আফগানিস্তানের কাবুল থেকে উদ্ধার হওয়া বাংলাদেশের ১২ নাগরিকের ৬ জন দেশে ফিরছেন। দেশের উদ্দেশে কাতারের দোহা থেকে উড়াল দিতে যাচ্ছেন তারা।
ছয় বাংলাদেশির একজন রাজিব বিন ইসলাম মঙ্গলবার দুপুর ১২টায় নিউজবাংলাকে এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, ‘আমরা এখন এয়ারপোর্টে। এমিরেটস এয়ারলাইনসের ইকে ৫৮৪ ফ্লাইটে করে দুবাই হয়ে ঢাকায় ফিরছি। বিমানটি আজ রাত ১১টা ২০ মিনিটে ঢাকায় ল্যান্ড করার কথা।’
অপর পাঁচ বাংলাদেশি হলেন মো. কামরুজ্জামান, মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম, ইমরান হোসেন, আবু জাফর মোহাম্মদ মাসুদ করিম ও শেখ ফরিদ উদ্দিন। তারা সবাই কাবুলে টেলি নেটওয়ার্ক প্রতিষ্ঠান আফগান ওয়্যারলেসের কর্মী ছিলেন।
কাবুল থেকে তাদের সঙ্গে আরও ৬ বাংলাদেশিকে উদ্ধার করা হয়েছিল। ওই ছয়জনকে রাখা হয়েছে রিয়াদে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক ঘাঁটিতে। তাদের সঙ্গে আছে চট্টগ্রামের এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইমেনের দেড়শতাধিক আফগান শিক্ষার্থীও। তাদের সবাইকে দেশে আনার প্রক্রিয়া চলছে।
রোহিঙ্গা সংকটের টেকসই সমাধানে কক্সবাজারে আয়োজিত তিন দিনব্যাপী আন্তর্জাতিক অংশীজন সংলাপের শেষ দিনে আজ মঙ্গলবার বিদেশি কূটনীতিক, জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থা, আন্তর্জাতিক সংগঠন এবং দেশের রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা উখিয়ার রোহিঙ্গা আশ্রয় শিবির পরিদর্শন করেছেন।
প্রতিনিধিরা শিবিরে রোহিঙ্গাদের জীবনযাপন, স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা, খাদ্য সরবরাহ ও অন্যান্য মানবিক সহায়তা কার্যক্রম নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করেন। তারা বিশেষভাবে বিশ্ব খাদ্য সংস্থা (ডব্লিউএফপি) পরিচালিত খাদ্য সরবরাহ কেন্দ্র, হাসপাতাল এবং ইউএনএইচসিআরের স্যানিটারি ন্যাপকিন উৎপাদন কেন্দ্র ঘুরে দেখেন। এ সময় তাঁরা রোহিঙ্গা পরিবারের সঙ্গে কথা বলেন এবং তাদের দৈনন্দিন চ্যালেঞ্জ, দীর্ঘ অনিশ্চয়তা ও ভবিষ্যৎ প্রত্যাশা সম্পর্কে শোনেন।
প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার বাসসকে জানান, অংশগ্রহণকারীদের সরেজমিনে ঘুরে দেখানো হয়েছে যাতে তারা রোহিঙ্গাদের বাস্তব পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে উপলব্ধি করতে পারেন।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ সরকার ও জনগণ মানবিক বিবেচনায় রোহিঙ্গাদের পাশে দাঁড়িয়েছে। তবে আন্তর্জাতিক অর্থায়ন বন্ধ হয়ে গেলে এ শিবিরগুলোতে ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয় দেখা দিতে পারে। এজন্য আমরা দাতা দেশ ও সংস্থাগুলোর কাছে অর্থায়ন অব্যাহত রাখার আহ্বান জানাচ্ছি।’ তিনি সতর্ক করে আরও বলেন, এই সংকট দীর্ঘায়িত হলে তা শুধু বাংলাদেশের ওপর নয়, আঞ্চলিক শান্তি ও নিরাপত্তার ওপরও নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।
