নাম চশমার খাল। চট্টগ্রাম নগরের মেয়র গলি এলাকায় এ খালের পাশে মূল সড়কে চলাচল করে বিভিন্ন যানবাহন। খাল ও সড়কের মাঝে ফুটপাত।
ফুটপাতের উচ্চতা অপেক্ষাকৃত কম হওয়ায় পথচারী ও সড়কের যাত্রীরা একটু অসতর্ক হলেই পড়ে যান খালে। পড়ে যায় যানবাহনও। এতে মারাত্মক দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন অনেক। মির্জাপুর, রেজু, মহেশ খালসহ এমন ঝুঁকিপূর্ণ আরও কয়েকটি খাল রয়েছে নগরে।
চট্টগ্রাম নগরে এমন অসংখ্য খাল ও নালা দিন দিন বিপজ্জনক হয়ে ওঠায় যাত্রীদের কথা ভেবে ব্যক্তিগত উদ্যোগে স্লাব বসিয়ে এগুলোর কোথাও কোথাও ঢেকে দেয়া হয়েছিল। তবে জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের আওতায় স্লাবগুলো সরিয়ে ফেলা হয়। বেশির ভাগ খালের পাশের পুরোনো প্রতিরোধক দেয়াল ভেঙে ফেলা হয়েছে। এতে মাত্র কয়েক দিনের ব্যবধানে তিনজন প্রাণ হারান।
চট্টগ্রাম নগরের মুরাদপুর এলাকায় ২৫ আগস্ট সকাল সাড়ে ১০টার দিকে রাস্তা পার হওয়ার সময় পা পিছলে চশমা খালে পড়ে মুহূর্তের মধ্যে তলিয়ে যান নগরের চকবাজার এলাকায় ব্যবসায়ী ছালেহ আহমেদ। মাইজভান্ডার দরবার শরিফে যাওয়ার জন্য মুরাদপুরে এসেছিলেন তিনি। সেখান থেকে বাসে করে দরবার শরিফে যাওয়ার কথা ছিল তার। বৃহস্পতিবার বিকেল পর্যন্ত ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরিদল তার খোঁজ পায়নি।
এর আগে ৩০ জুন সিএনজিচালিত অটোরিকশার চালক সুলতান আহমদ ও যাত্রী খাদিজা বেগমের মৃত্যু হয়। খালের পাশে সড়ক দিয়ে যাওয়ার সময় অটোরিকশাটি পিছলে পড়ে যায় খালে।
চট্টগ্রাম শহরে জলাবদ্ধতার কারণে গত ছয় বছরে নালা-নর্দমা ও খালে পড়ে পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। সবাই জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের আওতায় থাকা খাল-নালায় পড়ে মারা গেছেন।
চট্টগ্রামের দীর্ঘদিনের সমস্যা জলাবদ্ধতা নিরসনে মেগা প্রকল্পের কাজ চলছে। প্রকল্পের অধীনে নগরের প্রধান খালগুলো খনন, দুই পাশে রিটেইনিং ওয়ালসহ নানা অবকাঠামোর কাজ করা হচ্ছে। এ কারণে খালের পাশে প্রতিরোধক দেয়াল ভেঙে ফেলায় পাড় দিয়ে চলাচল করতে দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন লোকজন।
অনেকে পা পিছলে পড়ে যান খালে। অবস্থা বেশি বেগতিক হয় বৃষ্টির সময়। কারণ হালকা বৃষ্টিতেই নগরের সড়ক-খাল-নালা পানিতে একাকার হয়ে পড়ে। তখন সড়ক, নালা বা খালকে আলাদা করে চিহ্নিত করতে পারেন না পথচারীরা।
ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করেছেন, দায়সারা কাজ করছে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ)। যাত্রী বা পথচারীদের জন্য নিরাপত্তার বিকল্প ব্যবস্থা করা ছাড়াই নিজেদের খেয়ালখুশিমতো যেখানে-সেখানে খোঁড়াখুঁড়ির কাজ করছে। খালগুলো উন্মুক্ত রাখছে।
নগরের মুরাদপুর এলাকার ব্যবসায়ী তবারুক তাহসান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বুধবার যে জায়গায় ব্যবসায়ী পানিতে তলিয়ে গেছেন সেখানে আগে কালভার্ট ছিল। খাল খননের জন্য সেই কালভার্ট ভেঙে ফেলা হয়েছে। তারপর থেকে খালটি উন্মুক্ত। কালভার্ট থাকলে ওই লোক দুর্ঘটনায় পড়তেন না।’
