১৬ বছর আগের সিরিজ বোমা হামলার ঘটনা দেশবাসীকে নাড়িয়ে দিয়েছিল। দেশে জঙ্গি গোষ্ঠীগুলোর নেটওয়ার্ক যে বহুদূর বিস্তৃতি লাভ করেছে, এ ঘটনার পর সে বিষয়ে সকল সংশয়ের অবসান হয়েছিল।
সেদিন ৬৪ জেলার মধ্যে কেবল বাদ পড়েছিল মুন্সীগঞ্জ জেলা। বাকি ৬৩ জেলার ৫০০টি স্থানে ৫০০ বোমা বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে।
একযোগে বোমা হামলার ওই ঘটনায় দুই জন নিহত হন আর আহত হন অন্তত ১০৪ জন। এই বোমা হামলার ঘটনায় সারা দেশে ১৫৯টি মামলা দায়ের করা হয়।
বিচারকাজ কতদূর?
সিরিজ বোমা হামলার ১৫৯ মামলার মধ্যে ঢাকায় ৪১টি, চট্টগ্রামে ১৯টি, রাজশাহীতে ১১টি, খুলনায় ২৬টি, বরিশালে ১৯টি, সিলেটে ২৬টি, রংপুর আটটি, ময়মনসিংহে ছয়টি মামলা দায়ের করে পুলিশ। বাকি তিনটি মামলা রেলওয়ে পুলিশ দায়ের করে।
পুলিশ সদরদপ্তরের হিসাব বলছে, আদালতে বিচারকাজ শেষ হয়েছে ৯৭টি মামলার। বিচারাধীন রয়েছে আরো ৪৬টি মামলা। বাকি ১৬টি মামলার তদন্ত শেষে ফাইনাল রিপোর্ট প্রস্তুত করেছে পুলিশ।
মামলাগুলোর বিচারকাজের দীর্ঘসূত্রতার কারণ জানতে চাইলে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আবদুল্লাহ আবু নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ঠিক সময়ে সাক্ষীদের না পাওয়ায় এই জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে। প্রায় সময়ে শুনানিতে সাক্ষীরা অনুপস্থিত থাকতেন।
‘সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য অনেকবার আদালত নতুন তারিখ দিয়েছেন। এতো জটিলতার পরও অধিকারংশ মামলার বিচার হয়ে গেছে। যেগুলো বাকি আছে, সেগুলো আবার করোনা মহামারির জন্য আটকে আছে। আশা করি মহামারি পরিস্থিতির উন্নতি হলে মামলাগুলোর কাজ শেষ হয়ে যাবে।
১৯৯৮ সালে গঠিত হয় জামাআতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশ (জেএমবি)। জেএমবির প্রতিষ্ঠাতা আমির ছিলেন শায়খ আবদুর রহমান।
এ সংগঠন বাংলাদেশকে ছয়টি প্রশাসনিক অঞ্চলে ভাগ করে তাদের প্রাথমিক কার্যক্রম শুরু করে। এরপর দাওয়াত ও লিফলেট বিতরণের মাধ্যমে শুরু হয় তাদের সংগঠনের প্রচার।
প্রথম দুই বছর দাওয়াতি কার্যক্রম চালিয়ে কর্মী সংগ্রহ করে কর্মীদের প্রশিক্ষণ দিতে শুরু করে জেএমবি।
২০০০ সালে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়িতে রোহিঙ্গা সলিডারিটি অর্গানাইজেশন (আরএসও) ক্যাম্পে শুরু হয় জেএমবি কর্মীদের প্রশিক্ষণ দেয়।
২০০১ থেকে ২০০৪ সাল পর্যন্ত ছোট ছোট কয়েকটি নাশকতার ঘটনা ঘটালে ২০০৫ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি সংগঠন হিসেবে জেএমবিকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে সরকার। এর পরই সিরিজ বোমা হামলার জন্য তারা দীর্ঘ পরিকল্পনা করে। আর এই হামলার মধ্য দিয়েই মূলত নিজেদের অস্তিত্ব ও সক্ষমতার জানান দেয় জঙ্গি সংগঠনটি।
জেএমবির বিরুদ্ধে সাড়াশি অভিযান
২০০৬ সালের ২ মার্চ সিলেটে সূর্য দীঘল বাড়ি নামে একটি বাসভবনে শ্বাসরুদ্ধকর অপারেশন চালিয়ে জেএমবির আমি শায়খ আবদুর রহমানকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। এর চারদিন পর ময়মনসিংহের মুক্তাগাছা এলাকা থেকে সংগঠনের আরেক শীর্ষ নেতা সিদ্দিকুর রহমান ওরফে বাংলা ভাইও ধরা পড়েন র্যাবের জালে।