কক্সবাজারে কর্মরত বিশ্ব খাদ্য সংস্থার প্রোগ্রাম পলিসি অফিসার শেখ রবিউল আলম জানান, বিদ্যমান তহবিল দিয়ে ডিসেম্বর পর্যন্ত খাদ্য সহায়তা চালানো সম্ভব হবে। কিন্তু এখনো নতুন অর্থায়নের কোনো প্রতিশ্রুতি পাওয়া যায়নি, যা ইতোমধ্যেই শঙ্কার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
তিনি বলেন, ‘নতুন অর্থায়ন না এলে খাদ্য সহায়তার মতো গুরুত্বপূর্ণ মানবিক কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যাওয়ার ঝুঁকি তৈরি হবে।’
এদিকে শিবির পরিদর্শনে রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের উপস্থিতি পুরো কার্যক্রমকে আরও তাৎপর্যপূর্ণ করে তোলে। রাজনৈতিক নেতারা বলেন, রোহিঙ্গা সংকট কোনো একক সরকারের সমস্যা নয়, বরং এটি জাতীয় ঐকমত্যের বিষয়। বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, এনসিপিসহ ১০টি রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধি সংলাপে অংশ নেন। তাদের মতে, সব দলের সক্রিয় সম্পৃক্ততা সংকট মোকাবিলায় বাংলাদেশের অবস্থানকে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আরও শক্তিশালী করবে।
বিদেশি কূটনীতিক ও আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধিরা রোহিঙ্গা সংকট মোকাবিলায় বাংলাদেশের অসাধারণ ভূমিকার প্রশংসা করেন এবং এটিকে বৈশ্বিক মানবিক চ্যালেঞ্জ হিসেবে অভিহিত করেন। তারা মনে করেন, রোহিঙ্গাদের নিরাপদ ও টেকসই প্রত্যাবর্তনের জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সমন্বিত ও কার্যকর উদ্যোগ এখন সময়ের দাবি।
উল্লেখ্য, কক্সবাজারের রোহিঙ্গা সংলাপ থেকে প্রাপ্ত সুপারিশ আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্কে অনুষ্ঠেয় জাতিসংঘের উচ্চপর্যায়ের সম্মেলনে উপস্থাপন করা হবে। আশা করা হচ্ছে, বৈশ্বিক কূটনীতির এ প্ল্যাটফর্ম থেকে সংকট সমাধানে নতুন দিকনির্দেশনা পাওয়া যাবে।
কক্সবাজারে আয়োজিত এ সংলাপে সরকার, জাতিসংঘ, আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক সংগঠন, কূটনৈতিক মহল এবং রাজনৈতিক দলের সক্রিয় অংশগ্রহণ কক্সবাজারকে রূপ দিয়েছে বৈশ্বিক মানবিক কূটনীতির এক গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রে। রোহিঙ্গা আশ্রয় শিবির পরিদর্শনের মধ্য দিয়ে সমাপ্ত হলো তিন দিনের এ সংলাপ।
রোহিঙ্গা সংকটকে বিশ্ব সম্প্রদায়ের কাছে জোরালোভাবে তুলে ধরতে গত রোববার থেকে শুরু হয়েছিল ‘স্টেকহোল্ডার্স’ ডায়ালগ: টেকঅ্যাওয়েজ টু দ্য হাই-লেভেল কনফারেন্স অন দ্য রোহিঙ্গা সিচুয়েশন’ শীর্ষক এই সংলাপ।
যশোরের শার্শার কায়বা সিমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে ভারতে যাওয়ার সময় ৪ জন পুরুষ ও ৩ জন মহিলাকে আটক করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ বিজিবি সদস্যরা। আটককৃতরা সকলেই বাংলাদেশি নাগরিক। মঙ্গলবার সকালে তাদেরকে আটক করা হয়।