নগর পরিকল্পনাবিদরা জানিয়েছেন, উন্মুক্ত খালগুলোর পাশে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা করতে হবে। এ ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট সংস্থাকে সতর্ক সংকেতের ব্যবস্থা করতে হবে। নয়তো প্রাণহানি দিন দিন বাড়বে।
পরিকল্পিত চট্টগ্রাম ফোরামের আহ্বায়ক ও নগর পরিকল্পনাবিদ দেলোয়ার হোসেন মজুমদার নিউজবাংলাকে বলেন, ‘পৃথিবীর কোথাও এভাবে খাল উন্মুক্ত রেখে উন্নয়নকাজ হয় না। সিডিএ পর্যাপ্ত নিরাপত্তাব্যবস্থা ছাড়া দায়িত্ব এড়াচ্ছে। শহরজুড়ে থাকা খালগুলোয় পানি উঠলে তা মরণফাঁদে পরিণত হচ্ছে। সিডিএর উচিত প্রতিটি খালের বিপজ্জনক জায়গাগুলোতে সতর্কতা সংকেত দেয়া। পর্যাপ্ত নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।
খাল-নালায় পড়ে এত মানুষের মৃত্যুকে নিছক বিপদ হিসেবে দেখছেন জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের সংশ্লিষ্টরা।
জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল শাহ আলী বলেন, ‘বিপদ কাউকে বলে আসে না। বৃষ্টির কারণে কাজ বন্ধ আছে। কাজ চলাকালীন সতর্কবার্তা থাকে। কাজ শুরু করার আগেও খালটি উন্মুক্ত ছিল। আর এলাকার লোকজন তো জানে রাস্তার পাশে খাল আছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘রাস্তার পাশে ফুটপাত, সেটা পেরিয়ে নালা। ফুটপাত মূল সড়ক থেকে কিছুটা উঁচুতে। তবে কাজ শেষ হলে আমরা আরও উঁচু করে দেব যেন গাড়ি ফুটপাতে উঠতে না পারে। একই সঙ্গে খালের দুই পাশে ছোট করে রঙিন রেলিং দিয়ে দেব যেন মানুষ বুঝতে পারে এটা নালা বা খাল।’
কচ্ছপ গতিতে চলছে জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্প
দীর্ঘদিনের জলাবদ্ধতা সমস্যা নিরসনে ‘চট্টগ্রাম শহরের জলাবদ্ধতা নিরসনকল্পে খাল পুনর্খনন সম্প্রসারণ, সংস্কার ও উন্নয়ন’ শীর্ষক একটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ)। ২০১৭ সালের আগস্ট মাসে সিডিএর প্রকল্প অনুমোদন দেয় একনেক। সিডিএর ৫ হাজার ৬১৬ কোটি টাকার এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে সেনাবাহিনীর ৩৪ ইঞ্জিনিয়ার কনস্ট্রাকশন ব্রিগেড। প্রথম দফায় ২০১৭ সালের ১ জুলাই থেকে ২০২০ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত প্রকল্পের মেয়াদকাল ধরা হয়।
২০১৮ সালের ২৮ এপ্রিল থেকে খালের আবর্জনা অপসারণের মধ্য দিয়ে শুরু হয় প্রকল্পের কার্যক্রম। ইতিমধ্যে নগরের খালগুলো থেকে ৩ হাজার ১৭৯টি অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছে। ব্যয় হয়েছে ১ হাজার ৭৭৪ কোটি টাকা।
চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের প্রধান প্রকৌশলী কাজী হাসান বিন শামস বলেন, ‘এরই মধ্যে প্রকল্পের মেয়াদ এক বছর বাড়িয়ে ২০২১ সালের জুন পর্যন্ত করা হয়েছিল। এখন আরও দুই বছর বাড়িয়ে ২০২৩ সালের জুন পর্যন্ত করা হচ্ছে প্রকল্পের মেয়াদ। প্রকল্পের অগ্রগতি এখন পর্যন্ত ৫০ শতাংশ।’
বিলীন হয়ে গেছে ১২টি খাল
চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের দায়িত্বশীল একটি সূত্র জানায়, ১৯৬৯ সালে মহানগরীর প্রথম ড্রেনেজ মাস্টারপ্ল্যান তৈরি করে আমেরিকান প্রতিষ্ঠান জনস স্নেলস অ্যান্ড কোম্পানি। নগরের পতেঙ্গার নেভাল অ্যাকাডেমি থেকে কালুরঘাট সেতু পর্যন্ত ৩৪টি খালের অস্তিত্ব চিহ্নিত করে ম্যাপ তৈরি করে প্রতিষ্ঠানটি। এরপর ২০১৯ সালে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ পরিচালিত জরিপে খালের সংখ্যা দাঁড়ায় ২২টি। অর্থাৎ ৫০ বছরে ১২টি খাল বিলীন হয়ে গেছে।
এ ছাড়া বিদ্যমান ২২টি খালের একটি বড় অংশই সরকারি-বেসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান এবং ব্যক্তিগত পর্যায়ে বছরের পর বছর দখল হয়েছে। খালের জায়গায় বহুতল ভবন হয়েছে। এ ছাড়া অবাধে ময়লা-আবর্জনা ফেলার কারণে ভরাটও হয়েছে খালগুলো। এতে করে খালের স্বাভাবিক গতিপথও ব্যাহত হয়েছে। স্বাভাবিক প্রবাহ না থাকায় খালগুলো দিয়ে বৃষ্টির পানি সরছে না।
জলাবদ্ধতা নিরসন মেগা প্রকল্পের আওতায় দখল হয়ে যাওয়া খালগুলো উদ্ধার করা হচ্ছে। পাশাপাশি খাল খনন করা হচ্ছে। তবে মানুষ সচেতন না হলে এর সুফল মিলবে না বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের প্রধান প্রকৌশলী কাজী হাসান বিন শামস।
তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘১২টি খাল বিলীন হয়ে গেছে। শত শত টন বর্জ্য নানাভাবে প্রতিদিনই খালে পড়ছে। খাল খনন করার একটি প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে। তবে একদিকে খাল খনন করলে অন্যদিকে ময়লার ভাগাড় তৈরি হচ্ছে। এভাবে চললে খননের সুফল পাওয়া যাবে না।’
আরও পড়ুন:টানা ৩ দিনের বৃষ্টিতে বেনাপোল বন্দর এলাকায় জলবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। বন্দর অভ্যন্তরের অনেক স্থানে হাটু পানি জমায় মারাত্বক ভাবে ব্যহত হচ্ছে পণ্য খালাস প্রক্রিয়া। যানবাহন ও নিরাপত্তাকর্মীদের চলাচলে অনুপযোগী হয়ে পড়ায় বন্দরের ৯.১২.১৫.১৬ ও ১৮ নম্বর সেড থেকে লোড আনলোড বন্ধ হয়ে আছে।
ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় সামান্য বৃষ্টি হলেই বন্দরে হাটু পানি জমে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়ে থাকে। কয়েক বছর ধরে এ দূর্ভোগ হলেও নজর নাই বন্দর কর্তৃপক্ষের। তবে বন্দর কর্তৃপক্ষ বলছেন, রেলকর্তৃপক্ষ কালভাট না রেখে মাটি ভরাট করায় পানি নিষ্কাসনে বাধা গ্রুস্থ্য হচ্ছে।
তবে এসব শেড ও ওপেন ইয়ার্ড অধিকাংশই দীর্ঘ মেয়াদি পরিকল্পনা নিয়ে তৈরী হয়নি। বন্দর সড়কের উচ্চতার চেয়ে পণ্যগারগুলো নিচু হওয়ায় একটু বৃষ্টিপাত বেশি হলে পানি নিষ্কাষনের অভাবে পণ্যগার ও ইয়াডে জলবদ্ধতা তৈরী হয়। এতে পানিতে ভিজে যেমন পণ্যের গুনগত মান নষ্ট হয় তেমনি চলাচলের বিঘ্ন ঘটছে। তবে আজ সকাল থেকে সেচ যন্ত্র চালিয়ে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
বেনাপোল বন্দর পরিচালক শামিম হোসেন জানান, বন্দরের জলবদ্ধতা প্রতি বছরে তৈরী হয়। বিশেষ করে রেল বিভাগ কালভাট না রেখে মাটি ভরাট করায় সমস্যার সন্মুখিন হতে হচ্ছে। বন্দরের পানি নিষ্কাসন ব্যবস্থা বন্ধ হয়ে পড়েছে। তবে দ্রুত এ অবস্থা কাটিয়ে তুলতে পাশ্ববর্তী হাওড়ের সাথে বন্দরের ড্রেন তৈরীর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। প্রেরক: রাশেদুর রহমান রাশু, বেনাপোল যশোর ।
