তামাকের রাজ্য রংপুরে দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে কফিসহ বিদেশি কিছু ফলের চাষ।
কৃষি বিভাগ বলছে, অনুকূল আবহাওয়া ও মাটির উর্বরতার কারণে অন্যান্য ফসলের চেয়ে কম খরচে এসব ফলে ভালো ফলন পাচ্ছেন চাষিরা। পাশাপাশি চারাও বিক্রি হচ্ছে। এ কারণে কফি, ত্বীন, পেপিনোমেলন, ড্রাগন ও মাল্টা চাষে আগ্রহও বাড়ছে।
জেলায় বছর কয়েক আগে শখের বশেই কফি ও বিদেশি এসব ফল চাষ শুরু করেন নয়া উদ্যোক্তারা। এখন বাণিজ্যিকভাবেই এসবের ব্যাপক চাষ হচ্ছে।
তামাকের রাজ্যে কফি চাষ
রংপুরের বিভিন্ন উপজেলায় অন্যান্য ফসলের মতোই বিস্তৃত মাঠজুড়ে তামাকের চাষ হয়। অন্যান্য ফসলের চেয়ে লাভজনক হওয়ায় এ অঞ্চলে তামাক চাষ জনপ্রিয়।
এ বছর তামাকের পাশাপাশি রংপুরের তারাগঞ্জ ও কাউনিয়া উপজেলায় কফি চাষ শুরু হয়েছে। এই দুটি উপজেলায় ১ দশমিক ২৮ একর জমিতে ১১টি বাগানে কফি চাষ করা হয়েছে।
এর মধ্যে রংপুরের কাউনিয়া উপজেলায় ১০টি আর তারাগঞ্জ উপজেলায় ১টি বাগান রয়েছে।
তারাগঞ্জ উপজেলার গোয়ালবাড়ী গ্রামের যুবক মোখলেছুর রহমান জানান, ইউটিউবে দেখে ২০১৭ সালে কক্সবাজারের এক ব্যক্তির মাধ্যমে ভারত থেকে ১ হাজার কফি গাছের চারা নিয়ে আসেন। ২৮ শতক জমিতে এসব চারা রোপণ করে শেষ পর্যন্ত ৪৫০টি গাছ বাঁচাতে পেরেছিলেন। এ বছর প্রতিটি গাছে প্রায় ৩ হাজার করে কফি ধরেছে।
তিনি জানানলেন, এই কফি গাছগুলোর বয়স ৩০ পার হলে ফলন বাড়বে বহুগুণ। তখন প্রায় কোটি টাকার কফি বিক্রি সম্ভব হবে। এসব কারণে অনেকেই বাণিজ্যিকভাবে কফি চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন।
মোখলেছুর বলেন, ‘নতুন কফি বাগানের অভিজ্ঞতা অর্জনের পাশাপাশি প্রায় আড়াই লাখ টাকার কফি ও বীজ বিক্রি করেছি।’
কাউনিয়া উপজেলার নাজিরদহ গ্রামের চাষি ইয়াছিন আলী বলেন, ‘আমি ১০ শতক জমির ওপর ৮৮টি গাছ লাগিয়েছি। গাছগুলো বেশ বড় হয়েছে। আশা করছি দ্রুত ফল আসবে।’
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কাউনিয়া উপজেলায় ইয়াছিনের মতো আরও নয় যুবক এই কফি চাষ শুরু করেছেন। প্রত্যেকেই ১০ শতক জমির ওপর ৮৮টি করে গাছ লাগিয়ে পরিচর্যা করছেন।
ত্বীন চাষে ভাগ্যবদল
মরু অঞ্চলের জনপ্রিয় ফল ত্বীন এখন চাষ হচ্ছে রংপুরের মিঠাপুকুর শাল্টিগোপালপুরে। ইনাম হাসান রাহাত ও তার বড় ভাই আসিফ হাসান রাতুল এই ত্বীন ফল চাষ করছেন।
ইনাম বলেন, ‘সৌদি আরব থেকে এক ব্যক্তির মাধ্যমে বীজ সংগ্রহ করি। দুই ভাই মিলে নিজেদের ৩৩ শতক জমিতে শুরু করি ত্বীন চাষ।
‘এই ফল মূলত বালুতে ভালো হয়। প্রথমদিকে লালমাটিতে এই ফলের চাষ নিয়ে খানিকটা সন্দেহ হলেও এখন দারুণ হচ্ছে গাছগুলো। মাত্র ছয় মাসের মধ্যে গাছগুলোতে ত্বীন ফল আসে।’
তিনি আরও বলেন, ‘ফলগুলো দেখতে অনেকটা আমাদের দেশের ডুমুর ফলের মতো। একেকটি ফলের ওজন প্রায় ১০০ গ্রাম। এ বাগান থেকে এখন পর্যন্ত মোট ১০০ কেজি ফল সংগ্রহ করা হয়েছে।
‘প্রতি কেজি বিক্রি হয়েছে ৭০০ থেকে ১ হাজার টাকায়। সে হিসেবে প্রতিটি ফলের দাম হয় এক ডলার। আর প্রতিটি চারা বিক্রি করা হচ্ছে ৫০০ থেকে ৭০০ টাকায়।’
আসিফ হাসান রাতুল জানান, ত্বীন ফলের চাষের কথা জানাজানি হওয়ায় দূরদূরান্ত থেকে মানুষ আসছেন ফলের গাছ দেখতে। অনেকেই ত্বীন চাষে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। ফল বিক্রির পাশাপাশি লাভ হচ্ছে চারাও বিক্রি করেও।