আটক আসামীরা হলেন,রথিন্দ্রনাথ গাইনের ছেলে হৃদয় গাইন (২৩),শিশির মন্ডল,সুজিত মন্ডল (৩৪), শ্রীকান্ত গাইনের ছেলে কুমার জিন্দ্র গাইন (৫০), কলিন্ড মন্ডলের ছেলে পাঞ্চু মন্ডল (৩৬),মৃত সুশান্ত নন্দীর মেয়ে পুতুল (২০),বিনয় অধিকারীর মেয়ে তৃষ্ণা অনুকারী (১৭),মৃত শামসুর শেখের মেয়ে ছবুরণ বেগম (৪৫) তারা বিভিন্ন জেলার।
খুলনা ব্যাটালিয়ন (২১ বিজিবি) এর অধিনায়ক লেঃ কর্নেল মোহাম্মদ খুরশীদ আনোয়ার, জানান গোপন সংবাদ এর ভিত্তিতে জানা যায় যে কায়বা বিওপি’র দায়িত্বপূর্ণ সীমান্ত এলাকা দিয়ে অবৈধভাবে বাংলাদেশী নাগরিকরা বাংলাদেশ হতে ভারতে প্রবেশ করতে পারে। উক্ত সংবাদের ভিত্তিতে কায়বা বিওপি‘র একটি টহল দল সীমান্ত শার্শা থানাধীন কায়বা গ্রামস্থ পূর্ব রুদ্রপুর নামক স্থান হতে ২৫ আগস্ট রাত ১১ টার সময় অবৈধভাবে বাংলাদেশ হতে ভারতে প্রবেশের সময় তাদের আটক করা হয়।
বিজিবি অধিনায়ক আরো জানান যে, সাম্প্রতিককালে সীমান্ত দিয়ে অবৈধ অনুপ্রবেশ রোধকল্পে বিজিবি সীমান্তে কঠোর নজরদারি ও টহল তৎপরতা বৃদ্ধির পাশাপাশি সীমান্তবর্তী জনসাধারণকে প্রতিনিয়ত প্রেষণা প্রদান করা হচ্ছে।এবং আটককৃত বাংলাদেশি নাগরিকদের মালামালসহ শার্শাথানায় হস্তান্তরের কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে জানান বিজিবি কর্মকর্তা।
সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগে অতিরিক্ত বিচারপতি হিসেবে নতুন নিয়োগ পাওয়া ২৫ জন শপথ নিয়েছেন।
মঙ্গলবার (২৬ আগস্ট) দুপুর ১টা ৪০ মিনিটে প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ তাদের শপথবাক্য পাঠ করান। এই অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন হাইকোর্ট বিভাগের রেজিস্ট্রার (বিচার) মোয়াজ্জেম হোসাইন।
শপথ নেওয়া ২৫ বিচারপতি হলেন— সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. আনোয়ারুল ইসলাম (শাহীন), আইন ও বিচার বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. সাইফুল ইসলাম, চট্টগ্রামের জেলা ও দায়রা জজ মো. নুরুল ইসলাম, আইন ও বিচার বিভাগের সচিব শেখ আবু তাহের, সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল আজিজ আহমদ ভূঞা, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী রাজিউদ্দিন আহমেদ ও ফয়সাল হাসান আরিফ, আইন ও বিচার বিভাগের যুগ্ম সচিব এস এম সাইফুল ইসলাম, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. আসিফ হাসান ও মো. জিয়াউল হক, ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল দিহিদার মাসুম কবীর, হবিগঞ্জের জেলা ও দায়রা জজ জেসমিন আরা বেগম, বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস কমিশনের সচিব মুরাদ–এ–মাওলা সোহেল, ঢাকা মহানগর দায়রা জজ মো. জাকির হোসেন, সলিসিটর (জেষ্ঠ জেলা জজ) মো. রাফিজুল ইসলাম, ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. মনজুর