× হোম জাতীয় রাজধানী সারা দেশ অনুসন্ধান বিশেষ রাজনীতি আইন-অপরাধ ফলোআপ কৃষি বিজ্ঞান চাকরি-ক্যারিয়ার প্রযুক্তি উদ্যোগ আয়োজন ফোরাম অন্যান্য ঐতিহ্য বিনোদন সাহিত্য ইভেন্ট শিল্প উৎসব ধর্ম ট্রেন্ড রূপচর্চা টিপস ফুড অ্যান্ড ট্রাভেল সোশ্যাল মিডিয়া বিচিত্র সিটিজেন জার্নালিজম ব্যাংক পুঁজিবাজার বিমা বাজার অন্যান্য ট্রান্সজেন্ডার নারী পুরুষ নির্বাচন রেস অন্যান্য স্বপ্ন বাজেট আরব বিশ্ব পরিবেশ কী-কেন ১৫ আগস্ট আফগানিস্তান বিশ্লেষণ ইন্টারভিউ মুজিব শতবর্ষ ভিডিও ক্রিকেট প্রবাসী দক্ষিণ এশিয়া আমেরিকা ইউরোপ সিনেমা নাটক মিউজিক শোবিজ অন্যান্য ক্যাম্পাস পরীক্ষা শিক্ষক গবেষণা অন্যান্য কোভিড ১৯ শারীরিক স্বাস্থ্য মানসিক স্বাস্থ্য যৌনতা-প্রজনন অন্যান্য উদ্ভাবন আফ্রিকা ফুটবল ভাষান্তর অন্যান্য ব্লকচেইন অন্যান্য পডকাস্ট বাংলা কনভার্টার নামাজের সময়সূচি আমাদের সম্পর্কে যোগাযোগ প্রাইভেসি পলিসি

বাংলাদেশ
Will the Rohingyas become permanent?
google_news print-icon

রোহিঙ্গারা কি স্থায়ী হয়ে যাবে

রোহিঙ্গারা-কি-স্থায়ী-হয়ে-যাবে
২০১৭ সালে মিয়ানমারে সেনাবাহিনীর নির্যাতনের শিকার হয়ে বাংলাদেশে আসে লাখ লাখ রোহিঙ্গা। ছবি: পিয়াস বিশ্বাস/নিউজবাংলা
২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট কক্সবাজার ও বান্দরবান সীমান্ত পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয় মিয়ানমারের রোহিঙ্গা আশ্রয়প্রার্থীরা। বাংলাদেশে এখন ১১ লাখের বেশি রোহিঙ্গা আশ্রয়প্রার্থীর বাস। গত চার বছরে একজন রোহিঙ্গাকেও ফিরিয়ে নেয়নি মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ। তাদের ফিরিয়ে নিতে আন্তর্জাতিক চাপও ধীরে ধীরে শিথিল হয়ে আসছে।

আপাতদৃষ্টিতে বাংলাদেশে স্থায়ী হতে যাচ্ছে কক্সবাজারের টেকনাফ, উখিয়া, বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি ও নোয়াখালীর ভাসানচরে আশ্রয় নেয়া ‘মিয়ানমারের জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত নাগরিক’ বা রোহিঙ্গারা। স্থায়ী হচ্ছে রোহিঙ্গাসংকটও।

বাংলাদেশ সরকার রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে ‘সাময়িক আশ্রয় গ্রহণকারী’ হিসেবে উল্লেখ করলেও বিদেশি বিভিন্ন সংস্থা স্পষ্টত দীর্ঘমেয়াদি অবস্থানের হিসাব কষছে।

মিয়ানমারে গণহত্যার শিকার হয়ে ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট থেকে রোহিঙ্গা আশ্রয়প্রার্থীদের স্রোত বাংলাদেশে প্রবেশ করে। পরবর্তী বেশ কয়েক দিনে ৫ লাখ ৮২ হাজার রোহিঙ্গা বিভিন্নভাবে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে কক্সবাজারের উখিয়া, টেকনাফ ও বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়িতে প্রবেশ করে বলে ইএনএইচসিআরের এক হিসাবে বলা হয়। তবে স্থানীয়দের দাবি, এ দফায় আশ্রয়প্রার্থীর সংখ্যা এর দ্বিগুণ হতে পারে।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, শুধু ২০১৭ সালেই বাংলাদেশে আসে ৮ লাখ ৩০ হাজার রোহিঙ্গা। এ ছাড়া বিভিন্ন সময়ে আসা আরও ৪ লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশের কক্সবাজার জেলার উখিয়ার বালুখালী ও টেকনাফের উনচিপ্রং ও শাপলাপুর ক্যাম্পে রয়েছে। কিছু রোহিঙ্গাকে সরকার নোয়াখালীর ভাসানচরে স্থানান্তর করেছে।

রোহিঙ্গারা কি স্থায়ী হয়ে যাবে

ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের জন্য নির্মিত ক্যাম্প। ফাইল ছবি

আশ্রিত রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে ২০১৭ সালের নভেম্বরে মিয়ানমারের সঙ্গে প্রত্যাবাসন চুক্তি করে বাংলাদেশ। কিন্তু গত চার বছরে একজন রোহিঙ্গাকেও ফিরিয়ে নেয়নি মিয়ানমার। দেশটি টালবাহানা করে প্রত্যাবাসন শুরুতে দেরি করছে।

মিয়ানমারে সামরিক অভ্যুত্থানের পর প্রত্যাবাসন এখন আরও সুদূরপরাহত বলে মনে করেন ওয়াকিবহাল মহল।

এমন বাস্তবতায় রোহিঙ্গাদের বিভিন্ন ধরনের নাগরিক অধিকার দেয়ার যে প্রস্তাব করেছে বিশ্বব্যাংকসহ জাতিসংঘের অন্যান্য সংস্থা, তা এসব আশ্রিতদের স্থায়ী জনগোষ্ঠী হিসেবে বিবেচনার শামিল বলে মনে করছে বাংলাদেশ।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা বলেন, আন্তর্জাতিক বিশ্ব মূলত বাংলাদেশেই রোহিঙ্গাদের স্থায়ী করার স্বপ্ন দেখছে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে তারা বাংলাদেশের কাছে রোহিঙ্গাদের শরণার্থী মর্যাদা দেয়ার কথা তুলেছে। সম্প্রতি বিশ্বব্যাংক রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশের যেকোনো স্থানে জমি ক্রয়, ব্যবসা-বাণিজ্য, শিক্ষা, ভ্রমণ স্বাধীনতা দেয়ার দাবি করে।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওই কর্মকর্তা বলেন, জাতিসংঘের শরণার্থী কনভেনশনে স্বাক্ষরকারী দেশ না হওয়ায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় বাংলাদেশের ওপর চাপ দেয়ার নৈতিক অধিকার রাখে না। তবুও বিশ্বব্যাংকের প্রস্তাব একটা বড় ধরনের সংকেত।

