“হাঁস ছিল, সজারু, (ব্যাকরণ মানি না),
হয়ে গেলে ‘হাঁসজারু’ কেমনে তা জানি না।”
ছোটবেলায় ‘খিচুড়ি’ ছড়ার এ দুটি লাইন মুখে মুখে ছিল অনেকের। মজার এ ছড়াটির রচয়িতা ক্ষণজন্মা শিশুসাহিত্যিক ও ‘ননসেন্স ছড়া’র প্রবর্তক সুকুমার রায়।
১৮৮৭ সালের ৩০ অক্টোবর কলকাতার এক ব্রাহ্ম পরিবারে জন্ম সুকুমারের।
জনপ্রিয় শিশুসাহিত্যিক উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরীর ছেলে সুকুমার। এ ছড়াকারের ছেলে বিখ্যাত চলচ্চিত্র নির্মাতা সত্যজিৎ রায়।
কলকাতার প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে ১৯০৬ সালে রসায়ন ও পদার্থবিদ্যায় বিএসসি করেন সুকুমার রায়। ১৯১১ সালে উচ্চতর শিক্ষার জন্য ইংল্যান্ডে চলে যান। সেখানে আলোকচিত্র ও মুদ্রণ প্রযুক্তির ওপর পড়াশোনা করেন।
১৯১৩ সালে সুকুমার কলকাতায় ফিরে আসেন। সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে তিনি ভারতের অগ্রগামী আলোকচিত্রী ও লিথোগ্রাফ শিল্পী হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন।
সুকুমার ইংল্যান্ডে পড়াকালীন তার বাবা উপেন্দ্রকিশোর কলকাতায় উন্নত-মানের রঙিন হাফটোন ব্লক তৈরি ও মুদ্রণক্ষম একটি ছাপাখানা স্থাপন করেছিলেন। সে সময়ে উপেন্দ্র ছোটদের জন্য ‘সন্দেশ’ নামে একটি মাসিক পত্রিকা প্রকাশ শুরু করেন।
সুকুমারের ইংল্যান্ড থেকে ফেরার অল্প কিছু দিনের মধ্যেই তার বাবার মৃত্যু হয়। এরপর ‘সন্দেশ’ পত্রিকার সম্পাদনার দায়িত্ব কাঁধে তুলে নেন সুকুমার। শুরু হয় বাংলা শিশুসাহিত্যের এক নতুন অধ্যায়।
‘সন্দেশ’-এর সম্পাদক থাকাকালীন তার লেখা ছড়া, গল্প ও প্রবন্ধ আজও বাংলা শিশুসাহিত্যে মাইলফলক হয়ে আছে।
সুকুমার রায়ের লেখা কবিতার বই ‘আবোল তাবোল’, গল্প ‘হ-য-ব-র-ল’, গল্প সংকলন ‘পাগলা দাশু’, এবং নাটক ‘চলচ্চিত্তচঞ্চরী’ বাংলায় সর্বযুগের সেরা ‘ননসেন্স’ ধরনের ব্যঙ্গাত্মক শিশুসাহিত্য হিসেবে বিবেচিত হয়।
১৯২৩ সালের ১০ সেপ্টেম্বর কালাজ্বরে (লেইশ্মানিয়াসিস) আক্রান্ত হয়ে মাত্র ৩৬ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেন ক্ষণজন্মা এই শিশুসাহিত্যিক।
মৃত্যুর এত বছর পরও সুকুমার রায় বাংলা সাহিত্যের জনপ্রিয় শিশুসাহিত্যিকদের একজন।
ঝালকাঠিতে গ্রাহকদের চাহিদা বিবেচনায় এনে ব্রান্ডশপ লোটো ও লি কুপার প্রতিষ্ঠানটি তাদের ১৩২তম ফ্লাগশিপ আউটলেট উদ্বোধন করেছে।
এক্সপ্রেস লেদার প্রোডাক্ট লিঃ এর ডেপুটি ম্যানেজিং ডাইরেক্টর কাজী জাভেদ ইসলাম সহ কোম্পানির অন্যান্য কর্মকর্তাবৃন্দ ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গদের সাথে নিয়ে ফিতা কেটে আউটলেটটি উদ্বোধন করেন ঝালকাঠির পুলিশ সুপার উজ্জ্বল কুমার রায়।
পৌর শহরের সাধনার মোড়ে মঙ্গলবার ২৬ আগষ্ট সকাল ১০টায় লোটো ও লি কুপারের ফ্ল্যাগশিপ আউটলেটদ্বয়ের শুভ উদ্বোধন আনুষ্ঠানে ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ, বিভিন্ন পর্যায়ের গ্রাহক ও গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
