১৭ বছর আগে রাজধানীতে আওয়ামী লীগের সমাবেশে গ্রেনেড হামলার দিবসে ওই ঘটনার স্মৃতিচারণ করলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। জানালেন, ওই দিন স্বয়ং সৃষ্টিকর্তা তাকে নিজ হাতে বাঁচিয়েছেন।
বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে শনিবার সকালে ২১ আগস্ট বোমা হামলার দিন স্মরণে এক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আগস্ট মাসটা শুধুই আসে আমাদের জন্য যেন শোক আর কষ্টের বার্তা নিয়ে। ১৫ আগস্ট হারিয়েছি বাবা, মা, ভাই, পরিবার পরিজনকে। আগস্ট মাসটা আসেই যেন একটা শোক, ব্যথা, বেদনা নিয়ে।
বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার ক্ষমতা দখল করল। তাদের অত্যাচারটা যেন শুরু হয়েছিল ১ অক্টোবর থেকেই। অথবা আমি বলব, জুলাই মাসে আমরা যখন ক্ষমতা হস্তান্তর করলাম তার সাথে সাথেই। তারা একটা অদৃষ্ট শক্তির বলয়ে তাদের মধ্যে দুর্বৃত্তায়ণ শুরু হলো। আমাদের সামরিক-অসামরিক অনেক অফিসার, তাদের ওএসডি করা, চাকরিচ্যুত করা থেকে শুরু করে আওয়ামী লীগের অগণিত নেতাকর্মীর উপর অকথ্য অত্যাচার নির্যাতন শুরু করল।’
তিনি বলেন, ‘নির্বাচনের পর বিএনপি যখন ক্ষমতায় আসল শুরু হলো সারা দেশে আওয়ামী লীগের নেতাকমীদের ওপর আক্রমণ। হাজার হাজার নেতাকর্মীকে হত্যা করা, গ্রেপ্তার করা, গুম করে ফেলা, নারীদের ওপর পাশবিক অত্যাচার। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী যেভাবে নির্যাতন করেছিল, ঠিক একই কায়দায় সে নির্যাতন শুরু করল।
‘এর এক পর্যায়ে হত্যা নির্যাতন জঙ্গিবাদ সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে শান্তির পক্ষে আমরা একটা র্যালি করার সিদ্ধান্ত নিলাম। আমরা চেয়েছিলাম মুক্তাঙ্গনে করতে, কিন্তু বিএনপি সরকার অনুমতি দেয়নি। যখন অনেকবার চেষ্টা করেও হলো না তখন আমরা সিদ্ধান্ত নিলাম আওয়ামী লীগ অফিসের সামনেই করব।’
সমাবেশের প্রস্তুতি তুলে ধরে সরকার প্রধান বলেন, ‘পোস্টার করা হলো, পত্রিকায় বিজ্ঞাপণ আমরা দিলাম। পুরো ঢাকা ও বাংলাদেশে এটা প্রচার করা হলো। ঠিক রাত সাড়ে ১১টা-১২ টার দিকে একটা পারমিশন আসলো যে মুক্তাঙ্গনে করা যাবে। পরের দিনই র্যালি। আমরা বললাম, আওয়ামী লীগের অফিসের সামনে আমাদের মাইক টাইক লাগানো হয়ে গেছে সেখানেই করব।
‘কারণ হঠাৎ করে এই পরমিশন দিলো কেন? রহস্যটা কি? আমরা শুরু থেকেই সন্দিহান ছিলাম, কিন্তু এভাবে যে প্রকাশ্য দিবালোকে আর্জেস গ্রেনেড মেরে হত্যা প্রচেষ্টা চালাবে এটা কখনও স্বপ্নেও ভাবতে পারিনি।’
তিনি বলেন, ‘তার আগে কিন্তু খালেদা জিয়া বক্তৃতা দিয়েছে। আমার নাম ধরেই দিয়েছে যে প্রধানমন্ত্রী তো দূরের কথা বিরোধীদলের নেতাও কোনোদিন হতে পারব না। এর আগে কোটালি পাড়ায় বোমা যখন পোতে তার আগে বলেছিল একশ বছরেও আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসতে পারবে না। কাজেই আমরা তারপরেও সেখানে র্যালি করতে গেলাম।’
‘গায়ে শুধু রক্ত পড়ছে’
একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলার ঘটনায় মৃত্যুপুরীতে পরিণত হয় আওয়ামী লীগের সমাবেশ। সেই হামলার মূল উদ্দেশ্যই ছিল তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেতা শেখ হাসিনাকে হত্যা করা। আলোচনা সভায় শেখ হাসিনার বর্ণনায় ১৭ বছর পরও জীবন্ত হয়ে সেই মুহুর্ত।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘ট্রাকেই মঞ্চ করা হয়েছে। আমি উঠে বক্তৃতা দিলাম। মাইকটা রাখতে যাব, এ সময় আমাদের ফটো সাংবাদিক গোর্কি সে এসে বলল, আমি তো ছবি নিতে পারিনি। সাংবাদিকরা সব ট্রাকেই চালকের উপরের ছাদে বসা। ওরাও চিৎকার শুরু করল, আপা ছবি নিতে পারিনি, একটা মাইকটা ধরেন। মাইকটা তখনও আমার হাতে।