এর আগে ২০০৫ সালের ১৪ নভেম্বর ঝালকাঠি জেলার সিনিয়র সহকারী জজ সোহেল আহম্মেদ ও জগন্নাথ পাঁড়ের গাড়িতে বোমা হামলা চালিয়ে তাদের হত্যা করে জেএমবি। ২০০৬ সালের ২৯ মে এই হত্যা মামলার রায়ে জেএমবির শীর্ষ নেতা শায়খ আবদুর রহমান, সিদ্দিকুল ইসলাম ওরফে বাংলাভাই, শায়খের ভাই আতাউর রহমান সানি, জামাতা আবদুল আউয়াল, ইফতেখার হোসেন মামুন, খালেদ সাইফুল্লাহ (ফারুক) ও আসাদুল ইসলাম আরিফের মৃত্যুদণ্ডের আদেশ হয়।
২০০৭ সালের ২৯ মার্চ তাদের ফাঁসি কার্যকর হয়।
শীর্ষ দুই নেতা শায়খ আবদুর রহমান ও সিদ্দিকুর রহমান বাংলা ভাইয়ের ফাঁসির মধ্য দিয়ে জেএমবির প্রথম অধ্যায়ের সমাপ্তি হয়।
দুই নেতার বিদায়ের পর জেএমবির আমিরের দায়িত্ব পান হবিগঞ্জের সাইদুর রহমান। ২০১০ সালে তাকে গ্রেপ্তার করা হলে জেএমবি দুভাগ হয়ে একটি গ্রুপ নব্য জেএমবি নামে আবির্ভূত হয়। ২০১৬ সালের ১ জুলাই রাতে গুলশানের হলি আর্টিজানে সেই নব্য জেএমবির সদস্যরা।
জঙ্গিদের সক্ষমতা কতটা?
বাংলাদেশে শুরুতে হরকাতুল জিহাদ (হুজি) ও পরে জেএমবি জঙ্গি কার্যক্রম পরিচালনা করলেও ২০০৬ সাল থেকে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তৎপরতায় শক্তি হারাতে থাকে তারা। এরপরও একেবারে নিষ্ক্রীয় হয়নি জঙ্গিরা। সংগঠনের নাম বদলে বা বিভক্ত হয় নব্য জেএমবি ও আনসারুল্লাহ বাংলা টিম বা এটিবি দেশে জঙ্গিবাদকে লালন করতে শুরু করে। এ সংগঠন দুটির তৎপরতা এখনও পুরোপুরি বন্ধ হয়নি।
আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর ধারাবাহিক অভিযানে কেউ কেউ মারা গেলেও আবার কিছুদিন পরপরই গ্রেপ্তার হচ্ছেন এসব সংগঠনের নেতাকর্মীরা। সবশেষ গ্রেপ্তার হন নব্য জেএমবির প্রধান বোমা কারিগর জাহিদ হাসান ওরফে ফোরকান ভাই।
একের পর এক জঙ্গি গ্রেপ্তারের ঘটনায় প্রশ্ন আসে, কতটা সুসংগঠিত এই সন্ত্রাসবাদিরা? প্রশ্নের উত্তরে ডিএমপির কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের প্রধান ও অতিরিক্ত কমিশনার মো. আসাদুজ্জামান নিউজবাংলাকে জানান, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ধারাবাহিক নজরদারিতে জঙ্গিদের কোনো বড় কিছু করার সক্ষমতা একবারেই নেই।
তিনি বলেন, ‘একের পর এক জঙ্গি ধরা পড়ছে মানেই হলো আমরা তাদের কঠোর নজরদারিতে রেখেছি। নজরদারি না থাকলেও তো তারা ধরা পড়ত না। আমরা ধারাবাহিক অভিযান চালিয়ে তাদের সাংগঠনিক শক্তিতে আঘাত হেনেছি। তাই তারা লুকিয়ে সংগঠনের কার্যক্রম চালানোর চেষ্টা করতেই পারে, তবে তারা সুসংগঠিত হতে পারবে না।’
আরও পড়ুন:
নোয়াখালীর দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ায় ‘ভূমিহীনদের বন্ধু’ উপাধিতে ভূষিত হলেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সিনিয়র যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক আবদুল হান্নান মাসউদ।
শনিবার উপজেলার ভূমিহীন পরিবার আয়োজিত এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তাকে এ উপাধি দেওয়া হয়।