রোহিঙ্গা ইস্যুতে এখনই হতাশ হতে চান না ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষক ড. ইমতিয়াজ আহমেদ।

নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘রোহিঙ্গার চেয়েও এখন বড় সমস্যা করোনাভাইরাস মহামারি। বর্তমানে মিয়ানমারে এই মহামারি আরও বেড়ে গেছে। মহামারি কমে গেলে…একদিন না একদিন সমাধান হবেই। এর সমাধান না হওয়ার কোনো কারণ নেই।’

তিনি বলেন, ‘আসিয়ান ফোরামে তো আমাদের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে মিয়ানমারের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সাক্ষাৎ হয়েছে। তিনি বলেছেন, দুই দেশের মধ্যে রোহিঙ্গা ফেরাতে যে চুক্তি হয়েছে, সে চুক্তিতেই বাংলাদেশ প্রত্যাবাসন চায়। যতক্ষণ তা না হয়, ততক্ষণ তো অপেক্ষা করতেই হবে।’

ড. ইমতিয়াজ বলেন, ‘যেহেতু অং সান সু চি এখন ক্ষমতায় নেই, মিয়ানমার সরকারও দুর্বল তার ঘরের ভেতরেই। সু চির দল কিন্তু রোহিঙ্গাদের স্বীকৃতি দিয়েছে।

‘তারা বলেছে, ক্ষমতায় গেলে রোহিঙ্গাদের অধিকার দেবে। সময় লাগছে হয়তো, তবে এই ডেভেলপমেন্টগুলো বলে দিচ্ছে, একসময় সমাধান হবে। মহামারি গেলে নজর দেয়া যেতে পারে মিয়ানমারের ওপর।’

নিরাপত্তা বিশ্লেষক অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল আব্দুর রশীদ নিউজবাংলাকে বলেন, কেবল কূটনৈতিক চাপ দিয়ে মিয়ানমারকে রোহিঙ্গা ফেরাতে রাজি করানো যাবে না। অন্য বিকল্পগুলোও বিবেচনা করতে হবে।

সাবেক রাষ্ট্রদূত ওয়ালিউর রহমান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বাংলাদেশ তো যুদ্ধে বিশ্বাস করে না। বাংলাদেশের কূটনীতির মূল নীতিও সকলের সাথে বন্ধুত্ব, কারও সঙ্গে বৈরিতা নয়।’

তিনি বলেন, ‘রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে স্থায়ীভাবে রেখে দেয়ার বাস্তবতা নেই। তাদের ফেরত যেতেই হবে। তা ছাড়া মিয়ানমার কিন্তু কখনো বলেনি তারা তাদের নাগরিকদের ফেরত নেবে না, তবে দেশটির বর্তমান অবস্থা রোহিঙ্গা ফেরাতে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করেছে।

‘সেখানে সামরিক শাসন চলছে এবং গৃহযুদ্ধের মতো একটি অবস্থা তৈরি হয়েছে। অন্যদিকে করোনা মহামারিও তাদের জন্য সুবিধা করে দিয়েছে। কারণ এর দোহাই দিয়ে তারা বহির্বিশ্বের চাপ থেকে নিজেদের রক্ষা করতে পারছে। আমাদের এখন প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নিতে হবে এবং প্রত্যাবাসনের জন্য অপেক্ষা করতে হবে।’

এ বিষয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন নিউজবাংলাকে বলেন, রোহিঙ্গাদের বোঝা আজীবন বহন করা সম্ভব নয় বলে গত ৬ আগস্ট দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর জোট আসিয়ানের সম্মেলনে তিনি জানিয়ে দিয়েছেন।

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ ১৯৫১ সালের শরণার্থী কনভেনশন বা ১৯৬৭ সালের প্রটোকলের স্বাক্ষরকারী নয়। তারপরও শুধু মানবিক দিক বিবেচনায় বাংলাদেশ ১ দশমিক ১ মিলিয়ন (১১ লাখ) রোহিঙ্গা শরণার্থীকে আশ্রয় দিয়েছে। এ জন্য ৬ হাজার ৮০০ একর সংরক্ষিত বনভূমি নষ্ট করা হয়েছে।

‘বাংলাদেশের পক্ষে অনির্দিষ্টকালের জন্য এ বোঝা বহন করা সম্ভব নয়। এ অঞ্চলের জলবায়ুর ওপর ক্ষতিকর প্রভাব প্রশমনের জন্য রোহিঙ্গাসংকট সমাধানে বিশ্ব নেতাদের সহযোগিতা জরুরি।’

রোহিঙ্গারা কি স্থায়ী হয়ে যাবে

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়ে জাতিসংঘ মহাসচিবের মিয়ানমারবিষয়ক বিশেষ দূত ক্রিস্টিন এস বার্গনারের সঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেনের বৈঠক হয় জুনের মাঝামাঝি সময়ে। ছবি: নিউজবাংলা

মিয়ানমার সর্বশেষ যা বলেছিল

রোহিঙ্গা ফেরাতে ২০১৭ সালের ২৫ নভেম্বর রাজধানী নেপিডোতে চুক্তি করেছিল বাংলাদেশ ও মিয়ানমার। চুক্তির আগে সে সময়ের বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলী বৈঠক করেন অং সান সু চির সঙ্গে। ৪৫ মিনিটের বৈঠক শেষে নিজ নিজ দেশের পক্ষে এ চুক্তিতে সই করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলী ও সু চির কার্যালয়ের মন্ত্রী কিয়াও টিন্ট সুয়ে।

চুক্তিতে দুই মাসের মধ্যে প্রত্যাবাসন শুরুর কথা বলা হলেও আজ পর্যন্ত তা আলোর মুখ দেখেনি।

গত ৭ আগস্ট আসিয়ান ফোরামের ভার্চুয়াল বৈঠকে মিয়ানমারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়ান মং লুইন দ্বিপক্ষীয়ভাবে সমসা সমাধানের কথা বলেন।

এর আগে চলতি বছরের প্রথম দিন রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়ে সে সময়ের সু চি সরকারের আন্তর্জাতিক সহযোগিতাবিষয়ক মন্ত্রী কাইয়া টিনকে চিঠি দেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন।

ওই চিঠির জবাবে ২০ জানুয়ারি কাইয়া টিন চিঠি দেন মোমেনকে। এতে তিনি জানান, বাংলাদেশের সঙ্গে ২০১৭ সালে সম্পাদিত দ্বিপক্ষীয় চুক্তির ভিত্তিতে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরু করতে মিয়ানমার প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।

কাইয়া টিন লেখেন, বাংলাদেশসহ সব প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান ও পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট সমস্যা সমাধানে মিয়ানমার প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। পারস্পরিক অংশীদারত্বের ভিত্তিতে মিয়ানমার প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে যেকোনো দ্বিপক্ষীয় বিষয়ের সমাধান করতে চায়।

