জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর সরকারের সময়ে অর্জিত মাথাপিছু আয় ২০২১ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ ছিল। বঙ্গবন্ধু সরকারের ১৯৭৫ সালের ২৭৮ ডলারের মাথাপিছু আয়ের বেঞ্চমার্ক অতিক্রম করতে বাংলাদেশের লেগেছে ৪৬ বছর। আর এই কাজটি করেছেন তারই কন্যা শেখ হাসিনা ২০২১ সালে।
জিয়া, এরশাদ এবং খালেদা জিয়ার দুই মেয়াদের সরকারের সময়ে মাথাপিছু আয় বঙ্গবন্ধুর সরকারের সময়ের মাথাপিছু আয়ের চেয়ে অনেক কম ছিল।
এমন গবেষণা ফলাফল প্রকাশ করেছে আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা উপ কমিটি। মঙ্গলবার রাতে তথ্য ও গবেষণা উপ কমিটি আয়োজিত ‘মাথা পিছু আয়ে বঙ্গবন্ধু সরকারের যুগান্তকারী সাফল্য: গবেষণা ফলাফল প্রকাশনা’ শীর্ষক ওয়েবিনারে আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক ড. সেলিম মাহমুদ এটি প্রকাশ করেন।
প্রধানমন্ত্রীর অর্থ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. মসিউর রহমানের সভাপতিত্বে ওয়েবিনারে প্রধান আলোচক ছিলেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য এবং কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক। আলোচনা করেন অর্থনীতিবিদ ড. কাজী খলীকুজ্জামান, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক হেলাল উদ্দিন নিজামী, ইউএনডিপির কান্ট্রি ইকোনোমিস্ট ড. নাজনীন আহমেদ ।
গবেষণাপত্রে বলা হয়, জাতির পিতার সুদৃঢ় নেতৃত্ব, অসীম সাহসিকতা ও কঠোর পরিশ্রমের কারণে যুদ্ধ বিধ্বস্ত স্বাধীন বাংলাদেশে মাত্র সাড়ে তিন বছরে মাথাপিছু আয় প্রায় তিন গুণ বৃদ্ধি পায়। ১৯৭২ সালে মাথাপিছু আয় ছিল মাত্র ৯৪ আমেরিকান ডলার। জাতির পিতা ১৯৭৫ সালে মাথা পিছু আয় ২৭৮ ডলারে উন্নীত করেছিলেন।
এতে বলা হয়, মাত্র সাড়ে তিন বছরে কোনো দেশের মাথাপিছু আয় তিন গুণ বৃদ্ধির নজির পৃথিবীতে বিরল। ১৯৭৩ সালে মাথাপিছু আয় বৃদ্ধির হার ছিল ২৬.৬৮% । ১৯৭২ সালের ২৯.৩৩ % ঋণাত্মক হার বিবেচনায় ১৯৭৩ সালে প্রকৃতপক্ষে এই বৃদ্ধির হার ছিল ৫৬.৬৮%। ১৯৭৪ সালে বৃদ্ধির হার ছিল ৫২.২৪% এবং ১৯৭৫ সালে বৃদ্ধির হার ছিল ৫২.৪৯%।
মাথাপিছু আয়ের এই বৃদ্ধির হার (৫৩.৮০%) শুধু দক্ষিণ এশিয়ায় সর্বোচ্চ নয়, পৃথিবীর হাতেগোনা কয়েকটি অর্থনীতিতে এমনটি ঘটেছে।
গবেষণাপত্রে দেখানো হয়, বঙ্গবন্ধুর সরকারের সময় বাংলাদেশে মাথাপিছু আয় দক্ষিণ এশিয়ায় সর্বোচ্চ ছিল। এছাড়া, বঙ্গবন্ধুর সরকারের সময়ে মাথাপিছু আয়ের এই বৃদ্ধির হার (৫৩.৮০%) দক্ষিণ এশিয়ায় সর্বোচ্চ ছিল। ১৯৭৪ সালে বাংলাদেশে মাথাপিছু আয় চীনের মাথাপিছু আয়কে অতিক্রম করেছিল।
গবেষণায় দেখানো হয়, ১৯৭৫ সালে যখন বাংলাদেশে মাথাপিছু আয় ২৭৮ ডলার, তখন ভারতে মাথাপিছু আয় ছিল ১৫৮ ডলার, পাকিস্তানে ১৬৮ ডলার, শ্রীলঙ্কায় ২৭৬ ডলার, নেপালে ১১৭ ডলার, আফগানিস্তানে ১৮৭ ডলার। ১৯৭৫ সালে চীনে মাথাপিছু আয় ছিল ১৭৮ ডলার।
গবেষণাপত্রে দেখানো হয়, জাতির পিতার সরকারের ১৯৭৫ সালের ২৭৮ ডলার মাথাপিছু আয়ের বেঞ্চমার্ক ২০২১ সালের আগে বাংলাদেশের কোনো সরকারের সময়ে অতিক্রম হয়নি।
জিয়াউর রহমানের সাড়ে পাঁচ বছরের শাসনামলের শেষ বছর ১৯৮১ সালে মাথাপিছু আয় ছিল ২৪৮ ডলার। এটি জিয়া সরকারের সময়ে সর্বোচ্চ মাথাপিছু আয়। ডলারের মূল্যমান ও মূল্যস্ফীতি এবং বঙ্গবন্ধু সরকারের মাথাপিছু আয়ের বৃদ্ধির হারের (৫৩.৮০%) দশ ভাগের এক ভাগ অর্থাৎ ৫% বৃদ্ধি ধরলে এটি হওয়ার কথা ছিল ৫৬০ ডলার। বঙ্গবন্ধু সরকারের সময়ের মাথাপিছু আয়ের বেঞ্চমার্ক থেকে জিয়ার সরকারের মাথাপিছু আয় ৩১২ ডলার কম ছিল।
