মাছের উৎপাদন বাড়ানোর পাশাপাশি দেশীয় প্রজাতির মাছ সংরক্ষণে সরকারি-বেসরকারি উদ্যোক্তাদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ।
বঙ্গভবনের সিংহ পুকুরে মঙ্গলবার বিকেলে জাতীয় মৎস্য সপ্তাহের অংশ হিসেবে মাছের পোনা অবমুক্ত করার সময় তিনি এ আহ্বান জানান।
এসময় রাষ্ট্রপতি রুই, কাতলা, মৃগেল, কালিবাউশ, পাবদা, গুলশা, সুবর্ণ রুই, গলদা চিংড়ি, মহাশোলসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছের পোনা অবমুক্ত করেন।
তিনি বলেন, ‘মৎস্যখাত দেশের আমিষের চাহিদা পূরণের পাশাপাশি বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে উজ্জ্বল সম্ভাবনাময় একটি খাত। এ ছাড়া, কর্মসংস্থান সৃষ্টিতেও এ খাতের সম্প্রসারণ খুবই গুরুত্বপূর্ণ।’
দেশীয় প্রজাতির মাছ সংরক্ষণে উদ্যোক্তাদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানান রাষ্ট্রপ্রধান।
এ সময় মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম, রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ের জন বিভাগের সচিব সম্পদ বড়ুয়া, সামরিক সচিব মেজর জেনারেল এস এম সালাহ উদ্দিন ইসলাম, প্রেস সচিব জয়নাল আবেদীন, সচিব (সংযুক্ত) ওয়াহিদুল ইসলাম খান এবং মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ সচিব রওনক মাহমুদসহ বঙ্গভবনের সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
বগুড়া-৬ আসনের সাবেক এমপি রাগেবুল আহসান রিপু ও তার স্ত্রী জোবাইদা আহসান জবার দেশত্যাগের নিষেধাজ্ঞার আদেশ দিয়েছেন ঢাকার একটি আদালত।
বৃহস্পতিবার দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা মহানগর ভারপ্রাপ্ত সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালতের বিচারক ইব্রাহীম মিয়া এ আদেশ দেন।
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) জনসংযোগ বিভাগের উপপরিচালক আকতারুল ইসলাম গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানান।
আবেদনে বলা হয়, বগুড়া-৬ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য রাগেবুল আহসান রিপুর বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতি মাধ্যমে শত কোটি টাকা অর্জনের একটি অভিযোগের অনুসন্ধান দুদকে চলমান রয়েছে। অভিযোগ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা দেশ ছেড়ে বিদেশে পলায়ন করতে পারেন মর্মে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায়। অভিযোগটির সুষ্ঠু অনুসন্ধানের স্বার্থে রাগেবুল আহসান ও তার স্ত্রীর বিদেশ যাওয়া রহিত করা প্রয়োজন। আদালত আবেদন মঞ্জুর করে আদেশ দেয়।
আসন্ন শারদীয় দুর্গাপূজা-২০২৫ উদযাপন উপলক্ষে নৌ অধিক্ষেত্রের পূজা মণ্ডপ ও প্রতিমা বিসর্জনের স্থানে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণের জন্য নৌ পুলিশকে নির্দেশনা দিয়েছে নৌ পুলিশের অতিরিক্ত আইজিপি কুসুম দেওয়ান।
বৃহস্পতিবার নৌ পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স, ঢাকার সম্মেলন কক্ষে আসন্ন শারদীয় দুর্গাপূজা-২০২৫ উদযাপন উপলক্ষে আইন-শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে ‘নৌ অধিক্ষেত্রে পূজা মণ্ডপ, প্রতিমা বিসর্জন ঘাট ও নদীতে প্রতিমা বিসর্জন’ সংক্রান্ত এক মতবিনিময় সভায় এ নির্দেশনা দেন তিনি।
