× হোম জাতীয় রাজধানী সারা দেশ অনুসন্ধান বিশেষ রাজনীতি আইন-অপরাধ ফলোআপ কৃষি বিজ্ঞান চাকরি-ক্যারিয়ার প্রযুক্তি উদ্যোগ আয়োজন ফোরাম অন্যান্য ঐতিহ্য বিনোদন সাহিত্য ইভেন্ট শিল্প উৎসব ধর্ম ট্রেন্ড রূপচর্চা টিপস ফুড অ্যান্ড ট্রাভেল সোশ্যাল মিডিয়া বিচিত্র সিটিজেন জার্নালিজম ব্যাংক পুঁজিবাজার বিমা বাজার অন্যান্য ট্রান্সজেন্ডার নারী পুরুষ নির্বাচন রেস অন্যান্য স্বপ্ন বাজেট আরব বিশ্ব পরিবেশ কী-কেন ১৫ আগস্ট আফগানিস্তান বিশ্লেষণ ইন্টারভিউ মুজিব শতবর্ষ ভিডিও ক্রিকেট প্রবাসী দক্ষিণ এশিয়া আমেরিকা ইউরোপ সিনেমা নাটক মিউজিক শোবিজ অন্যান্য ক্যাম্পাস পরীক্ষা শিক্ষক গবেষণা অন্যান্য কোভিড ১৯ শারীরিক স্বাস্থ্য মানসিক স্বাস্থ্য যৌনতা-প্রজনন অন্যান্য উদ্ভাবন আফ্রিকা ফুটবল ভাষান্তর অন্যান্য ব্লকচেইন অন্যান্য পডকাস্ট বাংলা কনভার্টার নামাজের সময়সূচি আমাদের সম্পর্কে যোগাযোগ প্রাইভেসি পলিসি

বাংলাদেশ
The BNP is in the worst situation in 43 years
google_news print-icon

৪৩ বছরে সবচেয়ে দুরবস্থায় বিএনপি

৪৩-বছরে-সবচেয়ে-দুরবস্থায়-বিএনপি
এক যুগের বেশি ক্ষমতার বাইরে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল। এর কর্মীরা নিষ্ক্রিয়। নেতৃত্বের মধ্যে সমন্বয়ের অভাব দেখছেন অনেকে। সাংগঠনিকভাবে দলটি এখন অনেক দুর্বল। সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করার সামর্থ্য কমে আসছে।

বাংলাদেশে অন্যতম বড় দল বিএনপি ৪৩ বছরের মধ্যে সবচেয়ে খারাপ সময় বা সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে বলে মনে করছেন দলটির নেতারা।

এক যুগের বেশি সময় ধরে ক্ষমতার বাইরে থাকায় সারা দেশে দলটির নেতা-কর্মীদের একটা বড় অংশ নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়েছে। দলের অভ্যন্তরীণ কোন্দলও বেড়েই চলছে। সেই সাথে নেতৃত্ব সংকটে ভুগছে তারা।

১ সেপ্টেম্বর বিএনপির ৪৩তম প্রতিষ্ঠাবাষিকী। সেটিকে সামনে রেখে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে নেতারা হতাশা কাটিয়ে সাংগঠনিক ভিত্তি শক্তিশালী করার বিষয়ে জোর দেয়ার কথা বলেছেন। এক দফা আন্দোলনের ডাকও দিচ্ছেন।

তবে ফলপ্রসূ কিছুই দেখা যাচ্ছে না। এমনকি দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতেও তাদের তেমন কোনো পদক্ষেপ নেই।

খালেদা জিয়া দুর্নীতির মামলায় সাজা নিয়ে কারাবন্দি দেড় বছরেরও বেশি সময় ধরে। তাকে মুক্ত করতে বিএনপি কোনো আন্দোলন গড়ে তুলতে পারেনি।

দলটির নেতা-কর্মীদের অনেকের মাঝে এ নিয়ে তাদের নেতৃত্বের প্রতি ক্ষোভ রয়েছে। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান লন্ডনে নির্বাসনে রয়েছেন। দেশে তার বিরুদ্ধে যাবজ্জীবন সাজা হয়ে রয়েছে।

দলের নীতিনির্ধারণী ফোরাম জাতীয় স্থায়ী কমিটিতে যে সদস্যরা রয়েছেন, তারা তারেক রহমানের সাথে আলোচনা করেই সব সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন।

কিন্তু স্থায়ী কমিটির সদস্যদের কেউ দলের ভেতরে প্রশ্ন ওঠা বা সমালোচনার ভয়ে নিজে থেকে কোনো উদ্যোগ নেন না বলে তাদের মাঝে অভিযোগ রয়েছে।

এমন পরিস্থিতিতে দলটির অনেকে বলেন, স্থায়ী কমিটির সদস্যদের মধ্যে কোন্দল এবং দ্বন্দ্ব চলছে।

তৃণমূলের নেতারা বলছেন, তারা সরকারবিরোধী আন্দোলন কর্মসূচি চাইলেও নীতিনির্ধারক কমিটি সেটাকে বারবার দমিয়ে দিচ্ছে।

৪৩ বছরে সবচেয়ে দুরবস্থায় বিএনপি

২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি ৫ বছরের সাজা পেয়ে কারাগারে যান সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া। ছবি: সাইফুল ইসলাম

বারবার আন্দোলনের ডাক দিয়েও ব্যর্থ

পুনরায় ক্ষমতায় আসতে সরকারবিরোধী আন্দোলনের ডাক দিয়েও কোনো কর্মসূচি নিতে দেখা যায়নি দলটিকে। শেষ এক বছরে নানান সময় বিক্ষোভ কর্মসূচি দিয়েও দলটি ব্যর্থ হয়েছে। মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ থেকে একটি কর্মসূচি দেয়ার পর মাঠপর্যায়ে কাউকে দেখা যায়নি।

যুবদলের এক নেতা বলেন, ‘এই কর্মসূচিগুলো নামেমাত্র। অনেকে বছর খানেক আগের ছবি এনে সন্ধ্যাবেলায় পার্টি অফিসে জমা দিয়ে দেখায়, তারা মিছিল করেছে।

‘আন্দোলন, মিছিলে যাবেই বা কী করে? তারা তো কর্মীদের মূল্যায়ন করতে জানেন না। কর্মীরা কেন তাদের জন্য রিস্ক নেবেন?’

গত কয়েক মাসে দলের বিভিন্ন কর্মসূচিতে মহাসচিবসহ স্থায়ী কমিটির বিভিন্ন সদস্য, বিশেষ করে গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, বারবার এক দফা আন্দোলনে নামার আহবান জানান, কর্মীদের প্রস্তুত থাকার নির্দেশ দেন। তবে সেই আন্দোলনের কোনো দিনক্ষণ তিনি জানাতে পারেননি।

এ বিষয়ে স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় নিউজবাংলাকে বলেন, ‘রাজনীতির বড় শিক্ষা হলো ধৈর্য। ধৈর্য ধরেন, বিএনপি এখন ঐক্যবদ্ধ। শিগগির আমরা আন্দোলনে যাব জনগণকে সাথে নিয়ে। এর বিকল্প আসলে নেই।’

আগে কি বিএনপি ঐক্যবদ্ধ ছিল না– এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘সবকিছুতেই ভালো-মন্দ থাকে। দলে থেকেও দলের মধ্যে কোন্দল লাগানোর চেষ্টা থাকে। এরা ষড়যন্ত্রকারী। এই আপস অ্যান্ড ডাউনগুলো কাটিয়ে উঠে আমাদের এখন একটাই লক্ষ্য: এক দফা আন্দোলন।’

