বেশ কয়েক বছর আগে চাঁদপুরের মোলহেডের সামনে মেঘনা নদীতে জেগে ওঠে চর। দ্রুতই তা জনপ্রিয় হয়ে ওঠে দর্শনার্থীদের কাছে। পরিচিতি পায় ‘মিনি কক্সবাজার’ নামে।
কিন্তু এই চরের কারণে হুমকির মুখে পড়েছে চাঁদপুর শহররক্ষা বাঁধ।
পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) জানায়, বাঁধ টিকিয়ে রাখতে জরুরি ভিত্তিতে চর খননের পাশাপাশি বাঁধের স্থায়ী সংস্কার প্রয়োজন। তা না হলে চাঁদপুর শহর মেঘনায় তলিয়ে যাওয়ার শঙ্কা রয়েছে।
মাঝ নদীতে ‘মিনি কক্সবাজার’ জেগে ওঠায় সংকুচিত হয়ে গেছে মেঘনা। বর্ষা মৌসুমে ভাটির দিকে উজান থেকে নেমে আসা পানি প্রবাহে দেখা দিচ্ছে সমস্যা। পানির চাপে শহররক্ষা বাঁধ এলাকায় নদী গভীর থেকে আরও গভীর হচ্ছে। একই সঙ্গে বাড়ছে ঘূর্ণিস্রোত ও ঢেউ। এতে ঝুঁকিতে পড়েছে চাঁদপুর শহর।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ধীরে ধীরে চর বিস্তৃত হওয়ার পাশাপাশি বাঁধ এলাকায় বাড়ছে মেঘনা নদীর গভীরতা। বাঁধ এলাকায় মেঘনা নদীর গভীরতা সর্বোচ্চ ৫৭ মিটার পর্যন্ত। শিগগির মেঘনার বুকে নতুন করে জেগে ওঠা চর পরিকল্পিতভাবে খননের পাশাপাশি শহররক্ষা বাঁধের স্থায়ী সংস্কারের উদ্যোগ না নিলে ভাঙনের কবলে পড়তে পারে চাঁদপুর শহর।
পদ্মা, মেঘনা ও ডাকাতিয়ার অববাহিকায় গড়ে উঠেছিল চাঁদপুর জেলা। এক সময় চাঁদপুরের দুঃখ বলা হতো মেঘনাকে। মেঘনার করাল গ্রাসে দিশেহার ছিল জেলার বাসিন্দারা। এই নদীর ভাঙনে জমিজমা, বসত ভিটা হারিয়ে নিঃস্ব হয়েছেন অনেক মানুষ। স্বাধীনতা পরবর্তী বিভিন্ন সময়ে নদী ভাঙনরোধে নির্মাণ করা হয় শহররক্ষা বাঁধ। পরে ভাঙনের মুখে এ বাঁধ তেমন স্থায়ী হয়নি।
পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায়, চাঁদপুর শহর ভাঙনরোধে ১৯৭২ সাল থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত ১৪০ কোটি ৩০ লাখ টাকা ব্যয়ে নতুন বাজার এলাকায় ১৭৩০ মিটার শহররক্ষা বাঁধ নির্মাণ করা হয়। পরে ২০০৯-২০১০ সালে আরও প্রায় ২৪ কোটি ৯০ হাজার টাকা ব্যয়ে পুরান বাজার এলাকার ১৬৩০ মিটার এলাকায় বাঁধ নির্মাণ করা হয়।
এরপর থেকেই বদলাতে থাকে ভাঙনের চিত্র। চাঁদপুরের মানুষ ফিরে পায় স্বস্তি। কিন্তু বাঁধ নির্মাণের পর দীর্ঘ সময় পার হলেও তা রক্ষায় নেয়া হয়নি কোন স্থায়ী উদ্যোগ।
স্থানীয় লোকজন জানান, প্রতি বছর বর্ষায় মেঘনা নদীতে ভাঙন দেখা দিলে ভাঙনরোধে গ্রহণ করা হয় অস্থায়ী ব্যবস্থা। এতে সরকারের কোটি কোটি টাকা ব্যয় হলেও বাঁধ রক্ষায় আসেনি স্থায়ী সমাধান।
জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের দেওয়া তথ্য মতে, গত ২০১৯ ও ২০২০ সালে চাঁদপুর শহরের পুরানবাজার হরিসভা এলাকায় একাধিকবার ভাঙনের শিকার হয়েছে শহররক্ষা বাঁধটি। এতে ৬৭ মিটার এলাকা নদী গর্ভে বিলীন হয়েছে। বাঁধ রক্ষায় অস্থায়ীভাবে কাজ হয়েছে কয়েক কোটি টাকার। এর মধ্যে ২০১৭-১৮ সালে ৫৮ মিটার সংস্কার কাজে ব্যয় হয় ২৮ লাখ টাকা, ২০১৮-১৯ সালে ৪৮৫ মিটার সংস্কার কাজে ব্যয় হয় ২ কোটি ২৯ লাখ টাকা এবং ২০১৯-২০ সালে ৩২৪ মিটার সংস্কার কাজে ব্যয় হয় ১ কোটি ১১ লাখ টাকা।
