচার হবে।’
পরিপত্র জারির ব্যাখ্যা করে মন্ত্রী বলেন, ‘ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম রেডি, কিন্তু দর্শক এন্ডে যদি সেটাপ বক্স দেয়া না হয়, দর্শকরা যদি সেটি না নেয়, তাহলে তো সেটা বাস্তবায়ন করা কঠিন।’
সকল বিভাগীয় ও মেট্রোপলিটন শহর এবং কক্সবাজার, রাঙামাটি, কুমিল্লা, কুষ্টিয়া, বগুড়া, দিনাজপুরকে ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে ডিজিটালাইজড করতে হবে বলেও জানান মন্ত্রী। বলেন, বাকি জেলাগুলোর বিষয়ে নভেম্বরে বৈঠক করে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
ইন্টারনেট সেবার নামে অননুমোদিত টিভি চ্যানেল সম্প্রচার করা যাবে না বলেও জানান মন্ত্রী। বলেন, ‘যারা ইন্টারনেট কানেকশন দিচ্ছে সেই ইন্টারনেট কানেকশন সার্ভিস প্রোভাইডাররা আবার ইন্টারনেটের মাধ্যমে ভিডিও স্ট্রিমিংয়ের মাধ্যমে টেলিভিশন দেখাচ্ছে। সেখানে দেখা যাচ্ছে যে, আনঅথরাইজড অনেক চ্যানেল দেখানো হয়। এটা কোনোভাবেই হতে পারে না।
‘একই সঙ্গে দেখা যাচ্ছে ভিডিও স্ট্রিমিংয়ের মাধ্যমে আইপি টিভি দেখানো হচ্ছে এবং মানুষ দেখছে। এই নিয়ে যে জটিলতা তৈরি হচ্ছে এবং একজনের ডোমেইনে আরেকজন অনুপ্রবেশ করছে বা এটি হচ্ছে, সেটা নিয়ে তিনটি মন্ত্রণালয় তথ্য, টেলিকম ও আইসিটি মিনিস্ট্রি আমরা সহসা একটা বৈঠক করব অংশীজনসহ। যাতে করে এখানে যে জটিলতা তৈরি হচ্ছে সেটা না থাকে।’
বিদেশি চ্যানেলের ক্লিনফিড নিশ্চিত করা এবং অবৈধ সংযোগ বন্ধে দ্রুতই সারা দেশে অভিযান পরিচালনা করা হবে বলেও জানান তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘ক্লিনফিড চলছে কি না, ১২০০ কেবল অপারেটর ও ফেক লাইসেন্স বাতিল করেছি পরপর দু বছর রিনিউ না করার কারণে। আইন অনুযায়ী কেউ এক বছর রিনিউ না করলে লাইসেন্স বাতিল হয়।... দেখা যাচ্ছে যাদের লাইসেন্স বাতিল হয়েছে তারা কেউ কেউ এখনও কেবল অপারেটর হিসেবে কাজ করছে।’
মন্ত্রী বলেন, ‘যখন কেবল অপারেটরদের লাইসেন্স দেয়া হয় তখন এলাকা ভাগ করে দেয়া হয়। এরপরও প্রায়শই এলাকা নিয়ে নানা সময় ঝামেলা হয়, সেই ঝামেলার পরিপ্রেক্ষিতে এমনকি বড় ঝামেলা হয়, খুন খারাবির মতো ঘটনা বিভিন্ন সময় ঘটেছে। সেজন্য আমরা স্ট্রিক্টলি না আজকের সভা থেকে বলে দিচ্ছি একজনের এলাকায় আরেকজন যেতে পারবে না। সেটার জন্য এনফোর্সমেন্ট করব।’
দেশে আকাশ এবং বিটিভিকে ডিটিএইচ লাইসেন্স দেয়া আছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, অন্যকোনো ডিটিএইচ সেবা প্রদান করা যাবে না, কিন্তু আমরা দেখেছি টাটা স্কাইয়ের নামে ডিটিএইচ সেবা বিভিন্ন জায়গায় দেয়া হচ্ছে, সেটির বিরুদ্ধে এনফোর্সমেন্ট করেছি, অনেক কমেছে। ইদানিং অংশীজনেরা বলেছেন আজকে যে চায়নিজ সেটাপ বক্স এনে অন্যদের ডিশ লাগিয়ে সেখান থেকে আবার ডিটিএইচ সেবা নেয়া হচ্ছে। এগুলো কিন্তু এনফোর্সমেন্ট করব। কঠিন শাস্তি হবে।’
এই বৈঠকের পর এসব অবৈধ সেবা বন্ধ হবে বলে আশা করেন মন্ত্রী।
কেবল অপারেটরদের সতর্ক করে তিনি বলেন, ‘কেবল অপারেটররা অনেক সময় নিজেরা সিনেমা দেখায়, নিজের এরিয়ার মধ্যে। বিজ্ঞাপন দেখায়, অনুষ্ঠান দেখায়। এগুলো আইনের ব্যত্যয়। আমরা সেগুলোর বিষয়ে এনফোর্সমেন্টে যাব।’