সফলতা পেপিনোমেলনেও
পেপিনোমেলন নামে মহাঔষধি অস্ট্রেলিয়ান এই ফল বাংলাদেশে প্রথম চাষ হচ্ছে রংপুরের মিঠাপুকুরে। শিক্ষকতা পেশা ছেড়ে এই ফল চাষ করছেন এ এস এম সেলিম। অস্ট্রেলিয়া থেকে আনা এই ফলগাছ এখন ব্যাপক সাড়া ফেলেছে কৃষি বিভাগেও।
পেপিনোমেলন ফল ১ ফুট লম্বা। গাছটি দেখতে বেগুন গাছের মতো।
সেলিম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমি সাভারে একটি বেসরকারি কলেজে শিক্ষকতা করতাম। ইউটিউবে দেখে আমি এই গাছের প্রতি আগ্রহী হই। ৪ বছর আগে অস্ট্রেলিয়ায় থাকা এক বন্ধুর সঙ্গে যোগাযোগ করে একটি চারা আনি।
‘সেই চারা জমির একটি কোণে রোপণ করি। সেখান থেকে অনেক চারা হয়। এই একটি গাছ থেকেই আমার স্বপ্ন পূরণ হয়।
এখন ১০ শতক জমির ওপর চাষ করছি এই ফল। ফলের পাশাপাশি চারাও বিক্রি করছি।’
তিনি জানান, ক্যানসার, কিডনী সংক্রান্ত জটিলতা, ডায়াবেটিসসহ ২১টি রোগের মহা ওষুধ হিসেবে কাজ করে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ এই ফলটি।
সেলিমের দাবি, দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের কৃষক এই ফলের চারা সংগ্রহ করে রোপণ করছেন। কম খরচে লাভ বেশি হওয়ায় বাণিজ্যিকভাবে চাষে আগ্রহী হচ্ছেন স্থানীয় অন্য কৃষকরাও।
সেলিমের প্রতিবেশী হারুণ বলেন, ‘সেলিম ভাইয়ের কাছ থেকে চারা কিনে আমিও পাঁচ শতক জমিতে এই ফল লাগিয়েছি। গাছগুলো বড় হচ্ছে। তার কাছ থেকে পরামর্শ নিয়ে পরিচর্যা করছি।’
ড্রাগন চাষে লাভ দেখছে চাষিরা
রংপুরের তারাগঞ্জে বুড়িরহাট গ্রামের শামীমা আক্তার ড্রাগন চাষ করে সফল হয়েছেন। এ বছর ৪০ হাজার টাকা লাভও করেছেন তিনি।
শামীমা নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমার বাবা একজন সফল কৃষক ছিলেন। তিনি তার জমিতে মাছ, লিচু, কলা, আদা চাষে সফল হয়েছিলেন। আদা চাষ করে কৃষি বিভাগ থেকে পুরস্কারও পেয়েছেন। আব্বার সেই কৃষিকাজ দেখে ছোটবেলা থেকেই লেখাপড়ার পাশাপাশি বাড়ির বিভিন্ন জায়গায় ফুল-ফল ও ঔষধি গাছের চারা লাগাতাম।
‘২০১৫ সালে স্বামী ফরিদ আলমের সঙ্গে ভিয়েতনাম গিয়ে ড্রাগন ফল খেয়ে খুব মজা পাই। এরপর নিজেই সিদ্ধান্ত নেই এই ফল চাষের। আব্বার পরামর্শে তার ৫৫ শতক জমিতে ২০১৬ সালের শেষ দিকে ৮০০টি ড্রাগন ফলের চারা রোপণ করি। সেখানে এবার ফল এসেছে।’
শামীমা জানান, প্রতিটি গাছে বছরে ৫০ থেকে ৭০টি পর্যন্ত ড্রাগন ফল ধরে। ওজনে একটি ফল ৬০০-৮০০ গ্রাম পর্যন্ত হয়।
কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা যায়, রংপুর জেলাজুড়ে ২৭টি ড্রাগন বাগান রয়েছে। এ বছর ৯ হেক্টর জমিতে ১৮০ টন ড্রাগন উৎপাদন হয়েছে। এক বিঘা জমিতে ড্রাগন ফল চাষ করতে দেড় লাখ টাকার মতো প্রয়োজন হয়। চারা রোপণের ১ বছরের মধ্যে ফলন আসতে শুরু করে।
রংপুর হর্টিকালচার সেন্টারের উপপরিচালক আফতাব হোসেন জানান, ড্রাগন চাষ অত্যন্ত লাভজনক। এতে খরচ কম আবার লাভ বেশি। তা ছাড়া বিদেশি এই ফলগুলো পুষ্টিগুণে ভরপুর।
মাল্টা চাষও বেড়েছে
রংপুরে এ পর্যন্ত সর্বোচ্চ ৭২ হেক্টর জমিতে চাষ হচ্ছে মাল্টা। উৎপাদন হয়েছে ১ হাজার ৪৪০ টন।
বদরগঞ্জে ১১ দশমিক ৫০ হেক্টর, তারাগঞ্জে ১২ দশমিক ৫০ হেক্টর, পীরগঞ্জে ২৫ হেক্টর, পীরগাছায় ১ দশমিক ১১ হেক্টর, মিঠাপুকুরে ৬ হেক্টর, গঙ্গাচড়ায় ৯ দশমিক ৪ হেক্টর, কাউনিয়ায় ২ দশমিক ৬ হেক্টর, সদরে ৩ হেক্টর, মহানগরে ১ দশমিক ৫০ হেক্টরে চাষ হয়েছে মাল্টার।
