ক্রমে বাড়তে থাকা পুঁজিবাজার ২৫ আগস্ট হঠাৎ যে অবস্থান হোঁচট খায়, ফিরে আসেছে কাছাকাছি অবস্থানে। টানা তিন দিন পতনের পর মঙ্গলবার সূচকের উত্থানে যে স্বস্তি ফিরে এসেছিল, তা আরও জোরাল হয়েছে পরদিন। আগের দিন ৪৫ পয়েন্টের পর বুধবার সূচকে যোগ হলো ৪৭ পয়েন্ট। বেড়েছে লেনদেনও।
এই দিনে বেশিরভাগ খাতের শেয়ারেই দর বৃদ্ধি পেয়েছে। এর ভিড়ে সবচেয়ে বেশি বেড়েছে বিমা খাতের শেয়ার। গত এপ্রিল থেকে জুনের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত দল বেঁধে এই খাতের শেয়ারের দর বৃদ্ধির যে স্মৃতি, সেটি খানিটকা ফিরে এসেছে টানা তৃতীয় দিনের লেনদেনে।
গত রোববার বাজারে পতনের দিনও বিমা খাতে ছিল সুবাতাস। সোমবার জন্মাষ্ঠমীর বিরতি শেষে তা বাড়ে আরও বেশি। সেটি অব্যাহত থাকে পর দিনও। ছয়টি ছাড়া বেড়েছে বাকি ৪৫টি কোম্পানির দর। সবচেয়ে বেশি দাম বৃদ্ধি পাওয়া ১০টি কোম্পানির দুটি আর ২০টি কোম্পানির ৫টি ছিল এই খাতের।
লেনদেনেও দিনের সেরা বিমা খাত। জুলাইয়ের পর প্রথমবারের মতো এক দিনের লেনদেন ৫০০ কোটি টাকা ছুঁই ছুঁই হয়েছে।
আগের দিন ৫১টি কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছিল ৪৯টির। লেনদেনেও এই খাত ছিল সেরা। সেদিন লেনদেন ছিল ৩৫৭ কোটি টাকা।
টানা বাড়তে থাকা পুঁজিবাজার গত ২৫ আগস্ট ৬ হাজার ৯২১ পয়েন্টে উঠার পর শেষ সোয়া ঘণ্টায় হঠাৎ করেই ৪১ পয়েন্ট হারিয়ে বসে। এরপর দুই দিন ২৭ পয়েন্ট করে পতন হলে পুঁজিবাজারে উৎকণ্ঠা দেখা দেয়। গত ৪ এপ্রিলের পর এই প্রথম পরপর তিন দিন এভাবে পতন হয়।
এমন কোনো বড় পতন নয়, তার পরেও বিষয়টি উৎকণ্ঠা তৈরি করে অন্য একটি কারণে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একটি সিদ্ধান্ত নিয়ে তৈরি হয় বিতর্ক।
পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ বিষয়ে ছয়টি ব্যাংক ও তিনটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান পরিদর্শনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি। এমনিতেই সংশোধন হতে পারে, এমন আলোচনার মধ্যে এই বিষয়টি তৈরি করে উদ্বেগ।
এর আগে পুঁজিবাজারে ব্যাংকের বিনিয়োগের তথ্য প্রতিদিন জানানোর বিষয়ে আদেশ এসেছিল এবং এই বিষয়টি পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি ভালোভাবে নেয়নি।
তবে মঙ্গলবারের লেনদেন সব উৎকণ্ঠা উড়িয়ে দিয়ে স্বস্তির বার্তা আনে পুঁজিবাজারে। সূচক বাড়ে ৪৫ পয়েন্ট। ১৬ কর্মদিবস পর রোববার লেনদেন প্রথমবারের মতো দুই হাজার কোটি টাকার নিচে নেমে এলেও পরের কর্মদিবসেই তা ছাড়িয়ে যায় ২ হাজার ২০০ কোটি টাকা।
বুধবার লেনদেনের শুরুতেই সূচক বেড়ে গিয়ে এক পর্যায়ে ছাড়িয়ে যায় সেই ৬ হাজার ৯২১ পয়েন্ট। ৬ হাজার ৯৩৯ পয়েন্ট উঠে যায় আধা ঘণ্টার মধ্যে। এরপর কিছুটা কমে লেনদেন শেষ হয় ৬ হাজার ৯১৬ পয়েন্টে।
