ক্ষোভের আগুনে পুড়ছে সিলেট বিএনপি। স্বেচ্ছাসেবক দলের কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে নেতাকর্মীদের পদত্যাগের রীতিমতো হিড়িক পড়েছে।
এবার একসঙ্গে পদত্যাগ করেছেন বিএনপির অঙ্গসংগঠন স্বেচ্ছাসেবক দলের শতাধিক নেতাকর্মী। বুধবার বিকেলে এমন ঘোষণা দেন তারা।
পদত্যাগকারীদের মধ্যে সিলেট জেলার ১৪টি উপজেলা ও পৌর স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক ও সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়করা রয়েছেন।
সিলেটে বিএনপির এই পদত্যাগ পর্বের সূচনা করেন দলটির কেন্দ্রীয় কমিটির সহ সেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক সামসুজ্জামান জামান। গত ১৮ আগস্ট দলের মহাসচিবেকর কাছে চিঠি দিয়ে পদত্যাগ করেন তিনি।
পদত্যাগপত্রে নানান অভিযোগের সঙ্গে সিলেট জেলা ও মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের কমিটি গঠনে তার মতামত উপেক্ষা ও ত্যাগী নেতাদের অবমূল্যায়নের অভিযোগ আনেন।
এরআগের দিনই সিলেট জেলা ও মহানগর সেচ্ছাসেবক দলের কমিটি অনুমোদন করে কেন্দ্রীয় কমিটি।
জামানের পদত্যাগের পর তোলপাড় শুরু হয় বিএনপিতে। ক্ষুব্ধ হয়ে পদত্যাগ করা শুরু করেন তার অনুসারী নেতারা।
জামানের পদত্যাগের দুদিন পর নবগঠিত জেলা ও মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের কমিটি থেকে পদত্যাগের ঘোষণা দেন ১১ নেতা।
এরপর ২২ আগস্ট বিএনপির সহযোগী সংগঠন তাঁতী দল থেকে পদত্যাগ করেন মহানগর তাঁতী দলের সভাপতি ফয়েজ আহমদ দৌলত, সাধারণ সম্পাদক শওকত আলী ও সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল গফফার।
আর বুধবার একসঙ্গে সিলেট জেলার বিভিন্ন উপজেলা ও পৌর শাখার স্বেচ্ছাসেবক দলের শতাধিক দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতাকর্মী পদত্যাগ করেন।
সিলেট নগরের মিরাবাজারে সংবাদ সম্মেলন করে বুধবার পদত্যাগের ঘোষণা দেন তারা।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন জৈন্তাপুর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক আলতাফ হোসেন বিলাল।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘এক যুগ ধরে জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের ব্যানারে আন্দোলন-সংগ্রামের মাধ্যমে রাজপথে সক্রিয় ভূমিকা রেখে জেল-জুলুম-নির্যাতনের শিকার হয়েছি। তবে আমাদেরকে বাদ দিয়ে নিষ্ক্রিয় ও অযোগ্যদের অন্তর্ভুক্ত করে একটি হাস্যকর কমিটি উপহার দেয়া হয়েছে।
‘সদ্যবিলুপ্ত কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক মওদুদুল হক মওদুদকে নতুন ঘোষিত কমিটির ৩১ নম্বর সদস্য, সিটি করপোরেশনের দুইবারের কাউন্সিলর আব্দুর রকিব তুহিনকে ৩৮ নম্বর সদস্য, জেলা বিএনপির সাবেক সহ স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক আমিনুল হক বেলালকে সদস্য, সদর উপজেলার আহ্বায়ক শাহিদুল ইসলাম কাদিরকে সদস্য ও আলতাফ হোসেন বিলালকে ৬১ নম্বর সদস্য রেখে অপমান, অপদস্ত করা হয়েছে।’
এ সময় আলতাফ হোসেন বিলাল বলেন, ‘ইতোমধ্যে আমাদের ত্যাগ ও পরিশ্রমকে ইনসাফ থেকে বঞ্চিত, অপমান ও অপদস্থ করার কারণে আমাদের রাজনৈতিক অভিভাবক বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) কেন্দ্রীয় সংসদের সহ স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক সামসুজ্জামান জামান গত ১৮ আগস্ট পদত্যাগসহ ৩৬ বছরের দীর্ঘ রাজনীতি থেকে বিদায় নিয়েছেন। সিলেটে বিএনপি প্রতিষ্ঠায় তিনি পারিবারিক অর্থ-সম্পদ ব্যয় করে, সীমাহীন প্রতিকূলতার মাঝে দলকে প্রতিষ্ঠা করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন।
