সম্পদ ব্যবস্থাপনা কোম্পানি রেইস অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট পরিচালিত ১০টি মিউচ্যুয়াল ফান্ড লভ্যাংশ ঘোষণার পরপর ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে এই খাত নিয়ে আবার আগ্রহ তৈরি হয়েছে।
৯ আগস্টের পর আট কর্মদিবস শেষে আবার এক দিনে এই খাতে লেনদেন ছাড়াল ১০০ কোটি টাকা। ১১৫ কোটি টাকার কাছাকাছি লেনদেন হয়েছে খাতটিতে।
আগের দিন রেইসের ১০টি মিউচ্যুয়াল ফান্ড গত ৩০ জুনে সমাপ্ত অর্থবছরের জন্য লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে। এর আগেও ১৭টি ফান্ড লভ্যাংশ ঘোষণা করেছ, যার মধ্যে আইসিবি অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি পরিচালিত কয়েকটি ফান্ড ছাড়া বাকি সবগুলো যে লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে, তা যেকোনো সঞ্চয়ী হিসাবের চেয়ে বেশি।
তার পরেও ফান্ডগুলো ক্রমেই দর হারাচ্ছিল, আর বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ যে কমে আসছিল, তার প্রমাণ লেনদেনে।
বছরের পর বছরের খরা কাটিয়ে গত ৩, ৫ ও ৯ আগস্ট পরপর তিনটি কর্মদিবসে লেনদেন হয়েছিল ১০০ কোটি টাকার বেশি।
৩ আগস্ট লেনদেন হয় ১০৩ কোটি ৮১ লাখ টাকা। ৫ আগস্ট তা আরও বেড়ে হয় ১৪২ কোটি ৮ লাখ টাকা। তবে ৯ আগস্ট তা কমে দাঁড়ায় ১৩২ কোটি ৫৩ লাখ টাকা।
কিন্তু এর পরেই তা ১০০ কোটি টাকার ঘরের নিচে চলে আসে, যদিও দৈনিক লেনদেন ক্রমেই বাড়তে বাড়তে ৩ হাজার কোটি টাকার ঘর প্রায় ছুঁয়ে ফেলে দুই দিন।
এর মধ্যে মিউচ্যুয়াল ফান্ডগুলোর লভ্যাংশ ঘোষণার তারিখ আসতে থাকে। আর ৪ আগস্ট এনএলআই মিউচ্যুয়াল ফান্ড ইউনিটপ্রতি ১ টাকা ৭৫ পয়সা লভ্যাংশ ঘোষণা করে চমক দেখায়। এটি গত বছর লোকসানে ছিল আর এ কারণে লভ্যাংশ দিতে পারেনি।
ফান্ডটির দাম সেদিন ছিল ১৮ টাকার ঘরে। এই হিসাবে ফান্ডের মূল্যের প্রায় ১০ শতাংশ পাওয়া যাবে লভ্যাংশ হিসেবে। কিন্তু এ খবরে সেদিন ফান্ডটি দর হারায় ৬০ পয়সা।
এরপর ৯ টাকার ঘরে দাম- এমন দুটি ফান্ড ইউনিটপ্রতি ১ টাকা ২০ পয়সা লভ্যাংশ ঘোষণা করে। এদের ক্ষেত্রে ইউনিট মূল্যের ১৩ শতাংশের মতো হয় লভ্যাংশ।
