দখলদারদের দৌরাত্ম্যে সংকুচিত হয়ে নৌযান চলাচলের প্রায় অনুপযোগী হয়ে পড়েছে বরগুনার খাকদোনা নদ। নদের উভয়পাড়ে তিন কিলোমিটারে মধ্যে শতাধিক স্থায়ী স্থাপনা গড়ে উঠেছে। স্থানীয়রা বলছেন, দখলমুক্ত করে খনন না করলেই অচিরেই এই নদের অস্তিত্ব বিলীন হয়ে যাবে। একই সঙ্গে নদে সংযুক্ত অন্তত ১৫টি খাল প্রবাহ হারাবে।
স্থানীয়রা বলছেন, একসময় নদটি প্রায় এক কিলোমিটার প্রশস্ত ছিল। গত দুই দশকে অব্যাহত দখল ও সংশ্লিষ্ট বিভাগের রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে বিষখালী-পায়রা নদীর সংযোগ স্থাপনকারী ২৪ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের এ নদের ১৫ কিলোমিটার মরা খালে পরিণত হয়েছে। বাকি ৯ কিলোমিটার নদের অস্তিত্ব থাকলেও এর মধ্যে মাত্র ৬ কিলোমিটার কোনোরকম নৌ চলাচলের জন্য সচল রয়েছে।
বরগুনা শহরের ক্রোক থেকে মাছবাজার পর্যন্ত ৩ কিলোমিটার এলাকার উভয়পাড়ে গড়ে উঠেছে শতাধিক স্থাপনা। কেউ কেউ আবার দখল করে বিক্রিও করেছেন। বিআইডব্লিউটিএর তালিকায় এই নদের দুইপাশে ১৫০ অবৈধ দখলদারের নাম রয়েছে। এর মধ্যে সাবেক জনপ্রতিনিধি, বিশিষ্ট ব্যবসায়ীও ও রাজনীতিবিদসহ সরকারি কর্মকর্তারাও রয়েছেন।
বরগুনা পৌরশহরের পশ্চিম বরগুনা উপজেলা পরিষদের সামনে খাকদোন নদ ভরাট করে সাবেক পৌর মেয়র ও সদ্য বহিষ্কৃত পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহাদাত হোসেন তিনতলা ভবন তৈরি করেছেন। এর নিচতলায় তার ঠিকাদারি ও ব্যক্তিগত কার্যালয়।
এ ছাড়া তিনি ক্রোক ব্রিজের পশ্চিম পাশেও নদ ভরাট করে তিনতলা একটি ও একতলা টিনশেড ভবন তৈরি করেছেন। অভিযোগ রয়েছে, ওই জমি তিনি হাসপাতাল তৈরির জন্য ইজারার আবেদন করে দখলে নিয়েছেন। পরে হাসপাতাল না করে নিজের মালিকানায় ভবন তৈরি করে সেখানে রড সিমেন্টের ব্যবসা খুলেছেন। দিয়েছেন দোকান ভাড়া।
বরগুনা জেলা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি সাবেক চেয়ারম্যান (বুড়িরচর ইউনিয়ন) জহিরুল হক পনুর নামও রয়েছে বিআইডব্লিউটি’র দখলদারদের তালিকায়। বরগুনা মাছবাজার এলাকায় তিনি খাকদোন দখল করে বরফকল তৈরি করেছেন। আরও চারটি স্থাপনা দখলে রয়েছে তার।
এ ছাড়াও দখলদারদের তালিকায় যাদের নাম রয়েছে তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো বরগুনা জেলা আওয়াামী লীগের সদস্য আবুল হোসেন তালুকদার, বরগুনা রাইফেল ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক প্রয়াত মজিবুর রহমান মোল্লা, জেলা বিএনপি সাবেক সভাপতি মাহবুবুল আলম মোল্লার মেয়ের জামাতা বাদল খান, পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ফারুক সিকদার, সাবেক বিএনপি নেতা রুস্তম আজাদ, ব্যবসায়ী জসিম নায়ক, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন (ফুলঝুড়ি ইউনিয়ন) ও মিলন মৃধা নাজিম আলী।
