মাছের উৎপাদন বাড়ানোর পাশাপাশি দেশীয় প্রজাতির মাছ সংরক্ষণে সরকারি-বেসরকারি উদ্যোক্তাদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ।
বঙ্গভবনের সিংহ পুকুরে মঙ্গলবার বিকেলে জাতীয় মৎস্য সপ্তাহের অংশ হিসেবে মাছের পোনা অবমুক্ত করার সময় তিনি এ আহ্বান জানান।
এসময় রাষ্ট্রপতি রুই, কাতলা, মৃগেল, কালিবাউশ, পাবদা, গুলশা, সুবর্ণ রুই, গলদা চিংড়ি, মহাশোলসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছের পোনা অবমুক্ত করেন।
তিনি বলেন, ‘মৎস্যখাত দেশের আমিষের চাহিদা পূরণের পাশাপাশি বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে উজ্জ্বল সম্ভাবনাময় একটি খাত। এ ছাড়া, কর্মসংস্থান সৃষ্টিতেও এ খাতের সম্প্রসারণ খুবই গুরুত্বপূর্ণ।’
দেশীয় প্রজাতির মাছ সংরক্ষণে উদ্যোক্তাদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানান রাষ্ট্রপ্রধান।
এ সময় মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম, রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ের জন বিভাগের সচিব সম্পদ বড়ুয়া, সামরিক সচিব মেজর জেনারেল এস এম সালাহ উদ্দিন ইসলাম, প্রেস সচিব জয়নাল আবেদীন, সচিব (সংযুক্ত) ওয়াহিদুল ইসলাম খান এবং মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ সচিব রওনক মাহমুদসহ বঙ্গভবনের সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
নীলফামারী ল্যান্ড সার্ভে আদালতে ভুয়া খতিয়ান ও জাল দলিল তৈরি করে মামলা দায়েরের অভিযোগে প্রতারক মো. মতিয়ার রহমান শাহ্ (৫৮) নামে এক ব্যক্তিকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত। বুধবার (০২ জুলাই) প্রতারক মতিয়ার রহমান আদালতে উপস্থিত হলে সদর আমলী আদালতের বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তাকে কারাগারে প্রেরণের আদেশ দেন। মতিয়ার সদর উপজেলার নগর দারোয়ানী এলাকার মোহাম্মদ আলীর ছেলে।
জানা যায়, ল্যান্ড সার্ভে ১৭৮/২০ নং মামলায় মতিয়ার রহমান জাল দলিল ও ভুয়া খতিয়ান (ডিপি ১৯৩) তৈরি করে আদালতে উপস্থাপন করেন। বিষয়টি জানতে পেরে ভুক্তভোগী শামিমা পারভীন আদালতে মোকাবেলা করেন এবং আদালতে প্রমাণিত হয় যে উক্ত খতিয়ানটি ভুয়া। পরে আদালত আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেন এবং সি.আর ২১৪/২৪ মামলাটি খারিজ করে প্রতারকের বিরুদ্ধে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৯৫(সি) ধারায় ব্যবস্থা নিতে চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বরাবর আদেশ প্রদান করেন।
বাদী পক্ষের অ্যাড. রাজীব ও শফিকুল ইসলাম সোহাগ, ওই প্রতারকের বিরুদ্ধে নীলফামারী আমলী আদালত গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে। তিনি গত পাঁচ মাস ধরে পলাতক ছিলেন। একসঙ্গে, সি.আর ১০৯/২৫ নং মামলায় দণ্ডবিধির ৪৬৭/৪৬৮/৫০৬(২)/৩৪ ধারায় আরও একটি মামলা চলমান রয়েছে, সেখানেও তার বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে দলিল জালিয়াতির।
