অর্ধেক বাস চালুর নির্দেশনা থেকে সরে এসেছে সরকার। সমালোচনার মধ্যে আসন সংখ্যার সমপরিমাণ যাত্রী নিয়ে বাসসহ সব গণপরিবহন চলাচলের নতুন সিদ্ধান্ত এসেছে।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে বৃহস্পতিবার পাঠানো এক প্রজ্ঞাপনে এ সিদ্ধান্ত জানানো হয়, যা কার্যকর হবে আগামী বৃহস্পতিবার থেকে।
করোনার সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে চার মাসের বিধিনিষেধ তোলা হয় বুধবার। এদিন থেকে গণপরিবহন চলাচলের অনুমতি দেয়া হলেও, অর্ধেক যানবাহন সড়কে নামানোর শর্ত জুড়ে দেয় সরকার।
এ বিষয়ে গত রোববার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের দেয়া প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ‘সড়ক, রেল ও নৌ-পথে আসন সংখ্যার সমপরিমাণ যাত্রী নিয়ে গণপরিবহন, যানবাহন চলাচল করতে পারবে। সড়ক পথে গণপরিবহন চলাচলের ক্ষেত্রে স্থানীয় প্রশাসন (সিটি কর্পোরেশন এলাকায় বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা পর্যায়ে জেলা প্রশাসক) নিজ নিজ অধিক্ষেত্রের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, সংশ্লিষ্ট দপ্তর, সংস্থা, মালিক ও শ্রমিক সংগঠনের সঙ্গে আলোচনা করে প্রতিদিন মোট পরিবহন সংখ্যার অর্ধেক চালু করতে পারবে।’
এর আগে লকডাউন ও শাটডাউন সীমিত করার পর গণপরিবহন তার আসনের অর্ধেক যাত্রী নিয়ে চলার নির্দেশ দেয়া হয়েছিল। আর ভাড়া বাড়ানো হয়েছিল ৬০ শতাংশ। এবার বলা হয়, যাত্রী থাকবে সব আসনেই, কিন্তু গাড়ি চলবে অর্ধেক।
এতে সড়কে গাড়ি কমে যাবে, আর তখন যাত্রী বেশি থাকলে তৈরি হবে ভিড়, গাড়িতে গাদাগাদি করে চলতে হতে পারে। শাটডাউন ওঠানোর প্রথম দিন বুধবার রাজধানীতে তাই দেখা গেছে।
একজন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ নিউজবাংলাকে বলেছেন, এ ধরনের সিদ্ধান্ত অগ্রহণযোগ্য।
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ লেনিন চৌধুরী নিউজবাংলাকে বলেন, যে সিদ্ধান্তে মানুষের গাদাগাদি ও ভিড় তৈরি হবে, সে সিদ্ধান্ত অবশ্যই গ্রহণযোগ্য নয়। সেটি ক্ষতিকর। ঢাকা শহরে সব অফিস খুলে দেয়া হলে অফিসমুখি মানুষের চাপ বাড়বে। অর্ধেক বাস চললে স্বাস্থ্যবিধিতে উদাসীনতার সঙ্গে সঙ্গে ভোগান্তিও বাড়াবে।
অর্ধেক গাড়ি সড়কে কীভাবে নামবে, তার ব্যাখ্যায় বলা হয়েছে, মালিক-শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে এটা ঠিক করবে স্থানীয় প্রশাসন।
পরিবহন মালিক সমিতির নেতা খন্দকার এনায়েতউল্লাহ এই সিদ্ধান্তকে অযৌক্তিক বলেছেন। তার মতে, এটা বাস্তবায়ন করা খুবই কঠিন হবে। আবার সড়কে গাড়ি কমিয়ে দিলে তাতে চলাচলের ভোগান্তি বাড়ার পাশাপাশি গাড়িতে ভিড়ও বাড়বে। এতে স্বাস্থ্যবিধি পালন হুমকিতে পড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
সরকারের নেয়া সিদ্ধান্তের পক্ষে নিজের যুক্তি তুলে ধরে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন একটি ব্যাখ্যা দিয়েছিলেন। সেদিন তিনি বলেন, ‘অর্ধেক আসনের নামে বাসগুলো সব আসনে যাত্রী নেয়, ভাড়া আদায়ের ক্ষেত্রেও ৬০ শতাংশ বেশি রাখে। তাই জনভোগান্তি কমাতে নেয়া হয়েছে এই সিদ্ধান্ত।’
তিনি বলেন, ‘অর্ধেক যাত্রী না করে ফুল যাত্রী করা হয়েছে এ জন্য যে, বারবার অর্ধেক যাত্রী দিলে ওরা ৬০ শতাংশ বেশি ভাড়া নিচ্ছে, আবার একই সঙ্গে দেখা যাচ্ছে ফুল যাত্রী নিয়ে যাচ্ছে। লাভ হচ্ছে না এতে। শুভংকরের ফাঁকি। তাই বলা হয়েছে সমসংখ্যক যাত্রী নেয়ার কথা।’