সভার শুরুতেই প্রতিমা তৈরির স্থানে পূজা কমিটির করণীয়, নৌ পুলিশের করণীয়, পূজা চলাকালীন পূজা কমিটি ও নৌ পুলিশের করণীয় এবং প্রতিমা বিসর্জনের সময় করণীয় বা বর্জনীয় ইত্যাদি বিষয়ে আলোচনা হয়।
আলোচনায় পূজা কমিটির নেতৃবৃন্দ দুর্গাপূজা শুরু থেকে প্রতিমা বিসর্জন পর্যন্ত নৌ পথে যেকোনো অনাকাঙ্ক্ষিত বা অপ্রীতিকর ঘটনা রোধে নৌ টহল জোরদার করার পরামর্শ দেন এবং নৌ পুলিশের সহযোগিতা কামনা করেন।
নৌ পুলিশের অতিরিক্ত আইজিপি কুসুম দেওয়ান বলেন, সনাতন হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের বড় ধর্মীয় উৎসব আসন্ন শারদীয় দুর্গাপূজায় অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ও অপরাধ রোধে নৌ অধিক্ষেত্রে নৌ পুলিশের নিরাপত্তা জোরদার করা হবে। পূজামণ্ডপের উৎসবমুখর পরিবেশ বজায় রেখে নারী ও শিশুরা নির্বিঘ্নে সেখানে যাতায়াত করতে পারে সেই ব্যাপারে পরামর্শসহ গুরুত্বপূর্ণ পূজামণ্ডপে সংশ্লিষ্ট অঞ্চলের পুলিশ সুপারদের উপস্থিত থেকে নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য নির্দেশনা প্রদান করেন তিনি।
অনুষ্ঠানে নৌ পুলিশের ডিআইজি, অতিরিক্ত ডিআইজি, পুলিশ সুপার, অতিরিক্ত পুলিশ সুপারসহ পূজা কমিটির বিভিন্ন পদবির নেতৃবৃন্দ সরাসরি ও ভার্চুয়ালি উপস্থিত ছিলেন।
মানিকগঞ্জের সিংগাইর উপজেলার জামির্ত্তা ইউনিয়নের চন্দনপুর সরকারি বিদ্যালয়ের মাঠটি দীর্ঘ দিন ধরে সংস্কার কিংবা মাটি ভরাট না করায় সামান্য বৃষ্টি হলেই বছরে ৬ মাসই মাঠ জলাবদ্ধতা থাকে। ফলে কোমলমতি শিশু কিশোরেরা খেলাধূলা ও চিত্তবিনোদন হতে বঞ্চিতসহ ভোগান্তি হচ্ছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, উপজলোর জামির্ত্তা ইউনিয়নের ৪৫ নং চন্দনপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠ যেন একটি ডোবা নালা পুকুরে পরিনত হয়েছে। স্কুলটি ১৯২২ সালে ৬১ শতাংশ জমির উপর প্রতিষ্ঠিত। স্কুলের ভবনও ঝুঁকিপূর্ণ। স্কুলের প্রধান শিক্ষকের কাছে স্কুল মাঠ ও জমির পরিমাণ জানতে চাইলে তিনি স্কুলের জমি সংক্রান্ত তথ্য জানেন না বলে অপারগতা প্রকাশ করেন। তবে সহকারী শিক্ষকের কাছ হতে জানাগেছে স্কুল সংলগ্ন পশ্চিম হতে পূর্ব দিকে কমিউনিটি ক্লিনিক পর্যন্ত ৩৬ শতাংশ। আর বাকী ২৫ শতাংশ জমি রয়েছে বিছিন্ন। স্কুলের সমানে উত্তর দক্ষিণে রয়েছে বাড়ী পূর্ব পাশে রয়েছে ক্লিনিক। দুই পাশের বাড়ী হতে স্কুলের মাঠ নিচু হওয়ায় সামান্য বৃষ্টিতেই জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। ফলে শিক্ষার্থীরা পড়েছেন চরম ভোগান্তিতে।
এ বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী মেহেরুন জানান, সামান্য বৃষ্টি হলেই মাঠে পানি জমে থাকে। এতে মাঠের ঘাস ও আগাছা পঁচে দুর্গন্ধ ছড়ায়, চার পাশে স্যাঁতস্যাঁতে পরিবেশে মশা বংশ বিস্তার করছে বিধায় ডেঁঙ্গু আক্রান্ত নিয়েও আমরা চিন্তিত। দ্রুত বিদ্যালয় মাঠটি মাটি ভরাট সংস্কারের দাবি জানায় শিক্ষার্থীরা।
স্থানীয় ব্যাংকার আব্দুস সালাম জানান, এ সমস্যাটা দীর্ঘদিনের। মাঠ ভরাটে দ্রুত প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন তিনি।
প্রধান শিক্ষিকা সেলিনা আক্তার বলেন দূর্ভোগের কথা কি বলব, কত সাংবাদিক ছবি নিল, বড় স্যারদের ভিডিও করে দিলাম কিছুই হলো না। মাঠের পানি নিয়ে মুশকিলে আছি।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো.কামরুল হাসান সোহাগ জানান, বিষয়টি আমার জানা নেই, তবে প্রধান শিক্ষক আবেদন দিলে সরকারি বরাদ্দে দ্রুত মাঠ ভরাটের ব্যবস্থা করা হবে।
