× হোম জাতীয় রাজধানী সারা দেশ অনুসন্ধান বিশেষ রাজনীতি আইন-অপরাধ ফলোআপ কৃষি বিজ্ঞান চাকরি-ক্যারিয়ার প্রযুক্তি উদ্যোগ আয়োজন ফোরাম অন্যান্য ঐতিহ্য বিনোদন সাহিত্য শিল্প ইভেন্ট উৎসব ধর্ম ট্রেন্ড রূপচর্চা টিপস ফুড অ্যান্ড ট্রাভেল সোশ্যাল মিডিয়া বিচিত্র সিটিজেন জার্নালিজম ব্যাংক পুঁজিবাজার বিমা বাজার অন্যান্য ট্রান্সজেন্ডার নারী পুরুষ নির্বাচন রেস অন্যান্য আফগানিস্তান ১৫ আগস্ট কী-কেন স্বপ্ন বাজেট আরব বিশ্ব পরিবেশ বিশ্লেষণ ইন্টারভিউ মুজিব শতবর্ষ ভিডিও যৌনতা-প্রজনন মানসিক স্বাস্থ্য অন্যান্য উদ্ভাবন প্রবাসী আফ্রিকা ক্রিকেট শারীরিক স্বাস্থ্য আমেরিকা দক্ষিণ এশিয়া সিনেমা নাটক মিউজিক শোবিজ অন্যান্য ক্যাম্পাস পরীক্ষা শিক্ষক গবেষণা অন্যান্য কোভিড ১৯ ইউরোপ ব্লকচেইন ভাষান্তর অন্যান্য ফুটবল অন্যান্য পডকাস্ট বাংলা কনভার্টার নামাজের সময়সূচি আমাদের সম্পর্কে যোগাযোগ প্রাইভেসি পলিসি

google_news print-icon

বাউল সম্রাট শাহ আব্দুল করিম: ভাটি বাংলার এক কীর্তিমান শিল্পী

বাউল-সম্রাট-শাহ-আব্দুল-করিম-ভাটি-বাংলার-এক-কীর্তিমান-শিল্পী

বাউল সম্রাট শাহ আবদুল করিম ২০০৯ সালের ১২ সেপ্টেম্বর মৃত্যুবরণ করেন। আজ ১২ সেপ্টেম্বর বাউল শাহ আব্দুল করিমের মৃত্যুবার্ষিকী। সাধারণত উল্লেখযোগ্য কোনো গায়ক-কবি-সাহিত্যিকের মৃত্যুবার্ষিকী কিংবা জন্মবার্ষিকীতে আমরা তার কবিতা পাঠ করি, গল্প পড়ি কিংবা গান শুনে তার সৃষ্টির তাৎপর্য বুঝতে চেষ্টা করি, তাকে স্মরণ করি ও তাকে অনুভব করার মাধ্যমে দিনাতিপাত করি। তাছাড়া সারা বছরই হয়তো তার কবিতা আবৃত্তি বা গান শোনা হয়ে উঠে না, যদিও ব্যক্তিবিশেষে এর ব্যতিক্রম ঘটতে পারে। তবে আমার ধারণা, বাংলাদেশে শাহ আব্দুল করিমের ক্ষেত্রে এই চর্চার ব্যত্যয় ঘটে যায়। তার কারণ আমি নিশ্চিত করে বলে দিতে পারি যে প্রতিটি মুহূর্তে বাংলাদেশের কোথাও না কোথাও শাহ আব্দুল করিমের গান বাজতে শোনা যায় কিংবা হয়তো মনের অজান্তেই কেউ গেয়ে ওঠে। এত অল্প সময়ে এতটা জনপ্রিয় হয়ে ওঠা শিল্পী সারা বিশ্বে হয়তো খুব কমই আছেন বলে আমার বিশ্বাস। উপরন্তু, শাহ আব্দুল করিমের গান গেয়ে অনেকেই বিখ্যাত হয়ে গেছেন এরকম নজির আছে। আমি দেখেছি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীরা যেকোনো একটি বাদ্যযন্ত্র বাজানো শিখতে গিয়ে যে পরিমাণ পরিশ্রম ও মেধা খরচ করেন এতে মাঝে মাঝে অবাক লাগে যে পড়লেখা না জানা, গানের ব্যাকরণ পড়তে না পারা এমন অনেকেই খুব সহজেই বিভিন্ন বাদ্যযন্ত্র অনায়াসে বাজাতে পারছেন। আমি নিজেও ছাত্রজীবন থেকেই দেশীয় বাদ্যযন্ত্রগুলো শেখার জন্য উৎসাহী ছিলাম, সময়ের অভাবেই হোক কিংবা যথেষ্ট চেষ্টার অভাবেই হোক সামান্য টুংটাং ছাড়া কিছুই শিখতে পারিনি, গান রচনা করা তো দূরের ব্যাপার।

প্রাথমিক ধারণা থেকে কোনো চিন্তা না করেই বলে দেয়া যায় যে শাহ আব্দুল করিমের রচিত গানগুলো গণমানুষের গান। এছাড়াও, এই ভূখণ্ডে অধ্যাত্মচেতনা, দেহতত্ত্ব, নিগূঢ়তত্ত্ব, দেশপ্রেম, প্রকৃতিপ্রেম, মানবপ্রেম ইত্যাদি বিষয়নির্ভর গান সমাদৃত হয়েছে কালে কালে। বাউল সম্রাট শাহ আব্দুল করিম এই সকল বিষয়েই গান রচনা করেছেন আঞ্চলিক ভাষায়। পাশাপাশি একজন কীর্তিমান চিত্রশিল্পী যেভাবে চিত্রকর্মের মাধ্যমে বিষয়বস্তু ফুটিয়ে তোলেন তেমনি তার গানের মাধ্যমে তিনি তুলে ধরেছেন হাওর অঞ্চলের মানুষের জীবন চক্র, ভাটি বাংলার গ্রামীণ সংস্কৃতি ও শ্বাশ্বত বাংলার মানুষের যাপিত জীবনের চিত্র। আবহমান কাল থেকে ঘটে যাওয়া ঘটনা ও চিরায়ত বাংলার ঐতিহ্য, জীবন-দর্শন ইত্যাদি বিষয় নিয়ে তিনি ভেবেছেন, গানের কথার মাধ্যমে ফুটিয়ে তুলেছেন সাবলীলভাবে। তার যে কয়েকটি গানে ভাটি বাংলার সাধারণ মানুষের জীবন ধারা ও হাওরের মানুষের জীবনের চিত্র উঠে এসেছে তার কিছু দিক নিয়ে আলোচনা করা হলো এখানে।