অফিস চালু হলে, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান খোলা হলে সড়কে মানুষের চলাচল যখন বাড়বে, তখন অর্ধেক গাড়িতে ভিড় যে আরও বেশি হবে- এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে প্রতিমন্ত্রী বলেন, তারা মনে করছেন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিতে প্রয়োজন ছাড়া মানুষ খুব একটা বের হবে না।
জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘অধিক্ষেত্রের মধ্যে প্রয়োজন অনুযায়ী (গাড়ি চলবে), এমনিতেই মানুষ কম বের হবে। আস্তে আস্তে হয়ে যাবে। প্রথমে শুরুটা করুক। আমরা তো ধীরে ধীরে বাড়াব, বাড়ানো হবে।’
এমন বাস্তবতায় বিধিনিষেধ শিথিলের একদিন পরই সকল গণপরিবহন চলার অনুমতি দিয়েছে সরকার।
তবে সব ক্ষেত্রে মাস্ক পরা শতভাগ নিশ্চিত করার পাশাপাশি স্বাস্থ্য অধিদপ্তর প্রণীত স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। কোনো প্রতিষ্ঠানে স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালনে অবহেলা পরিলক্ষিত হলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে দায়িত্ব নিতে হবে এবং তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও সতর্ক করে দিয়েছে সরকার।
সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় দেশের পর্যটনকেন্দ্রগুলোও খুলে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। আগামী বৃহস্পতিবার থেকে খুলে দেয়া হবে রিসোর্ট, কমিউনিটি সেন্টার ও বিনোদন কেন্দ্রগুলো।
আরও পড়ুন:গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া ১০০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে মেডিকেল অফিসার ডাক্তার অনুপম বাড়ৈর উপর হামলার অভিযোগে সোহেল হাওলাদার (২৫) নামের এক যুবককে আটক করেছে পুলিশ।
আজ মঙ্গলবার সকাল ১১ টায় হাসপাতালটির জরুরী বিভাগে এ ঘটনা ঘটে।
আটককৃত যুবক সোহেল হাওলাদার উপজেলার ফেরধারা গ্রামের বিএনপি নেতা আব্দুল আজিজ হাওলাদারের ছেলে।
জানা গেছে, ঘটনার সময় ডাক্তার অনুপম বাড়ৈ নিজ কক্ষে রোগী দেখছিলেন। রুমে থাকা রোগীরা বের হয়ে গেলে হঠাৎ সোহেল হাওলাদার রুমে প্রবেশ করে দরজার সিটকানী বন্ধ করে দেয়। এরপর সোহেলের হাতে থাকা একটি এসএস পাইপ দিয়ে ডাক্তার অনুপম বাড়ৈকে বেধরক পিটাতে থাকে। এসময় তার চিৎকারে হাসপাতালের কর্মচারীরা রুমের দরজা ভেঙ্গে ডাক্তার অনুপম বাড়ৈকে উদ্ধার ও হামলাকারী সোহেল হাওলাদারকে আটক করে।
পরবর্তীতে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার কুমার মৃদুল দাস পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে যুবক সোহেল হাওলাদারকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। এ ঘটনায় হামলার শিকার ডাক্তার অনুপম বাড়ৈর পক্ষ থেক কোটালীপাড়া থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
ডাক্তার কুমার মৃদুল দাস বলেন, আমি যতটুকু জানতে পেরেছি, গত কয়েকদিন আগে সোহেল নাকি এক রোগী নিয়ে হাসপাতালে এসেছিলেন। তখন তিনি নাকি কাঙ্খিত সেবা থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। এই অভিযোগ এনে আজ সকালে জরুরী বিভাকে কর্মরত ডাক্তার অনুপম বাড়ৈর রুমে ঢুকে দরজা বন্ধ করে তাকে বেধরক পিটিয়েছে। এ ঘটনায় ডাক্তার অনুপম বাড়ৈ অসুস্থ হয়ে পড়ায় তাকে হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। বিষয়টি আমি আমার উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানিয়েছি।
