বঙ্গবন্ধু হত্যায় জড়িতদের বিচার হলেও নেপথ্যের খলনায়কদের চিহ্নিত করতে কমিশন গঠন করার দাবির মধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, এই হত্যার পেছনে কারা, তাদের পরিচয় প্রকাশ হবে।
সোমবার আওয়ামী লীগের জাতীয় শোক দিবসের আলোচনায় ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে এ কথা বলেন বঙ্গবন্ধুকন্যা।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতাকে সপরিবারে হত্যার স্মরণে ক্ষমতাসীন দল এই আলোচনার আয়োজন করে।
জাতির পিতার কন্যা বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু হত্যায় যারা নেপথ্যে ছিলেন, তাদের পরিচয়ও বের হয়ে আসবে।
ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে ১৫ আগস্ট রাতের হত্যাযজ্ঞের বর্ণনা দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘যারা হত্যা করেছে, আর যারা ক্ষেত্র প্রস্তুত করেছে সবাই কিন্তু সমানভাবে দোষী।
‘আমি আরও অনেক ঘটনা জানি। হত্যার বিচার করাটা জরুরি ছিল। ধীরে ধীরে কারা জড়িত সেটাও বের হবে। সে দিন দূরে নয়।’
‘হত্যার গ্রাউন্ড তৈরিতে কারা?’
শেখ হাসিনা বক্তব্য দেয়ার আগে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা বঙ্গবন্ধু হত্যার পেছনে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের ভূমিকা আছে বলে নানা যুক্তি দেন।
বঙ্গবন্ধুকন্যা এ ক্ষেত্রে সিদ্ধান্তে আসলে মুক্তিযুদ্ধ-পরবর্তী পত্রপত্রিকা ঘেঁটে দেখার পরামর্শ দেন। বলেন, ‘তিনি (বঙ্গবন্ধু) মুক্তিযুদ্ধের পর যখন ফিরে এলেন তখন যুদ্ধবিধ্বস্ত একটা দেশ। দেশ গড়ে তোলার কাজে হাত দিলেন।
‘আমার নিজের মনে কয়েকটি প্রশ্ন আসে। একটি যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ, যেটি পাকিস্তানের প্রদেশ ছিল। দারিদ্র্য যেখানে নিয়মিত সঙ্গী, তার ওপর যুদ্ধের একটা বছর কোনো ফসল হয়নি। গোলায় খাদ্য নেই, কোনো কারেন্সি নেই। রাস্তাঘাট সব ভাঙা। সেই অবস্থায় যখন তিনি দেশ পরিচালনা করছেন, একটা জিনিস চিন্তা করেন, তিনি দেশে ফিরলেন ৭২ সালে। সেই ৭২ সাল থেকেই তো বিভাজন শুরু।’
তিনি বলেন, ‘মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে বিভক্তি হলো, জাসদ হলো। যারা পাকিস্তান বাহিনীর দোসর, যারা বড় নেতা ছিলেন, তারা তো পাকিস্তানের পাসপোর্ট নিয়ে অনেক আগেই চলে গেছেন। আর যারা এ দেশে ছিল তারা কোথায় গেল? হঠাৎ উধাও হয়ে গেল। তারা সব গিয়ে আন্ডারগ্রাউন্ড পার্টির সাথে মিশে গেল।
‘আর আমাদের দেশের, আপনারা যদি পত্রপত্রিকা পড়েন, আপনারা এর পেছনে কে আছে না আছে খুঁজে বেড়াচ্ছেন। বেশি তো খোঁজার দরকার নাই। অনেক খবর আপনাদের কাছে স্পষ্ট হয়ে যাবে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দেশ স্বাধীন হওয়ার পরে বছরের পর বছর লেগে যায়। কিন্তু একটি বছরও সময় দেয়া হলো না। সাথে সাথে সমালোচনা শুরু হলো। আর ধৈর্য ধরা হলো না। এটা হলো না কেন, এটা নাই কেন নানা কথা লেখা হলো। কারা লিখেছিল? কাকে খুশি করতে এবং কারা এই হত্যাকাণ্ডের গ্রাউন্ড তৈরি করছিল?’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি জানি যারা সরাসরি হত্যা করেছে, তারা নিজেরা স্বীকার করেছে। বিবিসি ইন্টারভিউতে রশিদ-ফারুক বসে বলেছে তারা হত্যা করেছে। তার কারণ, একটা চেষ্টা ছিল বঙ্গবন্ধুকে জনগণের কাছ থেকে দূরে সরানোর। অনেক অপপ্রচার চালিয়েও তাকে দূরে সরাতে পারেনি। আর সরাতে পারে নাই বলেই তারা এ হত্যাকাণ্ডটা ঘটিয়েছে, এটাই বাস্তবতা।
‘কাজেই তখন যারা সমালোচনা লিখেছে তারা তো এদেরই দোসর হিসেবে গ্রাউন্ড তৈরি করছিল। সেটা একটু আপনারা স্মরণ করে রাখবেন। তাহলে আর আপনাদের বেশি দূর যেতে হবে না খুঁজতে।’