ঝালকাঠিতে কোম্পানীর এ যাত্রার প্রথম দিনে স্থানীয় ফ্যাশন সচেতন তরুণ তরুণীরা তাদের পছন্দের পন্য কালেকশন বেছে নিতে ভীর জমায়।
কোম্পানীর পক্ষ থেকে জানানো হয় প্রথম তিনদিনের প্রতিদিন প্রথম ৩০ জন পাবেন ৫০% ছাড়, ২য় ৩০ জন পাবেন ৪০% ছাড়, ৩য় ৩০ জন পাবেন ৩০% ছাড়, ৪র্থ ৩০ জন পাবেন ২০% ছাড় এবং তৎপরবর্তী সকল কাস্টমার পাবেন ১০% ছাড়। এই বিশেষ ছাড় ২৬শে আগষ্ট থেকে শুরু হয়ে ২৮ তারিখ পর্যন্ত চলমান থাকবে
রাজধানীর জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়া জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আহত হয়ে চিরতরে দুই চোখের দৃষ্টি হারিয়েছেন ১১ জন। আর ৪৯৩ জন চিরতরে হারিয়েছেন এক চোখের দৃষ্টি।
গতকাল সোমবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ দেওয়া জবানবন্দিতে দৃষ্টি হারানোদের চোখে পিলেট ও বুলেট বিদ্ধ রোগীদের রক্তস্নাত ভয়াবহতার সাক্ষ্য দিলেন হাসপাতালটির রেটিনা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক যাকিয়া সুলতানা।
বিচারপতি গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এ শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় সাক্ষী হয়ে জবানবন্দি দেন ওই চিকিৎসক।
সাক্ষীর জবানবন্দিতে তিনি বলেন, ২০২৪ সালের ১৭ জুলাই থেকে আমাদের হাসপাতালে রোগী আসা শুরু করে। প্রথম দিন পাঁচজন রোগী পেয়েছিলাম যারা মেটালিক পিলেট ও বুলেট বিদ্ধ ছিল। ১৮ জুলাই ছিল রক্তস্নাত একদিন। সেদিন আনুমানিক ১০০ রোগী ভর্তি হয়েছিল। এর বাইরে আরও শতাধিক রোগীকে ওইদিন চিকিৎসা দেয়া হয়। ওইদিন দুপুরে আমি ইমার্জেন্সির সামনে এসে এক ভয়াবহ চিত্র দেখি। ১৪ থেকে ২৫ বছর বয়সি শতাধিক রোগীর একটা বড় অংশের কেউ এক চোখ, কেউ তাদের রক্তে ভাসা দুচোখ ধরে ছিলেন। তাদের চেহারা রক্তস্নাত ছিল।
সাক্ষীর জবানবন্দিতে ড. জাকিয়া সুলতানা নিলা বলেন, ১৮ জুলাই ১০ টি ওটি টেবিলে রাত ৯টা পর্যন্ত অপারেশন চলে। ১৯ জুলাই একই রকম চিত্র দেখতে পাই। অধিকাংশই মেটালিক পিলেট ও কেউ-কেউ বুলেট দ্বারা আহত ছিলেন। আহতের ধরনে ছিল কারো কর্নিয়া ছিদ্র, কারো চোখের সাদা অংশ ছিদ্র কিংবা কারো চোখ ফেটে যাওয়া অবস্থায় ছিলো।
২০২৪ সালের ৪, ৫,৬ আগস্ট অনেক বেশি রোগী রিসিভ করেন জানিয়ে এই চিকিৎসক তার জবানবন্দিতে বলেন, আমাদের হাসপাতালে আসা রোগীদের মধ্যে এক চোখে চিরতরে দৃষ্টি হারিয়েছেন এমন রোগীর সংখ্যা ৪৯৩ জন। দুই চোখে চিরতরে দৃষ্টি হারিয়েছেন এমন রোগীর সংখ্যা ১১ জন। দুই চোখে গুরুতর দৃষ্টি স্বল্পতায় ভুগছেন এমন রোগীর সংখ্যা ২৮ জন। আর এক চোখে গুরুতর দৃষ্টি স্বল্পতায় ভুগছেন এমন রোগীর সংখ্যা ৪৭ জন।
অধিকাংশ রোগী নিজেদের নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে ওই সময় নিজের ডাক নাম ব্যাবহার করেছেন জানিয়ে এই চিকিৎসা বলেন, রোগীরা তাদের ভুল মোবাইল নম্বর ও আইডি কার্ড নাম্বার দিতো নিরাপত্তার কথা ভেবে বা কৌশল অবলম্বন করতে।