মিয়ানমারের মন্ত্রী পারস্পরিক আলোচনার ভিত্তিতে ১৯৭২ ও ১৯৯২ সালে রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফেরত নেয়ার বিষয়টি উল্লেখ করেন।

১৯ জানুয়ারি চীন, মিয়ানমার ও বাংলাদেশের মধ্যে ত্রিপক্ষীয় বৈঠকের মাধ্যমে মিয়ানমারের বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর দ্রুত প্রত্যাবাসন শুরুর আশাবাদও ব্যক্ত করেন তিনি।

রোহিঙ্গা ফেরাতে যত উদ্যোগ

২০১৭ সালে রোহিঙ্গা ফেরাতে নেপিডোতে দ্বিপক্ষীয় চুক্তি সইয়ের পরও একজন রোহিঙ্গাকে ফেরানো সম্ভব হয়নি কেবল মিয়ানমারের অনিচ্ছা ও অসহযোগিতার কারণে। চুক্তি অনুযায়ী মিয়ানমারের প্রতিদিন ৩০০ করে প্রতি সপ্তাহে ১ হাজার ৫০০ রোহিঙ্গাকে ফেরত নেয়ার কথা ছিল।

প্রত্যাবাসন শুরু করতে না পারার জন্য বাংলাদেশ সরকার বা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও জাতিসংঘ এবং বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার যথাযথ দায়িত্ব না নেয়াকে দায়ী করেছেন সেই সময়ের জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান কাজী রিয়াজুল হক।

নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘রোহিঙ্গা ফেরাতে আমাদের একটা চুক্তির দরকার ছিল এবং তা হয়েও ছিল। কিন্তু তারপর যেন সবার দায় শেষ হয়ে গেল।

‘বাস্তবায়নের দৃষ্টিকোণ ছিল খুবই লঘু এবং হতাশার। এ ক্ষেত্রে সে সময়ের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় যথাযথ রোল প্লে করে নাই। আবার জাতিসংঘ ও তার সব সংস্থা ও সদস্যরা কার্যকর ভূমিকা নেয় নাই। দুই দফায় প্রত্যাবাসন শুরুর দিনক্ষণ ঠিক করেও কাউকে প্রত্যাবাসন ক্যাম্পে নেয়া যায়নি।’

৮ লাখ ৩০ হাজার রোহিঙ্গার তালিকা

এখন পর্যন্ত বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া ৮ লাখ ৩০ হাজার রোহিঙ্গার তালিকা দিয়েছে বাংলাদেশ। এ বছরের ১২ জানুয়ারি সর্বশেষ ২ লাখ ৩৭ হাজার নামের তালিকা হস্তান্তর করেছে ঢাকা।

এর আগে দেয়া হয় ৫ লাখ ৯৩ জনের তালিকা। মিয়ানমার দৃশ্যত এসব তালিকা যাচাই-বাছাইয়ের নামে কালক্ষেপণের কৌশল নিয়েছে।

তিন বছরে তারা মাত্র ৪২ হাজার রোহিঙ্গার বিষয়ে যাচাই-বাছাই সম্পন্ন করেছে বলে জানিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এর মধ্যে ১৪ হাজারের কোনো তথ্য তাদের জাতীয় তথ্যভান্ডারে নেই বলে দাবি করা হয়েছে।

রোহিঙ্গারা কি স্থায়ী হয়ে যাবে
বিপুলসংখ্যক রোহিঙ্গার কারণে কক্সবাজারের স্থানীয় জনগোষ্ঠীর ওপর নানামুখী চাপ তৈরি হয়েছে। ছবি: নিউজবাংলা

রোহিঙ্গা ফেরাতে চীন-রাশিয়ার উদ্যোগ

রোহিঙ্গা ফেরাতে দ্বিপক্ষীয় চুক্তি ছাড়াও একটি ত্রিপক্ষীয় সমঝোতা করে বাংলাদেশ, মিয়ানমার ও চীন। ২০১৭ সালে সেনাচৌকিতে হামলার কথা বলে মিয়ানমারের রাখাইনে যে নজিরবিহীন হামলা করে সে দেশের সেনাবাহিনী, তার বিরুদ্ধে সারা বিশ্ব সোচ্চার হলেও এ ঘটনাকে তাদের অভ্যন্তরীণ বিষয় বলে বর্ণনা করে মিয়ানমারের ঘনিষ্ঠ মিত্র চীন ও রাশিয়া। তাদের ভেটোতে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে জাতিসংঘে আনা সব প্রস্তাব বাতিল হয়ে যায়।

এ নিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘তাসখন্দে আমার সঙ্গে চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই ও রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী আলেকজান্ডার ল্যাভরভের বৈঠক হয়েছে। তাদের কাছে আমি এই বিষয়ে কথা বলেছি। আমি তো রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়ায় যুক্ত হওয়ার প্রস্তাবও করেছি। তিনি আমাকে বলেছেন, রোহিঙ্গা ফেরাতে তারা মিয়ানমারের সঙ্গে কথা বলেছে; আরও বলবে।

‘অন্যদিকে চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমাকে বলেছেন, দ্রুত সময়ে তিন দেশের ফিজিক্যাল মিটিংয়ের (সশরীরে উপস্থিত হয়ে বৈঠক) উদ্যোগ নিচ্ছি। সমস্যা হয়েছে ১ ফ্রেব্রুয়ারি সামরিক শাসন জারি হওয়ার পর থেকে তাদের (মিয়ানমার) সঙ্গে আলোচনার লাইন কেটে গেছে, তবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে। রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন এই অঞ্চলের স্থায়ী শান্তির জন্য জরুরি বলেও স্বীকার করেছে চীন।’

আরও পড়ুন:
বোয়ালখালীতে ৭৪ রোহিঙ্গা আটক
ভাসানচর থেকে পালানোর সময় আটক ১১
নৌকাডুবিতে মৃত আরও ৭ রোহিঙ্গাকে ভাসানচরে দাফন
বঙ্গোপসাগরে নৌকাডুবি: ৪ দিনে ভাসল ৭ রোহিঙ্গার মরদেহ
বঙ্গোপসাগরে নৌকাডুবি: আরও ৪ রোহিঙ্গার মরদেহ উদ্ধার

মন্তব্য

আরও পড়ুন

বাংলাদেশ
Even if the heat wave remains it may rain

তাপপ্রবাহ থাকছেই, বৃষ্টি হলেও হতে পারে

তাপপ্রবাহ থাকছেই, বৃষ্টি হলেও হতে পারে গরমে অতিষ্ঠ জনজীবন, নগরীতে পানিতে লাফাচ্ছে শিশুরা। ছবি: নিউজবাংলা
রাজশাহী, চুয়াডাঙ্গা ও পাবনা জেলার ওপর দিয়ে অতি তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। টাঙ্গাইল, বগুড়া, বাগেরহাট, যশোর, কুষ্টিয়া জেলার ওপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে।

