‘কোন পাথেয় নিয়ে তোমরা এসেছ? মহৎ আকাঙ্ক্ষা। তোমরা বিদ্যালয়ে শিখবে বলে ভর্তি হয়েছ। কী শিখতে হবে ভেবে দেখ। পাখি তার বাপ-মায়ের কাছে কী শেখে? পাখা মেলতে শেখে, উড়তে শেখে। মানুষকেও তার অন্তরের পাখা মেলতে শিখতে হবে, তাকে শিখতে হবে কী করে বড় করে আকাঙ্ক্ষা করতে হয়। পেট ভরাতে হবে। এ শেখাবার জন্যে বেশি সাধনা দরকার নেই; কিন্তু পুরোপুরি মানুষ হতে হবে- এই শিক্ষার জন্যে যে অপরিমিত আকাঙ্ক্ষার দরকার তাকেই শেষ পর্যন্ত জাগিয়ে রাখবার জন্যে মানুষের শিক্ষা।’
১৯১৯ সালের ৭ নভেম্বর সিলেট মুরারীচাঁদ (এমসি) কলেজে দেয়া বক্তৃতায় এমনটি বলেছিলেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।
রবীন্দ্রনাথের এই বক্তৃতা মুগ্ধ করেছিল উপস্থিত শিক্ষার্থীদের। এর মধ্যে একজন পরে এ নিয়ে চিঠি লিখেন কবিকে। চিঠির এক জায়গায় প্রশ্ন রাখেন- ‘আকাঙ্ক্ষা বড় করতে হলে কী করতে হবে?’ এই শিক্ষার্থীর নাম সৈয়দ মুজতবা আলী। পরবর্তী সময়ে স্বনামে খ্যাত ও রসসাহিত্যের অনন্য অবস্থানে পৌঁছার পরও তার স্বীকারোক্তি- ‘আমার অন্তর্জগৎ রবীন্দ্রনাথের গড়া’।
এমসি কলেজে বক্তৃতা দেয়ার দুদিন আগেই রবীন্দ্রনাথ আসেন সিলেটে। যা তখন শ্রীহট্ট নামেও খ্যাত ছিল, কবিগুরু ভালোবেসে যার নাম দিয়েছিলেন ‘সুন্দরী শ্রীভূমি’।
১৯১৯ সালের ৫ নভেম্বর। হেমন্তের শীত শীত সকাল। চারদিকে কুয়াশার আঁধার। তার ভেতর থেকেই যেন একটা ট্রেন এসে থামল সিলেট রেলওয়ে স্টেশনে। প্রতিদিনই যেমন থামে। তবে এই ট্রেন থেকে নেমে এলেন দীর্ঘ শুভ্রকেশ আর শ্মশ্রুমণ্ডিত বিশেষ একজন। ছয় বছর আগে যিনি উপমহাদেশের প্রথম ব্যক্তি হিসেবে নোবেল জয় করেছেন। অবশ্য গান আর কবিতায় তারও আগেই তিনি জয় করে নিয়েছেন বাঙালির হৃদয়। শ্রীহট্টে পা রাখলেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।
সিলেটে তিন দিন অবস্থান করেছিলেন রবীন্দ্রনাথ। কবিগুরুর এই সফর নিয়ে প্রখ্যাত সম্পাদক নলিনীকুমার ভদ্র লেখেন- ‘কবির জীবনী থেকে এ তিনটি দিনের কাহিনি (সিলেট ভ্রমণের ৩ দিন) বাদ দিয়ে যদি কোনো শ্রীহট্টের ইতিহাস লেখা হয় তাহলে তা হবে অসম্পূর্ণ। অনাগত যুগে আমাদের ভবিষ্যৎ বংশীয়রা এ কাহিনি পড়ে গর্ব অনুভব করবে- যদিও ঈর্ষা করবে তারা আমাদের অপরিসীম সৌভাগ্যকে।’
সিলেট ভ্রমণের আনন্দস্মৃতির কথা উল্লেখ করে রবীন্দ্রনাথ ১৯১৯ সালের ৩ ডিসেম্বর ইতিহাসবিদ ও কলম্বো বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য কালিদাস নাগকে এক চিঠিতে লেখেন, ‘আশ্রমে ফিরে এসেছি। পাহাড় (শিলং) থেকে নেমে আসবার পথে গৌহাটি, শিলেট (সিলেট) ও আগরতলা ঘুরে এলুম। বলা বাহুল্য বক্তৃতার ত্রুটি হয়নি। দিনে চারটে করে বেশ প্রমাণসই বক্তৃতা দিয়েছি এমন দুর্ঘটনাও ঘটেছে। এমনতর রসনার অমিতাচারী আমি যে রাজি হয়েছি তার কারণ ওখানকার লোকেরা এখনও আমাকে হৃদয় দিয়ে আদর করে, এটা দেখে বিস্মিত হয়েছিলুম। বুঝলুম কলকাতা অঞ্চলের লোকের মতো ওরা এখনও আমাকে এত বেশি চেনেনি। ওরা আমাকে যা-তা একটা কিছু মনে করে। তাই সেই সুযোগ পেয়ে খুব করে আমার মনের কথা ওদের শুনিয়ে দিয়ে এলুম।’ (চিঠিপত্র-১২)
সিলেটে ভ্রমণকালে ৬ নভেম্বর টাউন হল প্রাঙ্গণে ও ৭ নভেম্বর এমসি কলেজের ছাত্রাবাসের উদ্যোগে কবি সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে দুটি বক্তৃতা দেন রবীন্দ্রনাথ। পরবর্তী সময়ে টাউন হলের বক্তৃতা ‘বাঙালীর সাধনা’ নামে ‘প্রবাসী’ পত্রিকায় আর এমসি কলেজের বক্তৃতার সারমর্ম ‘আকাঙ্খা’ শিরোনামে ‘শান্তিনিকেতন’ পত্রিকায় প্রকাশিত হয়।