পীরগঞ্জের কুমেদপুর ইউনিয়নের শিবপুর গ্রামে মালয়েশিয়াপ্রবাসী মিজানুর রহমান বাণিজ্যিকভাবে মাল্টা চাষ করছেন। ২০১৬ সালে ৩ বিঘা জমিতে লাগানো ৪০০ গাছ এখন পুরোদমে ফল দিচ্ছে। এর পাশাপাশি তিনি চারা উৎপাদন করে চারাপ্রতি ৮০ থেকে ২০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি করছেন।
মিজানুর জানান, সঠিকভাবে চাষ এবং সময়মতো কৃষি বিভাগের পরামর্শ পেলে মাল্টা চাষ করে অর্থনৈতিকভাবে উন্নতি করতে পারবেন চাষীরা।
যা বলল কৃষি বিভাগ
রংপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কৃষি প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা রিয়াজ উদ্দিন নিউজবাংলাকে জানান, নতুন নতুন ফল চাষে কৃষকদের মধ্যে আগ্রহ বাড়ছে। সম্ভাবনাময় নতুন বিদেশি ফলের চাষে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে। এসব ফল চাষ সম্প্রসারণে এর উৎস, চাষাবাদ প্রক্রিয়া ও প্রযুক্তি বিষয়ে তাদের পরামর্শও দেয়া হচ্ছে।
আরও পড়ুন:নোয়াখালীতে গ্রাম আদালত সম্পর্কে ব্যাপক সচরতা বৃদ্ধিতে স্থানীয় সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানসমূহের অংশ গ্রহণের সমন্বিত পরিকল্পনা বিষয়ক কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
নোয়াখালী জেলা প্রশাসনের আয়োজনে বুধবার সকাল ১১ টার দিকে (২৫ জুন) জেলা প্রশাসকের কার্যালয় তৃতীয় তলায় মিনি কনফারেন্স হলরুমে কর্মশালায় উপস্থিত ছিলেন, নোয়াখালী জেলা প্রশাসক খন্দকার ইশতিয়াক আহমেদ, স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক জালাল উদ্দিন,নোয়াখালী অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ ইয়াসিন, গ্রাম আদালত নোয়াখালী ম্যানেজার আহসানুল্লাহ চৌধুরী মামুনসহ এনজিও প্রতিনিধি, সাংবাদিক, রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ,সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।
যশোরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের একটি বিচারাধীন মামলার নথি থেকে এজাহারের কপি রহস্যজনকভাবে গায়েব হয়ে গেছে। আদালতের নথি থেকে গুরুত্বপূর্ণ এই কাগজ হারিয়ে যাওয়ার ঘটনায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে আমলে নিয়ে মামলার বেঞ্চ সহকারী হুমায়ুন কবির ও আসামিপক্ষের আইনজীবী আহসান হাবিব মুকুলকে শোকজ করেছেন বিচারক। তাদের তিন কার্যদিবসের মধ্যে এ বিষয়ে ব্যাখা দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
আদালত সূত্র জানায়, ঘটনাটি ঘটে গত ২২ জুন যশোরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ প্রথম আদালতে। ওই দিন মামলাটির (এসসি-১৬৬৯/২০১৮) সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য নির্ধারিত ছিল। আদালতে আসামি, রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি ও আসামিপক্ষের আইনজীবী—সবাই উপস্থিত ছিলেন।
সাক্ষ্যগ্রহণ চলাকালে বিচারক মো. সালেহুজ্জামান মামলার নথি পর্যবেক্ষণ করে দেখতে পান, নথিতে মামলার এজাহারের কপি নেই। তাৎক্ষণিকভাবে তিনি আদালতের বেঞ্চ সহকারীকে বিষয়টি অবগত করলে তিনি জানান, সাক্ষ্য গ্রহণের আগে আইনজীবী আহসান হাবিব মুকুল তার কাছ থেকে নথি নিয়ে গিয়েছিলেন এবং এজাহার দেখে প্রয়োজনীয় তথ্য লিখে নিয়েছিলেন। এরপর তিনি আবার নথি বিচারকের কাছে জমা দেন।