কক্সবাজারের চকরিয়ায় গত রোববার (৬ জুলাই) মালুমঘাট বাজার থেকে পুলিশের উপর হামলা চালিয়ে এক যুবক পালিয়ে যায়। পালিয়ে যাওয়া সে যুবক সাজ্জাদ হোসেন (২০) কে কক্সবাজারের ডিবি পুলিশ কলাতলীর একটি আবাসিক হোটেল থেকে আটক করে।
মঙ্গলবার (৮ জুলাই) দিবাগত রাত তিনটায় কক্সবাজারের একটি আবাসিক হোটেল (ওয়ার্ল্ড বিচ রিসোর্ট) অভিযান পরিচালনা করে কক্সবাজারের ডিবি পুলিশ। রাত প্রায় তিনটায় নেশাগ্রস্ত অবস্থায় ওই হোটেলের একটি কক্ষ থেকে তাকে আটক করা হয়।
চকরিয়া থানা পুলিশের বিশেষ নজরদারি ও কক্সবাজারের গোয়েন্দা পুলিশের শ্বাসরুদ্ধকর অভিযানে আসামি সাজ্জাদ হোসেন কে আটক করতে সক্ষম হয় কক্সবাজার ডিবি পুলিশ।
এবিষয়ে চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম বলেন, পলাতক আসামি সাজ্জাদ কে কক্সবাজার ডিবি পুলিশ আটক করেছে। প্রাথমিকভাবে সদর মডেল থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর চকরিয়া থানায় নিয়ে আসা হবে। তার বিরুদ্ধে একটি পুলিশ এসল্ট মামলা করা হয়েছে।
পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জে করতোয়া নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের অভিযোগে যৌথবাহিনীর অভিযানে একজনকে দুই লাখ টাকা অর্থদণ্ড প্রদান করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (৮ জুলাই) রাত ৯টার দিকে শালডাঙ্গা ইউনিয়নের ধুলাঝাড়ি বাজারের করতোয়া নদীসংলগ্ন এলাকায় অভিযানটি চালানো হয়।
দেবীগঞ্জ সেনা ক্যাম্পের ক্যাম্প কমান্ডার মেজর জুবায়ের হোসেন সিয়ামের নেতৃত্বে সেনাবাহিনী ও দেবীগঞ্জ থানা পুলিশের সমন্বয়ে এ অভিযান পরিচালিত হয়।
অভিযানে বালু উত্তোলনের কাজে ব্যবহৃত দুইটি ট্রাক্টরসহ চালক রাজু ইসলাম ও শান্ত আহমেদকে আটক করা হয়। পরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাহমুদুল হাসান ঘটনাস্থলে এসে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন।
আদালতের রায়ে রাজু ইসলামকে বালু মহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইনের ধারা লঙ্ঘন করায় দুই লাখ টাকা অর্থদণ্ড দেওয়া হয়, অনাদায়ে তিন মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেন বিচারক। তবে রাজু ইসলাম অর্থদণ্ডের অর্থ পরিশোধ করায় ট্রাক্টর দুটি ছেড়ে দেওয়া হয়।
স্থানীয় প্রশাসন জানায়, অবৈধভাবে বালু উত্তোলন রোধে যৌথবাহিনীর অভিযান চলমান থাকবে।
কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলায় মাত্র এক মাসের ব্যবধানে একই ক্লিনিকে সিজারিয়ান ডেলিভারির সময় দুই প্রসূতির মৃত্যু হয়েছে। সর্বশেষ সোমবার (৭ জুলাই) রাতে মুন্নি খাতুন (২৫) নামে এক অন্তঃসত্ত্বা নারী সিজারিয়ান অপারেশনের সময় মারা যান। এর আগে ৮ জুন ওই ক্লিনিকেই আখি খাতুন (২২) নামের আরেক প্রসূতির মৃত্যুর অভিযোগ ওঠে। পরপর এমন দু’টি মৃত্যুর ঘটনায় এলাকায় চরম উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। ক্লিনিক মালিকের ছেলে মাছরাঙ্গা টেলিভিশনের কুষ্টিয়া জেলা প্রতিনিধি হওয়ায় প্রভাব খাটিয়ে বিষয়টি ধামাচাপা দেয়ার চেস্টা করছে বলে জানাগেছে।
