ধানমন্ডির শংকর এলাকা থেকে প্রতিদিনই সাতমসজিদ রোড-সায়েন্স ল্যাবরেটরি হয়ে ফকিরাপুল যাতায়াত করেন প্রিন্টিং ব্যবসায়ী সোহান পারভেজ। এই পথে দুটি জায়গায় রয়েছে ‘হাতির’ ভাস্কর্য। একটি পিলখানার বিজিবি সদর দপ্তরের গেটের পাশে, আরেকটি সায়েন্স ল্যাবরেটরি মোড়ে।
বিজিবি সদর দপ্তরের গেটের পাশের ভাস্কর্যকে প্রথম দর্শনে হাতির বলে মেনে নেয়া বেশ কঠিন। গেটের দুই পাশে দুটি করে মোট চারটি এবং আরও একটি আছে গেটের ওপরে।
প্রকৃতিতে ঘুরে বেড়ানো বা চিড়িয়াখানায় বন্দি হাতির যত ছবি দেখেছেন, তার কোনোটির সঙ্গেই ভাস্কর্যের ‘হাতি’ মেলাতে পারেন না সোহান পারভেজ। এলিফ্যান্ট রোডের দুটি হাতির অবয়ব নিয়েও আপত্তি রয়েছে তার।
এই ব্যবসায়ী নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বলতে গেলে প্রতিদিনই একবার করে চোখ আটকায় এই ভাস্কর্যগুলোতে। আমার কাছে সবচেয়ে অদ্ভুত লাগে বিজিবির গেটের হাতিগুলো।
‘হাতি দেখতে কি এ রকম হয় বলেন? দেখতে কেমন যেন! আর সায়েন্সল্যাবের মাথার হাতির দিকে তাকানো যায় না। না বড় হাতি, না বাচ্চা হাতি কেমন জানি সাইজ এগুলোর। অনেক দিন ধরে আবার সেটার মুখ, দাঁত, লেজ ভাঙা, চারদিকে নোংরা।’
বিজিবি সদর দপ্তরের গেটের হাতির প্রতিটিতে দাঁত রয়েছে। প্রাপ্তবয়স্ক হাতির বাহ্যিক কিছু বৈশিষ্ট্যের ভিত্তিতে লিঙ্গ নির্ধারণের সাধারণ কিছু পদ্ধতি রয়েছে। সে অনুযায়ী, আফ্রিকান হাতির ক্ষেত্রে পুরুষ বা মাদি- দুই ধরনের হাতিতেই লম্বা দাঁত দেখা যায়। তবে এশিয়ান মাদি হাতির লম্বা দাঁত নেই, কখনও কখনও এ ধরনের মাদি হাতির দৃশ্যমান দাঁতই থাকে না। এ ছাড়া, হাতির প্রতিটি দলে পুরুষের পাশাপাশি মাদি হাতিও থাকে।
বিজিবি গেটের ভাস্কর্যে সবগুলো হাতির লম্বা দাঁত থাকায় ধরে নেয়া যেতে পারে, সেগুলো আফ্রিকান প্রজাতির পুরুষ ও মাদি হাতির একটি দল। বিশালাকার কান থেকেও ধরে নেয়া যায়, ভাস্কর এশিয়ান হাতি নয়, তৈরি করতে চেয়েছেন আফ্রিকান প্রজাতির হাতি।
তবে মাথা থেকে শুরু করে দেহের আর কোনো গড়ন থেকেই এই ভাস্কর্যে হাতির বৈশিষ্ট্য খুঁজে পাওয়া মুশকিল। মাথা, দীর্ঘ প্যাঁচানো শুঁড়, দেহের তুলনায় সরু পা, ঘাড় থেকে নিচের দিকে প্রায় সোজা নেমে যাওয়া দেহ, এমনকি এমন ধবধবে সাদা রঙের হাতি আফ্রিকার কোথাও নেই।
এলিফ্যান্ট রোডে ঢোকার মুখের দুটি হাতি এসব জটিলতা কিছুটা এড়াতে পারলেও প্রাপ্তবয়স্ক হাতির পাশে থাকা বাচ্চা হাতিরও দাঁত কীভাবে গজালো সেই প্রশ্নের কোনো জবাব নেই। তাছাড়া, এই হাতির শুঁড়ও দেহের তুলনায় লম্বা, দেহের গড়ন নিয়েও আছে বিস্তর প্রশ্ন। রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে ভাঙা পড়েছে দাঁত, লেজ।
প্রাণী বিশেষজ্ঞরা দিশেহারা
বাঘ ও হাতি বিশেষজ্ঞ জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. এম এ আজিজ বলছেন, এসব ভাস্কর্য যারা বানাচ্ছেন তাদের হাতি নিয়ে বাস্তব কোনো ধারণা নেই।
তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘কেউ যদি কোনো প্রাণীর ভাস্কর্য বানান, তার প্রথম দায়িত্ব হলো রিয়েল ওয়ার্ল্ডে প্রাণীটিকে দেখা, ইভেন নট ইন ফটোগ্রাফ। আমাদের এখানে হয় কি, যিনি এটা বানান, ইন্টারনেটে তিনি হয়তো একটা ছবি দেখে সেটা বানানোর চেষ্টা করেন। যিনি এগুলো বানাচ্ছেন, তার উচিত ছিল এক্সপার্টদের সঙ্গে কথা বলা।’
বিজিবি সদর দপ্তরের গেটের পাশের ভাস্কর্যকে আফ্রিকান প্রজাতির হাতি হিসেবে শনাক্ত করার পক্ষে ড. আজিজ। কারণ হিসেবে তিনি বলেন, ‘আফ্রিকান প্রজাতির হাতির কান অনেক বড় হয়, তাছাড়া সামনের দিক থেকে এদের অ্যাপিয়ারেন্স কিছুটা অ্যাগ্রেসিভ। এশিয়ান এলিফ্যান্টের অ্যাপিয়েরেন্স অতটা অ্যাগ্রেসিভ নয়।’
হাতির গায়ে সাদা রং চড়ানোর বিষয়ে প্রচণ্ড আপত্তি আছে ড. আজিজের। তিনি বলেন, কোনো হাতির বায়োলজিক্যাল কোনো প্রবলেম হলে গায়ের রং কিছুটা সাদা হতে পারে। তবে একেবারে সাদা বলতে যা বোঝায় এটা কিন্তু সেই সাদা না। তাছাড়া সাদা হাতি আমি কেন করব! ন্যাচারাল ওয়ার্ল্ডে এটা তো এক্সেপশনাল ঘটনা। মানুষের মধ্যেও আমরা কারও কারও শ্বেত রোগ দেখে থাকি, কিন্তু সেটা তো কমন নয়। আপনি হয়তো বনে এক শটা হাতি দেখলেন, তার মধ্যে একটা হয়তো পাওয়া যাবে কিছুটা সাদা। আমি সেটাই কেন ভাস্কর্যের জন্য বেছে নেব?’
