মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলের একটি প্রতিষ্ঠানে অভিযান চালিয়ে বেশ কিছু বন্য প্রাণী উদ্ধার করেছিল র্যাব। বুধবারের ওই অভিযানে একটি বানরও উদ্ধার করা হয়। তবে অন্য প্রাণীর সঙ্গে বানরটির ছবি ছড়িয়ে পড়লে নড়েচড়ে বসেন গবেষকরা।
তারা জানিয়েছেন, উদ্ধারের আগে ভাবা হতো বানরটি দেশ থেকে বিলুপ্ত হয়ে গেছে। ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনজারভেশন অব নেচারের (আইইউসিএন) রেড লিস্টেও বলা হয়েছে, এ প্রজাতির বানর সম্পর্কে তথ্য অপ্রতুল।
শ্রীমঙ্গলের বার্ড ক্লাব অ্যান্ড ব্রিডিং সেন্টার নামের প্রতিষ্ঠানে অভিযানে বানরটি পাওয়ায় ধারণা করা হচ্ছে, দেশে এদের অবস্থান এখনও আছে। তবে বানরটি ওই প্রতিষ্ঠানে কীভাবে এলো, তা এখনও জানতে পারেনি বন বিভাগ।
বানরটির সঙ্গে ওই দিন দুটি বাঁশ ভল্লুক ও হিমালয়ী গৃধিনী প্রজাতির একটি শকুনও উদ্ধার করা হয়। এসব প্রাণী বর্তমানে লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানের রেসকিউ সেন্টারে বন বিভাগের অধীনে রয়েছে।
বিলুপ্তপ্রায় বানরটির নাম ছোট লেজি বা খাটো লেজি। ইংরেজি নাম স্ট্যাম-টেইলড ম্যাকাকু। বৈজ্ঞানিক নাম ম্যাকাকা আর্কটোডিস।
এ প্রজাতির পূর্ণবয়স্ক বানরের মুখমণ্ডল সিঁদুরে লাল। ছোট লেজি বানরের দৈর্ঘ্য ৫০ থেকে ৭০ সেন্টিমিটার ও লেজ শূন্য দশমিক ৩ থেকে ৬ দশমিক ৯ সেন্টিমিটার পর্যন্ত হয়ে থাকে।
পুরুষ বানরের ওজন প্রায় ১০ কেজি ও মেয়ে বানর ৭ দশমিক ৫ থেকে ৯ দশমিক ১ কেজি পর্যন্ত হয়ে থাকে। এরা মিশ্র চিরহরিৎ ও পাহাড়ি বনে থাকে। এদের একটি দলে ১২ থেকে ৬৫টি বানর দেখা যায়। সর্বোচ্চ ১৯৫টি বানরের দলও পাওয়া গেছে।
এ প্রজাতির বানর মূলত ভারত, মিয়ানমার, চীন, মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড, লাওস ও ভিয়েতনামে পাওয়া যায়। বাংলাদেশে সবশেষ ১৯৮৯ সালের পর আর এ বানরের আবাসের দেখা মেলেনি।
২০০৪ সালের দিকে একটি বানর পাওয়া গিয়েছিল বলে জানা গেলেও তা নিশ্চিত নয়।
বাংলাদেশে এ প্রজাতির বানর নিয়ে বিশেষ কোনো তথ্য না থাকায় আন্তর্জাতিক প্রকৃতি সংরক্ষণবিষয়ক সংস্থা আইইউসিএন প্রকাশিত লাল তালিকায় ‘তথ্য অপ্রতুল’ শ্রেণিতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
বানরজাতীয় প্রাণীর গবেষক তানভীর আহমেদ জানান, ১৯৮৪ সালের একটি গবেষণায় জানা যায়, দেশের কক্সবাজার অঞ্চলে এই প্রজাতির বানর দেখা যেত। তবে ১৯৮৯ সালের পর দেশের কোথাও এ প্রজাতির বানরের স্থায়ী বসবাস জানা যায় না। প্রাণীটি দেশ থেকে বিলুপ্ত হয়ে গেছে বলে সন্দেহ প্রকাশ করা হয়।
২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যসংলগ্ন সীমান্ত এলাকায় অবশ্য এ বানর দেখা গিয়েছিল। তবে সীমান্ত এলাকা হওয়ায় বানরগুলো বাংলাদেশের না হওয়ার সম্ভাবনা বেশি বলে জানান গবেষকরা।