‘আমি নিচে নামছিলাম, থমকে দাঁড়ালাম। এর মধ্যেই গ্রেনেডের আওয়াজ। সাথে সাথে আমাকে, হানিফ ভাই পাশেই দাঁড়ানো ছিল। হানিফ ভাই ওইদিন বারবার কেন যেন ঘুরে দাঁড়াচ্ছিল। আমি বলছিলাম, আমি তো কাউকে দেখতে পারছি না, আপনি একটু সরেন। তো আমাকে বলছিল, না আমি এখানেই দাঁড়াব।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তিনি (হানিফ) সাথে সাথে আমাকে ধরে ফেললেন। আমার সাথে মামুন ছিল, আশে পাশে যারা ছিল আমাকে পুরা ঘিরে ধরল। একটার পর একটা গ্রেনেডের আওয়াজ হচ্ছে। আমি তখন বসা, বারবার ওঠার চেষ্টা করছি কিন্তু আমাকে উঠতে দেয়নি। আমার চশমাটা কোথায় ছিটকে পড়ে গেল। আমি দেখলাম আমার গায়ে শুধু রক্ত পড়ছে।
‘অর্থাৎ ওই যে স্পিন্টারগুলি সব হানিফ ভাইয়ের মাথায়, তার গায়ে লাগছে। যেহেতু সে ধরে রেখেছে, আমার শরীরে রক্তে ভেসে যাচ্ছে। তিনটা ফোটার পর কয়েক সেকেন্ড, তারপর আবার। মনে হচ্ছে এর শেষ নেই। এ যেন কেয়ামতের মতো। চারিদিকে ধোঁয়া এবং সেই অবস্থা।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘ঠিক জানি না আল্লাহ কীভাবে যেন হাতে তুলে বাঁচাল। আমার গায়ে একটা স্প্রিন্টারও আর লাগেনি। কিন্তু আওয়াজে যে ক্ষতিটা হয়েছিল, ডান দিকের কানটা দিয়ে আমি শুনতে পাইনি। সেই ট্রাকে অনেকেই আহত হয়েছে। সিঁড়িতে যারা দাঁড়িয়েছিল তারা আহত।
‘একটা পর্যায়ে যখন থামল, আমি উঠে দাঁড়ালাম। ওরা ভেবেছে আমি মনে হয় আহত। কারণ, আমার সারা শরীর তো রক্তাক্ত। আমি বললাম না আমার তো কিছু হয়নি। দেখলাম হানিফ ভাই পুরো মাথা রক্তাক্ত। ওখানে যারা ছিল সবাই, ওনার ছেলে খোকনসহ আমাদের যারা ছিল প্রত্যেকেই আহত।’
‘গুলিতেই মারা গেল মাহবুব’
সেদিন শুধু গেনেড হামলা করেই আক্রমণকারীরা খান্ত হয়নি। শেখ হাসিনাকে লক্ষ্য করে বেশ কয়েক রাউন্ড গুলিও ছোড়া হয়েছিল। শেখ হাসিনাকে বাঁচাতে গিয়ে গুলিতে নিহত হন তার দেহরক্ষী।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যখন আমি গাড়িতে উঠতে যাব, দরজা খুলে মাহবুব দাঁড়ানো। তখনই গুলি আসলো। সেই গুলিতেই কিন্তু মাহবুব মারা গেল। আর কয়েকটি গুলি আমার গাড়িতে লাগলো। যখন আমি গাড়িটা ঘুড়িয়ে জিরো পয়েন্টের কাছে তখন আমি শুনছি হৈ চৈ আওয়াজ। গাড়ি কিন্তু একটানে চালিয়ে নিয়ে আসলো।
‘পরে জানলাম ওখানে এই আহত অবস্থায় মানুষ যখন পড়ে ছটফট করছে তখন পুলিশ বা কেউ কিন্তু এগিয়ে আসেনি সাহায্যের জন্য। উল্টো পুলিশ এসে লাঠি চার্জ শুরু করল। আমাদের এক মহিলাকর্মী আহত অবস্থায়, তার স্বামী এসেছে তাকে লাথি মেরে পুলিশ বের করে দিচ্ছে। সেখানে লাঠিচার্জ আর টিয়ারগ্যাস মারতে শুরু করল। ওই গ্যাসেই তো আরও অনেকে অসুস্থ। তার মানেটা কি? যারা আক্রমণকারী, এদের রক্ষা করতেই এই টিয়ারগ্যাস মারা। সরকারের যদি সহযোগিতা না থাকে তাহলে এরকম ঘটনা ঘটতে পারে না।’
তিনি বলেন, ‘আমার গাড়িটা যখন ৫ নম্বরে সুধাসদনে ঢুকলো, সাথে সাথে পুরো গাড়িটা বসে গেল। আমি যখন নামছি রেহানা ছিল, ও তো চিৎকার। আমি বললাম, আমার কিছু হয়নি। হানিফ ভাই আমাকে ধরেছিল, তার মাথা-শরীরে সব স্প্রিন্টার তার রক্তই আমার গায়ে।
‘ওখানে দাঁড়িয়েই আমি খোঁজ নিতে চেষ্টা করলাম। সাথে সাথে আমাদের ড্রাইভার আলী হোসেন আর শাহজাহানকে পাঠালাম। যতদূর পারো হাসপাতালে নিয়ে যাও।’
‘বিএনপিমনা ডাক্তাররা কেউ ছিল না’