সোমবার রাতে মুন্নির মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী ক্লিনিক মালিক আবুল হোসেনের ব্রাকপাড়া এলাকার বাড়িতে হামলা চালিয়েছে বলে জানিয়েছেন পুলিশ। পরে তারা গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
নিহত মুন্নি খাতুন উপজেলার তারাগুনিয়া ব্রাকপাড়া এলাকার মঞ্জু হোসেনের মেয়ে। আর নিহত আখি খাতুন পূর্ব কবিরাজপাড়া গ্রামের ইমনের স্ত্রী।
মুন্নির পরিবারের সদস্যরা জানান, গর্ভাবস্থায় জটিলতা দেখা দিলে সোমবার তাকে উপজেলার বিভিন্ন ক্লিনিকে নেওয়া হয়। কিন্তু চিকিৎসকরা ঝুঁকির কথা বলে কুষ্টিয়া বা রাজশাহীতে রেফার করার পরামর্শ দেন। সন্ধ্যায় তাকে তারাগুনিয়া থানার মোড় বাজারের আবুল হোসেনের মালিকানাধীন তারাগুনিয়া ক্লিনিক নামের একটি বেসরকারি ক্লিনিকে নেওয়া হলে কর্তৃপক্ষ সিজারিয়ানে সম্মত হয়। কিন্তু রাত ৯টার দিকে অপারেশনের সময়ই মুন্নির মৃত্যু হয়।
এ বিষয়ে তারাগুনিয়া ক্লিনিকের মালিক আবুল হোসেন বলেন, “রোগী কীভাবে মারা গেছে সেটা ডাক্তাররাই ভালো বলতে পারবেন। আমি নিজে অপারেশনে ছিলাম না, তাই কিছু জানি না। টাকা দিয়ে বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন।”
অপারেশনকারী চিকিৎসক ডা. সফর আলী বলেন, “রোগীকে ওটিতে আনার আগে অ্যানেসথেসিয়া চিকিৎসক ওষুধ প্রয়োগ করেন। আমরা ওটিতে ঢুকেই দেখি রোগী স্ট্রোক করেছে। এরপর দ্রুত নবজাতকের প্রাণ রক্ষায় সিজারিয়ান সম্পন্ন করি।”
এ বিষয়ে দৌলতপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. তৌহিদুল হাসান তুহিন বলেন, “একই প্রতিষ্ঠানে পরপর দুই প্রসূতির মৃত্যু অত্যন্ত উদ্বেগজনক। আমরা বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে খতিয়ে দেখছি। আজই ক্লিনিকটি পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”
দৌলতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজমুল হুদা বলেন, “গতকাল রাতে তারাগুনিয়া এলাকার একটি ক্লিনিকে প্রসূতির মৃত্যুর ঘটনায় ক্লিনিক এলাকায় উত্তেজনা ও হট্টগোলের আশঙ্কায় আমি তাৎক্ষণিকভাবে পুলিশ পাঠাই। পরে জানতে পারি, নিহত নারীর এলাকা থেকে কিছু লোকজন ক্লিনিক মালিকের বাড়িতে হামলা চালায়। আমরা দ্রুত সেখানে পুলিশ পাঠিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনি। প্রসূতির মৃত্যুর ঘটনায় এখন পর্যন্ত থানায় কোনো লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়নি। শুনেছি দুই পক্ষ নিজেদের মধ্যে বিষয়টি সমাধান করে নিয়েছে।”
এবিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবদুল হাই সিদ্দিকী বলেন, এক মাসের মধ্যে দুইজন রোগীর মৃত্যু অত্যান্ত দুঃখজনক। ঘটনায় কর্তৃপক্ষকে বলবো তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য।
একই ক্লিনিকে এক মাসের ব্যবধানে দুই প্রসূতির মৃত্যুকে কেন্দ্র করে এলাকায় চরম ক্ষোভ ও আতঙ্ক বিরাজ করছে। এ ঘটনায় স্থানীয়রা স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে দ্রুত তদন্ত করে দায়ীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন।