বাউল শাহ আব্দুল করিমের হাওর পাড়ের মানুষের দৈনন্দিন জীবনযাপন সম্পর্কে যে কয়টি গান আছে তার মধ্যে প্রথমেই সর্বাধিক জনপ্রিয় একটি গানের কথা উঠে আসে, আর সেটি হল ‘আগে কী সুন্দর দিন কাটাইতাম’। এই গানে ফুটে উঠেছে হাওর অঞ্চলের মানুষের বর্ষাকালের চিত্র। হাওরে পানি যখন চারিদিকে থৈ থৈ করে, পানিবন্দী কৃষকের কৃষিকাজ বন্ধ থাকে, তখন বিনোদন হিসেবে বর্ষাকালে গ্রামের পাড়ায় পাড়ায় যাত্রা, পালাগান, কীর্তন, গাজির গান, ঘাটু গান ইত্যাদি লেগেই থাকে। কোনো না কোনো উপলক্ষ্য পেলেই খাওয়াদাওয়া, আনন্দ করা ইত্যাদি নিমিষেই শুরু হয়ে যায়। এর মধ্যে তখনকার দিনে নৌকাবাইচ হত খুব ঘটা করে যা আব্দুল করিম তার জীবদ্দশায়ই এই চর্চার অবশিষ্ট নেই বলে উল্লেখ করে গেছেন।

বর্ষাকালে ধুমধাম আনন্দের একটা কারণ হলো পানিবন্দী জীবনে বিনোদন নিয়ে আসা আবার অর্থনৈতিক একটা দিক আছে আর সেটা হলো, চৈত্র-বৈশাখ মাসে কৃষকের ঘরে ধান ওঠে, তারপর অবস্থা অনুযায়ী কয়েক মাস সাধারণ মানুষ আর্থিকভাবে সচ্ছল থাকে। এর কয়েক মাস পরেই শুরু হয় টানাপোড়েন, ধার-কর্জ-ঋণ নেয়া। সুদে ধার-কর্জ নিয়ে একটা দুষ্টুচক্রে পড়ে যায় কৃষক যা ভয়ংকর হয়ে দাঁড়ায় এক সময়। যারা দিনমজুরে যেতে পারেন তাদের আয় কিছুটা হলেও অন্যদিকে যারা লোক-লজ্জার ভয়ে দিনমজুরি করতে পারেন না না তাদের কষ্ট হয় সব থেকে বেশি। এই বিষয়টিও শাহ আব্দুল করিম তার গানে উল্লেখ করেছেন বিনীতভাবে। যেমন- ‘আল্লায় যেন কর্জের লাগি কেউর বাড়িত নেয় না, মজুরি করিয়া খাইমু ভাত যদি খাইতে পাই না।’ সাথে এটাও বলেছেন, গোঁড়াকাল থেকেই হাওরের কৃষকের এই ধার-কর্জ করার প্রক্রিয়া বিদ্যমান কিন্তু পূর্বে ধার-কর্জ হত বিনা সুদে, অন্তত মানবিকতার একটা সুতা ছিল তখন কিন্তু এখন ধার-কর্জ নিতে হয় চড়া সুদে বলে গানে উল্লেখ আছে, এমনকি আপন চাচাত ভাইয়েরাও চশমখোর হয়ে পড়ে। অবশ্য, সকল সমাজেই চাচাত ভাইদের চশমখোর হওয়ার গল্প আছে যা বাংলা সাহিত্যের বিভিন্ন রচনায় উল্লেখ আছে। যেমন- মহাভারতে কৌরবরা যারা পাণ্ডবদের নিঃশেষ করে দিতে চেয়েছিল এবং যার প্রকৃত কারণে পরবর্তীতে কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধ সংগঠিত হয়। আবার গৌতম বুদ্ধের চাচাত ভাইয়ের সম্পর্কেও চশমখোর হওয়ার গল্প প্রচলিত আছে। তেমনি, বাউল সম্রাট শাহ আব্দুল করিমের গানেও এই যুগে ‘সাক্ষাত চাচাত ঘরের ভাই চশম-ভরম করে না’ বলে উল্লেখ আছে যা এই ভূখণ্ডের মানুষের চিরায়ত স্বভাব হিসেবে বিভিন্ন রচনায় উল্লেখ আছে।

শাহ আব্দুল করিমের আরেকটি গানে উল্লেখ আছে সংসার বড় হওয়ার দরুণ জমিজামা বিক্রি করে খাওয়া-পড়া চালানোর মতো অর্থও নেই। এমন অবস্থা হাওর অঞ্চলের বেশির ভাগ কৃষকের হয়ে থাকে।

একজন শাহ আব্দুল করিমকে পাঠ করার মাধ্যমে সমাজকে পাঠ করা সম্ভব, যেহেতু তিনি তার গানের মাধ্যমে গ্রামীণ চাল-চলনের সমগ্র চিত্র উপস্থাপন করে গেছেন। শাহ আব্দুল করিমের ‘কষ্ট করে আছি এখন বাইচ্চা’ গানের কয়েক কলি পরে উল্লেখ আছে ‘সংসার বড় হইল, খোরাকির টান পড়ে গেল, জমিজামা যাহা ছিল, সব ফালাইছি বেইচ্চা’– এই অবস্থা শুধু যে বাউল শাহ আব্দুল করিমের বাউল হয়ে ওঠার জন্যই হয়েছে তা নয়, এই অঞ্চলের মানুষের সন্তান জন্মদান ও লালন-পালনের ক্ষেত্রে সংসার বড় হওয়ার পর কী অবস্থা দাঁড়ায় তার চিত্র আমাদের সকলের জানা আছে, তারই উল্লেখ আব্দুল করিমের গানে উঠে এসেছে। তবে ব্যতিক্রম তো অবশ্যই আছে। সম্পদশালী গৃহস্থদের অবস্থা সব সময়ই ভালো ছিল এ অঞ্চলের। এক সময় জীবিকা বলতে দুটিই ছিল, একটি হলো কার্তিক-অগ্রাহায়ণ থেকে চৈত্র-বৈশাখ মাস নাগাদ কৃষিকাজ করা; দুই- বাকি সময়টা মাছ ধরা। তাছাড়া যাদের জমিজামা প্রচুর তাদের এসবের কিছুই ছোঁয় না। আব্দুল করিমের তীক্ষ্ণ পর্যবেক্ষণ ক্ষমতার জন্য এসবকিছুই তার গানের কলিতে উঠে এসেছে। হয়তো শতবছর পর গ্রাম শহর হয়ে যাবে, মানুষের জীবিকা পরিবর্তিত হয়ে যাবে, ধানক্ষেত খুজে পাওয়া যাবে না, কিন্তু তখন শাহ আব্দুল করিমের গানে ভাটি বাংলার এই চিত্রগুলো ভাসতেই থাকবে। ভবিষ্যতের কথা কে জানে! শাহ আব্দুল করিম গান রচনা করেছেন সৃষ্টির আনন্দে, বিখ্যাত হওয়ার মানসিকতা নিয়ে নয়। অথচ তিনিই বনে গেলেন সমগ্র বাংলাদেশে একজন প্রখ্যাত শিল্পী, দার্শনিক ও চিন্তাবিদ।