এমসি কলেজের বক্তৃতার কিছু অংশ শুরুতেই উল্লেখ করা হয়েছে। ওই বক্তৃতায় রবীন্দ্রনাথ শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে আরও বলেন, ‘যে দেশে বিদ্যালয়ে কেবল দেখতে পাই, ছাত্র নোটবুকের পত্রপুট মেলে ধরে বিদ্যার মুষ্টিভিক্ষা করছে কিংবা পরীক্ষায় পাশের দিকে তাকিয়ে টেক্সট বইয়ের পাতায় পাতায় বিদ্যার উঞ্ছবৃত্তিতে নিযুক্ত, যে দেশে মানুষের বড় প্রয়োজনের সামগ্রী মাত্রই পরের কাছে ভিক্ষা করে সংগ্রহ করা হচ্ছে, নিজের হাতে লোকে দেশকে কিছুই দিচ্চে না- না স্বাস্থ্য, না অন্ন, না জ্ঞান, না শক্তি; যে দেশে কর্মের ক্ষেত্র সংকীর্ণ, কর্মের চেষ্টা দুর্বল, যে দেশে শিল্পকলায় মানুষ আপন প্রাণমন আত্মার আনন্দকে নব নব রূপে সৃষ্টি করছে না; যে দেশে অভ্যাসে বন্ধনে সংস্কারের জালে মানুষের মন এবং অনুষ্ঠান বদ্ধ বিজড়িত; যে দেশে প্রশ্ন করা, বিচার করা নতুন করে চিন্তা করা ও সেই চিন্তা ব্যবহারে প্রয়োগ করা কেবল হাতে যে নেই তা নয়, সেটা নিষিদ্ধ এবং নিন্দনীয়, সেই দেশে মানুষ আপন সমাজে আত্মাকে দেখতে পায় না, কেবল হাতকড়া, পায়ের বেড়ি এবং মৃতযুগের আবর্জনারাশিকেই চারিদিকে দেখতে পায়, জড় বিধিকেই দেখে, জাগ্রত বিধাতাকে দেখে না।’
ভ্রমণকালে এখানকার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যে মুগ্ধ হয়ে সিলেটকে নিয়ে একটি কবিতাও লেখেন রবীন্দ্রনাথ। সে সময় বাংলা থেকে বিচ্ছিন্ন করে সিলেটকে আসামের সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছিল। এ নিয়ে আক্ষেপও ফুটে ওঠে রবীন্দ্রনাথের কবিতায়। শতাধিক বর্ষ পরেও সিলেটের বর্ণনা দিতে গিয়ে এখনও অনেকেই দ্বারস্থ হন সেই কবিতার।-
‘মমতাবিহীন কালস্রোতে/ বাঙলার রাষ্ট্রসীমা হতে/ নির্বাসিতা তুমি/ সুন্দরী শ্রীভূমি।/ ভারতী আপন পুণ্য হাতে/ বাঙালির হৃদয়ের সাথে/ বাণীমালা দিয়া/ বাঁধে তব হিয়া/ সে বাঁধনে চিরদিনতরে তব কাছে/ বাঙলার আশীর্বাদ গাঁথা আছে।’
এই কবিতা থেকে ধার করে সিলেটকে ‘সুন্দরী শ্রীভূমি’ হিসেবেও আখ্যায়িত করে থাকেন কেউ কেউ।
লেখক ও রবীন্দ্র গবেষক অধ্যাপক নৃপেন্দ্র লাল দাশ বলেন, ‘রবীন্দ্রনাথ কেবলমাত্র সিলেটকে নিয়েই কবিতা লিখেছেন। অন্য কোনো স্থান সম্পর্কে কোথাও কবিতা লিখেছিলেন কি না, জানা যায় না। রবীন্দ্র হস্তাক্ষরে লেখা কবিতাটির শিরোনাম ছিল না। তারিখও ছিল না। স্থান নামও ছিল না। পরে কবিপ্রণামে ‘শ্রীভূমি’ নামে প্রকাশিত হয়। রবীন্দ্র গবেষকদের অনুমান ১৯৩৬ সালে এই কবিতা রচিত হয়েছিল।’
সিলেটে এসে মণিপুরী নৃত্য দেখে মুগ্ধ হন রবীন্দ্রনাথ। মণিপুরী কাপড়ও তাকে মুগ্ধ করে। শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ফারজানা সিদ্দিকা তর ‘সিলেটে রবীন্দ্রনাথ: শতবর্ষে ফিরে দেখা’ প্রবন্ধে লিখেছেন, ‘রবীন্দ্রনাথ মণিপুরী নৃত্যকলায় এতটাই মুগ্ধ হয়েছিলেন যে, কলকাতায় ফিরবার পথে ত্রিপুরার রাজার সাহায্য নিয়ে একজন নাচের শিক্ষককে শান্তিনিকেতনে নিয়ে যান সেখানকার শিক্ষার্থীদের নাচ শেখাবার জন্যে।’
কবিগুরুর সিলেট সফরের শতবর্ষ পূর্ণ হয় ২০১৯ সালের নভেম্বরে। গর্ব আর ঈর্ষাজাগানিয়া সেই স্মৃতির স্মরণে সে বছর সিলেটে ব্যাপক আয়োজনের মধ্যে ‘শ্রীহট্টে রবীন্দ্রনাথ: শতবর্ষে স্মরণোৎসব’ শিরোনামে রবীন্দ্রনাথের পরিভ্রমণের একশ’ বছর পূর্তি পালন করা হয়। রবীন্দ্র স্মরণোৎসব বিশাল আয়োজনে পালন করা হলেও দীর্ঘদিন ধরেই অযত্ন-অবহেলায় পড়ে আছে রবীন্দ্রস্মৃতিচিহ্নগুলো।