হাতিয়া দ্বীপ সরকারি কলেজ মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত ‘ভূমিহীন পরিবারের নতুন ভোর ও একটি স্বপ্নের যাত্রা’ শীর্ষক সভায় সভাপতিত্ব করেন ওই কলেজের সাবেক শিক্ষক অধ্যাপক মো. মফিজ উদ্দিন।
অধ্যাপক মফিজ উদ্দিন জাগো নিউজকে বলেন, “স্বাধীনতার পর এই প্রথম আবদুল হান্নান মাসুদ দ্বীপের অবহেলিত ভূমিহীন পরিবারের জীবনে নতুন ভোর এনে দিয়েছেন। এই স্বপ্নযাত্রার সম্মাননা ও স্বীকৃতি হিসেবে তাকে আনুষ্ঠানিকভাবে ‘ভূমিহীনদের বন্ধু’ উপাধি দেওয়া হয়েছে।”
সংবর্ধনার জবাবে আবদুল হান্নান মাসউদ বলেন, ‘হাতিয়ার ইতিহাস বহু পুরোনো। কিন্তু স্বাধীনতার এত বছর পরও দ্বীপে উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি। গত ১৭ বছরে এখনাে শুধু লুটপাট হয়েছে। আমি সবাইকে নিয়ে দ্বীপের উন্নয়নে কাজ করতে চাই। তবে এখনো পতিত স্বৈরাচারদের প্রেতাত্মারা সক্রিয়। জনগণের কল্যাণে কাজ করতে গেলেই তারা পদে পদে বাধার সৃষ্টি করে।’
তিনি বলেন, ‘হাতিয়ার উন্নয়নের কথা বললেই ওই সিন্ডিকেটের গায়ে জ্বালাপোড়ার সৃষ্টি হয়। যেমন, ফেরির ব্যবস্থা করতে চাইলে স্পিডবোট-ট্রলার মালিকরা, ভূমিহীনদের ভূমি বুঝিয়ে দিতে চাইলে ভূমিদস্যুরা, রাস্তাঘাটের উন্নয়ন করতে চাইলে অপরাজনীতির হোতারা বাধার কারণ হয়ে আসছে।’
হান্নান মাসউদ বলেন, ‘এই এলাকার ভূমিহীনদের মুলা ঝুলিয়ে রাজনৈতিক নেতারা যুগ যুগ ধরে লাঠিয়াল হিসেবে ব্যবহার করে আসছে। তাদের কষ্টের কথা মিডিয়ায় আসে না, সুশীল সমাজের চোখে পড়ে না, প্রশাসনের দৃষ্টিতে আসে না। অসহায় এসব মানুষের কী অবস্থা সেটি দেখার মতো কোনো লোক পাওয়া যায় না।’
তিনি আরও বলেন, ‘হাতিয়ায় নদীভাঙন রোধে গত ৫০ বছরে কেউ একটি জিও ব্যাগও ফেলতে পারেনি। আমি গত ১০ মাসে প্রশাসনের ঊর্ধ্বতনদের সঙ্গে সমন্বয় করে প্রায় সাড়ে পাঁচ কিলোমিটার এলাকায় জিও ব্যাগ ফেলার ব্যবস্থা করেছি। এখন হাতিয়ার জনগণ চাইলে স্থায়ী ব্লক বাঁধের ব্যবস্থাও করা হবে।’
স্থানীয় ভূমিহীন পরিবারের সদস্য মো. শরিফ উদ্দিনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন হাতিয়া প্রেস ক্লাবের সভাপতি ফিরোজ উদ্দিন, জাতীয় নাগরিক পার্টির সংগঠক মো. ইউসুফ, হাতিয়া নিউ মার্কেটের সাধারণ সম্পাদক আবদুল কাদের প্রমুখ।
নির্বাচনে নিরাপত্তা দিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর যে ধরনের প্রস্তুতি প্রয়োজন, সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া আছে বলেও জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
শনিবার বিকেলে র্যাব-১ অফিস পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা জানান।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, যে সময় নির্বাচন হবে, সে সময়ের জন্য যে ধরনের প্রস্তুতি দরকার আমরা সেই ধরনের প্রস্তুত রয়েছি।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ছোটখাট ঘটনা সব সময় ঘটে। যদি ৫৩ বছরের ইতিহাস দেখে থাকেন, তাহলে এই ছোটখাটো ঘটনা ঘটে থাকে। এসব ঘটনা ঘটে বলেই আমাদের এই বাহিনী রয়েছে। যদি কোনোকিছু না ঘটতো, তাহলে পুলিশ বাহিনীরই দরকার হতো না।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে এটা আপনারাও বলছেন। গত ১১ মাসে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অনেক উন্নতি হয়েছে। এসময় স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা খণ্ডিত সংবাদ প্রকাশ না করার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, খণ্ডিত সংবাদ প্রকাশ হলে আমাদের দেশের বাইরে থেকে এই সংবাদগুলো নিয়ে আবার টুইস্ট করা হয়।
এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে দেশে আরও একজনের মৃত্যু হয়েছে। শুক্রবার (১৩ জুন) সকাল থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় এই মৃত্যু হয়। আর এই সময়ের মধ্যে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ১৬৯ জন।
শনিবার (১৪ জুন) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ অ্যান্ড ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের সংবাদ বিজ্ঞপ্তি থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
গত ২৪ ঘণ্টায় চট্টগ্রাম বিভাগে এই মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। আর গতকাল বরিশাল বিভাগে মশাবাহিত রোগটিতে মৃত্যু হয় চারজনের।
বিজ্ঞপ্তি থেকে পাওয়া তথ্য অনুসারে, গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে দেশের বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি ভর্তি হয়েছেন ১৬৯ জন। নতুন আক্রান্তের মধ্যে ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ৩৫ জন। আর ঢাকার বাইরের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন আরও ১৩৪ জন।
বিজ্ঞপ্তি থেকে পাওয়া তথ্য অনুসারে, চলতি বছর আক্রান্ত হয়ে এখন পর্যন্ত ২৯ জনের মৃত্যু হয়েছে, যাদের মধ্যে ৫১ দশমিক ৭ শতাংশ পুরুষ এবং ৪৩ দশমিক ৩ শতাংশ নারী।
বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ১৪ জুন পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন মোট ৫ হাজার ৭৩৯ জন। এর মধ্যে ৫৯ দশমিক ৩ শতাংশ পুরুষ এবং ৪০ দশমিক ৭ শতাংশ নারী।
চট্টগ্রামে নতুন করে আরো একজনের শরীরে করোনা ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে গত ছয় দিনে মোট ৯ জনের শরীরে এ ভাইরাসের জীবাণু শনাক্ত হয়েছে। শনিবার (১৪ জুন) সকালে সিভিল সার্জন কার্যালয় থেকে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
সিভিল সার্জন কার্যালয়ের তথ্যমতে, গত ২৪ ঘণ্টায় (শুক্রবার সকাল আটটা থেকে শনিবার সকাল আটটা) ২৪ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এর মধ্যে একজনের করোনা পজিটিভ পাওয়া যায়। ৪০ বছর বয়সী আক্রান্ত ওই ব্যক্তি চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলার ফতেহাবাদ এলাকার বাসিন্দা। তিনি শুক্রবার নগরের এভারকেয়ার হাসপাতালে করোনার পরীক্ষা করান। সেখানেই তার শরীরে করোনার জীবাণু শনাক্ত হয়।
এদিকে সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, আক্রান্ত নয়জনের মধ্যে পুরুষ ৫ জন এবং নারী ৪ জন। এদের মধ্যে ৭ জন নগরের এবং ২ জন উপজেলার বাসিন্দা।