জয়পুরহাটে ডিমের নষ্ট ও পরিত্যাক্ত খোসা থেকে পাউডার তৈরি করে সাড়া ফেলেছেন এক উদ্যোক্তা। এই পাউডার ব্যবহার হচ্ছে মাছ, মুরগি, গরুর খাবারের ক্যালসিয়াম হিসেবে ও জমির জৈব সার হিসেবে। জেলার বিভিন্ন পোল্ট্রি-হ্যাচারি থেকে ডিমের খোসা সংগ্রহ করে এই পাউডার তৈরি করা হয়। বর্তমানে যা বিক্রি হচ্ছে জেলাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে। এতে ভাগ্য বদলেছে বেলাল মোল্লার। আর এই পাউডার নিয়ে নানা সম্ভাবনার কথা বলছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
জানা গেছে, জয়পুরহাট সদর উপজেলার বেলতলী গ্রামের বাসিন্দা বেলাল মোল্লা ১০-১২ বছর থেকে জেলার বিভিন্ন পোল্ট্রি হ্যাচারি থেকে পরিত্যক্ত ডিমের খোসা সংগ্রহ করতেন। সেই খোসা তিনি বগুড়াসহ বিভিন্ন অঞ্চলে বিক্রি করতেন। এরপর জানতে পারেন সেই খোসা দিয়ে পাউডার তৈরি করে বিক্রি করা হয়। সেই ভাবনা থেকে ২০২৪ সালে স্থাপন করেন ডিমের খোসা থেকে পাউডার তৈরির কারখানা। এরপর থেকে তাকে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। তার ছোট কারখানায় প্রতিদিন ডিমের খোসার পাউডার তৈরি করে জেলাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বিক্রি করছেন। আর এ পাউডার ব্যবহার হচ্ছে জৈব সার হিসেবে। এছাড়া গরু, মাছ ও মুরগির জোগান দিচ্ছে ক্যালসিয়ামের। উপকার পেয়ে প্রতিদিন বিভিন্ন এলাকা থেকে ডিমের পাউডার নিতে আসছেন কৃষক ও মৎসচাষিরা। ৫০ কেজির পাউডার বিক্রি হচ্ছে ৭৫০ টাকায়। সব খরচ বাদ দিয়ে মাসে তার লাভ থাকছে ২০ হাজার টাকা।
বেলাল মোল্লা বলেন, আগে বিভিন্ন হ্যাচারি ও পোল্ট্রি থেকে ডিমের খোসা সংগ্রহ করতাম। পাউডারের বিষয়ে জানতে পেরে নিজে কারখানা স্থাপন করেছি। আমার এখানে ৫ জন কাজ করে। এই পাউডারের প্রচুর চাহিদা। বর্তমান জয়পুরহাটসহ আরও ১৫টি জেলায় এই পাউডার সরবরাহ করছি। চাহিদা মতো সরবরাহ দিতে পারছিনা।
কারখানার শ্রমিক আব্দুল খালেক বলেন, ডিসের খোসা পরিষ্কার করে মেশিনের ভেতর দেওয়ার পর তা পাউডার হয়ে বের হয়ে আসে। তারপর এখান থেকে বাজারজাত করা হয়। আমরা এখানে ৫ জন কাজ করি। এখান থেকে যে বেতন পাই তা দিয়ে আমাদের সংসার ভাল মতো চলে।
সদর উপজেলার জামালগঞ্জ এলাকার হাবিব হাসান বলেন, এতদিন জানতাম ডিমের খোসা অপ্রয়োজনীয় জিনিস। কখনো ভাবিনি যে এটা কোন কাজে লাগতে পারে। এখন দেখছি এখান থেকে যে পাউডার তৈরি হচ্ছে তা মাছের খাবার হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে। কেউ জমির জন্য কিনে নিয়ে যাচ্ছে।
সদর উপজেলার বেতলী গ্রামের বিপ্লব হোসেন বলেন, ‘আমাদের এলাকাতে ডিমের খোসা থেকে যে পাউডার তৈরি হচ্ছে সেটা অনেক ভালো বিষয়। এমন উদ্যোগে পরিবেশ রক্ষা হচ্ছে তেমন বেকারদের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হচ্ছে।’
কালাই উপজেলার মাদাই গ্রামের মকবুল হোসেন বলেন, আমি একজন মাছ চাষি। এখান থেকে ডিমের পাউডার কিনে দানাদার খাদ্যের সাথে মিশিয়ে মাছকে খাইয়েছি। এতে দেখছি, মাছ যে পরিমাণ বাড়ার কথা ছিল, তার চেয়ে একটু বেশি বেড়েছে।
