মৎস্য ও প্রাণিসম্পদসচিব রওনক মাহমুদের করোনা আক্রান্ত মায়ের দেখভালের জন্য যে ২২ জন কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দেয়ার কথা বলা হচ্ছে, তাদের হাসপাতালে করোনা ইউনিটে ঢোকারই অনুমতি থাকার কথা নয়।
করোনা ইউনিটে চিকিৎসক ও সেবিকা ছাড়া কেবল স্বজনদের পাশে থাকার অনুমতি দেয়া হয়। তাও সেখানে থাকে নানা বিধিনিষেধ।
সচিবের ৯৫ বছর বয়সী মা করোনায় আক্রান্ত। তার চিকিৎসা চলছে জাতীয় হৃদ্রোগ ইনস্টিটিউটে। সোমবার একটি টেলিভিশন চ্যানেলে সংবাদ প্রকাশ হয় যে, তার চিকিৎসার দেখভালের জন্য সময় বেঁধে দিয়ে ২৪ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে সংবাদ প্রচারের পর তোলপাড় পড়ে যায়।
পরদিন মন্ত্রণালয়ে আসেননি সচিব। জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠক যোগ দিলেও বেলা ৩টা পর্যন্ত আর দপ্তরে যাননি। ফলে তার বক্তব্য পাওয়ার অপেক্ষায় থাকা গণমাধ্যমকর্মীদের ফিরতে হয় নিরাশ হয়ে।
সচিবের অনুপস্থিতিতে কথা বলেছেন মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম। তিনি যে বক্তব্য রেখেছেন, তার পুরোটাই ‘সচিবের কাছ থেকে শোনা’। তবে একটি বিষয় নিশ্চিত করেছেন যে মন্ত্রণালয় থেকে কোনো আনুষ্ঠানিক চিঠি দেয়া হয়নি।
মন্ত্রণালয়ের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার অনুরোধ করে নিউজবাংলাকে বলেছেন, আনুষ্ঠানিক চিঠি না গেলেও একটি অনানুষ্ঠানিক নির্দেশনা গেছে।
তিনি বলেন, এর সঙ্গে সচিবের সংশ্লিষ্টতা ছিল, এমন নয়। কয়েকজন অতি উৎসাহী কর্মকর্তা সচিবকে তুষ্ট করতে এ কাজ করেছেন।
তবে সেই কর্মকর্তা কারা, সেটি বলেননি তিনি।
তালিকায় যাদের নামে বিস্ময়
সচিবের মায়ের প্রয়োজনীয় চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করতে যাদের দায়িত্ব দেয়ার কথা বলা হচ্ছে, তাদের কারও চিকিৎসা বিষয়ে ন্যূনতম জ্ঞান থাকার কথা নয়।
তাদের মধ্যে চারজন বিজ্ঞানী, যাদের একজন আবার ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা। একজন আছেন উপসচিব। দুজন করে আছেন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন কর্মকর্তা। আছে একজন কম্পিউটার প্রোগ্রামার, সিস্টেম অ্যানালিস্ট, অ্যানিমেল প্রোডাকশন অফিসারের নামও। আরও আছেন তিনজন ল্যাব টেকনিশিয়ান, চারজন ট্রেইনি সহকারী এবং বাকি পাঁচজন অফিস সহায়ক।
সব মিলিয়ে সংখ্যাটি দাঁড়ায় ২২ জন। তাদের মধ্যে একজন ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তাকে তিনটি শিফটে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।
তালিকায় সচিবের মায়ের পরিচর্যায় প্রতিদিন চার শিফটে দুজন করে কর্মীকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। তিন দিনে দায়িত্ব পালন করার কথা ২৪ জনের। তবে প্রকৃতপক্ষে ২২ জনের নাম আছে। কারণ, একজন কর্মকর্তাকে দেয়া হয়েছি তিন শিফটের দায়িত্ব।
আসাদুল আলম নামে সেই কর্মকর্তা প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউটে ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত। প্রতিষ্ঠানটির ওয়েবসাইট অনুযায়ী তিনি সাইট ইনচার্জ হিসেবে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি আঞ্চলিক কেন্দ্রে কাজ করেন। তিনি বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচডি করছেন।