এর পরেও যেসব ফান্ড লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে, তার সিংহভাগের লভ্যাংশেই ব্যাংকে যেকোনো সঞ্চয়ী হিসাব তো বটেই, সঞ্চয়পত্রের সুদহারের চেয়েও বেশি আসে।
আইসিবি অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি পরিচালিত আটটি মিউচ্যুয়াল ফান্ড চাঙা পুঁজিবাজারেও ভালো মুনাফা করতে ব্যর্থ হলেও যে লভ্যাংশ এসেছে, তা ব্যাংকে সঞ্চয়ী হিসাবের চেয়ে বেশি। কারণ, ফান্ডগুলোর ইউনিট মূল্য এক-দুইটা ছাড়া বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই অভিহিত মূল্যের চেয়ে কম।
আইসিবির ফান্ডগুলো লভ্যাংশ ঘোষণার পর লেনদেন আরও কমতে থাকে।
১১ আগস্ট লেনদেন হয় ৫০ কোটি ৩২ লাখ টাকা। পরের দিন হয় ৭৪ কোটি ৫৬ লাখ টাকা।
১৬ আগস্ট লেনদেন ছিল ৬৩ কোটি ৯৮ লাখ টাকা, পরের দিন ৭৫ কোটি ৪০ লাখ টাকা।
এরপর ১৯ ও ২৩ আগস্ট পরপর দুই কর্মদিবসে তা ৫০ কোটির নিচে নেমে আসে। ১৯ আগস্ট লেনদেন ছিল ৪২ কোটি ৩৭ লাখ টাকা আর ২৩ আগস্ট ৪৬ কোটি ২০ লাখ টাকা।
তবে রেইসের লভ্যাংশ ঘোষণার আগের দুই দিন লেনদেন কিছুটা বাড়তে থাকে। ২৪ আগস্ট লেনদেন ছিল ৬২ কোটি ৭০ লাখ টাকা আর লভ্যাংশ ঘোষণার দিন ২৫ আগস্ট ৭২ কোটি ৯৮ লাখ টাকা।
রেইস যে ১০টি ফান্ড লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে, তার ইউনিট মূল্যের তুলনায় লভ্যাংশ ১২ শতাংশ বা তার চেয়ে বেশি এসেছে ৪টির, ১০ শতাংশের বেশি এসেছে ৩টির, ৮ শতাংশের বেশি এসেছে ২টির। আর সবচেয়ে কম লভ্যাংশ দিয়েছে যেটি, সেটিও তার ইউনিট মূল্যের তুলনায় ৬ শতাংশ লভ্যাংশ দিয়েছে।
সব মিলিয়ে ১০টি ফান্ড ২২৭ কোটি ৭০ লাখ টাকার বেশি নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে। সবগুলো ফান্ডের দামের বিপরীত গড় লভ্যাংশ হয় ১০ শতাংশের বেশি।
মিউচ্যুয়াল ফান্ডের লভ্যাংশ নিলে বিনিয়োগকারীর প্রকৃত আয় বেশি হয়, এ কারণে যে এই লভ্যাংশের ২৫ হাজার টাকা পর্যন্ত করমুক্ত। কিন্তু সঞ্চয়পত্র বা অন্য কোনো হিসাবে লভ্যাংশে ১০ শতাংশ কর কাটে। ফলে মিউচ্যুয়াল ফান্ডের প্রকৃত আয় ১০ শতাংশ বেশি হয়।
দর বাড়ল রেইসের ৫ ফান্ডের, কমলও সমপরিমাণ
রেইসের এই লভ্যাংশ ঘোষিত হয়েছে ২৫ আগস্ট পুঁজিবাজারে লেনেদেন শেষে। আর ২৬ আগস্ট লেনদেন শুরুর আগে ঢাকা ও চিটাগং স্টক এক্সচেঞ্জের ওয়েসসাইটে দেয়া হয়।