এরশাদের শেষ আর্থিক বছর ১৯৯০ সালে মাথাপিছু আয় ছিল ৩০৬ ডলার। এটি এরশাদ সরকারের সময়ের সর্বোচ্চ মাথাপিছু আয়। বঙ্গবন্ধুর ২৭৮ ডলারের বেঞ্চমার্ক অনুযায়ী, ১৯৯০ সালে বাংলাদেশের মাথাপিছু আয় থাকা উচিত ছিল ৬৭৫ ডলার। আর বঙ্গবন্ধু সরকারের মাথাপিছু আয়ের বৃদ্ধির হারের (৫৩.৮০%) দশ ভাগের এক ভাগ অর্থাৎ ৫% বৃদ্ধি ধরলে ১৯৯০ সালে এটি হওয়ার কথা ছিল ৮৮৩ ডলার। বঙ্গবন্ধু সরকারের মাথাপিছু আয়ের বেঞ্চমার্ক থেকে এরশাদ সরকারের মাথাপিছু আয় ৫৭৭ ডলার কম ছিল।
খালেদা জিয়ার প্রথম মেয়াদ শেষে বাংলাদেশে মাথাপিছু আয় ছিল ৩২৯ ডলার। এটি তার সরকারের প্রথম মেয়াদের সর্বোচ্চ মাথাপিছু আয়। ১৯৭৫ সালের বঙ্গবন্ধুর ২৭৮ ডলারের বেঞ্চমার্ক অনুযায়ী ১৯৯৫ সালে বাংলাদেশের মাথাপিছু আয় থাকা উচিত ছিল ৮০১.৮৬ ডলার। এর সঙ্গে বঙ্গবন্ধু সরকারের মাথাপিছু আয়ের বৃদ্ধির হারের (৫৩.৮০%) দশ ভাগের এক ভাগ অর্থাৎ ৫% বৃদ্ধি ধরলে ১৯৯৫ সালে বাংলাদেশের মাথাপিছু আয় থাকা উচিত ছিল ১০৮০ ডলার। বঙ্গবন্ধু সরকারের সময়ে মাথাপিছু আয়ের বেঞ্চমার্ক থেকে খালেদা জিয়ার প্রথম সরকারের মাথাপিছু আয় ৭৫১ ডলার কম ছিল।
খালেদা জিয়ার দ্বিতীয় মেয়াদ শেষে ২০০৬ সালে বাংলাদেশের মাথাপিছু আয় ছিল ৫১০ ডলার। এটি তার দ্বিতীয় মেয়াদের সর্বোচ্চ মাথাপিছু আয় ছিল। ১৯৭৫ সালের বঙ্গবন্ধু সরকারের সময়ের ২৭৮ ডলারের বেঞ্চমার্ক অনুযায়ী, ২০০৬ সালে বাংলাদেশে মাথাপিছু আয় থাকা উচিত ছিল ১০৫৪ ডলার। এর সঙ্গে বঙ্গবন্ধু সরকারের মাথাপিছু আয়ের বৃদ্ধির হারের (৫৩.৮০%) দশ ভাগের এক ভাগ অর্থাৎ ৫% বৃদ্ধির হার ধরলে ২০০৬ সালে বাংলাদেশে মাথাপিছু আয় থাকা উচিত ছিল ১৪৮৫ ডলার। বঙ্গবন্ধু সরকারের সময়ের মাথাপিছু আয়ের বেঞ্চমার্ক থেকে খালেদা জিয়ার দ্বিতীয় সরকারের মাথাপিছু আয় ৯৭৫ ডলার কম ছিল।
গবেষণায় দেখানো হয়, জিয়া ও এরশাদ এবং খালেদা জিয়ার দুই মেয়াদে বাংলাদেশে মাথাপিছু আয় ভারত ও পাকিস্তান থেকে কম ছিল।
গবেষণায় দেখা গেছে, জাতির পিতার সরকারের ১৯৭৫ সালের ২৭৮ ডলারের বেঞ্চমার্ক ছুঁতে পেরেছেন তারই কন্যা শেখ হাসিনা ২০২১ সালে। বঙ্গবন্ধু সরকারের সময়ে ১৯৭৫ সালের ২৭৮ ডলার ২০২১ সালে এসে দাঁড়িয়েছে ১৩৯৫ ডলারে। এর সঙ্গে বার্ষিক বৃদ্ধির হার ৫% ধরলে সেটি দাঁড়ায় ২০৩৪ ডলার। ২০২১ সালে শেখ হাসিনার সরকার বাংলাদেশে মাথাপিছু আয় ২২২৭ ডলারে উন্নীত করেছে। ১৯৭৫ সালে মাথাপিছু আয়ের ভিত্তিতে জাতির পিতা বাংলাদেশের অর্থনীতিকে দক্ষিণ এশিয়ার শ্রেষ্ঠ অর্থনীতিতে পরিণত করেছিলেন। ২০২১ সালে তারই কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে আবার দক্ষিণ এশিয়ার শ্রেষ্ঠ অর্থনীতি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেন।
গবেষণায় দেখানো হয়, বাংলাদেশের ইতিহাসে জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার একবারই ৯ শতাংশ অতিক্রম করেছিলো ১৯৭৪ সালে জাতির পিতার সরকারের সময়। ওই বছর প্রবৃদ্ধির হার ছিল ৯.৫৯%। জাতির পিতার পর বাংলাদেশের ইতিহাসে জিডিপির প্রবৃদ্ধির হার ৮ শতাংশ অতিক্রম করে শেখ হাসিনার সরকারের সময়ে ২০১৯ সালে। ওই বছর জিডিপির প্রবৃদ্ধির হার ছিল ৮.১৫%।
ড. আবদুর রাজ্জাক বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু যখন শুরু করেন, তখন পাকিস্তানের মাথাপিছু আয় ছিল ৯০ ডলার এবং এই ৯০ ডলার থেকে বঙ্গবন্ধু এটাকে ২৩৮ ডলার করেছেন।