সিলেট ভ্রমণকালে নগরীর নয়াসড়কের মিশনারি বাংলোয় (পাদ্রী বাংলা নামে পরিচিত) থাকার ব্যবস্থা হয় রবীন্দ্রনাথের। এই বাংলোটির এখন আর অস্তিত্বই নেই। খ্রিষ্টান মিশনারি নেতারা বাংলোসহ ওই জায়গাটি অনেকটা গোপনে বিক্রি করে দেন। বর্তমানে সেখানে সিলেট উইমেন্স মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল নামে একটি বেসরকারি হাসপাতাল রয়েছে।
নগরীর চৌহাট্টা এলাকার এতিহ্যবাহী সিংহ বাড়িতে গিয়েছিলেন রবীন্দ্রনাথ। বিগত চারদলীয় জোট সরকারের আমলে এ বাড়িটিকে অর্পিত সম্পত্তি উল্লেখ করে একটি প্রভাবশালী মহলকে বন্দোবস্ত করে দেয়া হয়েছিল। তবে আন্দোলনের মুখে পরে বন্দোবস্ত বাতিল করে কর্তৃপক্ষ। এমসি কলেজেও নেই রবীন্দ্রনাথের স্মৃতিচিহ্ন ধরে রাখার মতো কোনো উদ্যোগ।
সিলেট ভ্রমণকালে নগরীর বন্দরবাজারের ব্রাহ্মমন্দিরে দুইবার যান রবীন্দ্রনাথ। সেখানে সমবেত প্রার্থনায়ও অংশ নেন। ব্রাহ্মমন্দিরটি এখন জরাজীর্ণ অবস্থায় কোনো রকমে টিকে আছে।
রবীন্দ্রনাথের মন কেড়েছিল সিলেটের মণিপুরী নৃত্য। নগরীর মাছিমপুরের মণিপুরী পল্লির মণ্ডপে বসে নৃত্য দেখেছিলেন তিনি। দীর্ঘদিনের দাবির পর গত বছর এই মণ্ডপপ্রাঙ্গণে রবীন্দ্রনাথের একটি আবক্ষ ভাস্কর্য স্থাপন করে সিলেট সিটি করপোরেশন। এটি নিয়েও আপত্তি জানায় মৌলবাদী গোষ্ঠী।
এ প্রসঙ্গে কবি তুষার কর বলেন, ‘কেবল গানবাজনা আর লোকদেখানো অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে রবীন্দ্রস্মরণ নয়। রবীন্দ্রনাথের স্মৃতিচিহ্নগুলোও আমাদের সংরক্ষণ করা প্রয়োজন। তাতে আগামী প্রজন্ম এ বিষয়ে জানতে পারবে।’
আজ ইংরেজি সালে ৮ মে, বাংলায় ২৫ বৈশাখ। বাঙালি সত্তা ও সংস্কৃতির মহানায়ক রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৬০ তম জন্মদিন। ১২৬৮ বঙ্গাব্দের এই দিনে কলকাতার জোড়াসাঁকোর ঠাকুরবাড়িতে জন্ম এই প্রবাদপুরুষের।
আরও পড়ুন:নাটোর জেলার সেপ্টেম্বর মাসের শ্রেষ্ঠ থানা হিসেবে নির্বাচিত হয়েছে বড়াইগ্রাম থানা। একই সঙ্গে জেলার শ্রেষ্ঠ পুলিশ অফিসার নির্বাচিত হয়েছেন বড়াইগ্রাম থানার সাব-ইন্সপেক্টর (এসআই) রাকিবুল ইসলাম। মাদকদ্রব্য উদ্ধার ও বিভিন্ন মামলার আসামি গ্রেপ্তারে বিশেষ সাফল্যের স্বীকৃতি হিসেবে তিনি এই পুরস্কার অর্জন করেন।
বড়াইগ্রাম থানার পক্ষ থেকে শ্রেষ্ঠ থানার পুরস্কার গ্রহণ করেন ওসি মো. গোলাম সারোয়ার। গত মঙ্গলবার নাটোর জেলা পুলিশ লাইন্স কনফারেন্স রুমে সেপ্টেম্বর মাসের মাসিক অপরাধ পর্যালোচনা সভায় পুলিশ সুপার (এসপি) মো. তারিকুল ইসলাম পুরস্কার ও সন্মাননা স্মারক তুলে দেন। সভায় জেলার সামগ্রিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি, মামলার নিষ্পত্তি, ওয়ারেন্ট তামিল, নারী ও শিশু নির্যাতন, মাদক মামলা, ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা, চুরি-ডাকাতি নিয়ন্ত্রণসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। পুলিশ সুপার মো. তারিকুল ইসলাম বলেন, নাটোর জেলার আইনশৃঙ্খলা স্বাভাবিক রাখতে পুলিশ সর্বোচ্চ আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করছে। সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করাই আমাদের অগ্রাধিকার। তিনি চাঁদাবাজি রোধ, রাত্রিকালীন টহল জোরদার এবং চুরি-ডাকাতি ও দস্যুতা নিয়ন্ত্রণে গোয়েন্দা কার্যক্রম আরও জোরদারের নির্দেশনা দেন।
এ সময় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) মো. ইফতে খায়ের আলম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মাহমুদা শারমিন নেলী, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বড়াইগ্রাম সার্কেল) শোভন চন্দ্র হোড়, জেলার সব থানার ওসি, সিআইডি প্রতিনিধি, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধি ও অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