জানি যেকোনো সময় চলে যেতে হবে
মৃত্যুর ভয়ে ভীত নন জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার কোনো চাওয়া-পাওয়া নেই। তার বাবা এই দেশের জন্য রক্ত দিয়েছেন, তিনিও যেকোনো ত্যাগ স্বীকারে প্রস্তুত।
আওয়ামী লীগ প্রধান বলেন, ‘জাতির পিতা রক্ত দিয়েছেন এ দেশের জন্য। রক্ত দিয়েছেন আমার মা-ভাইয়েরা। আমিও রক্ত দিতেই এই বাংলাদেশে এসেছি।
‘কাজেই আমি জানি, আমার জীবনের কোনো মায়া নেই। আমার কোনো চাওয়াও নেই। আমার একটাই চাওয়া, যে আদর্শ নিয়ে আমার বাবা দেশ স্বাধীন করেছে সে আদর্শ মানুষের কাছে পৌঁছে দেব।’
তিনি বলেন, ‘মৃত্যুকে সামনাসামনি দেখেছি, কখনো ভীত হইনি। হবও না। আমি তো প্রস্তুত। আমি তো জানি, যেকোনো সময় আমাকে চলে যেতে হবে। যতটুকু সময় আছে দেশের জন্য কতটুকু করতে পারি যেন আমার আব্বার আত্মাটা শান্তি পায়।’
পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট নিহত পরিবারের সদস্যদের স্মরণ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘একই দিন আমি হারিয়েছি আমার মাকে। সেই সাথে আমার ছোট ভাই মুক্তিযোদ্ধা ক্যাপ্টেন শেখ কামাল, লেফটেন্যান্ট শেখ জামাল এবং ছোট্ট ১০ বছরের ভাইটি।
‘তারও (রাসেল) জীবনের স্বপ্ন ছিল যে একজন সেনা অফিসার হবে। তার সে স্বপ্ন আর পূরণ হয়নি। তাকেও ঘাতকের দল হত্যা করেছে। কামাল-জামালের নব পরিণীতা স্ত্রী, তাদের মেহেদির রংও তখন মুছেনি। বুকের রক্ত দিয়ে সেই রং ঢেকে গিয়েছিল।’
বাবা বঙ্গবন্ধুর স্মৃতিচারণা করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘একটা মানুষ তার জীবনের সবটা উজাড় করে দিয়েছিল একটি জাতির জন্য। নিজের জীবনের কোনো চাওয়া-পাওয়া ছিল না। তিনি শুধু দেশের কথা ভাবতেন, মানুষের কথা ভাবতেন। শোষিত, বঞ্চিত মানুষগুলির তাদের ভাগ্য পরিবর্তন করতে চেয়েছিলেন। এ দেশের মানুষকে স্বাধীনতার চেতনায় তিনি উদ্বুদ্ধ করেছিলেন।
‘এই বঙ্গভূমিতে কোনোদিনই এ মাটির কোনো সন্তান কিন্তু এখানে সরকার গঠন করেনি বা রাজত্ব করেনি। সব সময় বাইরের মানুষ এসে শাসন করেছে। সেই মোগল আমল থেকে ব্রিটিশ আমলেও আমরা দেখেছি। পাকিস্তান হওয়ার পরেও একই অবস্থা আমরা দেখেছি। একমাত্র বাংলাদেশের মাটির সন্তান বঙ্গবন্ধু।’
বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, ‘একটি জাতিকে তিনি দীর্ঘ সংগ্রামের পথ ধরে সশস্ত্র যুদ্ধের মধ্য দিয়ে বিজয় এনে দিয়েছিলেন। এ বিজয় যে আসবে তিনি জানতেন। তিনি সেই কথা সব সময় বলেছেন। আর দেশকে নিয়ে তার যে স্বপ্ন ছিল, সেটা তো আমি বড় সন্তান হিসেবে তার কাছে সে গল্প শুনতাম। আমরা তো খুব কম সময় পেয়েছি।
‘বেশির ভাগ সময় তো আব্বা জেলে থাকতেন। তার পাশে ছিলেন আমরা মা, শেখ ফজিলাতুন নেছা। সংগ্রামে যেমন সব সময় পাশে, সংসারের সমস্ত দায়িত্ব তার নিজের। কোনোদিন সংসারের কোনো কিছু নিয়ে বাবাকে উত্ত্যক্ত করা বা কোনো কিছু চাওয়া, দাবি করা কিছু ছিল না। মা একটা কথাই বলতেন, দেশের জন্য তুমি কাজ করে যাও, সংসার নিয়ে ভাবতে হবে না।’
মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনেই প্রতিশোধ
দেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনকেই নিজের লক্ষ্য হিসেবে নিয়েছেন বলে জানান সরকারপ্রধান। বলেন, ‘আমার একটাই লক্ষ্য ছিল, বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করা। ক্ষুধামুক্ত, দারিদ্র্য মুক্তি দেয়া, তাদের জীবনটা উন্নত করা, তাদের জীবনটা সুন্দরভাবে গড়ে তোলা, যেটা আমার বাবার আজীবন লালিত স্বপ্ন।
‘সেটা যেদিন করতে পারব, আমি মনে করব এই হত্যার প্রকৃত প্রতিশোধ সেদিনই নিতে পারব। আজ আমরা অনেক দূর এগিয়েছি।’
আরও পড়ুন:
ময়মনসিংহে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (বাকৃবি) ক্যাম্পাসে অবস্থিত কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (কেবি) কলেজের অধ্যক্ষ ড. মো. আতাউর রহমান আমরণ অনশন শুরু করেছেন। তার এই পদক্ষেপে সংহতি জানিয়ে কলেজের অন্যান্য শিক্ষকরা আন্দোলনে যুক্ত হয়েছেন। শনিবার কলেজ প্রাঙ্গণে অনশন করেন।
সরেজমিনে জানা গেছে, কেবি কলেজে বোমা হামলার হুমকি, শিক্ষকদের শারীরিক নির্যাতনের ভয়ভীতি প্রদর্শন এবং প্রতিষ্ঠানটিকে ঘিরে অভ্যন্তরীণ ও বাহ্যিক নানা ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে তারা এই আমরণ অনশন কর্মসূচি গ্রহণ করেছেন। ইংরেজি বিভাগের শিক্ষক বি. এম. আব্দুল্লাহ রনি জানান, দুপুর ১২টার দিকে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে অধ্যক্ষ ঘোষণা দেন, কলেজ ও শিক্ষকদের বিরুদ্ধে চলমান হুমকি এবং বহিরাগতদের অনুপ্রবেশের প্রতিবাদে তিনি আমরণ অনশনে বসবেন। তখন অন্যান্য শিক্ষকরা একসাথে থাকার সিদ্ধান্ত নেন। তিনি আরও বলেন, ‘আমরা চাই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করুক। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হলে আমরা অনশন প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেব।’
চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় দিনদুপুরে গ্রামীণ ব্যাংকের টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে একজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ সময় নগদ ৬০ হাজার ৬০০ টাকা উদ্ধার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃত যুবকের নাম আরকান চৌধুরী (২৫)। তিনি কাঞ্চনা ইউনিয়নের মনুফকিরহাট জাফর চৌধুরীবাড়ি এলাকার মো. জাকির হোসেনের ছেলে। গত শুক্রবার রাতে উপজেলার কাঞ্চনা ইউনিয়নের মনুফকিরহাট জাফর চৌধুরীবাড়ি এলাকায় এ অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
থানার ওসি জাহেদুল ইসলাম জানান, জিজ্ঞাসাবাদে আরকান চৌধুরী ছিনতাইয়ের ঘটনায় জড়িত থাকার বিষয়টি স্বীকার করেছেন। শনিবার তাকে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। গত ৮ সেপ্টেম্বর দুপুরে কাঞ্চনা মনুফকিরহাট হাটের জলদাশপাড়া ব্রিজের ওপর গ্রামীণ ব্যাংকের কর্মকর্তা অভি চৌধুরীর কাছ থেকে নগদ ৩ লাখ টাকা ও মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেন ছিনতাইকারীরা। অভি কাঞ্চনা শাখার কেন্দ্র ব্যবস্থাপক। পরে এ ঘটনায় অজ্ঞাত পরিচয়ে আসামি করে থানায় মামলা দায়ের করেন ব্যাংক কর্মকর্তা।
নেত্রকোনার খালিয়াজুরী উপজেলায় ধনু নদে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে স্পিডবোট উল্টে শিশুসহ ৪ জন নিখোঁজ হয়। নিখোঁজের ২৪ ঘণ্টা পর উষা মনির (৪) তার লাশ উদ্ধার করে স্থানীয়রা। শনিবার ধনু নদের চরপাড়া এলাকায় ভাসমান অবস্থায় লাশ উদ্ধার করা হয়।
খালিয়াজুরী থানার ওসি মকবুল হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করেন। ময়মনসিংহ ফায়ার সার্ভিস ও ডুবুরি দল অন্যদের লাশ উদ্ধারের কার্যক্রম পরিচালনা করছে। নিখোঁজ রয়েছেন, গাজীপুর ইউনিয়নের বয়রা গ্রামের নবাব মিয়ার মেয়ে শিরিন আক্তার (১৮), আন্ধাইর গ্রামের স্বপন মিয়ার মেয়ে লায়লা (৭) ও সামসু মিয়ার মেয়ে সামিয়া (১১)।
লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চররমিজ ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের মীর সমাজের ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া ভুলুয়া নদীর তীব্র ভাঙনে নিঃস্ব হয়ে গেছে কয়েক হাজার পরিবারের ঘরবাড়ি ও কয়েক একর কৃষি জমি। ভাঙন রোদে ভূলুয়া নদীর তীরে বাঁধ নির্মাণের দাবিতে মানববন্ধন করেছেন এলাকাবাসী। শনিবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে উপজেলার চররমিজ ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের মীর সমাজের ভূলুয়া নদীর পাড়ে এই মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়। এ সময় বক্তব্য রাখেন- চররমিজ ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার হুমায়ুন কবির, মীর সমাজ জামে মসজিদের সভাপতি মো. আব্দুল্লাহ, স্থানীয় বাসিন্দা জহির উদ্দীন, শিক্ষার্থী নাহিদুল ইসলাম, আজিমা বেগম, কুলছুম ও রাবেয়া বেগম প্রমুখ। বক্তারা বলেন, লক্ষ্মীপুরের রামগতি ও নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলার সিমান্তের চররমিজ ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের মীর সমাজের ওপর দিয়ে বয়ে গেছে ভূলুয়া নদী। নদীটির সুবর্ণচর অংশে চর জেগে ওঠায় রামগতির অংশে তীব্র ভাঙন দেখা দিয়েছে। এতে মীর সমাজের কয়েক হাজার পরিবার নদীভাঙনের মুখে পড়ে। ইতোমধ্যে অন্তত শতাধিক ঘরবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এখনো ৪০টির মতো বসতবাড়ি হুমকির মুখে আছে। এছাড়া কয়েক একর কৃষি জমি ভূলুয়া নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। নদীর পাশেই রয়েছে, উত্তর চর আফজাল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, চরআফজল মীর সমাজ নুরানী মাদ্রাসা, চরআফজল মীর সমাজ জামে মসজিদসহ অন্তত ১০ হাজার মানুষের বসবাস। এসব মানুষগুলো রয়েছে চরম উদ্বিগ্ন উৎকণ্ঠায়। বক্তারা আরও বলেন, ভুলুয়া নদীর ওই স্থানে দ্রুত ব্লক বাঁধ নির্মাণ না করলে অল্প সময়ের মধ্যে মীর সমাজটি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাবে। তাই তারা দ্রুত নদীর তীরে বাঁধ নির্মাণ করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
এ ব্যাপারে লক্ষ্মীপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী নাহিদ-উজ-জামান খান বলেন, সরেজমিনে গিয়ে তদন্ত করে ওই স্থানে বাঁধ নির্মাণের উদ্যোগ নেবেন তিনি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনের দিন সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে স্ট্রোক করে মারা যান চ্যানেল এস-এর সাংবাদিক তরিকুল ইসলাম শিবলী।
নবনির্বাচিত ডাকসু নেতা ও ইসলামী ছাত্রশিবিরের নেতারা গত শুক্রবার সন্ধ্যায় টঙ্গীর মধুমিতা রোডের শিবলীর বাসায় তার পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন। এ সময় তারা মৃতের পরিবারের খোঁজখবর নেন এবং তরিকুল শিবলীর পরিবারের হাতে নগদ দুই লাখ টাকা তুলে দেন।
ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুল ইসলাম, ডাকসুর নব-নির্বাচিত ভিপি ও শিবিরের কেন্দ্রীয় প্রকাশনা সম্পাদক সাদিক কায়েম, ডাকসু জিএস এস এম ফরহাদ, পরিবহন সম্পাদক আসিফ আব্দুল্লাহ ও শিবিরের গাজীপুর মহানগর সভাপতিসহ অন্যান্য নেতারা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
গত শুক্রবার রাতেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ডাকসুর নবনির্বাচিত জিএস ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রশিবিরের সভাপতি এস এম ফরহাদ লেখেন, ‘ডাকসু নির্বাচনের দিন সংবাদ কাভার করতে গিয়ে ইন্তেকাল করেছেন তরিকুল শিবলী ভাই। তিনি রেখে গেছেন দুই সন্তান। বড় সন্তান আয়াতের বয়স চার বছর এবং ছোট সন্তান আজমীনের বয়স দেড় বছর।’
ফরহাদ আরও লেখেন, চার বছর বয়সী আয়াত দীর্ঘ আলাপের ফাঁকে আমাকে বলছে- ‘আমার বাবাকে আল্লাহ নিয়ে গেছেন এবং আল্লাহ বাবাকে সুন্দর একটা জায়গায় রেখেছেন। যেহেতু বাবা আসবেন না, তাই আমি ও আমার মা ছোট বোন আজমীনের খোঁজখবর রাখবো, আদর করবো।’ অবুঝ শিশুর মুখে এমন ভারি কথা!