দেশের বিভিন্ন স্থানে যেভাবে তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে, তা অব্যাহত থাকতে পারে। এর মধ্যে কোথাও কোথাও বৃষ্টিরও সম্ভাবনা রয়েছে।

শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে এ কথা জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।

এতে বলা হয়, রাজশাহী, চুয়াডাঙ্গা ও পাবনা জেলার ওপর দিয়ে অতি তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। টাঙ্গাইল, বগুড়া, বাগেরহাট, যশোর, কুষ্টিয়া জেলার ওপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে।

মৌলভীবাজার, রাঙ্গামাটি, চাঁদপুর, নোয়াখালী, ফেনী ও বান্দরবান জেলাসহ রংপুর, ময়মনসিংহ ও বরিশাল বিভাগসহ ঢাকা, রাজশাহী ও খুলনা বিভাগের অবশিষ্টাংশের ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। এ অবস্থা অবস্থা অব্যাহত থাকতে পারে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সিলেট বিভাগের দু-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা অথবা ঝড়োহাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে এবং সেই সাথে কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলা বৃষ্টি হতে পারে।

অধিদপ্তর বলছে, সারা দেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। জলীয় বাষ্পের আধিক্যের কারণে অস্বস্তিভাব বিরাজমান থাকতে পারে।

আবহাওয়ার সার্বিক পর্যবেক্ষণে বলা হয়, লঘুচাপের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। আগামী পাঁচ দিনেও আবহাওয়াও প্রায় একই থাকতে পারে।

শুক্রবার দেশে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল চুয়াডাঙ্গায় ৪২ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল তেঁতুলিয়া ২০ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত শেষ ২৪ ঘণ্টায় দেশের কোথাও বৃষ্টি হয়নি বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Thailand visit milestone in bilateral relations PM

থাইল্যান্ড সফর দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ক্ষেত্রে মাইলফলক: প্রধানমন্ত্রী

থাইল্যান্ড সফর দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ক্ষেত্রে মাইলফলক: প্রধানমন্ত্রী থাইল্যান্ডের গভর্নর হাউসে শুক্রবার বৈঠকে দেশটির প্রধানমন্ত্রী স্রেথা থাভিসন ও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবি: ফোকাস বাংলা
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এই সরকারি সফর আমাদের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ক্ষেত্রে একটি মাইলফলক হয়ে থাকবে, যা আমাদের দুই দেশের মধ্যে ফলপ্রসূ অংশীদারত্বের এক নতুন যুগের সূচনা করেছে।’

থাইল্যান্ডে রাষ্ট্রীয় সফর দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ক্ষেত্রে মাইলফলক হয়ে থাকবে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশটির গভর্নর হাউসে শুক্রবার থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী স্রেথা থাভিসিন আয়োজিত মধ্যাহ্নভোজে তিনি এ মন্তব্য করেন বলে বার্তা সংস্থা ইউএনবির প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, বাংলাদেশ ও থাইল্যান্ডের বাণিজ্য ও বিনিয়োগ, খাদ্য নিরাপত্তা, পর্যটন, জনস্বাস্থ্য, জ্বালানি ও আইসিটি খাতে সহযোগিতা জোরদারের সম্ভাবনা রয়েছে।

তিনি বলেন, ‘আমি দৃঢ়ভাবে অনুভব করি, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ, খাদ্য নিরাপত্তা, পর্যটন, জনস্বাস্থ্য, জ্বালানি, আইসিটি, জনগণ থেকে জনগণে যোগাযোগ ও সংযোগের ক্ষেত্রে এবং বিমসটেকের অধীনে আমাদের সহযোগিতা জোরদার করার সুযোগ রয়েছে।’

এর আগে দুই নেতা গভর্নর হাউসে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে যোগ দেয়ার আগে ১৫ মিনিটের জন্য একান্ত বৈঠক করেন।

বৈঠক শেষে দুই প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে পাঁচটি দ্বিপক্ষীয় নথি—একটি চুক্তি, তিনটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) ও একটি লেটার অফ ইনটেন্ট (এলওআই) সই করা হয়।

মধ্যাহ্নভোজে শেখ হাসিনা বলেন, নিকটতম প্রতিবেশী হিসেবে বাংলাদেশ থাইল্যান্ডের সঙ্গে সম্পর্ককে অত্যন্ত গুরুত্ব দেয়।

তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের বন্ধুত্ব আমাদের ঐতিহাসিক, ভাষাগত ও অভিন্ন সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের গভীরে প্রোথিত। বাণিজ্য ও বিনিয়োগ, টেকসই উন্নয়ন, জনগণ থেকে জনগণে যোগাযোগ ও সংযোগসহ সহযোগিতার বহুমুখী ক্ষেত্রে আমাদের দুই বন্ধুত্বপূর্ণ দেশের মধ্যে উষ্ণ ও সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে।’

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী জানান, প্রধানমন্ত্রী থাভিসিন ও তিনি পারস্পরিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট দ্বিপক্ষীয় ও আঞ্চলিক বিষয় নিয়ে দীর্ঘ আলোচনা করেন।

তিনি বলেন, ‘আমরা আমাদের দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য বৃদ্ধির জন্য সব ধরনের প্রচেষ্টা করতে এবং দুই দেশের সরকারি ও বেসরকারি সংস্থার মধ্যে আরও আলাপ-আলোচনাকে উৎসাহিত করতে সম্মত হয়েছি। একইভাবে দ্বিপক্ষীয় বিনিয়োগের প্রসার ও সুবিধার্থে আমাদের সব রকম প্রচেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘শুক্রবার ঢাকা ও ব্যাংকক যে চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক সই করেছে, তা আমাদের দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা বৃদ্ধির জন্য একটি দৃঢ় কাঠামো প্রদান করবে।’

শেখ হাসিনা বলেন, সফরটি ‘প্রতিবেশী’ নীতির বৃহত্তর ফোকাসের অংশ, যা দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের গতি আরও নবায়নের জন্য দুই দেশকে চমৎকার সুযোগ করে দিয়েছে।

তিনি বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি যে, এই সফর আমাদের দুই দেশের সম্পর্ককে আরও গভীর করতে সাহায্য করবে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিনি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করেন, এই সফর দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের পূর্ণ সম্ভাবনায় অত্যন্ত প্রয়োজনীয় গতি সঞ্চার করবে।

তিনি বলেন, ‘এই সরকারি সফর আমাদের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ক্ষেত্রে একটি মাইলফলক হয়ে থাকবে, যা আমাদের দুই দেশের মধ্যে ফলপ্রসূ অংশীদারত্বের এক নতুন যুগের সূচনা করেছে।