এরপর এজলাসেই বিচারক আইনজীবীর কাছে জিজ্ঞাসা করলে তিনি এ বিষয়ে কিছুই জানেন না বলে মন্তব্য করেন। ফলে বিষয়টি নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়। জেলা আইনজীবী সমিতির নেতারাসহ সিনিয়র আইনজীবীরা এজলাসে হাজির হন। একপর্যায় বিচারক ওই দুইজনকে শোকজ করে আগামী ১৩ আগস্ট মামলার পরবর্তী দিন ধার্য করেন।
বেঞ্চ সহকারী হুমায়ুন কবির বলেন, ‘বিচারক এজলাসে ওঠার আগে আইনজীবী মামলার নথি নিয়েছিলেন। পরে ফেরত দেন। আমি নিজে নথিতে কোনো হেরফের করিনি। আইনজীবী কিংবা আইনজীবীর সহকারীর মাধ্যমে এই ঘটনা ঘটতে পারে।’
অন্যদিকে, আইনজীবী আহসান হাবিব মুকুল জানান, তিনি নথি নিয়েছিলেন ঠিকই, তবে বিচারক এজলাসে চলে আসায় তা যথাযথভাবে বেঞ্চ সহকারীর কাছে ফিরিয়ে দিয়েছেন। তিনি আসামির চালান কপি থেকে তথ্য নিয়েছেন। এজাহার সংক্রান্ত বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না বলেও দাবি করেন।
যশোর জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট এম এ গফুর বলেন, ‘ঘটনাটি আমাদের নজরে এসেছে। একজন আইনজীবী এমন কাজ করতে পারেন না। আমরা বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে পর্যবেক্ষণ করছি।’
আদালত ও আইনজীবী সমিতি সূত্র আরও জানায়, আদালতে থাকা মামলার মুল কপি থেকে মামলার এজাহারের কপি সরিয়ে নিয়ে বাড়তি সুবিধা নেওয়ার সুযোগ নেই। এ ছাড়া এজাহার কপি হারিয়ে গেলেও মামলার বিচারের ক্ষেত্রে প্রভাব পড়ার সম্ভাবনা নেই। কারণ ওই মামলার এজাহারের ফটোকপি রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলির কাছে সংরক্ষিত থাকে। এর বাইরেও অনেক মাধ্যমে মামলার এজাহারের কপি পাওয়ার সুযোগ রয়েছে।
তবে, মুল নথিতে এজাহারের কপি না থাকাটা সমীচীন নয়। এ বিষয়টি অবশ্যই খতিয়ে দেখা প্রয়োজন বলে জানায় সূত্র।
কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে সংবাদ প্রকাশের জের ধরে মিজানুর রহমান রিপন (৪৮) নামের এক স্থানীয় গণমাধ্যম কর্মীকে মারধর ও লাঞ্চিতের ঘটনা ঘটেছে। মিজানুর রহমান রিপন ফিলিপনগর ইউনিয়নের ইসলামপুর গ্রামের আজাহার আলীর ছেলে।
গত রবিবার সন্ধার দিকে দৌলতপুর উপজেলা পরিষদ বাজারে এই ঘটনা ঘটে। মিজানুর রহমান রিপন ঢাকা থেকে প্রকাশিত দৈনিক আমর সংবাদ পত্রিকার দৌলতপুর উপজেলা প্রতিনিধি ও অনলাইন নিউজ পোর্টাল ডেইলি নিউজ বাংলার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক হিসেবে কাজ করে আসছেন। এঘটনায় ওই দিন রাতে ভূক্তভুগী নিজে বাদী হয়ে দৌলতপুর থানায় একটি লিখিত এজাহার দায়ের করেন।
এযাহার সূত্রে জানাযায়, গত ৮ জুন উপজেলার তারাগুনিয়া থানার মোড় এলাকার তারাগুনিয়া ক্লিনিকে আখি খাতুন (২২) নামের এক প্রশুতি মায়ের মৃত্যুর ঘটনায় তিনি সহ উপজেলার বেশ কয়েকজন গণমাধ্যম কর্মী সংবাদ প্রকাশ করে। তারি জের ধরে উপজেলা বাজারে থাকা সরকার নিষিদ্ধ ক্লিনিক বেবি নার্সিং হোম এর মালিক আহসান হাবিব কালুর ছোট ছেলে খালিদ হাসান আর্জু উপজেলা বাজারে তাকে মারধর করে।
এবিষয়ে মিজানুর রহমান নামের ওই গণমাধ্যম কর্মী বলেন, গতকাল বিকেলে আমি উপজেলা বাজারে বাড়ির দৈনন্দিন বাজার করছিলাম এসময় খালিদ হাসান আর্জু উপজেলা বাজারের বেবী ক্লিনিক মালিকের ছেলে আমার উপর হামলা চালায়। এসময় সে আমাকে বলে আমার হাসপাতালে যে ডাক্তার আসে সেই ডাক্তারের নামে তুরা নিউজ করেছিস বলে আমার উপর হামলা চালিয়ে বেদড়ক মারধর করে। এঘটনার পর আমি থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছি।