জয়পুরহাট সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রাফসিয়া জাহান বলেন, এই ডিমের খোসার পাউডার অনেক কৃষক জমিতে ব্যবহার করছে। ডিমের খোসাতে ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, সালফার এই জাতীয় উপাদানগুলো পাওয়া যায়। যেটা কোন গাছের খাদ্য উপাদান হিসেবে ব্যবহার করে থাকি। এটাকে আমরা যদি গাছের খাদ্য হিসেবে ব্যবহার করতে পারি, তাহলে নিশ্চিতভাবে উপকারে আসবে। বেলাল মোল্লা যে পাউডার উৎপাদন করছেন সেটাতে কি পরিমাণ কোনো উপাদান আছে সেটা যদি পরীক্ষা করা হয়, তাহলে জমিতে কি পরিমাণ ব্যবহার করা যাবে তার একটা মাত্রা নির্ধারণ করা যাবে। এ ব্যাপারে অনেক কাজ করার সুযোগ আছে।
জয়পুরহাট সদর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. জিয়াউর রহমান বলেন, জয়পুরহাট জেলায় পোল্ট্রি অধ্যষিত এলাকা হওয়ায় এখানকার প্রচুর ডিম বর্জ্য হিসেবে ফেলে দেওয়া হতো। এখন সেই ডিমের খোসা থেকে বেলাল মোল্লা পাউডার তৈরি করছেন। এই পাউডার মৎস্য, পোল্ট্রি ও কৃষি জমিতে ব্যবহার হচ্ছে। ডিমের খোসায় ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, ম্যাংগানিজ, বোরন, জিংকসহ অনেক গুরুত্বপূর্ণ উপাদান রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, এই খোসা ব্যবহারের মাধ্যমে একদিকে পরিবেশ দূষণ থেকে মুক্ত হচ্ছে, অন্যদিকে আমাদের খাদ্যের মিনারেলের ঘাটতি পূরণ হচ্ছে। এই উপাদানগুলো আমাদের আমদানি করতে হয়, যখন আমরা এর উৎপাদন বাড়াতে পারব, তখন আমদানি পরিমাণ কমে আসবে।
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, বাংলাদেশ ফরেস্ট ইন্ডাস্ট্রিজ ডেভেলপমেন্ট করপোরেশন (বিএফআইডিসি) দেশের অভ্যন্তরীণ চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি আন্তর্জাতিক বাজারেও উল্লেখযোগ্য রপ্তানি সম্ভাবনা তৈরি করতে সক্ষম।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর গ্রিনরোডের পানি ভবনে উপদেষ্টার সঙ্গে জাতিসংঘের ক্যাপিটাল ডেভেলপমেন্ট ফান্ড (ইউএনসিডিএফ)-এর এশিয়া প্যাসিফিক ইনভেস্টমেন্ট অ্যান্ড ইমপ্লিমেন্টেশন ডিভিশনের রিজিওনাল ইনভেস্টমেন্ট টিম লিড মারিয়া পেরডোমো বৈঠক করেন।
বিএফআইডিসির আধুনিকায়ন নিয়ে আলোচনাকালে তিনি বলেন, তবে পুরনো যন্ত্রপাতি ও প্রক্রিয়ার কারণে আধুনিক আসবাবপত্র শিল্পের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে রয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।
উপদেষ্টা আধুনিক প্রযুক্তি সংযোজন, নকশা উদ্ভাবন, সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং যৌথ বিনিয়োগ চুক্তির জন্য উপযুক্ত আইন প্রণয়নের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
বৈঠকে পরিবেশ উপদেষ্টা বলেন, বিএফআইডিসি দেশের অভ্যন্তরীণ চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি আন্তর্জাতিক বাজারেও উল্লেখযোগ্য রপ্তানি সম্ভাবনা তৈরি করতে সক্ষম। তবে পুরনো যন্ত্রপাতি ও প্রক্রিয়ার কারণে আধুনিক আসবাবপত্র শিল্পের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে রয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।