শাহ আব্দুল করিমের বিভিন্ন গানে ‘ময়ূরপঙ্খী নাও’ এর উল্লেখ আছে বহুবার। তিনি অনেকটা শাব্দিক অর্থের সাথে সাথে রূপক অর্থেও শব্দটি ব্যবহার করেছেন। এরকম শত শত শব্দ তিনি ব্যবহার করেছেন যার অর্থ দুই রকম দাঁড়ায়। চারিদিকে পানি যখন টইটুম্বুর, হাওর অঞ্চলের মানুষের প্রধান যানবাহন হয়ে উঠে নৌকা। নৌকা ছাড়া কোথাও যাওয়ার কোনো উপায় নাই। অতএব, গানে আছে তারা সন্ধ্যার পর নৌকা নিয়ে হাওরে থাকা পছন্দ করে না এবং সূর্য ডুবে যাওয়া তাদের কাছে একটি উল্লেখযোগ্য বিষয়। তবে বাস্তবিক অর্থে যেদিন থেকে বৈদ্যুতিক তার ঢুকেছে হাওরে সেদিন থেকে হাওরের সৌন্দর্য ম্লান হওয়া শুরু হয়েছে বলে আমার ধারণা। কিন্তু সভ্যতা বিকাশের ক্ষেত্রে বিদ্যুতের প্রয়োজনীয়তাও অনেক। যাহোক, শাহ আব্দুল করিমের গানের বেশির ভাগ শব্দই ভাটি বাংলার সাংস্কৃতিক উপাদানগুলো মনে করিয়ে দেয় বারবার। যেমন- ‘ময়ূরপঙ্খি নাও’, ‘বইঠা বাওয়া’, ‘পঞ্চায়েত’, ‘জারিগান’, ‘সারিগান’, ‘বাউলাগান’ ইত্যাদি ।

নির্ভেজাল মানুষ শাহ আব্দুল করিম ঝগড়া পছন্দ করতেন না বলে গানে উল্লেখ করেছেন। পাড়া-প্রতিবেশী আত্মীয় স্বজনের সাথে সদ্ভাব বজায় রাখার কথা উল্লেখ করেছেন। একটি গানে উঠে এসেছে ‘গোসসা করার’ কথা, ‘মুরুগ জবো’ করে খাওানোকে ঘিরে কী কী ঘটে যায় তার কথা। হাওর অঞ্চলের মানুষেরা আত্মীয়-স্বজনকে আপ্যায়ন করতে যেসব খাবার আয়োজন করে তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে ঘরের মুরুগ জবাই দিয়ে খাওয়ানো এবং মুরুগ জবাই দেয়ার পর আশেপাশে প্রতিবেশীদের দাওয়াত না দিলে কিংবা অন্তত তরকারি না পাঠালে শুরু হয়ে যায় ‘গোসসার পর্ব’। তখন এক পর্যায়ে ঝগড়াও হয়ে যায়। এই বিষয়টিও শাহ আব্দুল করিম তার গানে ফুটিয়ে তুলেছেন যা গ্রামের মানুষের অতিথি আপ্যায়নের বেলায় বারংবার সম্মুখীন হতে হয়। এরকম অনেক বিষয়েই বিদ্যমান চর্চা ও অভ্যাসগুলো খুব সাবলীলভাবে সাহসিকতার সাথে নিঃসঙ্কোচে প্রকাশ করেছেন শাহ আব্দুল করিম।

শাহ আব্দুল করিম গ্রামীণ ঐতিহ্যের যেসব গুরুত্বপূর্ণ উপাদান বারবার গানের মাধ্যমে প্রকাশ করেছেন তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য আরেকটি হলো গ্রাম্য মেলা। মেলার বর্ণনা বিশদভাবেই গানের কথার মাধ্যমে এমনভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন যেন মনে হচ্ছে এটি সত্যিকারভাবেই একটি উপভোগ্য বিষয়। এই ক্ষেত্রেও মেলা উপলক্ষ্যে মানুষ মানুষকে সুদমুক্ত ঋণ দেয়ার প্রচলন ছিল বলে উল্লেখ করেছেন। পাশাপাশি, ধলমেলার পরিপ্রেক্ষিতে যা লেখা আছে তাতে আবহমান কাল থেকে হাওরের মানুষের জীবনে ঘটে আসা ঐতিহ্য ও কৃষ্টির কথা উল্লেখ করেছেন। এ ধরনের গানের ক্ষেত্রে একটি ঐতিহ্য বিলোপের আবহ ফুটিয়ে তুলেছেন এবং সত্যিকার অর্থেই কালের বিবর্তনে হয়তো কবিতা-গান-গল্প ইত্যাদি সাহিত্যের বিভিন্ন শাখা ছাড়া বাস্তবে একসময় আর খুঁজে পাওয়া যাবে না বাউলেপনা, হাওর পাড়ের সংস্কৃতিসহ আরও বিভিন্ন বিষয়।

কৃষিকাজ ও কৃষিপণ্যের উল্লেখ পাওয়া যায় আব্দুল করিমের গানে যার বেশির ভাগই এখন প্রযুক্তির ছোঁয়ায় বিপন্ন হওয়ার পথে। যেমন- লাঙল, জাল ইত্যাদি। এছাড়া, খাদ্যে ভেজাল ও গ্রামীণ মেলার পণ্যের বিবরণও পাওয়া যায় তার গানের কথায়। ফসল রোপন থেকে শুরু করে ফসল ঘরে তোলার কথা বলা আছে। সঠিক সময়ে বৃষ্টিপাত হলে ফলন ভালো হয়, আবার খরা-অতিবৃষ্টির কারণে ফলন নষ্ট হয় এসবের বর্ণনা আছে তার একটি গানে-

‘এবার ফসল ভালো দেখা যায় বা-চাচাজী

এবার ফসল ভালো দেখা যায়

ফাল্গুনে বর্ষিল মেঘ

জমি যাহা চায়-বা চাচাজী।’

