নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (নোবিপ্রবি) উপ-উপাচার্য (প্রো-ভিসি) হিসেবে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আব্দুল বাকীকে চার বছরের জন্য নিয়োগ দেয়া হয়েছে।
বুধবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মো. নূর-ই-আলমের সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, রাষ্ট্রপতি ও চ্যান্সেলরের অনুমোদনক্রমে নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় আইন, ২০০১ এর ধারা ১২ (১) অনুযায়ী জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. আব্দুল বাকীকে নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর পদে নিয়োগ দেয়া হয়েছে।
আরও উল্লেখ করা হয়েছে, প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর হিসেবে তার এ নিয়োগের মেয়াদ যোগদানের তারিখ হতে চার বছর হবে।
আদেশ পাওয়ার পর অধ্যাপক আব্দুল বাকী নিউজবাংলাকে বলেন, ‘সরকার আমাকে নিয়োগ দিয়েছে। আমি এ মাসের মধ্যেই দায়িত্ব গ্রহণ করবো। আমি সম্মানের সঙ্গে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিরে আসতে চাই। সকলের সর্বাত্মক সহযোগিতা কামনা করছি।’
অধ্যাপক আব্দুল বাকী ২০১৮ সালের মার্চ থেকে ছাত্রকল্যাণ পরিচালকের দায়িত্বে রয়েছেন এবং শিক্ষক সমিতির কার্যনির্বাহী পরিষদ নির্বাচন-২০১৮ তে সাধারণ সম্পাদক হিসেবে নির্বাচিত হয়েছিলেন।
আন্তঃশিক্ষা বোর্ড পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক কমিটি বৃহস্পতিবার মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) ও সমমান পরীক্ষার রুটিন প্রকাশ করেছে। সে অনুযায়ী ২০২৫ সালের এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা শুরু হবে আগামী বছরের ১০ এপ্রিল।
প্রকাশিত রুটিন অনুযায়ী, বাংলা প্রথম পত্র পরীক্ষার মাধ্যমে আগামী বছরের এসএসসি পরীক্ষা শুরু হবে। লিখিত পরীক্ষা শেষ হবে ৮ মে। ১০ মে শুরু হবে ব্যবহারিক পরীক্ষা। ১৮ মে’র মধ্যে সবাইকে ব্যবহারিক পরীক্ষা শেষ করতে হবে।
করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে গত কয়েক বছর ধরে পুনর্বিন্যাস করা সিলেবাসে এসএসসি পরীক্ষা নেয়া হচ্ছিল। তবে আগামী বছরের এসএসসি ও সমমান পরীক্ষা পূর্ণ সিলেবাস এবং পূর্ণমান ও পূর্ণ সময়ে অনুষ্ঠিত হবে।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির (জবিশিস) কার্যনির্বাহী পরিষদ নির্বাচন ২০২৫ বর্জনের ঘোষণা দিয়েছে আওয়ামীপন্থী শিক্ষকদের সংগঠন নীল দল। এতে দীর্ঘ ১৪ বছর পর বিএনপি ও জামায়াতপন্থী শিক্ষকদের সংগঠন সাদা দলের প্রার্থীরা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন।
প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী না থাকায় বৃহস্পতিবার প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক ড. মো. আবদুল আলীম শিক্ষক সমিতির কার্যনির্বাহী পরিষদ নির্বাচন ২০২৫-এর ফলাফল ঘোষণা করেন।
এতে ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. মোশাররাফ হোসেন সভাপতি এবং ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. রইছ উদ্দীন সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন।