মেয়াদ শেষে অবশিষ্ট ইন্টারনেট ডাটা, মিনিট ও এসএমএস পরবর্তী প্যাকেজে যুক্ত করতে সংশ্লিষ্টদের প্রতি লিগ্যাল নোটিশ পাঠানো হয়েছে।
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. মিজানুর রহমান ডাক ও টেলিযোগাযোগ সচিব, বিটিআরসির চেয়ারম্যান, গ্রামীণ ফোন, রবি আজিয়াটা লিমিটেড, বাংলালিংক লিমিটেড এবং টেলিটক বাংলাদেশ লিমিটেড বরাবর মঙ্গলবার এ নোটিশ পাঠান।
নোটিশে বলা হয়, নোটিশ পাওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এ বিষয়ে পদক্ষেপ না নিলে হাইকোর্টে রিট আবেদন করা হবে।
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় সাজা বাড়িয়ে হাইকোর্টের দেওয়া ১০ বছরের কারাদণ্ডের বিরুদ্ধে বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার আপিলের ওপর শুনানি শেষ হয়েছে।
আদালত বুধবার রায় ঘোষণার জন্য দিন ঠিক করেছে।
প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে আপিল বিভাগের বেঞ্চ আজ আপিলের শুনানি শেষে রায় ঘোষণার জন্য দিন ঠিক করে আদেশ দেন।
আদালতে বেগম খালেদা জিয়ার পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়নুল আবেদীন, ব্যারিস্টার এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন, ব্যারিস্টার বদরুদ্দোজা বাদল, ব্যারিস্টার মো. রুহুল কুদ্দুস কাজল ও ব্যারিস্টার কায়সার কামাল। এ ছাড়াও বেগম খালেদা জিয়ার পক্ষে বিপুলসংখ্যক আইনজীবী আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান, অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মোহাম্মদ আরশাদুর রউফ ও অনিক আর হক। আর দুদকের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মো. আসিফ হাসান।
আপিল শুনানিতে খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা সর্বোচ্চ আদালতকে জানান, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট গঠনের ক্ষেত্রে খালেদা জিয়া সই-স্বাক্ষর করেছেন, এমন কোনো নথি প্রসিকিউশন দেখাতে পারেনি। আর টাকা কোথা থেকে এসেছে, তাও দেখাতে পারেনি। আর যে অর্থ আত্মসাৎ বলা হয়েছে, তা ব্যাংক হিসাবে রক্ষিত আছে এবং সেই টাকা সেখানে অনেক বেড়েছে।
তারা জানান, এ মামলার বিচারে সংবিধান ও আইন অনুসরণ করা হয়নি। মামলাটি আইনগত, মৌখিক, এমনকি শোনা সাক্ষ্য-প্রমাণহীন। সর্বোপরি অনুমাননির্ভর ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এ মামলায় খালেদা জিয়াসহ অন্যদের সাজা দেওয়া হয়েছে।
জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়নুল আবেদীনসহ শুনানিতে অংশ নেওয়া আইনজীবীরা মামলায় খালেদা জিয়া খালাস পাবেন বলে আশা প্রকাশ করেন।
ফৌজদারি কার্যবিধির ৩৪২ ধারায় বিচারিক আদালতে খালেদা জিয়ার জবানবন্দি সর্বোচ্চ আদালতের শুনানিতে পড়ে শোনাতে গিয়ে কেঁদে ফেলেন ব্যারিস্টার কায়সার কামাল।
ওই সময় আদালতে পিনপতন নীরবতায় উপস্থিত অনেক আইনজীবীকেও আবেগাপ্লুত হতে দেখা যায়।