‘মুক্তিযুদ্ধের শেষে বাংলাদেশের সাইজ অফ ইকোনমি ছিল মাত্র ৮ বিলিয়ন ডলার। ২০০৬ সালে বিএনপির সময়ে আমাদের টোটাল জিডিপির সাইজ ছিল ৪ লক্ষ ৮০ হাজার কোটি টাকা। আজকে সেই বাংলাদেশের জিডিপি দাঁড়িয়েছে ৩০ লক্ষ কোটি টাকারও বেশি এবং মাথাপিছু আয়, যেটা বঙ্গবন্ধু রেখে গিয়েছিলেন ২৩৮ ডলার, এটি এখন হয়েছে ২২৬০ বা ২২৩০ ডলার।’
ড. মশিউর রহমান বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর দর্শনের প্রধান তিনটি দিক হলো, গভীর গণতান্ত্রিক মানবতা, মানুষের মর্যাদা, দেশকে চেনা ও গভীর দেশপ্রেম।’
তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর সরকার, আমদানি ও সরকারি ব্যয় মিটাবার প্রয়োজনে বিশ্বব্যাংক ও আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলে যোগ দিয়েছিল। বাংলাদেশ রেয়াতি সুদে ঋণ এবং অনুদান পায়। স্বাধীনতার আগের ঋণের কিছু দায়, বাংলাদেশের উপর বর্তায়; দ্বিপক্ষিক ঋণের বড় অংশ অনুদানে রূপান্তরিত হয়। বৈদেশিক মুদ্রায় ঋণ পরিশোধের দায় লাঘব হয়।’
তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর সংক্ষিপ্ত শাসনকালে অভূতপূর্ব উন্নতি হয়। দেশদ্রোহীদের হাতে বঙ্গবন্ধু নিহত হবার পর নেমে আসে অরাজকতা। দিক নির্দেশনাহীন প্রশাসন দেশের কোনো মঙ্গল করতে পারে না। বঙ্গবন্ধু যে উন্নয়ন শুরু করেছিলেন তা থমকে যায়। জনগণের রায় নিয়ে আওয়ামী লীগ সরকারের দায়িত্ব গ্ৰহণের পরে, উন্নয়নের ধারা ফিরে আসে।’
তিনি বলেন, ড. সেলিম মাহমুদ অনেক পরিশ্রম ও যত্নের সঙ্গে পরিসংখ্যান/উপাত্ত সংগ্ৰহ করেছেন ও উপস্থাপন করেছেন। এই দীর্ঘ সময়ে তথ্য নির্মাণে অনেক পরিবর্তন এসেছে। খানা আয় ব্যয় সার্ভে, শিল্প ও কৃষিশুমারি ইত্যাদিতে পরিবর্তন আসে, ভিত্তি-বছর বদল হয়। উপকরণ ও উৎপাদন সহগ (ইনপুট - আউটপুট কোইফিসিয়েন্ট) পরিবর্তিত হয়। ১৯৯৩ সালে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে জাতীয় আয় হিসাব পদ্ধতি পরিবর্তিত হয়; ২০০৮ সালে ওই পদ্ধতি সংশোধিত হয়, এর ফলে তথ্য-উপাত্তের অনেক পরিবর্তন হয়েছে।
ড. কাজী খলিকুজ্জামান বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু কীভাবে অর্থনীতির ভিত্তিটা স্থাপন করলেন, সেটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এমন একটি অর্থনীতি, যেটা একেবারেই বিধ্বস্ত ছিল, কৃষি বিধ্বস্ত ছিল, রাস্তাঘাট বিধ্বস্ত ছিল, পাকিস্তানিদের ফেলে যাওয়া শিল্প বন্ধ ছিল এবং বাংলাদেশি যে শিল্পগুলো ছিল, সেগুলোও চলছিল না। কোনো প্রশাসনিক ব্যবস্থা ছিল না। এ রকম একটি অবস্থা থেকে বঙ্গবন্ধু শুরু করেছিলেন, তারপর শুরু হলো অগ্রগতি।’
আরও পড়ুন:
বাংলাদেশের উন্নয়ন নিয়ে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী প্রশংসা করেন, অথচ বিএনপি দেশের উন্নয়ন দেখতে পায় না বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের উন্নয়ন নিয়ে পাকিস্তান প্রশংসা করে, অথচ বিরোধী দল উন্নয়ন দেখতে পায় না। তারা দিনের আলোতে রাতের অন্ধকার দেখে। দেশের উন্নয়ন নিয়ে এতটা হীন মনোবৃত্তির পরিচয় তারা দিচ্ছে। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য থেকে তাদের বাস্তবতা বোঝা উচিত।’
শুক্রবার দুপুরে ধানমন্ডিস্থ আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন ওবায়দুল কাদের। খবর বাসসের