৪৩ বছরে সবচেয়ে দুরবস্থায় বিএনপি

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে বিএনপি জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নামে নতুন জোট গড়ে তোলে, যার প্রধান নেতা হিসেবে আবির্ভূত হন ড. কামাল হোসেন। তবে এই জোট এখন নিষ্ক্রিয়।

তবে দলটির স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য জমির উদ্দিন সরকার দলে এই কোন্দলের কথা তুলে ধরে বলেন, ‘আমাদের তো কিছু অপূর্ণতা আছেই। আমরা অকেজো হয়ে গেছি। স্বৈরাচার সরকার আমাদের ঘাড়ের ওপর চেপে আছে, আবার আমাদেরও ঐক্যবদ্ধ কোনো এনার্জি নেই। এইসব মিলিয়েই কিন্তু আমরা আজ স্থবির হয়ে পড়ছি।

‘তবে দ্রুত এই অবস্থা থেকে উত্তরণ পেতে হলে আন্দোলনে যেতে হবে। কারও সিদ্ধান্তের জন্য বসে থাকা যাবে না। তৃণমূল থেকে শুরু করতে হবে এই বিদ্রোহ।’

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরেক স্থায়ী কমিটির সদস্য নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বর্ষীয়ান আমরা এই রাজনীতিতে। আমাদের অভিজ্ঞতা এখন আর কেউ প্রায়োরিটি লিস্টেই রাখে না। ভুল সিদ্ধান্তে দলের আজ এই অবস্থা। আমরা নামেমাত্র পদে বহাল। সিদ্ধান্ত নিতে মতামত নেয়া প্রয়োজন, সেটা সবার। একতরফা সিদ্ধান্তের জন্য অপেক্ষা করলে, যে যারমতো করে সিদ্ধান্ত নিলে রাজনৈতিকভাবে অগ্রসর হওয়া যাবে না। আমাদের সম্মান আর মতাদর্শের জায়গাটাতে আরও কাজ করতে হবে।’

জোট নিয়েও জটিলতায় বিএনপি

গত নির্বাচনের সময় বিএনপি তাদের ২০ দলীয় জোটের বাইরে আরেকটি জোট করেছিল, জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। তবে সেই জোট এখন নামেমাত্র। একে একে অনেক দলই এই জোট থেকে বেরিয়ে গেছে।

বিএনপিও বিব্রত এই জোট নিয়ে। বলছেন, জোট এখন তাদের কাছে গলার কাঁটার মতো।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএনপির এক ভাইস চেয়ারম্যান বলেন, ‘জোট করা হয়েছিল নির্বাচনের স্বার্থে। তবে জোটের দলগুলো বিএনপিকে সহযোগিতার চেয়ে বরং বিপদেই ফেলছে বেশি। না এখন তাদের গিলতে পারা যাচ্ছে, না উগড়ানো যাচ্ছে।’

বিএনপির নেতৃত্বের প্রতি মাঠ পর্যায়ের ক্ষোভ

লম্বা সময় ক্ষমতার বাইরে থাকা বিএনপির নেতৃত্বের বিভিন্ন সিদ্ধান্ত দলের নেতা-কর্মীদের মাঝে বারবার হতাশা সৃষ্টি করেছে বলে তাদের অনেকে বলেছেন।

দলের নেতারা মাঠ পর্যায়ের নেতা-কর্মীদের সক্রিয় করে দল পুনর্গঠনের উদ্যোগের কথা বলে আসছেন। কিন্তু সেই উদ্যোগে তেমন কোনো অগ্রগতি বা সাফল্য দেখছেন না বিএনপির মাঠ পর্যায়ের নেতা-কর্মীদের অনেকে।

২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচন প্রতিহত করার ঘোষণা দিয়ে দলটি ব্যর্থ হয়েছিল।

সর্বশেষ ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনের পর বিএনপির কৌশল নিয়ে দলের ভিতরে অনেক প্রশ্ন ওঠে। সেই নির্বাচনে সংসদকে অবৈধ বলে অভিহিত করার পরও বিএনপি তাতে যোগ দিয়েছে।

এসব কৌশলের কারণে মাঠ পর্যায়ে দলের নেতা-কর্মীদের একটা বড় অংশ হতাশা থেকে নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়েছেন বলে তাদের অনেকে বলেছেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক তৃণমূল কর্মী নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমাদের নেত্রীকে মুক্ত করায় কোনো আন্দোলন নেই। সেখানে এই রাজনীতি করার মানে নেই। তারা ভয় পান, তারা নিজেদের মধ্যে ঝগড়া-বিবাদই শেষ করতে পারছেন না। তারা প্রত্যেকেই বস হতে চান। কেউ কারও কথা শুনতে নারাজ। এভাবে একটা দল থাকে না। নামেমাত্র দল নিয়ে রাজনীতির কিছু নেই।’

এ বিষয়ে দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এগুলো হলো দলের মধ্যে এক একটা কীট। এদের কাজই দলকে নিয়ে সমালোচনা করা। আমরা আমাদের গতিতে এগিয়ে যাচ্ছি। আমাদের মধ্যেকার ঐক্য দেখে বিএনপিকে সরকার ভয় পায়। সামনে আরও পাবে। আন্দোলনের বিকল্প নেই।’

আরও পড়ুন:
জিয়ার কবর দে‌খেও আ.লীগ ভয় পায়: সালাম
২০২০ সালে বিএনপির খরচ পৌনে ২ কোটি টাকা

মন্তব্য

আরও পড়ুন

বাংলাদেশ
Boat candidate will face the challenge of independent in more than half a hundred seats

অর্ধশতাধিক আসনে স্বতন্ত্র’র চ্যালেঞ্জে পড়বেন নৌকার প্রার্থী

অর্ধশতাধিক আসনে স্বতন্ত্র’র চ্যালেঞ্জে পড়বেন নৌকার প্রার্থী গ্রাফিক্স: নিউজবাংলা
রাজনৈতিক বিশ্লেষক মহিউদ্দিন আহমদ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বিভিন্ন আসনে আওয়ামী লীগের তৃণমূলের অনেক নেতাই জনপ্রিয়। তারা পেশি, অর্থ বা অন্য শক্তিতে কুলাতে না পেরে দলের মনোনয়ন হারান। দল স্বতন্ত্র প্রার্থিতার সুযোগ রাখায় তারা এবার নিজেদের যোগ্যতা প্রমাণের সুযোগ পাবেন। পাশাপাশি কেন্দ্রকে বার্তাও দিতে পারবেন যে তিনিই মনোনয়ন পাওয়ার যোগ্য।’

নির্বাচন জমিয়ে তুলতে দল থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার সুযোগ রেখেছে আওয়ামী লীগ। দলটির সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্বতন্ত্র হিসেবে নির্বাচন করতে নেতাকর্মীদের উৎসাহ দিয়েছেন। আর দলীয় প্রধানের এ সিদ্ধান্তকে লুফে নিয়েছেন নির্বাচন করতে ইচ্ছুক দলের নেতাকর্মীরা।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে অর্ধশতাধিক আসনে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকে মনোনয়নপ্রাপ্তরা স্বতন্ত্র প্রার্থীদের কাছে ধরাশায়ী হতে পারেন।

পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ দলীয় প্রায় সাড়ে চারশ’ জন স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করার জন্য নির্বাচন কমিশনে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। তারা দলের সভাপতির এমন নির্দেশনাকে ভোটের মাঠে নিজেদের সামর্থ্য প্রমাণের সুযোগ হিসেবে দেখছেন।

স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে রংপুর-৫ আসনে মনোনয়নপত্র দাখিলকারী জাকির হোসেন সরকার নিউজবাংলাকে বলেন, ‘দল অবশ্যই ত্যাগী-নিবেদিতদের মূল্যায়ন করে। কিন্তু অনেক সময় কৌশলগত কারণে মূল প্রার্থীকে মনোনয়ন দিতে পারে না। তারপরও দলের আদেশ শিরোধার্য মেনে নৌকাকে জেতাতে সর্বোচ্চ ঢেলে দিয়ে কাজ করে এসেছি। কিন্তু এবার সুযোগ এসেছে নিজের সক্ষমতা প্রমাণের। তাই স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’

এবার আওয়ামী লীগের তিন হাজার ৩৬২ জন মনোনয়ন প্রত্যাশীর বিপরীতে নৌকার টিকেট পেয়েছেন ২৯৮ জন। বর্তমান সংসদ সদস্যদের মধ্যে বাদ পড়েছেন ৭১ জন, যাদের মধ্যে ৬৩ জনই স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন। এছাড়াও মনোনয়নবঞ্চিত হেভিওয়েট নেতাদের অনেকেই এবার স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।

রাজনৈতিক বিশ্লেষক মহিউদ্দিন আহমদ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বিভিন্ন আসনে আওয়ামী লীগের তৃণমূলের অনেক নেতাই জনপ্রিয়। তারা পেশি, অর্থ বা অন্য শক্তিতে কুলাতে না পেরে দলের মনোনয়ন হারান। দল স্বতন্ত্র প্রার্থিতার সুযোগ রাখায় তারা এবার নিজেদের যোগ্যতা প্রমাণের সুযোগ পাবেন। পাশাপাশি কেন্দ্রকে বার্তাও দিতে পারবেন যে তিনিই মনোনয়ন পাওয়ার যোগ্য।’

জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে প্রাপ্ত তথ্যে দেখা যায়, ঢাকা-২ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দাখিল করেছেন কেরানীগঞ্জ মডেল থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং উপজেলা চেয়ারম্যান শাহীন আহমেদ। আর এখানে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনীত প্রার্থী হলেন দলটির সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও বর্তমান এমপি অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম।

জানা যায়, শাহীন আহমেদ পেশি, টাকা এমনকি স্থানীয় সাংগঠনিক সক্ষমতায় শক্তিশালী। তিনি কামরুলের সঙ্গে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই করবেন।

অন্যদিকে ঢাকা-১৯ আসনে ত্রাণ প্রতিমন্ত্রীর বিপরীতে নির্বাচন করার ঘোষণা দিয়েছেন তালুকদার তৌহিদ জং মুরাদ। তিনি এই আসনের সাবেক সংসদ সদস্য এবং স্থানীয়ভাবে অনেক শক্তিশালী।

ঢাকা-৫ আসনে মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করার ঘোষণা দিয়েছেন ওই আসনের চারবারের সংসদ সদস্য প্রয়াত হাবিবুর রহমান মোল্লার বড় ছেলে মশিউর রহমান মোল্লা সজল।

একইভাবে আওয়ামী লীগের ঘাঁটি বলে পরিচিত ফরিদপুর অঞ্চল ফরিদপুর-৪ আসনে দলের মনোনয়ন পেয়েছেন সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য এবং নির্বাচন পরিচালনা কমিটির কো-চেয়ারম্যান কাজী জাফর উল্লাহ। বিপরীতে স্বতন্ত্র প্রার্থিতা ঘোষণা করেছেন যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য নিক্সন চৌধুরী। যিনি এর আগের দুই নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে জাফর উল্লাহকে পরাজিত করেছিলেন।

ফরিদপুর-৩ আসনে নৌকার প্রার্থী শামীম হক। আর স্বতন্ত্র প্রার্থী হচ্ছেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা হা-মীম গ্রুপের মালিক এ কে আজাদ, যার সঙ্গে রয়েছে দলের একাংশ।

ফরিদপুর-১ আসনে দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আব্দুর রহমান মনোনয়ন পেলেও চ্যালেঞ্জে পড়বেন সাংবাদিক আরিফুর রহমান দোলনের কাছে। তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দাখিল করেছেন।

ফরিদপুর-২ আসনে মনোনয়ন পেয়েছেন প্রয়াত আওয়ামী লীগ নেত্রী সাজেদা চৌধুরীর ছেলে শাহদাব আকবর। সেখানে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করার কথা জানিয়েছেন নগরকান্দা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জামাল হোসেন, যিনি স্থানীয়ভাবে বেশ জনপ্রিয়।

জামালপুর-৪ আসনে আলোচিত ও সমালোচিত সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসানও মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র হিসেবে নির্বাচন করার ঘোষণা দিয়েছেন।

হবিগঞ্জ-৪ (চুনারুঘাট-মাধবপুর) আসনে বেসামরিক বিমান চলাচল প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলীর বিপরীতে ভোটে দাঁড়াচ্ছেন জনপ্রিয় আইনজীবী ব্যারিস্টার সায়েদুল হক সুমন। নৌকা চেয়ে না পেয়ে এখানে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতাঘোষণা দিয়েছেন তিনি।

কুমিল্লা-৬ আসনে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য আঞ্জুম সুলতানা। এ আসন থেকে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আ ক ম বাহাউদ্দিন।

যশোর-৩ (সদর) আসনে বর্তমান সংসদ সদস্য কাজী নাবিল আহমেদের বিপক্ষে স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন যশোর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শহীদুল ইসলাম।

রংপুর-৬ আসনে আবারও নৌকা প্রতীক পেয়েছেন বর্তমান সংসদ সদস্য ও জাতীয় সংসদের স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী। নৌকা না পেয়ে এখান থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করছেন জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও ব্যবসায়ী সিরাজুল ইসলাম।

বরিশাল-৫ আসনে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন বর্তমান সংসদ সদস্য ও পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক। স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে তার বিরুদ্ধে নির্বাচন করার ঘোষণা দিয়েছেন বরিশাল সিটি করপোরেশনের সদ্য সাবেক মেয়র ও নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ।

যশোর-২ (চৌগাছা-ঝিকরগাছা) আসনে এবার প্রথমবারের মতো মনোনয়ন পেয়েছেন চিকিৎসক তৌহিদুজ্জামান তুহিন। তিনি আওয়ামী লীগের বর্ষীয়াণ নেতা তোফায়েল আহমেদের জামাতা হলেও রাজনীতি করেননি কখনোই। এ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে লড়বেন সাবেক সংসদ সদস্য মনিরুল ইসলাম মনির।

চাঁদপুর-৪ আসনে আবারও মনোনয়ন পেয়েছেন বর্তমান সংসদ সদস্য শফিকুর রহমান। এখানে স্বতন্ত্র প্রার্থী হচ্ছেন সাবেক সংসদ সদস্য শামসুল হক ভূঁইয়া।

জানা গেছে, চট্টগ্রাম-১২ আসনে সংসদের হুইপ সামশুল হক চৌধুরীর বদলে নৌকার মনোনয়ন পেয়েছেন চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরী। তবে মাঠ ছাড়ছেন না সামশুল হক। স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে নির্বাচনে লড়বেন তিনি।