প্রধানমন্ত্রী জানান, সেদিন হামলার পর আহতদের যখন ঢাকা মেডিক্যালে চিকিৎসার জন্য নেয়া হয় তখন বিএনপিমনা চিকিৎসকরা কেউই ছিলেন না।
তিনি বলেন, ‘সবচেয়ে দুর্ভাগ্যের বিষয়, যারা বিএনপিমনা ডাক্তার তারা কেউ ঢাকা মেডিক্যালে ছিল না। আর বঙ্গবন্ধু মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনো আহতকে ঢুকতেই দেয়া হয়নি। বলেছে, এখানে ইমারজেন্সিতে কেউ চিকিৎসা নিতে পারবে না।
‘আমাদের ডাক্তার রোকেয়া আইভি রহমানসহ প্রায় ৭০ জনকে সে একা এনাস্থেশিয়া দিয়েছে। এভাবেই আমাদের মাইন্ডের যারা তারা ছুটে এসেছে চিকিৎসা দেয়ার চেষ্টা করেছে। লাইন ধরে রোগী। যেভাবে পেড়েছে হাসপাতাল বা ক্লিনিকে নেয়া হয়েছে। আমাদের নেতাকর্মী যারা ছিল সবাই সাহায্য করল, ছুটে গেল চিকিৎসা দিতে। যারা মৃত তাদের লাশগুলো মেডিক্যাল কলেজে, তাদের লাশগুলোও আত্মীয়দের দেবে না। কিছুতেই দেবে না। পরে বাধ্য হয়ে ভোর রাতে এক এক করে দিতে শুরু করল।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি শুনেছি, সে সময় এক ডিজিএফআই অফিসার সেখানে ডিউটিরত ছিল। হামলার পর সে হেডকোয়ার্টারে ফোন করে। তখন তাকে ধমক দেয়া হয়। দু একজন পুলিশ অফিসার যারা জানতো না, তারা পুলিশ হেডকোয়ার্টারে ফোন করে তাদেরকেও ধমক দেয়া হয়।
বিষয়টি নিয়ে সংসদেও আলোচনা করতে দেয়া হয়নি বলে জানান বঙ্গবন্ধু কন্যা। তিনি বলেন, ‘আমরা যখন পার্লামেন্টে গেলাম। এ বিষয়টি তোলার চেষ্টা করলাম। কিছুতেই এ ব্যাপারে কথা বলতে দেবে না। একটা শোক প্রস্তাব আমরা দিলাম সেটা প্রত্যাখ্যান করা হলো। আমরা যারা কথা বলতে চেয়েছি আমাদের মাইক দেয়া হলো না। খালেদা জিয়া নিজেই দাঁড়িয়ে বললো, ওনাকে আবার কে মারবে? উনি তো নিজেই ভ্যানিটি ব্যাগে করে গ্রেনেড নিয়ে গেছেন।
‘তা আমি বললাম, আমার হাতে তো ভ্যানিটি ব্যাগও ছিল না, কিছুই ছিল না। আর আমি কবে এই আর্জেস গ্রেনেড মারায় এক্সপার্ট হয়ে গেলাম তা তো জানি না। আমরা কী সুইসাইড করতে গিয়েছিলাম ওখানে। আইভি রহমানকে সবাইকে নাকি আমিই গ্রেনেড মেরেছি, এধরনের কথা।’
আহতদের চিকিৎসার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘সাহারা আপাকে পেলাম, শান্তিনগরের ওদিকে একটা হাসপাতালে মৃতপ্রায়। তাকে তাড়াতাড়ি তুলে নিয়ে এসে বাংলাদেশ মেডিক্যালে আমরা ভর্তি করলাম। বিভিন্ন জায়গা থেকে আহতদের নিয়ে আসা, তাদের ভালো চিকিৎসার ব্যবস্থা করা।
‘আমি সত্যিই ধন্যবাদ জানাই, আমাদের যে ডাক্তার, তারা দিনরাত জান দিয়ে খেটেছে এবং আমাদের আহতদের পাশে দাঁড়িয়েছে। সবাই ছুটে এসেছে, রক্ত দিয়েছে, আর্থিক সহায়তা করেছে। পরে দেশে বিদেশে পাঠিয়েও রোগীদের চিকিৎসা আমরা করিয়েছি। এখনো অনেকের চিকিৎসা করতে হচ্ছে।’
‘আলমত নষ্টের চেষ্টা’
হামলার ঘটনা থেকে নজর সরাতে আলামত নষ্টের চেষ্টাও করা হয় বলে জানান শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘যারা গণতন্ত্রের কথা বলেন, এটা কোন ধরনের গণতন্ত্র। প্রকাশ্য দিবালোকে একটা জনসভায় আর্জেস গ্রেনেড যারা মারতে পারে, শুধু তাই না, সাথে সাথে সেখানে রক্ত, জুতা সব পড়ে আছে। তখনও একটা গ্রেনেড সেখানে ফাটেনি। সেটাও পড়ে আছে। সেটা যখন উদ্ধার হলো, একজন আর্মি অফিসার বলল যে এটাকে আলামত হিসেবে রাখতে হবে।
‘তাকে ধমক দেয়া হলো পরে তার ওপর অনেক নির্যাতনও করেছে। সেটাও ধ্বংস করে দেয়া হলো। পানি দিয়ে সব ধোয়া শুরু করল, তখন আমি নানক-আজমকে বললাম, ওখানে আলামত নষ্ট করে দিচ্ছে যতদূর পারো রক্ষা করো। যেসব জায়গায় গ্রেনেডগুলো ছিল, ওরা লাল পতাকা দিয়ে জায়গাগুলো চিহ্নিত করল। এই কাজগুলো কাদের? এগুলোতো সরকারের। পুলিশ কিন্তু তা করেনি। আলামতও তারা রাখতে পারেনি। এটা হলো বাস্তবতা।’