সহ-সভাপতি পদে অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. আজম খাঁন, কোষাধ্যক্ষ পদে মার্কেটিং বিভাগের অধ্যাপক ড. ইমরানুল হক এবং যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদে ইতিহাস বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ বিলাল হোসাইন নির্বাচিত হয়েছেন।
এছাড়া সদস্য পদে ফিন্যান্স বিভাগের অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মঞ্জুর মুর্শেদ ভূঁইয়া, কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ নাসির উদ্দিন, মার্কেটিং বিভাগের অধ্যাপক ড. শেখ রফিকুল ইসলাম, রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান, ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ নূরুল্লাহ, ফিন্যান্স বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. ওমর ফারুক, কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. আবু লায়েক, সমাজকর্ম বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মোন্তাফিজ আহমেদ, ইতিহাস বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. নাছির আহমাদ এবং ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক তারেক বিন আতিক নির্বাচিত হয়েছেন।
নির্বাচন কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. কুতুব উদ্দিন, রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ জামির হোসেন, প্রাণিবিদ্যা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. রুমানা তাছমীন এবং ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. আনিসুর রহমান।
এদিকে হুমকি ও ভয়-ভীতি প্রদানের অভিযোগ তুলে আসন্ন শিক্ষক সমিতির নির্বাচন-২০২৫ বর্জনের ঘোষণা দিয়েছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আওয়ামীপন্থী শিক্ষকদের সংগঠন নীল দল।
নীল দলের শিক্ষক নেতারা বলছেন, যেকোনো সভ্য সমাজে গণতান্ত্রিক পদ্ধতি অনুসরণে প্রতিনিধি নির্বাচন বৈষম্যহীন সমাজ বিনির্মাণের প্রথম ধাপ। শিক্ষকদের এই সংগঠনকে অকার্যকর করতে যারা লিখিত চিঠি ও হুমকি প্রদান করেছেন এবং করে আসছেন, তারা গণতান্ত্রিক মূল্যবোধে বিশ্বাসী নন।
নির্বাচন কমিশনারকে দেয়া এক চিঠিতে নীল দলের শিক্ষক নেতারা বলেন, ২০১২ সালে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি (জবিশিস) প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর থেকে একটি পেশাগত সংগঠন হিসেবে প্রতিবছর গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকদের সম্মান-মর্যাদা বৃদ্ধি, শিক্ষার সামগ্রিক মানোন্নয়নে শিক্ষকদের প্রতিনিধি হিসেবে অত্যন্ত দৃঢ় ও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে।
এরই ধরাবাহিকতায় প্রতিবছরের মতো এবারও গঠনতন্ত্র অনুযায়ী নির্বাচন কমিশন গঠন করে দেওয়া হয় এবং শিক্ষকবৃন্দ নির্বাচনের জন্য মানসিক প্রস্তুতি গ্রহণ করতে থাকেন। মনোনয়ন ফরম উত্তোলন ও জমাদানের সময় গত ৮ ডিসেম্বর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে কয়েকজন শিক্ষার্থী এসে নির্বাচন কমিশনে একটি চিঠি দিয়ে শিক্ষকদের একটি বড় অংশকে (বিশেষ করে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী প্রগতিশীল শিক্ষকবৃন্দের সংগঠন নীল দলের শিক্ষকদের) মনোনয়ন ফরম প্রদান না করার জন্য লিখিতভাবে হুমকি ও চাপ প্রদান করে।
