পাচারকারীর খপ্পরে মরিশাস গিয়ে ধর্ষণের শিকার এক নারী দেশে ফিরলেও তার বাবাকে সেখানে জিম্মি করে রাখা হয়েছিল। অবশেষে জিম্মিদশা থেকে দেশে ফিরেছেন সেই তরুণীর বাবা।
তবে দেশে ফেরার প্রক্রিয়া সহজ ছিল না। তরুণী দেশে ফিরে এলেও তার বাবাকে আটকে রাখা হয় মরিশাসে। দেশে ফেরার কয়েক মাস পর তরুণী মামলা করেন রামপুরা থানায়। এই বিষয়ে নিউজবাংলা গত ১১ জুলাই প্রতিবেদন প্রকাশ করলে তা নজরে আসে সংশ্লিষ্টদের।
অনেক অত্যাচার ও ঝামেলা পার করে মরিশাসে জিম্মি থাকা ওই তরুণীর বাবা সোমবার রাতে দেশে ফেরেন। ফিরে তিনি জানান মরিশাসের নির্যাতন ও হয়রানির কাহিনী।
ওই তরুণীর বাসা রাজধানীর দক্ষিণখানে। বাবা কাপড়ের ব্যবসায় ক্ষতিগ্রস্ত হলে গোটা পরিবার আর্থিকভাবে বিপাকে পড়ে যায়। এ অবস্থায় তার বাবা সংসারের খরচ জোগাতে মরিয়া হয়ে ওঠেন। এক বন্ধুর পরামর্শে চাকরির সন্ধানে পরিচিত এক জনশক্তি রপ্তানিকারক এজেন্সির খোঁজ পান তিনি।
তারা তাকে মরিশাসে একটি তৈরি পোশাক কারখানায় কাজ দেবে বলে জানায়। এর পরই প্রতারণা আর নির্যাতনের চক্রে পড়ে যান তিনি। পরে তার বাবাকেও নেয়া হয় সেখানে।
কী হয়েছিল তার সঙ্গে
মরিশাস থেকে ফিরে ওই তরুণীর বাবা নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমি মরিশাসে ফায়ার মাউন্ট টেক্সটাইলে বাবুর্চির কাজ করতাম। মরিশাসে আমাকে নেয়ার পর মেয়ের সঙ্গে দেখা করতে দিত না তারা। মেয়েকে আমার থেকে আলাদা রাখত। আর দেখা করতে দিলেও সঙ্গে লোক থাকত পাহারায়।
‘পরে আমাকে রেখে আমার মেয়েকে দেশে পাঠিয়ে দেয়। আমি তখনও জানতাম না, তারা আমার মেয়েকে ধর্ষণ ও নির্যাতন করেছে। আমার মেয়ে দেশে আসার পরে আমি জানতে পারি।’
তরুণীর বাবা বলেন, ‘আমার মেয়ে এই দেশে এসে মামলা করার পরে তারা আমাকে হুমকি দিতে থাকে। আমি যে বাবুর্চির সঙ্গে ভাত রান্না করতে যাই, সে আমার হাতে ইচ্ছা করে ভাতের মাড় ফেলে দেয়। আমার হাত পুড়ে যায়। নানা রকম ঝামেলা করে।’
জুলাইয়ের মাঝামাঝি কোম্পানির মালিক অনিল কোহলি (ভারতীয় নাগরিক) ও ওই কোম্পানির কয়েকজন থানায় মিথ্যা মামলা দিয়ে ওই তরুণীর বাবাকে গ্রেপ্তার করান।
আরও পড়ুন: মরিশাসে ধর্ষণের শিকার তরুণী, বাবা জিম্মি
তিনি বলেন, ‘এক নারীর সহায়তায় তার জিম্মায় আমি থানা থেকে বের হই। তারা যে আমাকে ফাঁসিয়েছে, পুলিশ সেটা বুঝতে পারে।
‘আমার ভেতরে একটা ভয় ঢুকে যায়: এরা আমাকে যদি মেরে ফেলে! পরে আমি চাকরি ছেড়ে দেই। চাকরি ছেড়ে আমি একজনের কাছ থেকে নম্বর জোগাড় করে বাংলাদেশ দূতাবাসে সব জানাই। গত মাসের ২১ তারিখে বাংলাদেশের দূতাবাস থেকে মরিশাসের হাইকমিশনে জানায়। মরিশাস হাইকমিশন থেকে থেকে আমাকে টিকিট দেয় দেশে ফেরার।’
এরপর ঘটে আরেক ঘটনা। এক নারী এসে ওই তরুণীর বাবাকে একটা কাগজ দিয়ে বলেন, আগামি মাসে তাকে আদালতে যেতে হবে। তিনি কোনো এক নারীর কাছ থেকে ২ লাখ টাকা নিয়েছেন। তিনি বাংলাদেশ দূতাবাসে আবার জানান এই ঘটনা।