গতকাল ট্র্যাইব্যুনালে প্রসিকিউটসন পক্ষে শুনানি করেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম ও গাজী এস এইচ তামিম। একসময় অপর প্রসিকিউটররা উপস্থিত ছিলেন। এদিকে এই মামলায় পলাতক শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে জেরায় ছিলেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমির হোসেন। এদিকে এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন আজ সাক্ষ্য গ্রহণের সময় কাঠগড়ায় হাজির ছিলেন। তার পক্ষে ছিলেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলায় শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১। গতকাল পর্যন্ত এই মামলায় ১৯ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ ও জেরা শেষ হয়েছে।
এই মামলাটি ছাড়াও শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা রয়েছে। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে গুম-খুনের ঘটনায় তাকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হয়েছে রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায়।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, এর দলীয় ক্যাডার ও সরকারের অনুগত প্রশাসনসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে একের পর এক অভিযোগ জমা পড়ে। দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে এসব অপরাধের বিচার কাজ চলছে।
জীবনরক্ষাকারী ওষুধের দাম এখন থেকে সরকার নির্ধারণ করবে। হাইকোর্ট ১৯৯৪ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি জারি করা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের একটি সার্কুলারকে অবৈধ ঘোষণা করে ১৯৯৩ সালের সরকারি গেজেট পুনর্বহাল করেছে, যেখানে ৭৩৯টি ওষুধের দাম নির্ধারণ করে সরকার তা প্রকাশ করেছিল। আদালত নির্দেশ দিয়েছেন, এসব ওষুধের দাম সরকারকেই নির্ধারণ করতে হবে এবং তা গেজেট আকারে প্রকাশ করতে হবে।
গতকাল সোমবার বিচারপতি মো. রেজাউল হাসান ও বিচারপতি বিশ্বজিৎ দেবনাথের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশ (এইচআরপিবি) দায়ের করা রিটের শুনানি শেষে এ রায় ঘোষণা করেন।
জানা গেছে, ১৯৮২ সালের ওষুধ নিয়ন্ত্রণ অধ্যাদেশের ১১ ধারা অনুযায়ী ওষুধের দাম নির্ধারণের ক্ষমতা সরকারের হাতে ন্যস্ত ছিল। সে ধারার ভিত্তিতে ১৯৯৩ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ৭৩৯টি জীবনরক্ষাকারী ওষুধের দাম নির্ধারণ করে গেজেট প্রকাশ করে। কিন্তু পরের বছর ১৯৯৪ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় একটি সার্কুলার জারি করে। সেখানে বলা হয়, মাত্র ১১৭টি ওষুধের দাম সরকার নির্ধারণ করবে, আর বাকি ওষুধগুলোর দাম নির্ধারণের ক্ষমতা দেওয়া হবে উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের হাতে। এর ফলে সাধারণ মানুষের জন্য জরুরি ওষুধ অনেক ক্ষেত্রে অস্বাভাবিক দামে বিক্রি হতে শুরু হয়।
