অমর একুশের গ্রন্থমেলায় এসেছে সাংবাদিক, লেখক ও গবেষক আমীন আল রশীদের দীর্ঘ অনুসন্ধানের ফসল ‘জীবনানন্দের মানচিত্র’ নামক বইটি।
বইয়ে রয়েছে ‘রূপসী বাংলার কবি’ হিসেবে পরিচিত জীবনানন্দ দাশের ৫৫ বছরের ঘটনাবহুল জীবনের সঙ্গে সম্পর্কিত সব স্থানের সচিত্র বিবরণ। দুর্লভ অনেক ছবির সঙ্গে রয়েছে জীবনানন্দের কাল ও বর্তমান সময়ের তুলনামূলক আলোচনা।
বাংলাদেশ ও ভারতের যেসব জায়গায় কবি জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত ছিলেন, সেসব জায়গা এখন কেমন আছে, সেখানে জীবনানন্দের কোনো স্মৃতি আছে কি না, তা উঠে এসেছে বইয়ে। পাশাপাশি কবির জন্মস্থান ও অন্যান্য বিষয় নিয়ে যেসব বিতর্ক বা সংশয় রয়েছে, তাও ঠাঁই পেয়েছে বইয়ের পাতায়।
বইটি মূলত জীবনানন্দের ৫৫ বছরের একটি অ্যালবাম। একজন অনুসন্ধানী সাংবাদিক বাংলাদেশ ও ভারতের নানা জায়গায় বছরের পর বছর ধরে খুঁজেছেন কবি ও ব্যক্তি জীবনানন্দ দাশকে। কথা বলেছেন জীবনানন্দের সাক্ষাৎ পাওয়া একাধিক মানুষের সঙ্গে। ১৯৫২ সালে কলকাতার বড়িশা কলেজে তার যোগদানের বিষয়ে কলেজ কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত-সংবলিত দুর্লভ রেজিস্ট্রি খাতাও খুঁজে বের করেছেন।
বাংলাদেশের বরিশাল, বাগেরহাট, কলকাতা শহর, খড়গপুর, দিল্লিসহ যেসব জায়গায় স্বল্প ও দীর্ঘ মেয়াদে জীবনানন্দ দাশ বসবাস করেছেন, ধানসিড়ি ও জলসিড়ি নদী, স্টিমারযাত্রা, বরিশাল শহরের অলিগলিতে তার পথহাঁটার মতো বিষয়গুলো উঠে এসেছে এই অনুসন্ধানে।
লেখক আমীন আল রশীদ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বইটি লিখতে এসব জায়গায় অনেকবার যেতে হয়েছে আমাকে। প্রতিটি তথ্য যাচাইবাছাই করতে হয়েছে। আমি মনে করি সব মিলিয়ে “জীবনানন্দের মানচিত্র” মূলত অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার একটি প্রামাণ্য দলিল, যেখানে রয়েছে ইতিহাস ও সাহিত্যের মেলবন্ধন।’
জীবনানন্দের জীবনীকার প্রভাতকুমার দাসের সরাসরি তত্ত্বাবধানে এবং গবেষক গৌতম মিত্রর গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শে লিখিত এই বইটি প্রকাশ করেছে ‘ঐতিহ্য’। ২৩৮ পৃষ্ঠার এই বইটির গায়ের দাম ৫৮০ টাকা। তবে মেলায় কেনা যাবে ২৫ শতাংশ ছাড়ে।
বইটি রকমারি ডটকম ছাড়াও দেশের বড় শহরগুলোতে ঐতিহ্যর বই বিক্রয়কেন্দ্র ‘নির্বাচিত’র শোরুমেও পাওয়া যাবে।
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকা অভিমুখে যাত্রা করা ত্রাণবাহী নৌবহর গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলায় যোগ দিয়েছেন বাংলাদেশের খ্যাতিমান আলোকচিত্রী ও মানবাধিকারকর্মী শহিদুল আলম।
আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের সংবাদের পাশাপাশি তিনি নিজেও গতকাল বুধবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ সংক্রান্ত একাধিক পোস্ট করে তিনি এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