বণ্টন করা সূচি অনুযায়ী তার সোম থেকে বুধবার দুপুর ১২টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত দায়িত্ব পালনের কথা। এ সময়ে তার সরকারি দায়িত্ব কীভাবে পালন হয়েছে- এই বিষয়ে জানতে তার ব্যক্তিগত মোবাইল ফোনে বহুবার কল করা হলেও তিনি ফোন না ধরায় জবাব মেলেনি।
তার মতোই বিজ্ঞানী আছেন আরও তিনজন। তারা হলেন মৎস্য অধিদপ্তরের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান এবং প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ফারুক মিয়া ও এম এস নিয়াজ মোর্শেদ।
তালিকায় তাদের রাত ১২টা থেকে সকাল ৬টা পর্যন্ত দায়িত্ব পালনের কথা বলা আছে। একজনের সোমবার, একজনের মঙ্গলবার আর একজনের বুধবার।
তালিকায় আছে প্রোগ্রামার নুর মোহাম্মদের নাম। যার দায়িত্ব পালনের কথা মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত। সিস্টেম অ্যানালিস্ট ইলিয়াস হোসেনের দায়িত্ব পালনের কথা লেখা আছে সোমবার সকাল ৬টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত।
মৎস্য অধিদপ্তরের যে দুই পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন কর্মকর্তার নাম আছে, তাদের মধ্যে রাশেদ পারভেজের দায়িত্ব পালনের কথা উল্লেখ আছে মঙ্গলবার সকাল ৬টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত। শামসুল আলম পাটওয়ারীর দায়িত্ব পালনের কথা বলা আছে বুধবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত।
ফোন করা হলে তিনি বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, ‘এ বিষয়ে আমি কিছু জানি না। এমন কোনো দায়িত্ব আমি পাইনি।’
একজন উপসচিবের নামও আছে তালিকায়। পুলকেশ মণ্ডল নামের সেই কর্মকর্তাকে বুধবার সকাল ৬টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত দায়িত্ব পালনের কথা বলা আছে সেই তালিকায়।
অ্যানিমেল প্রোডাকশন অফিসার আলী রেজা আহম্মেদের সোমবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত দায়িত্ব পালনের কথা উল্লেখ আছে।
তিনি কী দায়িত্ব পালন করেছেন- এই বিষয়ে জানতে তাকে ফোন দেয়া হলে বলেন, ‘আমি বাসে আছি, কিছু শুনতে পাচ্ছি না। আপনি আমাকে পরে ফোন দেন।’
তবে এ কথা বলার আগে ‘আপনি কি আলী রেজা আহম্মেদ বলছেন?’ এমন প্রশ্ন তিনি শুনতে পেয়ে বলেন, ‘হ্যাঁ, বলুন।’
বাকিরা কেউ কর্মকর্তা নন। এই ২১ জনেরই নাম, পদবি এমনকি মোবাইল ফোন নম্বর উল্লেখ থাকা বলে দেয়, তালিকাটি একটি অফিস থেকেই এসেছে।
মন্ত্রণালয়ে কর্মকর্তাদের মুখে কুলুপ
মঙ্গলবার সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ে বিষয়টি নিয়ে পাঁচজন কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করেছে নিউজবাংলা। কিন্তু বিষয় শুনেই তারা এড়িয়ে গেলেন।
সেই তালিকায় উল্লেখ আছে, তালিকাভুক্ত কর্মকর্তারা দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে সমন্বয় করবেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিবের একান্ত সচিব আজিজুল ইসলামের সঙ্গে।