বরগুনা ভূমি অফিসে কর্মরত বেশ কয়েকজন কর্মচারীর দখলেও রয়েছে উত্তর পাড়। বরগুনা সদর উপজেলা ভূমি অফিসের প্রধান সহকারী আলী হোসেন, বরগুনা জেলা নাজির মাসুদ করিমের দখলে রয়েছে মাছবাজার ব্রিজের উত্তপাশের লাকুরতলা এলাকায় জমি দখলে রেখেছেন। এর বাইরেও নামে বেনামে দুই শতাধিক দখলদার পাকা স্থাপনা গড়েছেন।
নদ দখলের তালিকায় নাম থাকার বিষয়ে জানতে চাইলে সাবেক মেয়র শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘উপজেলা পরিষদের সামনে এবং ক্রোক এলাকায় আমার দুটি স্থাপনা রয়েছে। ওই দুটি স্থাপনায় নদের কিছু অংশ ভরাট হয়ে গেছে। আমি দুটি অংশ পরিষ্কার করে রেখেছি। যখন প্রশাসনে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করবে, তখন আমি ওই অংশ ছেড়ে দেব।’
ব্যবসায়ী নেতা জহিরুল হক পনু বলেন, ‘আমি নদ দখল করিনি। আমার কোনো অবৈধ স্থাপনা নেই। আমার নাম ব্যবহার করে কেউ হয়তো দখল করেছে।
বরগুনা ভূমি অফিসের প্রধান সহকারী আলী হোসেন বলেন, ‘আমি মালিকানার রেকর্ড কিনে বাড়ি করেছি, নদের ভরাট হওয়া কিছু অংশ সেখানে আছে।’
ৱজেলা নাজির মাসুদ করিম দখলের বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, ‘আমার দখলে কোনো জমি খাকদোন নদের পাড়ে নেই’।
৯ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ফারুক সিকদার বলেন, ‘আমি নদের জমি দখল করিনি। তবে ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের পাশে এক রিকশাচালক কিছু জমি আমার নামে দখল করে ঘর তুলে সেখানে বসবাস করছে।’
বিআইডব্লিউটিএ সূত্র জানায়, বরগুনা নদীবন্দর সচল রাখতে প্রায় প্রতিবছর সরকার লাখ লাখ টাকা ব্যয়ে খাকদোন নদের ছয় কিলোমিটার খনন করে। কিন্তু অব্যাহত দখলের কারণে এই অংশের নাব্য ধরে রাখা যাচ্ছে না। এ কারণে নাব্য ও অস্তিত্বসংকটের মুখে পড়েছে ওই অংশও।
এ ছাড়া পাশ দখলের কারণে নদটি সংকুচিত হয়ে পড়ছে। নদের সঙ্গে শাখা খালগুলোর প্রবেশদ্বারে স্লুইসগেট নির্মাণ করায় জোয়ারের প্রবাহ কমে গিয়ে এসব খালও ভরাট হয়ে যাচ্ছে।
জানতে চাইলে বরগুনা নৌবন্দরের সহকারী পরিচালক মামুন অর রশিদ বলেন, অব্যাহত দখলে নদটি সংকুচিত হওয়ায় এখানে বড় কোনো লঞ্চ ঘুরতে পারে না। এ জন্য এই বন্দরে বড় ও বিলাসবহুল লঞ্চ আসে না। আর বন্দরের সুফলও পাওয়া যাচ্ছে না।
পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) বরগুনা কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী কায়ছার আলম বলেন, খাকদোন নদের উৎসস্থল থেকে পায়রা নদী পর্যন্ত খনন করা হবে। তাদের একটি সমীক্ষা কমিটি কাজ করছে। ওই কমিটির প্রতিবেদন দিলেই দু-এক মাসের মধ্যে একটি প্রকল্প প্রণয়ন করে পাউবোর প্রধান কার্যালয়ে জমা দেওয়া হবে।
অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের বিষয়ে জেলা প্রশাসক হাবিবুর রহমান বলেন, ‘ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের কারণে আমাদের উচ্ছেদ অভিযান স্থগিত করা হয়েছিল। আমরা এখন নির্বাচন শেষ করেছি। যেকোনো সময় নদের দুই পাড়ের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হবে।’
আরও পড়ুন:শেরপুরে নালিতাবাড়ী উপজেলার কাটাবাড়ী সীমান্তের বিদ্যুতায়িত হয়ে আরও একটি একটি বন্যহাতি নিহত হয়েছে। বনবিভাগের মধুটিলা রেঞ্জের আওতাধীন এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয়দের কাছ থেকে খবর পেয়ে শনিবার (৫ জুলাই) সকালে বনবিভাগের লোকজন ঘটনাস্থলে গিয়ে হাতিটির মরদেহ উদ্ধার করে।
খাদ্যের সন্ধানে পাহাড় থেকে নেমে আসা হাতিটি বৈদ্যুতিক ফাঁদে পড়ে নিহত হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে বনবিভাগ।
মধুটিলা রেঞ্জের রেঞ্জার দেওয়ান আলী ঘটনাটি নিশ্চিত করে জানিয়েছেন, হাতিটির শুড়ে পোড়া ক্ষতের দাগ রয়েছে। এটির বয়স ১৫ থেকে ২০ বছর হবে। এটি একটি মাদি হাতি। এ ব্যাপারে পরবর্তী প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, সাম্প্রতিককালে মধুটিলা রেঞ্জের আওতাধীন এলাকায় খাদ্যের সন্ধানে বন্যহাতি লোকালয়ে নেমে আসার ঘটনা বৃদ্ধি পেয়েছে। খেতে ফসল না থাকায় হাতির দল বাড়িঘরেও হানা দিচ্ছে। এতে স্থানীয়ভাবে অনেক পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছিল। যেখানে বন্যহাতির দেহটি পড়ে ছিল, সেখানে কোনো ধরনের বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম না থাকলেও হাতিপাগাড় ক্যাম্পের আশপাশে অনেক বসতি ও বাড়িঘর রয়েছে।
এ নিয়ে চার মাসের কম সময়ের ব্যবধানে মধুটিলা রেঞ্জ এলাকায় তিনটি বন্যহাতির মরদেহ উদ্ধার করল বনবিভাগ।
এর আগে গত ২০ মার্চ পূর্ব সমশ্চুড়া গ্রামের লালনেংগড় এলাকায় বিদ্যুতায়িত হয়ে নিহত একটি বন্যহাতির মরদেহ উদ্ধার করা হয়। তারপর গত ২৯ মে দাওধারা পাহাড় থেকে সদ্যোজাত একটি হাতিশাবকের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
ঘন ঘন হাতির মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় উদ্বেগ জানিয়েছেন পরিবেশ ও প্রকৃতিপ্রেমীরা।
নিধারঞ্জন কোচ নামে এক অধিকারকর্মী নিজের ফেসবুক ওয়ালে শনিবার নিহত হাতির মরদেহের ছবি পোস্ট করে প্রশ্ন ছুড়ে দিয়ে লিখেছেন, ‘আবারো বন্যহাতির মৃত্যু। এর শেষ কোথায়? হাতি-মানুষের দ্বন্দ্ব নিসনে সরকারি উদ্যোগ কী? ক্ষতিপূরণ প্রদানই কি যথেষ্ট? হাতি-মানুষের সহাবস্থানের পথ খুঁজতে খুঁজতে এশিয়ান হাতি নাই হয়ে যাবে!’