তানভীর আহমেদ বলেন, ‘উদ্ধার হওয়া বানরটির প্রকৃত উৎস সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া জরুরি। যদি বাংলাদেশের কোনো বন থেকে ধরা হয়ে থাকে, সেটা আশা জাগানিয়া। পার্শ্ববর্তী কোনো দেশ থেকে অবৈধভাবে পাচার হয়ে এসেছে কি না, সেটাও খতিয়ে দেখা দরকার।
‘আমাদের সিলেট ও চট্টগ্রাম বিভাগের কয়েকটি বনে এ প্রজাতির বানরের টিকে থাকার উপযুক্ত পরিবেশ আছে। তাই প্রাকৃতিকভাবে আমাদের কোনো বনে এ বানর টিকে আছে কি না, সেটা জানতে গবেষণা দরকার।’
শিকার ও বাসস্থান ধ্বংসের ফলে পৃথিবীব্যাপী ছোট লেজি বানর গত ৪০ বছরে প্রায় ৩০ শতাংশ কমে গেছে। ‘সংকটাপন্ন’ অবস্থায় আছে বলে জানিয়েছেন বন্য প্রাণী-সংশ্লিষ্টরা।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের প্রভাষক মুনতাসির আকাশ জানান, স্ট্যাম-টেইল্ড ম্যাকাক বা খাটো লেজি বানর দেশের পাঁচ প্রজাতির বানরের মধ্যে দুর্লভ। অন্য বানরদের নিয়ে ছবি বা তথ্য-উপাত্ত কিছুটা থাকলেও এই প্রজাতি নিয়ে কোনো ধরনের সাম্প্রতিক তথ্য নেই।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক বানর বিশেষজ্ঞ মোস্তফা ফিরুজ জানান, এই বানরটি অন্য বানরের মতো প্রকাশ্যে আসে না। এরা নিজেদের লুকিয়ে রাখতে পছন্দ করে।
তিনি বলেন, ‘আমি বাংলাদেশে যত জায়গায় বানর আছে, সব জায়গায় গবেষণার কাজে গিয়েছি। তবে কখনও ছোট লেজি বানর পাইনি।’
তিনি জানান, মৌলভীবাজারের পাথারিয়া বনের সঙ্গে ভারতের সীমান্ত থাকায় লাঠিটিলাসহ পাথারিয়া বনে এ প্রজাতির বানর থাকতে পারে। শ্রীমঙ্গল থেকে যে বানরটি উদ্ধার করা হয়েছে, সেটি ওই এলাকা থেকে ধরা হতে পারে। এ জন্য বানরটি কোথা থেকে এসেছে, তার উৎস জানা বাংলাদেশের বন্য প্রাণী গবেষকদের জন্য খুব জরুরি।
আইইউসিএনের ‘অপ্রতুল ডাটার’ তালিকাভুক্ত প্রতিটি প্রাণী খুব গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এতে সহজেই বোঝা যায়, এদের অবস্থান এত কম যে তথ্য নেই। তাই নতুন করে পাওয়া গেলে সেটা গুরুত্বপূর্ণ।
মৌলভীবাজারের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা রেজাউল করিম চৌধুরী জানান, বানরটি বর্তমানে লাউয়াছড়া রেসকিউ সেন্টারে আছে। সারা দেশ থেকে প্রচুর গবেষক বানরটি সম্পর্কে জানতে চেয়েছেন। লকডাউন উঠে গেলে তারা বানরটিকে দেখতে আসবেন বলেও জানান।
তিনি বলেন, ‘আমরা যেখান থেকে উদ্ধার করেছি, সেই প্রতিষ্ঠানের মালিক থাকেন বিদেশে। তাই আমরা এখনও জানতে পারিনি, আসলে তারা এই বানরটি কোথায় পেয়েছেন।
‘বানরটি কেমন জায়গায় থাকতে পছন্দ করে, কোথায় অবমুক্ত করলে তার জন্য ভালো, তা আমরা পর্যবেক্ষণ করছি। সব দিক দিয়ে ভালো একটি জায়গায় এটাকে অবমুক্ত করা হবে।’
আরও পড়ুন:মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ায় নদীতে গোসল করতে নেমে বজ্রপাতে এক কিশোরের মৃত্যু হয়েছে।