এরই পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৮ সালে জনস্বার্থে রিট দায়ের করে সার্কুলারটি চ্যালেঞ্জ করে এইচআরপিবি। এর আগে প্রাথমিক শুনানিতে বিচারপতি সৈয়দ মো. দস্তগীর হোসেন ও বিচারপতি মো. ইকবাল কবিরের বেঞ্চ ৩১ জুলাই ২০১৮ তারিখে রুল জারি করে জানতে চান কেন সার্কুলারটিকে বেআইনি ঘোষণা করা হবে না।
সেই মামলাটি শুনানির জন্য বিচারপতি মো. রেজাউল হাসান এবং বিচারপতি বিশ্বজিৎ দেবনাথের আদালতে তারিখ নির্ধারণ হয় এবং দীর্ঘ শুনানি শেষে গতকাল সোমবার ওই সার্কুলারকে অবৈধ ঘোষণা করে রায় দেন ওই আদালত।
রিটের পক্ষে শুনানি করেন সিনিয়র অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ। তিনি আদালতে যুক্তি দেন, জীবনরক্ষাকারী ওষুধের দাম বৃদ্ধির বিষয়টি সরাসরি নাগরিকদের জীবনের অধিকার ও স্বাস্থ্যসুরক্ষার মৌলিক অধিকারের সঙ্গে সম্পর্কিত। সরকার এই নিয়ন্ত্রণ সীমিত করায় উৎপাদনকারীরা ইচ্ছামতো দাম নির্ধারণ করে সাধারণ মানুষকে বঞ্চিত করেছে। তিনি বলেন, ১৯৮২ সালের অধ্যাদেশে সরকারের হাতে এই ক্ষমতা দেওয়া হলেও ১৯৯৪ সালের সার্কুলার তা খর্ব করেছে, যা সাংবিধানিকভাবে গ্রহণযোগ্য নয়।
বিবাদী পক্ষ, অর্থাৎ ওষুধ মালিক সমিতির পক্ষে ছিলেন সিনিয়র অ্যাডভোকেট এস. কে. মোরশেদ। তারা যুক্তি দেন, এইচআরপিবি এ ধরনের রিট করার বৈধতা রাখে না। তবে বাদীপক্ষ থেকে জবাবে বলা হয়, পূর্বে জনস্বার্থে স্বাস্থ্য খাত সম্পর্কিত একাধিক রিট দায়ের করে রায় পাওয়া গেছে, তাই এই রিটও বৈধ। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সৈয়দ এজাজ করিব।
আদালত সংবিধানের ১১২ অনুচ্ছেদ উদ্ধৃত করে বলেন, জনগণের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় জীবনরক্ষাকারী ওষুধের দাম নির্ধারণের দায়িত্ব সরকারের ওপর বর্তায়। তাই সরকারের ক্ষমতা সীমিত করার ১৯৯৪ সালের সার্কুলারটি অবৈধ। আদালত নির্দেশ দেন— এখন থেকে জীবনরক্ষাকারী সব ওষুধের দাম সরকার নির্ধারণ করবে। দাম নির্ধারণের পর তা যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে গেজেট আকারে প্রকাশ করতে হবে। এমনকি স্বাস্থ্য সচিব, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, ওষুধ মালিক সমিতির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ সংশ্লিষ্টদের এ নির্দেশনা বাস্তবায়ন করতে হবে।
রিট পিটিশনার ছিলেন এইচআরপিবির পক্ষে অ্যাডভোকেট মো. ছারওয়ার আহাদ চৌধুরী। বাদী পক্ষে শুনানি করেন সিনিয়র অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ, তাকে সহায়তা করেন অ্যাডভোকেট সঞ্জয় মণ্ডল। বিবাদীরা ছিলেন স্বাস্থ্য সচিব, ডিজি হেলথ, ডিজি ড্রাগ, ওষুধ মালিক সমিতির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ মোট ছয়জন।
প্রসঙ্গত, এরই মধ্যে গত ১৭ আগস্ট অন্তর্বর্তী সরকার জীবনরক্ষাকারী ওষুধের নতুন তালিকা প্রণয়নের জন্য একটি টাস্কফোর্স গঠন করেছে। হাইকোর্ট তার রায়ে স্পষ্ট করে দিয়েছে, এই নতুন তালিকায় অন্তর্ভুক্ত সব ওষুধের দামও সরকারকেই নির্ধারণ করতে হবে।