তিনি আরও বলেন, ডাক্তার অনুপম বাড়ৈর পক্ষ থেকে কোটালীপাড়া থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। কোটালীপাড়া থানা পুলিশ যুবক সোহেল হাওলাদারকে ইতোমধ্যে আটক করেছে। আমরা আইনগতভাবে এর সুষ্ঠ বিচার চাই।
কোটালীপাড়া থানার অফিসার ইনচার্জ আবুল কালাম আজাদ বলেন, এ ঘটনায় অভিযোগ পেয়েছি। মামলার প্রস্তুতি চলছে। তদন্তপূর্বক পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
মামলা বাণিজ্য ও দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত কাউকেই ছাড় দেওয়া হবে না বলে মন্তব্য করেছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
আজ মঙ্গলবার সকালে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের গাছা থানা পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন তিনি।
উপদেষ্টা জানান, পুলিশ বিভাগের সংস্কারের অংশ হিসেবে পাইলট একটা প্রজেক্ট নেওয়া হয়েছে। সারাদেশে অনলাইনে মামলা ও জিডি গ্রহণ করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এজন্য আর থানায় আসতে হবে না। এ ছাড়া, আসামিদের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য কাচের ঘর করে দেওয়া হবে, এতে বাইরে থেকেই দেখা যাবে তার সঙ্গে কি রকম আচরণ করা হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, ‘মামলা বাণিজ্য ও দুর্নীতির সাথে জড়িত কাউকেই ছাড় দেওয়া হবে না। তবে হ্যাঁ, বাংলাদেশের দুর্নীতি সবচেয়ে বড় সমস্যা। এটা নিয়ন্ত্রণে আনতে পারলে দেশ অনেক এগিয়ে যেত।’
জুলাই আন্দোলনের মামলা নিষ্পত্তি প্রসঙ্গে উপদেষ্টা বলেন, জুলাই আগস্টের হত্যা মামলাগুলোর বাদী জনগণ। তাদের মামলার আসামি অনেক বেশি থাকায় এবং কে দোষী আর কে নির্দোষ, তা বের করে তদন্ত কার্যক্রম শেষ করতে দেরি হচ্ছে।
এ সময় গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার ড. মো. নাজমুল খানসহ সহ জিএমপির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন।
গত ১ সপ্তাহ ধরে গ্রীষ্মের প্রচণ্ড খরতাপে পুড়ছে দেশের সর্ব উত্তরের জেলা পঞ্চগড়। দিনের বেলায় প্রচণ্ড রোদ আর গরমে জনজীবন অতিষ্ঠ। প্রচন্ড তাপদাহের ফলে ঘর থেকে বের হতে পারছেনা মানুষ। তবে দিনের অংশে গরম হলেও রাতে পড়ছে ভারি কুয়াশা।
আজ মঙ্গলবার ভোরে হঠাৎ জেলাজুড়ে নেমে আসে ঘন কুয়াশা। সকাল ৮টা পর্যন্ত জেলার বেশ কয়েকটি এলাকায় হালকা থেকে মাঝারি ধরনের কুয়াশা দেখা যায়।
এতে রীতিমতো অবাক হয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
সদর উপজেলার ভাবরঙ্গি গ্রামের বাসিন্দা মোমিনুল ইসলাম সবজি বিক্রি করতে এসেছেন পঞ্চগড় বাজারে। তিনি বলেন, গৃীস্মকালে এমন কুয়াশা তিনি কখনো দেখেননি। এমন আবহাওয়া থাকলে এ সময়ের অর্থকরী ফসলের ক্ষতি হতে পারে। কায়েত পাড়া গ্রামের আনিসুর রহমান বলেন, গত কয়েকদিন ধরে প্রচণ্ড গরম। বাদাম শুকানোর জন্যে এই আবহাওয়া ভালো। কিন্ত তীব্র গরমে টিকে থাকা মুশকিল হয়ে পড়েছে। দিন ও রাতে কষ্টের মধ্যে সময় কাটাচ্ছি। কিন্তু আজ সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখি চারপাশ কুয়াশায় ঢেকে গেছে, ভাবতেও পারিনি এমন কিছু দেখতে পাবো।
পঞ্চগড় সরকারী কলেজের সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী রাকিব হাসান বলেন, নদ নদীতে পানি নেই অপরিকল্পিতভাবে সমতল ভূমি কেটে পাথর উত্তোলন করা হচ্ছে, কেটে ফেলা হচ্ছে