শিক্ষার্থীদের চিঠি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়ায় সহকর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ, হতাশা ও ভীতির সঞ্চার করেছে এবং সামগ্রিকভাবে একটি অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। ক্যাম্পাসের এই অস্থিতিশীল পরিবেশে নিজেদের সম্মান, বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি বিবেচনায় আমরা নীল দলের শিক্ষকরা আসন্ন শিক্ষক সমিতি নির্বাচন-২০২৫ বর্জন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
এর আগে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির কার্যনির্বাহী পরিষদ ২০২৫ নির্বাচনে আওয়ামী মতাদর্শের কোনো শিক্ষককে নির্বাচনে অংশগ্রহণের সুযোগ না দিতে ও তাদের কাছে মনোনয়নপত্র বিক্রয় না করতে নির্বাচন কমিশন ও উপাচার্য বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকারীদের পক্ষে আবু বকর খান, মো. রাকিব, ফেরদৌস, মো. তানজিল, সিয়াম হোসাইন অনিক কুমার দাস স্বাক্ষরিত এ স্মারকলিপি দেয়া হয়।
স্মারকলিপিতে বলা হয়, জুলাই বিপ্লবে হাজারো প্রাণের বিনিময়ে আমরা ফ্যাসিস্ট হাসিনা ও তার দোসর আওয়ামী প্রেতাত্মাদের জুলুম থেকে মুক্তি পেয়েছি। আন্দোলন চলাকালীন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আওয়ামী মতাদর্শের অনুসারী নীল দলের শিক্ষকরা প্রকাশ্যে আমাদের বিরোধিতা করেছেন। ৪ আগস্ট আন্দোলনকারীদের নাশকতাকারী ও জঙ্গি আখ্যা দিয়ে কঠোরভাবে দমন ও হাসিনাকে টিকিয়ে রাখার আহ্বান জানিয়ে শহীদ মিনারের পাদদেশে প্রকাশ্যে মানববন্ধন করেছেন।
৩ আগস্ট রাতে অনেক শিক্ষক ফ্যাসিস্ট হাসিনার সঙ্গে বৈঠক করে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের হত্যার পরিকল্পনায় অংশগ্রহণ করেছেন। যার ফলশ্রুতিতে পরদিন আমাদের হিসাববিজ্ঞান বিভাগের সাজিদকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। ওই সময়ে শিক্ষকদের প্রকাশ্য ইন্ধনে জবির আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের উপর নির্বিচারে গুলি করে মারাত্মকভাবে আহত করা হয়েছে। আমাদের বন্ধু অনিক, ফয়সাল, ফেরদৌস, সিয়াম, ইভান, মারুফ, বাপ্পী, মাহমুদ, সজীব, কাজী আহাদসহ অনেকে আহত হয়েছে। নুরনবী, সিয়াম, তুষারসহ অনেককে ওই শিক্ষকরা পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছেন।
এতে আরও বলা হয়, আসন্ন শিক্ষক সমিতি নির্বাচনে আওয়ামীপন্থি নীলদলের শিক্ষকদের অংশগ্রহণ করতে দেয়া মানেই জুলাই বিপ্লবের হাজারো শহীদের রক্তের সঙ্গে বেঈমানি করা। দলটির বিচার না হওয়া পর্যন্ত জগন্নাথে আওয়ামী মতাদর্শের কাউকে কোনো নির্বাচন বা রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ করতে দেয়া হবে না।
এ বিষয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি নির্বাচন-২০২৫’র প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক ড. মো. আব্দুল আলীম বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের মোট ভোটার আছেন ৬৫৮ জন। এর মধ্যে যে কেউ এসে ফরম উত্তোলন করতে পারে। কেউ নির্বাচন বর্জন করছে কি না, সেটা আমাদের দেখার বিষয় নয়।