জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের জীবনে অনেক দর্শনের সমাহার ছিল বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) উপাচার্য ড. আখতারুজ্জামান।
কবির ১২২তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে মঙ্গলবার তার সমাধিতে শ্রদ্ধা জানাতে গিয়ে এ মন্তব্য করেন তিনি।
শ্রদ্ধা জানানো শেষে উপাচার্য নজরুলের রুহের মাগফিরাত কামনা করে মোনাজাতে অংশ নেন।
মোনাজাত পরিচালনা করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মসজিদের খতিব ড. সৈয়দ মোহাম্মদ এমদাদ উদ্দীন।
ঢাবি উপাচার্য বলেন, সারা দেশে করোনাভাইরাস মহামারিজনিত দুঃসময়ে জাতীয় কবি নজরুলের মানবিক চেতনা তুলে ধরা সময়ের দাবি।
তিনি বলেন, ‘কবির এই গুণাবলির বিকাশ যদি ঘটানো যায়, তাহলে যেকোনো দুঃসময়কে মোকাবিলা করার জন্য যে অদম্য সাহস এবং ধৈর্য আমাদের প্রয়োজন, সেটি আমরা অর্জন করতে পারব।’
উপাচার্য বলেন, ‘জাতীয় কবির স্বতন্ত্র কিছু মূল্যবোধ আছে। তিনি জীবনে বহুমাত্রিক দর্শনের সমাহার ঘটিয়েছিলেন। সাম্যের কবি, কখনো অসাম্প্রদায়িক কবি, মানবতার কবি, ভালোবাসার কবিসহ নানা দর্শনের সম্মিলন তিনি তার মাঝে প্রবেশ করাতে সক্ষম হয়েছেন।
‘একটি অসাম্প্রদায়িক…মূল্যবোধও তাকে গভীরভাবে অনুপ্রাণিত করেছিল। এই মুহূর্তে তার এসব মূল্যবোধ পরিচর্যা করা সময়ের দাবি।’
মুক্তিযুদ্ধের সময় বাঙালি যোদ্ধারা কবির গান ও কবিতা থেকে অনুপ্রেরণা লাভ করেছেন উল্লেখ করে আখতারুজ্জামান বলেন, ‘বিশ্বে যখন নানাবিধ অমানবিক, অসাম্য ধারণার প্রতিফলন দেখি তখন আমরা সে প্রাসঙ্গিকতা অনুভব করি। রোহিঙ্গা এবং ফিলিস্তিনি জনগোষ্ঠীর মতো মানবশ্রেণি যখন বিভিন্নভাবে নিষ্পেষিত হয়, নির্যাতিত হয়ে বৈষম্যের শিকার হয়, তখন কবি নজরুলের সেই মানবিক মূল্যবোধের মানবতাবাদী গান এবং কবিতা, সাম্য বা প্রেম খুবই অপরিহার্য হয়ে পড়ে। ফলে নজরুলের সেই চেতনার বহিঃপ্রকাশ ঘটানো এবং সর্বত্র ছড়িয়ে দেয়া এখন সময়ের দাবি।’
এর আগে জাতীয় কবির সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ। এরপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, বিএনপি, ন্যাপ, বাসদ, ছাত্রদল, ছাত্রলীগ, কবি নজরুল ইনস্টিটিউটসহ বিভিন্ন ব্যক্তি ও সংগঠনের পক্ষ থেকে কবির সমাধিতে ফুলেল শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়।
আরও পড়ুন:প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শনিবার উদ্বোধনের পর রোববার ভোরে যানবাহন চলাচল শুরু হয় পদ্মা সেতুতে।
উদ্বোধনী দিনে সেতুর দুই প্রান্ত দিয়ে পারাপার হয়েছে ৫১ হাজার ৩১৬টি গাড়ি। এসব গাড়ি থেকে টোল আদায় করা হয়েছে ২ কোটি ৯ লাখ ৪০ হাজার ৩০০ টাকার।
রোববার মাওয়া টোল প্লাজা দিয়ে মোটরসাইকেলসহ ২৬ হাজার ৫৮৯টি যানবাহন পারাপার হয়। এ প্রান্তে সংগ্রহ করা হয় এক কোটি ৮ লাখ ৯৫ হাজার ৯০০ টাকা।
জাজিরা প্রান্তে ২৪ হাজার ৭২৭ যানবাহন পার হয়েছে। এ প্রান্তে সংগ্রহ করা হয় ১ কোটি ৪৪ হাজার ৪ টাকা।