তবে তিনি বিষয়টি অস্বীকার করেছেন। বলেন, ‘এ বিষয়ে আমি কিছুই জানি না।’
কিন্তু এই কর্মকর্তা দায়িত্ব পাওয়া কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কাছ থেকে সচিবের মায়ের সবশেষ খবর হোয়াটস অ্যাপে জানাতে বারবার তাগাদা দিয়েছেন বলে তথ্য মিলেছে।
যদি কিছুই না জানেন, তাহলে এই বিষয়টি কীভাবে ঘটল? এমন প্রশ্নে উপসচিব পদমর্যাদার এই কর্মকর্তা বলেন, ‘সচিব স্যার বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন। এরপর আমার বলার কিছু থাকে না।’
একজন উপসচিবের কাছ থেকে যা জানা গেল
একের পর এক কর্মকর্তা এড়িয়ে যাওয়ার পর উপসচিব মর্যাদার একজন কর্মকর্তা বিষয়টি নিয়ে তথ্য জানাতে রাজি হলেন। তিনি বলেন, ‘সচিব স্যার কদিন আগেও ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। ফলে ওনার শারীরিক অবস্থাটা ভালো না। এর মধ্যে মায়ের অসুস্থতা। আমার মনে হয়, কিছু উৎসাহী কর্মকর্তা এটা করেছে। কিন্তু বিষয়টা যেভাবে সংবাদে এসেছে, তেমন কিছু নয়। এটা অফিশিয়াল কোনো নির্দেশনা নয়।’
ওই কর্মকর্তা বলেন, ‘মন্ত্রী-সচিবদের আপনজন সিক হলে অনেকেই দেখতে যান। সচিব স্যারের মা অসুস্থ হওয়ায় অনেকে দেখতে যাচ্ছিলেন। যেহেতু করোনা, তাই হয়তো ধাপে ধাপে যাওয়ার জন্য বলেছিলেন। তবে এটা অফিশিয়াল কোনো আদেশ ছিল না।’
সচিবের ঘনিষ্ঠ অপর এক কর্মকর্তা বলেছেন, ‘তালিকা একটা হয়েছে। আমি নিজেও দেখেছি। তবে এটুকু বলতে পারি, ওটা কোনো অফিস আদেশ ছিল না, সিম্পলি একটা তালিকা।’
তবে কার বা কাদের নির্দেশে এই তালিকা তৈরি হয়েছে, সে বিষয়ে কিছু জানেন না বলে দাবি করেন তারা।
আরেকজন কর্মকর্তা বললেন, ‘তালিকাটি কে বা কারা করেছে বা কে ফাঁস করেছে, তা নিয়ে মন্ত্রণালয়জুড়েই আলোচনা চলছে।’
মন্ত্রী যা বললেন
সচিব মন্ত্রণালয়ে নেই। তবে ছিলেন মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম। ফলে তাকেই ঘিরে ধরেন সাংবাদিকরা।
তিনি বলেন, ‘আমি সচিবকে জিজ্ঞেস করেছি, তিনি বলেছেন যে এভাবে কাউকে কোনো দায়িত্ব দেয়া হয়নি। কাউকে অফিশিয়াল কাজের বাইরে গিয়ে তার মাকে দেখভাল করা বা সেখানে কোনো দায়িত্ব পালনের কথা বলেননি।’
সচিবের মাকে এতজন কর্মকর্তা-কর্মচারীর দেখতে যাওয়া অতি উৎসাহী কাজ কি না, এমন প্রশ্নে মন্ত্রী বলেন, ‘এর বাইরে তো আমার বলার কিছু নেই। মন্ত্রণালয় থেকে কোনো চিঠি ইস্যু করা হয়নি, এটা আমি নিশ্চিত হয়েছি। সচিবকে জিজ্ঞেস করেছি, তিনিও বলেছেন, না, আমি ভারবালিও কাউকে কোনো দায়িত্ব দিইনি। কাউকে কোনোভাবে আমার মাকে দেখভালের দায়িত্ব দিইনি। এখন আমার মা অসুস্থ, তাকে সহানুভূতি জানাতে হয়তো কেউ যেতে পারেন।’
সচিব কী বলেছেন- এমন প্রশ্নে মন্ত্রী বলেন, ‘গেছেন এটা উনি ওভাবে বলেননি, এভাবে কেউ যেতে পারেন, সেটা নিজ দায়দায়িত্বে যদি কেউ গিয়ে থাকে। লিখিত বা মৌখিকভাবে ওনার মাকে দেখার জন্য বা হসপিটালে যাওয়ার জন্য কিছু বলেননি। এটা উনি আমাকে জানিয়েছেন।’
হাসপাতাল পরিচালকও কিছু বলছেন না
সচিবের মা যে হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন, তার পরিচালক মীর জামাল উদ্দিন দাবি করেছেন, তিনি কিছুই জানেন না। তিনি বলেন, ‘গণমাধ্যমে শুনেছি। যে কারণে এ বিষয়ে বিস্তারিত কিছু বলতে পারব না।’