গণমাধ্যম কর্মীকে মারধরের বিষয়ে, দৌলতপুর উপজেলার একজন প্রবীন গণমাধ্যম কর্মী আব্দুর রাজ্জাক বলেন, যে ধরনের ঘটনা ঘটেছে এটি কখনই কাম্য নয়। বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষে ব্যাবস্থা নেওয়া উচিৎ।
এঘটনায় দৌলতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি নাজমুল হুদা জানান, এ ব্যাপারে অভিযোগ পেয়েছি, তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
অভিযুক্ত খালিদ হাসান আর্জু
বাংলাদেশ বিমান বাহিনী কর্তৃক ফেনী এলাকায় গত '২৪ এর ভয়াবহ বন্যা পরবর্তী বিভিন্ন উন্নয়নমূলক, সংস্কার ও পুর্নগঠন কার্যক্রম উদ্বোধন করা হয়েছে।
সোমবার (২৩ জুন) সকাল ১১ টায় ফেনী ছাগলনাইয়া উপজেলার ঘোপাল ইউনিয়নের দুর্গাপুরে হাবিব উল্যাহ খাঁন উচ্চ বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে এ উপলক্ষে এক আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর প্রধান এয়ার চীফ মার্শাল হাসান মাহমুদ খাঁন, বিবিপি, ওএসপি, জিইউপি, এনএসডব্লিউসি, পিএসসি।
বিমান বাহিনী প্রধান ফেনী এলাকায় বন্যা পরবর্তী উন্নয়নমূলক সংস্কার ও পুর্নগঠন কার্যক্রম উদ্বোধন করেন। তিনি বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের জন্য অনুদানের চেক হস্তান্তর করেন। হাবিব উল্যাহ খান উচ্চ বিদ্যালয় প্রাঙ্গনে বৃক্ষরোপণ ও পরে গণমাধ্যম কর্মীদের সাথে মতবিনিময় করেন। উদ্বোধন উপলক্ষে বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত করা হয়।
বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর সহায়তায় ছাগলনাইয়া উপজেলার হাবিব উল্যাহ খান উচ্চ বিদ্যালয় এর নবনির্মিত শাহীন ভবন উদ্বোধন এবং দুর্গাপুর সিংহনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও নুরুল কোরআন ইসলামিয়া মাদ্রাসার উন্নয়ন কাজ পরিদর্শন করেন।
এ ছাড়া বিমান বাহিনী কর্তৃক ফেনী জেলার বন্যা দুর্গতদের সহায়তায় ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম, বন্যা দুর্গতদের জন্য মেডিকেল সেবা পরিচালনা ও চিকিৎসা সেবা সহায়তা প্রদান কার্যক্রম পরিদর্শন ও বৃক্ষরোপণ কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করেন বিমান বাহিনী প্রধান।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিমান বাহিনী প্রধান ফেনী জেলায় ২০২৪ সালের আকস্মিক বন্যাকালীন ও বন্যা পরবর্তী সময়ে বিমান বাহিনীর ভুমিকার ভূয়সী প্রসংশা করেন এবং পাশাপাশি উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নে যে সকল প্রতিষ্ঠান আর্থিক, ত্রাণ ও বিভিন্নভাবে সার্বিক সহায়তা প্রদান করেছেন তাদের প্রতি ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। তিনি বিমান বাহিনীর উন্নয়ন কার্যক্রমে স্থানীয় প্রশাসন ও এলাকাবাসীর স্বতঃস্ফূর্ত সহযোগিতার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন এবং ভবিষ্যতেও বিমান বাহিনী দেশ ও জনগণের পাশে থাকবে বলে আশ্বাস প্রদান করেন।