তরুণীর বাবা বলেন, ‘বাংলাদেশ হাই কমিশন আমাকে মরিশাসের হাইকমিশনের কাছে পাঠায়। তারা আমাকে গত রোববারের বিমানের টিকিট দেয়। ওই দেশের পুলিশ আমাকে ইমিগ্রেশন পার করানো থেকে শুরু করে বিমানে উঠিয়ে দেয়া পর্যন্ত আমার সঙ্গে ছিল।
‘রোববার রাত ১১টায় বিমান মরিশাস থেকে দুবাই রওনা দেয়। সকাল ৬টায় আমি দুবাই পৌঁছাই। সেখানে ১০ ঘণ্টা অপেক্ষা করে আমাদের আবার বিমানে তুলে দেয়। পরে সোমবার রাতে বাংলাদেশের দূতাবাসের লোক আমাকে বিমানবন্দর থেকে রিসিভ করে আমার পরিবারের কাছে বুঝিয়ে দেয়।’
তরুণীর বাবা আরও বলেন, ‘আমি আড়াই লাখ টাকা দিছি ধার-দেনা করে। আমার মেয়ের জীবন, আমার জীবন, আমার পরিবার সব বরবাদ করে দিছে ওরা। আমি এখন রাস্তার ভিখারি। তারা আমায় অনেক নির্যাতন করেছে। টানা ১৫ দিন আমাকে বের হতে দেয় নাই। আমি সাংবাদিক আর বাংলাদেশের দূতাবাসের কাছে চিরকৃতজ্ঞ। তাদের জন্য দেশে ফিরতে পেরেছি।’
মামলা করেছিলেন তরুণী
রামপুরা থানায় গত ৯ জুলাই করা মামলার এজাহারে ওই তরুণী বলেন, পূর্ব আফ্রিকার দ্বীপ দেশ মরিশাসে নেয়ার পর পোশাক কারখানার মালিকসহ একাধিক ব্যক্তি তাকে ধর্ষণ ও নির্যাতন করেন।
তারা হুমকি দেন, দেশে ফিরলে কাউকে কোনো অভিযোগ করা যাবে না। অভিযোগ করা হলে তাদের হাতে জিম্মি তার বাবাকে মেরে ফেলা হবে।
কোনো অভিযোগ করবেন না এমন শর্তে মুক্তি পেয়ে অবশেষে দেশে আসেন ওই তরুণী। তবে তার বাবা তখন মরিশাসে আসামিদের হাতে জিম্মি।
ওই তরুণী নিউজবাংলাকে জানান, ধর্ষণের কারণে তিনি অন্তঃসত্ত্বা হন মরিশাসে। আসামিরা সেখানে তাকে গর্ভপাত করান একটি হাসপাতালে। এতে তার জরায়ুতে সংক্রমণ ধরা পড়ে।
মামলার এজাহারে ওই তরুণী বলেন, মরিশাসে নেয়ার পর পোশাক কারখানার মালিকসহ একাধিক ব্যক্তি তাকে ধর্ষণ ও নির্যাতন করেন।ছবি: নিউজবাংলা
চিকিৎসক জানিয়েছেন, এই সংক্রমণের কারণে তার জরায়ুতে টিউমার অথবা ক্যানসার হতে পারে।
রামপুরা থানায় ওই তরুণী মানবপাচার এবং নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে আলাদা ধারায় একটা মামলা করেন।
মামলায় প্রধান আসামি করা হয় আকবর হোসেনকে। তিনি মেসার্স গোলাম রাব্বি ইন্টারন্যাশনাল নামে একটি জনশক্তি রপ্তানি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা। বাকি আসামিরা হলেন গোলাম রাব্বি, আক্তার হোসেন, শাহ আলম, ফোরকান, সিদ্দিক, আসলাম, ভারতীয় নাগরিক অনিল কোহলি এবং অজ্ঞাতনামা ৪-৫ জন।
২০২০ সালের ২৮ ডিসেম্বর দেশে ফেরার তিন দিনের মাথায় আত্মহত্যার চেষ্টা করেন ওই তরুণী। কিন্তু তার বোন দেখে ফেলেন ও তা ঠেকান।
এরপর তার সঙ্গে মরিশাসে হয়ে যাওয়া বিস্তারিত ঘটনা খুলে বলেন বড় বোনকে। বড় বোন ব্র্যাক মাইগ্রেশন প্রোগ্রামের সঙ্গে যোগাযোগ করলে ব্র্যাকের পক্ষ থেকে তাকে চিকিৎসাসহ কাউন্সেলিং দেয়া হয়।
এ ঘটনায় মামলার দিন রাত সাড়ে ৯টায় গ্রেপ্তার করা হয় রিক্রুটিং এজেন্সির মালিক আক্তার হোসেনকে। মালিবাগ আবুল হোটেল সংলগ্ন ফুটওভার ব্রিজ থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। এর পরে আর কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা রামপুরা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সাইফুল ইসলাম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এ ঘটনায় মামলার দিন রাতেই একজনকে গ্রেপ্তার করেছি। বাকিরা দেশের বাইরে থাকায় গ্রেপ্তার করা সম্ভব হচ্ছে না।’