একই গানে বারবার প্রাকৃতিক দুর্যোগের আঘাতের বিষয়ে উল্লেখ আছে যা সত্যিকারভাবেই হাওর অঞ্চলের মানুষের জন্য অভিশাপ হয়ে দাঁড়ায়। খরা, অকাল বন্যা, অতিবৃষ্টি ,শিলাবৃষ্টি ইত্যাদি প্রাকৃতিক দুর্যোগ কৃষকের স্বপ্নকে কেড়ে নেয়। শাহ আব্দুল করিমের গানে এই বিষয়ের উল্লেখ আছে এভাবে-

‘শিলাবৃষ্টি অকাল বন্যায়

বারেবারে ছাতায়

রাইত হলে ঘুম ধরে না নানান চিন্তা বা-চাচাজি।।

ইরি বোরো ফসল করি আমাদের এলাকায়

এক ফসল বিনে আমাদের

নাই অন্য উপায়-বা চাচাজী।’

সুনামগঞ্জের হাওরের ফসল প্রাকৃতিক দুর্যোগে বিভিন্ন সময়েই আঘাত হেনেছে যা মানুষের কাছে প্রতিবারই ফসল তোলার সময়টায় একটা ভয়ের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।

নদী ও নদীপাড়ের জীবনের কথা তার বিভিন্ন গানে পাওয়া যায়। বর্ষাকালে নদী হাওরের পানিতে প্লাবিত হয় তখন নদীকে চেনা দুষ্কর হয়ে পড়ে যেখানে চৈত্রমাসে মেলার সময় মানুষ নদীরপাড়ে বসে থাকত সেখানে বর্ষাকালে নদী চিহ্নিত করা কষ্টকর হয়ে পড়ে। তবে স্থানীয় মাঝি ও জেলেরা এমনকি ছোট ছোট বাচ্চারাও বলে দিতে পারে নদীর গতিপথ। এ সংক্রান্ত বিষয়গুলো তার কয়েকটি গানে উল্লেখ আছে যা বাস্তবিক অর্থেই নদী আছে এমন হাওরের জনপদের জন্য জানা পানির মত সহজ ।

বাউল সাধক শাহ আব্দুল করিমের বাল্যকালের বিভিন্ন বিষয় ফুটে উঠেছে তার গানে। এরই মাধ্যমে ভাটি এলাকার শিশুদের বিনোদন, খেলাধুলার উপকরণ, বেড়ে ওঠার চিত্র খুব সুন্দরভাবে ফুটে উঠেছে। এরমধ্যে – বিয়ের গান গাওয়া, ধুলাবালি নিয়ে খেলা, মার্বেল খেলা, পুতুল খেলা, লুকালুকি খেলা ইত্যাদির বর্ণনার সাথে সাথে ছোট ছোট বাচ্চাদের মুখে মুখে প্রচলিত কিছু ভীতিকর বিষয়ের বর্ণনা আছে যেমন- দাঁত পরে গেলে যদি কাকে দেখে ফেলে তো দাঁত আর উঠবে না, কিংবা পোকা ধরা আম খেলে সাঁতার শেখা যায় ইত্যাদি বিষয় এই অঞ্চলের গ্রামের শিশুদের মনের মধ্যে গেঁথে থাকে।

বাউল সম্রাট শাহ আব্দুল করিমের গানের কথায় গ্রামীণ সংস্কৃতি, ঐতিহ্য, কৃষ্টিসহ আবহমান কাল থেকে ঘটে আসা বিষয়গুলোও তার আধ্যাত্মিক চর্চার পাশাপাশি গানের কলিতে উঠে এসেছে। এসব বিষয়াদি কবিতা-গল্প-গানে না থাকলে সভ্যতার ক্রমবিকাশের সাথে সাথে হারিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনাও আছে। ইতোমধ্যেই অনেক বিষয়, ঐতিহ্য হারিয়ে গেছে যা শাহ আব্দুল করিম জীবদ্দশাতেই বিদ্যমান ছিল অথচ এখন আর খুঁজে পাওয়া যায় না। তবে, আশ্চর্যের বিষয় হলো স্বশিক্ষিত শাহ আব্দুল করিম এই বিলুপ্ত হওয়ার প্রক্রিয়া আঁচ করতে পেরেছিলেন এবং তার গানের মাধ্যমে বিভিন্ন বিষয় বর্ণনার পাশাপাশি আশঙ্কাও প্রকাশ করেছেন একজন চিত্রশিল্পী যেভাবে নিখুঁতভাবে ছবি আঁকেন ঠিক সেভাবেই। তার প্রয়াণ দিবসে আমরা তার আত্মার শান্তি কামনা করি।


লেখক: শিক্ষক, ইংরেজি বিভাগ, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, সিলেট।

(লেখাটি ইউএনবি থেকে নেয়া)

আরও পড়ুন

নওগাঁ সীমান্তে দিয়ে ১৬ জনকে পুশইন

নওগাঁ সীমান্তে দিয়ে ১৬ জনকে পুশইন

নওগাঁর পত্নীতলা সীমান্ত দিয়ে ১৬ বাংলাদেশি নাগরিককে পুশইন করেছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। শুক্রবার বেলা ১১টায় নওগাঁর পত্নীতলা ১৪ বিজিবির ক্যাম্প থেকে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়।

এর আগে ভোরে উপজেলার শীতলমাঠ বিওপির সীমান্ত পিলার ২৫৪/১-এস এর কাছ দিয়ে তাদের বাংলাদেশে পুশইন করা হলে বিজিবি সদস্যরা তাদের আটক করে।

আটককৃতরা হলেন- নাটোর জেলার মোতালেব শেখ (৪৫), শফিকুল ইসলাম (৩৫), মজনু বিশ্বাস (৪৮), নয়ন খাঁ (২৫), মুকুল শেখ (২৫), মৃধুল শেখ (২০), সামির (১১), বিনা খাতুন (২৯), মিম (৮), মরিয়ম খাতুন (১০), রোজিনা খাতুন (১৮), মিরা খাতুন (৮ মাস), এলিনা খাতুন (২৮), জান্নাতুল সরকার (১০), জোছনা বেগম (৫০) এবং পাবনা জেলার মিরাজ শেখ (১৮)।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়- ভোরে পত্নীতলা ১৪ বিজিবির শীতলমাঠ বিওপির সীমান্ত পিলার ২৫৪/১-এস এর কাছ দিয়ে তাদের পুশইন করে। পরে বিজিবির টহল দল ঘুরকী গ্রামের পাকা রাস্তা সংলগ্ন চা দোকানের পাশে ঘোরাফেরা করতে দেখে তাদের আটক করে। আটকদের মধ্যে সাতজন পুরুষ, পাঁচ শিশু ও চারজন নারী।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরো জানানো হয়- আটককৃতদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় তারা বেশ কয়েক বছর পূর্বে রাজশাহী সীমান্ত দিয়ে ভারতে গিয়েছিল। আটকের পর তাদেরকে পত্নীতলা থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Begum Khaleda Zia has given priority to womens education Nurul Islam Nayan