মেঘনা নদীতে নতুন করে ভেসে ওঠা চরটি দৈর্ঘে প্রায় তিন কিলো মিটার। শীত মৌসুমে চরটি ভেসে থাকলেও বর্ষায় ডুবে যায়। নদীর সৌন্দর্য উপভোগের পাশাপাশি শীতের সময়ে চাঁদপুরসহ আশপাশের জেলা থেকে অনেকে চরে বেড়াতে যান। এই চরই কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে চাঁদপুর শহররক্ষা বাঁধের জন্য।
পুরানবাজার শহররক্ষা বাঁধ এলাকার বাসিন্দারা জানান, গত ২০১৯ সাল থেকে ভাঙনে অন্তত শতাধিক মানুষ হারিয়েছেন তাদের বাসস্থান। এভাবে চলতে থাকলে অচিরেই মেঘনায় বিলীন হবে এ বাঁধ।
স্থানীয় আরেক বাসিন্দা নাছির উদ্দিন বলেন, ‘নদীর মাঝে চর সৃষ্টি হওয়ায় বর্ষায় পাড়ে তীব্র স্রোত ও ঢেউ দেখা দেয়। এতে বাঁধে ভাঙন ধরে। আমাদের একটাই দাবি, অতিদ্রুত যেন শহররক্ষা বাঁধের স্থায়ীভাবে সংস্কার করা হয়।’
চাঁদপুর চেম্বারের পরিচালক গোপাল চন্দ্র সাহা বলেন, ‘ব্রিটিশ আমল থেকেই পুরানবাজার ঐতিহ্যবাহী একটি বাজার। বিভিন্ন সময়ে নদী ভাঙনের কবলে পড়ে বাজার অনেকটাই এখন বিলুপ্তির পথে। ভাঙনরোধে অচিরেই শহররক্ষা বাঁধের স্থায়ী ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানাই।’
এ বিষয়ে চাঁদপুর সরকারি কলেজের ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মো. ওয়াহিদুজ্জামান বলেন, মোলহেড এলাকায় মেঘনার মধ্যখানে চর জেগে ওঠায় নদী সংকুচিত হয়ে গেছে। এর উত্তর পাশে নদীর প্রশস্ততা অনেক। এতে বর্ষায় পানির চাপ বেড়ে পাড়ে ঘূর্ণির সৃষ্টি হয়ে ভাঙন দেখা দেয়। চরটি পরিকল্পিত খননের পাশাপাশি শহররক্ষা বাঁধ স্থায়ীভাবে সংস্কার করা অত্যন্ত জরুরি। তা না হলে চাঁদপুর শহর বড় ধরনের ভাঙনের মুখোমুখি হতে পারে।
চাঁদপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী রেফাত জামিল বলেন, ২০০৯-২০১০ সালের পর বাঁধের স্থায়ী সংস্কার কাজ হয়নি। পরে বাপাউবো গঠিত কারিগরী কমিটির অনুমোদিত নকশা অনুযায়ী ৪২০ কোটি টাকার একটি স্থায়ী রক্ষণাবেক্ষণ প্রকল্প তৈরি করে ২০২০ সালের জানুয়ারিতে পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়।
মার্চই মন্ত্রণালয়ে যাচাই কমিটির সভায় সিদ্ধান্ত হয়, তিন নদীর সংযোগে চাঁদপুর শহরের হাইড্রো-মরফোলজিক্যাল অবস্থা পর্যালোচনা করে বিস্তারিত সমীক্ষার প্রস্তাব পুনর্গঠনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
তিনি বলেন, গত বছর ২৭ আগস্ট বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. আতাউর রহমান, আইডব্লিউএমের প্রিন্সিপাল সারওয়াত জাহানসহ বিভিন্ন দপ্তরের বিশেষজ্ঞদের নিয়ে একটি কমিটি করা হয়। কমিটি একটি সমীক্ষা প্রতিবেদন দেয়। ওই প্রতিবেদনের আলোকে চলতি বছরের জানুয়ারিতে তিন হাজার ১০৩ কোটি ২ লাখ টাকার চাঁদপুর শহর সংরক্ষণ পুনর্বাসন প্রকল্প মন্ত্রণালয়ে জমা দেয়া হয়।