কুষ্টিয়া সদর উপজেলার হাটশ হরিপুর শালদাহর মৃত নওশেরের ছেলে সুরুজ আলী বাবু (৪১)। পেশায় স্বর্ণকার। টানা পোরানের সংসার। কোনো রকম বিধবা মা স্ত্রী আর তিন ছেলেমেয়ে অভাবের সংসারের মধ্যেই সুখেই দিন কাটছিল। মেয়ে সুমাইয়া খাতুন (১৭) এবার এসএসসির পরীক্ষার্থী। ছেলে ফয়সালকে (১০) হাফেজ করার প্রবল ইচ্ছায় ভর্তি করেছিল মাদ্রাসায় আর ছোট মেয়ে রুবাইায়াকে (৭) সবেমাত্র প্লে গ্রুপে ভর্তি করেছিল। কিন্তু মানুষের অধিকার আদায়ের জন্য বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে অংশগ্রহণ করে ঘাতক বুলেটের আঘাতে নিহত হয় বাবু। চোখের পলকে একটি স্বপ্নের ইতি হয়ে যায়। একমাত্র উপার্জন করা মানুষকে হারিয়ে দিশে হারা হয়ে পড়েছে তার পরিবার। অনিশ্চিত হয়ে গেছে তিন ছেলে মেয়ের ভবিষ্যৎ ও লেখাপড়া। স্থানীয় ও স্বজনদের সাহয্য সহযোগিতা নিয়ে কোনো রকমে খেয়ে না খেয়ে দিন কাটাচ্ছে বাবুর পরিবার। ঘটনার ৪ মাস পেরিয়ে গেলেও শোকের ছায়া ঘিরে রেখেছে বাবুর পরিবারকে। সুরুজ আলী বাবুর বৃদ্ধা মা রাহেলা খাতুনের (৭০) কান্না এখনও থামছে না। তৎকালীন সময়ের কুষ্টিয়া মডেল থানার পুলিশের এসআই সাহেব আলীর গুলিতে সুরুজ আলী বাবু নিহত হয়েছে বলে দাবি করে তার (সাহেব আলীর) বিচারের দাবি করেছেন তার স্ত্রী ফাহিমা খাতুন। গত ৫ আগস্ট গণঅভ্যুথানে বীরত্বের সঙ্গে ছাত্র-জনতার প্রথম সারিতে থেকে দূর্বার আন্দোলন গড়ে তুলেছিল সুরুজ আলী বাবু। পুলিশের এলোপাথারি গুলিকে উপেক্ষা করে দৃড়ভাবে অবস্থান করেন কুষ্টিয়ার থানা মোড়ে। স্বৈরশাসক হাসিনার পদত্যাগের পর ৩টার দিকে গুলিবিদ্ধ হলে দ্রুত উদ্ধার করে কুষ্টিয়া সরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে দায়িত্বরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। স্বজনরা জানান, বাবু খুব কষ্ট করে সংসার চালাত। স্বর্ণের দোকানে কাজ করে যতটুকু ইনকাম করত তা তিন ছেলেমেয়ের পেছনে খরচ করত। ছেলে আর মেয়েতে নিয়ে তার স্বপ্নের তাজমহল গড়ে তুলেছিল। কিন্তু দেশ ও দেশের মানুষের কথা চিন্তা করে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে গিয়ে শহীদ হয়। জেলা জামায়াতের থেকে আর্থিক সহযোগিতা পেয়েছিল। কিন্তু সরকারি ভাবে এখন পর্যন্ত কোনো সহযোগিতা পায়নি। তারা আরও জানান, সুরুজ আলী বাবুর ছেলে মেয়েদের লেখাপড়া প্রায় বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়ে পড়েছে। তার ছেলেমেয়েরা যেন ঠিকমতো লেখাপড়া চালিয়ে যেতে পারে সেজন্য আমরা সরকারের প্রতি আবেদন জানাচ্ছি। অশ্রুসিক্ত নয়নে মা রাহেলা খাতুন বলেন, আমার ছেলে দেশের জন্য শহীদ হয়েছে। আমার ছেলেকে যারা গুলি করে হত্যা করেছে তার বিচার চায়। আমার নাতি নাতনির লেখাপড়া বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। আয় করার মানুষ নেই। সরকার সাহায্য না করলে আমরা না খেয়ে মারা যাব। আব্বু মারা যায়নি আমার বিশ্বাস হয়না এমন মন্তব্য করে সুরুজ আলী বাবুর ছেলে ফয়সাল জানান, আমি মাদ্রাসায় ছিলাম। আমার বন্ধু কয় ‘তোর আব্বা মরে গেছে’ আমি বিশ্বাস করিনি। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আমার আব্বু গুলিতে মারা গেছে। আমার আব্বু নেই আমাদের এখন কেউ ভালোবাসে না। আমার আব্বুকে যারা হত্যা করেছে তাদের বিচার চায়। কান্নাজড়িত কন্ঠে স্বামী হত্যাকারির বিচার চেয়ে ফাহিমা খাতুন জানান, মৃত্যুর আধা ঘণ্টা আগে আমার সঙ্গে ফোনে কথা হয়েছিল। আমি বাবার বাড়িতে গিয়েছিলাম। পরে শুনি তার গায়ে এসআই সাহেব আলী গুলি করেছে। খবর শুনে ৩টার দিকে হাসপাতালে যেয়ে শুনি আমার স্বামী মারা গেছে। আমি আমার তিন ছেলেমেয়েকে কিভাবে মানুষ করব।
তিনি বলেন, আত্মীয়স্বজনরা বাজার করে দিয়েছিল তাই আমরা খাচ্ছি। আমার শাশুড়ি সেও খুব অসুস্থ তার ওষুধ কিনে দেয়ার সামর্থন নেই। কেউ সাহায্য না করলে না খেয়ে থাকতে হয়। অল্প কিছু আর্থিক সাহায্য পেয়েছিলাম। আমার স্বামীর কিছু দেনা ছিল। সেই টাকা দিয়ে কিছু দেনা শোধ করেছি। এখন সরকার সাহয্য না করলে ছেলেমেয়ে নিয়ে না খেয়ে মরতে হবে। তিনি আরও জানান, আমি আমার স্বামি হত্যার বিচার চায়। এসআই সাহেব আলী গুলি করে আমার স্বামীকে হত্যা করেছে। আমি তার ফাঁসি চায়। আমি স্বামী হত্যার মামলা করতে পারিনি। ভিনদেশি এক ছেলে বাদী হয়ে মামলা করেছে। আমি তাকে চিনি না।
সড়ক দুর্ঘটনা রোধে ‘নো হেলমেট নো ফুয়েল’ নির্দেশনা মানছেন না কেশবপুরের ফিলিং স্টেশনের মালিকরা। সড়ক-মহাসড়কে মৃত্যুর মিছিল থামাতে গত বছরের ২০ মে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন (বিআরটিএ) কর্তৃপক্ষ দেশব্যাপী ওই নির্দেশনা জারি করে।
জানা যায়, যশোরের কেশবপুর পৌর সদরের থানার ৬০ ফুট দূরে অবস্থিত মেসার্স এম ভি ফিলিং স্টেশন। এছাড়া মধ্যকুল এলাকায় কেশবপুর ফিলিং স্টেশন ও কেশবপুর সরকারি ডিগ্রী কলেজের সামনে যমুনা ফিলিং স্টেশনসহ ৫টি ফিলিং স্টেশন রয়েছে। অন্য দুইটি সগরদাঁড়ি ও মির্জানগরে গ্রামে অবস্থিত। এসব পাম্পে হেলমেট ছাড়াই মোটরসাইকেলে অবাদে প্রেট্রোল ও অকটেন বিক্রি করা হচ্ছে। এছাড়া ওই পাম্পগুলোতে প্রতি লিটারে ১০০ গ্রাম করে তেল কম দেওয়ার অভিযোগ দীর্ঘদিনের। সূত্র জানায়, প্যাম্পের মালিকরা বেশি মোনাফা করতে দেশের বিভিন্ন তেল ডিপো থেকে গভীর রাতে পচা ও বাদ দেয়া তেল আমদানি করে তা প্রেট্রোল ও অকটেনের সঙ্গে মিশিয়ে বিক্রি করে আসছে। ওই তেল ব্যবহারের অযোগ্য বলে একাধিক মোটরসাইকেল মিস্ত্রি এই প্রতিনিধিকে জানান। এতে যানবাহনের ইঞ্জিন বিকলসহ নানান সমস্যা দেখা দিচ্ছে। এদিকে সারাদেশে অল্প বয়সি তরুণরা মহাসড়ক ও দুরপাল্লার সড়কে দ্রুত গতিতে ঝুঁকিপূর্ণ ভাবে মোটরসাইকেল চালাচ্ছে। যা অত্যন্ত বিপজ্জনক। এমনকি মোটরসাইকেল চালানোকালে তারা হেলমেটসহ নিরাপত্তার সরঞ্জাম ব্যবহার করছে না। এতে সড়কে মৃত্যুর হার বাড়ছে একারনে সরকার সড়ক ও পরিবহন আইন ২০১৮ ধারা ৪৯ এর উপধারা-১, (চ) এবং সড়ক পরিবহন বিধিমালা ২০২২ বিধি- ১৩৬, (২) অনুযায়ী মোটরসাইকেল চালক ও তার সহযাত্রীদের অবশ্যই বিএসটিআই কর্তৃক নির্দেশনা অনুযায়ী হেরমেট ব্যবহার বধ্যতা মূলক করেছে।