বড়াইগ্রাম থানার ওসি গোলাম সারোয়ার বলেন, এই অর্জন বড়াইগ্রাম থানার পুরো টিমের সম্মিলিত প্রচেষ্টার ফল। মাদক নির্মূল, আইনশৃঙ্খলা রক্ষা ও জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আমরা দিনরাত পরিশ্রম করছি। এই স্বীকৃতি আমাদের আরও দায়িত্বশীলভাবে কাজ করতে উৎসাহিত করবে। জনগণের সহযোগিতা ছাড়া কোনো সাফল্য সম্ভব নয়, তাই জনসাধারণের সহযোগিতাই আমাদের সবচেয়ে বড় শক্তি।
সারাদেশে চলমান টাইফয়েড টিকাদান ক্যাম্পেইন-২০২৫ উপলক্ষে গাজীপুরের কালীগঞ্জে শিশুদের মাঝে জুস ও চকলেট বিতরণ করা হয়েছে। বুধবার সকালে বালিগাঁও মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে এই কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।
গাজীপুর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ও গাজীপুর-৫ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য একেএম ফজলুল হক মিলনের উদ্যোগে বালিগাঁও মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও শামসুন্নাহার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের হাতে জুস ও চকলেট তুলে দেওয়া হয়।
জানা যায়, কোমলমতি শিশুদের সুস্বাস্থ্য রক্ষার লক্ষ্যে গত রোববার থেকে সারাদেশে টাইফয়েড টিকাদান ক্যাম্পেইন শুরু হয়েছে। কিন্তু অনেক শিশুর মধ্যেই টিকা গ্রহণে অনাগ্রহ লক্ষ্য করা যায়। এই অনাগ্রহ কাটাতে উৎসাহমূলক উদ্যোগ হিসেবে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মাঝে জুস ও চকলেট বিতরণ করা হয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, এই উদ্যোগের ফলে শিক্ষার্থীদের মধ্যে টিকা গ্রহণের আগ্রহ বেড়ে গেছে। তারা আনন্দের সঙ্গে টিকা নিচ্ছে এবং বিদ্যালয়ের পরিবেশে উৎসবমুখরতা বিরাজ করছে।
শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বললে তারা জানায়, জুস ও চকলেট হাতে পাওয়ার পর টিকা নিতে গিয়ে যে ব্যথা পেয়েছিলাম তা একেবারেই ভুলে গেছি। আমরা খুবই আনন্দিত।
এ বিষয়ে উপস্থিত অভিভাবকেরা বলেন, এই উদ্যোগে বাচ্চারা উৎসাহ পেয়েছে। যারা আগে ভয় পেত, তারাও আগ্রহ নিয়ে টিকা নিয়েছে। বিএনপি নেতাদের এই উদ্যোগ সত্যিই প্রশংসনীয়।’
বালিগাঁও মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা জানান, ‘অনেক শিক্ষার্থী টিকা নিতে ভয় পাচ্ছিল। পরে বিএনপি নেতারা জুস ও চকলেট নিয়ে মাঠে উপস্থিত হয়ে ঘোষণা দেন- যারা টিকা নেবে না, তারা উপহার পাবে না। এতে শিক্ষার্থীরা উৎসাহ পায় এবং সবাই টিকা নেয়। এতে স্কুলে এক উৎসবমুখর পরিবেশ সৃষ্টি হয়।’
এ সময় কালীগঞ্জ পৌর বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের কাস্টমস ও ভ্যাট অনুবিভাগের প্রশাসনিক সংস্কার, পুনর্গঠন ও সম্প্রসারণ করে মোট ১২ টি নতুন কমিশনারেট, কাস্টমস হাউস ও বিশেষায়িত ইউনিট সৃজন করে অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ কর্তৃক গতকাল একটি সরকারি আদেশ জারী করা হয়েছে। কাস্টমস ও ভ্যাট অনুবিভাগ দু’টির বিদ্যমান কমিশনারেট, কাস্টমস হাউস এবং বিশেষায়িত ইউনিটসমূহে জনবল বৃদ্ধি এবং নতুন ১২টি কমিশনারেট, কাস্টমস হাউস এবং বিশেষায়িত ইউনিটসমূহে ৩৭৩টি ক্যাডার পদ এবং ৩,২২৪ টি নন-ক্যাডার পদসহ মোট ৩,৫৯৭টি পদ নতুনভাবে সৃজন করা হয়েছে।