স্থানীয় সময় গত মঙ্গলবার ইতালির ওট্রান্টো থেকে ফ্লোটিলার বৃহত্তম জাহাজ ‘কনসায়েন্সে’ চড়ে যাত্রা শুরু করেন শহিদুল আলম।
গত শনিবার রাজধানী ঢাকার শুক্রাবাদে দৃকপাঠ ভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে দৃকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শহিদুল আলম ঘোষণা দেন, গাজা উপত্যকায় চলমান নৃশংসতার বিষয়ে ইসরায়েলি গণমাধ্যমের নীরবতা ভাঙতে আন্তর্জাতিক সংগঠন ফ্রিডম ফ্লোটিলা কোয়ালিশনের (এফএফসি) উদ্যোগে পরিচালিত ‘মিডিয়া ফ্লোটিলা’ অভিযানে অংশ নিতে যাচ্ছেন তিনি।
পরিকল্পনা অনুযায়ী পরদিন গত রোববার ইতালির উদ্দেশে রওনা হন বাংলাদেশি এ মানবাধিকারকর্মী। এতে যোগ দেওয়ার বিষয়ে শহিদুল আলমের বক্তব্য হচ্ছে, ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্র একসঙ্গে ফিলিস্তিনে, গাজায় মানুষ হত্যা করছে। তার সঙ্গে পাশ্চাত্যের অনেকগুলো দেশ যুক্ত, তারাও সহযোগিতা করছে এবং তারাও এতে অংশীদার। কিন্তু পৃথিবীর অনেক দেশের অনেক মানুষ, সারা পৃথিবীর মানুষ এর প্রতিবাদও করছে এবং এই প্রতিবাদের সঙ্গে সম্পৃক্ততা রেখে তিনি মিডিয়া ফ্লোটিলায় যোগ দিয়েছেন।
নৌবহর সম্পর্কে শহিদুল আলম জানিয়েছিলেন, ‘এবার ৫০টির অধিক জাহাজ যাচ্ছে। আমরা যেই জাহাজে যাচ্ছি, সেটিতে প্রায় ১০০ জন থাকবে। যার মধ্যে এক-তৃতীয়াংশ সাংবাদিক, এক-তৃতীয়াংশ চিকিৎসার সঙ্গে যুক্ত আর এক-তৃতীয়াংশ থাকবে, যারা এটি আয়োজন করেছে। তার সঙ্গে আরও ১০টি ছোট নৌযান থাকবে। ৪৪টি দেশ থেকে এই ফ্লোটিলাতে অংশ নিচ্ছেন।’
গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলার এই নৌবহর ইতোমধ্যে ইসরায়েল ঘোষিত তথাকথিত ‘বিপৎসীমায়’ প্রবেশ করেছে বলে নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট করে জানান, শহিদুল আলম। পরিবেশকর্মী গ্রেটা থুনবার্গ এই নৌবহরের নেতৃত্ব দিচ্ছেন।
বাংলাদেশের খ্যাতিমান এ আলোচ্যচিত্রী ২০১৮ সালে টাইম ম্যাগাজিনের পারসন অব দ্য ইয়ার নির্বাচিত হন। পাশাপাশি প্রথম এশীয় হিসেবে ওয়ার্ল্ড প্রেস ফটো জুরির চেয়ারম্যান হন শহিদুল আলম।
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের খসড়া ভোটকেন্দ্রের ওপর আসা দাবি-আপত্তি আগামী ১২ অক্টোবরের মধ্যে নিষ্পত্তি করবে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এরপর পর্যালোচনা শেষে চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করা হবে ২০ অক্টোবর।
ইসি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, গত ১০ সেপ্টেম্বর ভোটকেন্দ্রের খসড়া তালিকা প্রকাশ করা হয়েছিল। এরপর সে তালিকার ওপর আপত্তি জানানোর শেষ সময় দেওয়া হয়েছিল ২৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। বর্তমানে সেগুলো নিষ্পত্তির কাজ করছেন মাঠ কর্মকর্তারা।