সিলেট-১ সদর আসনে নৌকার মনোনয়ন পেয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন। এই আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র তুলেছেন আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ।

কুমিল্লা-১ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য মেজর জেনারেল (অব.) সুবিদ আলী ভূঁইয়া। তার পরিবর্তে এখানে মনোনয়ন পেয়েছেন আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক আব্দুস সবুর। মনোনয়নবঞ্চিত হয়ে সুবিদ আলী স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করার ঘোষণা দিয়েছেন।

সুনামগঞ্জ-১ আসন থেকে গত তিন নির্বাচনে জয় পাওয়া আওয়ামী লীগের মোয়াজ্জেম হোসেন রতনকে এবার মনোনয়ন দেয়া হয়নি। এখানে নৌকা প্রতীক পেয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক রনজিত চন্দ্র সরকার। রতন এখানে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করবেন।

এছাড়াও আওয়ামী লীগের মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করার ঘোষণা দিয়েছেন বর্তমান সংসদের উল্লেখযোগ্য সংখ্যক সদস্য।

তাদের মধ্যে পঞ্চগড়-১ আসনে মাজাহারুল হক প্রধান, গাইবান্ধা-৪ আসনে মনোয়ার হোসেন চৌধুরী, নওগাঁ-৪ আসনে এমাজ উদ্দিন প্রামাণিক, রাজশাহী-৩ আসনে আয়েন উদ্দিন, রাজশাহী-৪ আসনে এনামুল হক, ঝিনাইদহ-৩ আসনে শফিকুল আজম খান, যশোর-৪ আসনে রণজিৎ কুমার রায়, সাতক্ষীরা-২ আসনে মীর মোশতাক আহমেদ রবি, বরিশাল-৪ আসনে পঙ্কজ নাথ, টাঙ্গাইল-৫ আসনে সানোয়ার হোসেন, গাজীপুর-৩ আসনে মোহাম্মদ ইকবাল হোসেন, সুনামগঞ্জ-২ আসনে জয়া সেনগুপ্ত, হবিগঞ্জ-১ আসনে গাজী মোহাম্মদ শাহনেওয়াজ, চট্টগ্রাম-৪ আসনে দিদারুল আলম, চট্টগ্রাম-১২ আসনে শামসুল হক চৌধুরী এবং কক্সবাজার-১ আসনে জাফর আলম উল্লেখযোগ্য।

আরও পড়ুন:
নির্বাচনি আচরণবিধি নিয়ে বিশিষ্টজনদের বক্তব্য মনগড়া: ইসি
সিলেটে স্বতন্ত্র প্রার্থীর ‘যন্ত্রণামুক্ত’ ৩ মন্ত্রী, ব্যতিক্রম মোমেন
সর্বোচ্চ মনোনয়নপত্র নৌকা লাঙ্গলের সর্বনিম্ন হারিকেনের

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Sheikh Hasina has returned the country to constitutionalism
বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে স্পিকার শিরীন শারমিন

দেশকে সাংবিধানিক ধারায় ফিরিয়েছেন শেখ হাসিনা

দেশকে সাংবিধানিক ধারায় ফিরিয়েছেন শেখ হাসিনা রাজধানীর লে মেরিডিয়েন হোটেলে শনিবার ‘শেখ হাসিনা: দ্য মেকিং অফ অ্যান এক্সট্রাঅর্ডিনারি সাউথ এশিয়ান লিডার’ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরিন শারমিন চৌধুরী। ছবি: পিয়াস বিশ্বাস
বইয়ের লেখক ডা. আবুল হাসনাত বলেন, ‘এটি শুধু একটি বই নয়। একজন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার জীবনে কী কী অধ্যায় পার করে আজকের জায়গায় এসেছেন, তার সবই জানা যাবে বইটি পড়লে। ১৯৭৫-পরবর্তী সময়ে তিনি নিজের শোকাহত জীবনকে কীভাবে সঙ্গে নিয়ে এগিয়ে গেছেন এবং নিজেই নিজেকে কীভাবে তৈরি করেছেন- সব কথা আছে বইটিতে।’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সারা বিশ্বে নন্দিত একজন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব এবং একজন সাহসী রাজনৈতিক নেতা বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরিন শারমিন চৌধুরী।

শনিবার বিকেলে রাজধানীর লে মেরিডিয়েন হোটেলে বঙ্গবন্ধু-কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে বিশিষ্ট লেখক ও রাজনৈতিক গবেষক ডা. আবুল হাসনাত মিল্টনের লেখা ‘শেখ হাসিনা: দ্য মেকিং অফ অ্যান এক্সট্রাঅর্ডিনারি সাউথ এশিয়ান লিডার’ (Sheikh Hasina: The making of an Extraordinary South Asian Leader) বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

অনুষ্ঠানে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী আমন্ত্রিত অতিথিদের নিয়ে বইটির মোড়ক উন্মোচন করেন। অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর লেফটেন্যান্ট জেনারেল সাইফুল আলম, কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটি অফ বাংলাদেশের ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান ড. চৌধুরী নাফিজ সরাফাত, মোহাম্মদ আলী আরাফাত এমপি প্রমুখ।

দেশকে সাংবিধানিক ধারায় ফিরিয়েছেন শেখ হাসিনা
অনুষ্ঠানে স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী, গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার, লেফটেন্যান্ট জেনারেল সাইফুল আলম, কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটি অফ বাংলাদেশের ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান ড. চৌধুরী নাফিজ সরাফাত ও মোহাম্মদ আলী আরাফাত এমপিসহ অন্য অনেকে উপস্থিত ছিলেন। ছবি: নিউজবাংলা

ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেন, ‘আজকের এই অনুষ্ঠানে বইটির মোড়ক উন্মোচনের বিরল সুযোগ পেয়ে আমরা সবাই বেশ সম্মানিত। কেননা যার জীবনালেখ্য নিয়ে বইটি লেখা হয়েছে, তিনি একজন অসাধারণ ও অমূল্য মানুষ। তিনি আর কেউ নন; আমাদের সবার প্রিয়, অতি পরিচিত, অতি আপন, দেশের মানুষের মধ্যমণি, নন্দিত প্রধানমন্ত্রী, বঙ্গবন্ধু-কন্যা শেখ হাসিনা। তিনি আমাদের দেশ পরিচালনার একজন যোগ্য ও সাহসী রাজনৈতিক নেতা। তিনি শুধু বাংলাদেশেরই অসাধারণ একজন নারী নন, তিনি অত্যন্ত সাহসী রাজনীতিবিদ। পাশাপাশি তার দীর্ঘ রাজনৈতিক সংগ্রামের মধ্য দিয়ে আজ সমগ্র বিশ্বনেতার কাতারে নিজের অবস্থান সুসংহত করেছেন।’

তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ সারা বিশ্বে তার সফল কর্মের জন্য নন্দিত। আমরা আজকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে শুধু জাতীয়ভাবে বিবেচনা করব না। তিনি আজ বিশ্ব প্রেক্ষাপটে বিচরণ করছেন তার সাহসী সব সিদ্ধান্তের কারণে।’

স্পিকার বলেন, ‘এই বইটিতে লেখক ডা. আবুল হাসনাত মিল্টন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছোটবেলা থেকে কীভাবে ধাপে ধাপে তার রাজনৈতিক ক্যারিয়ার অতিবাহিত করেছেন এবং কীভাবে একজন সফল রাজনৈতিক নেতা হয়েছেন- তার সঠিক তথ্য দারুণভাবে তুলে ধরা হয়েছে। ১৯৭৫ সালের মতো একটি ঘটনা যার জীবনে ঘটেছে, শুধু তিনিই বলতে পারবেন তার প্রতি নির্মমতা কতটা গভীর এবং কতটা বেদনাদায়ক। তারপরও শেখ হাসিনা এগিয়ে গেছেন এবং দেশের সাধারণ মানুষের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন।’