আলম, মো. লুৎফর রহমান ও রেজাউল করিম, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ফাতেমা আনোয়ার, ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মাহমুদ হাসান, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী আবদুর রহমান, সৈয়দ হাসান যুবাইর, ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ এফ এম সাইফুল করিম, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী উর্মি রহমান এবং ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এস এম ইফতেখার উদ্দিন মাহমুদ।
এর আগে, সোমবার (২৫ আগস্ট) রাতে সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের অতিরিক্ত বিচারপতি হিসেবে ২৫ জনকে নিয়োগ দেয় সরকার। আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আইন ও বিচার বিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।
রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে আইন মন্ত্রণালয়ের সচিব শেখ আবু তাহেরের সই করা প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, রাষ্ট্রপতি সংবিধানের ৯৫(১) অনুচ্ছেদ অনুসারে প্রধান বিচারপতির সহিত পরামর্শক্রমে সংবিধানের ৯৮ অনুচ্ছেদ মোতাবেক উল্লিখিত ২৫ জন ব্যক্তিকে শপথ গ্রহণের তারিখ থেকে অনধিক ২ বছরের জন্য সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের অতিরিক্ত বিচারক নিয়োগদান করিয়াছেন। এই নিয়োগ শপথ গ্রহণের তারিখ হইতে কার্যকর হইবে।
পুলিশের চলমান বিশেষ অভিযানে রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে গত ২৪ ঘণ্টায় মোট ১ হাজার ৭১১ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
এর মধ্যে বিভিন্ন মামলার ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি ১ হাজার ১৭০ জন এবং অন্যান্য অপরাধে জড়িত ৫৪১ জন রয়েছে।
পুলিশ সদর দফতরের এআইজি (মিডিয়া অ্যান্ড পিআর) এ এইচ এম শাহাদাত হোসাইন আজ এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় সারাদেশে পুলিশ একযোগে অভিযান পরিচালনা করে ১ হাজার ৭১১ জন আসামিকে গ্রেফতার করেছে। এ সময় একটি বিদেশি পিস্তল ও চার রাউন্ড গুলি জব্দ করা হয়েছে।
তিন বছরেও শেষ হয়নি নওগাঁ-বদলগাছি আঞ্চলিক সড়কের প্রশস্থকরনের কাজ। জমি থেকে স্থাপনা সরানো বাবদ ১০শতাংশ টাকা কেটে নেওয়া নিয়ে জটিলতা তৈরি হলে কিছু কিছু জয়াগায় কাজ শেষ না হওযায় চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে চলাচলকারীদের। এছাড়াও তিন বছরেও ভূমি অধিগ্রহণের ক্ষতিপূরনের টাকা বুঝে পাননি ক্ষতিগ্রস্তরা।
জানা যায়, শহরের বরুনকান্দি ঠেংভাঙার মোড় থেকে কীর্ত্তিপুর পর্যন্ত প্রায় ৬৮০জন জমি অধিগ্রহণের ক্ষতিপূরনের ৬২ কোটি টাকা পাবে সংশ্লিষ্টদের কাছে। কিন্তু ১০ শতাংশ টাকা কেটে নেওয়া নিয়ে জটিলতার কারণে আর কাউকেই দেওয়া হয়নি ভূমি অধিগ্রহণের টাকা। সড়ক বিভাগের অবহেলা ও উদাসীনতা কারনে তৈরি হয়েছে এমন জটিলত। নিয়ম না থাকলেও সড়ক বিভাগ থেকে স্থাপনা সরানো বাবদ ১০শতাংশ টাকা কেটে নিতে জেলা প্রশাসনকে চিঠি দেয়। আবার ক্ষতিগ্রস্তরাও এই টাকা দিতে রাজি নন। ফলে শুরু হয় এমন জটিলতা। এদিকে জায়গা বুঝে না পেয়ে কাজ রেখে চলে গেছে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান।