তিনি বলেন, ‘আমরা আমাদের সোনালি সময় জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলে ব্যয় করেছি। আমরা যারা বিগত আন্দোলন-সংগ্রামে জীবনবাজি রেখেছি, রাজপথে গুলিবিদ্ধ হয়েছি, সংসার থেকে বিতাড়িত হয়েছি, আজ প্রিয় সংগঠন আমাদের তামাশায় রূপান্তরিত করেছে। আমাদের ত্যাগ ও পরিশ্রমে তিলে তিলে গড়া আলোচিত সংগঠন সিলেট স্বেচ্ছাসেবক দল। আজ সংগঠনটি নিষ্ক্রিয় ও অযোগ্যদের হাতে নিমজ্জিত। আমরা যারা রাজপথে আন্দোলন-সংগ্রাম করেছি, নিষ্ক্রিয় ও অযোগ্যদের নেতৃত্বে কাজ করা আমাদের জন্য অপমান ও লজ্জাজনক। তাই আমরা স্ব স্ব পদ থেকে পদত্যাগ করলাম।’
সংবাদ সম্মেলন করে পদত্যাগকারী নেতারা হলেন- সদর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক শাহিদুল ইসলাম কাদির, জৈন্তাপুর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক আলতাফ হোসেন বিলাল, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক সুজন মিয়া, গোলাপগঞ্জ উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক আবুল কালাম, জকিগঞ্জ উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক হাসান আহমদ, বালাগঞ্জ উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক হেলাল আহমদ, গোলাপগঞ্জ পৌর স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক রাজু আহমদ চৌধুরী, কানাইঘাট উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক নাজিম উদ্দিন, কানাইঘাট পৌর স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক মিজানুর রহমান, জকিগঞ্জ পৌর স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক সাইফুল ইসলাম সাচ্চু, সদর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আবুল খয়ের, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক গিয়াস উদ্দিন বতুল্লা, গোয়াইনঘাট উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক এখলাছুর রহমান, কানাইঘাট উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক ফারুক আহমদ, গোলাপগঞ্জ উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক রেজাউল ইসলাম রেজা, জকিগঞ্জ উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক ওয়েছ আহমদ চৌধুরী, জকিগঞ্জ পৌর স্বেচ্ছাসেবক দলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক কাওছার আহমদ, বালাগঞ্জ উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক শেখ মো. সাবের আহমদ, জৈন্তাপুর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক মিসবাহ আহমদ, সদর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক সালমান আহমদ নান্টু, জালাল উদ্দিন, রাজু আহমদ, আখতার আলী, কালাম আহমদ, মখলিছ আহমদ, আরিফ আহমদ, আব্দুল আহাদ পারভেজ, সিদ্দেক আহমদ, কানাইঘাট উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক মিজান আহমদ, কানাইঘাট উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক বদরুল ইসলাম, গোলাপগঞ্জ উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক মাহমুদুল ইসলাম বাচ্চু, মো. আছলাম, সাদিকুর রহমান বাবলু, জৈন্তাপুর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম-আহ্বায়ক কামাল হোসেন, মাহবুবুল আলম শাহিন, রুমেল আহমদ, সাইফুল উল্যা আহমদ, জামিল আহমদ, কিবরিয়া আহমদ, জকিগঞ্জ উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক আবুল হোসেন, সামাদুর রেজা, বিশ্বনাথ উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সাজ্জাদ আলী শিপলু ও শেখ শাহজাহান আহমদ। এছাড়া বিভিন্ন উপজেলা ও পৌর শাখার নেতাকর্মীরা পদত্যাগ করেছেন।