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের বক্তব্য থেকে বিএনপি নেতাদের প্রকৃত সত্য শিক্ষা নেয়ার আহবান জানিয়ে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, বাংলাদেশের যে উন্নতি ও উচ্চতা, এটা দেখে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরীফ লজ্জিত। তখন পূর্ব পাকিস্তানকে তাদের কাছে মনে হতো বোঝা। এখন সে বোঝাই অনেক উন্নয়নে এগিয়ে গেছে। সে উন্নয়ন দেখে তিনি লজ্জিত হন। বিএনপি যতটা অপপ্রচার করে তাদের পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য থেকে প্রকৃত সত্য শিক্ষা নেওয়ার অনেক কিছু আছে।
বৃহস্পতিবার করাচিতে সিন্ধু প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রীর বাসায় ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় দেয়া বক্তব্যে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নতির ভূয়সী প্রশংসা করেছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির দিকে তাকালে এখন তাদের লজ্জা হয়। সে সময় ‘পূর্ব পাকিস্তানকে’ দেশের বোঝা মনে করা হতো। কিন্তু তারা শিল্পায়নের প্রবৃদ্ধিতে বিস্ময়কর অগ্রগতি অর্জন করেছে।’
সেতুমন্ত্রী বলেন, সারা বিশ্ব যুদ্ধ-সংঘাতে ভয়ঙ্কর পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়েছে। আমরা উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করছি যে, রাশিয়া-ইউক্রেন ও ইসরায়েল-ফিলিস্তিন-হামাস পৃথিবীকে উত্তপ্ত করে রেখেছে। বিশ্ব জনমতকে উপেক্ষা করে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী আগ্রাসী অভিযান শুরু করেছেন। এই পরিস্থিতিতে আমাদের নেত্রী শেখ হাসিনা যুদ্ধের বিরুদ্ধে সোচ্চার ভূমিকা পালন করে চলেছেন। সব প্রকার আগ্রাসনের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো ও এ যুদ্ধকে না বলার জন্য বিশ্বের নেতাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দীন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক বি এম মোজাম্মেল হক, মির্জা আজম, আফজাল হোসেন ও সুজিত রায় নন্দী, স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. রোকেয়া সুলতানা, সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল, উপ-দপ্তর সম্পাদক সায়েম খান, কার্যনির্বাহী সদস্য সাহাবুদ্দিন ফরাজী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
মৌলভীবাজারে বিশেষ ক্ষমতা আইনে করা নাশকতা মামলায় জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সাবেক উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান মিজান ও জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক এমএ মুহিতসহ ১৪ নেতাকর্মীকে কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত।
বৃহস্পতিবার দুপুরে মৌলভীবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতে হাজির হয়ে জামিন আবেদন করলে তা নামঞ্জুর করে বিচারক তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
উচ্চ আদালতের মঞ্জুরকৃত জামিন শেষ হওয়ায় তারা আদালতে হাজির হন।
মৌলভীবাজার মডেল থানায় ২০২৩ সালের নভেম্বর ও ডিসেম্বর মাসে করা দুটি রাজনৈতিক মামলার ১৪ জন আসামি হাজির হলে আদালত তাদের সবার জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে প্রেরণ করে।