কেশবপুরের মোটরসাইকেল চালক আকরাম আলি, সাগর এবং নিছার আলি বলেন, পৌর শহরে অবস্থিত মেসার্স এমভি ফিলিং স্টেশন, কেশবপুর ফিলিং স্টেশন এবং যমুনা ফিলিং স্টেশনে পেট্রোল ও অর্কটেন আনতে গেলে অধিকাংশ সময় লিটারে প্রায় ১০০ গ্রাম তেল কমদেয় এবং পচা দুর্গন্ধ জাতীয় তেল সরবরহ করে। এর প্রতিবাদ করলে তারা তাদের ওপর চড়াওসহ বিভিন্ন হুমকি দেয়। ভুক্তভোগীরা কেশবপুরের তেল পাম্প গুলোর বিরুদ্ধে তদন্ত পূর্বক আইনগত ব্যবস্থা দেওয়ার জন্য অনুরোধ জানিয়েছেন।
কেশবপুর মেসার্স এমভি ফিলিং স্টেশনের মালিক সুনিল কুমার ঘোষ বলেন, এলাকার অধিকাংশ মোটরসাইকেল চালক হেলমেট ব্যবহার করেনা। তাই হেলমেট ছাড়াই তেল দেয়া হয়। এছাড়া গাড়ি থেকে তেল দিতে গেলে অনেক সময় যান্ত্রীক ত্রুটির কারনে তেল কম যায় এবং মাঝেমধ্যে ডিপো থেকে দুর্গন্ধ জাতীয় তেল সরবরহ করা হয়। আমাদের বাধ্য হয়ে গ্রাহকদের কাছে ওই তেল সরবরাহ করতে হয়।
সরকার আসন্ন জুলাই মাস উপলক্ষে নেওয়া কর্মসূচির অংশ হিসেবে পূর্বে ঘোষিত প্রতীকী ‘এক মিনিট ইন্টারনেট ব্ল্যাকআউট’ কর্মসূচি বাতিল করেছে বলে জানিয়েছেন সংস্কৃতিক বিষয়ক উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী।
বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) নিজের ভ্যারিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে এক পোস্টে ফারুকী এই সিদ্ধান্তের কথা প্রকাশ করেন। বলেন, এই নির্দিষ্ট উদ্যোগটি নিয়ে শুরু থেকেই অভ্যন্তরীণ বিতর্ক ছিল।
তিনি লিখেছেন, ‘জুলাই স্মরণে অনুষ্ঠানের একটা কর্মসূচি নিয়ে আমাদের পরিকল্পনা পর্যায় থেকেই দ্বিধা ছিল। একটা মাত্র কর্মসূচিই আমরা কয়েকবার কেটেছি, আবার যুক্ত হয়েছে। আমরা অনেকেই একমত ছিলাম ‘এক মিনিট ইন্টারনেট ব্ল্যাক আউট’ গ্রেট আইডিয়া না সম্ভবত।’
তিনি আরও বলেন, পরে আবার নানা আলোচনায় এটা ঢুকে পড়ে কর্মসূচিতে। অনেক বড় কর্মসূচি এবং বড় একটা দল কাজ করলে এরকম দুয়েকটা ভুল চোখের আড়ালে থেকে যায়।
ইন্টারনেট ব্ল্যাকআউট ধারণার বিষয়ে জনসাধারণের প্রতিক্রিয়ার জন্য কৃতজ্ঞতাও প্রকাশ করেছেন উপদেষ্টা।
জনগণ কর্মসূচি নিয়ে মতামত দেওয়ার জন্য কৃতজ্ঞতা জানিয়ে উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা কৃতজ্ঞ আপনাদের কাছে, সেই কর্মসূচি নিয়ে আপনাদের মতামত জানানোর জন্য।’
তিনি আরও বলেন, আপনাদের অবগতির জন্য জানাচ্ছি, আমরা নিজেদের মধ্যে দ্রুত সভা করে সিদ্ধান্ত নিয়েছি- এক মিনিট প্রতীকী ইন্টারনেট ব্ল্যাক আউট কর্মসূচি থাকছে না। সংশোধিত স্লাইড শেয়ার করে হচ্ছে।
ফারুকী লিখেছেন, ‘অন্যান্য সমস্ত কর্মসূচি অপরিবর্তিত থাকবে। আসুন পুনরায় সংযোগ স্থাপন করি, পুনর্গঠন করি এবং জুলাইয়ের আসল চেতনাকে পুনরুজ্জীবিত করি।’