দেশকে সাংবিধানিক ধারায় ফিরিয়েছেন শেখ হাসিনা

বঙ্গবন্ধুর মতোই বাংলার মানুষের প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভালোবাসার কথা উল্লেখ করে স্পিকার বলেন, ‘দেশের মানুষের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভালোবাসা অপার। তিনি ’৭৫-এর সেই বেদনাদায়ক অধ্যায়কে বুকে ধারণ করে, সেই নির্মমতাকে সঙ্গী করে দেশের হতদরিদ্র মানুষের জন্য তার বাবার অপূর্ণ স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিতেই জীবন উৎসর্গ করেছেন। এটিই তার জীবনের মূল লক্ষ্য। যে স্বপ্ন ছিল জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের, তার সবই বাস্তবে রূপ দিচ্ছেন তিনি।’

তিনি বলেন, ‘দেশের মানুষের জন্য নিজের জীবন উৎসর্গ করবেন বলেই ১৯৮১ সালে শেখ হাসিনা দেশে আসেন এবং গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে কাজ শুরু করেন। দেশের তৃণমূল পর্যায় থেকে তিনি এ বাংলায় রাজনৈতিক সংগ্রাম করেছেন এবং আস্তে আস্তে বাংলাদেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে এনেছেন। মানুষের ভোটের অধিকার, ভাতের অধিকার প্রতিষ্ঠায় তিনি কাজ করেছেন এবং পরবর্তীতে দেশকে সাংবিধানিক ধারায় ফিরিয়ে এনেছেন। এই যে মহাকর্মযজ্ঞ এবং দেশের মানুষের জন্য নিবেদিতপ্রাণ একজন মানুষ, তার সম্পর্কে জানার জন্য অবশ্যই এমন সব বই দরকার।’

শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেন, ‘এমন একটি বই সত্যিই ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে জাতীয় চেতনায় এগিয়ে যাওয়ার জন্য বিশেষভাবে ভূমিকা রাখবে। শুধু তাই নয়, ডা. আবুল হাসনাত মিল্টন এ বইটির আগে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে যে বইটি লিখেছেন, সেটির জন্যও তাকে বিশেষভাবে ধন্যবাদ জানাই। আমি বলব- দুটি বই-ই আমাদের জন্য অমূল্য রচনা। ইংরেজি ভাষাভাষী মানুষের জন্য বইগুলো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটি সম্পদ হিসেবে আমাদের কাছে থাকবে বলে আমি বিশ্বাস করি।’

দেশকে সাংবিধানিক ধারায় ফিরিয়েছেন শেখ হাসিনা

অনুষ্ঠানে বইটি লেখার স্মৃতিচারণ করে ডা. আবুল হাসনাত মিল্টন বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে লেখা এই বইটির আগে আমি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে একটি বই লেখার তাগিদ অনুভব করি। করোনাকালে আমার একজন পরিচিত মানুষ ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেন যে, তার বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষককে বঙ্গবন্ধুর ওপর একটি বই উপহার দেবেন। কিন্তু কোনোভাবেই জাতির পিতার ওপর লেখা একটি ভালো ইংরেজি বই পাওয়া যাচ্ছে না। তারপর আমি শেখ হাসিনার কাছে বঙ্গবন্ধুর ওপর একটি বই লেখার অনুমতি চাই। সেটি আমি জাতীয় সংসদের স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর মাধ্যমে জানাই। এরপর নানাভাবে অনেকের সহযোগিতা পেয়ে বইটি লিখে ফেলি। ওই বই লিখতে গিয়ে আমি শেখ হাসিনাকে অন্যভাবে আবিষ্কার করি। তখনই আমি তার ওপর আরেকটি বই লেখার আগ্রহ প্রকাশ করি। সেটিও আমি যথারীতি জাতীয় সংসদের স্পিকার শিরীন শারমিনকে জানাই।

‘তখন প্রধানমন্ত্রী জানান, তাকে নিয়ে বই লেখা লাগবে না; তার বাবাকে নিয়ে আরও কাজ যেন করি। কিন্তু ওই বইটি লিখতে গিয়ে আমার কাছে প্রধানমন্ত্রীকে এত ঘটনাবহুল একজন মানুষ মনে হয়েছে, যা আমাকে বেশ আবেগতাড়িত করে। তাই আমি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে একটি বই লেখার আগ্রহ প্রকাশ করি। কারণ আমার কাছে মনে হয়েছে, শুধু বাংলাদেশ নয়, দক্ষিণ এশিয়ার একজন নেতা হিসেবে তিনি কাজ করছেন। এটি সারা বিশ্বকে জানাতে হবে।’

দেশকে সাংবিধানিক ধারায় ফিরিয়েছেন শেখ হাসিনা
বইটির ওপর আলোকপাত করে বক্তব্য দেন লেখক ডা. আবুল হাসনাত মিল্টন। ছবি: নিউজবাংলা

তিনি বলেন, ‘বইটি লিখতে গিয়ে আমি শেখ হাসিনার বেশ সান্নিধ্য পেয়েছি। তিনি আমাকে বড় বোনের মতো স্নেহ দিয়েছেন, ছায়াও দিয়েছেন। আন্তর্জাতিক মানের একটি বই করার জন্য যা যা প্রয়োজন আমি তাই করেছি।’

‘এটি শুধু একটি বই নয়। একজন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার জীবনে কী কী অধ্যায় পার করে আজকের জায়গায় এসেছেন, তার সবই জানা যাবে বইটি পড়লে। ১৯৭৫-এর পরবর্তী সময়ে একজন শেখ হাসিনা শুধু শোক নিরসনের মধ্য দিয়ে যাননি। তিনি সেই জীবনকে কীভাবে সঙ্গে নিয়ে এগিয়ে গেছেন এবং নিজেই নিজেকে কীভাবে তৈরি করেছেন- সব কথা আছে বইটিতে।

‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শৈশব-কৈশোর থেকে শুরু করে আজকের দিনটি পর্যন্ত তার সমগ্র জীবন বইটিতে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। শুধু তাই নয়- একজন মানুষ হিসেবে শেখ হাসিনা কেমন, একজন মা হিসেবে, নেতা হিসেবে, এমনকি একজন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তিনি কেমন- তার সবই আছে বইটিতে।’

দেশকে সাংবিধানিক ধারায় ফিরিয়েছেন শেখ হাসিনা

‘Sheikh Hasina: The making of an Extraordinary South Asian Leader’ বই হাতে লেখকসহ আমন্ত্রিত অতিথিবৃন্দ। ছবি: নিউজবাংলা

ডা. মিল্টন বলেন, ‘তাই আমার প্রত্যাশা- বইটি দেশ এবং দেশের বাইরের সব মানুষের কাছে পৌঁছুক। এত ঘটনাবহুল ও বেদনাবহুল একজন মানুষের রাজনৈতিক সংগ্রামটা কেমন- তা জানতে হলে বইটি পড়তে হবে।’

‘যে শেখ হাসিনাকে চেনেনি, শেখ হাসিনাকে জানেনি, সে আসলে হতভাগা। শেখ হাসিনাকে জানা মানেই আজকের বাংলাদেশ এবং আজকের রাজনীতিকে চমৎকারভাবে অধ্যয়ন করা।’