তিনি আরো বলেন, বন্যার সাথে তৎকালীন বৈরী আবহাওয়া ও বিছিন্ন যোগাযোগ ব্যবস্থায় বাংলাদেশ বিমান বাহিনী পেশাদারিত্বের সাথে বন্যার্তদের সাহায্যে এগিয়ে আসে, যা যথেষ্ট চ্যালেঞ্জিং ছিল। এ পরিস্থিতিতে প্রধান উপদেষ্টা দিকনির্দেশনায় এবং বিমান বাহিনী প্রধানের সার্বিক তত্ত্বাবধানে ভয়াবহ এ বন্যাদুর্গত কুমিল্লা, নোয়াখালী এবং বিশেষ করে ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত ফেনী জেলায় হেলিকপ্টার ও ইউএভি এর মাধ্যমে দ্রুততম সময়ে এরিয়াল রেকোনাইসেন্স মিশন পরিচালনা করে বন্যা দুর্গত মানুষের সহায়তায় প্রয়োজনীয় জরুরী উদ্ধার, ত্রাণ বিতরণ ও চিকিৎসা কার্যক্রমে কার্যকর ভূমিকা পালন করে।
বিমান বাহিনীর সূত্র জানায়, সামগ্রিকভাবে বিমান বাহিনী বন্যা পরবর্তী এ পুনর্বাসন কার্যক্রমের আওতায় ফেনী জেলার ছাগলনাইয়া ও ফুলগাজী উপজেলার বহু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, এতিমখানা, ধর্মীয় উপাসনালয় ও রাস্তা-ঘাটসহ বিভিন্ন স্থাপনা নির্মাণ এবং সংস্কার কার্যক্রম ইতিমধ্যে সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে। এছাড়া, দূর্গাপুর, ছাগলনাইয়্যা-এ অবস্থিত হাবিব উল্যাহ্ খান উচ্চ বিদ্যালয়ের ক্রমবর্ধমান ছাত্র-ছাত্রী ও স্থানীয় জনসাধারণের চাহিদা বিবেচনা করতঃ শাহীন ভবন নামে একটি চারতলা ভিত বিশিষ্ট দুইতলা ভবন আসবাবপত্রসহ নির্মাণ করা হয়েছে, যেটি দুর্যোগকালীন সময়ে আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবেও ব্যবহৃত হতে পারে। এ উন্নয়নমূলক কার্যক্রমগুলো মাঠপর্যায়ে বাস্তবায়ন করেছে ঢাকাস্থ বিমান বাহিনী ঘাঁটি বাশার ও বিমান বাহিনী ঘাঁটি একে খন্দকার।
অনুষ্ঠানে সহকারী বিমান বাহিনী প্রধান (প্রশাসন), বিমান ঘাঁটি বাশারের এয়ার অধিনায়ক, বিমান বাহিনীর উর্ধ্বতন কর্মকতাবৃন্দ, ফেনী জেলা প্রশাসক, সামরিক ও অসামরিক কর্মকর্তাবৃন্দ, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) মৃত্তিকা ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের এক শিক্ষার্থীকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাড়ি ফেরার পথে মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে অপহরণ করে মুক্তিপন দাবি করে দুষ্কৃতিকারীরা।
পরে মুক্তিপণ না পেয়ে মোবাইল ফোন-মানিব্যাগ রেখে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীকে ছেড়ে দেয় অপহরণকারীরা।
সোমবার (২৩ জুন) বরিশাল থেকে গ্রামের বাড়ি ঝিনাইদহ যাওয়ার পথে মাদারিপুরে সকাল ৮টার দিকে বাস থেকে নামলে অপহরণের শিকার হন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী। ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর নাম মো. আসাদ, তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ১১তম ব্যাচের শিক্ষার্থী। তার গ্রামের বাড়ি ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলায়।
আসাদের পরিবার ও বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, অপহৃত শিক্ষার্থীর বড় চাচা মারা যাওয়ায় আজ ভোরে ৬টায় বরিশাল থেকে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়ে মাদারিপুর পর্যন্ত যান বাসে। বাস থেকে নেমে মাদারিপুর নেমে ঝিনাইদহে যাওয়ার জন্য গাড়ি খুঁজতেছিলেন এমন সময় মাইক্রোবাসটি তাকে ঝিনাইদহে পৌঁছে দিবে বলে উঠিয়ে নেয়। উঠিয়ে নেয়ার পর অপহরণকারীরা পরিবারের সঙ্গে ০১৫১৮৪৯৫৬০৯ নম্বর থেকে যোগাযোগ করে মুক্তিপণ দাবি করে। বিষয়টি পরিবারের মাধ্যমে জানাজানি হলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন পুলিশের সহযোগিতা নেন, প্রশাসনের তৎপরতার খবর পেয়ে অপহরনকারীরা তার সব কিছু রেখে তাকে ছেড়ে দেন।