এর মধ্যে মঙ্গলবার আরও একটি আদেশ আসে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের। গত বছর পুঁজিবাজারে ব্যাংকের বিনিয়োগ বাড়াতে যে বিশেষ তহবিল গঠন করা হয়েছিল, সেটির লেনদেনের তথ্য দিতে হতো তিন মাস অন্তর। এখন থেকে প্রতি মাসেই তথ্য চেয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
এই তহবিল থেকে খুব বেশি বিনিয়োগ হয়েছে এমন নয়। তহবিল হতে পারত ১২ হাজার ৪০০ কোটি টাকা। কিন্তু হয়েছে সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকার মতো। বিনিয়োগ হয়েছে তারও অর্ধেক।
তারপরেও কেন্দ্রীয় ব্যাংক এই বিষয়টি নিয়ে কেন হঠাৎ ভাবছে, তা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দেয় বিনিয়োগকারীদের মধ্যে। তবে এর কোনো নেতিবাচক প্রভাব পড়েনি বাজারে।
শেয়ারদরের পাশাপাশি লেনদেন বেড়েছে বিমায়
গত এপ্রিল থেকে অস্বাভাবিক উত্থান শুরু হয় এই খাতে। ৫১টি কোম্পানির একটি অংশ জুনের প্রথম সপ্তাহে এবং একটি অংশ দ্বিতীয় সপ্তাহে সংশোধনে যায়। কোনো কোনো কোম্পানি এই সময়ে কোনো কোম্পানি দর হারায় ২০ শতাংশ, কোনোটি ৩০ শতাংশ, কোনোটি তার চেয়ে বেশি।
দুই মাসেরও বেশি সময় ধরে ক্রমাগত দরপতন শেষে আগস্টের মাঝামাঝি সময় থেকে ঘুরে দাঁড়ানোর আভাস আসতে থাকে। সেই আভাস আরও জোরাল হল চলতি সপ্তাহে।
গত মে মাসে কোনো কোনো দিন ৫০০ কোটি, কোনোদিন ৬০০ কোটি, কোনোদিন ৭০০ কোটি টাকার বেশি লেনদেন হয়েছে এই একটি খাতে। আগস্টের শুরুতে লেনদেন ১৫০ কোটি বা তার চেয়ে নিচে নেমে আসে।
চলতি সপ্তাহে সেখান থেকে শুরে দাঁড়ানোর ইঙ্গিত দেখা যায়। রোববার বিমা খাতের লেনদেন হয়েছিল ২৩৮ কোটি ৪ লাখ টাকা। সোমবার জন্মাষ্ঠমীর ছুটি শেষে মঙ্গলবার হাতবদল হয় ৩৫৭ কোটি টাকার বেশি।। সেখান থেকে একদিনের ব্যবধানে ৩৩.৭৩ শতাংশ বেড়ে বুধবার লেনদেন হয়েছে ৪৭৭ কোটি ৪২ লাখ টাকা।
এদিন বিমা খাতের সবচেয়ে বেশি দর বেড়েছে বাংলাদেশ ন্যাশনাল ইন্স্যুরেন্সে কোম্পানির ৯.৯৫ শতাংশ। শেয়ার মূল্য ১৪১ টাকা ৫০ পয়সা থেকে বেড়ে হয়েছে ১৫৫ টাকা ৬০ পয়সা।
তারপরেই আছে এশিয়া ইন্স্যুরেন্সে, যার দর ৯৭ টাকা ৪০ পয়সা থেকে ৮.৩১ শতাংশ বেড়ে হয়েছে ১০৫ টাকা ৫০ পয়সা।
ঢাকা ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার দর বেড়েছে ৬.২৪ শতাংশ। দাম ৮০ টাকা ১০ পয়সা থেকে বেড়ে হয়েছে ৮৫ টাকা ১০ পয়সা।
প্রগতি ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার দর বেড়েছে ৫.৭৪ শতাংশ। গ্রিনডেল্টা ইন্স্যুরেন্সের দর বেড়েছে ৫.৪৯ শতাংশ।
দর বাড়লেও লেনদেন কমেছে ব্যাংকে
ব্যাংকের বেশিরভাগ শেয়ারের দর বাড়লেও তার হার ছিল একেবারেই নগণ্য। সেই সঙ্গে কমেছে লেনদেন।
মঙ্গলবার এই খাতে লেনদেন ছিল ১৬৪ কোটি ৮৭ লাখ টাকা। বুধবার তা কমে হয়েছে ১৪৮ কোটি ৯০ লাখ টাকা।