জনপ্রিয় মডেল-অভিনেত্রী রুনা খান নানা ধরনের চরিত্রে অভিনয় করে দর্শকদের প্রশংসা কুড়িয়েছেন। বিশেষ করে ছোটপর্দার অভিনেত্রী হিসাবে বেশ পরিচিত তিনি। কিন্তু বড়পর্দাতেও অভিনয় করে নিজেকে আলাদা করে চিনিয়েছেন অভিনেত্রী। এর মধ্যে পাঁচটি সিনেমায় কাজ করেছেন তিনি। হালদা' সিনেমায় জাতীয় চলচ্চিত্র ও বাচসাস পুরস্কার অর্জন করেছেন রুনা খান।
সর্বশেষ যে ছবিতে কাজ করছেন, সেখানেই উঠে আসবে নায়িকাদের জীবনের আড়ালের কাহিনি। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে রুনা খান সিনেমার নানা প্রসঙ্গে নিয়ে কথা বলেছেন। মিডিয়াতে নারীকে উপস্থাপন ও দৃষ্টিভঙ্গি নিয়েও আলোচনা করেন অভিনেত্রী।
রুনা খান এবারই প্রথম ‘চলচ্চিত্র: দ্য সিনেমা’ নামক সিনেমায় কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় করতে যাচ্ছেন। এবার বড়পর্দায় তাকে দেখা যাবে নায়িকার ভূমিকায়। আলী জুলফিকার জাহেদীর পরিচালনায় নির্মাণ করা হচ্ছে এ সিনেমাটি। যেখানে নায়িকাদের জীবনের গল্প নিয়ে বিশেষ চরিত্রে অভিনয় করবেন রুনা খান।
অভিনেত্রী বলেন, আমরা যারা অভিনয়ের সঙ্গে যুক্ত, দর্শকরা শুধু আমাদের পর্দায় দেখেন। কিন্তু পর্দার বাইরেও আমাদের আলাদা জীবন আছে, আছে সুখ-দুঃখের গল্প। এ নিয়েই ‘চলচ্চিত্র: দ্য সিনেমা’ সিনেমার কাহিনি। তিনি বলেন, আমি চাই নারীকে শুধু মানুষ হিসেবেই দেখা হোক। নাটক, সিনেমা কিংবা সংবাদ— সব জায়গায় নারীকে এমনভাবে উপস্থাপন করুক, যেন তারা স্বাভাবিক অধিকার পায়।
রুনা খান বলেন, এক বিশেষ চরিত্র রয়েছে, যা তার মধ্যে পরিবর্তন এনে দিয়েছে। সেটি হলো— ‘নীলপদ্ম’ সিনেমার ‘নীলা’ চরিত্র। নীলা চরিত্রে অভিনয় করেছি। যে একজন যৌনকর্মী। এ চরিত্রটি করতে গিয়ে এ পেশার মানুষের জীবনের যে গভীর যন্ত্রণা, অপমান আর বাস্তবতা— তা খুব কাছ থেকে দেখেছি, অনুভব করেছি; আর এ অভিজ্ঞতাই আমাকে ভেতর থেকে বদলে দিয়েছে।
অভিনেত্রী বলেন, আমরা কি একটু বেশি মানবিক হতে পারি না? যৌনকর্মীদের প্রতিও যদি সহানুভূতি দেখানো যেত! আসলে এ চরিত্র আমাকে ভেতর থেকে বদলে দিয়েছে, মননশীল করেছে।
আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বলেছেন, সরকারের আইনগত সহায়তা কার্যক্রমকে সহজলভ্য করার মাধ্যমে প্রচুর সময় ও অর্থ সাশ্রয় করা সম্ভব। এই সেবা যারা পেয়েছেন তাদের ৯০ ভাগ মানুষ সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন। আদালতের তুলনায় ১০ ভাগের একভাগ কম সময়ে তারা এই সেবা পাচ্ছেন।
আজ সোমবার রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে ‘ন্যাশনাল কনফারেন্স অন এডিআর : রোল অব ডিস্ট্রিক্ট লিগ্যাল এইড কমিটিস ইন ইমপ্লিমেন্টিং নিউ লেজিসলেশন্স’ শীর্ষক এক সভায় তিনি এ কথা বলেন।