তিনি বলেন, ‘পরে যখন চারদিকে সমালোচনা, তখন সাবেক একজন জজসাহেবকে দিয়ে একটা তদন্ত কমিটি করা হলো। সেখানে তারা আবিস্কার করল, পাশের দেশের গোয়েন্দা সংস্থা এসে এই ঘটনা ঘটিয়েছে। পাশের দেশের গোয়েন্দা সংস্থা এভাবে দিনে দুপুরে যদি এটা করতে পারে তাহলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কী করছিল? তাহলে তারা স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রক্ষা করবে কীভাবে? এভাবে তারা সমস্ত দৃষ্টিটা অন্যদিকে ঘোরানোর চেষ্টা করল।
‘তারপরেও সমালোচনা ও দাবির মুখে প্রথমে একটি ছেলেকে পড়ে আওয়ামী লীগের একটি ছেলেকে গ্রেপ্তার করল। বলা হলো এই হামলায় তারা জড়িত। আমি বললাম কখনই এটা হতে পারে না। দিনের পর দিন তাদের অত্যাচার করে নাম নেয়ার চেষ্টা করা হলো। উদ্দেশ্য ছিলো তাদের দিয়ে স্বীকার করাবে, এটা দলীয় কোন্দল। এরপর নোয়াখালীর জজ মিয়াকে টাকা পয়সা দিয়ে এক কাহিনী রচনা করল।’
আরও পড়ুন:সরকার দৈনিক মানবজমিন পত্রিকার প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরীকে প্রেস কাউন্সিলের সদস্য হিসেবে মনোনীত করেছে। বৃহস্পতিবার তথ্য মন্ত্রণালয় থেকে এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করেছে।
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপসচিব খাদিজা তাহের ববির সই করা প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ‘প্রেস কাউন্সিলের ৫ নম্বর ক্রমিকের প্রতিনিধি নিউএজ পত্রিকার সম্পাদক নুরুল কবীর পদত্যাগ করায় তার পরিবর্তে সংবাদপত্র ও সংবাদ সংস্থার সম্পাদক সমিতির প্রতিনিধি হিসেবে দৈনিক মানবজমিন পত্রিকার প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরীকে প্রেস কাউন্সিলের সদস্য হিসেবে মনোনয়ন প্রদান করা হলো।’
বর্তমান কাউন্সিলের অবশিষ্ট মেয়াদের জন্য এ মনোনয়ন কার্যকর থাকবে। জনস্বার্থে জারিকৃত এ প্রজ্ঞাপন অবিলম্বে কার্যকর হবে বলেও প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে।
প্রেস কাউন্সিলের বর্তমান চেয়ারম্যান বিচারপতি একেএম আব্দুল হাকিম, সচিব (উপসচিব) মো. আব্দুস সবুর।
এছাড়া ১২ জন সদস্য হচ্ছেন—১. বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ওবায়দুর রহমান শাহীন, ২. ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামের সভাপতি মিস দৌলত আকতার মালা, ৩. ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি মো. শহিদুল ইসলাম, ৪. ডেইলি স্টারের সম্পাদক ও প্রকাশক মাহফুজ আনাম, ৫. দৈনিক মানবজমিন পত্রিকার প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী, ৬. দৈনিক বণিক বার্তার প্রকাশক ও সম্পাদক দেওয়ান হানিফ মাহমুদ, ৭. দ্য ফিনান্সিয়াল এক্সপ্রেসের সম্পাদক শামসুল হক জাহিদ, ৮. দৈনিক পূর্বকোণের সম্পাদক ডা. রমিজ উদ্দিন চৌধুরী, ৯. নিউজপেপার্স ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (নোয়ার) উপদেষ্টা আখতার হোসেন খান, ১০. বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক অধ্যাপক মোহাম্মদ আজম, ১১. বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সচিব ড. মো. ফখরুল ইসলাম এবং ১২. বার কাউন্সিলের ভাইস-চেয়ারম্যান জয়নুল আবেদীন।