‘আগামী দিনগুলোয় আমাদের জনগণ ও দেশের পারস্পরিক সুবিধার জন্য আমাদের সম্পর্কের নতুন গতি বজায় রাখতে হবে।’

আরও পড়ুন:
বাংলাদেশের হাসপাতাল, অর্থনৈতিক অঞ্চলে থাই বিনিয়োগ চান শেখ হাসিনা
থাইল্যান্ডে থাভিসিন-শেখ হাসিনা বৈঠক
যুদ্ধকে ‘না’ বলুন: প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী থাইল্যান্ডে, লাল গালিচা সংবর্ধনা
থাইল্যান্ডের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রীর ঢাকা ত্যাগ

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Prime Minister wants Thailands investment in hospital economic zone of Bangladesh

বাংলাদেশের হাসপাতাল, অর্থনৈতিক অঞ্চলে থাই বিনিয়োগ চান শেখ হাসিনা

বাংলাদেশের হাসপাতাল, অর্থনৈতিক অঞ্চলে থাই বিনিয়োগ চান শেখ হাসিনা থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককে শুক্রবার গভর্নমেন্ট হাউসে দেশটির কর্মকর্তাদের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার সফরসঙ্গীরা। ছবি: বাসস
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশি চিকিৎসাকর্মীদের প্রশিক্ষণ ও সক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহযোগিতার সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করেছি। আমি তাকে বাংলাদেশের হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রগুলোতে বিনিয়োগের সম্ভাবনা অন্বেষণেরও প্রস্তাবও দিয়েছি।’

বাংলাদেশের হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রগুলোতে বিনিয়োগের সম্ভাবনা অন্বেষণ করতে থাইল্যান্ডের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

তিনি বাংলাদেশের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল এবং হাইটেক পার্কেও থাইল্যান্ডের বিনিয়োগ কামনা করেছেন।

বার্তা সংস্থা ইউএনবির প্রতিবেদনে জানানো হয়, থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককে শুক্রবার গভর্নমেন্ট হাউসে দেশটির প্রধানমন্ত্রী স্রেথা থাভিসিনের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকের পর যৌথ সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা জানান।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশি চিকিৎসাকর্মীদের প্রশিক্ষণ ও সক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহযোগিতার সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করেছি। আমি তাকে বাংলাদেশের হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রগুলোতে বিনিয়োগের সম্ভাবনা অন্বেষণেরও প্রস্তাবও দিয়েছি।’

বৈঠক শেষে দুই প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে পাঁচটি দ্বিপক্ষীয় নথি, একটি চুক্তি, তিনটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) ও একটি লেটার অফ ইনটেন্টে (এলওআই) সই করা হয়।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘নিকটতম প্রতিবেশী হিসেবে থাইল্যান্ডের সঙ্গে সম্পর্ককে বাংলাদেশ অত্যন্ত গুরুত্ব দেয়। আমাদের বন্ধুত্ব আমাদের ঐতিহাসিক, ভাষাগত ও অভিন্ন সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের গভীরে প্রোথিত।

‘সহযোগিতার বহুমুখী ক্ষেত্রে আমাদের দুই দেশের মধ্যে উষ্ণ ও সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে।’

বৈঠকে দুই নেতা পারস্পরিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট দ্বিপক্ষীয় ও আঞ্চলিক বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন।

এ নিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার গতিশীল অর্থনীতির সঙ্গে আমাদের সম্পৃক্ততার ক্ষেত্রে থাইল্যান্ডকে আমরা এক গুরুত্বপূর্ণ ও গতিশীল অংশীদার হিসেবে দেখি।’

বাণিজ্য সহযোগিতার বিষয়ে বাংলাদেশ ও থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যের বর্তমান পরিসর বাড়ানোর জন্য দীর্ঘ পদক্ষেপ নিয়ে আলোচনা করেছেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশে বিনিয়োগ ও ব্যবসা সহজীকরণের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে আমি প্রধানমন্ত্রীকে (থাভিসিন) আশ্বস্ত করেছি। আমি থাই পক্ষকে আমাদের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল এবং হাইটেক পার্কে বিনিয়োগ করার ও শুধু থাইল্যান্ডের জন্য একটি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল নেয়ার প্রস্তাব দিয়েছি।’

আরও পড়ুন:
জলবায়ুর ক্ষতিকর প্রভাব মোকাবিলায় প্রতিশ্রুত অর্থ ছাড়ের আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর
ন্যাপ এক্সপো উদ্বোধন প্রধানমন্ত্রীর
কাউকে স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব ক্ষুণ্ন করতে দেব না: প্রধানমন্ত্রী
দেশীয় খেলাকে সমান গুরুত্ব দিন: প্রধানমন্ত্রী
বিএনপির বিরুদ্ধে কোনো রাজনৈতিক মামলা নেই: প্রধানমন্ত্রী

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Severe fire in 16 districts very severe

দুই জেলায় অতি তীব্র, ১৬টিতে তীব্র দাবদাহ

দুই জেলায় অতি তীব্র, ১৬টিতে তীব্র দাবদাহ গরমের মধ্যে রাজধানীর হাতিরঝিলে নামা শিশুদের উচ্ছ্বাস। ফাইল ছবি
তাপমাত্রার বিষয়ে অধিদপ্তর জানায়, সারা দেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। জলীয় বাষ্পের আধিক্যের কারণে অস্বস্তিভাব বিরাজমান থাকতে পারে।

দেশের দুটি জেলায় অতি তীব্র ও ১৬টিতে তীব্র দাবদাহ চলছে জানিয়ে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর বলেছে, সেটি অব্যাহত থাকতে পারে।

রাষ্ট্রীয় সংস্থাটি শুক্রবার সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ৭২ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে এমন তথ্য জানিয়েছে।

পূর্বাভাসে সিনপটিক অবস্থা নিয়ে বলা হয়, লঘুচাপের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে।

বৃষ্টিপাতের বিষয়ে জানানো হয়, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের দুই-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। একই সঙ্গে কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলা বৃষ্টি হতে পারে। এ ছাড়া দেশের অন্যান্য জায়গায় অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে।

তাপপ্রবাহ বা দাবদাহ নিয়ে বলা হয়, চুয়াডাঙ্গা ও যশোর জেলার ওপর দিয়ে অতি তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। টাঙ্গাইল, ফরিদপুর, গোপালগঞ্জ, মানিকগঞ্জ, রাজশাহী, পাবনা, দিনাজপুর ও নীলফামারী জেলা এবং খুলনা বিভাগের অন্যান্য জেলার (১০ জেলার মধ্যে বাকি আটটি) ওপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। ঢাকা, মাদারীপুর, কিশোরগঞ্জ, নরসিংদী, বগুড়া, নওগাঁ, সিরাজগঞ্জ, রংপুর, কুড়িগ্রাম, পঞ্চগড়, ময়মনসিংহ, মৌলভীবাজার, রাঙ্গামাটি, চাঁদপুর, ফেনী ও বান্দরবান জেলাসহ বরিশাল বিভাগের ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে।