দারুণ লভ্যাংশ ঘোষণার পরেও দামে খুব একটা হেরফের হয়েছে এমন নয়। ইউনিটপ্রতি ১ টাকা ৩০ পয়সা করে লভ্যাংশ ঘোষণা করা ফার্স্ট জনতা মিউচ্যুয়াল ফান্ডের ইউনিটপ্রতি দর ৪০ পয়সা ও ইবিএল ফার্স্ট মিউচ্যুয়াল ফান্ডের ইউনিটপ্রতি দর বেড়েছে ৬০ পয়সা।
বাকিগুলোর মধ্যে ৮৫ পয়সা করে লভ্যাংশ ঘোষণা করা পপুলার ফার্স্ট মিউচ্যুয়াল ফান্ড ২০ পয়সা আর পিএইচপির ইউনিট মূল্য বেড়েছে ১০ পয়সা।
ইউনিটপ্রতি ৯০ পয়সা লভ্যাংশ ঘোষণা করা ট্রাস্ট ব্যাংক ফার্স্ট মিউচ্যুয়াল ফান্ডের ইউনিট মূল্য বেড়েছে ১০ পয়সা।
অন্যদিকে ইউনিটে ৮০ পয়সা লভ্যাংশ ঘোষণা করা এবি বাংক ফার্স্ট মিউচ্যুয়াল ফান্ড ১০ পয়সা, ৭৫ পয়সা করে লভ্যাংশ ঘোষণা করা এক্সিম ব্যাংক ফার্স্ট মিউচ্যুয়াল ফান্ড ৪০ পয়সা এবং আইএফআইসি ব্যাংক ফার্স্ট মিউচ্যুয়াল ফান্ড ১০ পয়সা দর হারিয়েছে।
সবচেয়ে কম লভ্যাংশ ঘোষণা করা দুই ফান্ডের মধ্যে ৬০ পয়সা করে দেয়ার ঘোষণা করা ইবিএল এনআরবি মিউচ্যুয়াল ফান্ড ৪০ পয়সা ও ৪০ পয়সা করে দেয়ার ঘোষণা করা এফবিএফআইএফের ইউনিটপ্রতি দর হারিয়েছে ৩০ পয়সা।
চমক লেনদেনে
দাম বৃদ্ধি ও কমার হার সমান সমান হলেও রেইসের ফান্ডগুলোর লভ্যাংশ ঘোষণার পর চমক এসেছে লেনদেনে। এদিন মোট ১১৪ কোটি ৯০ লাখ টাকার ইউনিট বিনিয়োগকারীরা কিনেছেন, এটাই প্রমাণ হবে, এই খাতকে ভবিষ্যৎ বিনিয়োগের জন্য উপযোগী বলে মনে করছেন তারা।
সবচেয়ে বেশি ১৭ কোটি ১৬ লাখ টাকা লেনদেন হয়েছে ফার্স্ট জনতায়।
দ্বিতীয় সর্বোচ্চ লেনদেন হয়েছে ২৯ আগস্ট লভ্যাংশ ঘোষণা করতে যাওয়া গ্রামীণ টুতে; ১২ কোটি ৬৮ লাখ টাকা।
ঘোষিত লভ্যাংশে নাখোশ হয়ে কম দামে ছেড়ে দিলেও এফবিএফআইএফে লেনদেন হয়েছে ব্যাপক, হাতবদল হয়েছে ১২ কোটি ১৯ লাখ টাকা।
ভালো লভ্যাংশের ইঙ্গিত ছিল আগেই
মিউচ্যুয়াল ফান্ড যে এবার চমক দেখাবে, তা বোঝা যাচ্ছিল গত বছরের সেপ্টেম্বর শেষেই। এক প্রান্তিকে কোনো কোনো ফান্ড দেড় থেকে দুই টাকার বেশি মুনাফা করে।
ডিসেম্বর শেষে ফান্ডগুলোর মুনাফা আরও বাড়ে। এরপর জানুয়ারি থেকে মার্চে পুঁজিবাজারে বড় সংশোধন হলেও ফান্ডগুলো খুব একটা লোকসান দিয়েছে এমন নয়। আর এপ্রিল থেকে জুন পর্যন্ত বাজারে ছিল উত্থানের দ্বিতীয় পর্ব। এই তিন মাসে সূচক বাড়ে ৮৮০ পয়েন্ট।
মুনাফার তুলনায় লভ্যাংশ কম কেন?