ভোলার তজুমদ্দিন উপজেলায় চাঁদা না পেয়ে স্বামীকে আটকে রেখে মারধর করে গৃহবধূকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনায় মুল আসামি আলাউদ্দিন সহ আরও এক জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গ্রেফতারকৃতরা হলেন যুবদল কর্মী মো. আলাউদ্দিন ও শ্রমিক দল নেতা মো. ফরিদ উদ্দিন। তারা ওই মামলার এজাহার নামীয় ১ ও ২ নম্বর আসামি।
বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) মধ্যরাতে নোয়াখালীর বিচ্ছিন্ন দ্বীপ হাতিয়া থেকে আলাউদ্দিন এবং ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলা থেকে ফরিদ উদ্দিনকে গ্রেফতার করা হয়।
এর আগে, বুধবার (০২ জুলাই) দুপুরে ভোলার ইলিশা লঞ্চঘাট এলাকা থেকে মামলার ৫ নম্বর আসামিকে গ্রেফতার করে র্যাব। এছাড়াও, ঘটনার পরদিন ভুক্তভোগীর সতিনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এ নিয়ে এই মামলার ৭ আসামির মধ্যে এখন পর্যন্ত চারজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
তজুমদ্দিন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মহব্বত খান জানান, রাতে অভিযান চালিয়ে মামলার প্রধান আসামি আলাউদ্দিন ও ফরিদ উদ্দিনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকি আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
এদিকে, বুধবার (০২ জুলাই) বিকেলে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন ভোলার পুলিশ সুপার মো. শরীফুল হক। তিনি ভুক্তভোগী পরিবারকে বিচারের আশ্বাস দিয়ে বলেন, “কোনো অপরাধীকে ছাড় দেওয়া হবে না।
বৃহস্পতিবার (০৩ জুলাই) বিকাল ৩ টায় জেলা পুলিশ সংবাদ সম্মেলনে জানায়, এখন পর্যন্ত এই মামলায় এজহারনামীয় ৪ জন আসামীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকী আসামীদের গ্রেফতারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
প্রসঙ্গত, সোমবার (৩০ জুন) রাতে ভোলার তজুমদ্দিন উপজেলার চাঁদপুর ইউনিয়নের মোল্লার পুকুর পাড় এলাকায় চাঁদার দাবিতে স্বামীকে আটকে রেখে মারধর করে তার স্ত্রীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে। অভিযুক্তরা স্থানীয় শ্রমিকদল, ছাত্রদল ও যুবদলের নেতাকর্মী বলে জানা গেছে।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কর ও শুল্ক আদায়ের ক্ষেত্রে মোটা অংকের ঘুষের বিনিময়ে কর দাতাদের কর ফাঁকি দেওয়ার সুযোগ করে দেওয়ার অভিযোগে ৫ সদস্য ও কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর সেগুনবাগিচায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ে এক নিয়মিত মিডিয়া ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান দুদকের উপ-পরিচালক মো. আকতারুল ইসলাম।