দেশের কোনো অঞ্চলের তাপমাত্রা ৩৬ থেকে ৩৭ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে থাকলে সেখানে মৃদু তাপপ্রবাহ বা দাবদাহ বইছে ধরা হয়।

তাপমাত্রা ৩৮ থেকে ৩৯ দশমিক ৯ ডিগ্রির মধ্যে থাকলে মাঝারি এবং ৪০ থেকে ৪১ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে থাকলে তীব্র দাবদাহ ধরা হয়। অন্যদিকে তাপমাত্রা ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা তার বেশি হলে বলা হয় অতি তীব্র দাবদাহ।

তাপমাত্রার বিষয়ে অধিদপ্তর জানায়, সারা দেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। জলীয় বাষ্পের আধিক্যের কারণে অস্বস্তিভাব বিরাজমান থাকতে পারে।

আরও পড়ুন:
নতুন করে ৭২ ঘণ্টার ‘হিট অ্যালার্ট’ জারি
দাবদাহ পরিস্থিতি মোকাবিলায় সব হাসপাতাল প্রস্তুত রাখার নির্দেশ
গাছহীন সড়কটি যেন ‘উত্তপ্ত কড়াই’
দাবদাহ থেকে মুক্তি মিলবে কবে
তাপমাত্রা ও অস্বস্তি বাড়তে পারে

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Sheikh Hasina at the office of the Prime Minister of Thailand to participate in the bilateral meeting

থাইল্যান্ডে থাভিসিন-শেখ হাসিনা বৈঠক

থাইল্যান্ডে থাভিসিন-শেখ হাসিনা বৈঠক গভর্নমেন্ট হাউসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা থাই সশস্ত্র বাহিনীর একটি চৌকস দলের দেয়া গার্ড অফ অনার পরিদর্শন করেন। ছবি: বাসস
বৈঠকে দুই পক্ষ পারস্পরিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট ও আঞ্চলিক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশের কর্মকর্তারা।

থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী স্রেথা থাভিসিনের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করেছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

ইউএনবি জানায়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সকাল সাড়ে ১০টার দিকে গভর্নমেন্ট হাউসে পৌঁছালে তাকে স্বাগত জানান থাই প্রধানমন্ত্রী।

বার্তা সংস্থাটির প্রতিবেদনে বলা হয়, দুই পক্ষ পারস্পরিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট ও আঞ্চলিক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশের কর্মকর্তারা।

বৈঠকের পর দুই প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে এশিয়ার দুই দেশের মধ্যে কিছু ক্ষেত্রে সহযোগিতা জোরদারের লক্ষ্যে বেশ কয়েকটি দ্বিপক্ষীয় নথিতে সই করা হয়। দুই নেতার মধ্যে প্রায় ১৫ মিনিট একান্ত বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

গভর্নমেন্ট হাউসে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী থাই সশস্ত্র বাহিনীর একটি চৌকস দলের দেয়া গার্ড অফ অনার পরিদর্শন করেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গভর্নমেন্ট হাউসের অতিথি বইয়ে সই করার আগে স্রেথা থাভিসিন তার মন্ত্রিসভার সদস্যদের সঙ্গে তাকে পরিচয় করিয়ে দেন।

গভর্নমেন্ট হাউস ত্যাগ করার আগে শেখ হাসিনা সেখানে মধ্যাহ্নভোজে অংশ নেবেন।

থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রীর আমন্ত্রণে ছয় দিনের সরকারি সফরে বুধবার ব্যাংককে পৌঁছান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

আরও পড়ুন:
ন্যাপ এক্সপো উদ্বোধন প্রধানমন্ত্রীর
কাউকে স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব ক্ষুণ্ন করতে দেব না: প্রধানমন্ত্রী
দেশীয় খেলাকে সমান গুরুত্ব দিন: প্রধানমন্ত্রী
বিএনপির বিরুদ্ধে কোনো রাজনৈতিক মামলা নেই: প্রধানমন্ত্রী
ভিক্ষুক জাতির ইজ্জত থাকে না: প্রধানমন্ত্রী

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Savar residents want metro rail up to the memorial

স্মৃতিসৌধ পর্যন্ত মেট্রোরেল চান সাভারবাসী

স্মৃতিসৌধ পর্যন্ত মেট্রোরেল চান সাভারবাসী ছবি: নিউজবাংলা
সড়কের উপর দিয়ে সম্ভব না হলে মাটির নিচ দিয়ে মেট্রোরেলের যে প্রকল্প রয়েছে, সেই প্রকল্পে সাভারকে যুক্ত করার দাবি জানানো হয়।

মেট্রোরেলের চলমান প্রকল্পটি সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধ পর্যন্ত সম্প্রসারণের দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে স্থানীয় নাগরিক সমাজ।

বৃহস্পতিবার সকালে সাভার উপজেলা পরিষদের সামনে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।

এ সময় মেট্রোরেলের এমআরাটি-৫ ও এমআরটি-৬-এর চলমান প্রকল্পটি হেমায়েতপুর থেকে নবীনগর জাতীয় স্মৃতিসৌধ অথবা দিয়াবাড়ি থেকে সাভারের রেডিও কলোনি পর্যন্ত সম্প্রসারণের দাবি জানানো হয়।

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, এই প্রকল্পে সরকার যদি কোনোরকম জটিলতা মনে করে তাহলে এমআরটি-৬ প্রকল্প উত্তরা দিয়াবাড়ি থেকে বিরুলিয়া হয়ে সাভার রেডিও কলোনি পর্যন্ত সম্প্রসারণ করা যেতে পারে। পর্যায়ক্রমে তা নবীনগর জাতীয় স্মৃতিসৌধ পর্যন্ত সম্প্রসারণের দাবিও জানান তারা।

কর্মসূচিতে সড়কের উপর দিয়ে সম্ভব না হলে মাটির নিচ দিয়ে মেট্রোরেলের যে প্রকল্প রয়েছে, সেই প্রকল্পে সাভারকে যুক্ত করার দাবি জানানো হয়।

মানববন্ধন কর্মসূচির সভাপতিত্ব করেন সাভার নাগরিক কমিটির সমন্বয়ক ও বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (ক্র্যাব) সভাপতি কামরুজামান খান।

তিনি বলেন, ‘মেট্রোরেলের প্রকল্প সাভার পৌর এলাকার শেষ সীমানা পর্যন্ত সম্প্রসারণের জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বরাবর আবেদন করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর মূখ্য সচিবকে এ ব্যাপারে অবগতপত্র দেয়া হয়েছে। সেইসঙ্গে রেলমন্ত্রী, সচিব ও মহাপরিচালকে পত্র দিয়ে এবং সরাসরি সবকিছু অবগত করা হয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘সুবিধাবঞ্চিত সাভারবাসী রেলসেবা পাওয়ার আশায় বুক বেঁধেছে। সরকারের স্মার্ট বাংলাদেশ কর্মসূচির অংশ হিসেবে সাভারের লাখ লাখ মানুষ মেট্রেরেলের সুবিধা প্রত্যাশা করেন। দাবি বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।’