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থীদের দীর্ঘদিনের আবাসন সংকট নিরসনে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও দেশের অন্যতম গ্রহণযোগ্য ফিলানথ্রপিক প্রতিষ্ঠান আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশনের মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর হয়েছে। এই চুক্তির আওতায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা নিরাপদ, পরিচ্ছন্ন ও মানসম্মত আবাসনের সুযোগ পাবেন।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক ড. মো. শেখ গিয়াস উদ্দিন ও আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশনের পক্ষে জেনারেল সেক্রেটারি মো. সাব্বির আহম্মদ মঙ্গলবার এই স্মারকে স্বাক্ষর করেন।
সমঝোতা অনুযায়ী, কেরানীগঞ্জের বসুন্ধরা রিভারভিউ প্রজেক্ট এলাকায় আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশন প্রাথমিকভাবে ৭০০ শিক্ষার্থীর আবাসনের ব্যবস্থা করবে। পর্যায়ক্রমে এই সংখ্যা পাঁচ হাজারে উন্নীত করা হবে। ছেলে শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি মেয়ে শিক্ষার্থীদের জন্যও আবাসন সুবিধা নিশ্চিত করা হবে।
প্রকল্পটি ২০২৫ সালের এপ্রিলে চালু হবে বলে জানানো হয়েছে।
আবাসন সুবিধার পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের দক্ষতা বৃদ্ধি এবং নৈতিকতার বিকাশে বিশেষ পদক্ষেপ নেয়া হবে। এই প্রকল্পের আওতায় একটি অত্যাধুনিক কম্পিউটার ল্যাব, যেখানে ১০০টি কম্পিউটার থাকবে। শিক্ষার্থীদের জন্য থাকবে আইইএলটিএস প্রস্তুতিমূলক প্রশিক্ষণ। প্রথম বছর প্রতিটি শিক্ষার্থীকে ব্র্যান্ড স্কোর ৭ অর্জনের লক্ষ্যে প্রশিক্ষণ দেয়া হবে। এছাড়াও থাকবে সফট স্কিল, নেতৃত্বগুণ এবং পেশাগত দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য প্রশিক্ষণ কার্যক্রম।
সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. রেজাউল করিম ও আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান শায়খ আহমাদুল্লাহ।
আরও পড়ুন:দেশের সরকারি-বেসরকারি স্কুলে প্রথম থেকে নবম শ্রেণিতে ভর্তির ডিজিটাল লটারি আগামী ১৭ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হবে।
মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর থেকে মঙ্গলবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের আওতাধীন ২০২৫ শিক্ষাবর্ষে সরকারি-বেসরকারি (মহানগরী ও জেলার সদর উপজেলা পর্যায় পর্যন্ত) মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে প্রথম শ্রেণি থেকে নবম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের ভর্তি প্রক্রিয়া ডিজিটাল লটারির মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে।
ওই সিদ্ধান্তের আলোকে কেন্দ্রীয় ডিজিটাল লটারি প্রক্রিয়ার সঙ্গে অন্তর্ভুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলোতে প্রথম শ্রেণি থেকে নবম শ্রেণিতে শিক্ষার্থী ভর্তির লক্ষ্যে সরকারি ও বেসরকারি (মহানগরী ও জেলার সদর উপজেলা পর্যায় পর্যন্ত) মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী নির্বাচন অনুষ্ঠান ১৭ ডিসেম্বর মঙ্গলবার সকাল ১০টায় সেগুনবাগিচায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে অনুষ্ঠিত হবে।