উপজেলার চর বাউশিয়া বড়কান্দি গ্রাম সংলগ্ন গোমতী নদীতে বৃহস্পতিবার বিকেল ৪টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। প্রাণ হারানো শাহেদ (১৪) ওই গ্রামের মোশারফ মিয়ার ছেলে।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ও নিহতের স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বিকেলে গোমতী নদীতে বন্ধুদের সঙ্গে গোসল করতে যায় শাহেদ। ওই সময় হঠাৎ করে বজ্রসহ বৃষ্টি শুরু হলে বজ্রপাতে মারা যায় সে। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে গজারিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠালে চিকিৎসক তাকে মৃত বলে জানান।
গজারিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্র জানা যায়, বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে তাদের হাসপাতালে শাহেদকে নিয়ে যাওয়া হয়। প্রাথমিক পর্যবেক্ষণ শেষে তাকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে গজারিয়া থানার ইন্সপেক্টর (অপারেশন) আজাদ রহমান বলেন, ‘বিষয়টি আমরা অবগত রয়েছি, নিহতের লাশ গজারিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রয়েছে।’
নিহতের পরিবারের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে বিনা ময়নাতদন্তে মরদেহ হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে বলে জানান তিনি।
আরও পড়ুন:নোয়াখালীতে মোটরসাইকেলে পিকআপ ভ্যানের ধাক্কায় এক প্রবাসী যুবকের মৃত্যু হয়েছে।
জেলা শহর মাইজদীর টোকিও ফুডসের সামনে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
প্রাণ হারানো আনোয়ার হোসেন অনিক (২২) কবিরহাট উপজেলার ধানসিঁড়ি ইউনিয়নের দক্ষিণ জগদানন্দ গ্রামের মাজারুল হক মন্টু মিয়ার ছেলে।
সুধারাম থানার ওসি মীর জাহেদুল হক রনি বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
স্থানীয়দের বরাতে তিনি বলেন, আবুধাবি প্রবাসী অনিক দুই মাস আগে দেশে এসে বিয়ে করেন। সন্ধ্যায় বন্ধুদের ইফতার পার্টিতে যোগ দিতে মোটরসাইকেলে গ্রামের বাড়ি থেকে জেলা শহর মাইজদীতে আসেন তিনি। ওই সময় মাইজদীর টোকিও ফুডসের সামনে রাস্তার উল্টোপথে যাওয়ার সময় বিপরীত দিক থেকে আসা একটি পিকআপের সঙ্গে ধাক্কা লাগে। পরে গুরুতর আহত অবস্থায় স্থানীয়রা তাকে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
লিখিত অভিযোগ পেলে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান পুলিশের এ কর্মকর্তা।
আরও পড়ুন:কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর নামে পাবনায় ভুয়া জন্মসনদ তৈরির ঘটনায় জালিয়াতির প্রমাণ পেয়েছে তদন্ত কমিটি।
স্থানীয় সরকার বিভাগ পাবনার উপপরিচালক সাইফুর রহমান বৃহস্পতিবার দুপুরের দিকে তদন্ত প্রতিবেদনটি জেলা প্রশাসকের (ডিসি) কাছে জমা দেন।
প্রতিবেদনে বলা হয়, জালিয়াতির মাধ্যমে ট্রুডোর নামে ভুয়া জন্মসনদ তৈরি করা হয়। এতে বহিরাগত কম্পিউটার অপারেটর নিলয় পারভেজ ইমন জড়িত।
প্রতিবেদনে জেলার সুজানগরের আহম্মদপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) দায়িত্বে অবহেলার প্রমাণ পাওয়ার কথা উল্লেখ করা হয়েছে।