অন্তর্বর্তী সরকারের ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী মিয়া শাহবাজ শরিফের সাথে সাক্ষাৎ করেছেন। পাকিস্তানের ইসলামাবাদে পিএম হাউসে উভয়ের এ সাক্ষাৎ অনুষ্ঠিত হয়।
বৃহস্পতিবার ধর্ম মন্ত্রণালয়ের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
ধর্ম উপদেষ্টা ও তার প্রতিনিধিদলকে স্বাগত জানিয়ে পাকিস্তান প্রধানমন্ত্রী বলেন, পাকিস্তান ও বাংলাদেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক ঐতিহাসিক, সাংস্কৃতিক এবং সখ্যের বন্ধনে আবদ্ধ। এ সম্পর্ক আগামী দিনগুলোতে আরও জোরদার হবে।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নিউইয়র্ক ও কায়রোতে বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সাথে অনুষ্ঠিত বৈঠকের কথা উল্লেখ করে দূরদর্শী নেতৃত্ব এবং দারিদ্র্য দূরীকরণে তার অবদানের প্রশংসা করেন। এছাড়া তিনি পাকিস্তান ও বাংলাদেশের সম্পর্ককে শক্তিশালী করার ক্ষেত্রে প্রধান উপদেষ্টার আকাঙ্ক্ষাকে সাধুবাদ জানান।
এদিকে ধর্ম উপদেষ্টা বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের একটি পত্র পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর হাতে তুলে দেন।
পাকিস্তান প্রধানমন্ত্রীকে লেখা এ পত্রে প্রধান উপদেষ্টা পাকিস্তানে নজিরবিহীন বন্যায় সে দেশের সরকার ও জনগণের প্রতি গভীর সহমর্মিতা ও আন্তরিক দুঃখ প্রকাশ করেছেন এবং ভয়াবহ এ দুর্যোগে নিহতদের পরিবার ও ক্ষতিগ্রস্তদের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন।
এ পত্রে ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, কঠিন এ সময়ে বাংলাদেশের জনগণ পাকিস্তানের ভ্রাতৃপ্রতিম জনগণের পাশে রয়েছে। আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, আপনার সুদক্ষ নেতৃত্বে পাকিস্তানের জনগণ তাদের অসাধারণ ধৈর্য ও সহনশীলতার মাধ্যমে এ চ্যালেঞ্জ অতিক্রম করবে। প্রয়োজনে ত্রাণ ও পুনর্বাসন কার্যক্রমে বাংলাদেশ সর্বাত্মক সহযোগিতা ও সহায়তা প্রদানে প্রস্তুত রয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা।
সাক্ষাৎকালে ঢাকা ও করাচীর মধ্যে সরাসরি বিমান চলাচল দ্রুত পুনঃস্থাপনের সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করা হয়। এছাড়া কৃষি, বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, ধর্মতত্ত্ব ও চিকিৎসা বিষয়ে উভয়দেশের শিক্ষার্থী বিনিময়ে বৃত্তি প্রদানের ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়।
এ সময় অন্যান্যের মধ্যে পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার, প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ, ধর্মবিষয়ক ও আন্তঃধর্মীয় সম্প্রীতি মন্ত্রী সরদার ইউসুফ খান, তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী আতা তারার, ইসলামাবাদে বাংলাদেশের হাইকমিশনার মো. ইকবাল হোসেন খান, উপদেষ্টার একান্ত সচিব ছাদেক আহমদ ও শরীফ ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের প্রভাষক মুফতি জাহিদ হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
পুলিশের একটি স্বাধীন তদন্ত সার্ভিস গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। আজ বৃহস্পতিবার প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের সভায় এ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। সভায় প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস সভাপতিত্ব করেন।