বেগম খালেদা জিয়া নারী শিক্ষায় অগ্রাধিকার দিয়েছেন: নুরুল ইসলাম নয়ন

বেগম খালেদা জিয়া নারী শিক্ষায় অগ্রাধিকার দিয়েছেন: নুরুল ইসলাম নয়ন

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী যুবদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ নুরুল ইসলাম নয়ন বলেছেন, ‘বিএনপি যদি মানুষের ভালোবাসার ম্যান্ডেট নিয়ে জনগনের সরকার গঠন করতে পারে, তাহলে এ দেশের মেধাবী শিক্ষার্থীদের সর্বোচ্চ শিক্ষা অর্জনে সহায়তা করবে। বিশেষ করে দেশ নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া তার শাসনামলে নারী শিক্ষায় অগ্রাধিকার দিয়েছেন। শুক্রবার ভোলার চরফ্যাশন উপজেলায় জিয়া স্মৃতি পাঠাগারের উদ্যোগে ব্রজগোপাল টাউনহলে এসএসসি/ দাখিল পরীক্ষায় ১১০ জন কৃতি শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা ও সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

যুবদল নেতা নুরুল ইসলাম নয়ন বলেন, ‘শহীদ রাষ্ট্রপ্রতি জিয়াউর রহমান এ দেশের সাধারণ শিক্ষার্থীদের শিক্ষায় আলোয় আলোকিত ও নিরক্ষরতা দূরীকরণের জন্য তার জীবদ্দশায় নিরন্তর সংগ্রাম চালিয়েছেন। তারই ধারাবাহিকতায় দেশ নায়ক তারেক রহমান রাষ্ট্র সংস্কারের জন্য যে ৩১ দফা কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন, তার মধ্যে শিক্ষার বিষয়টি উল্লেখ রয়েছে।’

এ সময় চরফ্যাশন উপজেলা বিএনপির সাবেক সহসভাপতি কয়ছর আহমেদ কমল, সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক গোফরান মহাজন, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক কাজী মঞ্জুর হোসেন, পৌর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক খায়রুল ইসলাম সোহেল, ভোলা জেলা বিএনপির সদস্য মমিনুল ইসলাম ভুট্টু, চরফ্যাশন উপজেলা বিএনপির সাবেক যুব বিষয়ক সম্পাদক আহসান উল্যাহ বাহার, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক হুমায়ুন কবির সিকদার, চরফ্যাশন প্রেসক্লাব সভাপতি জুলফিকার মাহমুদ নিয়াজ, উপজেলা বিএনপির সাবেক দপ্তর সম্পাদক কামাল গোলদার, উপজেলা যুবদলের সদস্য সচিব জাহিদুল ইসলাম রাসেল, পৌর যুবদলের আহ্বায়ক আবু বকর সিদ্দিক মিলটন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও শিক্ষক প্রতিনিধি ও অবিভিাবকরা উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন, চরফ্যাশন উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও জিয়া স্মৃতি পাঠাগারের সদস্য আরিফুর রহমান জুয়েল। অনুষ্ঠানের শেষ পর্যায়ে কেন্দ্রীয় যুবদলের সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম নয়নের হাত থেকে এসএসসি/ দাখিল ২০২৫ জিপিএ-৫ প্রাপ্ত কৃতি শিক্ষার্থীরা সম্মননা স্মারক গ্রহণ করেন।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Iran destroyed US and 1 million missiles

যুক্তরাষ্ট্রের ৫০ কোটি ডলারের ক্ষেপণাস্ত্র ধ্বংস করেছে ইরান

যুক্তরাষ্ট্রের ৫০ কোটি ডলারের ক্ষেপণাস্ত্র ধ্বংস করেছে ইরান মার্কিন উন্নত মানের প্রতিরক্ষা ক্ষেপণাস্ত্র (থাড)। ছবি : সংগৃহীত

ইরান-ইসরায়েলের মধ্যে টানা ১২ দিন সংঘাতের পর যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়েছে। এই সংঘাতে ইরান ও ইসরায়েল উভয় পক্ষই ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তাতে কোনো সন্দেহ নেই। তবে আদতে ইসরায়েলের পরাজয়ের সঙ্গে সঙ্গে মার্কিন সামরিক পরাজয় হিসেবে দেখা হচ্ছে। কারণ, দেশটি সহায়তা দিতে গিয়ে উন্নত মানের প্রতিরক্ষা ক্ষেপণাস্ত্র (থাড) হারিয়েছে।

বৃহস্পতিবার মেহের নিউজ এজেন্সির প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তর পেন্টাগনের প্রকাশিত নথি থেকে জানা যায়, ইরানের বিরুদ্ধে ১২ দিনের ইসরায়েলি আগ্রাসনের সময় ওয়াশিংটন তেল আবিবকে সহায়তা দিতে গিয়ে প্রায় ৫০ কোটি ডলারের উন্নত মানের প্রতিরক্ষা ক্ষেপণাস্ত্র হারিয়েছে।

ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যমের বলছে, এ নিয়ে সম্প্রতি পেন্টাগনের বাজেট নথি প্রকাশিত হয়েছে, যা বেশ কয়েকটি মার্কিন সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনেও বলা হয়েছে।

ইসরায়েলের একটি সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, সদ্য প্রকাশিত পেন্টাগনের বাজেট নথিতে দেখা গেছে, গত জুনে ইরানের সঙ্গে যুদ্ধের ১২ দিনে যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলের পক্ষে মোট প্রায় ৫০ কোটি ডলার মূল্যের ইন্টারসেপ্টর ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে।

সংবাদমাধ্যম ‘দ্য ওয়ার জোন’ এবং ‘বিজনেস ইনসাইডার’এর উদ্ধৃতি দিয়ে বলা হয়েছে, নথিগুলোর একটিতে ৪৯৮ দশমিক ২৬৫ মিলিয়ন ডলার জরুরি তহবিল চাওয়া হয়েছে, যা দিয়ে থাড ক্ষেপণাস্ত্রব্যবস্থা প্রতিস্থাপন করা হবে।

নথিতে আরও বলা হয়েছে, এই ক্ষেপণাস্ত্রগুলো ইসরাইলকে সমর্থন দিতে ব্যবহার করা হয়েছিল। ইরানের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের ওই ১২ দিনের আক্রমণে যুক্তরাষ্ট্র ‘১০০ থেকে ১৫০টি থাড ক্ষেপণাস্ত্র’ নিক্ষেপ করেছে।