লেনদেন হওয়া ব্যাংকগুলোর মধ্যে দর বেড়েছে ২০টির। তার দর কমেছে ৫টির।
ব্যাংক খাতের সবচেয়ে বেশি দর বেড়েছে লোকসানি আইসিবি ইসলামী ব্যাংকের ৭.৫৭ শতাংশ। শেয়ার প্রতি মূল্য ৬ টাকা ৬০ পয়সা থেকে বেড়ে হয়েছে ৭ টাকা ১০ পয়সা।
তারপরে আছে রূপালী ব্যাংক। ২.৬৯ শতাংশ বেড়ে শেয়ার দর ৩৩ টাকা ৪০ পয়সা থেকে বেড়ে হয়েছে ৩৪ টাকা ৩০ পয়সা।
সাউথ বাংলা এগ্রিকালচার ব্যাংকের শেয়ার দর বেড়েছে ২.১৭ শতাংশ; ২৩ টাকা থেকে বেড়ে হয়েছে ২৩ টাকা ৫০ পয়সা।
ব্র্যাক ব্যাংকের শেয়ার দর ৪৭ টাকা ১০ পয়সা থেকে ১.৯১ শতাংশ বেড়ে হয়েছে ৪৮ টাকা।
আগ্রহের নতুন মোড় খাদ্য ও আনুষাঙ্গিক খাত
মঙ্গলবার হঠাৎ করে পুঁজিবাজার তালিকাভুক্ত খাদ্য ও আনুষাঙ্গিক খাতের লেনদেন শত কোটি টাকা অতিক্রম করে। পাশপাশি এ খাতের বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ার দরও বাড়তে দেখা গেছে।
একদিনের ব্যবধানে সেই ধারাবাহিকতায় বুধবারও লেনদেন শত কোটি টাকার বেশি হলেও আগের দিনের তুলনায় কমেছে ১৪ কোটি ১৬ লাখ টাকা। আর এদিন লেনদেনে দর বেড়েছে ১৪টি কোম্পানির আর দর কমেছে ৬টির।
মঙ্গলবার খাদ্য ও আনুষাঙ্গিক খাতের মোট লেনদেন হয়েছিল ১৩১ কোটি ৫ লাখ টাকা। বুধবার লেনদেন হয়েছে ১১৭ কোটি ৩৪ লাখ টাকা।
এই খাতের সবচেয়ে বেশি ৮.৫৯ শতাংশ দর বেড়েছে মেঘনা কনডেন্সড মিল্কের দর। শেয়ার মূল্য ২৫ টাকা ৬০ পয়সা থেকে বেড়ে হয়েছে ২৭ টাকা ৮০ পয়সা।
তারপরই আছে গোল্ডেন হারভেস্ট এগ্রো, যার দর ৭.৬১ শতাংশ বেড়ে ২১ টাকা থেকে হয়েছে ২২ টাকা ৬০ পয়সা।
অন্যান্য খাতের লেনদেন
দ্বিতীয় সর্বোচ্চ লেনদেন হওয়া প্রকৌশল খাতের ৪২টি কোম্পানির মধ্যে দর কমেছে ১৮টির। বেড়েছে ১১টির। লেনদেন হয়েছে ২৭৮ কোটি ৪৪ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ১৭২ কোটি ৭৩ লাখ টাকা।
তৃতীয় সর্বোচ্চ লেনদেন হওয়া বস্ত্র খাতে দরপতন হয়েছে। ৫৮টি কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ১৬টির, কমেছে ৩৬টির। অপরিবর্তিত ছিল বাকি ৬টির দর। এই খাতে লেনদেন হয়েছে ২৫৭ কোটি ৩৪ লাখ টাকা। আগের দিন হাতবদল হয়েছিল ২৯৪ কোটি ৭০ লাখ টাকা।
ওষুধ ও রসায়ন খাতের ৩১টি কোম্পানির মধ্যে দর পতন হয়েছে ১১টির, বেড়েছে ১৭টির। হাতবদল হয়েছে ১৮৩ কোটি ৯৫ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ২০৯ কোটি ৫৯ লাখ টাকা।
বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের ২৩টি কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ১৪টির, কমেছে ৯টি। লেনদেন হয়েছে ১৪৩ কোটি ৪ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ১৭৫ কোটি ১৯ লাখ টাকা।