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Information Minister calls for international financing system to deal with climate change

জলবায়ু অভিঘাত মোকাবিলায় আন্তর্জাতিক অর্থায়ন ব্যবস্থার আহ্বান তথ্যমন্ত্রীর

জলবায়ু অভিঘাত মোকাবিলায় আন্তর্জাতিক অর্থায়ন ব্যবস্থার আহ্বান তথ্যমন্ত্রীর শনিবার দুবাইতে কপ-২৮ সম্মেলনের সাইডলাইনে উচ্চপর্যায়ের এক অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ। ছবি: বাসস
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, সিভিএফ-ভি ২০ ফোরামে দুই মেয়াদে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে জলবায়ু ঝুঁকিতে থাকা দেশগুলো সহনীয়তা ও সক্ষমতায় সমৃদ্ধ হয়েছে। সে সময়ে বৈশ্বিক জয়েন্ট মাল্টি ডোনার ফান্ড গঠন এবং দেশে ‘মুজিব ক্লাইমেট প্রসপারিটি প্ল্যান’ প্রণীত হয়েছে।

জলবায়ু অভিঘাত মোকাবিলায় সমন্বিত অন্তর্ভুক্তিমূলক আন্তর্জাতিক অর্থায়ন ব্যবস্থা প্রণয়নের আহ্বান জানিয়েছেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং কপ-২৮ বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলনে বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের প্রধান ড. হাছান মাহমুদ। সূত্র: বাসস

ঢাকায় প্রাপ্ত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, শনিবার দুপুরে দুবাইতে কপ-২৮ সম্মেলনের সাইডলাইনে ‘রাইজিং উইথ দ্য টাইড: ট্র্যাকিং রিফর্মস ইন ইন্টারন্যাশনাল ফিন্যান্সিয়াল আর্কিটেকচার ফর এক্সিলারেটেড ডেভেলপমেন্ট-পজিটিভ ক্লাইমেট অ্যাকশন’ শীর্ষক উচ্চপর্যায়ের অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন তথ্যমন্ত্রী। এ সময় তিনি পৃথিবীকে মানুষের বাসযোগ্যভাবে বাঁচিয়ে রাখার প্রয়োজন উল্লেখ করে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে এই আহ্বান জানান।

ক্লাইমেট ভালনারেবল ফোরাম এবং ২০টি ভালনারেবল দেশের জোট সিভিএফ-ভি ২০-এর বর্তমান চেয়ারম্যান ঘানার প্রেসিডেন্ট নানা আকুফো আডো অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন।

অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন ফোরামের পরবর্তী চেয়ারম্যান বার্বাডোসের প্রধানমন্ত্রী মিয়া মোটলি, শ্রীলঙ্কার রাষ্ট্রপতি রনিল বিক্রমাসিংহে, ফোরামের থিম্যাটিক অ্যাম্বাসেডর সায়মা ওয়াজেদ এবং প্রথম মহাসচিব মোহাম্মদ নাশিদ।

ঘানার প্রেসিডেন্ট এই ফোরামে শেখ হাসিনার সভাপতিত্বের দুই মেয়াদে জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর পক্ষে বাংলাদেশের নেতৃত্বের ভূয়সী প্রশংসা করেন।

ড. হাছান মাহমুদ বলেন, “সিভিএফ-ভি ২০ ফোরামে দুই মেয়াদে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে জলবায়ু ঝুঁকিতে থাকা দেশগুলো সহনীয়তা ও সক্ষমতায় সমৃদ্ধ হয়েছে। সে সময়ে বৈশ্বিক জয়েন্ট মাল্টি ডোনার ফান্ড গঠন এবং দেশে ‘মুজিব ক্লাইমেট প্রসপারিটি প্ল্যান’ প্রণীত হয়েছে।”

জলবায়ু অর্থায়ন বৃদ্ধির যৌক্তিকতা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘মুজিব ক্লাইমেট প্রসপারিটি প্ল্যানের অধীনেই প্রতি বছর দেশের প্রয়োজন ৮ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলারের বেশি।

‘বাংলাদেশ উচ্চ কার্বন নিঃসরণকারী দেশ নয়, বরং এর অসহায় শিকার। তবু বঙ্গবন্ধু-কন্যার পরিকল্পনামাফিক ২০৪১ সালের মধ্যে আমাদের দেশ ৪০ শতাংশ সবুজ শক্তি ব্যবহারের দিকে এগিয়ে চলেছে।’

মন্ত্রী হাছান মাহমুদ পরে কপ-২৮ প্রেসিডেন্সি গোলটেবিল বৈঠকে ‘অ্যাক্সিলারেটিং ওয়াটার অ্যান্ড ক্লাইমেট অ্যাকশন’ বৈঠকে অংশ নেন।

আরও পড়ুন:
কপ-২৮ সম্মেলনে অংশ নিতে আমিরাতে তথ্যমন্ত্রী
বিএনপি নামক কারাগারে বন্দি তাদের নেতারা: তথ্যমন্ত্রী
পদধারী স্বতন্ত্র প্রার্থীদের দলীয় শৃঙ্খলা মাথায় রাখতে হবে: তথ্যমন্ত্রী
আমরা চাই বিএনপি টেরোরিস্ট কর্মকাণ্ড থেকে বেরিয়ে আসুক: তথ্যমন্ত্রী
বিএনপি দেশের মানুষের প্রতিপক্ষ হয়ে দাঁড়িয়েছে: তথ্যমন্ত্রী

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Mayas son Dipu Chowdhury passed away

মায়ার ছেলে দীপু চৌধুরী মারা গেছেন

মায়ার ছেলে দীপু চৌধুরী মারা গেছেন সাজেদুল হোসেন চৌধুরী দীপু। ছবি: সংগৃহীত
দীপু চৌধুরী হৃদরোগে আক্রান্ত হলে মঙ্গলবার রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে তাকে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।

আওয়ামী লীগ সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়ার বড় ছেলে সাজেদুল হোসেন চৌধুরী দীপু হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। তিনি বাবা-মা, ছোট ভাই, স্ত্রী, দুই ছেলে ও এক মেয়েসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।

শনিবার সন্ধ্যা ৫টা ১৭ মিনিটে রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। নিউজবাংলাকে এ খবর জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক সহিদুল ইসলাম মিলন।

তিনি জানান, দীপু চৌধুরীর সিভিয়ার হার্ট অ্যাটাক হলে মঙ্গলবার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

দীপুর মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি নুরুল আমিন রুহুল ও সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির।

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেয়ার জন্য ১৯ নভেম্বর রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে বাবার সঙ্গে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছিলেন দীপু। অবশ্য আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন পেয়েছেন তার বাবা মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
I became a candidate to vote for myself

‘নিজের ভোট নিজেকে দিতেই প্রার্থী হয়েছি’

‘নিজের ভোট নিজেকে দিতেই প্রার্থী হয়েছি’ মানিকগঞ্জ-১ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন জমা দেয়া আব্দুল আলী বেপারী। ছবি: নিউজবাংলা
আব্দুল আলী বেপারী বলেন, ‘আসলে মনের মতো প্রার্থী না থাকায় আমি প্রার্থী হয়েছি। আমার ভোট আমাকে দিতে পারলেই আমার আত্মতৃপ্তি। মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছি, যাচাই ঠিকঠাক থাকলে আমি স্বতন্ত্র নির্বাচন করবই। কোটি কোটি টাকা দিলেও আমি সরে দাঁড়াবো না। কারণ নির্বাচন আমার কাছে ক্যান্সারের মতো হয়ে গেছে।’