নওগাঁ সড়ক বিভাগ সূত্রে জানা যায়, সড়ক বিভাগ ১৯টি প্যাকেজে জেলার বিভিন্ন রাস্তা প্রশস্তকরণের কাজ করছে। এর মধ্যে এক নাম্বার প্যাকেজে শহরের বালুডাঙ্গা বরুকান্দি মোড় থেকে কীর্ত্তিপুর পর্যন্ত প্রায় ১০ কিলোমিটার সড়ক ১৮ ফিট থেকে ২৪ ফিট (চওড়া) প্রশস্তকরণ কাজের প্রকল্প নেওয়া হয়। যার ব্যয় ধরা হয় প্রায় ৫৪ কোটি টাকা। ২০২২ সালের মাঝামাঝি সময়ে সড়ক নির্মাণের দায়িত্ব পান মেসার্স জামিল ইকবাল লিমিটেড নামের ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান। প্রশস্তকরণের এই কাজ করতে গিয়ে বেশ কিছু জায়গায় সড়কের পাশে থাকা ব্যক্তিমালিকানাধীন জমি ও স্থাপনা পড়ে। এসব জমি ও স্থাপনার একটা নির্দিষ্ট মূল্য ধার্য করে অধিগ্রহণ করা হয়।
সড়ক বিভাগ বলছে, ক্ষতিপূরণের ৬২ কোটি টাকা জেলা প্রশাসনের কাছে অনেক আগেই হস্তান্তর করা হয়েছে। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে অধিগ্রহণের জমি হস্তান্তর না করার সড়কের কাজ শেষ করতে পারছেন না।
ক্ষতিগ্রস্ত জমির মালিকরা জানান, ‘তিন বছর পার হলেও জমি অধিগ্রহণের ক্ষতিপূরণের টাকা এখনো তারা বুঝে পাননি। এছাড়াও জমি থেকে স্থাপনা সরানো বাবদ ১০শতাংশ টাকা কেটে নিতে নওগাঁ সড়ক বিভাগ থেকে জেলা প্রশাসন বরাবর একটি চিঠি দেওয়া হলে জটিলতা তৈরি হয়। ফলে ক্ষতিপূরনের টাকার জন্য প্রশাসন ও সড়ক বিভাগের দ্বারে দ্বারে ঘুরেও কোন সমাধান পাচ্ছেন না তারা। প্রায় দেড় মাস আগে মানুষ দেখানোর জন্য নাম মাত্র একজনের কাছে চেক হস্তান্তর করা হলেও এরপর আর কোন অগ্রগতি নেই।’
আল মামুন নামে ক্ষতিগ্রস্ত জমির মালিক বলেন, ‘১০ শতাংশ টাকা কেটে নেওয়া নিয়ে এই জটিলতা দেড় বছর ধরে চলে আসতেছি। আমরা হয়রানির শিকার হচ্ছি। এইভাবে টাকা কেটে নেওয়ার কোন নিয়ম কোন জেলাতে নেই। আমরা দুই বছর থেকে ঘুরতেছি এখনো কোন টাকা পায়নি। আমরা চাই যত দ্রুত সম্ভব জটিলতা নিরসন করে আমাদের পাওনা টাকা দিয়ে দেওয়া হোক।’
জাহাঙ্গীর আলম, জিল্লুর রহমানসহ আরো কয়েকজন ক্ষতিগ্রস্থ জমির মালিক বলেন, ১জমির সকল শুনানি শেষ হয়ে গেছে। আমাদে কাগজপত্র সব সঠিক আছে। টাকার জন্য আমরা শুধু ধরনা দিচ্ছি সড়ক বিভাগে ও ডিসি অফিসে। আজ দিবে কাল দিবে বলে শুধু ঘুরানো হচ্ছে। কিন্তু আমরা কোন টাকা পাচ্ছি না।’
আব্দুর রহমান নামে ক্ষতিগ্রস্থ এক জমির মালিক বলেন, ‘ঠেংভাঙা মোড় এলাকায় ৬ শতাংশ জমি ও স্থাপনার ক্ষতিপূরণের টাকা পাবো। শুধুমাত্র জমির মূল্য বাবদ একটা চেক দেওয়া হয়েছে। স্থাপনার মূল্য এখনও দেওয়া হয়নি। ১০ শতাংশ টাকা কেটে নেওয়া নিয়ে জটিলতায় আটকে আছে। এর জন্য সড়ক বিভাগ দায়ী।’