ভাস্কর্যের হাতির শুঁড় তুলনামূলক লম্বা জানিয়ে তিনি বলেন, বিজিবি গেটের হাতির শুঁড়ে যেভাবে কয়েক প্যাঁচ রয়েছে সেটাও অসম্ভব।
অধ্যাপক ড. এম এ আজিজের কাছে এলিফ্যান্ট রোডের বাচ্চা হাতির দাঁত গজানোর কোনো ব্যাখ্যা নেই। তিনি বলেন, ‘নরমালি বাচ্চা হাতির দাঁত বাইরে ওইভাবে এক্সপোজড থাকে না। আমাদের বাচ্চাদেরও তো শুরুতে থাকে না। এরপর তার দুধদাঁত ওঠে, তারপর সেগুলো পড়ে গিয়ে স্থায়ী দাঁত ওঠে।’
ড. আজিজ মনে করেন, এ ধরনের ভাস্কর্য কেবল সৌন্দর্যহানিই ঘটাচ্ছে না, প্রাণী সম্পর্কে মানুষের মধ্যে বিভ্রান্তিরও জন্ম দিচ্ছে। বিশেষ করে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে শিশুরা। তিনি বলেন, ‘আমাদের বাচ্চারা বা ইয়াং জেনারেশন হয়তো ১০ বছর পরে আর হাতিই দেখবে না। তখন এসব ভাস্কর্য থেকে তারা একটা ধারণা নেবে। ক্লাসে টিচার যখন বলবে, এশিয়ান মাদি হাতির দাঁত থাকে না, তখন তারা বলবে, কই আমরা তো এলিফ্যান্ট রোডের সব হাতিরই দাঁত দেখেছি।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ ফিরোজ জামানও দিচ্ছেন একই মত।
তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘হাতির কানটা কতটুকু লম্বা হয়, শুঁড়টা কতটুকু লম্বা হয়, মাথার সঙ্গে বডির রেশিও কত, এসব চিন্তা করা হচ্ছে না। ভাস্কর্য বানাতে পারে বানিয়ে রেখে দেয়। সেটা কিসের ভাস্কর্য হলো, মানুষের হলো না জন্তুর হলো, এগুলো তারা চিন্তা করে না।
‘ওই জায়গাগুলোতে ভাস্কর্য বসিয়েছে কেন, উদ্দেশ্য কী? এখন এই প্রাণীগুলো অতি বিপন্ন হয়ে গেছে। এই অতি বিপন্ন প্রাণীগুলো নিয়ে মানুষের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টির জন্য, দরদ সৃষ্টির জন্য বিভিন্ন জায়গায় এসব ভাস্কর্য আমরা করে থাকি। সেখানে আমরা একটা হাতির ভাস্কর্য বসাতে গিয়ে সেটা হাতি না হয়ে যদি অন্য কিছু বোঝায় তাহলে এটা খারাপ অবশ্যই।’
তিনি বলেন, ‘আমি নিজে ওয়াইল্ড লাইফ নিয়ে কাজ করি, কখনও আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয় না। সারা পৃথিবীতে যেকোনো জিনিস সরকার যখন করে তারা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে খোঁজে; এই বিষয়ে বিশেষজ্ঞ কে, তাদের পরামর্শ নেয়, সেই অনুয়ায়ী কাজ করে। আর আমাদের দেশে তোয়াক্কা করে না এগুলো।
‘আপনি একটা প্রাণী যখন ডিসপ্লে করবেন, কোন মোশনে সেটা থাকা উচিত, সেই প্রাণীটা বসলে কীভাবে বসে থাকে, কত অ্যাঙ্গেলে মাথাটা ঘুরিয়ে থাকে, কত অ্যাঙ্গেলে বডিটা ঘোরানো থাকে। হাতিটা থাকলে শুঁড়টা কীভাবে থাকে? কোন অ্যাঙ্গেলে ঘোরানো থাকে।’
শিল্পবোদ্ধা, নগর বিশেষজ্ঞরাও দুশ্চিন্তায়
এসব ভাস্কর্য নিয়ে নিউজবাংলা কথা বলেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের ওরিয়েন্টাল আর্টের শিক্ষক গুপু ত্রিবেদীর সঙ্গে।
তিনি বলেন, ‘এই ভাস্কর্যগুলো কে করেছে আমি জানি না, কিন্তু কাজগুলো খুবই দুর্বল। সোজা কথা এগুলো ডিসপ্রোপরসন ওয়ার্ক। ভাস্কর্যের যে প্রোপরসন থাকে, সেটা ঠিক নাই। চোখের জায়গায় চোখ নাই, দাঁতের জায়গায় দাঁত নাই। মাথা আর বডির কোনো সম্পৃক্ততা নাই। অ্যাবনরমাল একটা ব্যাপার।
‘আর সায়েন্স ল্যাবরেটরি মোড়ের বাচ্চা হাতির তো দাঁত হয়ে আছে। এই কাজগুলো নিয়ে যদি বলি তাহলে এগুলো না শিল্প, না অশিল্প, কিছুর মধ্যেই পড়ে না।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের ভাস্কর্য বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ভাস্কর মুকুল কুমার বাড়ৈ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এই ভাস্কর্যগুলো দিয়ে আমাদের আরবান কর্তৃপক্ষের শিল্পবোধের যে জায়গাটা, সেখানে কিছুটা হলেও দুর্বলতার প্রকাশ পায়। সবকিছু মিলেই তো আমাদের প্রকাশ এবং আমরা আমাদেরই প্রকাশিত করছি। সে ক্ষেত্রে আমাদের শিল্প উৎকর্ষে র যে জায়গাটা সেটা অপ্রকাশিত হচ্ছে।’
নগর পরিকল্পনাবিদ, গবেষক ও শিল্পসমালোচক অধ্যাপক নজরুল ইসলাম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘যখন একটা হাতির ভাস্কর্য বসানো হয়েছিল, সেটা তো করেছিল নিশ্চয় সৌন্দর্যবর্ধনের জন্য। হাতি, ঘোড়া যাই হোক, এগুলো তো সৌন্দর্যের জন্য বসাতেই পারে।
‘সেটা ঠিক আছে, কিন্তু জায়গাটা যেন সুন্দরভাবে পরিকল্পিত হয় ও স্থাপনাটা সুন্দর হয় এবং সবচেয়ে বড় কথা বসানোর পরে যেন এটা যত্নের সঙ্গে সংরক্ষিত হয়। তা না করে একটা কিছু বানালাম, অযত্নে ফেলে রাখলাম, তাতে শহরের সৌন্দর্য সেটাও বাড়ে না আর শিল্পকর্মের প্রতি আমাদের যে অবজ্ঞা সেটা প্রমাণ দেয়। আর আমরা জন্তু-জানোয়ারকে কতটা ভালোবাসি বা বাসি না সেটাও প্রমাণ রাখে।’