পরে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত এক ব্রিফিংয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, ‘উপদেষ্টা পরিষদ সিদ্ধান্ত নিয়েছে পুলিশের একটি স্বাধীন তদন্ত সার্ভিস গঠন করা হবে, যাতে কোনো রাজনৈতিক বা অন্য কোনো প্রভাব ছাড়াই তদন্ত সম্পন্ন করা যায়।’ এর পাশাপাশি পুলিশের ভেতরে অভ্যন্তরীণ অভিযোগ যাচাইয়ের জন্য একটি কমিশন গঠনের বিষয়েও নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
তিনি আরও জানান, ‘এই দুই সিদ্ধান্ত দ্রুত বাস্তবায়নের জন্য আইন মন্ত্রণালয় কাজ করবে। এ কাজে উপদেষ্টা আসিফ নজরুল, আদিলুর রহমান খান এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী খোদা বখশ চৌধুরী যুক্ত থাকবেন।’
সভায় স্থানীয় সরকারকে শক্তিশালী করার বিষয়েও গুরুত্ব দেওয়া হয়। প্রেস সচিব বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা বারবার জোর দিয়েছেন যে স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোকে আরও ক্ষমতায়িত করতে হবে। ইউনিয়ন পরিষদ, উপজেলা পরিষদ, জেলা পরিষদ, পৌরসভা ও সিটি করপোরেশন যেন নিজস্ব তহবিল সংগ্রহ ও স্বচ্ছভাবে পরিচালনা করতে পারে সে বিষয়ে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।’
স্বাস্থ্য খাত নিয়েও সভায় আলোচনা হয়। শফিকুল আলম জানান, ‘কিছু মেডিকেল কলেজে যোগ্য শিক্ষকের সংকট রয়েছে। তাই অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষকদের পরামর্শক বা অন্যভাবে সম্পৃক্ত করে শিক্ষা কার্যক্রমের মান উন্নত করার উদ্যোগ নেওয়া হবে।’
নেপালে অবস্থানরত বাংলাদেশিদের বিষয়েও সভায় আলোকপাত করা হয়। প্রেস সচিব বলেন, ‘নেপালে অবস্থানরত বাংলাদেশিরা ভালো আছেন, দূতাবাস তাদের দেখভাল করছে। ইতিমধ্যে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর বিশেষ ফ্লাইটে জাতীয় ফুটবল দলকে দেশে আনার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।’
এ বৈঠক প্রসঙ্গে শফিকুল আলম আরও বলেন, ‘আজকের বৈঠকের প্রতিটি সিদ্ধান্ত বাংলাদেশের অর্থনীতি, শাসনব্যবস্থা ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আমাদের অবস্থানকে আরও শক্তিশালী করবে।’
ব্রিফিংয়ে প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার উপস্থিত ছিলেন।
ক্যাডার কর্মকর্তাদের বুনিয়াদি প্রশিক্ষণের মেয়াদ ছয় মাস থেকে কমিয়ে চার মাস করা হয়েছে। এর মধ্যে তিন মাস প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানে এবং এক মাস মাঠপর্যায়ে ওরিয়েন্টেশন ও গ্রাম সংযুক্তি অন্তর্ভুক্ত থাকবে।
আজ বুধবার প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে জাতীয় প্রশিক্ষণ কাউন্সিলের নবম সভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
সভায় অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ, আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল, পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন, স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. মোখলেস উর রহমান এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়াজ আহমেদ খান উপস্থিত ছিলেন।
সভায় আরও সিদ্ধান্ত হয়, কর্মকর্তাদের মাস্টার্স ও পিএইচডি কোর্সে ভর্তির সর্বোচ্চ বয়সসীমা ৪৫ থেকে বাড়িয়ে ৪৭ বছর করা হবে। পিএইচডি কোর্সে অধ্যয়নকালে প্রতি বছর তত্ত্বাবধায়কের অগ্রগতিমূলক প্রত্যয়ন মন্ত্রণালয়ে জমা দিতে হবে, অন্যথায় সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার বেতন বন্ধ রাখা হবে।