এদিকে সরেজমিনে দেখা যায়, দীর্ঘ তিন বছরেও যেসব এলাকায় কাজ শেষনি সেসব এলাকায় চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে চলাচলকারী ও এলাকাবাসীকে। বিশেষ করে পাহাড়পুর ও কীর্ত্তিপুর বাজার এলাকায় সড়কের পিচ, ইট, পাথর উঠে খানাখন্দ ও বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। সামান্য বৃষ্টি হলেই গর্তগুলোতে পানি আটকে বড় ধরনের জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। এ সড়ক দিয়ে প্রতিদিন ঝুঁকি নিয়ে চলছে বাস, ট্রাক ও বিভিন্ন যানবাহন। সংস্কার না হওয়ায় হেঁটে চলাচলও কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে এলাকাবাসীর। এর ফলে প্রতিনিয়ত দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন হাজার হাজার মানুষ।
এই সড়কে চলাচলকারী বাস চালক রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘অনেক দিন ধরেই রাস্তার এ অবস্থা। কিন্তু সমস্যার কোনো সুরাহা হচ্ছে না। রাস্তা যখন খারাপ ছিল, তখন কিন্তু কষ্ট ছিল না যতটা না রাস্তার কাজ শুরুর পর কষ্ট হয়েছে। বড় বড় গর্ত সৃষ্টি হয়েছে। একটু বৃষ্টি হলেই এসব গর্তে পানি জমে থাকে।’
এবিষয়ে নওগাঁ সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী রাশেদুল হক বলেন, ‘ক্ষতিপূরণের ৬২ কোটি টাকা জেলা প্রশাসন বরাবর অনেক আগেই হস্তান্তর করা হয়েছে। ডিসি অফিসের পক্ষ থেকে অধিগ্রহণের জমি হস্তান্তর না করার কারণে সড়কের কিছু কিছু জায়গায় কাজ শেষ করা সম্ভব হয়নি। জমি হস্তান্তর করা হলে খুব দ্রুত অসমাপ্ত সড়কের কাজ শেষ করা যাবে।’
এ বিষয়ে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সোহেল রানা বলেন, ‘সড়ক বিভাগ থেকে দেওয়া একটা চিঠির বিষয়ে একটু জটিলতা সৃষ্টি হয়েছিল। এছাড়া ভূমি অধিগ্রহণের মালিকদের মধ্যে কিছু ঝামেলা আছে। কেউ কেউ অভিযোগ দিয়েছে, এমনকি আদালতে মামলা করেছে। তারপরও জনগণের ভোগান্তি লাঘবের জন্য একটা সিদ্ধান্ত হয়েছে। ১০ শতাংশ জটিলতার অবসান করা হয়েছে। জটিলতা থাকলেও আংশিক ক্ষতিপূরণ দিয়ে কাজ শুরু করা হবে। আশা করছি দ্রুত সমাধান হয়ে যাবে।’
এ পর্যন্ত কতজনকে জমি ও স্থাপনার মূল্য বাবদ চেক দেওয়া হয়েছে জানতে চাইলে সংখ্যাটা সরাসরি না বলে বিভিন্ন প্যাকেজে দেওয়া হচ্ছে বলে জানান তিনি।
রাজশাহীর মোহনপুরে সেনাবাহিনীর একটি টহল গাড়িকে পেছন থেকে একটি ট্রাক ধাক্কা দিলে দুইটি যানবাহন রাস্তা থেকে ছিটকে খাদে পড়ে যায়। এতে আটজন সেনাসদস্যসহ মোট ১০ জন আহত হয়েছেন।
মঙ্গলবার (২৬ আগস্ট) ভোর সাড়ে ৫টার দিকে রাজশাহী-নওগাঁ মহাসড়কের মোহনপুর মডেল টাউনের সামনে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
আহতদের মধ্যে ট্রাকের চালক ও তার সহকারীও রয়েছেন।
মোহনপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আতাউর রহমান জানান, দুর্ঘটনায় আহতদের মধ্যে একজনকে রাজশাহী সিএমএইচ এবং দুজনকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বাকিদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