বিবিধ খাতের ১৪টি কোম্পানির মধ্যে দাম কমেছে ৫টির, বেড়েছে সাতটির। হাতবদল হয়েছে ১৯৮ কোটি ৩৮ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ১৬৯ কোটি ২৪ লাখ টাকা।
মিউচ্যুয়াল ফান্ড খাত আবার দর হারিয়েছে। গ্রামীণ টু ও রিলায়েন্স ইন্স্যুরেন্স মিউচ্যুয়াল ফান্ডের লভ্যাংশ ইস্যুতে হতাশ হওয়া বিনিয়োগকারীরা কম দামে হলেও ইউনিট ছেড়ে দিতে চাইছেন, এটা স্পষ্ট।
এই খাতের ৩৬টি ফান্ডের মধ্যে দাম বেড়েছে কেবল ৮টির, কমেছে ১৭টির। অপরিবর্তিত ছিল বাকি ১১টির। লেনদেন হয়েছে ৪৮ কোটি ৭৯ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন ছিল ৬৩ কোটি ৪২ লাখ টাকা।
তথ্যপ্রযুক্তি খাতের ১১টি কোম্পানির মধ্যে ৫টির দর বৃদ্ধির বিপরীতে কমেছে ৬টির। হাতবদল হয়েছে ৩৫ কোটি ৬৫ লাখ টাকা। আগের দিন হাতবদল হয়েছিল ৩১ কোটি ২৮ লাখ টাকা।
সূচক ও লেনদেন
ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ৪৭ দশমিক ১৪ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬ হাজার ৯১৬ দশমিক ৩৮ পয়েন্টে।
শরিয়াহভিত্তিক কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসইএস ৫ দশমিক ৩৭ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৪৯৫ পয়েন্টে।
বাছাই করা কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএস-৩০ সূচক ২০ দশমিক ৭৭ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৪৭৪ পয়েন্টে।
লেনদেন হয়েছে ২ হাজার ৩৬৬ কোটি টাকা। আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ২ হাজার ২৪৯ কোটি টাকা। একদিনের ব্যবধানে লেনদেন বেড়েছে ১১৭ কোটি টাকা।
চিটাগং স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) প্রধান সূচক সিএএসপিআই ১৫৯ দশমিক ৩১ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২০ হাজার ১৫৬ পয়েন্টে। লেনদেন হয়েছে ৯৯ কোটি টাকা। আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ৭১ কোটি টাকা।
আরও পড়ুন:শেষ কার্যদিবসে ঢাকার পুঁজিবাজারে লেনদেন চলছে উত্থানে, বেড়েছে প্রধান সূচক। অন্যদিকে বিগত দিনের মতো এখনো পতন থেকে বের হতে পারেনি চট্টগ্রামের বাজার।
লেনদেনের প্রথম দুই ঘন্টায় ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ৮ পয়েন্ট।
এর বাইরে বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) শরীয়াভিত্তিক সূচক ডিএসএসের উত্থান দশমিকের ঘরে থাকলেও ব্লু-চিপ শেয়ারের সূচক ডিএস-৩০ বেড়েছে ২ পয়েন্ট।
সূচক কিছুটা বাড়লেও বিগত কয়েকদিনের টানা পতনে লেনদেন অনেকটাই কমে এসেছে। এতদিন প্রথমার্ধে লেনদেন ২০০ কোটি ছাড়িয়ে গেলেও, এদিন লেনদেন হয়েছে ১৫০ কোটিরও কম।
দাম বেড়েছে লেনদেন অংশ নেয়া বেশিরভাগ কোম্পানির। ১৬১ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ১৩২ কোম্পানির এবং অপরিবর্তিত আছে ৯৬ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