এই ক্ষেপণাস্ত্রগুলো প্রতিস্থাপনের জন্য আরও বাজেট বরাদ্দ করতে হলে যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসের অনুমোদনের প্রয়োজন হবে।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
The potters of Srimangal are busy hoping to surround Durga Puja

দুর্গাপূজা ঘিরে লাভের আশায় ব্যস্ত শ্রীমঙ্গলের মৃৎশিল্পীরা

দুর্গাপূজা ঘিরে লাভের আশায় ব্যস্ত শ্রীমঙ্গলের মৃৎশিল্পীরা

শারদীয় দুর্গাপূজাকে সামনে রেখে মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে ব্যস্ত সময় পার করছেন মৃৎশিল্পীরা। মাটির কলস, থালা, বাটি, প্রদীপ, গ্লাস কিংবা নানা ধরনের পুতুল—সবই তৈরি হচ্ছে দিন-রাতের শ্রমে। পূজার সময় ঘনিয়ে আসতেই বেড়েছে অর্ডার, বেড়েছে কর্মব্যস্ততাও।

উপজেলার সন্ধ্যানী এলাকার কুমারপাড়ায় এখনো নয়টি পরিবার জীবিকার তাগিদে টিকে আছে এই ঐতিহ্যবাহী শিল্পের সঙ্গে। একসময় সারাবছর মৃৎশিল্পের ব্যাপক চাহিদা থাকলেও বর্তমানে প্লাস্টিক সামগ্রীর দাপটে দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে মাটির তৈরি জিনিসপত্র।মাটি-জ্বালানির দাম বাড়ায় কষ্টে মৃৎ শিল্পীরা।

সরেজমিনে সদর ইউনিয়নের কুমারপাড়া ঘুরে দেখা যায়, রোদ না থাকায় ঘরের ভেতরে ফ্যান চালিয়ে শুকানো হচ্ছে সদ্য তৈরি মাটির কলস, থালা আর প্রদীপ। পুরুষ ও নারী মৃৎশিল্পীরা কেউ মাটির কাজ করছেন, কেউ পূজাকে কেন্দ্র করে রং তুলির আঁচড়ে সাজাচ্ছেন নানান ধরনের পণ্য।

মৃৎশিল্পী জ্যোতির্ময় পাল বলেন, ‘দুর্গাপূজাকে সামনে রেখে আমরা দিন-রাত কাজ করে যাচ্ছি। কলস আর থালার চাহিদা সবচেয়ে বেশি। তবে মাটি ও জ্বালানির দাম বেড়ে যাওয়ায় খরচ সামলে লাভ করা কঠিন হয়ে পড়েছে। তবুও এই শিল্পকে ধরে রাখতে আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি।’

নারী মৃৎশিল্পী বীনা রানী পাল বলেন, ‘আমরা শুধু মাটির জিনিসপত্র বানাচ্ছি না, দেশের ঐতিহ্যকেও বাঁচিয়ে রাখছি। অনেক নারীকে প্রশিক্ষণ দিয়ে এই কাজে যুক্ত করেছি। তারা সংসারে আর্থিকভাবে সহায়তা করতে পারছে। কিন্তু মূলধন ও সরকারি সহযোগিতা ছাড়া এই শিল্প টিকিয়ে রাখা কঠিন হয়ে যাচ্ছে।’

তিনি আরও জানান, প্লাস্টিকের দাপটে মাটির পণ্যের বাজার অনেকটাই কমে গেছে। তাই টিকে থাকতে তারা এখন দইয়ের বাটি, কাপ, চামচের মতো নতুন নতুন পণ্য বানাচ্ছেন। কিন্তু মূলধনের অভাবে উৎপাদন সীমিত হয়ে পড়ছে। ঐতিহ্য রক্ষায় সরকারের সহযোগিতা প্রয়োজন।

নাগরদোলা থিয়েটারের সাধারণ সম্পাদক শিমুল তরফদার বলেন, ‘গ্রামীণ ঐতিহ্যের গুরুত্বপূর্ণ অংশ হলো মৃৎশিল্প। কিন্তু মূলধন ও সহযোগিতার অভাবে একে একে অনেক শিল্পী এই পেশা ছেড়ে দিচ্ছেন। এখনই সরকারি সহায়তা, প্রশিক্ষণ ও সহজ ঋণের ব্যবস্থা না করলে এই শিল্প বিলীন হয়ে যাবে।’

একসময় গ্রামবাংলার প্রতিটি ঘরে অপরিহার্য ছিল মাটির থালা-বাটি। বিশেষ করে দুর্গাপূজা বা অন্যান্য ধর্মীয় ও সামাজিক অনুষ্ঠানে মাটির কলস, প্রদীপ কিংবা পাত্রের বিকল্প ছিল না। এখনো সেই চাহিদা পুরোপুরি হারিয়ে যায়নি। কিন্তু প্রশ্ন রয়ে গেছে প্লাস্টিকের ভিড়ে কবে পর্যন্ত টিকে থাকবে এই ঐতিহ্যবাহী মৃৎশিল্প?

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Inauguration of the new building of Meherpur Hospital

মেহেরপুর হাসপাতালের নতুন ভবনে কার্যক্রম উদ্বোধন

মেহেরপুর হাসপাতালের নতুন ভবনে কার্যক্রম উদ্বোধন

ফলক উন্মোচনের মধ্য দিয়ে ৭৬ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত মেহেরপুর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের নতুন ভবনে স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রমের উদ্বোধন করা হয়েছে।

শুক্রবার বিকেলে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সদস্য ড. বদিউল আলম মজুমদার ফলক উন্মোচন করে মেহেরপুর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের নতুন ভবনে স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন।

ফলক উন্মোচন শেষে নতুন ভবনে আয়োজিত উদ্বোধন উপলক্ষে আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন প্রধান উপদেষ্টার একান্ত সচিব মনির হায়দার।

এ সময় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন স্বাস্থ্য বিভাগের সচিব সাইদুর রহমান, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. মোখলেস উর রহমান, পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের সচিব আইএমইডি কামাল উদ্দিন, স্বাস্থ্য বিভাগের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবু জাফর, খুলনা বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক মুজিবুর রহমান, মেহেরপুর পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মুনজুর আহমেদ সিদ্দীক, মেহেরপুর সিভিল সার্জন ডা.একেএম আবু সাঈদ জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. মো. মোখলেস উর রহমান, স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব মো. সাইদুর রহমান, পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের আইএমইডি সচিব মো. কামাল উদ্দিন, খুলনা বিভাগীয় কমিশনার (অতিরিক্ত সচিব) মো. ফিরোজ সরকার, ঢাকা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. আবু জাফর, খুলনা রেঞ্জ ডিআইজি মো. রেজাউল হক, খুলনা বিভাগের ভারপ্রাপ্ত (স্বাস্থ্য) পরিচালক ডা. মো. মুজিবুর রহমান। অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, মেহেরপুর জেলা জামায়াতের আমীর মাওলানা তাজ উদ্দিন খান, মেহেরপুর জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও সাবেক এমপি মাসুদ অরুন, সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক এমপি আমজাদ হোসেন, মেহেরপুর জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট কামরুল হাসান, মেহেরপুর জেলা প্রশাসক ড. মোহাম্মদ আবদুল ছালাম, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মনজুর আহমেদ সিদ্দিকী, সিভিল সার্জন ডা. এ. কে. এম. আবু সাঈদ এবং হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. শাহরিয়া শায়লা জাহান।