এ ঘটনায় ইউপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আবদুর রউফ মোল্লা ও সচিব আওলাদ হাসানকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হয়েছিল, যার জবাব দিয়েছেন তারা।
পাবনার জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ আসাদুজ্জামান বৃহস্পতিবার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর নামে ভুয়া জন্মনিবন্ধন সনদ তৈরির ঘটনায় স্থানীয় সরকারমন্ত্রী মো. তাজুল ইসলামের নির্দেশে ঘটনা খতিয়ে দেখতে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।
‘পাবনার স্থানীয় সরকারের উপপরিচালক সাইফুর রহমানকে তদন্ত করতে নির্দেশ দেয়া হয়। তদন্ত প্রতিবেদন বৃহস্পতিবার দুপুরের দিকে তিনি জমা দেন। আমি প্রতিবেদনটি এখনও দেখিনি। দেখার পর বিস্তারিত জানাতে পারব।’
স্থানীয় সরকার বিভাগ পাবনার উপপরিচালক সাইফুর রহমান বলেন, ‘জেলা প্রশাসকের নির্দেশে আমি সুজানগরের সেই আহম্মদপুর ইউনিয়নে গিয়ে সব বিষয়ে খোঁজখবর নিয়েছি। তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করেছি। সেখানে বেশ কিছু অসঙ্গতি ও অনিয়ম পেয়েছি। দোষীদের চিহ্নিত করা হয়েছে। আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
সুজানগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) সুখময় সরকার বলেন, ‘সুজানগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে ইউনিয়নটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আবদুর রউফ মোল্লা ও সচিব আওলাদ হাসানকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হয়। তারা সেটির জবাব দেন।
‘এটা (তদন্ত প্রতিবেদন) আমরা জেলা প্রশাসকের নিকট জমা দিই। জেলা প্রশাসক দেখার পরে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
ইউপি চেয়ারম্যান ও সচিব কারণ দর্শানোর নোটিশের যে জবাব দিয়েছেন, তা সন্তোষজনক কি না, সে বিষয়ে ইউএনও বলেন, ‘সব বিষয় ডিসি স্যার বলতে পারবেন।’
পাবনার সুজানগর উপজেলার আহমেদপুর ইউনিয়নে কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর নামে ভুয়া জন্মনিবন্ধন সনদ তৈরি করা হয়। বিষয়টি সংবাদমাধ্যমে আসার পর সারা দেশে আলোচনার সৃষ্টি হয়। পরে জন্মনিবন্ধনের সার্ভার থেকে ভুয়া সনদটি সরানো হয়।
এ ঘটনায় নিলয় পারভেজসহ কয়েকজনকে আসামি করে আমিনপুর থানায় মামলা করা হয়।
গাজীপুরের কাপাসিয়ায় সংঘবদ্ধ পিটুনিতে দুজন নিহত হয়েছেন।
উপজেলার সিংহশ্রী ইউনিয়নে বৃহস্পতিবার রাত দুইটার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
পিটুনির শিকার দুজনের মধ্যে একজন নিহত হন সিংহশ্রী ইউনিয়নের নামিলা গ্রামের চান মিয়ার বাড়িতে। অন্যজন একই ইউনিয়নের বড়িবাড়ি গ্রামের ধানক্ষেতে প্রাণ হারান।
তাৎক্ষণিকভাবে নিহত দুজনের নাম ও পরিচয় জানা যায়নি।
স্থানীয়দের ভাষ্য, বৃহস্পতিবার গভীর রাতে নামিলা গ্রামে চান মিয়ার বাড়িতে অজ্ঞাত পরিচয়ের কিছু ব্যক্তি গরু চুরির উদ্দেশ্যে ঢোকেন। বিষয়টি টের পেয়ে চান মিয়া ডাকাডাকি করলে স্থানীয়রা জড়ো হন। ওই সময় একজনকে ধরে সংঘবদ্ধ পিটুনি দিলে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।