মামলার অন্যান্য আসামিরা হলেন- জেলা বিএনপির সহ-সাধারণ সম্পাদক মুহিতুর রহমান হেলাল, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মাহমুদুর রহমান, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলে সাবেক সভাপতি ও পৌর কাউন্সিলর স্বাগত কিশোর দাস চৌধুরী, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব আহমেদ আহাদ, যুবদলের এমএ নিশাদ, যুবদলের সিরাজুল ইসলাম পিরুন, স্বেচ্ছাসেবক দলের নুরুল ইসলাম, যুবদলের ওয়াহিদুর রহমান জুনেদ, স্বেচ্ছাসেবক দলের আব্দুল হান্নান, স্বেচ্ছাসেবক দলের রোহেল আহমেদ, স্বেচ্ছাসেবক দলের মামুনুর রশিদ ও যুবদলের জাহেদ আহমেদ।
মৌলভীবাজার জেলা আদালত পুলিশের পরিদর্শক মো. ইউনুছ মিয়া জানান, ২০২৩ সালে নাশকতার অভিযোগে করা মামলায় মৌলভীবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতে হাজির হয়ে জামিন আবেদন করেন আসামিরা। আদালত শুনানি শেষে আবেদন নামঞ্জুর করে তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
ক্ষমতায় আসার জন্য মরিয়া বিএনপি নেতারা হিতাহিতজ্ঞানশূন্য হয়ে পড়েছেন বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেছেন, ‘বিএনপি নির্বাচিত সরকারের বিরুদ্ধে বিষোদ্গারের মাধ্যমে বিভ্রান্তি ও নৈরাজ্য সৃষ্টির পাঁয়তারা করছে। এমনকি জনগণকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে ক্ষমতায় যাওয়ার অপচেষ্টা করছে।’
বৃহস্পতিবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে ওবায়দুল কাদের এসব কথা বলেন।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘বিএনপি নেতাদের বোধগম্য হয় না যে আওয়ামী লীগ জনগণের কাতারে দাঁড়িয়ে রাজনীতি করে, জনকল্যাণে পরিকল্পনা গ্রহণ ও কর্মসূচি নির্ধারণ করে। তাই জনগণকে হাতিয়ার করে নয়, জনকল্যাণের রাজনীতি করে জনগণের মন জয় করেই তাদেরকে ক্ষমতায় যেতে হবে।
তিনি বলেন, ‘বিএনপি গণবিরোধী রাজনীতি করে আসছে। রাষ্ট্রক্ষমতায় থাকতে তারা শাসন-শোষণ ও অত্যাচারের স্টিমরোলার চালিয়েছিল। সন্ত্রাস ও উগ্র-জঙ্গিবাদকে পৃষ্ঠপোষকতা দিয়ে তারা সারাদেশে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছিল।’
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বিএনপি গণতান্ত্রিক আন্দোলনে ব্যর্থ। দলটি দেশের উন্নয়ন-অগ্রগতি বাধ্যগ্রন্ত করার লক্ষ্যে অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুরের মাধ্যমে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে।
‘সংসদ নির্বাচন বানচালের নামেও তারা অগ্নি-সন্ত্রাসের মাধ্যমে নিরীহ মানুষকে পুড়িয়ে মেরেছে এবং রাষ্ট্রীয় সম্পদ ধ্বংস করেছে। আর দেশের আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ও আদালত জনগণের নিরাপত্তা এবং শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষায় পদক্ষেপ নিলে বিএনপি নেতারা সেটাকে প্রশ্নবিদ্ধ করার অপচেষ্টা চালান।’ তিনি বলেন, ‘বিএনপি প্রকৃতপক্ষে একটি সন্ত্রাসী সংগঠন। সন্ত্রাসীদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দেয়া তাদের নীতিগত সিদ্ধান্ত।
‘সরকার জনগণের শান্তি ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে যথাযথ আইনি পদক্ষেপ নিতে বদ্ধপরিকর।
আরও পড়ুন:পার্বত্য চট্টগ্রামের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে অধিক সতর্কতা অবলম্বনের জন্য আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে নির্দেশ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। একইসঙ্গে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মতো সততার সঙ্গে দায়িত্ব পালনেরও নির্দেশনা দিয়েছে সাংবিধানিক সংস্থাটি।