সভায় প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘সরকারি যত প্রশিক্ষণ কেন্দ্র আছে সেগুলোর ওপর মূল্যায়ন করতে হবে। কী ধরনের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে, প্রশিক্ষণের ধরন-মান ইত্যাদির মানদণ্ড নির্ধারণ করে ক্যাটাগরিভিত্তিক প্রতিটি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রকে র্যাংকিং করতে হবে এবং নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘একটি স্বাধীন ইউনিট গঠন করতে হবে। তারা সমস্ত গবেষণা প্রতিষ্ঠানের ওপর পদ্ধতিগতভাবে, স্বাধীনভাবে মূল্যায়ন করবে। গবেষণা প্রতিষ্ঠানগুলোর সামগ্রিক দর্শন জানতে হবে। সেগুলো সঠিকভাবে পরিচালিত হচ্ছে কি না দেখতে হবে। সরকারি কর্মকর্তারা যারা বিদেশ থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে এসেছেন তাদের তথ্য সেখানে থাকবে।’
সভায় সঞ্জীবনী প্রশিক্ষণের নাম পরিবর্তন করে ‘দক্ষতা নবায়ন প্রশিক্ষণ’ করার সিদ্ধান্ত হয়। এ প্রশিক্ষণ হালনাগাদকৃত কারিক্যুলামে মাঠপর্যায়ে সরকারি বা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে আয়োজন করা হবে। এছাড়া উচ্চশিক্ষা গ্রহণের ক্ষেত্রে কর্মকর্তারা আংশিক বৃত্তিপ্রাপ্ত হলেও প্রেষণ অনুমোদন করা যাবে।
কর্মচারীদের সততা ও নৈতিকতা বিকাশ এবং দুর্নীতি বিরোধী মনোভাব তৈরিতে বিভিন্ন প্রশিক্ষণ কোর্সে সদ্গুণ, নৈতিকতা, আচরণবিজ্ঞান ও আচরণবিধি অন্তর্ভুক্ত করার সিদ্ধান্ত হয়। পাশাপাশি প্রশিক্ষণ ও প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানগুলোর সার্বিক মূল্যায়ন এবং প্রশিক্ষণ বিষয়ক সিদ্ধান্ত গ্রহণের লক্ষ্যে গবেষণা, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন কার্যক্রম পরিচালনারও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
সভায় অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদকে সভাপতি করে একটি নির্বাহী কমিটি (ইসিএনটিসি) গঠন করা হয়।
জাতীয় লেখক ফোরাম আয়োজিত সাপ্তাহিক সাহিত্য আড্ডা অনুষ্ঠিত হয়েছে। রাজধানীর ধানমন্ডিতে হওয়া এ সাহিত্য আড্ডায় উপস্থিত ছিলেন সংগঠেনর সভাপতি ড. দেওয়ান আযাদ রহমান, মহাসচিব কবি-কথাসাহিত্যিক জাহাঙ্গীর হোসাইন এবং উপদেষ্টা মণ্ডলীর সদস্য মো. আবদুল মান্নানসহ বাংলাদেশের খ্যাতিমান লেখকরা। অনুষ্ঠানটি একটি সাধারণ প্রাণবন্ত আড্ডার মধ্যেই শুরু হয়। অনুষ্ঠানটি ৩টি পর্বে সাজানো হয়েছে। প্রতি পর্বে চারজন কবিকে মঞ্চে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। তারা তাদের গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য এবং কবিতা পাঠ করেছেন। পুরো অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেছেন কবি-কথা সাহিত্যিক জাহাঙ্গীর হোসাইন।
শ্রম ও কর্মসংস্থান এবং নৌপরিবহন উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন বলেছেন, শ্রমিকদের বকেয়া মজুরি পরিশোধের জন্য সরকার প্রদত্ত সুদমুক্ত ঋণ যথাসময়ে ফেরত না দিলে সংশ্লিষ্ট শিল্প কারখানার মালিকদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
বুধবার সচিবালয়ে আয়োজিত এক সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের সচিব, ব্যাংকিং ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব, বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিনিধি, বিজিএমইএ-এর সভাপতি এবং সংশ্লিষ্ট ঋণগ্রহীতা কারখানার মালিকদের নিয়ে এ সভার আয়োজন করা হয়।