মন্ত্রণালয়ে যাচাই কমিটি চলতি বছরের ৪ মার্চ আবার সম্ভাব্যতা সমীক্ষার মাধ্যমে প্রকল্পের পরিধি এবং কারিগরি বিষয় চূড়ান্ত করার পরামর্শ দেয়। সব কাজ শেষ করে আবারও তা ২ জুন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।
পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী রেফাত জামিল বলেন, শহররক্ষা বাঁধ টিকিয়ে রাখতে হলে জরুরি ভত্তিতে নদীর মাঝে জেগে ওঠা চর খনন করে মেঘনার গতিপথ ঠিক করতে হবে। পাশাপাশি শহর রক্ষা বাঁধের স্থায়ী সংস্কার প্রয়োজন। তা না হলে শহররক্ষা বাঁধ বিলীন হয়ে চাঁদপুর শহর তলিয়ে যাওয়ার শঙ্কা রয়েছে।
আরও পড়ুন:ফেনীতে বন্যার পানি নামতে শুরু করেছে। এর সঙ্গে দেখা দিয়েছে নতুন এক আতঙ্ক। বন্যার কবল থেকে রক্ষা পেতে মানুষের বাড়িঘরে আশ্রয় নিয়েছিল নানা প্রজাতির সাপ। এখন ঘরে ফিরলেও সাপ আতঙ্ক বিরাজ করছে স্থানীয়দের মাঝে। এরই মধ্যে পরশুরামে বিষধর সাপের কামড়ে রোকেয়া আক্তার রিনা (৫০) নামে এক গৃহবধুর মৃত্যু হয়েছে।
শুক্রবার (১১ জুলাই) বিকাল ৫টার দিকে ফেনীর পরশুরামের পৌর এলাকার সলিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত রিনা পৌর এলাকার সলিয়া গ্রামের শফিকুল ইসলাম শহীদের স্ত্রী। তার এক ছেলে দুই মেয়ে রয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, বন্যার পানি শুকিয়ে গেলে রান্না করার জন্য রান্নাঘরে গেলে সেখানে একটি অজ্ঞাত বিষধর সাপ রিনাকে কামড় দেয়। তাকে উদ্ধার করে প্রথমে পরশুরাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। এরপর ফেনী ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
নিহতের স্বামী শফিকুল ইসলাম জানান, শুক্রবার বিকাল ৫টার দিকে রিনা রান্না ঘরে যায়। এ সময় রান্নাঘরের একটি গর্ত থেকে বিষধর একটি সাপ বের হয়ে তার পায়ে কামড় দেয়। তার চিৎকার শুনে তাকে উদ্ধার করে প্রথমে পরশুরাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্রেক্স নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তার কোনো চিকিৎসা না হওয়ায় ফেনী সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। হাসপাতালে নেওয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ফেনী ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডাক্তার রেদোয়ান বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, হাসপাতালে আনার আগেই ওই গৃহবধূর মৃত্যু হয়েছিল।
টানা ৩ দিনের বৃষ্টিতে বেনাপোল বন্দর এলাকায় জলবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। বন্দর অভ্যন্তরের অনেক স্থানে হাটু পানি জমায় মারাত্বক ভাবে ব্যহত হচ্ছে পণ্য খালাস প্রক্রিয়া। যানবাহন ও নিরাপত্তাকর্মীদের চলাচলে অনুপযোগী হয়ে পড়ায় বন্দরের ৯.১২.১৫.১৬ ও ১৮ নম্বর সেড থেকে লোড আনলোড বন্ধ হয়ে আছে।
ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় সামান্য বৃষ্টি হলেই বন্দরে হাটু পানি জমে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়ে থাকে। কয়েক বছর ধরে এ দূর্ভোগ হলেও নজর নাই বন্দর কর্তৃপক্ষের। তবে বন্দর কর্তৃপক্ষ বলছেন, রেলকর্তৃপক্ষ কালভাট না রেখে মাটি ভরাট করায় পানি নিষ্কাসনে বাধা গ্রুস্থ্য হচ্ছে।
তবে এসব শেড ও ওপেন ইয়ার্ড অধিকাংশই দীর্ঘ মেয়াদি পরিকল্পনা নিয়ে তৈরী হয়নি। বন্দর সড়কের উচ্চতার চেয়ে পণ্যগারগুলো নিচু হওয়ায় একটু বৃষ্টিপাত বেশি হলে পানি নিষ্কাষনের অভাবে পণ্যগার ও ইয়াডে জলবদ্ধতা তৈরী হয়। এতে পানিতে ভিজে যেমন পণ্যের গুনগত মান নষ্ট হয় তেমনি চলাচলের বিঘ্ন ঘটছে। তবে আজ সকাল থেকে সেচ যন্ত্র চালিয়ে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
বেনাপোল বন্দর পরিচালক শামিম হোসেন জানান, বন্দরের জলবদ্ধতা প্রতি বছরে তৈরী হয়। বিশেষ করে রেল বিভাগ কালভাট না রেখে মাটি ভরাট করায় সমস্যার সন্মুখিন হতে হচ্ছে। বন্দরের পানি নিষ্কাসন ব্যবস্থা বন্ধ হয়ে পড়েছে। তবে দ্রুত এ অবস্থা কাটিয়ে তুলতে পাশ্ববর্তী হাওড়ের সাথে বন্দরের ড্রেন তৈরীর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। প্রেরক: রাশেদুর রহমান রাশু, বেনাপোল যশোর ।
কক্সবাজারের চকরিয়ায় গত রোববার (৬ জুলাই) মালুমঘাট বাজার থেকে পুলিশের উপর হামলা চালিয়ে এক যুবক পালিয়ে যায়। পালিয়ে যাওয়া সে যুবক সাজ্জাদ হোসেন (২০) কে কক্সবাজারের ডিবি পুলিশ কলাতলীর একটি আবাসিক হোটেল থেকে আটক করে।
মঙ্গলবার (৮ জুলাই) দিবাগত রাত তিনটায় কক্সবাজারের একটি আবাসিক হোটেল (ওয়ার্ল্ড বিচ রিসোর্ট) অভিযান পরিচালনা করে কক্সবাজারের ডিবি পুলিশ। রাত প্রায় তিনটায় নেশাগ্রস্ত অবস্থায় ওই হোটেলের একটি কক্ষ থেকে তাকে আটক করা হয়।
চকরিয়া থানা পুলিশের বিশেষ নজরদারি ও কক্সবাজারের গোয়েন্দা পুলিশের শ্বাসরুদ্ধকর অভিযানে আসামি সাজ্জাদ হোসেন কে আটক করতে সক্ষম হয় কক্সবাজার ডিবি পুলিশ।
এবিষয়ে চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম বলেন, পলাতক আসামি সাজ্জাদ কে কক্সবাজার ডিবি পুলিশ আটক করেছে। প্রাথমিকভাবে সদর মডেল থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর চকরিয়া থানায় নিয়ে আসা হবে। তার বিরুদ্ধে একটি পুলিশ এসল্ট মামলা করা হয়েছে।
পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জে করতোয়া নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের অভিযোগে যৌথবাহিনীর অভিযানে একজনকে দুই লাখ টাকা অর্থদণ্ড প্রদান করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (৮ জুলাই) রাত ৯টার দিকে শালডাঙ্গা ইউনিয়নের ধুলাঝাড়ি বাজারের করতোয়া নদীসংলগ্ন এলাকায় অভিযানটি চালানো হয়।