পদ্মা সেতু কর্তৃপক্ষ এসব বিষয় নিশ্চিত করেছে।
বাইক চলাচলে নিষেধাজ্ঞার প্রভাব টোল প্লাজায়
দিনভর বিশৃঙ্খলার মধ্যে রোববার রাতে পদ্মা সেতুতে মোটরসাইকেল চলাচলে অনির্দিষ্টকালের নিষেধাজ্ঞা দেয় সরকার।
ঘোষণা অনুযায়ী, সোমবার সকাল ৬টা থেকে এ নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হয়েছে; চলছে না বাইক। ফলে সেতুর মাওয়া প্রান্তে টোল প্লাজায় যানবাহন কম দেখা গেছে।
এদিকে রোববারের দুর্ঘটনার পর থেকে সেতু কর্তৃপক্ষ, পুলিশ, সেনাবাহিনী এবং জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের কার্যক্রম আরও জোরদার হয়েছে। টোল প্লাজা এলাকায় টহলও বেড়েছে।
বাংলাদেশ সেতু বিভাগের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী তোফাজ্জল হোসেন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘সকাল থেকেই সেতুতে বাইক চলতে দেয়া হচ্ছে না। সরকার কঠোর অবস্থানে রয়েছে। পুলিশ, সেনাবাহিনী টহল জোরদার করেছে। এ জন্য যানবাহন গতকালের চেয়ে কিছুটা কম পার হচ্ছে।’
আরও পড়ুন:দেশের সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ ও হাইকোর্ট বিভাগের ১২ বিচারপতি করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন।
সোমবার প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী এ তথ্য জানিয়েছেন।
সকালে আপিল বিভাগের বিচারকাজ শুরু হলে অ্যাটর্নি জেনারেলকে উদ্দেশ করে এ কথা বলেন প্রধান বিচারপতি।
তিনি অ্যাটর্নি জেনারেলকে মামলা পরিচালনায় সহযোগিতা চেয়ে বলেন, ‘আমাদের ১২ জন বিচারপতি করোনায় আক্রান্ত। দ্বৈত বেঞ্চের একজন করোনায় আক্রান্ত হলে ওই বেঞ্চের বিচারকাজ বন্ধ থাকে।
‘করোনার কারণে অনেক গুরুত্বপূর্ণ বেঞ্চে বিচারকাজ বন্ধ রয়েছে। এ অবস্থায় আপনারা যদি সহযোগিতা না করেন তাহলে আমাদের জন্য বিষয়টি কঠিন হয়ে পড়ে। আপনারা সহযোগিতা না করলে আমাদের ভার্চুয়ালি কোর্ট পরিচালনার সিদ্ধান্ত নিতে হবে। তারপরও ধৈর্য ধরেন আমরা দেখতেছি।’
আপাতত গুরুত্বপূর্ণ মামলাকে অগ্রাধিকার দেয়ার কথা বলেন প্রধান বিচারপতি।
এ সময় তিনি সব আইনজীবীর সহযোগিতা চান।
অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন বলেন, ‘মাই লর্ড আমাদের অনেক আইনজীবীও করোনায় আক্রান্ত। আমরা আপনাদের সর্বাত্মক সহযোগিতা করব।’
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, আপিল বিভাগের বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম, হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি রাজিক আল জলিল, বিচারপতি ইকবাল কবির লিটনসহ ১২ জন বিচারপতি করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন।
আরও পড়ুন:এবার পাবনায় জন্ম নেয়া তিন নবজাতকের নাম দেয়া হয়েছে পদ্মা, সেতু ও উদ্বোধন।
রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে সুমী খাতুন নামে এক নারী সিজারিয়ান অপারেশনের মাধ্যমে শনিবার দুপুরে তিন ছেলে সন্তানের জন্ম দেন। প্রাথমিকভাবে তাদের ডাক নাম রাখা হয়েছে পদ্মা, সেতু ও উদ্বোধন।