মিউচ্যুয়াল ফান্ড বিধিমালা অনুযায়ী, ফান্ডগুলো যত মুনাফা করবে, তার ৭০ শতাংশ বিতরণ করবে নগদে।
কিন্তু এখানে আরও একটি বিষয় আছে, যে কারণে প্রকৃত লভ্যাংশ কম এসেছে, এবং সেই বিষয়টি অনেক বিনিয়োগকারীই বুঝতে পারেননি।
যেমন: আইএফআইসি ফার্স্ট মিউচ্যুয়াল ফান্ড ইউনিটে মুনাফা করেছে ২ টাকা ৩২ পয়সা, কিন্তু পপুলার ফার্স্ট করেছে ২ টাকা ৮ পয়সা। অথচ পপুলারের লভ্যাংশ বেশি আর তা ৭০ শতাংশ হয়নি।
এর কারণ গত বছরের লোকসান।
আগের বছর লোকসান দিলে সেই পরিমাণ লোকসান সংরক্ষণ করতে পারবে ফান্ডগুলো আর এটি আসলে তাদের আর্থিক ভিত্তিকেই শক্তিশালী করবে। ফলে এতে কার্যত ইউনিটধারীদের কোনো লোকসান হয় না। কারণ, ফান্ডগুলোর মেয়াদ শেষে যখন সেগুলো ভাঙিয়ে অর্থ বিনিয়োগকারীদের দেয়া হবে, তখন তার সুফল পাবে তারা।
পুঁজিবাজারসংশ্লিষ্টরা বলছেন, আগের লোকসান সব সমন্বয় হয়ে যাওয়ায় ফান্ডের ইউনিটধারীরা আগামী বছর তার সুফল পাবেন। বাজার যদি স্থিতিশীল থাকে আর ইউনিটপ্রতি আয় যদি সমানও থাকে, তাহলে আগামী বছর আইএফআইসি মিউচ্যুয়াল ফান্ডের ইউনিটধারীরা ১ টাকা ৬০ পয়সার বেশি আর পপুলার ফার্স্টে ইউনিটধারীরা পাবেন ১ টাকা ৫০ পয়সার মতো। তখন তা এটি তাদের ইউনিট মূল্যের প্রায় ২০ শতাংশে গিয়ে ঠেকবে।
যা বলছেন বিশ্লেষকরা
পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান ব্র্যাক ইপিএলের সাবেক গবেষণাপ্রধান দেবব্রত কুমার সরকার নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আগে মিউচ্যুয়াল ফান্ডগুলোর প্রতি বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ কম থাকার কারণ ছিল, বিনিয়োগকারীরা যে উদ্দেশ্যে মিউচ্যুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগ করতেন, বিপরীতে রিটার্ন পেতেন না। ফলে তারা বিনিয়োগে আগ্রহী হননি। কিন্তু রি-ইনভেস্টমেন্ট ইউনিট দেয়ার বিষয়টি বাতিল করায় এখন বিনিয়োগকারীরা লাভবান হবেন।’
তিনি বলেন, ‘ফান্ডগুলো ভালো লভ্যাংশ দিয়েছে। সেটি যদি অব্যাহত থাকে তাহলে পুঁজিবাজারে ভারসাম্য রক্ষায় এগুলো সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করতে পারবে।’
পুঁজিবাজারে মোট ফান্ডের সংখ্যা ৩৬টি। এর বাইরে তালিকাভুক্ত নয়, এমন ফান্ডের সংখ্যা ৪৫টির মতো। এগুলোর বেশির ভাগের অর্থবছর জুলাই থেকে জুন পর্যন্ত।
আরও পড়ুন:পুঁজিবাজার থেকে দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নের পথ খুঁজে বের করতে, একটি প্রাণবন্ত বন্ড মার্কেট গড়ে তুলতে এবং ব্যাংক ঋণের ওপর অতিরিক্ত নির্ভরতা কমাতে শিগগিরই একটি যৌথ কমিটি গঠন করবে সরকার।
বাংলাদেশ ব্যাংক (বিবি) ও বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) মধ্যে গত বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ব্যাংক সদর দপ্তরে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকের পর এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর।
সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কমিটিতে অর্থ মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ব্যাংক এবং বিএসইসির প্রতিনিধিরা থাকবেন।
বাংলাদেশ ব্যাংক ও বিএসইসির কর্মকর্তা বলেন, বৈঠকে দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নের গুরুত্বপূর্ণ উৎস হিসেবে পুঁজিবাজারের সম্ভাবনাকে কাজে লাগানোর বিষয়ে আলোচনা হয়।
তারা বলেন, ব্যাংক ঋণের ওপর অতিরিক্ত নির্ভরতা ও এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ঝুঁকি কমিয়ে দেশের সামষ্টিক অর্থনৈতিক উন্নয়ন নিশ্চিত করতে পুঁজিবাজার থেকে দীর্ঘমেয়াদি মূলধন সংগ্রহের সুযোগ কাজে লাগানোর ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়।