বৃহস্পতিবার সকালে নির্বাচন ভবনে মাঠ প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিব এবং পুলিশ প্রধানের সঙ্গে কমিশনের বৈঠকের পর সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান ইসি সচিব মো. জাহাংগীর আলম।
ইসি সচিব বলেন, ‘প্রত্যেকেই তাদের নিজ নিজ জেলায় কী সমস্যা আছে তা বলেছেন। পার্বত্য জেলাগুলোতে যেখানে হেলিকপ্টার সাপোর্ট দেয়া হয়, সেখানে তিনদিনের পরিবর্তে পাঁচদিনের সম্মানী ভাতা বাড়িয়ে দেয়ার জন্য তারা বলেছেন। কমিশন তাতে সম্মত হয়েছে।
‘পার্বত্য উপজেলা পরিষদের নির্বাচনে ভোটগ্রহণের দিন প্রতিটি ইউনিয়নে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও উপজেলায় দুই থেকে চার প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন থাকবে। প্রয়োজনে অতিরিক্ত জনবল দেয়া হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘পুলিশ সুপার ও জেলা প্রশাসকরা বলেছেন যে ভোটের দিন সকালে ব্যালট গেলে অতিরিক্ত বাজেটের প্রয়োজন হবে। কমিশন সেটা বিবেচনা করবে বলে আশ্বস্ত করেছে। মূলত মাঠ প্রশাসনে যাতে সমন্বয়ের মাধ্যমে সুষ্ঠু-সুন্দর নির্বাচন উপহার দেয়া যায় সে বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।’
ইউপি চেয়ারম্যানরা স্বপদে থেকে নির্বাচন করতে পারবেন বলে আদালত নির্দেশ দিয়েছে। কমিশন বিষয়টি নিয়ে আপিল করবে কিনা- এমন প্রশ্নের জবাবে ইসি সচিব বলেন, ‘আদেশের কপি এখনও আমরা পাইনি। পেলে আপিল করা হবে।’
অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘জেলায় জেলায় কোর কমিটি মিটিং করে জানালে সে অনুযায়ী অতিরিক্ত ফোর্স দেয়া হবে। নির্দেশনা দেয়া হয়েছে- দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তারা যেভাবে নিরপেক্ষতা, সততা, নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেছেন, সেই ধারাবাহিকতা যেন অব্যাহত থাকে।’
জাহাংগীর আলম বলেন, ‘কর্মকর্তারা চ্যালেঞ্জের কথা বলেননি। তারা বলেছেন- স্থানীয় নির্বাচনে যেহেতু প্রার্থীর সংখ্যা বেশি থাকে তাই সেখানে প্রতিযোগিতাটা বেশি হবে। এজন্য তারা আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য সংখ্যা বাড়িয়ে দেয়ার জন্য বলেছেন। সহিংসতার আশঙ্কা করেননি। এ বিষয়টা গোয়েন্দা রিপোর্টে থাকে। কোথাও কোনো পরিস্থিতি সৃষ্টি হলে সে অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। পার্বত্য জেলার উপজেলাগুলোতে নির্বাচনে অধিক সতর্কতা অবলম্বন করতে বলা হয়েছে।’
নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপিদের প্রভাব খাটানো নিয়ে ইসি সচিব বলেন, ‘আচরণবিধি যাতে সবাই যথাযথভাবে প্রতিপালন করে সে বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য তারা অনুরোধ করেছেন। কমিশনও আশ্বস্ত করেছে যে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলবে।’
সভায় সভাপতিত্ব করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল। অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব, পুলিশের আইজি, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিবসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা এতে উপস্থিত ছিলেন।
প্রসঙ্গত, আগামী ৮ মে থেকে ৫ জুন পর্যন্ত চার ধাপে দেশের পৌনে পাঁচ শ’ উপজেলা পরিষদের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।