অন্যদিকে, চট্টগ্রামে এখন পর্যন্ত বেসরকারি পর্যায়ে করোনা শনাক্তকরণের পরীক্ষা চালু আছে। তবে শিগগিরই চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) ও বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল অ্যান্ড ইনফেকশাস ডিজিজেসে (বিআইটিআইডি) আরটি–পিসিআর পরীক্ষা শুরু করা যাবে বলে আশা করছেন জেলা সিভিল সার্জন ডা. জাহাঙ্গীর আলম।
ঈদুল আজহা উপলক্ষে ১০ দিনের ছুটি শেষে রবিবার খুলছে দেশের সব সরকারি অফিস, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান।
গত ৭ জুন দেশে মুসলিমদের দ্বিতীয় বৃহত্তম ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল আজহা উদযাপিত হয়। ঈদুল আজহার আগে গত ৪ জুন ছিল সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের শেষ কর্মদিবস।
সেই হিসেবে ৫ থেকে ১৪ জুন পর্যন্ত টানা ১০ দিনের ছুটি কাটাচ্ছেন সরকারি চাকরিজীবীরা।
যেসব সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী দূর-দূরান্তে ঈদ উদযাপন করতে গেছেন তারা শনিবারের মধ্যেই রাজধানীতে এসে পৌঁছাবেন। তবে রাজধানী এখনো তার পুরোনো রূপে ফেরেনি।
ঈদুল আজহা উপলক্ষে প্রথমে ৫ থেকে ১০ জুন পর্যন্ত ছয় দিন ছুটি দিয়েছিল সরকার। পরে ১১ ও ১২ জুন (বুধ ও বৃহস্পতিবার) নির্বাহী আদেশের ছুটি ঘোষণা করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। এতে এবার ঈদুল আজহায় ৫ থেকে ১৪ জুন পর্যন্ত টানা ১০ দিনের ছুটি পেয়েছেন সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
উল্লেখ্য, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের ঈদের বর্ধিত ছুটি দিতে গত মে মাসের সাপ্তাহিক ছুটির দিনের দুই শনিবার (১৭ ও ২৪ মে) কর্মদিবস হিসেবে সরকারি অফিসসমূহ খোলা রেখেছিল সরকার।
ইসরাইল ও ইরানের সংঘর্ষের কারণে বন্ধ ঘোষণার একদিন পর শনিবার জর্ডান, সিরিয়া ও লেবানন তাদের আকাশসীমা পুনরায় খুলে দিয়েছে।
আম্মান থেকে বার্তা সংস্থা এএফপি এ খবর জানায়।
জর্ডান, সিরিয়া ও লেবানন এ তিনটি দেশই ইসরাইলের প্রতিবেশী। তবে কেবল জর্ডানের সঙ্গেই ইসরাইলের আনুষ্ঠানিক কূটনৈতিক সম্পর্ক রয়েছে।
সিরিয়া দীর্ঘদিন ধরে ইরানের মিত্র বাশার আল-আসাদের শাসনাধীন ছিল। গত ডিসেম্বরে তাকে উৎখাতের পর থেকে ইসলামপন্থী বিদ্রোহীরা দেশটি নেতৃত্ব দিচ্ছে।
লেবাননে হিজবুল্লাহ নামে সশস্ত্র গোষ্ঠী রয়েছে। তারা ২০২৪ সালের শেষের দিকে ইসরাইলের সঙ্গে যুদ্ধে পরাজিত হয়। এরপর থেকে সরকার একটি যুদ্ধবিরতি বাস্তবায়নে কাজ করছে। এতে শর্ত ছিল হিজবুল্লাহকে তার অস্ত্রাগার হস্তান্তর করতে হবে এবং ইসরাইলি সীমান্তের কাছাকাছি এলাকা থেকে সরে যেতে হবে।
জর্ডানের বেসামরিক বিমান চলাচল নিয়ন্ত্রণ কমিশনের চেয়ারম্যান হাইথাম মিস্তো এক বিবৃতিতে বলেছেন, জর্ডান সকাল সাড়ে ৭টা (স্থানীয় সময়) থেকে তার আকাশসীমা পুনরায় খুলে দিয়েছে।
লেবাননের পরিবহনমন্ত্রী ফায়েজ রাসামনি শনিবার স্থানীয় সময় সকাল ১০টা থেকে দেশের আকাশসীমা পুনরায় উন্মুক্ত করার ঘোষণা দিয়েছেন।
সিরিয়ার বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষও বেসামরিক বিমানের জন্য দেশের আকাশসীমা পুনরায় উন্মুক্ত করার ঘোষণা দিয়েছে।