কর জাল সম্প্রসারণ করে রাজস্ব আদায় বৃদ্ধির মাধ্যমে জাতীয় অর্থনীতিতে স্বনির্ভরতা অর্জন, সেবার মান উন্নয়নের মাধ্যমে ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ নিশ্চিত করা এবং সর্বোপরি পরোক্ষ কর ব্যাবস্থাকে অধিকতর গতিশীল ও কার্যকর করার লক্ষ্যে অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ কর্তৃক কাস্টমস ও ভ্যাট অনুবিভাগের প্রশাসনিক সংস্কার, পুনর্গঠন ও সম্প্রসারণ কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা হয়। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের প্রস্তাবের প্রেক্ষিতে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়, অর্থ বিভাগ এবং মন্ত্রি পরিষদ বিভাগসহ প্রয়োজনীয় সকল প্রশাসনিক অনুমোদন শেষে অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ কর্তৃক উক্ত আদেশ জারী করা হয়। উক্ত আদেশ অনুযায়ী ৩ পর্যায়ে ৫টি নতুন মূল্য সংযোজন কর কমিশনারেট, ৪টি নতুন কাস্টমস হাউস এবং ৩ টি বিশেষায়িত দপ্তর সৃজন করা হলো।
নতুন ১২ টি কমিশনারেট, কাস্টমস হাউস ও বিশেষায়িত ইউনিট সৃজন ছাড়াও উক্ত সরকারি আদেশের মাধ্যমে বিদ্যমান কমিশনারেট, কাস্টমস হাউস ও বিশেষায়িত ইউনিটসমূহের সম্প্রসারণ, ঢাকা বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনালের কাস্টমস কার্যক্রম এবং কাস্টমস ও ভ্যাট গোয়েন্দা কার্যক্রমের সম্প্রসারণ ও বিকেন্দ্রীকরণ করা হয়েছে।
কাস্টমস ও ভ্যাট অনুবিভাগের প্রশাসনিক সংস্কার, পুনর্গঠন ও সম্প্রসারণের ফলে পরোক্ষ কর আহরণ কার্যক্রমের প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে, কাঙ্ক্ষিত পরিমাণ রাজস্ব আদায়ের মাধ্যমে দেশের কর-জিডিপি অনুপাত বৃদ্ধি পাবে, ব্যবসা বাণিজ্যের প্রসারের মাধ্যমে বিনিয়োগ বৃদ্ধি পাবে এবং দেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতি ত্বরান্বিত হবে মর্মে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড আশা করছে।
-জাতীয় রাজস্ব বোর্ড
তিতাস গ্যাস কর্তৃক গ্যাসের অবৈধ ব্যবহার শনাক্তকরণ এবং উচ্ছেদ অভিযান কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
নিয়মিত অভিযানের অংশ হিসেবে গত ৯ অক্টোবর (বৃহস্পতিবার) ২০২৫ তারিখে বিজ্ঞ এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট জনাব মোঃ সিমন সরকার -এর নেতৃত্বে মেট্রো ঢাকা বিক্রয় বিভাগ -৪ এর আওতাধীন গুলশান সংলগ্ন কড়াইল বস্তিতে অবৈধ গ্যাস লাইন উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযান চলাকালীন অত্র কোম্পানির মাননীয় ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌ. শাহনেওয়াজ পারভেজ মহোদয় বৈরী আবহাওয়ার মধ্যে নিজে উপস্থিত থেকে উচ্ছেদ অভিযান পরিদর্শনসহ জরুরী দিক নির্দেশনা প্রদান করেন এবং বিভিন্ন গ্রাহক আঙ্গিনায় অবৈধ সংযোগের বিরুদ্ধে জনসচেতনতামূলক প্রচারণা চালান।
কড়াইল বস্তির অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন অভিযানে দেখা যায়, উক্ত বস্তিতে বসবাসরত একশ্রেনীর অসাধু লোকজন অবৈধ উপায়ে পুকুরের পানির নীচ দিয়ে ও ম্যানহোলের ভিতর দিয়ে জিআই পাইপ, কয়েল পাইপ ও প্লাস্টিকের পাইপ দিয়ে অবৈধ গ্যাস সংযোগ নিয়েছে। উক্ত অভিযানে রোড-৩৪, গুলশান-২ গ্রাহকের সার্ভিস লাইন হতে অবৈধভাবে প্লাস্টিক পাইপের মাধ্যমে কড়াইল বস্তিতে গ্যাস সংযোগ পরিলক্ষিত হওয়ায় সংযোগটি বিচ্ছিন্নপুর্বক বিভিন্ন সাইজের ১০০ ফুট প্লাস্টিক পাইপ অপসারণ করা হয়েছে। রোড-৩৩, গুলশান-২ এ একজন গ্রাহকের সার্ভিস লাইন হতে অবৈধভাবে প্লাস্টিক পাইপের মাধ্যমে কড়াইল বস্তিতে গ্যাস সংযোগ পরিলক্ষিত হওয়ায় সংযোগটি বিচ্ছিন্নপুর্বক আনুমানিক ২০০ ফুট প্লাস্টিক পাইপ অপসারণ করা হয়েছে। রোড-৩২, গুলশান-২ এ কড়াইল বস্তিতে প্লাস্টিক পাইপের সাহায্যে গ্রাহকের সার্ভিস লাইন হতে অবৈধভাবে গ্যাস ব্যবহার করার কারণে সংযোগটি বিচ্ছিন্নপুর্বক আনুমানিক ৭০ ফিট প্লাস্টিক পাইপ অপসারণ করা হয়েছে। রোড-২৩/সি, গুলশান-২ এ গ্রাহকের সার্ভিস লাইন হতে অবৈধভাবে প্লাস্টিক পাইপের মাধ্যমে কড়াইল বস্তিতে গ্যাস সংযোগ পরিলক্ষিত হওয়ায় সংযোগটি বিচ্ছিন্নপুর্বক আনুমানিক ১৩০ ফুট প্লাস্টিক পাইপ অপসারণ করা হয়েছে।