টানা তিনবার নির্বাচন করে একবারও ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান নির্বাচিত হতে পারেননি মানিকগঞ্জের ঘিওরের ৬০ বছরের মো. আব্দুল আলী বেপারী। অথচ দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মানিকগঞ্জ-১ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে এমপি নির্বাচনে লড়বেন তিনি।

হলফনামা থেকে জানা যায়, মানিকগঞ্জ-১ আসনের এ এমপি প্রার্থী ঘিওর উপজেলার বেড়াডাংগা এলাকার কিয়ামুদ্দিনের ছেলে। পেশায় তিনি একজন কৃষক। কৃষিকাজের মাধ্যমে তার বার্ষিক আয় ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা এবং তার কাছে নগদ ২ লাখ টাকা ও এক ভরি স্বর্ণালঙ্কার রয়েছে।

আব্দুল আলী বেপারীর স্ত্রী গৃহিনী। সংসারজীবনে তাদের ৩ ছেলে ও ২ মেয়ে রয়েছে। মেয়েদের বিয়ে হয়ে গেছে আর ছেলেরাও চাকরি করছেন। আব্দুল বেপারীর শিক্ষাগত সার্টিফিকেট না থাকলেও তিনি স্বশিক্ষিত।

আব্দুল আলী বেপারী জানান, ইউপি নির্বাচনে মনের মতো প্রার্থী না পেয়ে তিনি ২০১১, ২০১৬ ও ২০২১ সালে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করেন। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও মনের মতো প্রার্থী পাননি তিনি। ফলে মানিকগঞ্জ-১ আসনে নিজেই দাঁড়িয়ে গেছেন এমপি প্রার্থী হিসেবে।

নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘জনগণ আমাকে ভোট দিলে পাস করব, না দিলে কিছু করার নাই; আমার ভোট তো আমি দিতে পারব! আসলে মনের মতো প্রার্থী না থাকায় আমি প্রার্থী হয়েছি। আমার ভোট আমাকে দিতে পারলেই আমার আত্মতৃপ্তি। নির্বাচনে জয়-পরাজয় থাকবেই। মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছি, যাচাই ঠিকঠাক থাকলে আমি স্বতন্ত্র নির্বাচন করবই। কোটি কোটি টাকা দিলেও আমি সরে দাঁড়াবো না। কারণ নির্বাচন আমার কাছে ক্যান্সারের মতো হয়ে গেছে।’

নির্বাচনে আসার পিছনের কারণ তুলে ধরে আব্দুল আলী বেপারী বলেন, ‘আমাদের এলাকায় রাস্তা না থাকায় তৎকালীন বিএনপির চীফ হুইপ খন্দকার দেলোয়ার হোসেনের কাছে যাই। রাস্তার জন্য অনেক অনুরোধ করেছিলাম, কিন্তু তাতে কোনো কাজ হয়নি। তখন খন্দকার দেলোয়ার হোসেনের সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয় এবং এক পর্যায়ে তিনি আমাকে বলেন- পারলে আমার মতো হয়ে দেখিয়ে রাস্তা করে নিও। সেই রাগ আর ক্ষোভে চেয়ারম্যান নির্বাচন করেছি, এখন এমপি প্রার্থী হয়েছি।’

স্বতন্ত্র এ প্রার্থীর বড় ছেলে আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘ইউপি নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ায় সময়ই মা ও আমরা পাঁচ ভাই-বোন বাবাকে না করেছিলাম। কিন্তু তিনি কথা শুনেন নাই। এমপি নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার সময়ও বুঝিয়েছি, তাতেও লাভ হয়নি। পরে মনোনয়নপত্রে আমি প্রস্তাবকারী ও আমাদের এলাকার লিটন ইসলাম সমর্থনকারী ছিলাম। মনোয়নপত্র জমা দেয়ার সময় পরিবারের কেউ সঙ্গে ছিল না। বাবার সঙ্গে শুধুমাত্র আমার ছোট ভাগিনা ছিল। বাবা কষ্ট করে আমাদের মানুষ করেছে। তাই বাবার কথার অবাধ্য হয় নাই।’

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Eminent peoples statements on election code of conduct concocted EC

নির্বাচনি আচরণবিধি নিয়ে বিশিষ্টজনদের বক্তব্য মনগড়া: ইসি

নির্বাচনি আচরণবিধি নিয়ে বিশিষ্টজনদের বক্তব্য মনগড়া: ইসি
নির্বাচন কমিশন বলেছে, ‘গণমাধ্যমে প্রচারিত বিশিষ্টজনদের মনগড়া বক্তব্য জনগণকে বিভ্রান্ত করতে পারে। এতে কমিশনের ওপর জনগণের আস্থা বিনষ্টের মাধ্যমে তা আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে নেতিবাচকভাবে প্রভাবিত করতে পারে। বিষয়টি মোটেও কাম্য নয়।’

নির্বাচনি আচরণবিধি নিয়ে ইলেক্ট্রনিক গণমাধ্যমের টকশো এবং পত্রপত্রিকায় কিছু বিশিষ্ট ব্যক্তি মনগড়া বক্তব্য দিচ্ছেন বলে অভিযোগ করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।

ইসি পরিচালক (জনসংযোগ) শরিফুল আলম স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে শনিবার এমন অভিযোগ করা হয়।

ইসি বলেছে, ‘গণমাধ্যমে প্রচারিত বিশিষ্টজনদের এমন মনগড়া বক্তব্য জনগণকে বিভ্রান্ত করতে পারে। এতে নির্বাচন কমিশনের ওপর জনগণের আস্থা বিনষ্টের মাধ্যমে তা আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে নেতিবাচকভাবে প্রভাবিত করতে পারে। বিষয়টি মোটেও কাম্য নয়।’

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে নির্বাচনি আচরণবিধি সংক্রান্ত ধারাগুলো তুলে ধরা হয়। বলা হয়, ‘নির্বাচনি আচরণবিধির মূল বিষয় রাজনৈতিক দল ও প্রার্থী। জাতীয় সংসদের সাধারণ নির্বাচন ও উপনির্বাচনে প্রচারের বিষয়ে আচরণ বিধিমালার নির্দেশনা রাজনৈতিক দল, মনোনীত প্রার্থী কিংবা স্বতন্ত্র প্রার্থীকে প্রতিপালন করতে হবে। প্রার্থী দলের মনোনীত হতে পারেন বা স্বতন্ত্র হতে পারেন।’

বিধিমালা অনুযায়ী কোনো দল বা প্রার্থী ২১ দিনের বেশি প্রচারের সময় পাবে না উল্লেখ করে বলা হয়, ‘রিটার্নিং কর্মকর্তা কর্তৃক প্রার্থিতা চূড়ান্ত হওয়ার আগ পর্যন্ত কোনো রাজনৈতিক দলের মনোনীত বা স্বতন্ত্র কোনো প্রার্থী আইন ও আচরণ বিধির অর্থে প্রার্থী নন।

‘নির্বাচনি প্রচারণার সুযোগ হবে একটি নির্বাচনি এলাকার জন্য প্রার্থীদের তালিকা চূড়ান্ত করে প্রতীক বরাদ্দ করে প্রচারের জন্য মাঠ উন্মুক্ত করার পর। তখন নির্বাচনি এলাকায় প্রার্থীদের সবাই সমভাবে একেকজন প্রার্থী হবেন। সে সময় থেকে তাদের ক্ষেত্রে আচরণ বিধিমালা প্রযোজ্য হবে।’