তিনি বলেন, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মালিক ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের কর্মকর্তাগণ নিজেরা লাভবান হওয়ার জন্য নির্ধারিত পরিমাণ কর আদায় না করে তাদের করের পরিমাণ কমিয়ে দিতেন বলে অভিযোগ পাওয়া গিয়েছে। এক্ষেত্রে, প্রতি বছর সরকার বিপুল পরিমাণ রাজস্ব প্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। কিছু ক্ষেত্রে কর্মকর্তাগণ ঘুষ না পেয়ে কর ফাঁকি দেওয়ার মিথ্যা মামলা করে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান মালিককে হয়রানি করেন বলে জানা যায়।
তিনি আরও বলেন, অনেক করদাতা আগাম কর দেন। আবার কেউ কেউ বেশি কর দেন। নিয়ম হচ্ছে এই কর হিসাব-নিকাশ করার পর বেশি দেওয়া হলে তা ওই করদাতাকে ফেরত দিতে হয়। কিন্তু তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ আর সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের অভিযোগ থেকে জানা যায়, করের বাড়তি টাকা ফেরত পেতে আরো অন্তত অর্ধেক টাকা ঘুষ বা উপহারে খরচ হয়। অভিযোগ রয়েছে, দায়িত্বপ্রাপ্ত কর কর্মকর্তারা করের টাকা ফেরত দিতে নিজেরাও কামিয়ে নিচ্ছেন মোটা টাকা।
অভিযুক্তদের বিষয়ে তিনি বলেন, বিগত কয়েক বছর ধরে বিভিন্ন স্টেশনে চাকুরিকালীন বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে শুল্ক, ভ্যাট ও ক্ষেত্র বিশেষে আয়কর ফাঁকির সুযোগ করে দিয়ে ও নিজে লাভবান হয়ে রাষ্ট্রকে ক্ষতিগ্রস্ত করার মাধ্যমে দুর্নীত, স্বজনপ্রীতি ও অনিয়মের মাধ্যমে জ্ঞাত আয় বহির্ভূত অবৈধ সম্পদ অর্জন করেছেন এমন অভিযোগের প্রেক্ষিতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের ঢাকা পূর্বের কাস্টমস এক্সাইজ অ্যান্ড ভ্যাট কমিশনার কাজী মোহাম্মদ, বেনাপোল স্থল বন্দরের কমিশনার মোঃ কামরুজ্জামান, রাজশাহী সার্কেল-৭-এর উপ কর কমিশনার মো: মামুন মিয়া, আয়কর গোয়েন্দা ইউনিটের অতিরিক্ত কর কমিশনার সেহেলা সিদ্দিকা ও ঢাকা কর অঞ্চল-২-এর কর পরিদর্শক লোকমান আহমেদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন কর্তৃক তথ্যানুসন্ধান কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
চলতি অর্থবছরের শুরুতে দেশের বিভিন্ন গুদামে চাল ও গমের মজুদ রয়েছে ১৭.৬৪ লাখ মেট্রিক টন, যা গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় প্রায় তিন লাখ টন বেশি।
বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে এমন তথ্য দেওয়া হয়েছে।
সরকারি মজুদ, সংগ্রহ ও বিতরণ পরিস্থিতি সম্পর্কে খাদ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গত বছরের ১ জুলাই দেশে চাল ও গমের মোট মজুদ ছিল ১৪.৭৩ লাখ টন। এর মধ্যে চালের মজুদ ছিল ১০.৬০ লাখ টন এবং গমের মজুদ ছিল ৪.১৩ লাখ টন।
নতুন অর্থবছরের শুরুতে চালের মজুদ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৫.৪১ লাখ টনে।
অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে সংগৃহীত ও আমদানিকৃত গমের মোট সংগ্রহের তুলনায় বিতরণ বেশি হওয়ায় গমের মজুদ কমে দাঁড়িয়েছে ২.২৩ লাখ মেট্রিক টনে।
মন্তব্য