আরও পড়ুন:প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে গঠিত বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার দেশের মাঝারি ও ক্ষুদ্র শিল্পের বিকাশে খুবই আন্তরিক।
এ খাতের কাঙ্ক্ষিত উন্নয়নের পাশাপাশি টেকসই শিল্পায়ন, ব্যবসা-বাণিজ্য ও বিনিয়োগ প্রসারে বাংলাদেশ অ্যাক্রেডিটেশন বোর্ড (বিএবি) ও সংশ্লিষ্ট সকলকে ইতিবাচক ভূমিকা অব্যাহত রাখার জন্য তিনি আহ্বান জানান।
আজ রোববার প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস ‘বিশ্ব অ্যাক্রেডিটেশন দিবস’ উপলক্ষে দেয়া এক বাণীতে এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও ‘বিশ্ব অ্যাক্রেডিটেশন দিবস-২০২৫’ উদ্যাপন করা হচ্ছে জেনে আমি আনন্দিত। এ উপলক্ষ্যে আমি বাংলাদেশ অ্যাক্রেডিটেশন বোর্ড (বিএবি) এর সকল অংশীজন এবং সহযোগী সংস্থাকে জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা। দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য ‘অ্যাক্রেডিটেশন : ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোগের ক্ষমতায়ন (এসএমই)’, বর্তমান বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে সময়োপযোগী হয়েছে বলে আমি মনে করি।’
ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তারা বিশ্ব অর্থনীতির অন্যতম চালিকাশক্তি উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আমাদের মোট দেশজ উৎপাদনের একটি বৃহৎ অংশ এসএমই খাত থেকে আসে। নতুন নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টিতেও এ খাতের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এসএমই খাতের প্রতিষ্ঠানগুলো প্রতিনিয়ত আন্তর্জাতিক বাজারে প্রবেশে প্রতিবন্ধকতা, ক্রেতা ও ভোক্তার পরিবর্তনশীল চাহিদা এবং আর্থিক সীমাবদ্ধতার মতো চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হচ্ছে। এ সকল চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে প্রয়োজন সম্মিলিত বৈশ্বিক উদ্যোগ।’
তিনি বলেন, ‘অ্যাক্রেডিটেশন ব্যবস্থা জাতীয় গুণগতমান অবকাঠামো উন্নয়নের মাধ্যমে পণ্য ও সেবার সরবরাহ ব্যবস্থার সকল পর্যায়ে গুণগতমান নিশ্চিতকরণ, দক্ষ কারিগরি জনবল সৃষ্টি, বাণিজ্যে কারিগরি বাধা অপসারণ এবং আন্তর্জাতিক বাজারে প্রবেশের সুযোগ সৃষ্টি করে এ সকল চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে বিএবি এ লক্ষ্যে কাজ করে এখন পর্যন্ত বিভিন্ন ল্যাবরেটরি, ডায়াগনস্টিক সেন্টার, সনদ প্রদানকারী সংস্থা এবং পরিদর্শন সংস্থাসহ মোট ১৫৫টি সরকারি, বেসরকারি এবং বহুজাতিক সংস্থাকে আন্তর্জাতিক মান অনুসারে অ্যাক্রেডিটেশন সনদ প্রদান করেছে।’
মাদক মুক্ত সমাজ গড়ার প্রত্যয়ে ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়ায় গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী ও এক সময়ের জনপ্রিয় খেলা হা-ডু-ডু খেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আজ রোববার (৮ জুন) বিকেলে উপজেলার রাধাকানাই ইউনিয়নের খালইপুড়া দাখিল মাদরাসা মাঠে সূর্য তরুণ যুব সংঘের বর্ণাঢ্য আয়োজনে বিলুপ্তপ্রায় এ খেলাটি অনুষ্ঠিত হয়।