স্থানীয়রা আরও জানান, স্থানীয়দের ধাওয়া খাওয়া অপরজন পার্শ্ববর্তী বড়িবাড়ি গ্রামে ধানক্ষেতের আড়ালে লুকিয়ে পড়েন। ওই সময় উত্তেজিত লোকজন ক্ষেতের আড়াল থেকে খুঁজে বের করে পিটুনি দিলে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।
সিংহশ্রী ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান আনোয়ার পারভেজ জানান, গরু চুরি রোধে এলাকায় গ্রামবাসী পাহারা বসিয়েছিল। বৃহস্পতিবার গভীর রাতে গাড়িতে করে এক কৃষকের গরু চুরি করতে যান কয়েকজন। বিষয়টি টের পেয়ে একজোট হয়ে দুজনকে পিটুনি দেয় গ্রামবাসী। এতে নামিলা গ্রামে একজন ও বড়িবাড়ি গ্রামের ধানক্ষেতে আরেকজন নিহত হন।
চেয়ারম্যান আরও জানান, গ্রামে গরু চুরি করতে আসা আরও চার থেকে পাঁচজন আছেন, যাদের খুঁজে বের করার চেষ্টা চলছে।
এ বিষয়ে কাপাসিয়া থানার ওসি আবু বকর মিয়ার সঙ্গে মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি।
কাপাসিয়া থানার ডিউটি অফিসার এসআই আরিফ হোসেন জানান, গরু চোর সন্দেহে গ্রামবাসীর সংঘবদ্ধ পিটুনিতে দুজন নিহত হন, যাদের মরদেহ গাজীপুরের শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়।
আরও পড়ুন:চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীতে ফিশিং বোটের ইঞ্জিন বিস্ফোরণে চারজন আহত হয়েছেন। এদের মধ্যে তিনজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাদের চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে পতেঙ্গা থানাধীন ১৫ নম্বর ঘাটে নোঙর করা একটি ফিশিং বোটে এ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।
দগ্ধরা হলেন- ৫৫ বছর বয়সী জামাল উদ্দিন, ৪৫ বছর বয়সী মাহমুদুল করিম ও মফিজুর রহমান এবং ২৮ বছর বয়সী এমরান। এদের মধ্যে প্রথম তিনজনের শরীরের ৮০-৮৫ শতাংশ পর্যন্ত পুড়ে গিয়েছে। অন্যজনের শরীর পুড়েছে অন্তত ২০ শতাংশ।
চমেক হাসপাতালে বার্ন ও ক্যাজুয়ালটি ইউনিটের প্রধান ডা. রফিক উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘আহত চারজনের মধ্যে তিনজনের বড় ধরনের বার্ন হয়েছে। এই ধরনের রোগীদের অবস্থা ভালো থাকে না।’
চট্টগ্রাম সদরঘাট নৌ-থানার ওসি একরাম উল্লাহ বলেন, ‘মাছ ধরার ট্রলারে ইঞ্জিন থেকে সৃষ্ট আগুনে ৪ জন দগ্ধ হয়েছে। তাদেরকে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।’
স্বাধীনতা দিবসের এক অনুষ্ঠানে নাটোর-১ আসনের সংসদ সদস্য আবুল কালাম আজাদ প্রকাশ্যে দুর্নীতি করার ঘোষণা দিয়েছেন।
মঙ্গলবার সকালে লালপুর উপজেলা পরিষদের অডিটোরিয়ামে উপজেলা প্রশাসনের আয়োজিত মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে দেয়া বক্তব্যের এক পর্যায়ে দুর্নীতি করার ঘোষণা দেন এ সংসদ সদস্য।
তার বক্তব্যের অংশবিশেষের একটি ভিডিও ক্লিপ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ছড়িয়ে পড়লে মুহূর্তেই তা ভাইরাল হয়ে যায়।