আরও পড়ুন:স্থানীয় সরকার নির্বাচন বর্জনের দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে প্রথম ধাপের উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করায় ৬৪ নেতাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে বিএনপি। পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে অংশ নেয়ায় ইতোমধ্যে পাঁচ নেতাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয় সূত্রের উল্লেখ করে বার্তা সংস্থা ইউএনবি জানায়, নির্বাচনে অংশ নেয়া নেতাদের মধ্যে উপজেলা চেয়ারম্যান পদে ২৪ জন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে ২১ জন ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ১৯ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
দলটির জ্যেষ্ঠ নেতারা বলছেন, কারণ দর্শানো নোটিশের সন্তোষজনক জবাব দিতে ব্যর্থ হওয়া নেতাদের প্রাথমিক সদস্যপদসহ দলের সব পদ থেকে বহিষ্কার করা হবে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএনপির একজন সহ-দপ্তর সম্পাদক জানান, মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত বিএনপির ৬৪ জন নেতাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হয়েছে।
এর আগে বর্তমান সরকার ও নির্বাচন কমিশনের অধীনে যেকোনো নির্বাচনে অংশ না নেয়ার সিদ্ধান্ত নেয় বিএনপির হাইকমান্ড।
এদিকে দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে আসন্ন পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে অংশ নেয়ায় ইতোমধ্যে পাঁচ নেতাকে বহিষ্কার করেছে বিএনপি।
সংগঠনটির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, পৌরসভা নির্বাচনে অংশ নেয়ায় নীলফামারীর জলঢাকা উপজেলা বিএনপির সভাপতি ফাহমিদ ফয়সল চৌধুরীকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
এছাড়া দিনাজপুরের বিরল উপজেলার সহ-সভাপতি সাদেক আলী, উত্তর চট্টগ্রামের চিকনন্দী ইউনিয়নের সহকারী আহ্বায়ক রাশেদ আলী মাহমুদ, কক্সবাজার জেলা বিএনপি নেতা জহুরুল আলম ও কক্সবাজার জেলা মৎস্যজীবী দলের নেতা এম হান্নান মিয়াকে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে অংশ নেয়ায় বহিষ্কার করা হয়েছে।
আরও পড়ুন:মৌলভীবাজার জেলার জুড়ীতে আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে ঘোড়া প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী আলী হোসেনের ওপর সন্ত্রাসী হামলা হয়েছে। বুধবার সকালে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনে নির্বাচনি প্রচারণার সময় এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় জড়িত থাকার দায়ে একজনকে আটক করেছে পুলিশ।
হামলায় আহত চেয়ারম্যান প্রার্থী আলী হোসেনকে প্রথমে জুড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে সিলেট এমএজি ওসমানী হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে আহত আলী হোসেন বলেন, ‘কাপ-পিরিচ প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী কিশোর রায় চৌধুরী মনি ও পশ্চিম জুড়ী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আনফর আলীর নির্দেশে সাইদুল, মুহিব, সোহেলদের নেতৃত্বে আমার ওপর এই হামলা হয়েছে। এ সময় আমাকে অপহরণেরও চেষ্টা করা হয়।’
ভাইরাল হওয়া অপর এক ভিডিওতে চেয়ারম্যান প্রার্থী আলী হোসেনকে জোর করে গাড়িতে তোলার চেষ্টা করার দৃশ্য দেখা যায়।