এ সময় দীর্ঘমেয়াদি মূলধন কীভাবে এবং কোনো প্রক্রিয়ায় পুঁজিবাজার থেকে সরবরাহ করা যেতে পারে সে বিষয় বিস্তারিত আলোচনা হয়। এছাড়াও দেশে একটি প্রাণবন্ত বন্ড মার্কেট প্রতিষ্ঠা এবং এর তারল্য বৃদ্ধির বিষয়েও আলোচনা হয়।
সবশেষে, এসব বিষয়ে করণীয় নির্ধারণে একটি যৌথ কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বৈঠকে বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর মো. হাবিবুর রহমান, গভর্নরের উপদেষ্টা মো. আহসান উল্লাহ, বিএসইসি চেয়ারম্যান খোন্দকার রাশেদ মাকসুদ ও কমিশনার ফারজানা লালারুখসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সপ্তাহের চতুর্থ কার্যদিবসে সূচকের উত্থানে লেনদেন চলছে দেশের দুই পুঁজিবাজারে। লেনদেনের শুরুতে অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ারদর বেড়েছে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ২৫ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ৫ হাজার ৪৬৭ পয়েন্টে। শরিয়াভিত্তিক সূচক ডিএসইএস বেড়েছে ৫ পয়েন্ট এবং ব্লু-চিপ সূচক ডিএস৩০ বেড়েছে ১০ পয়েন্ট।
ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৭৭ কোম্পানির মধ্যে ২২৯টির দর বেড়েছে, ৬২টির কমেছে এবং ৮৬টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে।
প্রথম দুই ঘণ্টায় ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৭৫ কোটি টাকার বেশি।
এদিকে, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) সার্বিক সূচক বেড়েছে ২৯ পয়েন্ট।
সিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৭৭ কোম্পানির মধ্যে ৩১টির দর বেড়েছে, ২৯টির কমেছে এবং ১৭টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে। প্রথমার্ধে সিএসইতে ৩ কোটি টাকার বেশি লেনদেন হয়েছে।
সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবসে ঢাকা-চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে সূচকের বড় পতন হয়েছে, কমেছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম। চট্টগ্রামে লেনদেন কিছুটা বাড়লেও কমেছে ঢাকায়।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ১০ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচক শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস ৪ পয়েন্ট এবং বাছাইকৃত কোম্পানির ব্লু-চিপ সূচক ডিএস-৩০ কমেছে ৬ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৯৬ কোম্পানির দাম কমেছে বেশিরভাগের। ১০০ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ২১৫ এবং অপরিবর্তিত আছে ৮১ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ক্যাটাগরির হিসাবে এ, বি এবং জেড তিন ক্যাটাগরিতেই তালিকাভুক্ত বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম কমেছে। লভ্যাংশ দেয়া ভালো কোম্পানির শেয়ার এ ক্যাটাগরির ২১৭ কোম্পানির মধ্যে ৪৮ কোম্পানির দরবৃদ্ধি হলেও দর কমেছে ১২৮ এবং অপরিবর্তিত আছে ৪১ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
দাম কমেছে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৬ মিউচুয়াল ফান্ডেও। ১০ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দাম কমেছে ১০ এবং অপরিবর্তিত আছে ১৬ কোম্পানির ইউনিটের দাম।
১৮ কোম্পানির ৯ কোটি টাকার শেয়ার বিক্রি হয়েছে ডিএসই ব্লক মার্কেটে। ফাইন ফুডস সর্বোচ্চ ৯ কোটি টাকার শেয়ার বিক্রি করেছে।