এদিকে এখনো পতন থেকে বের হতে পারেনি চট্টগ্রামের বাজার। লেনদেনের প্রথমার্ধে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই) সার্বিক সূচক হারিয়েছে ৭৩ পয়েন্ট।
দাম কমেছে লেনদেনে অংশ নেয়া বেশিরভাগ কোম্পানির। ৩৩ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে ৬৬ কোম্পানির হয়েছে দরপতন, অপরিবর্তিত আছে ২৪ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
পুঁজিবাজারের প্রথম দুই ঘন্টায় সিএসইতে লেনদেন ছাড়িয়েছে ২ কোটি ৩০ লাখ টাকা।
পুঁজিবাজারে চলতি সপ্তাহ মোটেই ভালো কাটছে না বিনিয়োগকারীদের। সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসে সূচকের পতনের পর নববর্ষের ছুটি শেষে দ্বিতীয় কার্যদিবসেও বড় পতনের মুখে পড়েছে ঢাকা ও চট্টগ্রাম—দেশের উভয় পুঁজিবাজার। এদিন কমেছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ৩৭ পয়েন্ট। মন্দাবস্থা চলছে বাকি দুই সূচকেও। শরীয়াভিত্তিক সূচক ডিএসইএস ১০ এবং বাছাইকৃত শেয়ারের ব্লু-চিপ সূচক কমেছে ১৮ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৯৭টি কোম্পানির মধ্যে সিংহভাগের দরপতন হয়েছে। আজ ৯৮টি কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর হারিয়েছে ২৫৫টি কোম্পানি এবং অপরিবর্তিত ছিল ৪৪টি কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ক্যাটাগরির হিসেবে ‘এ’, ‘বি’ ও ‘জেড’—তিন ক্যাটাগরিতেই প্রধান্য পেয়েছে দর কমা কোম্পানির সংখ্যা। বিশেষ করে ‘বি’ ক্যাটাগরির ৮৩টি কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে মাত্র ১১টির এবং কমেছে ৬৭টির; আর লেনদেন অপরিবর্তিত ছিল ৫টি কোম্পানির।
লেনদেন হওয়া ৩৬টি মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে বেশিরভাগেরই দাম ছিল নিম্নমুখী। মাত্র ৭টি কোম্পানির ইউনিটের দাম বৃদ্ধি হয়েছে, কমেছে ২৪টির এবং অপরিবর্তিত আছে ৫টির।
ডিএসইর ব্লক মার্কেটে আজ ২৬টি কোম্পানির মোট ৪৮ কোটি ৯৩ লাখ টাকার শেয়ার বিক্রি হয়েছে। এর মধ্যে সর্বোচ্চ ২৩ কোটি ৩৮ লাখ টাকার শেয়ার বিক্রি করেছে মারিকো বাংলাদেশ।
ডিএসইতে সূচক কমলেও গতদিনের তুলনায় বেড়েছে লেনদেন। সারা দিনে মোট ৪৪৬ কোটি টাকার ওপর শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে, গতদিন যার পরিমাণ ছিল ৪১৪ কোটি টাকা।
৯.৯৪ শতাংশ দাম বেড়ে ডিএসইতে শীর্ষ শেয়ারের তালিকায় আছে রংপুর ফাউন্ড্রি লিমিটেড। ১৪২.৯০ টাকায় লেনদেন শুরু হয়ে দিন শেষে কোম্পানিটির প্রতিটি শেয়ারের দাম বেড়ে হয়েছে ১৫৭.১০ টাকা।
অন্যদিকে, ৯.৯৬ শতাংশ দর হারিয়ে আজ একেবারে তলানিতে ঠাঁই হয়েছে খান ব্রাদার্সের। প্রতিটি শেয়ার ১৩৪.৫০ টাকা দরে লেনদেন শুরু হলেও দিন শেষে দাম কমে ১২১.১০ টাকায় ক্রয়-বিক্রয় হয়েছে।