এসব ভাস্কর্য কার পরামর্শে এবং কার অনুমতি নিয়ে করা হচ্ছে- প্রশ্ন ছুড়ে তিনি বলেন, ‘এটায় তো অবশ্যই সিটি করপোরেশনের অনুমোদন লাগবে। এখন আমাদের এত বড় শহর, রাজধানী, বিশ্বের সবচেয়ে জনবহুলের শহরের একটা। কিন্তু এখানে শিল্পকর্ম কোথায় কীভাবে স্থাপন করা হবে, কে সংরক্ষণ করবে কোনো নিয়মকানুন নাই। কোনো চিন্তাভাবনা নাই।’
ভাস্কর অধরা, কর্তৃপক্ষের চোখে শিল্প
বিজিবি সদর দপ্তরের গেটের পাশে ও এলিফ্যান্ট রোডের ভাস্কর্যের নির্মাতা সম্পর্কে কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে কোনো তথ্য পায়নি নিউজবাংলা। তবে বেশ কয়েকটি সূত্রের দাবি, বিজিবি গেটের ভাস্কর্যের নির্মাতার নাম কবীর চৌধুরী। দেশে আর কোথাও তার কোনো শিল্পকর্ম আছে কি না, সে ব্যাপারে ভাস্কর্যশিল্পীরাও কোনো তথ্য দিতে পারেননি।
বিজিবির গেটের হাতিগুলোকে শুধু শিল্পকর্ম হিসেবেই দেখতে চান বাহিনীর পরিচালক (অপারেশন) লেফটেন্যান্ট কর্নেল ফয়জুর রহমান।
হাতির ভাস্কর্যের প্রসঙ্গ তুলতেই তিনি নিউজবাংলা প্রতিবেদককে বলেন, ‘শুঁড় নিয়ে বলবেন তো? শুঁড়টা অনেক লম্বা তাই তো? দেখেন সবকিছু তো স্কেল হিসেবে হয় না। সেই হিসেবে প্রতীকী অর্থে ধরে নেয়াটাই সবচেয়ে শৈল্পিক হবে আরকি।’
বিজিবির এই কর্মকর্তা দাবি করেন, হাতির ভাস্কর্য বানানো হয়েছে ঢাকা ও পিলখানার ঐতিহ্যকে তুলে ধরতে।
এই ধরনের শ্বেতশুভ্র এবং বেঢপ হাতি ঐতিহ্য বহন করে কি না- জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘সেটার যৌক্তিকতা একেবারেই একেকজনের কাছে একেক রকম। একেকজনের চিন্তার লাইন একেক রকম হবে। তবে যে উদ্দেশ্যে করা সেটা মূলত ঐহিত্যকে ধারণ, স্মৃতিকে ধরে রাখা। আমরা নিজেদেরকে ঐতিহ্যের মধ্যেই সীমাবদ্ধ রেখেছি; হ্যাঁ পিলখানায় সিম্বল অফ হাতি।’
আর ঢাকায় হাতির ভাস্কর্য নিয়ে কথা বলতে রাজি হননি উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রধান নগর পরিকল্পনাবিদ মাকসুদ হাসেম।
তিনি বলেন, ‘সংবাদ সংক্রান্ত এবং মিডিয়ার সঙ্গে কথা বলার জন্য আমাদের পাবলিক রিলেশন অফিসার আছে, তার সঙ্গে কথা বলতে হবে।’
আরও পড়ুন:ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ বলেছেন, ন্যায্য নগর গঠনে ভূমিকা রাখবে নবায়নযোগ্য জ্বালানি। শুধু সরকার বা সিটি কর্পোরেশন নয়, নাগরিকদের সঙ্গে নিয়ে ন্যায্য নগর প্রতিষ্ঠা করতে হবে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
আজ সোমবার গুলশানের নগর ভবনে অনুষ্ঠিত ডিএনসিসি এবং বায়ুমণ্ডলীয় দূষণ অধ্যয়ন কেন্দ্র (ক্যাপস) এর যৌথ আয়োজনে ‘ন্যায্য নগর গঠনে নবায়নযোগ্য জ্বালানির ভূমিকা’ শীর্ষক একটি পলিসি ডায়ালগে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন প্রশাসক।
স্টেট ইউনিভার্সিটির স্থাপত্য বিভাগের অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক মোহাম্মদ আলী নকী এর সভাপতিত্বে পলিসি ডায়ালগে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ক্যাপসের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. আহমদ কামরুজ্জমান মজুমদার।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ডিএনসিসি প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ বলেন, ঢাকা শহরের বেশ কিছু পরিকল্পিত এলাকা আছে যেখানে বিল্ডিংগুলোর উচ্চতা কাছাকাছি, ফলে সেই বিল্ডিংগুলোর সোলার ক্লিয়ারেন্স অনেক বেশি। সেই এলাকাগুলোতে পরিকল্পিতভাবে সোলার প্যানেল স্থাপনের মাধ্যমে নিজস্ব বিদ্যুতের চাহিদা মিটিয়ে জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ করা সম্ভব। পাশাপাশি ঢাকার আশপাশের উদ্ধারকৃত নদীর পাড়কে কাজে লাগিয়ে নবায়নযোগ্য জ্বালানি উৎপাদন সম্ভব। তিনি জানান, রুফটপ সোলার প্যানেল ব্যবহারকারীদের হোল্ডিং ট্যাক্স এর ওপর ৫ শতাংশ কর রেয়াত দেয়ার কথা ভাবছে সিটি কর্পোরেশন।
পলিসি ডায়ালগের মূল প্রবন্ধে ক্যাপসের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. আহমদ কামরুজ্জমান মজুমদার বলেন, জীবনের মান সূচকে ঢাকা শহর শেষ দিক থেকে ৪র্থ, বিশ্বের সবচেয়ে ধীর গতির শহর, বায়ু দূষণের তালিকায় শীর্ষে, দূষিত শহরের তালিকায় ৬ষ্ঠ, বসবাসের অযোগ্য শহরের তালিকার ১ম সারিতে, বিশ্বে যানজটের সূচকে ৫ নম্বরে, পৃথিবীর ৪র্থ ঘনবসতিপূর্ণ শহর, শব্দ দূষণেও শীর্ষে ঢাকা এবং স্বাস্থ্যসেবার সূচকে শেষের দিকে। আর এই দূষণগুলো থেকে পরিত্রাণের অন্যতম উপায় হতে পারে জীবাশ্ম জ্বালানির উপর নির্ভরতা কমিয়ে নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবহার বৃদ্ধি।
বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট অব প্ল্যানার্স (বিআইপি) এর প্রেসিডেন্ট পরিকল্পনাবিদ অধ্যাপক ড. আদিল মুহাম্মদ খান বলেন, নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবহার বৃদ্ধি, পরিবহন ও শিল্পখাতে পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তির প্রয়োগ এবং জনগণের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করে আমরা একটি সুস্থ ও সবুজ বাংলাদেশ গড়ে তুলতে পারি।
ডায়ালগে আরও অংশ নেন ডিএনসিসি এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আবু সাঈদ মো. কামরুজ্জামান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের অধ্যাপক এবং চেয়ারম্যান ড. এম. শহীদুল ইসলাম, (বিআইপি) এর উপদেষ্টা বোর্ডের আহ্বায়ক মোহাম্মদ ফজলে রেজা সুমন, বুয়েটের কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক এবং ইঞ্জিনিয়ারিং ফ্যাকাল্টির সাবেক ডিন ড. ইজাজ হোসে, জলবায়ু পরিবর্তন ও পরিবেশ গবেষণা কেন্দ্রের (সিথ্রিইআর) সমন্বয়ক (অপারেশনস) মিসেস রৌফা খানম, ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্ট, (ডব্লিউবিবিটি) এর পরিচালক গাউস পিয়ারী, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী রাশেদুজ্জামান মজুমদার, ব্যারিস্টার নেওয়াজ মোরশেদ, ইয়ুথনেট গ্লোবাল এর সমন্বয়ক সোহানুর রহমান, বায়ুমন্ডলীয় দূষণ অধ্যয়ন কেন্দ্র (ক্যাপস) এর রিসার্চ লিড ইঞ্জি. মারজিয়াত রহমান, ব্রাইটার্সের চেয়ার ফারিহা সুলতানা অমি, ইকো-নেটওয়ার্ক গ্লোবালের নির্বাহী পরিচালক শামীম আহমেদ মৃধা, ন্যাকমের পরিচালক রাশিদুজ্জামান আহমেদ, পিওর আর্থ বাংলাদেশের কনসালটেন্ট আহমেদ শামীম আল রাজি, সাসটেইনেবল রিসার্চ অ্যান্ড কনসালটেন্সি লিমিটেডের (এসআরসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবু জুবায়ের, ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশের গবেষণা ও বাস্তবায়ন প্রধান মো. ইকবাল ফারুক, ও. ক্রিডস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ইঞ্জিনিয়ার মো. শাহাদাত হোসেন, সচেতন ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান, বারসিকের প্রজেক্ট ম্যানেজার কামরুজ্জামান সাগর, ইকিউএমএস কনসাল্টিংয়ের টেকনিক্যাল ম্যানেজার (টেস্টিং) আহমেদ জুবায়ের, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সহ-সভাপতি মুহাম্মদ আনোয়ারুল হক, অ্যাকশন এইডের প্রোগ্রাম অফিসার হামিদুল ইসলাম এবং মিশন গ্রিন বাংলাদেশের নির্বাহী পরিচালক আহসান রনি।
ন্যায্য নগর গঠনে ভূমিকা রাখবে নবায়নযোগ্য জ্বালানি: ডিএনসিসি প্রশাসক
ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ বলেছেন, ন্যায্য নগর গঠনে ভূমিকা রাখবে নবায়নযোগ্য জ্বালানি। শুধু সরকার বা সিটি কর্পোরেশন নয়, নাগরিকদের সঙ্গে নিয়ে ন্যায্য নগর প্রতিষ্ঠা করতে হবে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
আজ সোমবার গুলশানের নগর ভবনে অনুষ্ঠিত ডিএনসিসি এবং বায়ুমণ্ডলীয় দূষণ অধ্যয়ন কেন্দ্র (ক্যাপস) এর যৌথ আয়োজনে ‘ন্যায্য নগর গঠনে নবায়নযোগ্য জ্বালানির ভূমিকা’ শীর্ষক একটি পলিসি ডায়ালগে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন প্রশাসক।
স্টেট ইউনিভার্সিটির স্থাপত্য বিভাগের অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক মোহাম্মদ আলী নকী এর সভাপতিত্বে পলিসি ডায়ালগে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ক্যাপসের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. আহমদ কামরুজ্জমান মজুমদার।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ডিএনসিসি প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ বলেন, ঢাকা শহরের বেশ কিছু পরিকল্পিত এলাকা আছে যেখানে বিল্ডিংগুলোর উচ্চতা কাছাকাছি, ফলে সেই বিল্ডিংগুলোর সোলার ক্লিয়ারেন্স অনেক বেশি। সেই এলাকাগুলোতে পরিকল্পিতভাবে সোলার প্যানেল স্থাপনের মাধ্যমে নিজস্ব বিদ্যুতের চাহিদা মিটিয়ে জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ করা সম্ভব। পাশাপাশি ঢাকার আশপাশের উদ্ধারকৃত নদীর পাড়কে কাজে লাগিয়ে নবায়নযোগ্য জ্বালানি উৎপাদন সম্ভব। তিনি জানান, রুফটপ সোলার প্যানেল ব্যবহারকারীদের হোল্ডিং ট্যাক্স এর ওপর ৫ শতাংশ কর রেয়াত দেয়ার কথা ভাবছে সিটি কর্পোরেশন।