ইসি সচিব আখতার আহমেদ জানিয়েছেন, খসড়া তালিকা অনুযায়ী সম্ভাব্য ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা ৪২ হাজার ৬১৮টি। বর্তমানে ভোটার সংখ্যা ১২ কোটি ৬১ লাখ ৬১ হাজার ২০১ জন ধরে গড়ে প্রতি তিন হাজার ভোটারের জন্য একটি কেন্দ্র রাখা হয়েছে। এ হিসেবে ৪২ হাজার ৬১৮টি কেন্দ্র নির্ধারণ করা হয়েছে।
এছাড়া, পুরুষদের জন্য প্রতি ৬০০ জনের জন্য একটি কক্ষ ধরে ১ লাখ ১৪ হাজার ৯৩৯টি ভোটকক্ষ, আর নারীদের জন্য প্রতি ৫০০ জনের জন্য একটি কক্ষ ধরে ১ লাখ ২৯ হাজার ১০৭টি কক্ষের সংখ্যা নির্ধারণ করা হয়েছে। মোট ভোটকক্ষ দাঁড়াচ্ছে ২ লাখ ৪৪ হাজার ৪৬টি। তবে এই সংখ্যা কিছুটা এদিক-সেদিক হতে পারে।
আগামী ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণের লক্ষ্যে ডিসেম্বরের প্রথমার্ধে তফসিল দিতে চায় ইসি। এজন্য সকল কার্যক্রম এগিয়ে নিচ্ছে সংস্থাটি।
বাংলাদেশের সাবেক অধিনায়ক তামিম ইকবাল আসন্ন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) পরিচালনা পর্ষদের নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন না। গতকাল বুধবার তিনি নিজের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নেন। শুধু তামিম নন, সরকারি হস্তক্ষেপের অভিযোগে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছেন আরও বেশ কয়েকজন হেভিওয়েট প্রার্থী। মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের পর সাংবাদিকদের তামিম বলেছেন, বাংলাদেশ ক্রিকেটের ফিক্সিং বন্ধ করার আগে নির্বাচনের ফিক্সিং বন্ধ করেন।
বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক তামিম মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমিসহ প্রায় ১৪ থেকে ১৫ জন মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছি। প্রত্যাহারের কারণটা খুবই স্পষ্ট। আমার কাছে মনে হয় না বিস্তারিতভাবে আপনাদের কিছু বলার দরকার আছে। নির্বাচন কোন দিকে যাচ্ছে, এই জিনিসটা এখন পরিষ্কার। যখন যেমন মনে হচ্ছে, যখন যা মনে হচ্ছে, তখন তা করা হচ্ছে। এটা আসলেই নির্বাচন নয়, ক্রিকেটের সঙ্গে এই জিনিসটা কোনো দিক থেকেই মানায় না।’
তামিমের ভাষায়, ‘যারা নাম প্রত্যাহার করেছেন, তারা সবাই হেভিওয়েট, তাদের ভোটব্যাংকও শক্তিশালী। এটা একটা প্রতিবাদ। দিন শেষে এই নোংরামির অংশ হয়ে আমরা থাকতে পারব না। বাংলাদেশ ক্রিকেট এটা ডিজার্ভ করে না। যারা এভাবে নির্বাচন করতে চান, তারা করতে পারেন। তবে আজ ক্রিকেট শতভাগ হেরে গেছে। এটা নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই। আপনারা বড় গলায় বলেন বাংলাদেশে ফিক্সিং বন্ধ করা লাগবে, আগে নির্বাচনের ফিক্সিং বন্ধ করার চিন্তা করেন। পরে ক্রিকেটের ফিক্সিং বন্ধ করার চিন্তা করেন। এই নির্বাচন বাংলাদেশ ক্রিকেটের জন্য একটা কালো দাগ হয়ে থাকল।’