তিনি আধুনিক প্রযুক্তি সংযোজন, নকশা উদ্ভাবন, সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং যৌথ বিনিয়োগ চুক্তির জন্য উপযুক্ত আইন প্রণয়নের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান আরও বলেন, কৌশলগত অংশীদারিত্ব, সময়োপযোগী সম্পদ সংগ্রহ ও সুস্পষ্ট কর্মপরিকল্পনার মাধ্যমে বিএফআইডিসিকে সৃজনশীল ও প্রতিযোগিতামূলক প্রতিষ্ঠানে রূপান্তর করা সম্ভব। রাবার চাষের পাশাপাশি বাঁশ ও বেতের মতো বিকল্প উপকরণে বৈচিত্র্য আনা এবং স্থানীয় জনগোষ্ঠীকে সম্পৃক্ত করলে বনজ সম্পদের ওপর চাপ কমবে। সরকার জাতীয় উন্নয়ন অগ্রাধিকার ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণের লক্ষ্যে বিএফআইডিসি আধুনিকায়নে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
মারিয়া পেরডোমো আর্থিক, কারিগরি ও সক্ষমতা উন্নয়নে ইউএনসিডিএফ-এর সহায়তার আশ্বাস দেন এবং জানান, এ প্রক্রিয়ায় ইউএনডিপি ও বিভিন্ন দ্বিপাক্ষিক উন্নয়ন সহযোগীর সম্পৃক্ততাও নিশ্চিত করা যেতে পারে।
সভায় বিএফআইডিসি চেয়ারম্যান মো. নাসির উদ্দিন আহমেদ, পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. খায়রুল হাসানসহ ইউএনসিডিএফ ও বিএফআইডিসি-এর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকে প্রকল্প সংক্রান্ত নথি ও সম্ভাব্যতা সমীক্ষা পর্যালোচনার জন্য ভাগাভাগি এবং সম্পদ সংগ্রহ ও উন্নয়ন সহযোগীদের সম্পৃক্ততা জোরদারে নিয়মিত যোগাযোগ বজায় রাখার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
সরকার দৈনিক মানবজমিন পত্রিকার প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরীকে প্রেস কাউন্সিলের সদস্য হিসেবে মনোনীত করেছে। বৃহস্পতিবার তথ্য মন্ত্রণালয় থেকে এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করেছে।
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপসচিব খাদিজা তাহের ববির সই করা প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ‘প্রেস কাউন্সিলের ৫ নম্বর ক্রমিকের প্রতিনিধি নিউএজ পত্রিকার সম্পাদক নুরুল কবীর পদত্যাগ করায় তার পরিবর্তে সংবাদপত্র ও সংবাদ সংস্থার সম্পাদক সমিতির প্রতিনিধি হিসেবে দৈনিক মানবজমিন পত্রিকার প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরীকে প্রেস কাউন্সিলের সদস্য হিসেবে মনোনয়ন প্রদান করা হলো।’
বর্তমান কাউন্সিলের অবশিষ্ট মেয়াদের জন্য এ মনোনয়ন কার্যকর থাকবে। জনস্বার্থে জারিকৃত এ প্রজ্ঞাপন অবিলম্বে কার্যকর হবে বলেও প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে।
প্রেস কাউন্সিলের বর্তমান চেয়ারম্যান বিচারপতি একেএম আব্দুল হাকিম, সচিব (উপসচিব) মো. আব্দুস সবুর।
এছাড়া ১২ জন সদস্য হচ্ছেন—১. বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ওবায়দুর রহমান শাহীন, ২. ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামের সভাপতি মিস দৌলত আকতার মালা, ৩. ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি মো. শহিদুল ইসলাম, ৪. ডেইলি স্টারের সম্পাদক ও প্রকাশক মাহফুজ আনাম, ৫. দৈনিক মানবজমিন পত্রিকার প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী, ৬. দৈনিক বণিক বার্তার প্রকাশক ও সম্পাদক দেওয়ান হানিফ মাহমুদ, ৭. দ্য ফিনান্সিয়াল এক্সপ্রেসের সম্পাদক শামসুল হক জাহিদ, ৮. দৈনিক পূর্বকোণের সম্পাদক ডা. রমিজ উদ্দিন চৌধুরী, ৯. নিউজপেপার্স ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (নোয়ার) উপদেষ্টা আখতার হোসেন খান, ১০. বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক অধ্যাপক মোহাম্মদ আজম, ১১. বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সচিব ড. মো. ফখরুল ইসলাম এবং ১২. বার কাউন্সিলের ভাইস-চেয়ারম্যান জয়নুল আবেদীন।