কুমিল্লার দাউদকান্দি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। দূর্ঘটনায় বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতির ঘটনা ঘটেনি। তবে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় রোগীদের মধ্যে আতংক ছড়িয়ে পড়ে। আগুন নেভাতে গিয়ে হাসপাতালের তিনজন কর্মী আহত হয়েছেন। খবর পেয়ে স্থানীয় ফায়ারসার্ভিস কর্মীরা ছুটে আসে এবং স্বল্প সময়ের মধ্যে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়। আহতরা হলেন ইয়াসিন, মেহেদি ও মুছা। আহতদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ণ ইউনিটে পাঠানো হয়েছে।
শনিবার (১৪জুন) বেলা ১১টায় দাউদকান্দি উপজেলা গৌরীপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ৩য় তলায় ষ্টোর রুমে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এতে হাসাপাতালের ওয়ার্ডে ভর্তি রোগীদের এবং বহিঃবিভাগে চিকিৎসা সেবা প্রায় দুই ঘন্টা বন্ধ থাকে৷ খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের একটি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে স্থানীয় এবং হাসপাতালে কর্মরত স্টাফদের সহযোগিতায় অল্প সময়ের মধ্যেই আগুন নিয়ন্ত্রণে চলে আসে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, বেলা ১১ টার দিকে হাসপাতালের তিনতলার ষ্টোর রুমে আগুনের ধোয়া দেখা যায়। ধোয়া দেখে পাশের ওয়ার্ডের রোগীর স্বজন ও নার্সরা আগুন আগুন বলে চিৎকার শুরু করে। এ সময় হাসপাতালে থাকা রোগী ও তাদের স্বজনরা দৌঁড়াদৌড়ি শুরু করেন। পরে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ পল্লী বিদ্যু ও ফায়ার সার্ভিসকে খবর দেয়। আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে গিয়ে হাসপাতালের আউটসোর্সিংয়ে কর্মরত ইয়াসিন, মেহেদি ও মুছা নামে তিন কর্মচারী আহত হয়েছেন। আহতদের ঢাকা মেডিকেলের বার্ণ ইউনিটে পাঠানো হয়েছে।
এ বিষয়ে দাউদকান্দি ফায়ার সার্ভিস স্টেশন অফিসার মোঃ ইদ্রিস বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসার পর স্থানীয় এবং হাসপাতালে কর্মরত স্টাফদের সহযোগিতায় অল্প সময়ের মধ্যেই আগুন নিয়ন্ত্রণে চলে আসে। প্রাথমিক ধারনা বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট থেকে আগুনে সূত্রপাত, পরবর্তীতে তদন্ত সাপেক্ষে মূল কারণ জানা যাবে।
এ ব্যাপারে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. হাবিবুর রহমান বলেন, হাসপাতালের ৩য় তলায় ডেঙ্গু রোগীদের ওয়ার্ডের পাশের কক্ষে ষ্টোর রুমে ঔষধসহ রোগীদের সেবার কাজে ব্যবহৃত সব ধরনের মালামালের সাথে কিছু দামী সরঞ্জামও ছিল। ওই কক্ষে আগুনে অধিকাংশ মালামালই পুড়ে নষ্ট হয়ে গেছে। কিছু মালামাল বের করতে পারলেও তা ভালো আছে কিনা পরবর্তীতে যাচাই করে বলেতে পারবো । আগুনে ক্ষতির পরিমান এখন নির্দিষ্ট করে বলা যাচ্ছে না। আর আগুন নিয়ন্ত্রণ এবং মালামাল বিশেষ করে অক্সিজেন সিলিন্ডার বের করতে গিয়ে আমাদের আউটসোর্সিংয়ে কাজ করা তিনজন আহত হয়েছেন। তাদেরকে ঢাকা মেডিকেলের বার্ণ ইউনিটে পাঠানো হয়েছে।
এদিকে হাসপাতালে অগ্নিকান্ডের খবর পেয়ে দাউদকান্দি উপজেলা সহকারী কমিশনার(ভূমি) রেদওয়ান ইসলাম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন৷
মন্তব্য