সংবাদ সম্মেলনে বিভিন্ন উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, আমিন আহমদ, মিছবাহুর রহমান, খোকন মিয়া, আলা উদ্দিন আলী, শমসের হোসেন, হান্নান আহমদ, রাব্বি হোসেন, দিলওয়ার হোসেন, শায়েস্তাউর রহমান, আলাল মিয়া, বদরুল ইসলাম, মিনহাজ উদ্দিন, শহিদ আহমদ, জাকারিয়া হোসেন, আহমেদ জামিল, রুম্মান আহমদ, ফয়েজ আহমদসহ আরও অনেকে।
মেহেরপুরে ট্রাকের ধাক্কায় মোটরসাইকেল থেকে ছিটকে পড়ে অমি খাতুন (২২) নামের এক বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রী নিহত হয়েছেন।
আজ বুধবার সকাল ১০ টার সময় সদর উপজেলার ফতেপুর গ্রামের রাস্তায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
অমি খাতুন মেহেরপুর সদর উপজেলার রামদাসপুর ভিটিরমাঠ গ্রামের স্কুল শিক্ষক রাহিনুলের স্ত্রী এবং জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সদর থানার অফিসার ইনচার্জ মেজবাহ উদ্দীন।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, অমি খাতুন ও তার স্বামী রাহিনুল ইসলাম মেহেরপুর শশুর বাড়ি থেকে মোটরসাইকেল যোগে রামদাসপুর গ্রামে ফিরছিলেন। তারা ফতেপুর নামক স্থানে পৌছালে দ্রত গতির একটি ট্রাক পিছন থেকে ধাক্কা দেয়। এসময় মোটরসাইকেল থেকে রাস্তায় ছিটকে পড়ে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় অমি খাতুনের।
মেহেরপুর সদর থানার ওসি মেজবাহ উদ্দীন জানান, বিষয়টি জানতে পেরে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। আইনী প্রক্রিয়া শেষে নারীর মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্ডর করা হবে।
জুলাই-আগস্ট আন্দোলন ঘিরে হত্যা-গণহত্যার দায়ে মানবতাবিরোধী অপরাধের পৃথক সাত মামলায় সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হকসহ ৪৫ জনের বিরুদ্ধে তদন্ত শেষ করে আগামী বছরের ৮ জানুয়ারির মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
বুধবার (১৫ অক্টোবর) বেলা সোয়া ১১টার পর এ আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১। এদিন সকালে কেরাণীগঞ্জ, কাশিমপুর ও নারায়ণগঞ্জ কারাগার থেকে কড়া নিরাপত্তায় পৃথক মামলায় সাবেক মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীসহ মোট ১৬ জনকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করে পুলিশ। এরপর পর্যায়ক্রমে তাদের এজলাসে তোলা হয়।
অন্য আসামিরা হলেন– সাবেক শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি, আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক, গোলাম দস্তগীর গাজী, আমির হোসেন আমু, কামরুল ইসলাম, আব্দুর রাজ্জাক, ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন, জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু, সাবেক বিচারপতি এএইচএম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক, সাবেক স্বরাষ্ট্রসচিব জাহাঙ্গীর আলম, সাবেক এমপি সোলাইমান সেলিম, সাবেক এমপি শাজাহান খান, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা তৌফিক-ই ইলাহী চৌধুরী, সালমান এফ রহমান ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার।
এর আগে গত ২০ জুলাই এ মামলায় তদন্তের জন্য আরও তিন মাস সময় আবেদন করেন তিনি। পরে আবেদন মঞ্জুর করে আজকের দিন নির্ধারণ করেন ট্রাইব্যুনাল। একইসঙ্গে এ সময়ের মধ্যে তদন্ত শেষ করতে নির্দেশ দেওয়া হয়। তবে প্রতিবেদন জমা না দেওয়ায় সময় চাইলে আগামী বছরের ৮ জানুয়ারি পর্যন্ত তদন্ত শেষ করতে নির্দেশ দেন চেম্বার আদালত।