পদোন্নতি পাওয়ার মতো শিক্ষাগত যোগ্যতা তার ছিল না। অবৈধ উপায়ে পদ বাগিয়ে দফায় দফায় শুরু করেন নানামুখী দুর্নীতি। বিগত কয়েক বছর ধরেই খেয়াল-খুশিমতো বিধিবহির্ভূত কর্মকাণ্ড ও ক্ষমতার অপব্যবহার করে চলেছেন। পদে পদে তার স্বেচ্ছাচারিতার শিকার হচ্ছেন জেলার প্রাথমিক শিক্ষকরা।
আলোচ্য ব্যক্তিটি হলেন রাজনৈতিক আশ্রয়ে নিজ জেলাতেই ১৪ বছরের বেশি সময় ধরে অবস্থান করা খুলনা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শেখ অহিদুল আলম।
১৯৯৭ সালের ২৮ এপ্রিল উপজেলা শিক্ষা অফিসার হিসেবে চাকরিতে যোগদান করেন শেখ অহিদুল আলম। পরবর্তীতে ২০১৩ সালের ১৫ জানুয়ারি সহকারী জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার ও ২০১৬ সালের ২২ এপ্রিল জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার পদে পদোন্নতি পান তিনি।
উপজেলা শিক্ষা অফিসার পদ থেকে সহকারী জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার পদে পদোন্নতি পাওয়ার জন্য ১৯৮৯ সালের ২১ সেপ্টেম্বর প্রকাশিত এক গেজেটে কিছু যোগ্যতার বিষয় উল্লেখ করা হয়েছে। ওই গেজেটের ৩২ (এ) ধারায় বলা হয়েছে, সহকারী জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার পদে পদোন্নতি পাওয়ার জন্য উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার পদে পাঁচ বছরের অভিজ্ঞতাসহ দ্বিতীয় শ্রেণীর বিএড ডইগ্র অথবা ডিপ্লোমা ইন এডুকেশন ডিগ্রি থাকতে হবে।
খুলনা বিভাগীয় কমিশনারের নির্দেশে চলতি বছরের আগস্ট মাসে শেখ অহিদুল আলমের শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেন প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের খুলনা বিভাগীয় উপ-পরিচালক মো. মোসলেম উদ্দিন।
তদন্তকালে শেখ অহিদুল আলম চাহিদা অনুযায়ী বিএড সার্টিফিকেট দিতে পারেননি। তার বদলে ২০০২ সালে বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় (বাউবি) থেকে পাস করা এমএড সার্টিফিকেট দাখিল করেন।
তবে বিএড ও এমএড ডিগ্রি সমমান নয় বলে জানিয়েছেন বাউবির অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ড. মো. মোহসীন উদ্দিন। গত ২৮ আগস্ট তদন্ত কমিটির কাছে পাঠানো চিঠিতে তিনি জানিয়েছেন, বিএড ডিগ্রির বিকল্প হিসেবে এমএড ডিগ্রিকে বিবেচনার কোনো সুযোগ নেই।
বিষয়টি নিয়ে তদন্ত কর্মকর্তা আরও বিস্তারিত জানতে চাইলে গত ২০ অক্টোবর বাউবির ভারপ্রাপ্ত পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মো. হাবিবুল্যাহ মাহমুদ তদন্ত কর্মকর্তাকে চিঠি দিয়ে জানিয়েছেন, বিএড ডিগ্রি অর্জনের জন্য শ্রেণীকক্ষে ৯০টি অনুশীলনী পাঠদানের মাধ্যমে শিক্ষা কার্যক্রমের দক্ষতা, শিক্ষার্থী মূল্যয়নের দক্ষতা, শ্রেণী ব্যবস্থাপনা ও শিক্ষা মনোবিজ্ঞানের ধারণা অর্জনের ব্যবস্থা নেয়া হয়।
একইসঙ্গে উচ্চতর শিক্ষা গ্রহণের প্রাক-যোগ্যতা অর্জনের জন্য পরিসংখ্যানগত ধারণা, শিক্ষাক্রম ও শিক্ষা দর্শনের প্রাথমিক জ্ঞান অর্জনের কিছু বিষয় যুক্ত থাকে। কিন্তু এমএড ডিগ্রি প্রোগ্রামে শ্রেণীকক্ষে পাঠদান-সংশ্লিষ্ট দক্ষতা অর্জনের কোনো সুযোগ নেই।
তবে বিএড ডিগ্রি নেই এরূপ শিক্ষার্থীদের এক সেমিস্টার পূর্ব-প্রস্তুতিমূলক চারটি কোর্স সম্পন্ন করে এমএড ডিগ্রি অর্জনের সুযোগ ২০০০ সালে এমএড শিক্ষাক্রমে ছিল। এজন্য এমএড প্রোগ্রামকে বিএড-এর বিকল্প বিবেচনার সুযোগ নেই।