এর আগে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে বেগম খালেদা জিয়ার করা লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে করা আবেদন) গত ১১ নভেম্বর মঞ্জুর করে ১০ বছরের কারাদণ্ড স্থগিতের আদেশ দেন বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলামের নেতৃত্বাধীন তিন বিচারপতির আপিল বিভাগ।
শুনানিতে দুদকের আইনজীবী মো. আসিফ হাসান আদালতকে বলেছিলেন, ‘জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টের টাকা কিন্তু আত্মসাৎ হয়নি। জাস্ট ফান্ডটা মুভ হয়েছে। তবে সুদে আসলে অ্যাকাউন্টেই টাকাটা জমা আছে। কোনো টাকাটা ব্যয় হয়নি।’
অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান এ মামলায় খালেদা জিয়ার দেওয়া ৩৪২ ধারায় বক্তব্য তুলে ধরে সর্বোচ্চ আদালতকে বলেন, ‘কবি কাজী নজরুল ইসলামের সেই রাজবন্দির জবানবন্দির প্রতিফলন বেগম খালেদা জিয়ার বক্তব্যে উঠে এসেছে। আর খালেদা জিয়া প্রধানমন্ত্রীর এতিম তহবিল সংক্রান্ত কোনো অনুদান গ্রহণ বা বিতরণের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন না বলা হয়েছে।’
বিগত শেখ হাসিনা সরকারের সময়ে ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি বকশীবাজারে কারা অধিদপ্তরের প্যারেড গ্রাউন্ডে স্থাপিত ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫-এর বিচারক ড. মো. আখতারুজ্জামান জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় বেগম খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেন। একই সঙ্গে খালেদা জিয়ার ছেলে ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, মাগুরার সাবেক এমপি কাজী সালিমুল হক কামাল, ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ, ড. কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী ও মমিনুর রহমানকে ১০ বছর করে কারাদণ্ড দেন আদালত।
একই বছরে ২৮ মার্চ খালেদা জিয়ার সাজা বৃদ্ধি চেয়ে দুদকের করা আবেদনে রুল জারি করেন হাইকোর্ট। এরপর সাজা বৃদ্ধিতে দুদকের আবেদনে জারি করা রুল যথাযথ ঘোষণা করে ২০১৮ সালের ৩০ অক্টোবর বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত একটি হাইকোর্ট ডিভিশন বেঞ্চ খালেদা জিয়ার সাজা পাঁচ বছর থেকে বাড়িয়ে ১০ বছর করেন।
শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের পতনের পর জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার দণ্ড মওকুফ করেছেন রাষ্ট্রপতি।
রাষ্ট্রপতির এ ক্ষমার পরেও মামলা দুটি আইনগতভাবে লড়ার কথা জানিয়ে বিএনপির আইনজীবীরা বলেন, বেগম খালেদা জিয়া আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। রাষ্ট্রপতি তার সাজা মওকুফ করেছেন। তবে সেখানে ক্ষমার কথা আছে। খালেদা জিয়া ক্ষমার প্রতি বিশ্বাসী নন। তিনি অপরাধ করেননি; তিনি ক্ষমাও চাননি। তাই এটা আইনগতভাবে মোকাবিলা করবেন।
আরও পড়ুন:দেশের বৃহত্তর স্বার্থে চলতি বছরের আগস্টের মধ্যে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজন করতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছে বিএনপি।
দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘আমরা মনে করি এ বছরের মাঝামাঝি সময়ে নির্বাচন আয়োজন করা সম্ভব।’
দলটির স্থায়ী কমিটির বৈঠকের পরের দিন মঙ্গলবার সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ দাবির কথা জানান।