খোরশেদ আলম আকন্দ এর সভাপতিত্বে এতে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন মোমেনশাহী ল কলেজের সভাপতি ও উপজেলা বিএনপির যুগ্ন আহবায়ক এড. রেজাউল করিম চৌধুরী।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, গ্রামগঞ্জের একসময়কার জনপ্রিয় পুরনো এ খেলাটি গ্রামের কাঁচা রাস্তায়, মাঠ, বাগানে বা খোলা স্থানে জমজমাট ও উৎসবমুখর পরিবেশে হতো। কালের বিবর্তনে এই খেলা এখন আর আগের মতো দেখা যায় না। তাই জনপ্রিয় এ খেলাটি টিকিয়ে রাখা এবং নতুন প্রজন্মকে খেলাধূলায় উজ্জীবিত করায় তিনি সূর্য তরুণ যুব সংঘকে অভিনন্দন জানান।
এ খেলায় ঢাকা একাদশকে হারিয়ে গ্রাম একাদশ বিজয় লাভ করেন। পরে বিজয়ীদলকে পুরস্কার হিসেবে একটি খাসি উপহার দেওয়া হয়। এসময় অন্যান্যদের মাঝে আরও উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ মাদরাসা শিক্ষক সমিতি ফুলবাড়িয়া শাখার সদস্য সচিব মোখলেছুর রহমান বিএসসি, এডভোকেট মো. জসিম উদ্দিন, ডা. রফিকুল ইসলাম, মো. আবুল কালাম প্রমুখ।
নাগরিক জীবনের ব্যস্ততায় হারিয়ে যাওয়া এই ঐতিহ্যবাহী খেলাটি উপভোগ করতে খালইপুড়া দাখিল মাদরাসা মাঠে বিপুলসংখ্যক দর্শক ও ক্রীড়া প্রেমী জড়ো হয়।
ঝিনাইগাতীতে ঈদ-উল-আজহার পরদিন, ৮ জুন রবিবার, ময়মনসিংহ বিভাগীয় কমিশনার মো: মোখতার আহমদে এর মহতী উদ্যোগে এবং ঝিনাইগাতী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জনাব আশরাফুল আলম রাসেলের সরাসরি তত্ত্বাবধানে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় অসহায় ও দরিদ্র ১৫০টি পরিবারের মাঝে কুরবানির মাংস বিতরণ করা হয়।
এই কর্মসূচির অংশ হিসেবে ঝিনাইগাতী উপজেলার হলদীগ্রাম, নয়া রাংটিয়া, ভারুয়া, পূর্ব গজারীকুড়া আশ্রয়ণ ও গুচ্ছগ্রামের ১২০টি পরিবার এবং উপজেলার অন্যান্য এলাকার আরও ৩০টি পরিবার এই সহায়তা পান। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ছিল—প্রত্যেকটি পরিবারের দরজায় গিয়ে ইউএনও নিজ হাতে কুরবানির মাংস তুলে দেন এবং প্রত্যেকের সাথে আন্তরিকভাবে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক গুচ্ছগ্রামের এক মহিলা বলেন, “আমি তো ভাবছিলাম, আমাগো কথা কে ভাবে? কিন্তু স্যার যেইভাবে সামনে আইস্যা ডাক দিল আর মাংসের প্যাকেট হাতে দিয়ে ঈদ মোবারক কইলো, মনডারে বইলা বোঝানো যাইবো না। দোয়া করি, আল্লাহ যেন ইউএনও স্যারকে সব সময় গরিব-দুখির লগে থাকার তৌফিক দান করেন।”
ইউএনও আশরাফুল আলম রাসেল বলেন, “ঈদের আনন্দ যেন প্রান্তিক ও অসহায় মানুষদের মাঝেও পৌঁছে যায়, সেটাই ছিল আমাদের প্রধান লক্ষ্য। আমরা চাইনি কেউ এই উৎসব থেকে বাদ পড়ে থাকুক।”
এই ব্যতিক্রমধর্মী ও মানবিক উদ্যোগে কেবল খাবার নয়, পৌঁছে গেছে ভালোবাসা, সম্মান ও রাষ্ট্রের প্রতিনিধিত্বকারী একজন কর্মকর্তার সরাসরি উপস্থিতি—যা ওইসব মানুষের জন্য ছিল এক অনন্য অনুভূতি।
স্থানীয় বাসিন্দারা ইউএনও আশরাফুল আলম রাসেল মহোদয়ের এ আন্তরিক প্রচেষ্টাকে অভিনন্দন জানান এবং বলেন, এমন মানবিক প্রশাসনিক কর্মকাণ্ড মানুষকে রাষ্ট্রের প্রতি আস্থাশীল করে তোলে।