আইন উপদেষ্টা বলেন,বিচারপ্রত্যাশী মানুষের সময়, শ্রম এবং অর্থ বাঁচাতে সরকারের সর্বোচ্চ প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে লিগ্যাল এইডের কাজ চলমান থাকবে। তিনি বলেন, এক টাকা পরিমাণ অর্থ অনুদান না পেলেও আমরা বসে থাকব না, যতদিন মেয়াদ অবশিষ্ট আছে আমরা কাজ করে যাব এবং এমন ব্যবস্থা করে যাব, যেন আমরা চলে গেলেও মানুষ এর উপকার পান।
অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়া বিচারক ও আইনজীবীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘আমাদের এ কাজে অপার সম্ভাবনা রয়েছে। আমরা না থাকলেও আপনারা ভবিষ্যতে এ মহৎ কাজ চালিয়ে যাবেন।’
আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুলের সভাপতিত্বে এতে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান, অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান,আইন ও বিচার বিভাগ সচিব শেখ আবু তাহের, বাংলাদেশে নিযুক্ত ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) রাষ্ট্রদূত এইচ. ই. মাইকেল মিলার এবং ইউএনডিপির আবাসিক প্রতিনিধি স্টেফান লিলার।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন এবং মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন জাতীয় আইনগত সহায়তা প্রদান সংস্থার নির্বাহী পরিচালক সৈয়দ আজাদ সুবহানী।
এশিয়ার অন্যতম মৎস্য প্রজনন ক্ষেত্র চট্টগ্রামের হাটহাজারীর হালদা নদী থেকে একটি মৃত ডলফিন উদ্ধার করেছে নৌ পুলিশ।
সোমবার (২৫ অগাস্ট) দুপুরের দিকে দক্ষিন মাদার্শা ইউনিয়নস্থ হালদা নদীর শাখা খাল কাটাখালির মুখ থেকে মৃত ডলফিনটি উদ্ধার করা হয়।
জানা গেছে, হালদা নদীর উল্লেখিত স্থানে সোমবার দুপুরের দিকে একটি মৃত ডলফিন ভাসতে দেখে স্থানীয়রা। নৌ পুলিশকে খবর দিলে দায়িত্বরত নৌ পুলিশ ও সংশ্লিষ্টরা ঘটনাস্থলে গিয়ে মৃত ওই ডলফিনটি উদ্ধার করে।
উপজেলা সিনিয়র মৎস্য অফিসার শওকত আলি বলেন, হালদা নদী থেকে প্রায় ৫৯ ইঞ্চির একটা মৃত ডলফিন উদ্ধার করা হযেছে। যার ওজন ৩৭ কেজি। ডলফিনের দেহটি পচে যাওয়ায় দক্ষিণ মার্দাশা রাম দাস মুন্সির হাট এলাকায় সবার উপস্থিতিতে মাটিচাপা দেয়া হয়।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের হালদা রিভার রিসার্চ ল্যাবরেটরির সমন্বয়ক ড. মনজুরুল কিবরীয়া ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেন।
মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া উপজেলার গুয়াগাছিয়া ইউনিয়নের জামালপুর গ্রামে সদ্য চালু হওয়া পুলিশের অস্থায়ী ক্যাম্পে হামলা করে নৌ ডাকাত নয়ন-পিয়াস গ্রুপের সদস্যরা। এসময় উভয় পক্ষের মধ্যে তুমুল গোলাগুলি হয়। পরে পুলিশের প্রতিরোধের মুখে টিকতে না পেরে পালিয়ে যায় হামলাকারীরা।