গাছপালা। ফলে প্রকৃতিতে বিপর্যয় নেমে আসছে। এদিকে গরমের পাশাপাশি প্রায় সকাল ৮টা পর্যন্ত কুয়াশা ছিল। এমন আবহাওয়া জীবনে কখনো দেখিনি। অবাক হয়ে গেছি।
তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জিতেন্দ্র নাথ রায় বলেন, মূলত আকাশে ধূলিকণার পরিমাণ বেড়ে গেছে। যার কারণে বাতাসে সেগুলো জমে গিয়ে কুয়াশার সৃষ্টি হয়েছে। একে ধূলিকণা প্রভাবিত কুয়াশা বলা যায়। এটি সাধারণ কুয়াশা নয়, বরং পরিবেশ দূষণ ও আবহাওয়ার বিশেষ অবস্থার কারণে সৃষ্টি।
তিনি আরও বলেন, মঙ্গলবার সকাল ৯টার দিকে জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ২৭ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। অন্যদিকে গতকাল সোমবার (৯ জুন) দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, চলমান দাবদাহের মধ্যে আগামী ১৪ জুন থেকে পঞ্চগড়ে বৃষ্টিপাত শুরু হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এতে কিছুটা স্বস্তি মিলতে পারে বলে মনে করছেন আবহাওয়াবিদরা।
মানিকগঞ্জের আরিচা-দৌলতপুর- টাঙ্গাইল আঞ্চলিক মহাসড়কের ঘিওরে ফ্লাইওভার ব্রিজে বাসের সঙ্গে মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষে মটরসাইকেল আরোহী সিরাজুল ইসলাম শেখ ( ২৫ ) নামের এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। নিহত সিরাজুল ইসলাম শেখ দৌলতপুর উপজেলার চর গোবিন্দপুর গ্রামের মো. ঠান্ডু শেখের ছেলে।
রবিবার (৮ জুন) দুপুর ১ টার দিকে ঘিওর উপজেলার চরবাইলজুরী পঞ্চরাস্তায় ফ্লাইওভার ব্রিজের উপর এ দুর্ঘটনা ঘটে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, দৌলতপুর থেকে ছেড়ে আসা স্বাধীনতা পরিবহনের একটি বাসের সঙ্গে বরংগাইল থেকে আসা একটি রানার মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলেই মোটরসাইকেল আরোহী সিরাজুল ইসলাম শেখ মারা যান।
খবর পেয়ে ঘিওর থানা পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে দুর্ঘটনা কবলিত বাস ও মোটরসাইকেল জব্দ করে থানায় নিয়ে যায়।
ঘিওর থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ রফিকুল ইসলাম এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে জানিয়েছে ।।
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে ব্যাটারী চালিত অটোরিক্সা ও মাইক্রোবাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে ২ জন নিহত হয়েছে।
সোমবার রাতে উপজেলার তারাবো এলাকায় এ দূর্ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন, তারাবো সুলতানবাগ এলাকার দৈনিক ইনকিলাব পত্রিকার সাবেক রূপগঞ্জ প্রতিনিধি মরহুম আবুল হাসান আসিফের ছেলে শাহরিয়ার হাসান আকাশ (২৯) ও অটোরিক্সা চালক অজ্ঞাত (৩৫)।
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয়রা জানান, সোমবার রাতে তারাবো বিশ্বরোড এলাকা থেকে অটোরিক্সা যোগে তারাবো সুলতানবাগ এলাকার বাড়িতে ফিরছিলেন শাহরিয়ার হাসান আকাশ (২৯) ও তার বন্ধু সায়মন (২৯), তামিম সরকার (২৯)। পথিমধ্যে সাইফিং ফ্যাক্টরীর সামনে একটি হাইয়েস মাইক্রোবাসের সাথে অটোরিক্সাটির মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষে অটোরিক্সাটি দুমড়েমুচড়ে যায়।