চট্টগ্রামেও বড় পতন
.ঢাকার মতো চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) সূচকের বড় পতন হয়েছে। সারা দিনের লেনদেনে সিএসইতে সার্বিক সূচক কমেছে ১০০ পয়েন্ট।
লেনদেন অংশ নেওয়া ২১১টি কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ৫৪টির, বিপরীতে দাম কমেছে ১৩৫টির এবং ২২টি কোম্পানির শেয়ারের দাম ছিল অপরিবর্তিত।
সূচকের পাশাপাশি সিএসইতি আজ লেনদেনও কমেছে। গত কার্যদিবসে ১৫ কোটি টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হলেও মঙ্গলবার তা কমে ৭ কোটি টাকায় নেমেছে।
এদিন ৯.৯৫ শতাংশ দাম বেড়ে সিএসইতে আর্থিক মূল্যে শীর্ষ শেয়ার হিসেবে জায়গা করে নিয়েছে ইস্টার্ন ক্যাবলস লিমিটেড। অপরদিকে ৯.৭৭ শতাংশ দর হারিয়ে তলানিতে নেমেছে দেশবন্ধু পলিমার লিমিটেড।
আরও পড়ুন:সপ্তাহের চতুর্থ কার্যদিবসে আবারও সূচকের পতন ঢাকা এবং চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে। দুই পুঁজিবাজারে সবকটি সূচক কমলেও বেড়েছে সামগ্রিক লেনদেন।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ২ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচকের মধ্যে শরীয়া ভিত্তিক ডিএসএস ১ পয়েন্ট এবং ডিএস-৩০ কমেছে আধা পয়েন্টের বেশি।
সূচক কমলেও গতদিনের তুলনায় বেড়েছে লেনদেন। ডিএসইতে মোট ৪৮২ কোটি টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে, যা আগেরদিন ছিল ৪৫১ কোটি টাকা।
দাম কমেছে লেনদেনে অংশ নেয়া বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের। ৩৯৫ কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ১৫০, বিপরীতে দাম কমেছে ১৮৬ কোম্পানির। সারাদিনের লেনদনে দাম অপরিবর্তিত ছিল ৫৯ কোম্পানির শেয়ারের।
ক্যাটাগরির হিসাবে এ এবং জেড ক্যাটাগরির বেশিরভাগ শেয়ারেরই দাম ছিল নিম্নমুখী। বি ক্যাটাগরিতে দাম বেড়েছে অধিকাংশ শেয়ারের। মধ্যম মানের শেয়ারের এই ক্যাটাগরিতে লেনদেন হওয়া ৮২ কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ৩৯, কমেছে ৩৩ এবং অপরিবর্তিত আছে ১০ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে তালিকাভুক্ত ৩৬ কোম্পানির ২৪টিরই দাম ছিল উর্ধ্বমুখী। দাম কমেছে ৪ এবং অপরিবর্তিত আছে ৮ কোম্পানির।
ব্লক মার্কেটে লেনদেন হওয়া ২৬ কোম্পানির ২৬ কোটি ৯২ লাখ টাকার শেয়ার বিক্রি হয়েছে। এরমধ্যে ব্যাংক এশিয়া সর্বোচ্চ ১০ কোটি ৭৮ লাখ টাকার শেয়ার ব্লক মার্কেটে বিক্রি করেছে।
ডিএসইতে লেনদেন হওয়া কোম্পানির মধ্যে ১০ শতাংশ দাম বেড়ে শীর্ষে আছে প্রাইম ফাইন্যান্স ফার্স্ট মিউচুয়াল ফান্ড। অন্যদিকে ৩ দশমিক ৩৯ শতাংশ দাম হারিয়ে তলানিতে তাল্লু স্পিনিং মিলস।
চট্টগ্রামেও পতন
ঢাকার মতো পতন হয়েছে চট্টগ্রামের সূচকেও। চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক কমেছে ১ পয়েন্টের বেশি।