তামিমের মতোই নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন এক্সিউম ক্রিকেটার্স থেকে পরিচালক পদে প্রার্থিতার মনোনয়ন প্রত্যাহার করা ইসরাফিল খসরু। নির্বাচনে সরকারের একটি গোষ্ঠীর হস্তক্ষেপের অভিযোগ তুলে তিনি বলেন, ‘সরকারের একটি গোষ্ঠী এখানে নগ্নভাবে হস্তক্ষেপ করছে। আপাতত এটুকুই বলতে পারি। আমাদের পুরো বক্তব্য শিগগিরই সংবাদ সম্মেলন করে জানানো হবে।’
মনোনয়ন প্রত্যাহারের বিষয়ে ইসরাফিল খসরু বলছেন, ‘এখানে নির্বাচনের কোনো পরিবেশ দেখছি না। খুবই দুঃখজনক ব্যাপার যে, বিসিবির নির্বাচনে এই পরিবেশ তৈরি করা হয়েছে। পুরো প্রক্রিয়াটাই ছিল অস্বচ্ছ।’
তিনি আরও বলেন, ‘জেলা-বিভাগের কাউন্সিলরদের ফোন করে প্রভাব বিস্তার করা হয়েছে। এ রকম উদাহরণ আমরা বিভিন্নভাবে পেয়েছি। আবার ১৫টি ক্লাব নিয়ে স্বেচ্ছাচারিতা দেখছি। নতুন বাংলাদেশে আমরা এ রকম নির্বাচন দেখতে পারি না। নির্বাচন ম্যানুফেকচার করা হচ্ছে, এমনটা হতে পারে না। তাই নৈতিক জায়গা থেকে আমরা এই অবস্থান নিয়েছি।’
সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেছেন ইন্দিরা রোড ক্লাবের হয়ে পরিচালক পদে নির্বাচন করতে চাওয়া রফিকুল ইসলাম। তিনি গতকাল বুধবার মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছেন। তার কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল, সরকারের সঙ্গে সমঝোতা শেষ পর্যন্ত কেন টিকেনি? রফিকুল বলেছেন, ‘আমরা একটা প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক নির্বাচন চেয়েছিলাম। ২০০৫ সালে আমরা প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক নির্বাচন দেখেছিলাম। আমরা তেমন একটা নির্বাচন চেয়েছিলাম। সমঝোতার কথাটা হাওয়ায় উড়ে বেরিয়েছে, কোনো সঠিক তথ্য ছিল না।’
শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত বিসিবি নির্বাচন থেকে ১১ জন মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছেন। ক্যাটাগরি-১ থেকে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছেন মির হেলাল, ক্যাটাগরি-৩ থেকে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন সিরাজ উদ্দিন আলমগীর।
ক্যাটাগরি-২ থেকে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছেন তামিম ইকবাল, সাইদ ইবরাহিম (বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন আহমেদের ছেলে), ইসরাফিল খসরু (বিএনপি নেতা আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরীর ছেলে), রফিকুল ইসলাম বাবু, বোরহানুল পাপ্পু, মাসুদুজ্জামান, আসিফ রব্বানি, মির্জা ইয়াসির আব্বাস (বিএনপি নেতা মির্জা আব্বাসের ছেলে) ও সাব্বির আহমেদ রুবেল।
চূড়ান্ত প্রার্থীর তালিকা গতকাল বুধবার দুপুর ২টায় ঘোষণা করার কথা নির্বাচন কমিশনের।
বিসিবি নির্বাচনে যাচাই-বাছাই ও শুনানি শেষে চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকায় নাম ছিল ৫০ জনের। গতকাল বুধবার মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছেন ১৬ জন। অর্থাৎ ৬ অক্টোবরের নির্বাচনে ২৫টি পরিচালক পদের জন্য ৩টি ক্যাটাগরিতে নির্বাচনে অংশ নেবেন ৩৩ প্রার্থী।