ওসি বলেন, ‘মোহনপুর মডেল টাউনের সামনে সেনাবাহিনীর একটি টহল গাড়িকে একটি ট্রাক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পেছন থেকে ধাক্কা দেয়। এতে সেনাবাহিনীর টহলরত গাড়ি ও ট্রাক রাস্তার পাশের খাদে পড়ে যায়। পরে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা গিয়ে তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠান। দুর্ঘটনার পর ট্রাক চালককে আটক করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ওসি।’
আড়াই বছর পর বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে পেঁয়াজ আমদানি শুরু হয়েছে। প্রথম চালানে ভারতীয় একটি ট্রাকে ১৫ টন পেঁয়াজ বেনাপোল বন্দরে প্রবেশ করেছে।
মঙ্গলবার (২৬ আগস্ট) সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেন বেনাপোল বন্দরের উদ্ভিদ সংগনিরোধ কেন্দ্রের উপ-সহকারী শ্যামল কুমার নাথ।
তিনি জানান, গতকাল (সোমবার) রাত ৮টার দিকে প্রথম চালানে ১৫ মেট্রিক টন ভারতীয় পেঁয়াজবোঝাই একটি ট্রাক বেনাপোল বন্দরে প্রবেশ করেছে। আমদানি করা পেঁয়াজের মান পরীক্ষা শেষে বন্দর থেকে খালাসের অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
পেঁয়াজ আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান বাগেরহাটের এসএম ওয়েল ট্রেডার্স এবং রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান ভারতের ন্যাশনাল ট্রেডিং করপোরেশন।
এর আগে, ২০২৩ সালের মার্চ মাস থেকে বেনাপোল দিয়ে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ ছিল।
বেনাপোল বন্দরের আমদানি-রপ্তানিকারক সমিতির সহ-সভাপতি আমিনুল হক আনু বলেন, এর আগে দেশে উৎপাদিত পেঁয়াজের ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত করতে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ করেছিল সরকার। পরে ভারতও রপ্তানি বন্ধ করে দেয়।
তিনি জানান, বর্তমানে দেশে চাহিদার বিপরীতে আমদানি ও পর্যাপ্ত মজুত থাকলেও অতিরিক্ত মুনাফালোভী ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে দাম বাড়াচ্ছিলেন। এতে পেঁয়াজ কিনতে নিম্ন আয়ের মানুষের গুনতে হচ্ছিল অতিরিক্ত টাকা। অবশেষে সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে বাজার নিয়ন্ত্রণে পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি দেয় সরকার।
কাস্টমস সূত্র জানিয়েছে, প্রতি টন ৩০৫ ডলারে আমদানি মূল্য দেখানো হয়েছে যা বাংলাদেশি টাকায় ৩৭ হাজার ৪২৯ টাকা। আমদানি করা পেঁয়াজ বাজারে মানভেদে ৫৮ থেকে ৬০ টাকার মধ্যে বিক্রি হতে পারে।
বেনাপোল কাস্টমস হাউসের সহকারী কমিশনার রাজন হোসেন জানান, কাস্টমসের আনুষ্ঠানিকতা শেষে পেঁয়াজের চালানটি দ্রুত খালাসের জন্য মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
মন্তব্য