তবে সূচক কমলেও লেনদেন বেড়েছে সিএসই'র বাজারে। সারাদিনে সিএসইতে মোট ৬ কোটি ৯৪ লাখ টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে, যা গতদিন ছিল ৩ কোটি ৮৩ লাখ টাকা।
লেনদেনে অংশ নেয়া ১৯৩ কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ৮৬, কমেছে ৭৯ এবং অপরিবর্তিত আছে ২৮ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
১০ শতাংশ দাম বেড়ে সিএসইতে শীর্ষে আছে পদ্মা ইসলামি লাইফ ইনস্যুরেন্স লিমিটেড এবং ৯ দশমিক ৯৭ শতাংশ দাম কমে তলানিতে বিচ হ্যাচারি লিমিটেড।
আরও পড়ুন:সপ্তাহের শেষ কর্মদিবস বৃহস্পতিবার ঢাকার পুঁজিবাজারে প্রধান সূচকের উত্থান হলেও সার্বিক সূচক কমেছে চট্টগ্রামে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেনের শুরুতেই প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ৫ পয়েন্ট।
বাকি দুই সূচকের মধ্যে শরিয়াহভিত্তিক সূচক ডিএসইএস ১ ও বাছাইকৃত শেয়ার ব্লু-চিপের সূচক কমেছে ১১ পয়েন্ট।
লেনদেনে বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম বেড়েছে। লেনদেন হওয়া কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ২৩১, কমেছে ৬৮ এবং অপরিবর্তিত আছে ৭৩ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
শুরুর প্রথম ঘণ্টায় ডিএসইতে লেনদেন ছাড়িয়েছে ১৩০ কোটি টাকা।
চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সার্বিক সূচক কমেছে ১৩ পয়েন্ট।
লেনদেন হওয়া ৭০ কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ৪০, কমেছে ১৯ এবং অপরিবর্তিত আছে ১১ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সিএসইতে প্রথম ঘণ্টায় মোট লেনদেন ৭৩ লাখ টাকা ছাড়িয়ে গেছে।
আরও পড়ুন:টানা দুই দিন উত্থানের পর তৃতীয় দিন মঙ্গলবারও ঢাকার পুঁজিবাজারে বইছে সুবাতাস।
সূচক বৃদ্ধির পাশাপাশি লেনদেনের প্রথম দুই ঘণ্টায় শেয়ার ও ইউনিট ক্রয়-বিক্রয় ছাড়িয়েছে ৩০০ কোটি টাকা।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ৪৭ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচক ডিএসইএস এবং ব্লু-চিপ কোম্পানির সূচক ডিএস-৩০ বেড়েছে ১০ পয়েন্ট করে।
লেনদেন হওয়া কোম্পানির বেশির ভাগেরই দাম বেড়েছে। ১০৯ কোম্পানির দরপতন এবং ৫৩ কোম্পানির দাম অপরিবর্তিত থাকার বিপরীতে দাম বেড়েছে ২৩০ কোম্পানির।
ঢাকার মতো চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারেও বইছে চনমনে হাওয়া। লেনদেনের প্রথম দুই ঘণ্টায় চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক কমেছে ১০২ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ১৫৭ কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ৮৭, কমেছে ৫১ এবং অপরিবর্তিত আছে ১৯ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