প্রকাশিত ওই ভিডিওতে আবুল কালাম আজাদকে বলতে শোনা যায়, ‘পাঁচটা বছর (২০১৪-২০১৮) বেতন ভাতার টাকা ছাড়া আমার কোনো সম্পদ ছিল না; আগামীতেও থাকবে না। এবার (দ্বাদশ জাতীয় সংসদ) নির্বাচনে ১ কোটি ২৬ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। সেই টাকা আমি তুলব। যেভাবেই হোক তুলবই। এতটুক অনিয়ম আমি করবই। এটুকু অন্যায় করব, আর করব না।’
প্রকাশ্যে সংসদ সদস্যের এমন বক্তব্য বুধবার রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে জেলাজুড়ে আলোচনা-সমালোচনার সৃষ্টি হয়।
ওই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন লালপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) শারমিন আখতার। নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এ বিষয়ে আমার কোনো মন্তব্য নেই। উনার বক্তব্য উনি বলেছেন, এখানে আমার কোনো কথা নেই।’
বক্তব্যর বিষয়ে সংসদ সদস্য আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘আমার বক্তব্যে এটা বোঝাতে চেয়েছি যে, অনেকেই এরকম করে। আমার বক্তব্য বিকৃত করে প্রচার করা হচ্ছে।’
এ বিষয়ে দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটি জেলা শাখার সভাপতি আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘সরকারি অনুষ্ঠানে প্রকাশ্যে একজন সংসদ সদস্যের এমন বক্তব্য খুব দুর্ভাগ্যজনক। সংসদ সদস্যের এমন বক্তব্যে তার সহকারী এবং দলীয় নেতা-কর্মীরা দুর্নীতিতে উৎসাহিত হবেন। এটা একদিকে যেমন পরিষ্কারভাবে শপথের লংঘন, অন্যদিকে নির্বাচনি বিধিরও লংঘন।
‘নির্বাচনি আচরণবিধি অনুযায়ী, নির্বাচনি প্রচারকাজে একজন সংসদ সদস্য ১ কোটি ২৬ লাখ টাকা ব্যয় করতে পারেন না।’
সংসদ সদস্যের কাছে গঠনমূলক বক্তব্যেরও প্রত্যাশার কথা জানান তিনি।
মানিকগঞ্জ শহরের প্রবেশপথে যানজট নিরসনে ও পথচারীদের যাতায়াতের সুবিধার্থে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান পরিচালিত হয়েছে।
পৌরসভা কর্তৃপক্ষের উদ্যোগে বৃহস্পতিবার ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের মানিকগঞ্জ বাসস্ট্যান্ড ও পৌর সুপার মার্কেটের সামনের সড়ক ও ফুটপাত থেকে শতাধিক হকার ও অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান করা হয়।
প্যানেল মেয়র তসলিম মিয়া জানান, দীর্ঘদিন ধরে অবৈধ অস্থায়ী কিছু ব্যবসায়ীরা ফুটপাত ও সড়কের একাংশ দখল করে ব্যবসা করে আসছেন। এতে করে শহরে যানজটের সৃষ্টি হয় এবং পথচারীদের ভোগান্তিতে পড়তে হয়। পথচারীদের সুবিধার্থে যানজট দূর করতেই এই উচ্ছেদ অভিযান।
উচ্ছেদ অভিযানে মানিকগঞ্জ সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জহিরুল আলম, পৌরসভার প্যানেল মেয়র-২ মো. তসলিম মিয়া ও সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর রাজিয়া সুলতানাসহ থানা পুলিশ ও পৌরসভার কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।
মন্তব্য