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে দেখা করে দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে ‘ভুল–বোঝাবুঝির’ অবসান করতে চান যুক্তরাজ্যের সাবেক ‘সিটি মিনিস্টার’ টিউলিপ সিদ্দিক। তাই অধ্যাপক ইউনূসের আসন্ন যুক্তরাজ্য সফরের সময় তাঁর সাক্ষাৎ চেয়ে চিঠি দিয়েছেন বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাগনি টিউলিপ।
যুক্তরাজ্যের সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
টিউলিপের বিরুদ্ধে শেখ হাসিনার সরকারের আমলে বাংলাদেশে বাড়তি সুবিধা নেওয়ার অভিযোগ এনেছে কর্তৃপক্ষ। গত বছরের আগস্টে গণ-অভ্যুত্থানের মুখে শেখ হাসিনার সরকারের পতন হয়। তিনি পালিয়ে ভারতে চলে যান। বাংলাদেশে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারপ্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
সংবাদমাধ্যমে টিউলিপের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ নিয়ে শোরগোল হয়েছে। এর মধ্যে টিউলিপ কিংবা তাঁর মায়ের (শেখ রেহানা) বিরুদ্ধে প্রভাব খাটিয়ে ৭ হাজার ২০০ বর্গফুটের প্লট নেওয়ার দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) অভিযোগ রয়েছে।
টিউলিপ এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। আর টিউলিপের আইনজীবীরা বলেছেন, এসব অভিযোগ ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’। এর কোনো ভিত্তি নেই। সেই সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করছে না বলেও অভিযোগ টিউলিপের।
কয়েক দিনের প্রবল বৃষ্টি ও যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধির সাথে সাথে পাল্লা দিয়ে মানিকগঞ্জের দৌলতপুর উপজেলার বাচামারা,বাঘুটিয়া,চরকাটারী ইউনিয়নে ব্যাপক ভাঙ্গন শুরু হয়েছে। যমুনা নদীতে পানি বৃদ্ধি ফলে প্রবল ¯্রােত ভাঙ্গনে করাল গ্রাসে শনিবার ঈদের দিন দুপুরে বাচামারা ইউনিয়নের নিজ ভারাঙ্গা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত তিনতলা পাকা ভবন নদী গর্ভে তলিয়ে যায় । সেই সাখে গত এক সপ্তাহে কয়েক শত ঘরবাড়ি বসতভিটা ও ফসলি জমি নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে । স্কুল ভবন নদী গর্ভে বিলীন হওয়ায় ঐ বিদ্যালয়ের কমলমতি ছাত্র/ছাত্রীদের লেখা পড়া অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে ।
নদীপাড়ের মানুষ স্বাভাবিক ভাবে জীবন যাপন করলেও বর্ষার শুরুতেই তাদের ভাঙন আতঙ্ককে প্রহর ঘুনতে হচ্ছে। প্রতি বছর বর্ষা মৌসুমে নদীপাড়ে ভাঙন শুরু হলে ঘরবাড়ি বসতভিটা, ফসলি জমি হারিয়ে নি:স্ব হয়ে পড়েন নদীপাড়ের বাসিন্দারা।স্থানীয় পানি উন্নয়ন অফিস ভাঙনরোধে জরুরি ভিত্তিতে ১৪ হাজার জিও ব্যাগ ফালানোর কার্যক্রম হাতে নিয়েছে বলে জানা গেছে।
পানি উন্নয়ন অফিস সূত্রে জানা গেছে,মানিকগঞ্জের বুক চিরে বয়ে গেছে পদ্মা, যমুনা, কালীগঙ্গা, ধলেশ্বরী, ইছামতী, গাজীখালিসহ ১৪টি নদী।ভাঙন আতঙ্ক নদী পাড়ের মানুষেরে এযেন নিত্য দিনের সঙ্গি। প্রতি বছর বর্ষা মৌসুমে নদীপাড়ে ভাঙন শুরু হলে ঘরবাড়ি বসতভিটা, ফসলি জমি হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়েন নদীপাড়ের বাসিন্দারা।