মানববন্ধনে আরও বক্তব্য রাখেন সাভার উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান রোকেয়া হক, সাভার নাগরিক কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও শিক্ষানুরাগী সালাহউদ্দিন খান নঈম, সাভার পৌর আওয়ামী লীগের যুব ও ক্রীড়া সম্পাদক মিজানুর রহমান মাসুদ, সংস্কৃতিকর্মী স্বরণ সাহা, প্রভাত ডি রোজারিও, বন্ধুরহাট যুব সংগঠনের আলোকুর রহমান, জাগরণী থিয়েটারের সভাপতি আজিম উদ্দিনসহ আরও অনেকে।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
US human rights report uses baseless facts

‘যুক্তরাষ্ট্রের মানবাধিকার প্রতিবেদনে ভিত্তিহীন তথ্য ব্যবহার হয়েছে’

‘যুক্তরাষ্ট্রের মানবাধিকার প্রতিবেদনে ভিত্তিহীন তথ্য ব্যবহার হয়েছে’ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র সেহেলী সাবরীন বৃহস্পতিবার ঢাকায় মন্ত্রণালয়ে ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশের পক্ষে বক্তব্য তুলে ধরেন। ছবি: সংগৃহীত
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র সেহেলী সাবরীন বলেন, ‘প্রতিবেদনে সরকারের অনেক উন্নতি ও অর্জন স্থান পায়নি। অন্যদিকে বিচ্ছিন্ন ও ভিত্তিহীন অভিযোগ আনা হয়েছে। এটি দেশের স্বাধীন বিচার বিভাগ এবং নির্দিষ্ট কিছু সংবিধিবদ্ধ সংস্থাসহ বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানকে মূল্যায়ন করতে শুধু ব্যর্থই হয়নি বরং অবমূল্যায়ন করেছে।’

বাংলাদেশকে নিয়ে সম্প্রতি প্রকাশিত যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের ২০২৩ সালের মানবাধিকার প্রতিবেদনের সমালোচনা করেছে বাংলাদেশ।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র সেহেলী সাবরীন বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের কাছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিবেদনটি নিয়ে বাংলাদেশের বক্তব্য তুলে ধরেন। সূত্র: ইউএনবি

তাতে বলা হয়েছে, ‘প্রতিবেদনটি দেশের স্বাধীন বিচার বিভাগ এবং নির্দিষ্ট কিছু সংবিধিবদ্ধ সংস্থাসহ বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানকে মূল্যায়ন করতে শুধু ব্যর্থই হয়নি বরং অবমূল্যায়ন করেছে, যা এ ধরনের প্রতিষ্ঠানগুলোর মনোবল ও কার্যকারিতার জন্য ক্ষতিকর।’

সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে মুখপাত্র বলেন, ‘দুঃখজনক হলেও সত্য যে সরকারের অনেক উন্নতি ও অর্জন প্রতিবেদনে স্থান পায়নি। অন্যদিকে বিচ্ছিন্ন ও ভিত্তিহীন অভিযোগ আনা হয়েছে।

‘প্রতিবেদনটি পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে পড়লে স্পষ্ট হবে যে এতে পৃথকভাবে রিপোর্ট করা বা কথিত ঘটনাগুলোর পরিপূর্ণ রেফারেন্স দেয়া হয়নি। এটি সরলীকরণ অনুমাননির্ভর তথ্যে ভরপুর।’

ইসরায়েলি দখলদার বাহিনী গাজায় অব্যাহতভাবে মানবাধিকার লঙ্ঘন করার বিষয়ে উদ্বেগ পুনর্ব্যক্ত করেছে বাংলাদেশ সরকার। একইসঙ্গে আশা প্রকাশ করেছে, ফিলিস্তিনে গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘন, নিরপরাধ নারী ও শিশু হত্যা এবং মানবতাবিরোধী অপরাধ বন্ধে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের চলমান প্রচেষ্টায় যুক্তরাষ্ট্র নেতৃস্থানীয় ভূমিকা পালন করবে।

সেহেলী সাবরীন বলেন, ‘গত বছর অনুষ্ঠিত দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে বিভিন্ন অজুহাতে এবং বিভিন্ন স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠীকে ব্যবহার করে অস্থিরতা, সহিংসতা ও নৈরাজ্য সৃষ্টির বিষয়টি প্রতিবেদনে অনুপস্থিত।

‘বেশিরভাগই স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক বেসরকারি সংস্থার (বেনামী উৎসসহ) কাছ থেকে পাওয়া অনুমাননির্ভর তথ্য দিয়ে প্রতিবেদনটি প্রস্তুত করা হয়েছে। এর মধ্যে অনেকগুলো যুক্তরাষ্ট্র সরকার বা সংশ্লিষ্ট সংস্থা সমর্থিত।’

‘প্রতিবেদনটি সহজাত পক্ষপাতদুষ্ট, এটি বেশ স্পষ্ট।’

বাংলাদেশ সরকার অবশ্য বিশ্বজুড়ে মানবাধিকার পরিস্থিতিতে যুক্তরাষ্ট্র প্রশাসনের অব্যাহত আগ্রহের প্রশংসা করেছে।

মুখপাত্র বলেন, ‘আমরা যতই প্রত্যাশা করি না কেন, বিশ্বের কোথাও মানবাধিকার পরিস্থিতি নিখুঁত নয়। মানবাধিকার কোনো শ্রেণির মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। তবে আর্থ-সামাজিক সীমাবদ্ধতা প্রায়ই এসব অধিকার আদায়ের গতিকে সীমাবদ্ধ করে।’

‘বাংলাদেশ সরকার তার নাগরিকদের মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় যথাসাধ্য চেষ্টা করে যাচ্ছে। প্রকৃতপক্ষে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশে মানবাধিকার পরিস্থিতির উল্লেখযোগ্য উন্নতি হয়েছে।

‘যেসব ক্ষেত্রে আরও উন্নতি প্রয়োজন সেগুলো সম্পর্কে সচেতন হয়ে বর্তমান সরকার ২০০৯ সাল থেকে টানা মেয়াদে মানবাধিকার পরিস্থিতির অর্থবহ অগ্রগতি করতে বিনিয়োগ অব্যাহত রেখেছে।’