ঢাকার বাজারে সারাদিনে মোট ২৩৫ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে, যা গত কার্যদিবসে ছিল ২৭৮ কোটি টাকা।
৯.৬৬ শতাংশ দাম বেড়ে ডিএসইতে শীর্ষ শেয়ার বারাকা পতেঙ্গা পাওয়ার। অন্যদিকে ৭.৫২ শতাংশের ওপর দর হারিয়ে তলানিতে ইনফরমেশন সার্ভিসেস নেটওয়ার্ক।
চট্টগ্রামেও পতন
ঢাকায় মতো সূচক কমেছে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই)। সারাদিনের লেনদেনে সিএসইতে সার্বিক সূচক কমেছে ২৬ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ১৮৪ কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ৫৫, কমেছে ৯৫ এবং অপরিবর্তিত আছে ৩৪ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সিএসইতে মোট ৮ কোটি ৬৮ লাখ টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে, যা গত কার্যদিবসে ছিল ৪ কোটি ৯৭ লাখ টাকা।
১০ শতাংশ দাম বেড়ে সিএসইতে শীর্ষ শেয়ার আইসিবি সোনালি ব্যাংক ফাস্ট মিউচুয়াল ফান্ড এবং ৯ শতাংশের ওপর দর হারিয়ে তলানিতে এসকে ট্রিমস অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ।
সপ্তাহের পঞ্চম কার্যদিবসে (মঙ্গলবার) লেনদেনের প্রথম ঘণ্টায় উত্থানে শুরু হয়েছে দেশের দুই স্টক এক্সচেঞ্জে, বেড়েছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ১৫ পয়েন্ট বেড়েছে। শরিয়াহভিত্তিক সূচক ডিএসইএস বেড়েছে ৪ পয়েন্ট এবং ব্লু-চিপ সূচক ডিএস৩০ বেড়েছে ৯ পয়েন্ট।
ডিএসইতে লেনদেন হওয়া ৩৭৬টি কোম্পানির মধ্যে শেয়ারের দাম বেড়েছে ২৩৬টির, কমেছে ৭৮টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৬২টি কোম্পানির শেয়ার দাম।
এই সময়ে লেনদেনের পরিমাণ দাঁড়ায় ৯০ কোটি টাকার বেশি।
চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) সার্বিক সূচক ৮ পয়েন্ট বেড়েছে। লেনদেন হওয়া ৭৫টি কোম্পানির মধ্যে ৩৭টির শেয়ারদর বেড়েছে, ১৯টির কমেছে এবং ১৯টি কোম্পানির শেয়ারের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
সিএসইতে প্রথম ঘণ্টার লেনদেন ২ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে।
সপ্তাহের তৃতীয় কার্যদিবসে সূচকের পতন দিয়ে লেনদেন শুরু হয়েছে ঢাকা-চট্টগ্রামের পুঁজিবাজারে, কমেছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
লেনদেনের প্রথমার্ধে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সূচক কমেছে ১৬ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচকের মধ্যে শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস কমেছে ২ পয়েন্ট।
বাছাই করা কোম্পানির ব্লুচিপ শেয়ার ডিএস-৩০ কমেছে ৯ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ১০৯ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ২০৩ কোম্পানির এবং অপরিবর্তিত আছে ৭৭ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
প্রথমার্ধে ঢাকার বাজারে লেনদেন ১৩০ কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে।
একই দশা চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই)। সিএসইতে সার্বিক সূচক কমেছে ২৩ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ১০৮ কোম্পানির মধ্যে ২৯ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ৬৩ এবং অপরিবর্তিত আছে ১৬ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সিএসইতে প্রথমার্ধে ৩ কোটি টাকার ওপর শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে।
টানা দুদিন পতনের পর সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসের প্রথম ঘণ্টার লেনদেনেও অব্যাহত আছে পতনের ধারা, সূচক কমেছে ঢাকা-চট্রগ্রাম দুই বাজারেই।