এ সময় ঘটনাস্থলেই নিহত হয় অটোরিক্সা চালক অজ্ঞাত (৩৫) এবং আহত হয় অটোরিক্সার যাত্রী শাহরিয়ার হাসান আকাশ (২৯) ও তার বন্ধু সায়মন (২৯), তামিম সরকার (২৯)। তাদের মধ্যে শাহরিয়ার হাসান আকাশ ও তার বন্ধু তামিম সরকারকে গুরুত্বর আহত অবস্থায়
স্থানীয়রা উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা শাহরিয়ার হাসান আকাশকে মৃত ঘোষনা করেন।
এ ব্যাপারে রূপগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) লিয়াকত আলী বলেন, দূর্ঘটনার পর হাইয়েস মাইক্রোবাসের চালক মাইক্রোবাসটি নিয়ে পালিয়ে যাওয়ায় তাকে গ্রেফতার করা সম্ভব হয় নি।
কুষ্টিয়া শহরের একটি বহুতল ভবনের পার্কিং স্পেসে একটি বিলাসবহুল ল্যান্ড ক্রুজার প্রাডো গাড়ির সন্ধান মিলেছে। কোটি টাকা দামের গাড়িটি ঝিনাইদহ-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি) নিহত আনোয়ারুল আজীম আনারের বলে ধারণা করছেন পুলিশ ও স্থানীয়রা।
সোমবার (৯ জুন) দিবাগত রাত বারোটার দিকে কুষ্টিয়া পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের সামনের আটতলা বিশিষ্ট সাফিনা টাওয়ার নামের ভবনের গ্যারেজে এটি খুঁজে পাওয়ার কথা জানায় পুলিশ। গাড়ির ভেতরে পাওয়া গেছে গাড়ির কাগজপত্র, সংসদ সদস্য ও সিআইপি স্টিকার। কালো রঙের গাড়িটির নম্বর ‘ঢাকা মেট্রো-ঘ ১২-৬০৬০’।
এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন কুষ্টিয়া মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) স্বপন। তিনি বলেন, ‘গাড়ির খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে যাই। গাড়ি থেকে কাগজপত্র, সংসদ সদস্য ও সিআইপি স্টিকার উদ্ধার করা হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, গাড়িটি সাবেক এমপি আনারের।’
বিষয়টি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে এবং গাড়িটি উদ্ধার করে থানায় নেওয়া হবে বলে জানান তিনি। ে
এ ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী সাব্বির বলেন, ‘প্রথমে শুনি সাবেক শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদের গাড়ি রাখা আছে সাফিনা টাওয়ারের গ্যারেজে। পরে পুলিশে খবর দেওয়া হয়। পুলিশ এসে গাড়ির কাগজপত্র ও সংসদ সদস্যের স্টিকার উদ্ধার করে। গাড়ির চালক কুষ্টিয়া জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আজগার আলীর সাবেক চালক ছিলেন। তিনিই কাগজপত্র ও স্টিকার দেন। এতে দেখা যায়, গাড়িটির মালিক আনোয়ারুল আজীম আনার।”
তিনি আরও বলেন, ‘এই ঘটনায় যারা জড়িত, তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।’
আরেক প্রত্যক্ষদর্শী জুনায়েদ হোসাইন বলেন, ‘সাধারণ জনগণের কাছ থেকে জানতে পারি যে সাফিনা টাওয়ারে একটি দামি প্রাডো গাড়ি রাখা আছে, যা মাসের পর মাস বের করা হয় না, শুধু মাঝে মাঝে স্টার্ট দেওয়া হয়। পরে আমরা গিয়ে দেখি গাড়িটি। আমাদের দেখে চালক পালানোর চেষ্টা করেন। পরে একজনকে কল দেন, আমি তার সঙ্গে কথা বলি, কিন্তু তিনি কোনো তথ্য দেননি। পরে পুলিশ এসে কাগজপত্র উদ্ধার করে, যেখানে এমপি আনারের নাম পাওয়া যায়।’
ঘটনার তদন্ত করে জড়িতদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানান তিনি। এদিকে স্থানীয়রা জানান, জেনুইন লিফ কোম্পানি নামের একটি সিগারেট কোম্পানি ভবনের দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চতুর্থ তলা ভাড়া নিয়েছে। তারাই গাড়িটি এখানে রাখার ব্যবস্থা করেছে।