এদিকে, আজ সকাল থেকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের সামনে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়। সতর্ক অবস্থায় ছিলেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। প্রায় সবাইকে তল্লাশি চালিয়ে ট্রাইব্যুনালে ঢুকতে দেওয়া হয়।
এর আগে গত ২০ এপ্রিল ১৯ সাবেক মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীকে ট্রাইব্যুনালে আনা হয়। ওইদিন এ ঘটনা তদন্তে আরও তিন মাস সময় চান প্রসিকিউশন। পরে ২০ জুলাই দিন ধার্য করেন ট্রাইব্যুনাল। গত ১৮ ফেব্রুয়ারিও ১২ সাবেক মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর দুই উপদেষ্টাসহ ১৯ আসামিকে হাজির করা হয়েছিল। শুনানি শেষে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চাকসু), হল ও হোস্টেল সংসদ নির্বাচনে ভোট দেওয়ার সময় শিক্ষার্থীদের হাতে দেওয়া কালি মুছে যাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক আবদুল্লাহ আল নোমান।
বুধবার (১৫ অক্টোবর) সকাল সোয়া ১০টার দিকে এক প্রতিক্রিয়ায় তিনি ঢাকা পোস্টকে এ মন্তব্য করেন। এ ইস্যুতে তারা নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ দিচ্ছেন বলে জানান তিনি।
আবদুল্লাহ আল নোমান বলেন, কথা ছিল শিক্ষার্থীদের হাতে দেওয়া কালি মুছবে না। কিন্তু বাস্তবে দেখা যাচ্ছে কালি মুছে যাচ্ছে। এই ইস্যুতে আমরা একটু পর অভিযোগ দিচ্ছি।
ইমরান রায়হান নামে এক শিক্ষার্থী জানান, কেউ ঘুণাক্ষরেও বলতে পারবেন আমি ভোট দিয়েছি? অথচ আমি মাত্রই ভোট দিয়ে এলাম। একটু ঘষা দিয়েই কালি তুলে ফেলা যাচ্ছে।
দীর্ঘ ৩৫ বছর পর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চাকসু), হল ও হোস্টেল সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এদিন সকাল থেকে শুরু হয় ভোটগ্রহণ এবং চলবে বিকেল ৪টা পর্যন্ত। এবার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে ওএমআর ব্যালট পদ্ধতিতে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচটি অনুষদ ভবনে স্থাপন করা হয়েছে ১৫টি ভোটকেন্দ্র ও ৬১টি ভোটকক্ষ। চাকসুর ২৬টি পদের জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ৪১৫ জন প্রার্থী, আর হল ও হোস্টেল সংসদের ২৪টি পদের জন্য লড়বেন ৪৯৩ জন। মোট ভোটার সংখ্যা ২৭ হাজার ৫১৬ জন।
মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় বিশ্ব শিশু দিবস ও শিশু অধিকার সপ্তাহ ২০২৫ এর সমাপনী অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) বিকেলে উপজেলা প্রশাসন ও কুলাউড়া শিশু একাডেমির আয়োজনে পরিষদ হল রুমে সমাপনী দিবসে আলোচনা সভা ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠিত হয়।
উপজেলা শিশু বিষয়ক কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) আবুল বাসার এর সভাপতিত্বে এবং ইসরাত জাহান নওরিনের উপস্থাপনায় দিবসের সমাপনীতে পুরস্কার বিতরণ করেন প্রধান অতিথি উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ মহিউদ্দিন। তিনি বলেন আজকের শিশুরাই আগামী দিনে দেশ গঠনের নেতৃত্ব দেবে। তাই তাদেরকে সু- শিক্ষা ও সু-নাগরিক হিসাবে গড়ে তোলা আমাদের দায়িত্ব।
বিশেষ অতিথি ছিলেন রুদ্রবীণা সংগীত বিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ ডঃ রজত কান্তি ভট্টাচার্য , প্রভাষক সুরজিৎ কুমার । আরও বক্তব্য রাখেন প্রধান শিক্ষক ননী গোপাল দেবনাথ, সংগীত প্রশিক্ষক সুমিত্রা ভট্টাচার্য, নৃত্য প্রশিক্ষক দেলোয়ার হোসেন দুর্জয়, প্রাক প্রাথমিক প্রশিক্ষক সেবিন আক্তার, সংগীত শিল্পী নান্টু দাস ও হোসনে আরা বেগম। পরে বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় বিজয়ী ২৬ জনকে পুরস্কার বিতরণ করা হয়। অনুষ্ঠানে প্রায় ৩৫০ জন শিশু ও অভিভাবক অংশগ্রহণ করেন।
ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে গত বছরের ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যান ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা। এরপর থেকেই ভারতে অবস্থান করছেন তিনি। তবে অনলাইন প্লাটফর্ম ব্যবহার করে দেশ ও বিদেশে নেতাকর্মীদের সঙ্গে বিভিন্ন মিটিং এ যুক্ত হয়ে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে উসকানি দিতে দেখা গেছে হাসিনাকে।
এদিকে ২০২৪ সালের শেষভাগে ‘জয় বাংলা ব্রিগেড’ নামের একটি অনলাইন প্ল্যাটফর্মে অনুষ্ঠিত একটি জুম বৈঠককে কেন্দ্র করে এই রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা গড়ে ওঠে। ২০২৪ সালে ১৯ ডিসেম্বর ওই ভার্চুয়াল সভায় দেশ ও বিদেশ থেকে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মী অংশগ্রহণ করেন বলে গোয়েন্দা সূত্রে জানা যায়।
সিআইডির ফরেনসিক ও গোয়েন্দা বিশ্লেষণে দেখা যায়, ওই সভায় অংশগ্রহণকারীরা অন্তর্বর্তীকালীন বৈধ সরকার উৎখাতের আহ্বান, গৃহযুদ্ধ উসকে দেয়ার পরিকল্পনা এবং পলাতক সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আবার ক্ষমতায় আনার ঘোষণা দেন।
এই তথ্য পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের মাধ্যমে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করা হলে, ২০২৫ সালের ৪ মার্চ মন্ত্রণালয় আনুষ্ঠানিকভাবে সিআইডিকে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলার তদন্ত ও অভিযোগ দায়েরের অনুমতি প্রদান করে। পরবর্তীতে ২৭ মার্চ রমনা থানায় সিআর মামলা নং-২২২/২০২৫ দাখিল হয়, যার ধারাগুলো- বাংলাদেশ দণ্ডবিধি, ১৮৬০ এর ১২১, ১২১(ক), ১২৪(ক)।
পাঁচ মাসেই সিআইডির তদন্ত শেষ করে অভিযোগপত্র দাখিল করার পর রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় হাসিনাসহ ২৮৬ জনের বিচার শুরু হচ্ছে। আদালত আসামিদের অনুপস্থিতিতেই বিচারকার্য পরিচালনার নির্দেশ দিয়েছেন।
অন্তর্বর্তী সরকারের ঘোষিত তিনটি প্রধান এজেন্ডা- সংস্কার, নির্বাচন ও বিচার বাস্তবায়নের ধারাবাহিকতায় রাষ্ট্রদ্রোহ মামলার তদন্ত কার্যক্রমে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছে অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। গতকাল সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনাসহ ২৮৬ জন আসামির বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির রাষ্ট্রদ্রোহ সম্পর্কিত ধারায় (১২১/১২১ক/১২৪ক) অভিযোগপত্র দাখিল করেছে সংস্থাটি। এ মামলার বিচারকার্য শুরুর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
মঙ্গলবার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত নং-১৮, ঢাকায় মামলার শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। আসামিদের অধিকাংশ অনুপস্থিত থাকায় আদালত জাতীয় পত্রিকায় বিজ্ঞাপন প্রকাশের মাধ্যমে তাদের অনুপস্থিতিতেই বিচারিক প্রক্রিয়া শুরু করার নির্দেশ প্রদান করেন।
ফরেনসিক পরীক্ষার প্রতিবেদনে পলাতক সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ড. রাব্বি আলমসহ দলটির কেন্দ্রীয় ও প্রাদেশিক পর্যায়ের বেশ কিছু প্রভাবশালী নেতার সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ পাওয়া গেছে।
এ ছাড়া গোয়েন্দা নজরদারির মাধ্যমে দেশে থাকা সন্দেহভাজনদের অবস্থান শনাক্ত করে বিভিন্ন জেলা কারাগারে থাকা ৯১ জনকে এ মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়। বাকি ১৯৫ জন আসামি এখনো পলাতক বলে জানা গেছে।