মনোনয়ন প্রত্যাহার করা প্রার্থীরা ‘ব্যক্তিগত কারণে’ নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন বলে জানিয়েছেন রিটার্নিং কর্মকর্তা ড. শেখ জোবায়েদ হোসেন। মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার শেষে বিসিবি কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি বলেন, ‘তিনটি ক্যাটাগরিতে মোট ১৬টি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের জন্য আবেদন জমা পড়েছে। সেই মোতাবেক আমরা প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত করেছি।’
ইতোমধ্যে জেলা-বিভাগের ক্যাটাগরিতে ১০ পরিচালকের ৬ জনই অবশ্য বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়ে গেছেন। খুলনা বিভাগ থেকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আগেই পরিচালক নির্বাচিত হয়েছেন জাতীয় দলের সাবেক ক্রিকেটার ও সাবেক নির্বাচক আবদুর রাজ্জাক এবং জুলফিকার আলী খান। বরিশাল থেকে শাখাওয়াত হোসেন এবং সিলেটের রাহাত সামসও বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আগেই নির্বাচিত হয়েছেন।
গতকাল বুধবার চট্টগ্রাম ও রাজশাহী থেকে একটি করে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার হয়েছে। এতে করে চট্টগ্রাম বিভাগ থেকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিসিবির পরিচালক নির্বাচিত হয়েছেন সংগীতশিল্পী আসিফ আকবর ও আহসান ইকবাল চৌধুরী।
রাঙামাটির লংগদুতে বাড়ি ফেরার পথে কাপ্তাই হ্রদে আকস্মিক ঝড়ে নৌকা ডুবিতে এক নারী ও দুই শিশুর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। বুধবার দিনব্যাপী অভিযানে ডুবে যাওয়া এক শিশু ও এক নারীর মরদেহ উদ্ধার করেছে স্থানীয় সেনাবাহিনী ও ফায়ার সার্ভিসের ডুবুড়ি দল। গত মঙ্গলবার রাতে আকস্মিক ঝড়ো বাতাসের মুখে পড়ে লংগদু উপজেলার গুলশাখালী থেকে মাইনীমুখে ফেরার নৌকা। ফলে নৌকায় থাকা স্থানীয় বাসিন্দা আছর উদ্দিন ও আরজ আলীর পরিবার এ দুর্ঘটনার শিকার হয়।
মৃত ব্যক্তিরা হলেন আছর উদ্দিনের স্ত্রী শিরিনা বেগম (৪০) ও আরজ আলীর শিশু সন্তান রানা (৭)। পরে দিনব্যাপী অভিযান চালিয়ে শিশু মাসুম (৫) কে উদ্ধার করে সেনাবাহিনী ও ফায়ার সার্ভিসের দল।
জানা যায়, কাপ্তাই হ্রদে হঠাৎ ঝড় শুরু হলে নৌকায় থাকা ৫ জনের মধ্যে দুই শিশুসহ তিনজন নিখোঁজ হয়। বাকি দুজন আছর উদ্দিন ও সালমা সাঁতরে তীরে উঠতে সক্ষম হন। ঘটনার পরপরই স্থানীয়রা এক শিশুর মৃতদেহ উদ্ধার করে। এরপর বুধবার সকালে নিখোঁজ নারী শিরিনা বেগমের মরদেহ উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল। পরবর্তীতে নিখোঁজ অপর শিশু মাসুমকে উদ্ধার করছেন ডুবুরি দলের সদস্যরা।
লংগদু ফায়ার সার্ভিসের (ভারপ্রাপ্ত) কর্মকর্তা হেলাল উদ্দিন চৌধুরী জানান, ‘স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান কামাল হোসেন কমল বিষয়টি আমাদের জানিয়েছেন। আমাদের ডুবরি দল রাঙামাটি থেকে এসে সকালে উদ্ধার কাজ শুরু করেছে। নিখোঁজ নারী ও শিশুর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।’