আরও পড়ুন:পার্বত্য চট্টগ্রাম মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে আজ থেকে ঢাকায় শুরু হচ্ছে পাঁচ দিনব্যাপী পার্বত্য ফল উৎসব ও মেলা।
মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে পার্বত্য চট্টগ্রাম ঐতিহ্য সংরক্ষণ ও গবেষণা কেন্দ্র মেলার সার্বিক তত্ত্বাবধানে থাকছে।
আজ বিকেলে মেলার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা।
রাজধানীর বেইলি রোডে পার্বত্য কমপ্লেক্সে এ মেলার আয়োজন করা হয়েছে। সেখানে বিভিন্ন পাহাড়ি সংস্থা পাহাড়ি ফলমূল নিয়ে পসরা সাজিয়ে বসেছেন।
মেলা উপলক্ষে ঢাকা শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থান- বিজয় সরণি, সার্ক ফোয়ারা, রমনা পার্ক, বেইলি রোডের পশ্চিম পাশে রমনা পার্ক সংলগ্ন ও পূর্ব পাশে অফিসার্স ক্লাব সংলগ্ন, টিএসসি ও দোয়েল চত্বরে পোস্টার, ব্যানার ও ফেস্টুন স্থাপন করা হয়েছে।
এছাড়া পার্বত্য চট্টগ্রাম কমপ্লেক্স-এর সম্মুখে একটি বেলুন স্থাপন করা হয়েছে।
রাজধানীর ৩৩ বেইলি রোডে অবস্থিত পার্বত্য চট্টগ্রাম কমপ্লেক্সে সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত প্রতিদিন এই মেলা দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত থাকবে।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ২০২৫-২৬ অর্থবছরের ৩৮৪১.৩৮ কোটি টাকার বাজেট অনুমোদন করলো ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন পরিচালনা কমিটির ৭ম (সপ্তম) কর্পোরেশন সভা
ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) ২০২৫-২৬ অর্থবছরের ৩৮৪১.৩৮ কোটি টাকার বাজেট অনুমোদন করলো ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের পরিচালনা কমিটির ৭ম (সপ্তম) কর্পোরেশন সভা। ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের এর প্রশাসক জনাব মো. শাহজাহান মিয়ার সভাপতিত্বে বিভিন্ন সরকারি দপ্তর সংস্থার প্রতিনিধির সমন্বয়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন পরিচালনা কমিটির ২৫ (পঁচিশ) জন সদস্য আজ সোমবার নগর ভবনে উপর্যুক্ত সভায় অংশগ্রহণ করেন।
সভার শুরুতে ০৫ মে ২০২৫ তারিখে অনুষ্ঠিত ষষ্ঠ কর্পোরেশনের সভার কার্য বিবরণী দৃঢ়ীকরণ এবং বাস্তবায়ন অগ্রগতি প্রতিবেদন পর্যালোচনা করা হয়। পরবর্তীতে সভার আলোচ্য সূচি অনুযায়ী আলোচনা ও সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
সভায় ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট উপস্থাপন করেন প্রধান হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা (অতি. দা.) জনাব আলী মনসুর। পরবর্তীতে, পরিচালনা কমিটির সদস্যবৃন্দ বাজেট আলোচনায় অংশগ্রহণ এবং ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ২০২৫-২৬ অর্থবছরের ৩৮৪১.৩৮ কোটি টাকার বাজেট অনুমোদন প্রদান করেন।