এ বিষয়ে আসাদের সহপাঠী রাফিদ হাসান জানান, আসাদের চাচা মারা যাওয়ায় ও আজ ভোরের দিকে বরিশাল থেকে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দেন, পথিমধ্যে এই ঘটনার শিকার হন ।
এ বিষয়ে আসাদের বাবা বলেন, আসাদের বড় চাচা গতকাল রাতে মারা যাওয়ায় আজকে ভোরে বাড়ি আসার পথে মাদারিপুর থেকে মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে মুক্তিপণ দাবি করে। মুক্তিপণ না পেয়ে ওর মোবাইল ফোন ও মানিব্যাগ নিয়ে ছেড়ে দিয়েছে। পরে অন্য একটি বাসে করে আসাদ বাড়ি ফিরছে বলে জানান।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সোনিয়া খান সনি বলেন, মৃত্তিকা ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের এক শিক্ষার্থীকে বরিশাল থেকে ঝিনাইদাহ বাড়ি যাওয়ার পথে মাদারিপুরে আটকিয়ে মুক্তিপণ দাবি করা হচ্ছে, এমন ঘটনা জেনে সাথে সাথে মাদারিপুর পুলিশকে কল করি। শিক্ষার্থী এখন নিরাপদে আছে সে বাড়ি ফিরতেছে শিক্ষার্থী এবং পরিবারের সাথে কথা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে হাসেম আলী (৩৫) নামে এক নির্মাণ শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। রোববার (২২ জুন) সকাল ৯টার দিকে উপজেলার মথুরাপুর ইউনিয়নের হোসেনাবাদ গোড়ের পাড়া গ্রামে এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত হাসেম আলী দৌলতপুর উপজেলার সদর ইউনিয়নের গোবরগাড়া গ্রামের মৃত আছান শেখের ছেলে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, নির্মাণাধীন একটি ভবনে ইট ভেজাতে গিয়ে বৈদ্যুতিক মোটরে কাজ করার সময় অসাবধানতাবশত বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন হাসেম আলী। তাৎক্ষণিকভাবে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে দৌলতপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
দৌলতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজমুল হুদা বলেন, “বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে একজনের মৃত্যুর খবর পেয়েছি। এ বিষয়ে অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”
সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবি) এক ছাত্রীকে অচেতন করে ধর্ষণের অভিযোগে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক মো. মোখলেসুর রহমানকে প্রধান করে শনিবার এ কমিটি গঠন করা হয়। কমিটিতে তিন কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
কমিটির অন্য দুই সদস্য হলেন- সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. মো সাইফুল ইসলাম এবং ফুড ইঞ্জিনিয়ারিং ও টি টেকনোলজি বিভাগের অধ্যাপক বেলাল শিকদার।
এসব তথ্য জানিয়ে শাবি প্রক্টর মো. মোখলেসুর রহমান বলেন, আমরা ইতোমধ্যে কাজ শুরু করেছি। নির্ধারিত সময়ে রিপোর্ট দেবো। এর সাথে আরও কেউ জড়িত কি না তা খুঁজে বের করার চেষ্টা করা হবে। যাদেরই সম্পৃক্ততা পাওয়া যাবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এরআগে শুক্রবার বিকেলে ওই ছাত্রী বাদি হয়ে সিলেটের কতোয়ালি থানায় ৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন।