জানা গেছে,দৌলতপুর উপজেলার চর কালিয়াপুর,বাঘুটিয়া, ভারাঙ্গা,রংদারপাড়া,বিষ্ণপুর,রামচন্দ্রপুর,আবুডাঙ্গা পূর্বপাড়া,চরকাটারি বোর্ডঘর বাজার,চরকাটারি সবুজসেনা হাইস্কুল,বাচামারা ইউনিয়নের চরভারাঙ্গা সরকার পাড়া,মজম শেকের পাড়া,বাচামারা পশ্চিম পাড়া,উত্তরখন্ড,সুবুদ্ধি,বাঘুটিয়া ইউনিয়নের পাচুরিয়া , বাঘুটিয়া বাজার,পারুরিয়া বাজার,রাহাতপুর, জিয়নপুর ইউনিয়নের বৈন্যাঘাট,লাউতাড়া,লাউতাড়া আশ্রয়ন কেন্দ্র ,চকবাড়াদিয়া, চকমিরপুর ইউনিয়নের ভাঙ্গা রামচন্দ্রপুর,রামচন্দ্রপুর নতুন পাড়া, হাতকোড়া খলসী ইউনিয়নের চরমাস্তল,বিষ্ণপুর খাঁপাড়া,পার মাস্তলসহ ২৮ টি এলাকা নদী ভাঙনের ঝুঁকিতে রয়েছে ।
দৌলতলপুর উপজেলার বাঘুটিয়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মো : গোলাম ইয়াছিন জানান,রাহুতপুর এলাকায় বালুমহল ইজারার নাম করে বাঘুটিয়া এলাকায় নদী থেকে বালু উত্তলোন করায় প্রতি বছর ভাঙন দেখা দেয়।এতে আমাদের গ্রামের কয়েকশ পরিবারকে অপূরনীয় ক্ষতির মূখে পড়তে হয়।বালু না কাটলে আমাদের এলাকায় নদী কিছুটা কম ভাঙবে।
বাচামারা ইউনিয়নের ইউপি সদস্য মো: ওয়াজেদ আলী সরকার বলেন, নদীতে প্রবল ¯্রােত ২/৩ দিনে ব্যাপক ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে । চোখের পলকে নিজ ভারাঙ্গা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত তিনতলা পাকা ভবন নদী গর্ভে বিলীন হয়ে তলিয়ে গেলো । ভাঙনরোধে সরকারের কাছে ব্যাবস্থা নেওয়ার দাবী জানান তিনি।
মানিকগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মুহাম্মদ আক্তারুজ্জামান জানান, নদীপাড়ের ঝুকিপূর্ণ স্থানগুলোর ভাঙন ঠেকাতে জরুরি ভিত্তিতে ১৪ হাজার জিও ব্যাগ ফালানোর কার্যক্রম শুরু করা হবে।এছাড়া নদী ভাঙন প্রতিরোধে স্থায়ী প্রতিরক্ষামূলক প্রকল্প গ্রহণের লক্ষ্যে ফিজিবিলিটি স্টাডি চলমান রয়েছে ও কারিগরি কমিটি গঠন করা হয়েছে।
এবিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাহিয়ান নুরেন জানান, শুক্রবারে নিজভারাঙ্গা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবন নদী ভাঙ্গনের সংবাদ পেয়ে তাৎক্ষনিক ভাবে উপজেলা প্রকৌশলীকে জরুরী ভিত্তিতে স্কুল ভবন নিলাম দেয়া যায় কিনা ব্যবস্থা প্রহনের নির্দেশ দেয়া হয়েছিল । উপজেলা প্রকৌশলী সরেজমিনে গিয়ে দেখেছেন কিন্তু ভাঙ্গনের ফলে ভবনটি অত্যান্ত ঝুকিপূর্ণ হওয়ায় কোন কুলকিনারা করতে পারেনি । খ্বর পেয়েছি ঈদের দিন ভবনটি নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে ।
গতকাল শনিবার পবিত্র ঈদুল আজহার দিনে বন্ধ থাকার পর আজ রোববার থেকে ফের চালু হয়েছে মেট্রোরেল। তবে মেট্রোতে কোরবানির পশুর চামড়া, কাঁচা বা রান্না করা মাংস পরিবহন করা যাবে না।
রোববার সকাল ৮টা থেকে মেট্রোরেল চলাচল শুরু হয়।
ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল) সূত্রে জানা যায়, আজ (রোববার) প্রতি ৩০ মিনিট পরপর ট্রেন চলছে। আগামীকাল সোমবার থেকে মেট্রোরেল সরকারি ছুটির দিনের সময়সূচি অনুযায়ী চলাচল করবে।