বাজেট আলোচনায় অংশগ্রহণ ও অনুমোদন প্রদান করায় পরিচালনা কমিটির সদস্যবৃন্দকে ধন্যবাদ জানিয়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের এর প্রশাসক বলেন, “ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের বাজেট কেবল গাণিতিক সংখ্যা নয়। এই বাজেট আমাদের কাছে সম্মানীত করদাতাদের আমানত। এই বাজেট সফলভাবে প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের উপর নির্ভর করছে আমাদের সবার প্রিয় এই নগরীর ব্যবস্থাপনা এবং আমাদের দৈনন্দিন নাগরিক সমস্যার সমাধান।”
সভায় ১৯৯৮ সাল থেকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন এলাকায় বসবাসকারী নগরবাসীকে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা ও মাতৃত্বকালীন বিভিন্ন সেবা প্রদানকারী ‘আরবান প্রাইমারী হেলথ কেয়ার সার্ভিসেস ডেলিভারী প্রকল্প-২ পর্যায়’ শীর্ষক প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন এবং বিদ্যমান প্রকল্পের আওতায় সেবা প্রদানকারী এনজিওসমূহের মধ্যে সমঝোতা স্মারকের মাধ্যমে স্বাস্থ্যসেবা অব্যাহত রাখার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।
পরবর্তীতে, অর্থ বিভাগের পরিপত্র অনুযায়ী ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনে দৈনিক ভিত্তিতে নিয়োজিত সাময়িক শ্রমিকের দৈনিক মজুরি ৬০০/- (ছয় শত) টাকা হতে ৮০০/- (আট শত) টাকা পুনঃনির্ধারণ করা হয়েছে। এছাড়া, মন্ত্রীপাড়ায় অবস্থিত অস্থায়ী মসজিদটি ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন কর্তৃক একটি তিনতলাবিশিষ্ট নান্দনিক মসজিদে রূপান্তরের নীতিগত অনুমোদন দেয়া হয়।
সভায় ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ড. জিল্লুর রহমান, ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের সচিব জনাব মুহাম্মদ শফিকুল ইসলামসহ সকল বিভাগীয়গণ উপস্থিত ছিলেন।
রাজধানীর মতিঝিলে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে ব্যবসায়ীর ৩০ লক্ষ টাকা ডাকাতির ঘটনায় তিন ডাকাতকে গ্রেফতার করেছে ডিএমপি’র মতিঝিল থানা পুলিশ। এ সময় ডাকাতির ঘটনায় ব্যবহৃত হাইয়েস গাড়ি ও নগদ ৮৯ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন- মো. শামিম রহমান (২৯), মো. মিজান রহমান (৫১) ও রবিউল ইসলাম জুয়েল (৪২)।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আজ এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়েছে, গত ২৭-২৯ জুন ঢাকা ও ঝালকাঠিতে পৃথক অভিযান পরিচালনা করে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারের সময় শামিমের হেফাজতে থাকা ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত হাইয়েস গাড়ি, মিজানের কাছ থেকে নগদ ৮০ হাজার টাকা ও জুয়েলের কাছ থেকে নয় হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়।