অন্তর্বর্তী সরকারের ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী মিয়া শাহবাজ শরিফের সাথে সাক্ষাৎ করেছেন। পাকিস্তানের ইসলামাবাদে পিএম হাউসে উভয়ের এ সাক্ষাৎ অনুষ্ঠিত হয়।
বৃহস্পতিবার ধর্ম মন্ত্রণালয়ের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
ধর্ম উপদেষ্টা ও তার প্রতিনিধিদলকে স্বাগত জানিয়ে পাকিস্তান প্রধানমন্ত্রী বলেন, পাকিস্তান ও বাংলাদেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক ঐতিহাসিক, সাংস্কৃতিক এবং সখ্যের বন্ধনে আবদ্ধ। এ সম্পর্ক আগামী দিনগুলোতে আরও জোরদার হবে।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নিউইয়র্ক ও কায়রোতে বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সাথে অনুষ্ঠিত বৈঠকের কথা উল্লেখ করে দূরদর্শী নেতৃত্ব এবং দারিদ্র্য দূরীকরণে তার অবদানের প্রশংসা করেন। এছাড়া তিনি পাকিস্তান ও বাংলাদেশের সম্পর্ককে শক্তিশালী করার ক্ষেত্রে প্রধান উপদেষ্টার আকাঙ্ক্ষাকে সাধুবাদ জানান।
এদিকে ধর্ম উপদেষ্টা বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের একটি পত্র পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর হাতে তুলে দেন।
পাকিস্তান প্রধানমন্ত্রীকে লেখা এ পত্রে প্রধান উপদেষ্টা পাকিস্তানে নজিরবিহীন বন্যায় সে দেশের সরকার ও জনগণের প্রতি গভীর সহমর্মিতা ও আন্তরিক দুঃখ প্রকাশ করেছেন এবং ভয়াবহ এ দুর্যোগে নিহতদের পরিবার ও ক্ষতিগ্রস্তদের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন।
এ পত্রে ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, কঠিন এ সময়ে বাংলাদেশের জনগণ পাকিস্তানের ভ্রাতৃপ্রতিম জনগণের পাশে রয়েছে। আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, আপনার সুদক্ষ নেতৃত্বে পাকিস্তানের জনগণ তাদের অসাধারণ ধৈর্য ও সহনশীলতার মাধ্যমে এ চ্যালেঞ্জ অতিক্রম করবে। প্রয়োজনে ত্রাণ ও পুনর্বাসন কার্যক্রমে বাংলাদেশ সর্বাত্মক সহযোগিতা ও সহায়তা প্রদানে প্রস্তুত রয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা।
সাক্ষাৎকালে ঢাকা ও করাচীর মধ্যে সরাসরি বিমান চলাচল দ্রুত পুনঃস্থাপনের সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করা হয়। এছাড়া কৃষি, বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, ধর্মতত্ত্ব ও চিকিৎসা বিষয়ে উভয়দেশের শিক্ষার্থী বিনিময়ে বৃত্তি প্রদানের ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়।
এ সময় অন্যান্যের মধ্যে পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার, প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ, ধর্মবিষয়ক ও আন্তঃধর্মীয় সম্প্রীতি মন্ত্রী সরদার ইউসুফ খান, তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী আতা তারার, ইসলামাবাদে বাংলাদেশের হাইকমিশনার মো. ইকবাল হোসেন খান, উপদেষ্টার একান্ত সচিব ছাদেক আহমদ ও শরীফ ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের প্রভাষক মুফতি জাহিদ হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
মন্তব্য