একই সময় শনিবার দুপুরে মাওয়া প্রান্তে নামফলক উম্মোচনের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে পদ্মা সেতুর উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সুমী খাতুন পাবনার বেড়া পৌর এলাকার আমাইকোলা মহল্লার বাসিন্দা। তার স্বামী মিজানুর রহমান পেশায় রাজমিস্ত্রি।
নবজাতকদের বাবা মিজানুর রহমান বলেন, ‘বৃহস্পতিবার বিকেলে পাবনার পিডিসি হাসপাতালে চিকিৎসককে দেখানোর পর তিনি আল্ট্রাসনোগ্রাম করে জানান পেটের ভেতরে বাচ্চার অবস্থা একটু বেকায়দায় রয়েছে। রাজশাহী নিয়ে যেতে পরামর্শ দিয়েছিলেন ওই চিকিৎসক। এরপর সেখান থেকে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তির পর শনিবার দুপুর আড়াইটার দিকে সিজারিয়ান অপারেশনের মাধ্যমে তিন পুত্রসন্তানের জন্ম হয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘তিন সন্তানের ডাক নাম হিসেবে পদ্মা, সেতু ও উদ্বোধন রাখা হয়েছে। পরে তাদের ভালো নাম রাখা হবে।’
এমন নাম রাখার কারণ কী জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘পদ্মা সেতু আমাদের গর্বের, স্বপ্নের। সেই স্মৃতি ধরে রাখতে মূলত এই নাম রাখা হয়েছে। কোনও পুরস্কার পাওয়ার লোভে আমার সন্তানদের নাম পদ্মা, সেতু, উদ্বোধন রাখিনি।’
মিজানুর জানান, ২০১০ সালে সুমী খাতুনের সঙ্গে তার বিয়ে হয়। এর আগে তাদের সংসার জীবনে তিনটি কন্যা সন্তান রয়েছে। তাদের নাম মীম, জীম ও সীম।
মিজানুর বলেন, ‘আগের তিনটি সন্তানই মেয়ে হওয়ায় আল্লাহর কাছে ছেলে সন্তান চেয়েছিলাম। আল্লাহ আমাদের মন ভরে দিয়েছে। আমরা একসঙ্গে তিন ছেলে সন্তান পেয়ে খুব খুশি। আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আদায় করছি।’
আরও পড়ুন:দিনভর বিশৃঙ্খলার মধ্যে রোববার রাতে পদ্মা সেতুতে মোটরসাইকেল চলাচলে অনির্দিষ্টকালের নিষেধাজ্ঞা দেয় সরকার।
ঘোষণা অনুযায়ী, সোমবার সকাল ৬টা থেকে এ নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হয়েছে; চলছে না বাইক। ফলে সেতুর মাওয়া প্রান্তে টোল প্লাজায় যানবাহন কম দেখা গেছে।
শনিবার পদ্মা সেতু উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সর্বসাধারণের চলাচলের জন্য সেতু উন্মুক্ত করে দেয়া হয় রোববার সকাল ৬টা থেকে।
সবার আগে সেতু পার হওয়ার প্রবণতায় আগের রাত থেকেই হাজার হাজার যানবাহন জড়ো হতে থাকে মাওয়া প্রান্তে। এসব গাড়ির বড় অংশ ছিল মোটরসাইকেল।
মোটরসাইকেলের চাপে সেতুর টোল প্লাজার সামনে দীর্ঘ যানজট তৈরি হয়। সবার আগে সেতু পার হওয়ার প্রবণতায় বাইকচালকরা বিশৃৃঙ্খলা শুরু করেন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর সদস্যরা তাদের সামাল দিতে হিমশিম খান।
টোল দিয়ে সেতুতে উঠে বাইকাররা যেন পাগলা ঘোড়া হয়ে যান। রোববার রাতে দুর্ঘটনাও ঘটে, যাতে প্রাণ যায় দুই বাইক আরোহীর।