এ বিষয়ে বাসার কেয়ারটেকার আলমগীর হোসেন বলেন, ‘জেনুইন লিফ কোম্পানি ভবনের তিনটি তলায় ভাড়া নিয়েছে। সেখানে বিদেশিরা আসেন, থাকেন ও খাওয়াদাওয়া করেন। গাড়িটি তারাই রেখেছেন। কোম্পানির বেলাল স্যার জিএম ও জাহিদ স্যার সিইও। এর বেশি আমি জানি না।’
গাড়িটির চালক শান্ত বলেন, ‘পাঁচ বছর আগে আমি কুষ্টিয়া জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আজগার আলীর গাড়ি চালাতাম। এখন জেনুইন লিফ কোম্পানির গাড়িচালক হিসেবে চাকরি করি। জিএম বেলাল স্যার ও সিইও জাহিদ স্যারের গাড়ি চালাই। তাদের হুকুমে আমি গাড়ি স্টার্ট দিয়েছি। গাড়ির মালিক কে, তা জানি না। আমি কখনো রাস্তায় গাড়িটি চালাইনি।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ভবনের একজন নিরাপত্তাকর্মী বলেন, ‘গাড়িটি এনে তারা গ্যারেজে রাখেন। আমি জানতাম না এটি কার। আজ শুনলাম এটি এক এমপির। গাড়িটি কয়েক মাস ধরে রাখা আছে।’
এ বিষয়ে সাফিনা টাওয়ারের মালিক জেনুইন লিফ টোব্যাকোর সিইও জাহিদ ও জিএম বেলালের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাদের পাওয়া যায়নি। তাদের অফিসে গিয়ে কেয়ারটেকার ও দারোয়ান ছাড়া কাউকে পাওয়া যায়নি।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গাড়িটির রেজিস্ট্রেশন ও মালিকানা পত্রে এমপি আনারের নাম রয়েছে। এ ছাড়া, সাফিনা টাওয়ারের ফ্ল্যাট মালিক ও ভাড়াটিয়ার চুক্তিপত্র অনুযায়ী মেহেরপুর জেলার গাংনী পৌরসভার বাঁশবাড়িয়া দক্ষিণপাড়ার বাসিন্দা মো. মুস্তাফিজুর রহমান ভবনের তিনটি ইউনিট ও তিনটি গাড়ির পার্কিং স্পেস ভাড়া নিয়েছেন। গাড়িটি বর্তমানে তার পার্কিং স্পেসেই রাখা আছে।
তিনি ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারি মাস থেকে এটি ভাড়া নিয়েছেন। মুস্তাফিজুর রহমান কুষ্টিয়ার দশমাইল এলাকায় অবস্থিত ‘তারা টোব্যাকো’ নামক একটি প্রতিষ্ঠানের শেয়ারহোল্ডার।
এ বিষয়ে কুষ্টিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে গাড়িটি কলকাতায় খুন হওয়া সাবেক সংসদ সদস্য আনারের। তবে গাড়িটির মালিকানা সম্পর্কে অধিকতর নিশ্চিত হওয়ার জন্য বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। একইসঙ্গে কে বা কারা গাড়িটি এনে এখানে রেখেছে, সেটিও তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।’
পবিত্র হজের সব আনুষ্ঠানিকতা শেষ হয়েছে। এখন হাজিরা সৌদি আরব থেকে দেশে ফেরার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
আজ মঙ্গলবার থেকে শুরু হয়েছে বাংলাদেশি হাজিদের ফিরতি ফ্লাইট। যা চলবে ১০ জুলাই পর্যন্ত।
মিনায় শয়তানকে কঙ্কর নিক্ষেপ এবং কাবা ঘরে ফরজ তাওয়াফ শেষে মিনায় ফিরছেন হাজিরা। ফেরার পথে অনেকে পথ হারিয়ে আশ্রয় নেন মক্কার হজ মিশনে।
জানা গেছে, বাংলাদেশ থেকে এ বছর ৮৭ হাজার ১৫৭ জন হজ পালন করেছেন। এর মধ্য ১৯ জন হজ যাত্রী মৃত্যুবরণ করেন। চলতি হজ মৌসুমে সৌদি আরবের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ৪৩৬টি ভুয়া হজ এজেন্সি বন্ধ করে দিয়েছে এবং ৪৬২ জনকে আইন ভঙ্গ করায় গ্রেপ্তার করেছে।
এদিকে চলতি বছর পবিত্র হজ পালন করতে সৌদি আরবে গিয়ে এখন পর্যন্ত চিকিৎসা নিয়েছেন ১৮৮ বাংলাদেশি। এ ছাড়া ১৯ জন দেশটির সরকারি হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন।
এবার হজ অনুষ্ঠিত হয় ৫ জুন। হজযাত্রীদের সৌদি আরবে যাত্রার প্রথম ফ্লাইট ছিল ২৯ এপ্রিল আর হজযাত্রীদের সৌদি আরবে যাত্রার শেষ ফ্লাইট ছিল ৩১ মে।
মন্তব্য