সোমবার (২৫ আগস্ট) বিকাল পাঁচটার পর পর উপজেলার গুয়াগাছিয়া ইউনিয়নের জামালপুর গ্রামে পুলিশ ক্যাম্প সংলগ্ন মেঘনা নদীতে এই ঘটনা ঘটে। এ সময় পুলিশ এবং সন্ত্রাসীদের মধ্যে তুমুল গোলাগুলি হয়। উভয় পক্ষ থেকে প্রায় শতাধিক রাউন্ড গুলিবর্ষণ ও ৪/৫টি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটানো হয় বলে জানা যায়।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজনের সাথে কথা বলে জানা যায়, সোমবার বিকেল পাঁচটার পর পর ৫/৬টি ইঞ্জিন চালিত ট্রলার নিয়ে অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্প সংলগ্ন নদীতে মহড়া শুরু করে নৌ ডাকাত নয়ন-পিয়াস গ্রুপের সদস্যরা। ক্যাম্পের কাছাকাছি জায়গায় এসে প্রথমে ৪/৫টি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। পরবর্তীতে ট্রলার থেকে পুলিশ ক্যাম্প লক্ষ্য করে গুলি ছুড়তে থাকে ডাকাত দলের সদস্যরা। আত্মরক্ষার্তে পুলিশও পাল্টা গুলি চালায়। এসময় ডাকাতদের পক্ষ থেকে প্রায় ১০০ রাউন্ড এবং পুলিশের পক্ষ থেকে ২০ রাউন্ডের মতো গুলিবর্ষণ করা হয়। আধা ঘন্টার বেশি সময় ধরে উভয় পক্ষের মধ্যে গোলাগুলি চলে। পুলিশের প্রতিরোধের মুখে টিকতে না পেরে বিকাল পৌণে ছয়টার দিকে ট্রলার নিয়ে মতলবের দিকে চলে যায় হামলাকারীরা।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে গজারিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মো.আনোয়ার আলম আজাদ বলেন, ' পিয়াসের নেতৃত্বে ৫/৬টি ট্রলার নিয়ে অন্তত পক্ষে ৩০/৩৫জন নৌ ডাকাত পুলিশ ক্যাম্প লক্ষ্য করে গুলি ছুড়তে থাকে। এ সময় সন্ত্রাসীদের পক্ষ থেকে ৪/৫টি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। পরে পুলিশ ক্যাম্প লক্ষ্য করে গুলি ছুড়তে থাকে তারা। পরিস্থিতি আচ করতে পেরে আমরাও পজিশন ঠিক করে সন্ত্রাসীদের উদ্দেশ্য করে গুলি করতে থাকি। আমাদের দিক থেকে ১৯ রাউন্ডের মতো গুলিবর্ষণ করা হয়েছে। আমাদের কোনো পুলিশ সদস্য আহত হয়নি তবে কোন সন্ত্রাসী আহত হয়েছে কিনা তা আমি বলতে পারব না'।
বিষয়টি সম্পর্কে মুন্সীগঞ্জের পুলিশ সুপার মুহম্মদ শামসুল আলম সরকার বলেন, ' নৌ ডাকাতরা সম্ভবত চাঁদা তোলার উদ্দেশ্যে নদীতে নেমেছিল। পুলিশ থাকার কারণে তারা সুবিধা করতে পারেনি। উভয় পক্ষের মধ্যে গুলি বিনিময়ের ঘটনা ঘটেছে। আমাদের কোন পুলিশ সদস্য আহত হয়নি। নৌ ডাকাতের মধ্যে কেউ আহত হয়েছে কিনা আপনারা খবর নিয়ে দেখেন। সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে সামনে আরো কঠোর অবস্থানে থাকবে পুলিশ'।
প্রসঙ্গতঃ গজারিয়া উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চল গুয়াগাছিয়ায় সক্রিয় কয়েকটি নৌ ডাকাত দল। অবৈধ বালুমহাল পরিচালনা, নৌযানে চাঁদাবাজি, আধিপত্য বিস্তারসহ বিভিন্ন কারণে গত কয়েক মাসে নৌ ডাকাত নয়ন-পিয়াস ও লালু বাহিনীর হাতে খুন হয় ডাকাত সর্দার বাবলা,স্যুটার মান্নান ও হৃদয় বাঘ। ওই এলাকায় নৌ ডাকাতদের অপতৎপরতা কমাতে ২২ আগস্ট ইউনিয়নটির জামালপুর গ্রামে একটি অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্প চালু করা হয়। এদিকে প্রথম থেকে অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্প স্থাপনের বিরোধিতা করে আসছিল নৌ ডাকাত গ্রুপগুলো।
মন্তব্য