এর আগে সোমবার রাতে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠকে অংশ নেন নেতারা।
চলতি বছরের মাঝামাঝি সময়ে নির্বাচন আয়োজনে পদক্ষেপ নিতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার, নির্বাচন কমিশন ও রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি আহ্বান জানান ফখরুল।
তিনি বলেন, ‘আমরা মনে করি, যেহেতু নির্বাচন কমিশন গঠন করা হয়েছে এবং প্রশাসনে আপেক্ষিক স্থিতিশীলতা ফিরে এসেছে, তাই নির্বাচন পেছানোর কোনো কারণ নেই।’
বিএনপির বর্ষীয়ান এ রাজনীতিক বলেন, সরকার গঠিত নির্বাচন সংস্কার কমিশনও বুধবার তাদের প্রতিবেদন উপস্থাপন করবে।
ফখরুল বলেন, ‘তাই নির্বাচন পেছানোর কোনো যৌক্তিকতা আছে বলে আমরা মনে করি না। যত বিলম্ব হবে, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংকট তত গভীর হবে।’
বিএনপি মহাসচিব আরও বলেন, তারা দীর্ঘদিন ধরে বলে আসছেন যে, নির্বাচিত সরকারের কোনো বিকল্প নেই। কারণ এটি গণতন্ত্রের ভিত্তি।
আরও পড়ুন:ঝিনাইদহ ক্যাডেট কলেজের প্রাক্তন ক্যাডেটদের সংগঠন ঝিনাইদহ এক্স ক্যাডেটস অ্যাসোসিয়েশনের (জেক্সকা) দেশের বিভিন্ন স্থানে মাসব্যাপী কম্বল বিতরণ কার্যক্রমের সমাপনী দিন ছিল সোমবার।
ওই দিন দুপুর ১২টার দিকে রাজধানীর মোহাম্মদপুরে পথশিশুদের শিক্ষাঙ্গন ‘ছায়াতল বাংলাদেশ’-এ প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল মামুনের সভাপতিতে দুই শতাধিক পথশিশু শিক্ষার্থীর মাঝে কম্বল বিতরণ করা হয়।
কম্বল বিতরণ করেন জেক্সকার প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক বোরহান উদ্দিন খান, ভাইস প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক ডা. আবুল বাশার, খুরশিদ আল মেহের, জেনারেল সেক্রেটারি গালিব মোহাম্মদ, ডেপুটি জেনারেল সেক্রেটারি সাব্বির আহমেদ, কালচারাল সেক্রেটারি ডা. বাপ্পা ঘোষ শাওনসহ সংশ্লিষ্টরা।
অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন ছায়াতলের প্রতিষ্ঠাতা বি এম সোহেল রানা।
জেক্সকা সম্প্রতি ঝিনাইদহ, যশোর, চুয়াডাঙ্গা, খুলনা ও ঢাকা শহরের বিভিন্ন এলাকায় দুই হাজার দুস্থ ও অসহায় মানুষের মধ্যে কম্বল বিতরণ করে।
আরও পড়ুন:
মুন্সীগঞ্জ সদরের চরকেওয়ার ইউনিয়নের ফুলতলা এলাকায় আলু ক্ষেতে পুঁতে রাখা হালিমা বেগমের (৩৪) কঙ্কালের সন্ধান পাওয়া গেছে।
আলুক্ষেতের পাশে পড়ে থাকা জামাকাপড় দেখে সোমবার বিকাল সাড়ে তিনটার দিকে ওই নারীকে শনাক্ত করে পরিবার। বিষয়টি পুলিশকে জানানো হলে মরদেহ উদ্ধারে আসে তারা।
এক মাসের বেশি সময় ধরে নিখোঁজ ছিলেন হালিমা।
পরিবারের ভাষ্য, ৯ ডিসেম্বর থেকে নিখোঁজ ছিলেন ওই নারী। পরে এ ঘটনায় মুন্সীগঞ্জ সদর থানায় অপহরণ মামলা করেন তার স্বামী দেলোয়ার হোসেন। থানা পুলিশ মামলার প্রধান আসামি সামিউল ইসলামকে (৪৫) গ্রেপ্তার করলেও কোনো তথ্য উদঘাটন না হওয়ায় তাকে জেলহাজতে পাঠানো হয়।
মুন্সীগঞ্জ সদর থানার ওসি সাইফুল আলম এসব তথ্য নিশ্চিত করে জানান, খবর পেয়ে কঙ্কালটি উদ্ধার করে ডিএনএ পরীক্ষার জন্য মর্গে পাঠানো হয়। অপহরণ মামলার প্রধান আসামিকে কারাগার থেকে ফের রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।