ডিএমপি’র মতিঝিল থানা সূত্রে জানা যায়, গত ২৬ জুন রাজধানীর ওয়ারীর নবাবপুরের একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে মো. খলিল মিয়া (২৬) ও ইব্রাহীম হোসেন রিফাত (২৪) নামের দুই ব্যক্তি নগদ ৩০ লক্ষ টাকা মতিঝিল সিটি ব্যাংক শাখায় জমা দেওয়ার জন্য একটি স্কুটিতে করে রওয়ানা দেন।
দুপুর পৌনে ১টার দিকে মতিঝিলের ঘরোয়া হোটেলের সামনে পৌঁছা মাত্রই ৬/৭ জনের একটি দল নিজেদের ডিবি পরিচয়ে তাদেরকে ডিবি লেখা একটি হাইয়েস মাইক্রোবাসে জোরপূর্বক উঠিয়ে নিয়ে যায়।
পরে দুজনকে মারধর করে অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে ৩০ লক্ষ টাকা নিয়ে হাত-পা বেঁধে সাইনবোর্ড বাসস্ট্যান্ড এলাকায় একটি ময়লার ডাস্টবিনে ফেলে পালিয়ে যান।
স্থানীয় লোকজন তাদের উদ্ধার করে প্রথমে সাইনবোর্ডের প্রো-অ্যাকটিভ হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে তাদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়।
পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তাদের চিকিৎসা দেওয়া হয়।
এ ঘটনায় প্রতিষ্ঠানটির মালিক সাইদুল ইসলামের অভিযোগের প্রেক্ষিতে ডিএমপি’র মতিঝিল থানায় একটি নিয়মিত মামলা রুজু হয়।
থানা সূত্রে আরও জানা যায়, গ্রেফতারকৃত মিজানের নামে ঝালকাঠির রাজাপুর ও নারায়ণগঞ্জের আড়াই হাজার থানায় আরো দুটি ডাকাতির মামলা রয়েছে।
গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। মামলার সুষ্ঠু তদন্ত ও লুন্ঠন হওয়া অন্যান্য টাকা উদ্ধারসহ আত্মগোপনে থাকা ডাকাতদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলেও বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।
রাজধানীর হাজারীবাগের একটি বাসায় পানির ট্যাংক পরিষ্কারের সময় বিস্ফোরণে দুই শিশুসহ একই পরিবারের চারজন দগ্ধ হয়েছেন।
শনিবার (২৮ জুন) সন্ধ্যায় হাজারীবাগের জিগাতলা ট্যানারি মোড় এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। দগ্ধদের উদ্ধার করে প্রথমে স্থানীয় একটি হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে রাত সাড়ে ১০টার দিকে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাদের জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের জরুরি বিভাগে স্থানান্তর করা হয়।
আহতরা হলেন- মো. জিয়াউর রহমান (৪৫) ও তার দুই মেয়ে ফারিয়া (৮) ও রাইফা (৪) এবং ট্যাংক পরিষ্কারের কাজে নিয়োজিত শ্রমিক বেলাল হোসেন (২৮)।
আহতদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া শাহপরান জানান, চাচার বাসায় বেলাল হোসেন নামের এক শ্রমিক ট্যাংক পরিষ্কার করছিলেন, এ সময় চাচা জিয়াউর রহমান ট্যাংকে পর্যাপ্ত আলো না থাকায় একটি বৈদ্যুতিক বাল্ব চালু করার পরই এ বিস্ফোরণ ঘটে। ধারণা করা হচ্ছে, ট্যাংকের ভেতরে জমে থাকা গ্যাস থেকে এমনটা হয়েছে।
জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের রেসিডেন্ট সার্জন ডা. শাওন বিন রহমান বলেন, ‘বেলাল হোসেনের শরীরের ১৭ শতাংশ, জিয়াউর রহমানের ৪ শতাংশ, ফারিয়ার ৫ শতাংশ এবং রাইফার ৬ শতাংশ দগ্ধ হয়েছে।’
বর্তমানে তারা সবাই শঙ্কামুক্ত এবং জরুরি বিভাগে চিকিৎসাধীন রয়েছেন বলেও জানান তিনি।