পলিসি ডায়ালগের মূল প্রবন্ধে ক্যাপসের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. আহমদ কামরুজ্জমান মজুমদার বলেন, জীবনের মান সূচকে ঢাকা শহর শেষ দিক থেকে ৪র্থ, বিশ্বের সবচেয়ে ধীর গতির শহর, বায়ু দূষণের তালিকায় শীর্ষে, দূষিত শহরের তালিকায় ৬ষ্ঠ, বসবাসের অযোগ্য শহরের তালিকার ১ম সারিতে, বিশ্বে যানজটের সূচকে ৫ নম্বরে, পৃথিবীর ৪র্থ ঘনবসতিপূর্ণ শহর, শব্দ দূষণেও শীর্ষে ঢাকা এবং স্বাস্থ্যসেবার সূচকে শেষের দিকে। আর এই দূষণগুলো থেকে পরিত্রাণের অন্যতম উপায় হতে পারে জীবাশ্ম জ্বালানির উপর নির্ভরতা কমিয়ে নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবহার বৃদ্ধি।
বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট অব প্ল্যানার্স (বিআইপি) এর প্রেসিডেন্ট পরিকল্পনাবিদ অধ্যাপক ড. আদিল মুহাম্মদ খান বলেন, নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবহার বৃদ্ধি, পরিবহন ও শিল্পখাতে পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তির প্রয়োগ এবং জনগণের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করে আমরা একটি সুস্থ ও সবুজ বাংলাদেশ গড়ে তুলতে পারি।
ডায়ালগে আরও অংশ নেন ডিএনসিসি এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আবু সাঈদ মো. কামরুজ্জামান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের অধ্যাপক এবং চেয়ারম্যান ড. এম. শহীদুল ইসলাম, (বিআইপি) এর উপদেষ্টা বোর্ডের আহ্বায়ক মোহাম্মদ ফজলে রেজা সুমন, বুয়েটের কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক এবং ইঞ্জিনিয়ারিং ফ্যাকাল্টির সাবেক ডিন ড. ইজাজ হোসে, জলবায়ু পরিবর্তন ও পরিবেশ গবেষণা কেন্দ্রের (সিথ্রিইআর) সমন্বয়ক (অপারেশনস) মিসেস রৌফা খানম, ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্ট, (ডব্লিউবিবিটি) এর পরিচালক গাউস পিয়ারী, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী রাশেদুজ্জামান মজুমদার, ব্যারিস্টার নেওয়াজ মোরশেদ, ইয়ুথনেট গ্লোবাল এর সমন্বয়ক সোহানুর রহমান, বায়ুমন্ডলীয় দূষণ অধ্যয়ন কেন্দ্র (ক্যাপস) এর রিসার্চ লিড ইঞ্জি. মারজিয়াত রহমান, ব্রাইটার্সের চেয়ার ফারিহা সুলতানা অমি, ইকো-নেটওয়ার্ক গ্লোবালের নির্বাহী পরিচালক শামীম আহমেদ মৃধা, ন্যাকমের পরিচালক রাশিদুজ্জামান আহমেদ, পিওর আর্থ বাংলাদেশের কনসালটেন্ট আহমেদ শামীম আল রাজি, সাসটেইনেবল রিসার্চ অ্যান্ড কনসালটেন্সি লিমিটেডের (এসআরসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবু জুবায়ের, ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশের গবেষণা ও বাস্তবায়ন প্রধান মো. ইকবাল ফারুক, ও. ক্রিডস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ইঞ্জিনিয়ার মো. শাহাদাত হোসেন, সচেতন ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান, বারসিকের প্রজেক্ট ম্যানেজার কামরুজ্জামান সাগর, ইকিউএমএস কনসাল্টিংয়ের টেকনিক্যাল ম্যানেজার (টেস্টিং) আহমেদ জুবায়ের, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সহ-সভাপতি মুহাম্মদ আনোয়ারুল হক, অ্যাকশন এইডের প্রোগ্রাম অফিসার হামিদুল ইসলাম এবং মিশন গ্রিন বাংলাদেশের নির্বাহী পরিচালক আহসান রনি।
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ বলেছেন, প্রধান সড়কে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চলাচল বন্ধ করতে ডিএনসিসি ও ডিএমপি যৌথভাবে কাজ করছে। ঢাকা শহরের ভিতরে অটোরিকশা তৈরির ওয়ার্কশপ ও চার্জিং স্টেশন বন্ধে শিগগিরই অভিযান শুরু হবে।
তিনি জানান, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) ইতোমধ্যে অটোরিকশা তৈরির ওয়ার্কশপ ও চার্জিং স্টেশনের তালিকা করেছে। শিগগিরই রাতে অভিযান করে এগুলো বন্ধ করে দেওয়া হবে।
আজ শনিবার রাজধানীর মিরপুর পল্লবীতে রাস্তা, ফুটপাত ও নর্দমা নির্মাণকাজের উদ্বোধনকালে তিনি এসব কথা বলেন। ডিএনসিসির ৬, ৭ ও ৮নং ওয়ার্ডের আওতাধীন এলাকায় ৭টি প্যাকেজে মোট ২০ কিলোমিটার রাস্তা, ৩৪ কিলোমিটার নর্দমা ও ১৫ কিলোমিটার ফুটপাত নির্মাণকাজের উদ্বোধন করেন ডিএনসিসি প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ।
মোহাম্মদ এজাজ বলেন, ‘বিভিন্ন এলাকার বাড়ির মালিক সমিতিকে অনুরোধ করব আপনারা আপনাদের এলাকায় অবৈধ অটোরিকশা ঢুকতে দেবেন না। আপনাদের আবাসিক এলাকাগুলো যে পরিকল্পনা করে করা হয়েছে, সেই পরিকল্পনার বাহিরে কিছু করতে দেবেন না। আবাসিক এলাকায় কোনো বাণিজ্যিক কাজ করতে দেবেন না। সিটি করপোরেশনের সঙ্গে আপনারা স্থানীয় কমিউনিটি সোচ্চার হলে অবৈধ অটোরিকশা, অবৈধ হকার বন্ধ করা সহজ হবে।’