চাকরিতে পুনর্বহালের দাবিতে ফের সচিবালয়ের সামনে অবস্থান নিয়েছেন পুলিশের ৪০তম ব্যাচের অব্যাহতিপ্রাপ্ত শিক্ষানবিশ উপপরিদর্শকরা (এসআই)।
আব্দুল গনি রোডে সচিবালয়ের ১ ও ২ নম্বর গেটের বিপরীত পাশে সোমবার সকাল থেকে অবস্থান নেন তারা।
বিভিন্ন ধরনের প্ল্যাকার্ড হাতে নিয়ে তারা শান্তিপূর্ণভাবে দাঁড়িয়ে ছিলেন। তারা দাবি পূরণে কোনো আশ্বাস না পেলে বিকেল ৫টা পর্যন্ত এ কর্মসূচি পালন করবেন বলে জানান।
অব্যাহতি পাওয়া এসআইদের পক্ষ থেকে বলা হয়, ‘ট্রেনিং থেকে অন্যায়ভাবে অব্যাহতি দেওয়ার প্রতিবাদ ও চাকরিতে পুনর্বহালের দাবিতে আমরা ৩২১ জন সাব-ইন্সপেক্টর গত ৫ ও ৬ জানুয়ারি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সামনে শান্তিপূর্ণ অবস্থান কর্মসূচি পালন করি। আমাদের একটি প্রতিনিধি দলের সঙ্গে স্বরাষ্ট্র সচিব দেখা করে আমাদের দাবির বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।
‘এখন পর্যন্ত আমাদের বিষয়ে কোনো দৃশ্যমান পদক্ষেপ দেখতে না পাওয়ায় আমরা সবাই (৩২১ জন) আজ আবার অবস্থান কর্মসূচি পালন করছি। সুনির্দিষ্ট সিদ্ধান্ত না আসা পর্যন্ত এ কর্মসূচি চলমান থাকবে।’
অব্যাহতি পাওয়া এসআই অম্লান মিত্র বলেন, ‘আমি ২০২৩ সালের ৪ নভেম্বর ট্রেনিংয়ে অংশ নিই। অব্যাহতি দেওয়া হয় ২০২৪ সালের ৪ নভেম্বর। আমাকে বলা হচ্ছে ক্লাসে অমনোযোগী এবং বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারী। কিন্তু আমি অর্ধ-বার্ষিক পরীক্ষায় ৮০৪ জনে ১০০ জনের মধ্যে ছিলাম। অমনোযোগী থাকলে তো এমন ফলাফল হওয়ার কথা না।’
কর্মসূচিতে আসা আরেকজন নাম প্রকাশ না করে বলেন, ‘আমরা এক বছর অনেক ত্যাগ স্বীকার করে প্রায় বিনা বেতনে ট্রেনিং করেছি। যখন চাকরিতে নিয়মিত হব, তখনই আমাদের বাদ দেওয়া হলো। এর থেকে কষ্টের আর কিছু হতে পারে না।’
৪০তম ক্যাডেট এসআই ব্যাচে প্রশিক্ষণের জন্য মোট ৮২৩ জন ছিলেন। তারা গত বছরের ৪ নভেম্বর থেকে রাজশাহীর সারদায় পুলিশ একাডেমিতে বুনিয়াদি প্রশিক্ষণ শুরু করেন।
তাদের মধ্যে তিন ধাপে ৩১৩ জন এসআইকে মাঠে ও ক্লাসে বিশৃঙ্খলার অভিযোগ তুলে শোকজ করে একাডেমি। এরই মধ্যে তাদের চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন:সরকারি কর্ম কমিশনে (পিএসসি) সদ্য নিয়োগ পাওয়া ছয় সদস্যের নিয়োগ বাতিল করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের উপসচিব আবুল হায়াত মো. রফিকের সই করা প্রজ্ঞাপনে সোমবার এ তথ্য জানানো হয়।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, সরকারি কর্মকমিশনে সদ্য নিয়োগপ্রাপ্ত নিম্ন বর্ণিত ছয় সদস্যের নিয়োগ আদেশ বাতিল করা হলো।
নিয়োগ বাতিল করা ছয় সদস্য হলেন অধ্যাপক ড. শাহনাজ সরকার, মো. মুনির হোসেন, অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ড. এ এফ জগলুল আহমেদ, ড. মো. মিজানুর রহমান, সাব্বির আহমেদ চৌধুরী ও অধ্যাপক ডা. সৈয়দা শাহিনা সোবহান।
প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়, রাষ্ট্রপতির অনুমোদনক্রমে জারি করা এ আদেশ অবিলম্বে কার্যকর করা হবে।
মন্তব্য