এমন পরিস্থিতিতে সকালে উন্মুক্ত করে দেয়ার পর রাতে সেতুতে বাইক চলাচলে নিষেধাজ্ঞা আসে সরকারের তরফ থেকে।
এ সিদ্ধান্তের ফলে রোববারের তুলনায় সোমবার সকালে যানবাহন কম দেখা গেছে। বাসের সংখ্যাও ছিল বেশ কম।
এদিকে রোববারের দুর্ঘটনার পর থেকে সেতু কর্তৃপক্ষ, পুলিশ, সেনাবাহিনী এবং জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের কার্যক্রম আরও জোরদার হয়েছে। টোল প্লাজা এলাকায় টহলও বেড়েছে।
বাংলাদেশ সেতু বিভাগের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী তোফাজ্জল হোসেন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘সকাল থেকেই সেতুতে বাইক চলতে দেয়া হচ্ছে না। সরকার কঠোর অবস্থানে রয়েছে। পুলিশ, সেনাবাহিনী টহল জোরদার করেছে। এ জন্য যানবাহন গতকালের চেয়ে কিছুটা কম পার হচ্ছে।’
সেতুর মাওয়া প্রান্তের টোল প্লাজার ব্যবস্থাপক হাসিবুল হামিদুল হক বলেন, ‘রোববার যে ব্যারিয়ারটি ভেঙে গিয়েছিল, সেটা ঠিক হয়ে গেছে। গতকালের চাইতে আজকে গাড়ির চাপ কম।
‘মোটরসাইকেল যেহেতু বন্ধ রয়েছে, তার জন্য চাপ অনেকটা কমে গেছে। আসলে আমাদের একটা আবেগের ব্যাপার, যার জন্য গতকাল এই চাপ দিচ্ছিল। আর দুর্ঘটনা ব্যাপারটা আমরা আপনাদের থেকে শুনেছি।’
আরও পড়ুন:মাগুরা সদরের আঠারখাদা ইউনিয়নের আলীধানী গ্রামের নবগঙ্গা মধ্যপাড়ার পান্নু মোল্লা মিয়ার বাড়ির সামনের রাস্তা কাঁচা। কিন্তু তাতে তার যতটা না ভোগান্তি ছিল, সেটা আরও বেড়ে গেছে রাস্তার উন্নয়নকাজের পর।
পান্নু মোল্লা বললেন, ‘বাড়ির সামনে রাস্তাডা ভালোই ছিল। বৃষ্টিতে পানি হোক, তাও একটা কায়দা করে চলতাম। মাটির রাস্তা হলিও শক্ত আছে। কাদা হতো না।
‘আর মাটি ফেলিছে দেহেন কিরাম। উঁচু ঢিবি হয়ে গেছে। কাদা যাতে না হয় সে জন্য মাটি ফেলিছে। কিন্তু মাটি সমান করে যায় নাই। ইউনিয়ন পরিষদে বললাম যে এই মাটির ঢিবিতে বাড়ির যাতায়াতের রাস্তা বন্ধ করে দিছে। সমান করেন। তারা বলে, আর কাজ হবে না। টাকা নেই বলে কাজ হবি না। এহন কাদা তো হইছেই, সঙ্গে বাড়ি থেকে বের হতি লাগে কষ্ট। এরাম কাজ করার মানে কী বুঝলাম না।’
এক মাস ধরে এমন ভোগান্তি পান্নু মোল্লার। মাঠে কাজে যেতে কষ্ট হয়। কেউ দেখার নেই।
ইউনিয়ন পরিষদে কর্মসংস্থান কর্মসূচির ৪০ দিনের কাজের টাকা অর্ধেক সময়ে এসে ফেরত চলে যাওয়ায় মাগুরা জেলা সদরের কয়েকটি ইউনিয়নে গ্রামীণ উন্নয়নের অসমাপ্ত কাজ ভোগান্তি সৃষ্টি করেছে।
ত্রাণ ও প্রকল্প বাস্তবায়ন কার্যালয় থেকে জানা গেছে, ২০২২ অর্থবছরের প্রকল্পের জন্য অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে দেরিতে ছাড় হওয়ায় সময়মতো কাজ শেষ হয়নি। দেশের অধিকাংশ ইউনিয়নে এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সাধারণ মানুষ এই অর্ধেক কাজকে ভোগান্তি হিসেবে দেখছেন। মাগুরা সদরের আঠারখাদার মধ্যপাড়ায় একই এলাকার কৃষক নসিম জানান, ‘সামনে পাটের সময়। তাহলে এ রকম উল্টাপাল্টা কাজ করার দরকার কী? অর্ধেক মাটি ফেলে আমার বাড়ির সামনে উঁচু ঢিবি বানাই রাখছে। বৃষ্টির পানি গড়ায় বাড়ির ভেতরে যায়। আগে তো এটা হতো না। মাটি কোনো রকম ফেলে তারা চলে গেছে।’