সিলেটের ওসমানীনগরে এনা ও ইউনিক পরিবহনের দুটি বাসের সংঘর্ষে ঘটনাস্থলেই একজন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন অন্তত ১০ জন।
শনিবার (৫ জুলাই) সকাল ৬টার দিকে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের কুরুয়া বাজারের পাশে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত রাজু মিয়ার (২৬) বাড়ি ফরিদপুর জেলার তারাকান্দা থানায়। তিনি ইউনিক বাসের হেলপার ছিলেন।
দুর্ঘটনায় আহতদের মধ্যে অন্তত দুজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সিলেট থেকে ছেড়ে আসা ইউনিক পরিবহনের বাসের সঙ্গে ঢাকা থেকে আসা এনা পরিবহনের বাসটির সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলেই ইউনিকের হেলপার রাজু মিয়ার নিহত হন। বেপরোয়া গতিতে ভুল পাশ থেকে এসে এনা পরিবহনের ওই কোচটি এ দুর্ঘটনা ঘটায় বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান।
দুর্ঘটনার খবর পেয়ে ফায়াস সার্ভিস, ওসমানীনগর থানা পুলিশ ও শেরপুর হাইওয়ে পুলিশ এসে হতাহতদের উদ্ধার করে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়।
দুর্ঘটনার পর কুরুয়া বাজারের দুই পাশে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে কয়েক কিলোমিটার যানজট দেখা দেয়। পরে সকাল সোয়া ১০টার দিকে দুর্ঘটনাকবলিত গাড়ি দুটি সরিয়ে যানজট নিরসন করে পুলিশ।
শেরপুর হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু তাহের দেওয়ান জানান, দুই গাড়ির সংঘর্ষ হলে বিকট শব্দে স্থানীয়রা এগিয়ে গিয়ে প্রাথমিক উদ্ধারকাজ শুরু করেন। পরে স্থানীয় থানা পুলিশ, হাইওয়ে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা তাতে যোগ দেন।
তিনি আরও জানান, হাইওয়ে পুলিশ রাজুর লাশ উদ্ধার করে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে। বাস দুটিকে রাস্তা থেকে সরিয়ে যান চলাচল স্বাভাবিক করা হয়েছে।
কেশবপুরের ঐতিহ্য কালোমুখো হনুমান খাদ্য সংকট ও বন উজাড় হয়ে যাওয়ায় বিভিন্ন এলাকায় চলে যাচ্ছে। প্রয়োজনীয় খাবার না পেয়ে মারাও যাচ্ছে। কালোমুখো হনুমান রক্ষার দাবি উঠেছে।
জানা গেছে, একসময় কেশবপুরে ছিল কালোমুখো হনুমানের অভয়ারণ্য। বন উজাড় হয়ে যাওয়ায় এবং খাদ্য সংকটে সময়ের গতির সঙ্গে কমে যাচ্ছে হনুমান। বর্তমানে ১৮০ থেকে ২০০টি হনুমান কেশবপুরে রয়েছে বলে স্থানীয় বন বিভাগ জানায়। এখান থেকে ৪/৫ বছর আগে ছিল ২৫০ থেকে ৩০০ টি। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, দেশ বিভক্তির আগে ভারতের মাড়োয়াররা ব্যবসা বাণিজ্যের জন্য যশোরের কেশবপুরে বসবাসের পাশাপাশি আসা-যাওয়া করত। এ সময় তাদের যানবাহনে করে দুটি কালোমুখো হনুমান ভারত থেকে কেশবপুরে আসে। সেই থেকে হনুমানের এখানে পত্তন শুরু হয়। ওই এক জোড়া হনুমান থেকে এখানে শত শত হনুমানের কালের আবর্তনে ওরা আজ বিলুপ্তির পথে। একসময় কেশবপুর অঞ্চলে ঘন বনজঙ্গল ছিল। এসব বনের ফল ও লতাপাতা খেয়ে ওরা জীবিকা নির্বাহ করত। বর্তমানে জনসংখ্যা বৃদ্ধির পাশাপাশি বন উজাড়সহ ঘনবসতি এবং এলাকায় অবৈধ ইটভাটায় গিলে খাচ্ছে এসব বনের কাঠ। এতে উজাড় হচ্ছে বন। এদিকে কেশবপুর উপজেলায় পল্লীবিদ্যুতের তারে কভার সিস্টেম না থাকায় প্রায়ই বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে ওরা মারা যাচ্ছে। খাদ্য সংকটের কারণে কেশবপুরের হনুমান দেশের বিভিন্ন এলাকায় চলে যাচ্ছে।