লেনদেনের শুরুতেই ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ৯ পয়েন্ট।
বাকি দুই সূচক শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস ১ এবং বাছাইকৃত ব্লুচিপ সূচক ডিএস-৩০ কমেছে ৩ পয়েন্ট।
এই সময়ে লেনদেনে অংশ নেওয়া বেশিরভাগ কোম্পানি দর হারিয়েছে। ১০৯টি কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ১৭৯টি কোম্পানির এবং অপরিবর্তিত আছে ৯২টি কোম্পানির শেয়ারের দাম।
লেনদেনের প্রথম ঘণ্টায় ঢাকার বাজারে প্রায় ৬৫ কোটি টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে।
ঢাকার মতো চট্টগ্রামের বাজারেও বজায় আছে পতনের ধারা, সেখানে সার্বিক সূচক কমেছে ৩২ পয়েন্ট।
চট্টগ্রামে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৭৩টি কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ১৬টির, কমেছে ৪৪টির এবং অপরিবর্তিত আছে ১৩টি কোম্পানির শেয়ারের দাম।
দিনের শুরুতে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে ১ কোটি টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে।
উত্থান দিয়ে সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবসের লেনদেন শুরু হলেও শেষ হয়েছে সূচকের পতনের মধ্য দিয়ে। দাম কমেছে লেনদেনে অংশ নেওয়া ঢাকা-চট্টগ্রামের তালিকাভুক্ত বেশিরভাগ কোম্পানির।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ৪৬ পয়েন্ট। বাকি দুই সূচক শরীয়াভিত্তিক ডিএসইএস কমেছে ১২ পয়েন্ট এবং বাছাই করা কোম্পানির ব্লু-চিপ সূচক ডিএস-৩০ কমেছে ১৬ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৯৮ কোম্পানির মধ্যে বেশিরভাগের দাম ছিল নিম্নমুখী। ৫৪ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ৩০৯ এবং অপরিবর্তিত আছে ৩৫ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
ক্যাটাগরির হিসাবে এ, বি এবং জেড- তিন ক্যাটাগরিতেই কমেছে শেয়ারের দাম। লভ্যাংশ দেওয়া ভালো শেয়ারের এ ক্যাটাগরিতে তালিকাভুক্ত ২২০ কোম্পানির মধ্যে ৩২ কোম্পানির দরবৃদ্ধি হয়েছে। দর কমেছে ১৭৮ এবং অপরিবর্তিত আছে ১০ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
দাম কমেছে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৬ মিউচুয়াল ফান্ডের বেশিরভাগের। ৩২ কোম্পানির দর পতনের বিপরীতে দর বেড়েছে ২ এবং অপরিবর্তিত আছে ২ কোম্পানির।
২২ কোম্পানির ৯ কোটি ১৪ লাখ টাকা লেনদেন হয়েছে ডিএসই ব্লক মার্কেটে। এসইএমএল লেকচার ইকুইটি ম্যানেজমেন্ট ফান্ড সর্বোচ্চ ২ কোটি ৪৪ লাখ টাকার শেয়ার বিক্রি করেছে।
সূচকের পাশাপাশি লেনদেন কমেছে ঢাকার বাজারে। সারাদিনে মোট ৩৪৩ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে, যা গত কার্যদিবসে ছিল ৩৬৪ কোটি টাকা।
৮.১১ শতাংশ দাম বেড়ে ডিএসইতে শীর্ষ শেয়ার ফার্স্ট বাংলাদেশ ফিক্সড ইনকাম ফান্ড। অন্যদিকে ১৬ শতাংশের ওপর দর হারিয়ে তলানিতে মিডাস ফাইন্যান্সিং।
চট্টগ্রামেও পতন
ঢাকার মতো সূচক কমেছে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই)। সারাদিনের লেনদেনে সিএসইতে সার্বিক সূচক কমেছে ৩৬ পয়েন্ট।
লেনদেনে অংশ নেওয়া ২০১ কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ৫৫, কমেছে ১১৩ এবং অপরিবর্তিত আছে ৩৩ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
সিএসইতে মোট ৭ কোটি ৬৭ লাখ টাকার শেয়ার এবং ইউনিট লেনদেন হয়েছে, যা গত কার্যদিবসে ছিল ৭ কোটি ২৯ লাখ টাকা।
১০ শতাংশ দাম বেড়ে সিএসইতে শীর্ষ শেয়ার আইসিবি সেকেন্ড মিউচুয়াল ফান্ড এবং ১৩ শতাংশের ওপর দর হারিয়ে ডিএসই'র মতো সিএসইতেও তলানিতে মিডাস ফাইন্যান্সিং।
মন্তব্য