একই ইউনিয়নের আনসার ভিডিপি ক্লাবসংলগ্ন মাটির রাস্তাটিও এক পাশে উঁচু তো অন্য পাশে নিচু। কয়েক দিনের বৃষ্টিতে হাঁটু পর্যন্ত কাদা।
স্থানীয়রা জানান, রাস্তাটি ছিল বেলে মাটির। সেটাই ভালো ছিল। কিন্তু এখন মাটি ফেলেছে এক পাশে, সমান করেনি। তাই অর্ধশতাধিক পরিবার এই পথ দিয়ে যেতে পারে না। হাঁটু কাদা পেরিয়ে শিশুরা স্কুলে যায়। তাদের ইউনিফর্ম নষ্ট হয়ে যায়। এমন কাজ তাদের দরকার নেই বলে জানান গ্রামবাসী।
সদরের ১৩টি ইউনিয়নেই এমন কমবেশি খারাপ পরিস্থিতি। আগের বছরগুলোতে নারী কর্মী দিয়ে কাজ করা গেলেও এবার অর্ধেক কাজ হয়েছে দায়সারাভাবে। এই কর্মসূচির নিয়মিত এক নারী শ্রমিক (নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক) জানান, তাড়াহুড়ো করে কাজ করানো হয়েছে এ বছর। কোথাও দুই দিন, কোথাওবা এক দিন মাটি ভরাট করার কাজ তারা করতে পেরেছেন। তবে ঠিকমতো টাকা পেয়েছেন বলে জানান তিনি। আর বছর শেষে কাজ শুরু হলে আবার কিছু উপার্জন করতে পারবেন।
এ বিষয়ে মাগুরা সদরের হাজরাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কবির হোসেন বলেন, ‘এলাকার রাস্তার পাশে মাটি ভরাট কাজ পুরো সম্পন্ন হয়নি। কোথাও কোথাও থেমে আছে। বলা যায় ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ কাজ সমাপ্ত হলেও পুরো কাজ শেষ হওয়া দরকার। গত অর্থবছরের ২০ দিনের কাজ শেষে হয়েছে। এরপর আর বরাদ্দ আমরা পাইনি। বর্ষা মৌসুমে এই কাজগুলো শেষ হলে ভালো হয়। না হলে রাস্তার দুই পাশে মাটি ভরাট পানিতে ধুয়ে যাচ্ছে।’
জগদল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘৪০ দিনের কাজ আসে বছরে দুইবার। এবার শুনেছি অর্থ বরাদ্দ ২০ দিনের হয়ে আর আসেনি। এ জন্য ২০ দিনের কাজ করা হয়েছে। তবে যেসব জায়গায় কাজ হয়েছে, সেসব স্থানে কাজ সমাপ্ত হলে মানুষের দুর্ভোগ কমবে। আশা করছি জটিলতা অচিরেই ঠিক হয়ে যাবে।’
সদর উপজেলার চাউলিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হাফিজার রহমান জানান, তার এলাকায় ২০ দিনের কাজ শেষ হয়েছে। কাজ শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে শ্রমিকরা টাকা পেয়ে গেছেন। এ নিয়ে কোনো সমস্যা নেই। যতটুকু বরাদ্দ, ততটুকু উন্নয়ন হয়েছে। ৪০ দিনের কাজ ২০ দিনে হলে তো কিছু অপ্রাপ্তি থাকে এলাকাবাসীর। বিশেষ করে বর্ষায় কাঁচা রাস্তা মেরামতের কাজ খুব প্রয়োজনীয়।
মাগুরা সদর উপজেলার প্রকল্প বাস্তবায়নকারী কর্মকর্তা আম্বিয়া বেগম শিল্পী জানান, মন্ত্রণালয় থেকে অর্থ ছাড় পাওয়া গেছে অর্ধেক কাজের। ফলে বাকি ২০ দিনের কাজের অর্থ না আসায় পরিষদের এই কাজগুলো আর এগোয়নি। তবে এই অর্থবছরে আর টাকা বরাদ্দ হবে না। ২০২৩ অর্থবছরে কাজ শুরু হবে বলে জানান এই কর্মকর্তা।
আরও পড়ুন:চট্টগ্রামের দক্ষিণ রাঙ্গুনিয়া থানা এলাকায় বন্যহাতির আক্রমণে এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে।