উপজেলা বন বিভাগের কর্মকর্তা মোনায়েম হোসেন বলেন, কেশবপুর এলাকায় বনজঙ্গল কমে যাওয়ার কারণে হনুমানের খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছে। ওদের রক্ষায় সরকারিভাবে খাদ্য সরবরাহ করা হচ্ছে।
কেশবপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার রেকসোনা খাতুন বলেন, হনুমান রক্ষায় সরকারিভাবে খাদ্য সরবরাহ করা হয়। এ ছাড়া বিভিন্ন এনজিও ব্যক্তি গত ভাবেও অনেকেই খাদ্য দেয়, যার কারণে ওরা গ্রামাঞ্চল ছেড়ে বর্তমানে শহরে বেশি বিচরণ করছে।
নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন করোনা আক্রান্ত এক বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছে।
করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত জেবল হক (৮০) কবিরহাট উপজেলার চাপরাশিরহাট ইউনিয়নের লামছি গ্রামের মৃত গনু মিয়ার ছেলে।
বুধবার (২ জুলাই) সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেন নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. রাজীব আহমেদ চৌধুরী। এর আগে, গতকাল মঙ্গলবার (১ জুলাই) রাত ১০টার দিকে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের করোনা ইউনিটে তার মৃত্যু হয়।
ডা. রাজীব আহমেদ চৌধুরী বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা আক্রান্ত হয়ে এক বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছে। গত মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে ওই বৃদ্ধ হাসপাতালে ভর্তি হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত ১০টার দিকে মারা যান তিনি। এদিকে গত ২৪ ঘন্টায় নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের এক জনের নমুনা পরীক্ষায় একজনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছে।
এ বিষয়ে জেলা সিভিল সার্জন ডা.মরিয়ম সিমি বলেন, মারা যাওয়া ব্যক্তি সকালে হাসপাতালে ভর্তি হয়। দুপুরে তার করোনা শনাক্ত হওয়ার পর সেখানে রাতে তার মৃত্যু হয়। এখন পর্যন্ত নোয়াখালীতে মোট ৩ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। কিট সল্পতার কারণে উপজেলা পর্যায়ে করোনা টেস্ট এখনো শুরু করা হয়নি।
সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের নেতৃত্ব নিয়ে চলমান বিরোধের জেরে ক্লাবের সভাপতি আবুল কাশেমসহ সাংবাদিকদের উপর অতর্কিত হামলার ঘটনা ঘটেছে। এতে অন্তত ৩০ সাংবাদিক আহত হয়েছেন।
অভিযোগ উঠেছে, ক্লাবের কথিত সভাপতি মাদকাসক্ত আওয়ামী দোসর আবু সাঈদ ও সাধারণ সম্পাদক আব্দুল বারীর নেতৃত্বে আল ইমরান ও অমিত ঘোষ বাপ্পাসহ ভাড়াটে সন্ত্রাসী ও মাদকাসক্তরা এই হামলা চালায়।
সোমবার (৩০ জুন) সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সামনে এই হামলায় ইন্ডিপেনডেন্ট টেলিভিশনের সাংবাদিক ও প্রেসক্লাবের সভাপতি আবুল কাশেম, ভোরের আকাশের সাংবাদিক আমিনুর রহমান, ডিবিসি নিউজের সাংবাদিক বেলাল হোসেন, অনির্বানের সোহরাব হোসেনসহ অন্তত ৩০ সাংবাদিক গুরুতর আহত হয়েছেন।
হামলার শিকার সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সভাপতি আবুল কাশেম বলেন, আমরা শান্তিপূর্ণভাবে প্রেসক্লাবে একটি সভা করার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। ঠিক সেই মুহূর্তে আবু সাঈদ ও আব্দুল বারীর নেতৃত্বে আলিপুর থেকে আনা ভাড়াটে সন্ত্রাসী ও মাদকাসক্তরা আমাদের উপর পরিকল্পিতভাবে হামলা করে। তাদের হামলায় আমাদের অন্তত ৩০ জন সাংবাদিক ও সদস্য আহত হয়েছেন।