এছাড়া ২০২২ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি ৫৮ জন উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার বিএড বা ডিপ্লোপা ইন এডুকেশন ডিগ্রি না থাকায় তাদের পদোন্নতি দেয়নি প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।
তদন্তের সত্যতা জানিয়ে মো. মোসলেম উদ্দিন বলেন, ‘আমি গত ২৪ অক্টোবর অবসর-উত্তর ছুটিতে (পিআরএল) চলে এসেছি। তাই তদন্তের সব কাজ শেষ করে আসতে পারিনি। বাকি কাজটুকু বর্তমান উপ-পরিচালক সম্পন্ন করবেন।’
তবে খুলনা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শেখ অহিদুল আলম তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগগুলো মানতে নারাজ। নিজের শিক্ষাগত যোগ্যতার ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘এমএড ডিগ্রি থাকলে বিএড আছে কিনা এটা কোনো বিষয় না। আমাদের ব্যাচে ১৩৭ জনের একযোগে পদোন্নতি হয়েছিল। খোঁজ নিয়ে দেখেন সেখানে কতজনের বিএড ছিল না। আমার বিএড-এর থেকেও উচ্চতর এমএড ডিগ্রি তো আছেই। তাই আমার পদোন্নতি নিয়ে প্রশ্ন তোলার সুযোগ নেই।’
শিক্ষক বদলিতে স্বেচ্ছাচারিতা
শিক্ষা কর্মকর্তা শেখ অহিদুল আলম চলতি বছরের ১৭ এপ্রিল একযোগে ১৭ জন শিক্ষকে বদলি করেন। তবে পরবর্তীতে অনলাইনে শিক্ষকরা দেখতে পান যে তাদের বদলি আদেশে আন্তঃজেলা বদলির নীতিমালা লঙ্ঘন করা হয়েছে।
বিষয়টি নিয়ে শিক্ষকরা প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর বরাবর আবেদন করেন। একইসঙ্গে খোদ উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তারা ওই শিক্ষকদের বদলির আদেশ বাতিলের জন্য আবেদন করেন। পরবর্তীতে তিনি নামমাত্র একটি সুপারিশ কমিটি করে তাদের বদলি বহাল রাখেন।
৩ জুন অধিদপ্তর বরাবর পাঠানো চিঠিতে অহিদুল আলম উল্লেখ করেন, যেহেতু অনলাইনে তাদের বদলির আদেশ অনুমোদন হয়ে গেছে, তাই এই আদেশ বহাল রাখা যায়।
ওইসব শিক্ষক জানিয়েছেন, ২০২৪ সালের ২৯ মার্চ জারিকৃত পত্রে চলতি দায়িত্বে থাকা প্রধান শিক্ষকদের বদলিতে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। তারপরও নীতিমালা লঙ্ঘন করে ১৭ জনের মধ্যে চারজন প্রধান শিক্ষককেও বদলি করা হয়েছিল। এটা তিনি করেছিলেন পছন্দের ব্যক্তিদের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক বানানোর জন্য।
প্রতিবাদ করলেই শাস্তি
এই শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করে যারা শাস্তির সম্মুখীন হয়েছেন, তাদের একজন বটিয়াঘাটা উপজেলার বারোভূঁইয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সাবেক চলতি দায়িত্বের প্রধান শিক্ষক নীহার রঞ্জন রায়।
তিনি জানান, ২০২৩ সালের ১৩ ডিসেম্বর পিআরএল-এ যাওয়ার দিন তাকে মিথ্যা অভিযোগের ভিত্তিতে লঘুদণ্ড দিয়ে বেতনের এক ধাপ অবনমিত করা হয়। এর বিরুদ্ধে তিনি প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনালে মামলা করেছেন।
শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শিক্ষা কর্মকর্তা অহিদুল আলমের সঙ্গে মতের মিল না হলেই বিপদে পড়তে হয়। তিনি ২০১২ সালে এক মাসের জন্য ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার দায়িত্ব পেয়ে ২৩ জন শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা ও চারজনকে সাময়িক বরখাস্ত করেছিলেন।
একই জেলায় ১৪ বছর