নগরবাসীর উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আমি সবাইকে অনুরোধ করব আপনারা বিভিন্ন হাউজিং কোম্পানি থেকে প্লট কেনার আগে মৌজা ম্যাপ চেক করে দেখবেন জলাধার কিনা। জলাধার হলে দয়া করে সেই প্লট কিনবেন না। জলাধার হলে পরবর্তী সময় সেই প্লট পেতে ঝামেলা হবে।’
তিনি বলেন, ‘সবাই একসময় ভাবতেন পল্লবী ইস্টার্ন হাউজিং এলাকায় কোনোদিন পাকা রাস্তা হবে না। এই এলাকায় শুধু গোডাউন ভাড়া দেওয়া হতো একসময়। পরিকল্পিতভাবে মাঠের জায়গা রাখা হয়নি, কোনো গাছ লাগানো হয়নি। ইস্টার্ন হাউজিংয়ের ভিতর দিয়ে খাল ছিল। আমরা নাগরিক সমাজ আন্দোলন করেছি সেই খাল উদ্ধারের জন্য, মামলা পর্যন্ত করা হয়েছিল। ৭টি প্যাকেজের নির্মাণকাজ শেষ হলে এই এলাকার যোগাযোগব্যবস্থার ব্যাপক উন্নয়ন হবে এবং জলাবদ্ধতাও দূর হবে।’
মহানবী হজরত মুহাম্মদকে (সা.) নিয়ে কটূক্তির অভিযোগে রাজধানীর তেজগাঁও প্রধান সড়ক অবরোধ করে রেখে প্রতিবাদ করছেন কোহিনুর ক্যামিকেল কোম্পানির কারখানার শ্রমিকরা।
মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) দুপুরের পর থেকে সড়কটি বন্ধ রয়েছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে ঘটনাস্থলে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা ছুটে এসেছেন। কিন্তু এখনো পরিস্থিতি শান্ত হয়নি।
কারখানার কসমেটিকস বিভাগের বাবু নামে এক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মহানবী হজরত মুহাম্মদকে (সা.) নিয়ে কটূক্তি করার অভিযোগ করা হয়েছে। বিষয়টি জানতে পেরে শ্রমিকরা প্রতিবাদ করেন।পরে তারা প্রধান সড়কে নেমে বিক্ষোভ ও অবরোধ করেন।
এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন শতশত মানুষ। মহাখালী থেকে আসা যাওয়ার সড়কটি বন্ধ হয়ে গেছে।
শ্রমিকদের দাবি হচ্ছে, সেই কর্মকর্তাকে চাকরিচ্যুত করার পাশাপাশি তাকে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। এই মুহূর্তে ঘটনাস্থলে সেনাবাহিনীর সদস্যরা ছুটে এসেছেন। তাদের মধ্য থেকে একজন তাদের সাথে কথা বলার চেষ্টা করছেন। বারবার তাদের আশ্বাস দিচ্ছেন। কিন্তু এখনো পরিস্থিতি শান্ত হয়নি।
তারা আরও বলেন, তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানার ঠিক বিপরীত পাশে সড়কে কোহিনুর কেমিক্যাল কোম্পানির অবস্থান। সেই কারখানাটির গেটের সামনে শ্রমিকরা বিক্ষোভ করছেন। বিকেল ৪ টা ৫০ মিনিটে সেনাবাহিনীর একজন অফিসার এসে তাদের সাথে কথা বলেন। এ সময় তাকে বলতে শোনা যায়, কারখানাটির কর্তৃপক্ষ আশ্বাস দিয়েছেন। সেই ব্যক্তিকে চাকরি থেকে অপসারণের পাশাপাশি আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া হবে।
এমন বিষয় জানানোর পর সেনাবাহিনীর সদস্যরা কারখানাটির সামনের সড়কে অবস্থান নিয়েছেন। তবে এখন পর্যন্ত কোন ভাঙচুর বা হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।
ঢাকা মহানগর পুলিশের মহাখালী জোনের অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনার (ট্রাফিক) দেলোয়ার হোসেন বলেন, রাস্তা ব্লকের কারণে তেজগাঁও সাত রাস্তাসহ আশেপাশে যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে।
সাধারণ মানুষের মাঝে ভর্তুকি মূল্যে পাটের তৈরি সরবরাহ করা হবে বলে জানিয়েছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। এ সময়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে (ঢাবি) শব্দদূষণমুক্ত ঘোষণা করারও আহ্বান জানান তিনি।
তিনি বলেন, ‘ভর্তুকি মূল্যে পাটের ব্যাগ দেওয়ার জন্য একটি প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। এ লক্ষ্যে, বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে একসঙ্গে কাজ করা হবে।’
শনিবার (১৯ এপ্রিল) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবনে প্লাস্টিক দূষণ রোধে করণীয় সংক্রান্ত সেমিনার এবং পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা অভিযানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
রিজওয়ানা হাসান বলেন, ‘পাটের ব্যাগ ব্যবহারে সচেতনতা তৈরির জন্য প্রচার কার্যক্রম চালানো হবে। পাটের ব্যাগ তৈরির সঙ্গে নতুন উদ্যোক্তা তৈরি করা হবে। টেকসই ব্যবস্থার জন্য জেডিপিসি, এসএমইএফ, জয়িতা ফাউন্ডেশনসহ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোকে অন্তর্ভুক্ত করা হবে।’
উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘প্লাস্টিক দূষণ রোধে সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। অপ্রয়োজনীয় প্লাস্টিক ব্যবহার বন্ধ করতে হবে।’