স্থানীয় একাধিক সূত্র জানায়, চেয়ারম্যান প্রার্থী আলী হোসেনসহ আরও তিনজন ঘোড়া প্রতীক চেয়েছিলেন। প্রতীক বরাদ্দের দিন বিষয়টি নিয়ে অনেক হট্টগোল হয়। একাধিক প্রার্থী হওয়ায় লটারির মাধ্যমে আলী হোসেন ঘোড়া প্রতীক পান। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে অপর চেয়ারম্যান প্রার্থী কিশোর রায় চৌধুরী মনি ও পশ্চিম জুড়ী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আনফর আলীর নির্দেশে এই সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটে।
হামলার বিষয়ে বক্তব্য জানতে কাপ-পিরিচ প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী কিশোর রায় চৌধুরী মনির মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল দিলেও সেটি বন্ধ পাওয়া যায়।
জুড়ী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) হুমায়ুন কবির বলেন, হামলার এ ঘটনায় একজনকে আটক করা হয়েছে। মামলা দায়েরের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন।
আরও পড়ুন:উপজেলা নির্বাচন থেকে মন্ত্রী ও এমপিদের স্বজনরা সরে না দাঁড়ালে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
রাজধানীর ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে বুধবার দলের সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ হুঁশিয়ারি দেন।
কাদের বলেন, ‘দলীয় সংসদ সদস্য এবং মন্ত্রীদের নিকটাত্মীয় এবং স্বজনদের প্রার্থী না হতে দলীয় যে নির্দেশনা, তা না মানলে সময়মতো সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। উপজেলা নির্বাচনের প্রথম পর্যায়ে প্রার্থিতা প্রত্যাহারের সময় পেরিয়ে গেছে। এদের মধ্যে অনেকেই বলেছেন যে, আমরা বিষয়টি আরও আগে অবহিত হলে আমাদের সিদ্ধান্ত নিতে সুবিধা হতো। তারপরও কেউ কেউ প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেছেন, কেউ কেউ করেননি।
‘নির্বাচন কমিশনে সময়সীমা শেষ হয়ে গেলে কেউ ইচ্ছা করলে প্রার্থিতা প্রত্যাহার করতে পারেন। এ বিষয়টা চূড়ান্ত হতে নির্বাচন পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। এখানে কেউ অমান্য করলে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়ার সুযোগ আছে দলে; সময়মতো সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।’
দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের বিষয়ে কাদের বলেন, ‘আমাদের দলে ডিসিপ্লিনারি অ্যাকশনের বিষয়টি আছে। দল যার যার কর্মকাণ্ড বিবেচনায় বিভিন্ন সময় বিভিন্ন কৌশলে ডিসিপ্লিনারি অ্যাকশন নিয়ে থাকে। চূড়ান্ত পর্যায়ে যারা প্রত্যাহার করবে না, এ ব্যাপারে দলের সিদ্ধান্ত সময়মতো নেয়া হবে।’
চূড়ান্ত পর্যায়ে এসেও কেউ প্রার্থিতা প্রত্যাহার না করলে দল থেকে বহিষ্কার করা হবে কি না, এমন প্রশ্নে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘সাধারণ ক্ষমা একটা বিশেষ পরিস্থিতিতে দলীয় রণকৌশল। সেটা হতেই পারে। সেটা দলের সভাপতি নিতে পারেন। নির্বাচন হওয়া পর্যন্ত প্রার্থিতা প্রত্যাহারের সুযোগ আছে।’
বিএনপির সমাবেশের দিনে আওয়ামী লীগেরও সমাবেশ থাকে—সাংবাদিকের এমন প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বিএনপির সন্ত্রাস থেকে জনগণকে রক্ষায় কর্মসূচি দেয় আওয়ামী লীগ। বিএনপি একতরফা সমাবেশ করতে গেলে সন্ত্রাস, আগুন সন্ত্রাসের আশঙ্কা থেকেই যায়। জনগণের জানমাল রক্ষায় সরকারি দল হিসেবে আমাদের দায়িত্ব আছে।
‘আমরা মাঠে থাকলে তারা এসব অপকর্ম করতে মানসিকভাবে চাপে থাকবে। সে জন্য আমরা কর্মসূচি দিই। বিএনপির চোরাগোপ্তা হামলা প্রতিহত করতে জনগণের স্বার্থে আমাদের কর্মসূচি থাকা উচিত।’
আরও পড়ুন:
মন্তব্য