শেখ অহিদুল আলম ইতোপূর্বে খুলনা সদর থানার শিক্ষা অফিসার পদে তিন বছর, খুলনা বিভাগীয় অফিসে ছয় বছর ও জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কার্যালয়ে তিন বছর কর্মরত ছিলনে।
২০২৩ সালের ২০ জুন আবারও খুলনাতে তার বদলি হয়। সে সুবাদে তিনি খুলনাতেই প্রায় ১৪ বছর কর্মরত রয়েছেন। অনুসন্ধানে জানা গেছে, খুলনাতেই তিনি দীর্ঘদিন ধরে স্থায়ীভাবে বসবাস করে আসছেন।
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের ডাটাবেইজের তথ্য ঘেঁটে দেখা গেছে, শেখ অহিদুল আলমের স্থায়ী ও অস্থায়ী ঠিকানা হিসেবে ঝিনাইদহের কালিগঞ্জ উপজেলার নলডাঙ্গা গ্রামের উল্লেখ রয়েছে। তবে তার জাতীয় পরিচয়পত্রে স্থায়ী ঠিকানা পাওয়া গেছে খুলনা সিটি করপোরেশনের দৌলতপুরের কালিবাড়িতে।
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শেখ অহিদুল আলম খুলনার বিএল কলেজে লেখাপড়া করেছেন। তার শ্বশুরবাড়ি দৌলতপুরের কালিবাড়িতে। দীর্ঘদিন ধরে ওই এলাকায় তিনি স্থায়ীভাবে বসবাস করছেন। স্থানীয় সাবেক শ্রম প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ানের সঙ্গে আঁতাত করেই তিনি দীর্ঘদিন খুলনায় থাকার সুযোগ পেয়েছেন।
এসব অভিযোগের ব্যাপারে জানতে চাইলে শেখ অহিদুল আলম বলেন, ‘একটি পক্ষ আমার বিরুদ্ধে উঠেপড়ে লেগেছে। তারা নানারকম ষড়যন্ত্র করছে।’
আরও পড়ুন:ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বহিরাগতদের অবাধ চলাচল এবং প্রবেশ নিয়ন্ত্রণে আগামী ১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবসসহ চারদিন মেট্রো রেলের টিএসসি স্টেশন বন্ধ রাখার সুপারিশ করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
রোববার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সহযোগী অধ্যাপক সাইফুদ্দিন আহমেদ সংবাদকর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে এ তথ্য জানান।
টিএসসি মেট্রো স্টেশন যে চারদিন বন্ধ রাখার সুপারিশ করা হয়েছে সেগুলো হলো- আগামী ১৬ ডিসেম্বর, ২৫ ডিসেম্বর, ৩১ ডিসেম্বর ও ১ জানুয়ারি।
প্রক্টর বলেন, ‘বহিরাগতদের অবাধ যাতায়াত নিয়ন্ত্রণে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে প্রবেশের ছয়টি পয়েন্ট চাইলেই আমরা বন্ধ করতে পারি। কিন্তু ঠিকই মেট্রো স্টেশন দিয়ে লোকজন চলে আসবে। তাই আমরা উল্লিখিত চারদিন মেট্রো রেলের টিএসসি স্টেশন বন্ধের সুপারিশ করেছি।’
তিনি বলেন, ‘দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার এক সভায় আমি উপস্থিত ছিলাম। সেখানে আমি ক্যাম্পাসের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে মেট্রো রেলের টিএসসি স্টেশন চারদিন বন্ধ রাখার জন্য সুপারিশ করেছি।’
ঢাবি প্রক্টর জানান, সুপারিশের পর যোগাযোগ সচিব তাৎক্ষণিক মেট্রো রেলের ব্যবস্থাপনা পরিচালককে তাএই চারদিন স্টেশনটি বন্ধ রাখতে বলেছেন। আশা করি, এ বিষয়ে শিগগির মেট্রো রেলকে আনুষ্ঠানিকভাবে চিঠি পাঠানো হবে।
ডাকসু নির্বাচন
সংবাদকর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে ডাকসু নির্বাচন নিয়েও কথা বলেন প্রক্টর সাইফুদ্দিন আহমেদ।