রোববার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে দক্ষিণ রাঙ্গুনিয়া থানার মোবারক আলী টিলার নারিশ্চা ছোট্ট খাল এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
নিহত ৫৫ বছর বয়সী মোহাম্মদ শাহ্ আলম শিলক ইউনিয়নের মাইজপাড়া এলাকার বাসিন্দা।
মাইজপাড়ার ওমর ফারুক নঈমী জানান, এক ব্যক্তিকে হাতি আক্রমণ করেছে এমন খবর শুনে তারা দ্রুত ঘটনাস্থলে ছুটে যান। গিয়ে দেখেন সেখানে শাহ্ আলমের মরদেহ পড়ে আছে। ঘটনাস্থলে হাতিটিকে পাওয়া যায়নি। পরে তারা দক্ষিণ থানার পুলিশকে খবর দেন।
স্থানীয় ইউপি সদস্য আব্বাস আলী বলেন, ‘হাতির আক্রমণে শাহ্ আলমের মৃত্যুর বিষয়টি আমি দক্ষিণ রাঙ্গুনিয়া থানা ও চেয়ারম্যানকে জানিয়েছি। পুলিশ মরদেহটি ঘটনাস্থল থেকে নিয়ে গেছে।’
রাঙ্গুনিয়া নারিশ্চা বন বিভাগের বিট কর্মকর্তা মিন্টু কুমার দে বলেন, ‘আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। নিহত শাহ আলমকে আক্রমণের পর হাতিটি বনে চলে গেছে। পরিবারের আবেদন সাপেক্ষে ক্ষতিপূরণ দেয়া হবে।’
দক্ষিণ রাঙ্গুনিয়া থানার ওসি ওবাইদুল ইসলাম বলেন, ‘খবর শুনেই আমরা ঘটনাস্থল যাই। গিয়ে দেখি, নিহত ব্যক্তির মরদেহ নারিশ্চা এলাকার একটি খালের পাড়ে পড়ে আছে। সুরতহাল শেষে মরদেহটি পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।’
আরও পড়ুন:প্রধানমন্ত্রী কন্যা সায়মা ওয়াজেদ পুতুলকে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে কুরুচিপূর্ণ বক্তব্য পোস্ট করার অভিযোগে গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে এক যুবককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
সুন্দরগঞ্জ পৌর বাজার এলাকা থেকে রোববার সন্ধ্যায় ওই যুবককে গ্রেপ্তার করা হয়। এর আগে কটূক্তির দায়ে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে তার বিরুদ্ধে একটি মামলা হয়।
গ্রেপ্তার ২১ বছর বয়সী রুমন সরকার রনি সুন্দরগঞ্জ উপজেলার দহবন্দ ইউনিয়নের দক্ষিণ ধুমাইটারী গ্রামের আঞ্জু মিয়ার ছেলে।
গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করে সুন্দরগঞ্জ থানার ওসি সরকার ইফতেখারুল মোকাদ্দেম। তিনি জানান, শনিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর কন্যা সায়মা ওয়াজেদ পুতুলকে নিয়ে কুরুচিপূর্ণ ও মানহানিকর বক্তব্য পোস্ট করেন রুমন।
এ নিয়ে উপজেলা আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের আহ্বায়ক আব্দুল্লাহ আল মেহেদী রাসেল ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে রোববার দুপুরে সুন্দরগঞ্জ থানায় একটি মামলা করেন। সেই মামলায় রোববার সন্ধ্যায় পৌর বাজার এলাকায় অভিযান চালিয়ে রুমনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
সোমবার সকালে গাইবান্ধার আদালতে রুমনকে পাঠানো হবে বলেও জানান ওসি।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য