আলোচনা সভায় বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ উপস্থিত ছিলেন।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Madaripur Municipality is working to increase the quality of civil service

নাগরিক সেবার মান আরো বাড়াতে কাজ করছে মাদারীপুর পৌরসভা

নাগরিক সেবার মান আরো বাড়াতে কাজ করছে মাদারীপুর পৌরসভা

দেশের মধ্যাঞ্চলে অবস্থিত মাদারীপুর জেলা ও এর পৌর শহর। ১৫০ বছর আগে ব্রিটিশ সরকারের আমলে ১৮৭৫ খৃষ্টাব্দে মাদারীপুর পৌরসভাটি গঠিত হয়- যা প্রায় ১১৬ বছর পরে এসে ১৯৯১ সালে প্রথম শ্রেণির পৌরসভার মর্যাদা পায়। সে সময় চেয়ারম্যান ছিলেন বীরমুক্তিযোদ্ধা খলিলুর রহমান খান। ১ম শ্রেণিতে উন্নীত হবার পরে এখানে পরবর্তীতে চেয়ারম্যান পদ বিলুপ্ত করে মেয়র পদ পুনর্বিন্যাস করা হয়। এরপর জেলা আ. লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক খালিদ হোসেন ইয়াদ পরপর ৩ বার মেয়র পদে নির্বাচিত হয়ে টানা ১৫ বছর অপ্রতিরোধ্য মেয়র হিসাবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেন। তার আমলেই সবচেয়ে বেশি পৌরসভার সরকারি খাল-দখল ও নাজুক অবস্থায় চলে যায়। ফলে শহরের ড্রেনেজ ও পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা সংকোচিত হয়ে জলাবদ্ধতায় ভোগান্তিতে পড়েন এ শহরের নাগরিকরা। আর ভোগান্তি থেকে উত্তরণের জন্য যুগের পর যুগ অপেক্ষা করেও অবসান ঘটেনি। আজো উদ্ধার হয়নি দখল হওয়া খালগুলো। জলাবদ্ধতা থেকে মুক্তির একমাত্র পথ সরকারি খাল উদ্ধার করা।

এলাকাবাসী বলেন, সাবেক পৌর মেয়র খালিদ হোসেন ইয়াদের কাছে পৌর নাগরিকদের সেবার চাইতে তার কাছে মূখ্য হয়ে উঠেছিল আওয়ামী দলীয় ও রাজনীতিকীকরণ। আর এজন্য প্রভাবশালীদের দখলে চলে যেতে থাকে শহরের মধ্য দিয়ে বয়ে যাওয়া ছোট-বড় খালগুলো।

দখলদার প্রভাবশালীদের মধ্যে সাবেক নৌমন্ত্রী শাজাহান খান (বর্তমানে কারা অন্তরীণ) ও তার পরিবারবর্গ প্রথমে তাদের বাসার সম্মুখ দিয়ে বয়ে চলা শকুনী-ইটেরপোল-গোপালপুর খালের অংশ দখল করে পাকা স্থাপনা তৈরি করেন এবং এরপর থেকেই শুরু হয় খাল দখলের মহা-উৎসব। এরমধ্যে আড়িয়ালখাঁ নদী থেকে শুরু করে শহরের মধ্য দিয়ে তৈরী হওয়া ষ্টেডিয়ামের পূর্বপাশ ঘেষে হরিকুমারিয়া-হাজিরহাওলা-রানাদিয়া খাল, শকুনী খাল, ইটেরপোল-ছয়না-গোপালপুর খাল, গৈদী খাল, কলেজ রোড হয়ে আমিরাবাদ খাল, কুলপদ্দি খাল, মহিষেরচর খাল কৌশলে দখল করে।

স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে সারাবছরই এসব খালে জোয়ার-ভাটার পানি থাকতো। এসব খালের পানি কৃষকের সেচকার্যে ব্যবহৃত হতো। এসব কারণে কখনোই জলাবদ্ধতা তৈরি হতো না মাদারীপুর শহরে। ওইসব খালে সারাবছরই দেশী মাছ শিকার করত মানুষ। প্রভাবশালীদের দখলের কারণে অস্তিত্ব হারানো এসব খালের মধ্যে দুয়েকটির উপর দিয়ে পানি নিষ্কাশনের ড্রেন তৈরি হলেও এসব ড্রেনের বেশিরভাগই অকেজো হয়ে পড়েছে। এলাকাবাসী বলছেন, বেশীরভাগ সরকারি খাল আজো উদ্ধার করতে পারেনি পৌরসভা। সামান্য বৃষ্টি হলেই এসব ড্রেনে পানি ও ময়লা-আবর্জনা আটকে যায় এবং জলাবদ্ধতায় সীমাহীন দূর্ভোগে পড়েন পৌরবাসি।

এদিকে, ৫ আগষ্ট পরবর্তী সময়ে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হলে হত্যা-দুর্নীতির মামলার আসামিসহ অন্যান্য মামলার আসামী হয়ে বাহাউদ্দীন নাসিম দেশের বাইরে পালিয়ে যান ও তার সহোদর সাবেক মেয়র খালিদ হোসেন ইয়াদ অজ্ঞাত স্থানে গা-ঢাকা দিয়েছেন। এরপর এখানে মেয়র পদ ও পৌর নাগরিক সেবার শূন্যতা ও বিড়ম্বনার তৈরি হলে পৌর নাগরিকেরা পড়েন বিপাকে। দৈনন্দিন নাগরিক সেবা থেকে বঞ্চিত হতে থাকে মানুষ। পৌর এলাকার ড্রেনেজ ব্যবস্থা, পয়ঃনিষ্কাশন, ময়লা-আবর্জনা পরিষ্কার, মশক নিধন, পানি সঞ্চালন, জলাবদ্ধতা ইত্যাদিতে নাজুক অবস্থার তৈরি হয়। এরই প্রেক্ষিতে বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপনে এখানে পৌর প্রশাসক হিসাবে উক্ত মন্ত্রণালয়ের উপসচিব হাবিবুল আলমকে পদায়ন করেন। //