রাজধানীর উত্তরা এলাকায় দ্রুতগামী ট্রাকের ধাক্কায় একই পরিবারের তিন সদস্য নিহত হয়েছেন।
নিহতরা হলেন, আহসানুল্লাহ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী অমিত (২৩), তার আত্মীয় বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মচারী নাইমুল হক (৩২) এবং জাবেদ আলম খান (৫৫)।
উত্তরা পূর্ব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. গোলাম মোস্তফা জানান, শনিবার (২৯ জুন) দিবাগত রাত ২টার দিকে উত্তরা পূর্ব থানাধীন আজমপুর মোড়ে রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন তারা। এ সময় ময়মনসিংহ থেকে আসা পাথরবোঝাই একটি ট্রাক তাদের চাপা দেয়।
এতে ঘটনাস্থলেই দুজন নিহত হন বলে জানান তিনি। ওসি বলেন, অপরজনকে স্থানীয় হাসপাতালে নেওয়া হলে সেখানেই মারা যান।
তিনি আরও জানান, মরদেহগুলো শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে ময়নাতদন্তের জন্য।
নিহতরা কাছাকাছি একটি হাসপাতালে রোগী দেখতে গিয়েছিলেন এবং সেখান থেকে বাড়ি ফিরছিলেন। ট্রাকটি জব্দ করা হয়েছে এবং এর চালক রাকিবুল ইসলামকে (৪২) আটক করা হয়েছে বলে জানান ওসি।
রাজধানীর উত্তরায় ‘মব’ সৃষ্টি করে ‘হোটেল মিলিনা’ নামের একটি আবাসিক হোটেল দখলের চেষ্টা করা হয়। এমন অভিযোগে ৯ জনকে আটক করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব-১)।
রোববার র্যাবের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, শনিবার দুপুরে শফিক মোল্লা নামের এক ব্যক্তির নেতৃত্বে হোটেল মিলিনিার মালিক আনোয়ার হোসেনের সঙ্গে পূর্বের ব্যবসায়িক সূত্র ধরে ‘মব’ সৃষ্টির চেষ্টা করা হয়। সেসময় ১০টি মোটরসাইকেলে করে কমপক্ষে ২৪ জন জোরপূর্বক হোটেলটি দখল করতে যায়।
এ সময় দূর থেকে ওই ঘটনার কিছু ছবি ধারণ করেন র্যাব-১ এর এক গোয়েন্দা সদস্য। ছবি ধারণের সময় ‘মব’ সৃষ্টিকারীরা র্যাব সদস্যদের ঘেরাও করে এবং ছবি তুলতে বাধা দেয়। এ ঘটনার পর র্যাব-১ এবং উত্তরা পূর্ব থানা পুলিশের টহল দল ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে ‘মব’ নিয়ন্ত্রণ করে।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাজে বাধা দেওয়া এবং ‘মব’ সৃষ্টির অভিযোগে ঘটনাস্থল থেকে মোট ৯ জনকে আটক করা হয়। তারা হলেন, মো. সাজ্জাদ হোসেন (২৮), মো. শফিক মোল্লা (৩০), মো. আরিফুল ইসলাম (৩০), মো. তন্ময় হোসেন শাওন (২৭), মো. রবিউল ইসলাম (২৫), মো. আনোয়ার হোসেন আশিক (২৭), মো. সাইফুল ইসলাম সাগর (২৭), মো. জালাল খান (৩০) ও মো. আমির (২১)।
আটকদের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের পর সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
আয়কর অফিসসহ সরকারি বিভিন্ন অফিসে ব্যক্তিগত স্বার্থ হাসিলের জন্য বিএনপির নামে আন্দোলন চালিয়ে একটি ‘কুচক্রী মহল’র বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টার সমালোচনা করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