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, ‘আচরণ বিধি অনুযায়ী ২১ দিন আগে (ভোট গ্রহণের) কোনো প্রার্থীর দ্বারা বা প্রার্থীর পক্ষে কোনো ধরনের নির্বাচনি প্রচার নিষিদ্ধ। প্রার্থীদের পক্ষে নির্বাচনি প্রচারের সময় চলতি বছরের ১৮ ডিসেম্বর থেকে ২০২৪ সালের ৫ জানুয়ারি সকাল ৮টা পর্যন্ত নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে।

‘১৮ ডিসেম্বরের আগে কোনো ব্যক্তির প্রার্থী হওয়ার আইনগত সুযোগ নেই। ফলে এর আগে কোনো নির্বাচনি এলাকায় কোনো প্রার্থীর পক্ষে বা বিপক্ষে নির্বাচনি প্রচারেরও সুযোগ নেই।’

আরও পড়ুন:
সর্বোচ্চ মনোনয়নপত্র নৌকা লাঙ্গলের সর্বনিম্ন হারিকেনের
নির্বাচনে বিশৃঙ্খলা হলে ব্যবস্থা নেবে ইসি
ওসিদের পর এবার সব ইউএনওকে বদলির নির্দেশ
নির্বাচনি আচরণবিধি লঙ্ঘনে নৌকার প্রার্থীকে শোকজ
দেশের সব থানার ওসি বদলির নির্দেশ ইসির

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Transfer of OC UNOs based on field level information of EC
ইসির অতিরিক্ত সচিব বললেন

মাঠ পর্যায়ের তথ্যের ভিত্তিতেই ওসি-ইউএনওদের বদলি

মাঠ পর্যায়ের তথ্যের ভিত্তিতেই ওসি-ইউএনওদের বদলি নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ। ফাইল ছবি
অশোক দেবনাথ বলেন, ‘নিবন্ধিত ৪৪টি রাজনৈতিক দলের মধ্যে ২৯টি নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে। জেডি পিপলস নামে একটি দল নির্বাচনে অংশ নিয়েছে, যেটি ইসিতে নিবন্ধিত নয়। আমাদের কাছে যে তথ্য আছে তাতে দেখা গেছে ২ হাজার ৭১২ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন।’

দেশের সব উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) মাঠ পর্যায়ের তথ্যের ভিত্তিতে বদলি করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিবালয়ের অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ। মাঠ প্রশাসনে এমন ব্যাপক বদলির কারণে কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হবে না বলেও জানিয়েছেন তিনি।

রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে শনিবার দুপুরে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি জানান, নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দেয়া স্বতন্ত্রসহ সব প্রার্থীর নিরাপত্তায় ব্যবস্থা নিচ্ছে ইসি।

কতগুলো দল নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে- এমন প্রশ্নের জবাবে অশোক দেবনাথ বলেন, ‘আমাদের নিবন্ধিত ৪৪টি রাজনৈতিক দল আছে। তার মধ্যে ২৯টি দল নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে।

‘জেডি পিপলস নামে একটি দল নির্বাচনে অংশ নিয়েছে, যেটি ইসিতে নিবন্ধিত নয়। আমাদের কাছে যে তথ্য আছে তাতে দেখা গেছে ২ হাজার ৭১২ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন।

পাঁচটি আসনে আওয়ামী লীগের কোনো প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দেননি এবং একটি স্থানে দুবার জমার দেয়ার খবর পাওয়া গেছে। এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি বলেন, ‘আমাদের কাছে যে তথ্য আছে তাতে আওয়ামী লীগ থেকে ৩০৪ জন মনোনয়ন ফরম নিয়েছেন।’

যে পাঁচটি আসনে আওয়ামী লীগের কোনো প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দেননি, সেখানে কী হবে?- এমন প্রশ্নের জবাবে ইসির অতিরিক্ত সচিব বলেন, সেটা বাছাইয়ের সময় দেখা যাবে।

ওসি ও ইউএনওদের বদলি সরকার চেয়েছে নাকি ইসি চেয়েছে- এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘এটা নির্বাচন কমিশন চেয়েছে। আমাদের কমিশনাররা গত এক সপ্তাহ ধরে দেশের বিভিন্ন জেলায় এবং অঞ্চল পর্যায়ে সফর করেছেন। তাদের যে ফাইন্ডিংস, তার ভিত্তিতে নির্বাচন কমিশন বসে ৩০ নভেম্বর এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

‘কমিশন অনুভব করেছে যে এই বদলি দরকার। সব তথ্য তো ওপেনলি বলা হয় না। নির্বাচন কমিশনাররা মাঠ পর্যায় থেকে যেসব তথ্য পেয়েছেন, বিভিন্ন প্রার্থী কিংবা বিভিন্ন কোয়াটার থেকে যে তথ্য এসেছে, তার ভিত্তিতেই এ সিদ্ধান্ত।’

ডিসি-এসপিদের বদলির কোনো সিদ্ধান্ত হয়েছে কি না জানতে চাইলে অশোক দেবনাথ বলেন, ‘এখন পর্যন্ত এমন কোনো সিদ্ধান্ত আমার জানা নেই। পরবর্তীতে যদি কোনো সিদ্ধান্ত হয় তখন বলতে পারব। যদি নির্বাচন কমিশন বসে কোনো সিদ্ধান্ত নেয়, সেক্ষেত্রে এটা হতে পারে। এটা অস্বাভাবিক কিছু নয়।’

রদবদলের ক্ষেত্রে কোনো বিশৃঙ্খলা তৈরির সুযোগ আছে কি না এমন প্রশ্নে ইসির অতিরিক্ত সচিব বলেন, ‘আমি মনে করি নেই। একজন কর্মচারী যে উপজেলা বা জেলায় দায়িত্ব পালন করুন না কেন, তিনি সুষ্ঠুভাবেই দায়িত্ব পালন করবেন।’

স্বতন্ত্র প্রার্থীর নিরাপত্তার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘স্বতন্ত্র প্রার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য আমরা ইতোমধ্যে মাঠ পর্যায়ে মেসেজ দিয়েছি। এটা পুলিশের ঊর্ধ্বতনদের ও আমাদের রিটার্নিং অফিসারদের বলেছি। জননিরাপত্তা বিভাগের সচিব এসেছিলেন। সব বিষয়ে তাদের মেসেজ দেয়া হয়েছে। কেউ যেন নিরাপত্তার ঘাটতিতে না ভোগে। এরপরও যদি কারও গাফিলতিতে কিছু হয়, তার বিরুদ্ধে ইসি খুব স্ট্রং ব্যবস্থা নেবে।’

সেনা মোতায়েন প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে অশোক কুমার দেবনাথ বলেন, ‘যদি কমিশন মনে করে, সেটার প্রয়োজনীয়তা আছে, তাহলে সে অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। তবে এ মুহূর্তে এমন কোনো সিদ্ধান্ত আমার জানা নেই।’

আরও পড়ুন:
ওসিদের পর এবার সব ইউএনওকে বদলির নির্দেশ
দেশের সব থানার ওসি বদলির নির্দেশ ইসির
নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে ৩০ দল, মনোনয়নপত্র জমা ২৭৪১

মন্তব্য

p
উপরে