ড. এম সাখাওয়াত হোসেন জানান, বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠানের মালিকরা শ্রমিকদের পাওনা পরিশোধে ব্যর্থ হওয়ায় শ্রম অসন্তোষ নিরসনের লক্ষ্যে সরকার বার্ডস গ্রুপ, টিএনজেড গ্রুপ, বেক্সিমকো গ্রুপ, ডার্ড গ্রুপ, নায়াগ্রা টেক্সটাইলস লিমিটেড, রোয়ার ফ্যাশন লিমিটেড, মাহমুদ জিন্স লিমিটেড, স্টাইল ক্রাফট লিমিটেড এবং গোল্ডস্টার গার্মেন্টস লিমিটেডকে অর্থ বিভাগ এবং কেন্দ্রীয় তহবিল, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় থেকে সুদমুক্ত ঋণ প্রদান করে। কিন্তু সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলো ঋণ চুক্তির আওতায় উক্ত অর্থ পরিশোধ করছেন না।
তিনি বলেন, তাদের বিরুদ্ধে সরকার কঠোর অবস্থানে যাবে। তাদের পাসপোর্ট জব্দের উদ্যোগ নেওয়া হবে।
ইতোমধ্যে কয়েকজন পলাতক মালিকের বিরুদ্ধে ইন্টারপোলের রেড নোটিশ জারির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
তিনি পলাতক মালিক ও প্রতিষ্ঠানের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের পাসপোর্ট স্থগিত রাখার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার নির্দেশনা দেন।
উপদেষ্টা বলেন, "এই ঋণের টাকা শ্রমিকের টাকা এবং জনগণের ট্যাক্সের টাকা। এ টাকা আগামী ডিসেম্বর মাসের মধ্যে পরিশোধ করতে হবে।"
তিনি বলেন, এই ক্ষেত্রে কোনোরকম ছাড় দেওয়া হবে না।
তিনি সংশ্লিষ্ট শিল্প প্রতিষ্ঠানের মালিক ও প্রতিনিধিদের সংশ্লিষ্ট লিয়েন ব্যাংকের সঙ্গে আলোচনা করে প্রতিষ্ঠানের জমি, কারখানা, যন্ত্রপাতি বিক্রি করে হলেও ডিসেম্বর মাসের মধ্যে ঋণের সকল টাকা পরিশোধ করতে বলেন।
এ বিষয়ে বিজিএমইএ ও বিকেএমইএ-কে মধ্যস্থতাকারী হিসেবে দায়িত্ব পালন করে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানান তিনি।
শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং সংশ্লিষ্ট ব্যাংক ও শিল্প প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা সভায় উপস্থিত ছিলেন।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি, ইসরাইলের নৃশংসতার জন্য জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা এবং ওই অঞ্চলে স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠার বিষয়ে গুরুত্বারোপ করেছেন।
বাংলাদেশে সফররত ফিলিস্তিনের প্রধান বিচারপতি ড. মাহমুদ সিদকি আল-হাব্বাশের সঙ্গে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় গতকাল মঙ্গলবার এক বৈঠকে উপদেষ্টা এ মন্তব্য করেন। আজ মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ বিষয়ে জানানো হয়।
বৈঠকে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা ফিলিস্তিনের জনগণের প্রতি বাংলাদেশের অবিচল সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেন এবং ১৯৬৭ সালের আগের সীমানা অনুযায়ী দ্বি-রাষ্ট্র সমাধানের প্রতি সমর্থন জানান।
ফিলিস্তিনের প্রধান বিচারপতি ড. আল-হাব্বাশ বাংলাদেশের নেতৃত্ব ও জনগণের স্থায়ী সমর্থনের জন্য গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তিনি মুসলিম উম্মাহর মধ্যে ঐক্য আরও সুদৃঢ় করার গুরুত্বের ওপরও জোর দেন।
ফিলিস্তিনিদের নিরন্তর সমর্থনের জন্য দেশটির প্রধান বিচারপতি বাংলাদেশের নেতৃত্ব ও জনগণের প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তিনি এ বিষয়ে মুসলিম উম্মাহর মধ্যে বৃহত্তর ঐক্যের ওপরও জোর দেন।
বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতির আমন্ত্রণে ড. আল-হাব্বাশ তিন দিনের সরকারি সফরে বাংলাদেশে এসেছেন।
মন্তব্য