তিনি বলেন, ডাকসু নির্বাচনের প্রক্রিয়া এবং গঠনতন্ত্র বিষয়ে সুপারিশ করার জন্য গঠিত বিশেষজ্ঞ কমিটি কাজ শুরু করেছে। কমিটি বিভিন্ন পক্ষের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে। সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী বছরের জানুয়ারির শেষে কিংবা ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি সময়ে ডাকসু নির্বাচন হতে পারে।
আরও পড়ুন:সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৯৩ শতাংশ শিক্ষকই মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ দেয়া হবে বলে জানিয়েছেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার।
একই সঙ্গে শিক্ষক নিয়োগে পোষ্য কোটা থাকছে না বলেও জানিয়েছেন তিনি।
খুলনা বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ে রোববার বিভাগটির বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ দুটি তথ্য জানান।
ডা. বিধান রঞ্জন রায় বলেন, ‘প্রাথমিক শিক্ষার মানোন্নয়নে শিক্ষক নিয়োগে প্রি-সার্ভিস প্রশিক্ষণের ওপর গুরুত্বারোপ করছি আমরা। এখন প্রাথমিক শিক্ষার মানোন্নয়নে প্রাথমিকের বাজেট বাড়ানোটাই সময়ের দাবি।’
‘প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক নিয়োগ বিধিমালা-২০১৯’ অনুসারে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হয়। নিয়োগ বিধিমালা-২০১৯-এ বলা হয়েছে, একটি উপজেলার মোট পদের ৬০ শতাংশ নারী, ২০ শতাংশ পোষ্য ও ২০ শতাংশ পুরুষ কোটা নির্ধারিত থাকবে।
নারী, পোষ্য ও পুরুষ–এ তিন ধরনের কোটা পূরণের ক্ষেত্রে আবার চার ধরনের কোটা অনুসরণ করতে হতো। সেগুলো হলো এতিমখানা নিবাসী ও শারীরিক প্রতিবন্ধী ১০ শতাংশ, বীর মুক্তিযোদ্ধা সন্তান ৩০ শতাংশ, ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী ৫ শতাংশ এবং আনসার ও ভিডিপি সদস্য ১০ শতাংশ।
তা ছাড়া তিন কোটার প্রতিটি ক্যাটাগরিতে অবশ্যই ২০ শতাংশ বিজ্ঞান বিষয়ে স্নাতক বা সমমানের ডিগ্রিধারী প্রার্থীদের নিয়োগ নিশ্চিত করতে হতো।
এভাবে তিন কোটায় বিজ্ঞান বিষয়ের যোগ্য প্রার্থী পাওয়া না গেলে মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ দেয়া যাবে। কোটা বাদ দিয়ে বাকি পদগুলোতে শুধু মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ দেয়া হতো। সেটা ৪০ শতাংশের বেশি নয়।
শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে চলতি বছরের ২৩ জুলাই জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের জারি করা প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে কোটা-সংক্রান্ত আগের সব পরিপত্র, প্রজ্ঞাপন, আদেশ, নির্দেশ, অনুশাসন রহিত করা হয়েছে।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের নতুন প্রজ্ঞাপন অনুসারে, সরকারি, আধা সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের চাকরির সব গ্রেডে মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ হবে ৯৩ শতাংশ। বাকি ৭ শতাংশ নিয়োগ কোটার ভিত্তিতে হবে।
এমন বাস্তবতায় প্রাথমিকের শিক্ষক নিয়োগ বিধিমালা অনুসরণ করা হবে নাকি জনপ্রশাসনের সবশেষ কোটা বণ্টনের প্রজ্ঞাপন অনুসরণ করা হবে, তা নিয়ে ধোঁয়াশা ছিল। অবশেষে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টা বিষয়টি স্পষ্ট করলেন। এর ফলে আগামীতে নিয়োগের ক্ষেত্রে ৯৩ শতাংশ মেধা এবং ৭ শতাংশ কোটা পদ্ধতি অনুসরণ করা হতে পারে।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য