‘প্লাস্টিকের বিকল্প নেই—এই ধারণা ঠিক নয়। সরকারের সব উদ্যোগ রাতারাতি বাস্তবায়ন সম্ভব নয়, তবে ধাপে ধাপে বাস্তবায়ন করা হবে,’ বলেন তিনি।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমেদ খান। অ
নুষ্ঠানে বক্তব্য দেন—পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. ফারহিনা আহমেদ; পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মো. কামরুজ্জামান, এনডিসি; ঢাকা নরওয়েজিয়ান দূতাবাসের উপ-মিশন প্রধান মারিয়ান রাবে ক্নাভেলসরুদ; ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. মামুন আহমেদ; ইউনিডোর বাংলাদেশ কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টেটিভ ড. জাকি উজ জামান; ঢাকা মেডিকেল কলেজের ড. আফিয়া শাহনাজ; বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মো. মফিজুর রহমান।
সময় পরিবেশ উপদেষ্টা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে সিঙ্গেল ইউজ প্লাস্টিক ও শব্দদূষণমুক্ত ঘোষণা করার আহ্বান জানান।
রাজধানীতে পরিচালিত পৃথক অভিযানে নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগের বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের ছয় সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এছাড়া এসব সংগঠনের সাম্প্রতিক ঝটিকা মিছিল নিয়ে সাধারণ জনগণকে আতঙ্কিত না হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি)।
শনিবার (১৯ এপ্রিল) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব জানিয়েছে ডিএমপি। বিজ্ঞপ্তিতে তারা জানায়, সাম্প্রতিক সময়ে ছাত্রলীগ ও তাদের সমভাবাপন্ন বিভিন্ন সংগঠন ঝটিকা মিছিল করে অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরির মাধ্যমে জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি করার অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
তারা পুলিশের গতিবিধি অনুসরণ করে নির্দিষ্ট কোনো এলাকায় গাড়ি থেকে নেমে দুয়েক মিনিট মিছিল করে দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। পরবর্তীতে এসব মিছিলের ছবি ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করে তাদের অস্তিত্ব জানান দেয়।
তাৎক্ষণিক গ্রেফতার করা সম্ভব না হলেও পরবর্তীতে ছবি ও ভিডিও ফুটেজ বিশ্লেষণ করে তাদের মধ্যে অনেককেই গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় নিয়ে আসা হয়েছে বলে জানায় ডিএমপি। পৃথক অভিযানে রাজধানীতে ৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে।
গ্রেপ্তার হওয়া ছয় সদস্য হলেন- পল্লবী থানা ছাত্রলীগের ৫ নং ওয়ার্ডের সিনিয়র সাংগঠনিক সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম নাইম, যাত্রাবাড়ী থানা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. রিপন হোসেন ফাহিম, ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ৫৯ নং ওয়ার্ড শ্রমিক লীগের সহ-সভাপতি শেখ মো. সোহেল, বাড্ডা থানা স্বেচ্ছাসেবক লীগের ত্রাণ ও দুর্যোগ বিষয়ক সম্পাদক মো. সোহেল রানা, বাড্ডা থানার ৩৭ নং ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোহাম্মদ ইয়ামিন ও বাড্ডা ১২ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আবুল বাশার খান।
ডিবি সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার (১৮ এপ্রিল) পল্লবী থানার বাউনিয়া এলাকা থেকে আশরাফুল ইসলাম নাইমকে গ্রেফতার করে ডিবি-মিরপুর বিভাগ।
অন্যদিকে, মহানগর গোয়েন্দা সাইবার বিভাগের বিভাগের একটি দল রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে মো. রিপন হোসেন ফাহিমকে গ্রেফতার করে। ডিবি-ওয়ারী বিভাগ কদমতলী থানাধীন মোহাম্মদবাগ এলাকা থেকে শেখ মো. সোহেলকে গ্রেফতার করে।
এরপর শনিবার (১৯ এপ্রিল) ভোরে ডিবি সাইবারের একটি টিম রাজধানীর বাড্ডা থানার মধ্য বাড্ডা এলাকা থেকে মো. সোহেল রানা ও মোহাম্মদ ইয়ামিনকে এবং শাহ আলি এলাকা হতে অপর একটি টিম পৃথক অভিযান চালিয়ে আবুল বাশার খানকে গ্রেফতার করে।