পৌর প্রশাসকের দায়িত্ব নেয়ার পর থেকে তার আন্তরিক প্রচেষ্টা, দিনরাত পরিশ্রমের ফলে নাগরিক সেবা বৃদ্ধি পেতে থাকে। সরকারী খাল উদ্ধার, ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নয়ন, মশক নিধন, পয়ঃনিষ্কাশন ইত্যাদি প্রসঙ্গে সরাসরি তার কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আপনারা দেখেছেন যে, আমরা সরকার সব খালের পাশ থেকে অনেক অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করেছি, অনেকে তা সরিয়েও নিয়েছেন, ইটেরপোল-ছয়না-গোপালপুর খালের কিছু অংশে আমরা খনন কাজও চালিয়েছি, ডেঙ্গু প্রতিরোধে আমাদের মশক নিধন টিম প্রতিদিন কোনো না কোনো এলাকায় ঔষধ ছিটাচ্ছে, যে কারণে মাদারীপুর পৌর এলাকায় এবার ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব কম। জলাবদ্ধতা ও ময়লা-আবর্জনা থেকে পৌরবাসিকে রক্ষার জন্য আমাদের পরিচ্ছন্নতা কর্মীরা প্রতিদিনই কোনো না কোনো ড্রেণ পরিস্কার করছে, ময়লা-আবর্জনা সরিয়ে নিচ্ছে। আমরা নিজেরাও রাতদিন তা তদারকি করছি। অপ্রতুল জনবল ও সরকারী অর্থ বরাদ্ধের সীমবদ্ধতা সত্বেও আমরা দিনরাত কাজ করছি। অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান আমাদের চলমান রয়েছে এবং এটা আরো গতিশীল করা হবে, যতই প্রভাবশালী হোক না কেনো- দখল হওয়া সরকারী খালগুলো উদ্ধারেও আমাদের বিভিন্ন পরিকল্পনা রয়েছে।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
The family is waiting for Azads body to be killed in Iraq

ইরাকে নিহত আজাদের লাশের অপেক্ষায় পরিবার

ইরাকে নিহত আজাদের লাশের অপেক্ষায় পরিবার

আমার ছেলের লাশ ফেরত চাই। আমার বুকের ধনকে আইনা দেন। ওরে ছাড়া আমি কি করে বাঁচব? বুক চাপরে কাঁদতে কাঁদতে এভাবেই কথাগুলো বলছিলেন ইরাক প্রবাসী নিহত আজাদ খান (৪৭) এর অসহায় মা।

নিহত আজাদ খান রাজবাড়ী জেলার গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া ইউনিয়নের ৬ নং ওয়ার্ডের হোসেন মন্ডল পাড়া গ্রামের ইয়াজ উদ্দিনের ছেলে। মাত্র তিন মাস আগে দালালের মাধ্যমে ইরাক গিয়ে তিনি মর্মান্তিক হত্যাকান্ডের শিকার হন।

নিহতের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, গত তিন মাস আগে আজাদ ধারদেনা করে ইরাক যান। এক সপ্তাহ আগে ইরাকের বাগদাদ শহর থেকে সে নিখোঁজ হয়। এর মধ্যে তার কোন সন্ধান পাওয়া যাচ্ছিল না। গত ১৮ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার রাতে লিটন নামে অপর এক ইরাক প্রবাসী ফোন করে আজাদের পরিবারকে জানান, আজাদকে হত্যা করে ৩ টুকরো করে লাশ বস্তায় ভরে ময়লার ভাগারে ফেলে রাখা হয়। শহরের পরিচ্ছন্ন কর্মীরা ময়লা পরিস্কার করতে এসে লাশের দুর্গন্ধ পায়। এ সময় তারা বস্তার মুখ খুলে দেখে মানুষের লাশ। তখন তারা পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ এসে লাশ তাদের হেফাজতে নেয়।

আজাদের স্ত্রী ময়না বেগম জানান, স্বামীকে বিদেশ পাঠিয়ে আমাদের পরিবার একদম নিঃস্ব হয়ে গেছে। অনেক ধারদেনা করে আমার স্বামীকে বাবুলের মাধ্যমে ৩ মাস আগে ইরাকে পাঠাই। তার যে কাজ দেয়ার কথা ছিলো বাবুল তাকে সেই কাজ না দিয়ে অন্য একটি কাজে দেয়। আমার স্বামী বাবুলের সাথে বারবার যোগাযোগের চেষ্টা করে। কিন্তু বাবুল তার কোনো ফোন ধরেনি। বাবুল তার ফোন ধরলে হয়তো আজ আমার স্বামীর এই করুন পরিনতি হতো না। আমি আমার স্বামীর হত্যার বিচার চাই।

এ বিষয়ে ইরাক থেকে মুঠোফোনে বাবু্ল জানান, আমি ওর যেখানে গিয়ে ছিলাম সেখান থেকে কুমিল্লার সোহাগ নামে একটি ছেলে তাকে নিয়ে অন্য জায়গায় একটি দোকানে কাজে দেয়। সেই দোকানের মালিক (কফিল) আজাদকে তার বাড়িতে নিয়ে গিয়ে কয়েকদিন ধরে বাড়িঘরের ময়লা ও আশপাশ পরিস্কার করায়। এর মধ্যে আমি সোহাগকে ফোন করে আজাদের খবর জানতে চাই। সোহাগ আমাকে জানায়, আজাদ কফিলের বাসায় আছে। আজ শুনতে পাচ্ছি আজাদকে হত্যা করে লাশ তিন টুকরো করে ফেলা হয়েছে। আমরা ইরাকের বাংলাদেশ এম্বাসিতে বিচার দিয়েছি। অ্যাম্বাসির লোকজন সহ আমরা সেখানে যাচ্ছি। আজাদের লাশ বাগদাদের একটি মর্গে রাখা হয়েছে।

নিহত আজাদের শ্যালক জহরুল হক বাপ্পি মুঠোফোনে জানান, আজাদ আমার দুলাভাই (চাচাতো বোন জামাই)। আমি বাংলাদেশ দূতাবাস, ইরাক সচিবের সাথে কথা বলেছি, আজাদ ভাইকে মেরে ফেলে কয়েক টুকরো করা হয়েছে শতভাগ সত্য। মরদেহ ইরাকে মর্গে আছে। আগামী রবিবার আজাদের হত্যাকারী আসামী কফিলকে কাজুমিয়া আদালতে তোলা হবে। তিনি আরও জানান, আজাদ ভাইয়ের লাশ দেশে আনার চেষ্টা চলছে।

মন্তব্য

p
উপরে