লেনদেনের প্রথমার্ধে সিএসইতে ৮ কোটি ৮০ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়।
আরও পড়ুন:সপ্তাহের প্রথম কর্মদিবস রবিবারের লেনদেনে সূচকের উত্থান হয়েছে ঢাকার পুঁজিবাজারে; বেড়েছে সবকটি সূচক।
অন্যদিকে চট্টগ্রামে পতন দিয়ে শুরু হয়েছে লেনদেন।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ১৩ পয়েন্ট।
বাকি দুই সূচক শরিয়াহভিত্তিক ডিএসইএসের উত্থান দশমিকের নিচে এবং বাছাইকৃত শেয়ার ব্লু-চিপ সূচকের উত্থান হয়েছে ৫ পয়েন্ট।
লেনদেনের প্রথম দুই ঘণ্টায় দাম বেড়েছে বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ারের। দরবৃদ্ধির ২৪৫ কোম্পানির বিপরীতে দর কমেছে ৮৭ এবং অপরিবর্তিত আছে ৫৬ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ডিএসইতে দিনের শুরুতে লেনদেন ছাড়িয়েছে ১৯০ কোটি টাকা।
অন্যদিকে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সার্বিক সূচক কমেছে ৫ পয়েন্ট। সূচক কমলেও বেড়েছে বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
লেনদেন হওয়া ১০২ কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ৫৫, কমেছে ২৯ এবং অপরিবর্তিত আছে ১৮ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সিএসইতে প্রথম দুই ঘণ্টায় লেনদেন ছাড়িয়েছে ২ কোটি টাকা।
আরও পড়ুন:গত সপ্তাহের উত্থানের ধারা ধরে রেখে এ সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস রবিবার ঢাকা ও চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে প্রথম ঘণ্টার লেনদেন হয়েছে সূচকের উত্থানের মধ্য দিয়ে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেনের শুরুতেই প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ৫ পয়েন্ট।
বাকি দুই সূচকের মধ্যে শরিয়াহভিত্তিক সূচক ডিএসইএসের উত্থান দশমিকের নিচে থাকলেও বাছাইকৃত শেয়ার ব্লু-চিপের সূচক বেড়েছে ৩ পয়েন্ট।
লেনদেনে বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম বেড়েছে।
লেনদেন হওয়া কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ১৬৯, কমেছে ৮৭ এবং অপরিবর্তিত আছে ৮৩ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
শুরুর ৩০ মিনিটে ডিএসইতে লেনদেন ছাড়িয়েছে ৫০ কোটি টাকা। ঢাকার মতোই চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সার্বিক সূচক বেড়েছে ১০ পয়েন্ট।
লেনদেন হওয়া কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ২২, কমেছে ৭ এবং অপরিবর্তিত আছে ৬ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সিএসইতে প্রথম আধা ঘণ্টায় মোট লেনদেন ৩০ লাখ টাকা ছাড়িয়ে গেছে।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য