Gulsan lake view নামক হোটেলে গ্রা: সং:নং: ১২৮-২১৬২১ এর বিপরীতে মিটার বিহীন আবাসিক রাইজার হতে ২৫ ঘ.ফু স্টার বার্ণার ২টি এবং ২টি ২১ ঘনফুট এর মডিফাইড ডাবল চুলা সহ সর্বমোট ৯২ ঘ.ফু হিসেবে বাণিজ্যিকভাবে গ্যাস ব্যবহার পরিলক্ষিত হওয়ায় বিজ্ঞ ম্যাজিস্ট্রেট কর্তৃক ৬০,০০০/- টাকা নগদ জরিমানা আদায় করা হয়েছে এবং সংযোগটি বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। এ সময় ১টি রেগুলেটর, প্লাস্টিক পাইপ- আনুমানিক ৫০ ফুট অপসারণ করা হয়েছে এবং গাওসুল আজম মসজিদ ( গুলশান মহাখালী রোড সংলগ্ন), ১৫ নম্বর রোডে পুলিশ বক্সের সাথে সার্ভিস লাইন হতে অবৈধভাবে কড়াইল বস্তিতে প্লাস্টিক পাইপের মাধ্যমে গ্যাস ব্যবহার পরিলক্ষিত হওয়ায় আনুমানিক ১৫০ ফিট প্লাস্টিক পাইপ অপসারণ করা হয়েছে।
এক সময় দেশের অর্থনীতির প্রধান ভরসা ছিলো সোনালি আঁশ পাট। উত্তরাঞ্চলের কৃষক আজও এই ঐতিহ্যবাহী ফসলের উপর নির্ভরশীল। কিন্তু একের পর এক মৌসুমে ন্যায্যমূল্য না পাওয়ায় গাইবান্ধার পাটচাষিদের মনে দানা বাঁধছে হতাশা। এবছর বাজারে দামের ঊর্ধ্বগতি থাকলেও সেই বাড়তি লাভ পৌঁছায়নি কৃষকের ঘরে। ফলে হাট-বাজারজুড়ে ভেসে বেড়াচ্ছে বঞ্চনা আর নিরাশার দীর্ঘশ্বাস।
পাটচাষের সঙ্গে জড়িত কৃষক ও স্থানীয় বিশ্লেষকরা বলছেন, সরকারি তৎপরতার ঘাটতি, পাটকল মালিকদের প্রভাব এবং ফরিয়া-সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্যই এই সংকটের মূল কারণ। তাদের আশঙ্কা এই অব্যবস্থাপনা চলতে থাকলে পাট চাষ থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবে কৃষক।
কমছে চাষের পরিমাণ:
গাইবান্ধা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সংশ্লিষ্ট সূত্রে পাওয়া তথ্যানুযায়ী জেলায় পাট চাষাবাদের ৫ বছরের পরিসংখ্যানে দেখা যায়, কেবল চলতি মওসুমে (২০২৫-২০২৬ অর্থ বছর) মাত্র ৩২ হেক্টর জমিতে পাটের আবাদ বাড়লেও গত কয়েক বছর থেকে কমছে পাট চাষ। পরিসংখ্যান অনুযায়ী ২০২১ সালে জেলায় ১৫ হাজার হেক্টর জমিতে চাষ হয় পাট। তার পরের বছর অর্থাৎ ২০২২ সালে ৬৮৭ হেক্টর কমে ১৪ হাজার ৩১৩ হেক্টর, ২০২৩ সালেও একই পরিমাণ এবং ২০২৪ সালে আরো ৫২৩ হেক্টর কমে চাষ হয় ১৩ হাজার ৭৯০ হেক্টর পাট।
অন্যদিকে, কোনোও বছরই চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে পারেনি কৃষি বিভাগ।
এ বছর দাম বাড়লেও নেই কৃষকের লাভ:
ফুলছড়ি হাটে সরেজমিনে দেখা গেছে, মানভেদে প্রতি মণ পাট বিক্রি হচ্ছে তিন হাজার ৯০০ থেকে চার হাজার ২০০ টাকায়— যা দেড় মাস আগেও ছিলো দুই হাজার ৫০০ থেকে দুই হাজার ৭০০ টাকার মধ্যে। দাম বেড়েছে ঠিকই, কিন্তু কৃষকের ঘরে নেই আনন্দ। কারণ, অধিকাংশ কৃষক আগেই কম দামে পাট বিক্রি করতে বাধ্য হয়েছেন ঋণ শোধের চাপে।
চাষি আব্দুল হালিম ক্ষোভ জানিয়ে বলেন, এখন দাম ভালো, আমাদের ঘরে তো পাট নাই । কাটার সময় দাম ছিলো আড়াই-তিন হাজার। ধার শোধ করতে না পারলে তো চলবে না। এখন যারা মজুদ রেখেছে, তারাই লাভ করছে।