তিনি বলেন, ‘যারা আয়কর অফিসে বা অন্যান্য বিভাগে বিএনপির নামে আন্দোলন করছেন—তারা বিএনপির অংশ নয়। তারা নিজেদের স্বার্থ হাসিলের জন্যই এটা করছে।’
শুক্রবার (২৭ জুন) রথযাত্রা উৎসব উপলক্ষে রাজধানীর নয়াপল্টনের ভাসানী ভবনে বাংলাদেশ পূজা উদযাপন ফ্রন্ট আয়োজিত এক আলোচনা সভায় রিজভী এই মন্তব্য করেন।
তিনি সতর্ক করে বলেন, কিছু ব্যক্তি বিভিন্ন ক্ষেত্র এবং সরকারি অফিসে তাদের আধিপত্য প্রতিষ্ঠার জন্য বিএনপির নামে নতুন নতুন কার্যকলাপ শুরু করার চেষ্টা করছে।
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘যারা জাতীয়তাবাদী আদর্শে বিশ্বাসী তাদের সকলেরই তাদের ব্যাপারে সতর্ক থাকা উচিত। তারেক রহমান তাদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিচ্ছেন। কিন্তু তারপরও অনেকে বিএনপির নাম ব্যবহার করে বিএনপির ভাবমূর্তি নষ্ট করছেন।’
রিজভী বলেন, তিনি এমন একজনের কথা শুনেছেন যিনি বিএনপির নাম ব্যবহার করে আয়কর অফিসে আন্দোলন করছেন।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘তিনি (সেই ব্যক্তি) এখন (এনবিআর) চেয়ারম্যানকে অপসারণের চেষ্টা করছেন এবং ভবিষ্যতে অন্য কাউকে অপসারণের চেষ্টা করবেন। কে তাকে এই দায়িত্ব দিয়েছে? আমি বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব—আমি এ বিষয়ে জানি না। আপনি নিজেই বিএনপির নাম ব্যবহার করে একটি অফিসে আন্দোলন শুরু করেছিলেন। সেখানে আরও অনেক বিএনপি নেতা আছেন, কেউ এ সম্পর্কে জানেন না।’
বিএনপির নামে যারা অপকর্ম করছে তাদের সম্পর্কে সতর্ক থাকার জন্য বিএনপি নেতা-কর্মীদের আহ্বান জানান রিজভী। বলেন, ‘রক্তপাত এবং সংগ্রামের মাধ্যমে সৃষ্ট সুযোগ আগামী দিনে একটি উন্নত রাজনৈতিক পরিবেশ গড়ে তুলতে সাহায্য করবে। প্রকৃত গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হবে।’
তিনি বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের ত্রুটি-বিচ্যুতির সমালোচনা করলেও সরকারের ভালো কাজের প্রতি সমর্থন জানায় বিএনপি।
লন্ডনে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস এবং বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের মধ্যে আলোচনা অনুসারে, সরকার যুক্তিসঙ্গত সময়ে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠান করবে বলে আশা প্রকাশ করেন রিজভী।
তিনি বলেন, গ্রেপ্তার সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার হাবিবুল আউয়াল স্বীকার করেছেন যে, ২০২৪ সালের নির্বাচন ছিল একটি ভুয়া নির্বাচন। ‘তার এই মন্তব্য স্পষ্টভাবে প্রমাণ করে যে (শেখ) হাসিনার আমলে সমস্ত নির্বাচন অবৈধভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছিল।’
বিএনপি নেতা দাবি করেন, প্রশাসনের ভেতরে লুকিয়ে থাকা কিছু লোক—যারা ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের সুবিধাভোগী। তারা বিভিন্ন বিভাগে বিভিন্নভাবে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে জনগণকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছেন। তিনি বলেন, ‘আমাদের তাদের সম্পর্কে সতর্ক থাকতে হবে।’
মন্তব্য