মামলায় শান্ত তারা আদনান এবং স্বাগত দাস পার্থ’র নাম উল্লেখ করে অজ্ঞতনামা আরও তিনজনকে আসামি করা হয়েছে।
আদনান ও পার্থকে বৃহস্পতিবার রাতেই আটক করে পুলিশ। পরে মামলায় তদের গ্রেপ্তার দেখানো হয়। তারা দু'জনই শাবির সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ২০২১-২২ সেশনের শিক্ষার্থী।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, গ্রেপ্তার শান্ত তারা আদনান নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন। তিনি শাবি ছাত্রলীগের সভাপতি খলিলুর রহমানের অনুসারী ছিলেন। আওয়ামী লীগ শাসনামলে ছাত্রলীগের বিভিন্ন কর্মসীূচতে তাকে দেখা গেছে। আদনান বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যান্ড দল ‘নোঙর’-এরও সদস্য ছিলেন।
অপরদিকে, ধর্ষণের অভিযোগে গ্রেপ্তার হওয়া আরেক শিক্ষার্থী স্বাগত দাস পার্থ গত বছরের জুলাইয়ের অভ্যুত্থানে সক্রিয় ছিলেন বলে জানিয়েছেন একাধিক শিক্ষার্থী। তার ফেসবুকে প্রোফইলেও জুলাই আন্দোলনের সমর্থনে ছবি যুক্ত রয়েছে। তবে কয়েকজন শিক্ষার্থীর অভিযোগ, পার্থ ছাত্রলীগের কর্মী ছিলেন। তবে তিনি তেমন সক্রিয় ছিলেন না।
এদিকে, পার্থ বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যসংগঠন ‘দৃক থিয়েটার’-এর কর্মী ছিলেন বলে জানা গেছে।
জানা যায়, বৃহস্পতিবার বিকেলে ভুক্তভোগী ছাত্রী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর বরাবর ধর্ষণের লিখিত অভিযোগ করেন।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর অভিযোগ এবং বিশ্ববিদ্যালের শৃঙ্খলা-বডি সূত্রে জানা যায়- গত ২ মে সন্ধ্যারাতে সহপাঠী শান্ত তারা আদনান এবং স্বাগত দাস পার্থের সঙ্গে শহরের কনসার্টে যাচ্ছিলেন ওই ছাত্রী। কনসার্টে যাওয়ার পূর্বে তারা ওই ছাত্রীকে সুরমা এলাকার একটি মেসে নিয়ে যান। এ সময় ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীকে অচেতন করে ধর্ষণ করেন আদনান এবং পার্থ। একইসাথে এই ঘটনার ভিডিও এবং মেয়েটির নগ্ন ছবি ধারণ করেন। পরে ওইসকল ভিডিও ও নগ্ন ছবি দেখিয়ে আদনান এবং পার্থ ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীকে নিয়মিত ব্ল্যাকমেইল করছিলেন এবং ঘটনা জানাজানি করলে ভিডিও ও ছবি অনলাইনে ছেড়ে দেওয়ার হুমকিও দেন।
বৃহস্পতিবার বিকেলে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী প্রক্টর বরাবর অভিযোগ করলে প্রক্টর অধ্যাপক মোখলেছুর রহমান তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা হিসেবে পুলিশকে জানান। পরে পুলিশ আদনান এবং পার্থকে আটক করে প্রক্টর অফিসে নিয়ে আসেন। এরপর প্রক্টরের সঙ্গে আলোচনা শেষে তাদেরকে থানায় পুলিশ হেফাজতে নেন।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক মোখলেছুর রহমান বলেন, 'বৃহস্পতিবার বিকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক নারী শিক্ষার্থী শ্লীলতাহানির বিষয়ে অভিযোগ করেন। অভিযোগের প্রেক্ষিতে ঘটনার সত্যতা পেয়েছি আমরা। বর্তমানে অপরাধীরা পুলিশ হেফাজতে আছে এবং মামলার বিষয়ে আইনি প্রক্রিয়া চলমান।'
এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. সাজেদুল করিম বলেন, 'প্রশাসনের পক্ষ থেকে যে যে পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন তা নেওয়া হচ্ছে।'
মন্তব্য