লংগদু উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জাহাঙ্গীর হোসাইন জানান, ‘গুলশাখালী এলাকায় নৌকা ডুবে দুই শিশুসহ তিন জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।’
এদিকে প্রায়ই একই সময়ে লংগদুর কাট্টলী বিল এলাকায় তিনটি মাছ ধরার নৌকা উল্টে দুর্ঘটনার শিকার ৬ জেলেকে জীবিত উদ্ধার করেছে ফায়ার সার্ভিস ও স্থানীয়রা।
দুর্গাপূজা শুধু একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠান নয়, এটি এখন বাঙালির প্রাণের উৎসব সমাজে সম্প্রীতি ও সৌহার্দ্যের এক উজ্জ্বল উদাহরণ। তাই এ উৎসব উদযাপনে রাষ্ট্র, প্রশাসন ও জনসাধারণ একযোগে কাজ করছে বলে মন্তব্য করেছেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম বীর প্রতীক।
তিনি বলেন, ধর্মমত নির্বিশেষে বহুকাল ধরে আমরা বাঙালিরা দুর্গোৎসব উদযাপন করে আসছি। সে হিসেবে সনাতনীদের জন্য এটি দুর্গাপূজা হলেও, সমাজের জন্য এটি এক আনন্দঘন দুর্গোৎসব। তাই এই উৎসবকে ঘিরে রাষ্ট্র, প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলাবাহিনী এবং স্থানীয় জনসাধারণ একসঙ্গে কাজ করছে, যেন নির্বিঘ্নে ও শান্তিপূর্ণভাবে উৎসবটি শেষ করা যায়। বুধবার দুপুর ২টায় আনোয়ারা উপজেলার সদর ইউনিয়নের জয়কালী বাজার কচিকাঁচা পূজামণ্ডপ এবং রামকৃষ্ণ-সারদা সেবাশ্রম পূজামণ্ডপ পরিদর্শনকালে তিনি এই মন্তব্য করেন।
ফারুক-ই-আজম বীর প্রতীক বলেন, ধর্মমত নির্বিশেষে বহুকাল ধরে আমরা বাঙালিরা দুর্গোৎসব উদযাপন করে আসছি। সে হিসেবে সনাতনীদের জন্য এটি দুর্গাপূজা হলেও সমাজের জন্য এটি দুর্গোৎসব। তাই এই দুর্গোৎসবকে সামনে রেখে রাষ্ট্র, প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলাবাহিনী এবং স্থানীয় সকল জনসাধারণ একাকার হয়ে আয়োজনের সাথে সম্পৃক্ত আছে যাতে নির্বিচ্ছন্নভাবে এই উৎসব সমাপ্ত হয়। বুধবার উপজেলার সদর ইউনিয়নের জয়কালী বাজার কচিকাঁচা পূজামণ্ডপ এবং রামকৃষ্ণ-সারদা সেবাশ্রম পূজামণ্ডপ পরিদর্শনকালে তিনি এসব কথা বলেন।
এ সময় ধর্ম মন্ত্রণালয়ের অধীন হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের ট্রাস্টি দীপক কুমার পালিত, চট্টগ্রামের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) পাঠান মো. সাইদুজ্জামান, চট্টগ্রাম জেলার পুলিশ সুপার মো.সাইফুল ইসলাম সানতু, বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শ্যামল পালিত, আনোয়ারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তাহমিনা আক্তার, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা উমা খান কাফি, আনোয়ারা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি সাগর মিত্র, সাধারণ সম্পাদক প্রদীপ ধর উপস্থিত ছিলেন।
রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার দেবগ্রাম ইউনিয়নের তেনাপঁচা ১নং আশ্রয়ণ প্রকল্পের ৭নম্বর শেড আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। গত মঙ্গলবার দিবাগত রাতে আগুন লাগলে মুহুর্তের মধ্যে সব পুড়ে যায়। এই শেডের ১০টি কক্ষে ১০টি পরিবার বসবাস করতো। তবে গত মঙ্গলবার রাতে সাতটি পরিবার ঘুমিয়ে ছিলেন। আগুনের তাপে তাদের ঘুম ভেঙে গেলেও ঘর থেকে কিছুই বের করতে পারেনি।
আগুনের খবর পেয়ে গোয়ালন্দ ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের কর্মীরা দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নেভায়। প্রাথমিকভাবে ধারণা বৈদ্যুতিক শটসার্কিট থেকে আগুন লাগতে পারে। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের দাবি, অন্তত ৩০ লক্ষাধিক টাকার ক্ষতি হয়েছে তাদের। এসব অসহায় দরিদ্র পরিবার খোলা আকাশের নিচে মানবেতর জীবন যাপন করছেন।
সরেজমিন দেখা যায়, তেনাপঁচা আশ্রয়ণ প্রকল্পের ৭নম্বর শেডের সম্পূর্ণ পুড়ে ভস্মীভূত হয়েছে। ঘরের সকল জিনিসপত্র ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। অনেকে ঘরে থাকা পোড়া জিনিসপত্র নেড়ে চেড়ে দেখছেন। কেউ পোড়া জিনিসপত্র সরানোর চেষ্টা করছেন। কেউ নিজের শেষ সম্বল হারিয়ে আহাজারি করছেন। আবার পরিবারের ছোট্ট শিশু শিক্ষার্থী স্তুপ থেকে তার পোড়া বই খুঁজে বের করছেন।
আরেক বাসিন্দা সাহেদা খাতুন আহাজারি করা অবস্থায় বলেন, তার ৯মাস বয়সী একমাত্র সন্তান স্বাধীনকে ফেলে স্বামী ফারুক শেখ ফেলে যান। ছেলেকে বিদেশে পাঠাবেন বলে অনেক কষ্টে রাস্তায়, মানুষের বাড়ি কাজ করে দুই লাখ টাকার বেশি জমিয়েছিলেন।
এদিকে খবর পেয়ে বুধবার দুপুরে কেন্দ্রীয় কৃষক দলের সহসভাপতি ও রাজবাড়ী জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট আসলাম মিয়া ক্ষতিগ্রস্ত প্রত্যেক পরিবারের মাঝে ১ বস্তা করে চাউল, শুকনো খাবার, কাপড় ও আর্থিক সহযোগিতা প্রদান করেন।
গোয়ালন্দ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাহিদুর রহমান বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের মাঝে শুকনা খাবার দেওয়া হয়েছে। এছাড়া ত্রাণ সহায়তার জন্য তালিকা প্রস্তুত করে জেলা প্রশাসকের কাছে পাঠানো হয়েছে।
বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আবদুল মোতালেব সাজ্জাদ মাহমুদ আজ বুধবার টাঙ্গাইল ও গাজীপুর জেলার দুটি গুরুত্বপূর্ণ পূজা মণ্ডপ পরিদর্শন করেছেন। সফরকালে তিনি পূজা মণ্ডপগুলোর নিরাপত্তা প্রস্তুতিতে গভীর সন্তোষ প্রকাশ করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পেশাদারিত্বের প্রশংসা করেন। তিনি উল্লেখ করেন, পূজা উপলক্ষে গড়ে ওঠা সমন্বিত নিরাপত্তা ধারা আসন্ন জাতীয় নির্বাচনের জন্য ইতিবাচক বার্তা বা গ্রিন সিগন্যাল। দুর্গোৎসবে জনগণের ঐক্য ও বাহিনীর সতর্ক ভূমিকার কারণেই সব ধরনের গুজব ও ষড়যন্ত্র নস্যাৎ হয়েছে।
মন্তব্য