তিনি জানান, আমরা পরিবারের সঙ্গে প্রাথমিক সাক্ষাতে ছোট্ট দুই শিশুর খরচের জন্য ছাত্রশিবিরের পক্ষ থেকে আপাতত দুই লাখ টাকা পৌঁছে দিয়েছি। ইনশাআল্লাহ, আমরা সব প্রয়োজনে সাধ্যমতো পরিবারটির পাশে থাকবো। বাবা হারানো ছোট শিশুদের জন্য দোয়া চাই।
অপরাধ নিয়ন্ত্রণে রাজধানীর মোহাম্মদপুর থানার বিভিন্ন অপরাধ প্রবণ এলাকায় বিশেষ অভিযান চালিয়ে বিভিন্ন অপরাধে জড়িত ১০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) মোহাম্মদপুর থানা পুলিশ।
শনিবার ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলো- মো. দুলাল মিয়া (২৭), গোলাম রাব্বি ওরফে বাপ্পি (১৯), মো. শাকিল হাওলাদার (২৫), মো. বাপ্পি (৩০), মো. হৃদয় হোসেন (৩০), মো. বিজয় (১৮), মো. ইজাজুল হোসেন (১৮), মো. কামাল হোসেন (৩২), মো. বাবু ওরফে ছোট বাবু (৩০) ও মো. সুমন (৩২)।
এতে বলা হয়, গত শুক্রবার দিনব্যাপী বিশেষ অভিযান চালিয়ে মোহাম্মদপুর থানার বিভিন্ন স্থান থেকে ১০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তাদের হেফাজত থাকা দুটি সামুরাই উদ্ধার করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে রয়েছে নিয়মিত মামলার আসামি, দস্যুতা মামলার আসামি, পরোয়ানাভুক্ত আসামি ও বিভিন্ন অপরাধে জড়িত অপরাধী।
গ্রেপ্তারকৃতদের আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
রাজধানীর বনানীর একটি বাসা থেকে চুরি যাওয়া ২৪ লাখ সাড়ে ৮৪ হাজার টাকা, মোটরসাইকেল এবং দুইটি মোবাইল ফোনসহ মো. কাউছার আহমেদ (২২) নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)।
গত শুক্রবার রাত পৌঁনে ১২টার দিকে মানিকগঞ্জ বাসস্ট্যান্ড এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করে ডিএমপির বনানী থানা পুলিশ।
শনিবার ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপ-কমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়, গত ৯ সেপ্টেম্বর ব্যবসায়ী মুস্তাজিরুল শোভন ইসলামের বনানীর বাসায় চুরি হয়। হ্যান্ড সুটকেসে থাকা ব্যবসায়িক কাজের জন্য রাখা ৩০ লাখ টাকা চোর চুরি করে নিয়ে যায়। পরে ১১ সেপ্টেম্বর ভিক্টিম মুস্তাজিরুল বাদী হয়ে বনানী থানায় একটি চুরির মামলা দায়ের করেন।
এতে আরও বলা হয়, আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে তদন্তকারী দল দ্রুত চুরির সাথে জড়িত ব্যক্তির পরিচয় ও অবস্থান শনাক্ত করে। পরবর্তীতে মানিকগঞ্জে অভিযান চালিয়ে কাউছারকে গ্রেপ্তার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সে চুরির ঘটনা স্বীকার করেছে।
গ্রেপ্তারকৃতের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। পাশাপাশি মামলাটি তদন্তাধীন রয়েছে বলেও বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।
মন্তব্য