দেবীগঞ্জ সেনা ক্যাম্পের ক্যাম্প কমান্ডার মেজর জুবায়ের হোসেন সিয়ামের নেতৃত্বে সেনাবাহিনী ও দেবীগঞ্জ থানা পুলিশের সমন্বয়ে এ অভিযান পরিচালিত হয়।
অভিযানে বালু উত্তোলনের কাজে ব্যবহৃত দুইটি ট্রাক্টরসহ চালক রাজু ইসলাম ও শান্ত আহমেদকে আটক করা হয়। পরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাহমুদুল হাসান ঘটনাস্থলে এসে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন।
আদালতের রায়ে রাজু ইসলামকে বালু মহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইনের ধারা লঙ্ঘন করায় দুই লাখ টাকা অর্থদণ্ড দেওয়া হয়, অনাদায়ে তিন মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেন বিচারক। তবে রাজু ইসলাম অর্থদণ্ডের অর্থ পরিশোধ করায় ট্রাক্টর দুটি ছেড়ে দেওয়া হয়।
স্থানীয় প্রশাসন জানায়, অবৈধভাবে বালু উত্তোলন রোধে যৌথবাহিনীর অভিযান চলমান থাকবে।
কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলায় মাত্র এক মাসের ব্যবধানে একই ক্লিনিকে সিজারিয়ান ডেলিভারির সময় দুই প্রসূতির মৃত্যু হয়েছে। সর্বশেষ সোমবার (৭ জুলাই) রাতে মুন্নি খাতুন (২৫) নামে এক অন্তঃসত্ত্বা নারী সিজারিয়ান অপারেশনের সময় মারা যান। এর আগে ৮ জুন ওই ক্লিনিকেই আখি খাতুন (২২) নামের আরেক প্রসূতির মৃত্যুর অভিযোগ ওঠে। পরপর এমন দু’টি মৃত্যুর ঘটনায় এলাকায় চরম উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। ক্লিনিক মালিকের ছেলে মাছরাঙ্গা টেলিভিশনের কুষ্টিয়া জেলা প্রতিনিধি হওয়ায় প্রভাব খাটিয়ে বিষয়টি ধামাচাপা দেয়ার চেস্টা করছে বলে জানাগেছে।
সোমবার রাতে মুন্নির মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী ক্লিনিক মালিক আবুল হোসেনের ব্রাকপাড়া এলাকার বাড়িতে হামলা চালিয়েছে বলে জানিয়েছেন পুলিশ। পরে তারা গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
নিহত মুন্নি খাতুন উপজেলার তারাগুনিয়া ব্রাকপাড়া এলাকার মঞ্জু হোসেনের মেয়ে। আর নিহত আখি খাতুন পূর্ব কবিরাজপাড়া গ্রামের ইমনের স্ত্রী।
মুন্নির পরিবারের সদস্যরা জানান, গর্ভাবস্থায় জটিলতা দেখা দিলে সোমবার তাকে উপজেলার বিভিন্ন ক্লিনিকে নেওয়া হয়। কিন্তু চিকিৎসকরা ঝুঁকির কথা বলে কুষ্টিয়া বা রাজশাহীতে রেফার করার পরামর্শ দেন। সন্ধ্যায় তাকে তারাগুনিয়া থানার মোড় বাজারের আবুল হোসেনের মালিকানাধীন তারাগুনিয়া ক্লিনিক নামের একটি বেসরকারি ক্লিনিকে নেওয়া হলে কর্তৃপক্ষ সিজারিয়ানে সম্মত হয়। কিন্তু রাত ৯টার দিকে অপারেশনের সময়ই মুন্নির মৃত্যু হয়।
এ বিষয়ে তারাগুনিয়া ক্লিনিকের মালিক আবুল হোসেন বলেন, “রোগী কীভাবে মারা গেছে সেটা ডাক্তাররাই ভালো বলতে পারবেন। আমি নিজে অপারেশনে ছিলাম না, তাই কিছু জানি না। টাকা দিয়ে বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন।”