ডিএমপি জানায়, এসব সংগঠনের অপতৎপরতা রোধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তৎপর রয়েছে। গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ প্রক্রিয়াধীন বলেও বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে। এ সময় সাধারণ জনগণকে এসব সংগঠনের বিচ্ছিন্ন অপতৎপরতা সম্পর্কে অহেতুক আতঙ্কিত না হওয়ার অনুরোধ করেছে মহানগর পুলিশ।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন (ডিএসসিসি) আজ যাত্রাবাড়ী থেকে সাইনবোর্ড পর্যন্ত মহাসড়কে এবং যাত্রাবাড়ী থেকে কাজলা হয়ে স্টাফ কোয়ার্টার পর্যন্ত বিশেষ পরিচ্ছন্নতা অভিযান পরিচালনা করে।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক মো. শাহজাহান মিয়ার উপস্থিতিতে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের ছয়শত পরিচ্ছন্ন কর্মী এই বিশেষ পরিচ্ছন্নতা অভিযানে অংশগ্রহণ করেন।
সকাল ৬ টায় শুরু হওয়া এ পরিচ্ছন্নতা অভিযানে যাত্রাবাড়ী থেকে সাইনবোর্ড পর্যন্ত প্রায় ১০ কিলোমিটার এবং যাত্রাবাড়ী থেকে কাজলা হয়ে স্টাফ কোয়ার্টার পর্যন্ত মহাসড়কে ও আইল্যান্ডে জমে থাকা দীর্ঘদিনের বর্জ্য অপসারণ করা হয়েছে।
পরিচ্ছন্নতা কর্মসূচি পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক মো. শাহজাহান মিয়া বলেন, মহাসড়কে ও মহাসড়কের আইল্যান্ডে দীর্ঘদিন ময়লা জমে থাকায় বায়ুদূষণসহ পরিবেশের বিভিন্ন ক্ষতি হচ্ছিল। মহাসড়কটি সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের অধীন হওয়ায় এখানে সিটি কর্পোরেশনের নিয়মিত পরিচ্ছন্নতা কর্মী নিয়োগের সুযোগ নেই।
পরিবেশ, বন ও জলাবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানের নির্দেশনায় আজকের এই বিশেষ কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে। ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের আওতাভুক্ত সাইনবোর্ড এলাকা পর্যন্ত মহাসড়কের ময়লা পরিষ্কারের ফলে এই মহাসড়ক ব্যবহারকারীরা যেমন স্বাস্থ্যগত ঝুঁকি থেকে রক্ষা পাবেন, ঠিক তেমনি পরিবেশ দূষণ রোধ সম্ভব হবে।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে প্রশাসক বলেন, আসন্ন বর্ষা মৌসুমে জলাবদ্ধতা নিরসনে ডিএসসিসি এখন থেকেই ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। বর্তমানে খাল পুনরুদ্ধার ও ড্রেন পরিষ্কাার চলমান রয়েছে।
এছাড়া, আগামী ২৩ এপ্রিল থেকে দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের খাল-ড্রেন উদ্ধার ও পরিষ্কারে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করা হবে। ডেঙ্গু মৌসুম মোকাবিলার জন্য মশক কর্মীদের বিশেষ প্রশিক্ষণ প্রদান শুরু হয়েছে।
এছাড়া প্রতিটি ওয়ার্ডে নিয়মিত ভাবে লার্ভিসাইডিং এবং এডাল্টিসাইডিং কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে প্রশাসক নগরবাসীর সচেতনতা ও সহযোগিতা কামনা করেন।
পরিচ্ছন্নতা অভিযানে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ড. জিল্লুর রহমান, ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা এয়ার কমডোর মো. মাহাবুবুর রহমান তালুকদারসহ উর্ধ্বতন কর্মকতারা উপস্থিত ছিলেন।
রাজধানীর বনানীতে নৌবাহিনী সদরদপ্তর ও আর্মি স্টেডিয়ামের মাঝামাঝি স্থানে শুক্রবার পোশাকশ্রমিক বহনকারী একটি বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সাত নারী আহত হয়েছেন।
তাদের ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
সকাল সাড়ে ছয়টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
আহত সাত শ্রমিক হলেন রাশেদা (২৮), লাকি আক্তার (৩৫), পারভিন বেগম (৩৪), নিলুফা আক্তার (৩০), হোসনেয়ারা (৩৫), রাশেদা আক্তার (৩১)।
আহত নারী শ্রমিকদের ঢামেক হাসপাতালে নিয়ে আসা ওই কারখানার মানবসম্পদ বিভাগের প্রধান ফয়সাল আহমেদ বলেন, ‘নারী শ্রমিকরা গাজীপুরের কালীগঞ্জের পূর্বাচল অ্যাপারেল লিমিটেডের পোশাকশ্রমিক। আজ ভোরে ডিউটি শেষ করে সকালে ঢাকার দিকে যাওয়ার পথে চালক বাসের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে আর্মি স্টেডিয়াম ও নৌ বাহিনী সদরদপ্তরের মাঝামাঝি স্থানে বাসটি উল্টে যায়। এতে আহত হয় অনেকে। পরে আমরা খবর পেয়ে আহতদের কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাই।
‘এদের মধ্যে গুরুতর আহত সাতজন শ্রমিককে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিক্যালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে আসা হয়েছে। তারা এখন চিকিৎসাধীন।’
ঢামেক পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ (পরিদর্শক) মোহাম্মদ ফারুক জানান, বনানীতে পোশাক শ্রমিকদের বাস দুর্ঘটনায় আহত সাতজনকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। শ্রমিকদের কারও মাথায়, কারও শরীরে এবং পায়ে হাতে জখমের চিহ্ন রয়েছে। তাদের চিকিৎসা চলমান।বিষয়টি সংশ্লিষ্ট থানাকে অবহিত করা হয়েছে।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য