গত মঙ্গলবার ডিএমটিসিএলের পরিচালক (প্রশাসন) এ কে এম খায়রুল আলমের স্বাক্ষর করা এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, মেট্রোরেলে কোরবানির পশুর চামড়া, কাঁচা বা রান্না করা মাংস পরিবহন করা যাবে না। মেট্রো স্টেশনের প্রতিটি গেটে যাত্রীদের যথাযথভাবে তল্লাশি করা হবে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, কোনো যাত্রীর কাছে কাঁচা বা রান্না করা মাংস পাওয়া গেলে তাৎক্ষণিক তার মেট্রো স্টেশনে প্রবেশ আটকে দেওয়া হবে। মেট্রোরেলের নিরাপত্তা কর্মীদের এসব নির্দেশনা কঠোরভাবে বাস্তবায়ন করতেও বিজ্ঞপ্তিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
ঈদুল আজহার দ্বিতীয় দিনেও রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন জায়গায় কোরবানির দৃশ্য চোখে পড়েছে।
গতকাল শনিবার ঈদের প্রথম দিন ব্যস্ততা ও চাপ সামলাতে না পেরে কিংবা কসাই সংকটের কারণে যারা কোরবানি করতে পারেননি আজ রোববার ঈদের দ্বিতীয় দিনে তারা পশু কোরবানি করছেন। নগরীর পুরান ঢাকা, লালবাগ, টিকাটুলী, মুগদা এবং বাসাবো এলাকায় সকাল থেকেই কোরবানির পশু জবাই ও মাংস প্রক্রিয়াকরণের ব্যস্ত দৃশ্য চোখে পড়েছে।
পুরান ঢাকার বংশাল এলাকায় সরেজমিনে দেখা যায়, কয়েকটি বাসার সামনে পলিথিন টানিয়ে পশু কোরবানির প্রস্তুতি চলছে। আবার অনেকেই ইতোমধ্যে পশু কোরবানি সম্পন্ন করেছেন। তার কিছু দূরেই রাস্তার পাশে কয়েকজন তরুণ মাংস কাটছেন, পাশে দাঁড়িয়ে কসাই নির্দেশনা দিচ্ছেন। কিছু দূরে শিশু-কিশোররা দাঁড়িয়ে কোরবানির দৃশ্য দেখছে। লালবাগের বউবাজার, টিকাটুলীর জনবহুল গলি, মুগদা ও বাসাবোর অভ্যন্তরীণ বেশকিছু সড়কেও একই চিত্র দেখা যায়।
সংশ্লিষ্টরা জানান, গতকাল ঈদের দিন কসাই সংকট এবং সময় ও প্রস্তুতির অভাবে কোরবানি করতে না পেরে অনেকেই আজ করছেন। কারও কারও গরু হাট থেকে বাড়ি পৌঁছেছে ঈদের দিন রাতে। আবার কেউ কেউ ইচ্ছে করেই ভিড় এড়িয়ে আজ কোরবানি করছেন, যাতে সময় নিয়ে কাজ করতে পারেন।
এদিকে আজও পরিচ্ছন্নতা রক্ষায় সিটি করপোরেশনের তৎপরতা দেখা গেছে। ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন জানিয়েছে, কোরবানির দ্বিতীয় দিনেও পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম চলছে। ডিএনসিসির পরিচ্ছন্নতা বিভাগের এক কর্মকর্তা বলেন, যেসব এলাকায় আজ কোরবানি হচ্ছে, সেখানে আমরা নির্ধারিত পয়েন্টে কর্মী পাঠিয়ে বর্জ্য অপসারণ করছি। ঈদের তিন দিনই আমরা মাঠে থাকব।
ধর্মীয় দিক থেকে ঈদুল আজহার দ্বিতীয় দিন অর্থাৎ ১১ জিলহজও কোরবানির জন্য গুরুত্বপূর্ণ। ইসলামের বর্ণনায় এ দিনটি মর্যাদাপূর্ণ বলে উল্লেখ রয়েছে। নবী করিম (সা.) বলেছেন, আল্লাহর কাছে সবচেয়ে শ্রেষ্ঠ দিন হলো কোরবানির দিন, এরপরের দিনটি। তাই অনেকেই আজও কোরবানি করছেন। শরিয়ত অনুযায়ী ১০ থেকে ১২ জিলহজ, মোট তিন দিন কোরবানি করার বিধান রয়েছে। এই সময়ের মধ্যে যে কোনো দিন কোরবানি দেওয়া বৈধ, তবে প্রথম দিন কোরবানি করা সবচেয়ে উত্তম। সময়মতো কোরবানি না হলে তার পরিবর্তে সদকা করারও নির্দেশ রয়েছে।
মন্তব্য