অপারেশনকারী চিকিৎসক ডা. সফর আলী বলেন, “রোগীকে ওটিতে আনার আগে অ্যানেসথেসিয়া চিকিৎসক ওষুধ প্রয়োগ করেন। আমরা ওটিতে ঢুকেই দেখি রোগী স্ট্রোক করেছে। এরপর দ্রুত নবজাতকের প্রাণ রক্ষায় সিজারিয়ান সম্পন্ন করি।”
এ বিষয়ে দৌলতপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. তৌহিদুল হাসান তুহিন বলেন, “একই প্রতিষ্ঠানে পরপর দুই প্রসূতির মৃত্যু অত্যন্ত উদ্বেগজনক। আমরা বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে খতিয়ে দেখছি। আজই ক্লিনিকটি পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”
দৌলতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজমুল হুদা বলেন, “গতকাল রাতে তারাগুনিয়া এলাকার একটি ক্লিনিকে প্রসূতির মৃত্যুর ঘটনায় ক্লিনিক এলাকায় উত্তেজনা ও হট্টগোলের আশঙ্কায় আমি তাৎক্ষণিকভাবে পুলিশ পাঠাই। পরে জানতে পারি, নিহত নারীর এলাকা থেকে কিছু লোকজন ক্লিনিক মালিকের বাড়িতে হামলা চালায়। আমরা দ্রুত সেখানে পুলিশ পাঠিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনি। প্রসূতির মৃত্যুর ঘটনায় এখন পর্যন্ত থানায় কোনো লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়নি। শুনেছি দুই পক্ষ নিজেদের মধ্যে বিষয়টি সমাধান করে নিয়েছে।”
এবিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবদুল হাই সিদ্দিকী বলেন, এক মাসের মধ্যে দুইজন রোগীর মৃত্যু অত্যান্ত দুঃখজনক। ঘটনায় কর্তৃপক্ষকে বলবো তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য।
একই ক্লিনিকে এক মাসের ব্যবধানে দুই প্রসূতির মৃত্যুকে কেন্দ্র করে এলাকায় চরম ক্ষোভ ও আতঙ্ক বিরাজ করছে। এ ঘটনায় স্থানীয়রা স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে দ্রুত তদন্ত করে দায়ীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন।
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি'র জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও ভোলা-২ (বোরহানউদ্দিন-দৌলতখানের) সাবেক সংসদ সদস্য মো: হাফিজ ইব্রাহিমের নামে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার কাছে সেলিম নামে এক ব্যক্তির দেওয়া অভিযোগটি মিথ্যা, বানোয়াট ও ষড়যন্ত্রমূলক বলে দাবি করা হয়েছে।
রোববার বিকেলে বোরহানউদ্দিন উপজেলার বড়মানিকায় শহীদ জিয়া স্মৃতি সংসদের আয়োজনে বৃক্ষরোপন কর্মসূচিতে গণমাধ্যমকর্মীদের দেয়া স্বাক্ষাতকারে এ দাবি করেন হাফিজ ইব্রাহিম।