ফুলছড়ি উপজেলার কঞ্চিপাড়া ইউনিয়নের খোলাবাড়ি গ্রামের পাটচাষী জসমত আলী বলেন, “সার, বীজ, কীটনাশক, শ্রমিক— সবকিছুর খরচ বেড়েছে। আবার বন্যা-খরার ঝুঁকি নিতে হয়। এত পরিশ্রম করেও দাম না পাওয়ায় পাট চাষ এখন বোঝা মনে হয়। কিছু করারও নাই আমাদের। এসব চরের জমিতে এই সময়ে পাট ছাড়া কিছু করতেও পারিনা আমরা।
একই আরেক পাট বিক্রেতা আলিম উদ্দিন হোসেন বলেন, সরকার যদি মৌসুমের শুরু থেকেই আমাদের কাছ থেকে পাট কিনে, তাহলে আমরা একটু বাঁচতে পারবো। না হলে এই চাষ বন্ধ হয়ে যাবে।” আমরা সিন্ডিকেটের কারণে প্রতিবছর মরে যাচ্ছি।
সিন্ডিকেটের নিয়ন্ত্রণে বাজার:
কৃষকদের অভিযোগ, বন্যা-খরাসহ নানা দুর্যোগের ঝুঁকি, হারভাঙ্গা খাটুনি আর ধার-দেনা করে পাট চাষ করে কৃষক। আর মৌসুমের শুরুতেই পাটকল মালিক ও ফড়িয়ারা আঁতাত করে দাম কমিয়ে রাখেন। পরে সেই পাটই তারা মজুদ করে অধিক দামে বিক্রি করেন। বছরের পর বছর এই ‘অদৃশ্য সিন্ডিকেট’ই বাজারের নিয়ন্ত্রণ নিচ্ছে।
পাইকারদের ভিন্ন ব্যাখ্যা:
অন্যদিকে কৃষকদের অভিযোগের দায় নিচ্ছেনা পাইকাররা । ফুলছড়ি হাটের পাইকার শাহ আলম বলেন, “আমরা নিজেরা দাম ঠিক করি না। মিল মালিকরা যে দামে কিনতে বলেন, সেই দামে আমরা পাট কিনি।”
কৃষকদের আক্ষেপ, প্রত্যাশা সরকারি হস্তক্ষেপ:
একদিকে বন্যা, খরা, আগাম বর্ষা-প্রকৃতির অনিশ্চয়তা; অন্যদিকে বাজারের অন্যায় খেলা-সব মিলিয়ে পাট চাষ এখন কৃষকদের কাছে লাভের নয়, বরং লোকসানের প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়েছে।
তবুও আশা ছাড়েননি। সরকারের কার্যকর পদক্ষেপ নিলে ভাঙবে 'সিন্ডিকেটের জাল’, ফিরবে পাটের সোনালী অতীত এমনই প্রত্যাশা গাইবান্ধার পাটচাষিদের।
উন্নয়ন সংগঠন সাদ্দাম হোসেন বলেন, হাটে-হাটে সরকারি ক্রয়কেন্দ্র খুলে সরাসরি কৃষকের কাছ থেকে পাট কেনা হলে কৃষকরা অবশ্যই লাভবান হবেন। দেশের অর্থনীতির মূল চালিকা শক্তি এই কৃষকরা। কৃষিনির্ভর এই দেশে অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে হলে কৃষককে আগে বাঁচাতে হবে। "কৃষকের কাছ থেকে সরাসরি পাট কেনা হচ্ছে না ফলে লাভবান হচ্ছেন ফড়িয়া-পাইকারেরা।
গাইবান্ধা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক আতিকুল ইসলাম দৈনিক বাংলাকে বলেন, “জেলায় বর্তমানে পাটের বাজার স্থিতিশীল। কৃষকদের উৎসাহিত করতে বিনামূল্যে বীজ ও সার বিতরণ করা হয়েছে। তবে পাটের ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত করতে সরকারি সব দপ্তরকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।”
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ‘ভোট দিলে বেহেশতে যাওয়া সহজ হবে, এমন প্রচারণা মানুষের সঙ্গে প্রতারণা।’
গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে জাতীয়তাবাদী ওলামা দল আয়োজিত কোরআন অবমাননা ও বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) কে নিয়ে কটূক্তির প্রতিবাদে আয়োজিত সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
বিএনপির এই নেতা আরও বলেন, জামায়াত ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহার করে বিভ্রান্তিমূলক প্রচারণা চালাচ্ছে। তারা কিছু ছেলেপেলেকে দিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় মিথ্যাচার, কটূক্তি ও করুচিপূর্ণ কথা ছড়ানোর বাহিনী গড়ে তুলেছে। এরা মিথ্যাকে সাজিয়ে গুছিয়ে প্রচার করছে প্রতিনিয়ত।
তিনি আরও বলেন, ‘জামায়াত আওয়ামী লীগের লেজ ধরে চলতে ভালোবাসে, এখনো কেন যেন আওয়ামী লীগের ভোট নেওয়ার জন্য কায়দা কানুন করছে। শুধুমাত্র ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য ইসলামের মৌলিক নীতির বাইরে কথা বলছে তারা।’