তিনি বলেন, ‘যেকোনো বিচক্ষণ পর্যবেক্ষক লক্ষ্য করবেন, এ জাতীয় প্রচেষ্টার ফলে নারীর ক্ষমতায়ন, লিঙ্গ সমতা, শিশুদের অধিকার, প্রবীণদের অধিকার, শ্রমিকদের অধিকার, অভিযোগ নিষ্পত্তি, ন্যায়বিচারের সুবিধা, ধর্মীয় স্বাধীনতা, বাক-স্বাধীনতা, সংগঠন করার স্বাধীনতা, সমাবেশের স্বাধীনতা এবং আরও অনেক কিছুতে উল্লেখযোগ্য উন্নতি হয়েছে।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বলেন, ‘প্রতিবেদনে কিছু ক্ষেত্রে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিরুদ্ধে মাত্রাতিরিক্ত শক্তি প্রয়োগের অভিযোগ করা হয়েছে। যদিও এটি বিএনপি এবং তার রাজনৈতিক মিত্রদের সহিংসতা ও ভাঙচুরের বিষয়টি তুলে ধরতে ব্যর্থ হয়েছে। ওইসব ঘটনা সাধারণ মানুষের জীবনকে বিপর্যস্ত করে এবং এর ফলে সরকারি-বেসরকারি সম্পত্তির ক্ষতি সাধিত হয়েছে।

‘এ ধরনের পরিকল্পিত প্রচারণা থেকে জনসাধারণের জীবন, শৃঙ্খলা ও সম্পত্তি রক্ষায় আইনানুগ পদক্ষেপ এবং প্রতিকারের চেষ্টা করার রাষ্ট্রীয় পদক্ষেপকেও প্রতিবেদনে দায়ী করা হয়েছে। এটি খুবই হাস্যকর।’

তিনি বলেন, ‘এটা অবশ্যই উল্লেখ করা উচিত যে বাংলাদেশের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সর্বোচ্চ সংযম প্রদর্শন করেছে এবং যেকোনো আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি পূর্ণ পেশাদারত্বের সঙ্গে মোকাবিলা করেছে।’

সেহেলী সাবরীন বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনের নির্বাচন পরিচালনায় সরকারের আন্তরিক সমর্থন ও পেশাদারত্বের ভিত্তিতে ৪৪টি নিবন্ধিত দলের মধ্যে ২৮টি দল দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে অংশ নিয়েছে। বিএনপি ও অন্যান্য দলের নির্বাচন বর্জন সত্ত্বেও ৪২ শতাংশ মানুষ তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছে।’

মুখপাত্র বলেন, ‘মানবাধিকার ও শ্রম অধিকার ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃপক্ষের সঙ্গে ধারাবাহিক সংলাপ হওয়া সত্ত্বেও প্রতিবেদনে বার বার বেশকিছু অভিযোগ বা অনুযোগ উঠে এসেছে। এটা দুর্ভাগ্যজনক।

‘উদাহরণস্বরূপ রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে শরণার্থী বা রাষ্ট্রহীন ব্যক্তি হিসেবে অভিহিত করা অব্যাহত রয়েছে, যা মিয়ানমারের নাগরিক বা বাসিন্দা হিসেবে স্বীকৃতির বৈধ দাবিকে ক্ষুণ্ন করছে।’

অন্য একটি উদাহরণ তুলে ধরে তিনি বলেন, “কিছু ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীকে দেশের সাংবিধানিক বিধানের পরিপন্থী ‘আদিবাসী জনগণ’ হিসেবে চিহ্নিত করা অব্যাহত রয়েছে, যা অযৌক্তিক উত্তেজনা ও বিভাজনকে উসকে দেয়ার প্রচেষ্টার নামান্তর।

“আবার কিছু ক্ষেত্রে প্রতিবেদনটি আলাদাভাবে যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বিনিময় করা অকাট্য প্রমাণ বা তথ্য বাদ দিয়েছে বা এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে।

“উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, শাহীন মিয়া ও মোহাম্মদ রাজু হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় বিচারিক কার্যক্রম সম্পর্কে তথ্য আদান-প্রদান করা হয়েছে, যাতে ঘটনাগুলো আইনের আওতাভুক্ত বলে প্রমাণিত হয়েছে। জেসমিন সুলতানার ক্ষেত্রে যে বিচারিক প্রক্রিয়া গ্রহণ করা হয়েছে তা প্রতিবেদনে যথাযথভাবে তুলে ধরা হয়নি, বিশেষ করে চলমান যথাযথ প্রক্রিয়ার বিষয়টি।”

মুখপাত্র বলেন, ‘একইভাবে শ্রম অধিকার সম্পর্কিত বিষয়গুলো, বিশেষত ট্রেড ইউনিয়ন নিবন্ধকরণ ও কার্যক্রম সম্পর্কিত প্রতিবেদনে বেশ কয়েকটি মামলা চিহ্নিত করা হয়েছে, যা বেশ কয়েকটি দ্বিপক্ষীয় বা বহুপক্ষীয় প্ল্যাটফর্মে সংশ্লিষ্ট যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করা হয়েছে।’

‘বরাবরের মতোই প্রতিবেদনে আইনগত কর্মকাণ্ডের চিত্র ভুলভাবে তুলে ধরা হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘বরাবরের মতো এবারও কারখানা, প্রতিষ্ঠান, সরকারি সম্পত্তি বা ব্যবস্থাপনা কর্মীদের বিরুদ্ধে শ্রমিকদের নামে অযাচিত বাধা বা ভাঙচুরের ক্ষেত্রে আইন প্রয়োগকারী কর্তৃপক্ষের গৃহীত আইনানুগ পদক্ষেপের চিত্র তুলে ধরা হয়েছে প্রতিবেদনে।

‘প্রতিকার ও জবাবদিহি নিশ্চিত করতে গৃহীত প্রশাসনিক ও বিচারিক পদক্ষেপের বিস্তারিত বিবরণ না দিয়ে প্রতিবেদনে মানবাধিকারের পদ্ধতিগত অপব্যবহারের অংশ হিসেবে বেসরকারি ব্যক্তি বা সংস্থার দ্বারা সংঘটিত ঘটনাগুলো প্রকাশের প্রবণতা বজায় রাখা হয়েছে।

মুখপাত্র আরও বলেন, ‘সাধারণভাবে বাংলাদেশ সরকার সামগ্রিক প্রতিবেদনটি নজরে নিয়ে যেকোনো পরিস্থিতিতে সব নাগরিকের মানবাধিকারের পূর্ণ উপভোগ নিশ্চিত করার প্রতিশ্রুতি সমুন্নত রাখতে জাতিসংঘের মানবাধিকার প্রক্রিয়া, যুক্তরাষ্ট্র এবং অন্যান্য আন্তর্জাতিক অংশীদার ও স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে জড়িত থাকার প্রত্যাশায় রয়েছে।’

আরও পড়ুন:
বাংলাদেশে মানবাধিকার পরিস্থিতির উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন নেই: যুক্তরাষ্ট্র

মন্তব্য

p
উপরে