এর আগে দৈনিক ইত্তেফাক, সমকাল, যায়যায়দিন সহ বেশ কয়েকটি পত্রিকার ডিজিটাল প্লাট ফরমে একটি সংবাদে দেখা যায়, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার কাছে হাফিজ ইব্রাহিমের বিরুদ্ধে জোরপূর্বক জমি দখলের অভিযোগ তুলে সেলিম নামে এক ব্যক্তি অভিযোগ করছেন।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে গণমাধ্যমকর্মীদের হাফিজ ইব্রাহিম বলেন, সংবাদটি ডিজিটাল প্লাট ফরমে প্রকাশ হওয়ার পর আমার নজরে আসে। আমি মনোযোগ দিয়ে তার অভিযোগ শুনি। যে ব্যক্তি আমার নামে জমি দখলের অভিযোগ তুলেছেন। তিনি আমার নির্বাচনী এলাকার বাসিন্দা না। আমি খবর নিয়ে জেনেছি, তিনি ভোলা-১ সদর আসনের বাসিন্দা ভোলা সদর আসনের সাবেক এমপি ও মন্ত্রী মরহুম মোশারেফ হোসেন শাহজাহানের বাড়ির পাশে তার বাড়ি। আমি খোঁজ নিয়ে জানতে পারি সেলিম নামে ওই ব্যক্তির সাথে তার আপন ভাতিজি জামাইয়ের দীর্ঘদিন ধরে জমি-জমা নিয়ে বিরোধ রয়েছে তার ভাতিজি জামাই তাকে হুমকি ধামকি দিয়ে থাকতে পারে এ বিষয়ে আমার কিছুই জানা নেই। এমনকি ওই বিষয়ে ভোলা সদর থানায় মামলা রয়েছে।
হাফিজ ইব্রাহিম আরও বলেন, আসন্ন সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে একটি মহল আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে। পতিত সরকারের পলাতক একটি কুচক্রী মহল বিএনপির নামে মিথ্যা প্রোপাগান্ডা ছড়াচ্ছে ও দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে। তিনি সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে বলেন আপনারা এই ঘটনার পেছনে যে আসল সত্য রয়েছে তা উদঘাটন করুন।
জুলাই-আগস্ট ছাত্র আন্দোলনের সময় রাজশাহী মহানগরীর একটি থানা থেকে লুট হওয়া অস্ত্র, ম্যাগাজিন ও গুলি উদ্ধার করেছে র্যাব-৫।
রোববার রাত সাড়ে ১২টার দিকে নগরীর টিকাপাড়া এলাকার একটি বালুর স্তূপের আনুমানিক ২ ফুট গভীর থেকে এগুলো উদ্ধার করা হয়।
সোমবার সকালে র্যাব-৫ এর মিডিয়া সেল থেকে পাঠানো প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।
অভিযানে একটি ৭.৬২ মি.মি. বিদেশি পিস্তল, একটি ম্যাগাজিন এবং এক রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়েছে।
র্যাব জানায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র্যাব-৫; সিপিএসসি’র একটি আভিযানিক দল জানতে পারে, ছাত্র আন্দোলন চলাকালীন লুট হওয়া অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র, ম্যাগাজিন ও গুলি দুষ্কৃতকারীরা বোয়ালিয়া থানাধীন টিকাপাড়া এলাকায় লুকিয়ে রেখেছে। পরে নিরপেক্ষ সাক্ষীদের উপস্থিতিতে অভিযান চালিয়ে বালুর স্তূপের ভেতর থেকে বিদেশি পিস্তল, ম্যাগাজিন ও গুলি উদ্ধার করে র্যাবের গোয়েন্দা দল।
এ বিষয়ে বোয়ালিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বাসস’কে জানান, এটি পুলিশের ব্যবহৃত আগ্নেয়াস্ত্র। তবে কোন থানার অস্ত্র সেটি নিশ্চিত করা যায়নি। কারণ পিস্তলের গায়ে বাট নম্বর ঘষা-মাজার চিহ্ন স্পষ্ট। উদ্ধারকৃত বিদেশি পিস্তল, ম্যাগাজিন ও গুলি বোয়ালিয়া থানায় জিডির পর হস্তান্তর করা হয়েছে।
মন্তব্য