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি'র জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও ভোলা-২ (বোরহানউদ্দিন-দৌলতখানের) সাবেক সংসদ সদস্য মো: হাফিজ ইব্রাহিমের নামে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার কাছে সেলিম নামে এক ব্যক্তির দেওয়া অভিযোগটি মিথ্যা, বানোয়াট ও ষড়যন্ত্রমূলক বলে দাবি করা হয়েছে।
রোববার বিকেলে বোরহানউদ্দিন উপজেলার বড়মানিকায় শহীদ জিয়া স্মৃতি সংসদের আয়োজনে বৃক্ষরোপন কর্মসূচিতে গণমাধ্যমকর্মীদের দেয়া স্বাক্ষাতকারে এ দাবি করেন হাফিজ ইব্রাহিম।
এর আগে দৈনিক ইত্তেফাক, সমকাল, যায়যায়দিন সহ বেশ কয়েকটি পত্রিকার ডিজিটাল প্লাট ফরমে একটি সংবাদে দেখা যায়, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার কাছে হাফিজ ইব্রাহিমের বিরুদ্ধে জোরপূর্বক জমি দখলের অভিযোগ তুলে সেলিম নামে এক ব্যক্তি অভিযোগ করছেন।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে গণমাধ্যমকর্মীদের হাফিজ ইব্রাহিম বলেন, সংবাদটি ডিজিটাল প্লাট ফরমে প্রকাশ হওয়ার পর আমার নজরে আসে। আমি মনোযোগ দিয়ে তার অভিযোগ শুনি। যে ব্যক্তি আমার নামে জমি দখলের অভিযোগ তুলেছেন। তিনি আমার নির্বাচনী এলাকার বাসিন্দা না। আমি খবর নিয়ে জেনেছি, তিনি ভোলা-১ সদর আসনের বাসিন্দা ভোলা সদর আসনের সাবেক এমপি ও মন্ত্রী মরহুম মোশারেফ হোসেন শাহজাহানের বাড়ির পাশে তার বাড়ি। আমি খোঁজ নিয়ে জানতে পারি সেলিম নামে ওই ব্যক্তির সাথে তার আপন ভাতিজি জামাইয়ের দীর্ঘদিন ধরে জমি-জমা নিয়ে বিরোধ রয়েছে তার ভাতিজি জামাই তাকে হুমকি ধামকি দিয়ে থাকতে পারে এ বিষয়ে আমার কিছুই জানা নেই। এমনকি ওই বিষয়ে ভোলা সদর থানায় মামলা রয়েছে।
হাফিজ ইব্রাহিম আরও বলেন, আসন্ন সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে একটি মহল আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে। পতিত সরকারের পলাতক একটি কুচক্রী মহল বিএনপির নামে মিথ্যা প্রোপাগান্ডা ছড়াচ্ছে ও দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে। তিনি সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে বলেন আপনারা এই ঘটনার পেছনে যে আসল সত্য রয়েছে তা উদঘাটন করুন।
জুলাই-আগস্ট ছাত্র আন্দোলনের সময় রাজশাহী মহানগরীর একটি থানা থেকে লুট হওয়া অস্ত্র, ম্যাগাজিন ও গুলি উদ্ধার করেছে র্যাব-৫।
রোববার রাত সাড়ে ১২টার দিকে নগরীর টিকাপাড়া এলাকার একটি বালুর স্তূপের আনুমানিক ২ ফুট গভীর থেকে এগুলো উদ্ধার করা হয়।
সোমবার সকালে র্যাব-৫ এর মিডিয়া সেল থেকে পাঠানো প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।
অভিযানে একটি ৭.৬২ মি.মি. বিদেশি পিস্তল, একটি ম্যাগাজিন এবং এক রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়েছে।
র্যাব জানায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র্যাব-৫; সিপিএসসি’র একটি আভিযানিক দল জানতে পারে, ছাত্র আন্দোলন চলাকালীন লুট হওয়া অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র, ম্যাগাজিন ও গুলি দুষ্কৃতকারীরা বোয়ালিয়া থানাধীন টিকাপাড়া এলাকায় লুকিয়ে রেখেছে। পরে নিরপেক্ষ সাক্ষীদের উপস্থিতিতে অভিযান চালিয়ে বালুর স্তূপের ভেতর থেকে বিদেশি পিস্তল, ম্যাগাজিন ও গুলি উদ্ধার করে র্যাবের গোয়েন্দা দল।