গতকালকের শুনানিতে প্রধান আসামিসহ অধিকাংশ অভিযুক্ত আদালতে অনুপস্থিত থাকায়, রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে তাদের বিরুদ্ধে ‘প্রকাশ্য সমন ও গণবিজ্ঞপ্তি’ জারি করার আবেদন করা হয়। আদালত আবেদন মঞ্জুর করে জাতীয় দৈনিকে বিজ্ঞাপন প্রকাশের মাধ্যমে আসামিদের হাজির হতে আহ্বান জানানোর নির্দেশ দেন।
নির্ধারিত সময়ের মধ্যে তারা অনুপস্থিত থাকলে, ফৌজদারি কার্যবিধির ৫১২ ধারার আওতায় অনুপস্থিতিতেই বিচার পরিচালনা করা হবে বলে আদালত উল্লেখ করেন।
বিশ্লেষকরা বলছেন—রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় শেখ হাসিনাসহ ২৮৬ জনের বিরুদ্ধে বিচার শুরু হওয়া বাংলাদেশের রাজনৈতিক ও বিচারিক ইতিহাসে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা করেছে। এটি যেমন অন্তর্বর্তী সরকারের ‘বিচার ও দায়বদ্ধতা’ এজেন্ডার বাস্তব প্রতিফলন, তেমনি রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িতদের জবাবদিহির আওতায় আনার দৃঢ় সঙ্কেতও।
রাজবাড়ীতে সরকারি নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে পদ্মা নদীতে মা ইলিশ ধরার অপরাধে ১১ জেলেকে আটক করেছে দৌলতদিয়া নৌপুলিশ। এ সময় ৪০ লাখ বর্গমিটার কারেন্ট জাল এবং ১৫ কেজি ইলিশ জব্দ করা হয়।
বুধবার (১৫ অক্টোবর) সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দৌলতদিয়া নৌপুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ (ওসি) ত্রিনাথ সাহা।
তিনি বলেন মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে রাত পৌনে ১০টা পর্যন্ত রাজবাড়ী জেলার দৌলতদিয়া নৌপুলিশ, কোস্টগার্ড, মৎস্য কর্মকর্তা এবং নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের উপস্থিতিতে গোয়ালন্দঘাট থানার পদ্মা নদীতে যৌথ অভিযান পরিচালনা করে ১১ জন জেলেকে মা ইলিশ ধরার সময় হাতেনাতে আটক করা হয়। একই সময়ে প্রায় ৪০ লাখ বর্গমিটার কারেন্ট জাল ও ১৫ কেজি ইলিশ মাছ জব্দ করা হয়।
তিনি আরও বলেন, আটককৃত ১১ জন জেলের প্রত্যেককে ১৪ দিন করে ভ্রাম্যমাণ আদালতে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সাজা প্রদান করেন। জব্দকৃত কারেন্ট জাল আগুনে পুড়িয়ে ধ্বংস করা হয়। মাছ এতিমখানায় বিতরণ করা হয়।
ঢাকার বাতাস আজ ‘অস্বাস্থ্যকর’। ১৬৭ স্কোর নিয়ে দূষিত বাতাসের শহরের তালিকায় চতুর্থ অবস্থানে রয়েছে রাজধানী ঢাকা। তালিকায় দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থানে থাকা শহর দুটি ভারতের।
বুধবার (১৫ অক্টোবর) সকাল ১০টায় সুইজারল্যান্ডভিত্তিক বায়ুমান নির্ধারণ সংস্থা আইকিউএয়ার থেকে এ তথ্য নেওয়া হয়েছে।
আইকিউএয়ারের দেওয়া তথ্যে দেখা গেছে, দূষিত শহরের তালিকায় প্রথম অস্থানে রয়েছে পাকিস্তানের লাহোর, স্কোর ২৬০, দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে ভারতের দিল্লি, বায়ুর মানের স্কোর ২২৪, তৃতীয় স্থানে রয়েছে কলকাতা, স্কোর ১৬৮। ১৬৩ স্কোর নিয়ে পঞ্চম স্থানে রয়েছে কাতারের রাজধানী দোহা। দূষিত বাতাসে শীর্ষ দশে থাকা অপর শহরগুলোর বাতাসের মানের স্কোর ১৫৭ থেকে ১৩৯ এর মধ্যে।
আইকিউএয়ারের মানদণ্ড অনুযায়ী, স্কোর শূন্য থেকে ৫০ এর মধ্যে থাকলে বায়ুর মান ‘ভালো’ বলে বিবেচিত হয়। ৫১ থেকে ১০০ হলে মাঝারি বা ‘সহনীয়’ ধরা হয় বায়ুর মান। ১০১ থেকে ১৫০ স্কোরকে ‘সংবেদনশীল গোষ্ঠী’র (অসুস্থ বা শিশু-বৃদ্ধ) জন্য অস্বাস্থ্যকর ধরা হয়। আর স্কোর ১৫১ থেকে ২০০ পর্যন্ত থাকলে সে বাতাস ‘অস্বাস্থ্যকর’ হিসেবে বিবেচিত হয়।
স্কোর ২০১ থেকে ৩০০ হলে ‘খুবই অস্বাস্থ্যকর’ বলে বিবেচনা করা হয় এবং ৩০১ এর বেশি হলে তা ‘দুর্যোগপূর্ণ’ বলে বিবেচিত হয়।
মন্তব্য