তিনি আরও অভিযোগ করেন, আবু সাঈদ ও আব্দুল বারী দীর্ঘদিন ধরে অবৈধভাবে প্রেসক্লাব দখল করে রেখেছেন এবং তাদের মতের বিরুদ্ধে গেলেই এভাবে হামলা ও নির্যাতন চালানো হয়।
এই ন্যাক্কারজনক হামলার ঘটনায় সাতক্ষীরার সাংবাদিক মহলে তীব্র ক্ষোভ ও উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। সাংবাদিকরা অবিলম্বে হামলাকারীদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনার জোর দাবি জানিয়েছেন।
ঘটনার পর থেকে প্রেসক্লাব এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
কুমিল্লার দাউদকান্দি পৌরসভার ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট ঘোষণা করা হয়েছে। বাজেট ঘোষণা করেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও দাউদকান্দি পৌর প্রশাসক রেদওয়ান ইসলাম।
সোমবার (৩০ জুন) দুপুরে পৌরসভা হলরুমে এ বাজেট ঘোষণা করা হয়। বাজেটে সর্বমোট আয় ৪২ কোটি ৯১ লাখ ৫৯ হাজার টাকা ও মোট ব্যয় ৩৬ কোটি ৭৪ হাজার টাকা প্রস্তাব করা হয়। পৌর প্রশাসক রেদওয়ান ইসলাম তার প্রস্তাবিত বাজেটে ২০২৫-২৬ অর্থ বছরে রাজস্ব খাত থেকে ১৩ কোটি ২৩ লাখ ৪১ হাজার ৩ শত ৩১ টাকা ও উন্নয়ন খাত থেকে ২৯ কোটি ৬৮ লাখ ১৮ হাজার ৪৫ টাকা আহরনের লক্ষমাত্রা নির্ধারন করা হয়েছে। বাজেটে উদ্ধৃত্ত ধরা হয়েছে ৬ কোটি ১৭ লাখ ২ হাজার ৩ শত ৭৮ টাকা।
এছাড়াও বাজেটে খাতওয়ারী ব্যয়ের হিসেবে দেখা যায় রাজস্ব খাতে ব্যয় ৯ কোটি ৫৯ লাখ ৫৭ হাজার টাকা এবং উন্নয়ন ব্যয় দুই কোটি ১৫ লাখ টাকা ধরা হয়েছে।
এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা.হাবিবুর রহমান,পৌরসভার নির্বাহী কর্মকর্তা তাজুল ইসলাম, হিসাবরক্ষক শাহাদাত হোসেনসহ পৌরসভার অন্যান্য কর্মকর্তারা।
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে মাদকাসক্ত হয়ে মাতলামি করার প্রতিবাদ করায় ইয়াছিন (৩৮) ও সিপন( ৩২) নামে দুই যুবক গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। আহতদের মধ্যে একজনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং অপরজনকে রূপগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
শুক্রবার দিবাগত রাতে উপজেলার মুড়াপাড়া টঙ্গীরঘাট এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
গুলিবিদ্ধ ইয়াছিন মুড়াপাড়ার হাউলিপাড়া এলাকার ইদু মিয়ার ছেলে এবং সিপন টঙ্গীরঘাট এলাকার আলাউদ্দিনের ছেলে।
রূপগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) তরিকুল ইসলাম জানান, রাত ১১টার দিকে ইয়াছিন তার স্ত্রীকে নিয়ে বিয়ের অনুষ্ঠান শেষে খালাতো বোনের বাড়ি যাচ্ছিলেন। পথে স্থানীয় সোহরাব নামের এক যুবক মাদকাসক্ত অবস্থায় তাদের উদ্দেশে গালিগালাজ করলে ইয়াছিন প্রতিবাদ করেন। পরে তিনি খালাতো ভাই সিপনকে নিয়ে স্থানীয় অহিদুল্লার বাড়িতে গিয়ে ঘটনার কথা জানান। সেখানেই সোহরাব ক্ষিপ্ত হয়ে পিস্তল দিয়ে তাদের লক্ষ্য করে গুলি চালায়। এতে ইয়াছিনের মাথায় ও সিপনের পায়ে গুলি লাগে।
তাদের প্রথমে স্থানীয় একটি বেসরকারি হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে সিপনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং ইয়াছিনকে রূপগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।
ঘটনার পরপরই পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে গুলির খোসা উদ্ধার করেছে এবং জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তিনজনকে আটক করেছে। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।
মন্তব্য