সাধারণ মানুষ পিআর সম্পর্কে জানে না জানিয়ে রিজভী বলেন, ‘যারা নভেম্বরে গণভোটের কথা বলছেন তাদের কোনো মাস্টারপ্ল্যান আছে, তারা শর্ত দিয়ে বিভ্রান্ত করে জাতীয় নির্বাচনকে বিলম্বিত করতে চাচ্ছে।’
ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেছেন, আগামীর স্বপ্নপূরণে মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের এগিয়ে আসতে হবে। এজন্য প্রস্তুতি লাগবে।
তিনি বলেন, যোগ্য হয়েই সুযোগ্য স্থানে অধিষ্ঠিত হতে হবে। প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারীবাহিনী, শিক্ষা, স্বাস্থ্যসহ সকল ক্ষেত্রে যোগ্যতার স্বাক্ষর রাখতে হবে। দেশ ও জাতির উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে হবে।
গতকাল সকালে রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে তামীরুল মিল্লাত কামিল মাদ্রাসা প্রাঙ্গণে প্রতিষ্ঠানটির ছাত্র সংসদের আয়োজনে ১ম এমডিসি জাতীয় স্কুল, কলেজ ও আন্তঃমাদ্রাসা বিতর্ক প্রতিযোগিতার গ্রান্ড ফিনালে ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ধর্ম উপদেষ্টা আরো বলেন, ‘আমাদেরকে অনেক পথ পাড়ি দিতে হবে। আমরা একটি স্থানে আসতে পেরেছি। এখানেই শেষ নয়, আরো বহুদূর যেতে হবে। এই পথ পাড়ি দিতে কোনো বাঁধা আসলে আমাদেরকে থেমে গেলে চলবে না। সকল বাঁধা অতিক্রম করেই এগিয়ে যেতে হবে।’
ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে ড. খালিদ বলেন, সকল ভেদাভেদ ও মতপার্থক্য ভুলে আমাদেরকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। যে সুযোগ এসেছে সেটাকে পরিপূর্ণ কাজে লাগাতে হবে। এ সুযোগ হাতছাড়া হয়ে গেলে আমাদেরকে বহুবছর সুযোগের জন্য অপেক্ষা করতে হবে। তিনি সকলকে কালেমা তায়্যেবার পতাকাতলে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার অনুরোধ জানান।
পরে উপদেষ্টা চ্যাম্পিয়ন ও রানারআপ ক্যাটাগরিতে বিজয়ী দলের সদস্যদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন।
উল্লেখ্য, তিন মাসব্যাপী স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসা ক্যাটাগরিতে এ বিতর্ক প্রতিযোগিতায় সারাদেশের ৫৪টি প্রসিদ্ধ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান অংশগ্রহণ করে।
স্কুল ক্যাটেগরিতে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে মুগদা আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ এবং রানারআপ হয়েছে বনশ্রী আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ।
কলেজ ও উন্মুক্ত ক্যাটাগরিতে নটর ডেম কলেজ চ্যাম্পিয়ন এবং মনিপুর স্কুল ও কলেজ রানারআপ হয়েছে।
মাদ্রাসা ক্যাটাগরিতে তামীরুল মিল্লাত কামিল মাদ্রাসা চ্যাম্পিয়ন এবং বায়তুশ শরফ আদর্শ কামিল মাদ্রাসা রানারআপ হওয়ার গৌরব অর্জন করে।
তামীরুল মিল্লাত কামিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ ড. মোহাম্মদ খলিলুর রহমান মাদানীর সভাপতিত্বে এ অনুষ্ঠানে ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চেয়ারম্যান ড. শামসুল আলম, মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষা বিভাগের যুগ্মসচিব মো. মনিরুজ্জামান ভূইয়া, আল ফাতাহ পাবলিকেশন্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ সাঈদ, ডাকসুর নির্বাচিত ভিপি আবু সাদিক কায়েম, তামীরুল মিল্লাত কামিল মাদ্রাসার গভর্নিং বডির চেয়ারম্যান প্রফেসর নুরুন্নবী মানিক প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
মন্তব্য