এ বিষয়ে বোয়ালিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বাসস’কে জানান, এটি পুলিশের ব্যবহৃত আগ্নেয়াস্ত্র। তবে কোন থানার অস্ত্র সেটি নিশ্চিত করা যায়নি। কারণ পিস্তলের গায়ে বাট নম্বর ঘষা-মাজার চিহ্ন স্পষ্ট। উদ্ধারকৃত বিদেশি পিস্তল, ম্যাগাজিন ও গুলি বোয়ালিয়া থানায় জিডির পর হস্তান্তর করা হয়েছে।
মানিকগঞ্জের শিবালয়ে স্থানীয় মোহামেডান ইয়ুথ ক্লাবের উদ্যোগে শহীদ জিয়া স্মৃতি ফুটবল টুর্ণামেন্ট শুরু হয়েছে । উক্ত খেলা উদ্বোধন করেন, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল ( বিএনপি) কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও জেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটির ১ নং সদস্য , জেলা বিএনপির সাবেক সাধারন সম্পাদক এসএ জিন্নাহ কবির ।
শনিবার (৫ জুলাই) বিকাল ৪ টায় শিবালয় সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে শহীদ জিয়া স্মৃতি ফুটবল টুর্ণামেন্ট উদ্বোধন করা হয় ।
বিশেষ অতিথি ছিলেন, মানিকগঞ্জ জেলা যুবদলের আহবায়ক কাজী মোস্তাক হোসেন দিপু, জেলা বিএনপির সাবেক কৃষি বিষয়ক সম্পাদক ও উপজেলা বিএনপি'র সহ-সভাপতি এবং জেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটির সদস্য মো: লোকমান হোসেন, উপজেলা বিএনপি সভাপতি রহমত আলী লাভলু, সম্পাদক মিজানুর রহমান লিটন, সাংগঠনিক সম্পাদক নাসির উদ্দিন, জেলা কৃষকদলের সহ-সভাপতি মাসুদুর রহমান মাসুদ,জেলা বিএনপির সাবেক প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক ও দৌলতপুর উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারন সম্পাদক মো: ফেরদৌস রহমান, উপজেলা যুবদলের আহবায়ক মো: হোসেন আলী, উপজেলা সেচ্ছাসেবক দলের আহবায়ক মো: শহিদুল ইসলাম ।
এছাড়া উপস্থিত ঘিওর উপজেলা বিএনপির স্থানীয় সরকার বিষয়ক সম্পাদক মো: রাজা মিয়া মেম্বার, জেলা যুবদলের যুগ্ম আহবায়ক আসিফ ইকবাল রনি, জেলা যুবদলের যুগ্ম আহবায়ক আখতারুজ্জামান আক্তার, জেলা যুবদলের যুগ্ম আহবায়ক মামিনুল ইসলাম মমিন, জেলা যুবদলের সদস্য মোসলেম উদ্দিন,জেলা ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক সাকিব খান অয়ন, জেলা ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারন সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম জিহাদ প্রমূখ । সভাপতিত্ব করেন,মোহামেডান ইয়ুথ ক্লাবের ইঞ্জিনিয়ার মহিদুর রহমান কাজল ।
প্রধান অতিথি এসএ জিন্নাহ কবির বলেন, শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়া রহমান এবং বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া এদেশে প্রথম ফুটবল খেলাকে আন্তর্জার্তিক পর্যায়ে নিয়ে যান। তাদের চেষ্টায় সার্ফ ফুটবল টুর্ণামেন্ট আয়োজন করার সম্ভব হয়। মাদক মুক্ত সমাজ গড়তে যুব সমাজকে খেলার মাঠে আনতে হবে । মাদক মুক্ত সমাজ গড়তে হলে খেলাধুলার বিকল্প নাই ।
স্থানীয় মোহামেডান ইয়ুথ ক্লাব আয়োজিত টুর্ণামেন্টে নক-আউট পদ্ধতিতে আটটি দল অংশ নিচ্ছে। উদ্বোধনী খেলায় টাইব্রেকারে মানিকগঞ্জ কৈট্রা ফিউচার ফুটবল একাডেমী ৫-৪ গোলে পাবনার নবযুগ মিলন সমিতিকে হারায়। রেফারি ছিলেন আবুল কালাম।
মন্তব্য