করোনায় মৃতের সংখ্যা এত বেশি যে, তা সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে গোসল ও মৃত্যুপরবর্তী আনুষ্ঠানিকতা তত্ত্বাবধানকারী প্রতিষ্ঠান আল-মারকাজুল ইসলামী।
গত বুধবার ৪৪ জন করোনা রোগীর দাফন-পূর্ববর্তী তত্ত্বাবধায়ন করেছে সংস্থাটি। প্রতিষ্ঠানটির মোহাম্মদপুরের বাবর রোডের প্রধান কার্য়ালয়ে এখন প্রায়ই দেখা যায় লাশবাহী গাড়ির সারি।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণকারীর সংখ্যার চেয়ে ঢাকায় লাশ দাফন কম হচ্ছে। এর কারণ করোনা আক্রান্ত মৃতদেহ ঢাকার বাইরে নেয়া হচ্ছে।
আল-মারকাজুল ইসলামীর সাধারণ সম্পাদক এনামুল হাসান খান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যা এত বেশি যে, তা সামলাতে আমরা হিমশিম খাচ্ছি। তবু আমরা কাজ করে যাচ্ছি। জুলাইয়ের প্রথম ১০ দিনের চেয়ে এখন মৃত্যুর সংখ্যা অনেক বেড়েছে।’
১০ জুলাই রাত ১২টা থেকে ১১ জুলাই বিকেল পর্যন্ত ২৫টি কোভিড-১৯ আক্রান্ত মৃতদেহের গোসল ও মৃত্যুপরবর্তী আনুষ্ঠানিকতা তত্ত্বাবধান করেছে দাতব্য প্রতিষ্ঠান আল-মারকাজুল ইসলামী।
আর বুধবার বা ২৮ জুলাই ৪৪টি করোনা মরদেহ সেখানে নেয়া হয়েছিল।
করোনা আক্রান্ত রোগীর লাশ দাফন বেশির ভাগ ঢাকার বাইরে হওয়ায় ঢাকার কবরস্থানগুলোতে মৃত্যুর ঘটনার চেয়ে লাশ দাফন কম হচ্ছে বলে মনে করেন এনামুল হাসান খান।
রায়েরবাজার কবরস্থানের গোরখোদক লিয়াকত আলী সরকার বলেন, ‘যার যার এলাকায় লাশ নেয়ার কারণে ঢাকায় লাশ কম থাকছে, এ কারণে এই কবরস্থানে দাফনও হচ্ছে কম।’
তিনি জানান, ২৮ জুলাই ৪ জন ও ২৯ জুলাই ৩ জন করোনা আক্রান্ত রোগীকে ওই কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে।
তিনি জানান, গত এপ্রিলে এখানে লাশ দাফন হতো বেশি। তবে এখন করোনা মিলিয়ে ১০-১২টি লাশ দাফন হয়। এখন দৈনিক গড়ে ৩-৪টি করোনা আক্রান্ত রোগী থাকছে বলে জানান তিনি।
জুলাইয়ের প্রথম ১০ দিনের চেয়ে এখন করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যা বেড়েছে বলে জানিয়েছেন আল-মারকাজুল ইসলামীর সাধারণ সম্পাদক।
তিনি বলেন, ‘এখন তো কোভিড আক্রান্ত রোগীর সিরিয়াল লেগে যায়। সেটা গত কয়েক দিনে আরও বেড়েছে। ঈদের পরে সর্বোচ্চ ৫৪ জন করোনা আক্রান্ত মৃতদেহের দাফনপূর্ববর্তী কার্যক্রম আমরা করেছি।’
তিনি জানান, করোনা আক্রান্ত হয়ে যাদের খারাপ অবস্থা, তাদের অনেকে ঢাকায় চিকিৎসার জন্য আসছেন। মৃত্যু হলে তাদের গোসলের পর মৃতদেহ ঢাকার বাইরে নিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে নিজ এলাকায় দাফনের জন্য।
আল-মারকাজুল ইসলামীর তথ্যমতে, শুধু স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশ অনুযায়ী তারা চলতি মাসের প্রথম ১০ দিন ২০৫টি করোনা শনাক্ত লাশের গোসল করিয়েছে। এই সময়ে এর বাইরেও লাশ রয়েছে।
২০২০ সালের শুরু থেকে ১০ জুলাই পর্যন্ত তারা ৫ হাজার ৫১টি করোনা শনাক্ত লাশের গোসল করিয়েছে।
আল-মারকাজুল ইসলামীর সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘আমরা প্রতিদিন ৪০-৪৫টি করোনা রোগীর গোসল করাচ্ছি। ২৪ ঘণ্টায় আমরা আমাদের টিমকে ভাগ করে রেখেছি। মৃতদেহ আমাদের এখানে আনা হচ্ছে। আবার আমরা গিয়েও করছি। আমাদের গাড়ি ও লোকজন সব সময় ব্যস্ত থাকছে কোভিড রোগীদের লাশ গোসল করানোতেই। এখনও এটা কমেনি।’
তিনি জানান, তাদের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে এসএমএসের মাধ্যমে প্রতিদিন কোভিড-১৯ রোগীর পরিচয়, নাম-ঠিকানা দেয়া হয়। তাদের টিম ওই ঠিকানায় গিয়ে লাশের গোসল সম্পন্ন করে।
করোনায় ভুগে কেউ মারা গেলে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে একটি বার্তা যায়। মন্ত্রণালয় এর পরে মারকাজুলে বার্তা পাঠায়।
করোনায় মৃতদের সংরক্ষণ, গোসল, মৃত্যুপরবর্তী তত্ত্বাবধান করতে গিয়ে এখন জায়গার সংকুলান হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন আল-মারকাজুল ইসলামীর সংশ্লিষ্টরা। এ জন্যে তারা জমি বরাদ্দ চেয়েছেন।
প্রতিষ্ঠানটির সাধারণ সম্পাদক এনামুল হাসান খান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে কথা হয়েছে, এটা সরকার থেকে করা হলে আমাদের জন্য ভালো হতো।’
১৯৮৮ সালে আল-মারকাজুল ইসলামী বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা লাভ করে। তখন থেকেই এ সংস্থাটি ধর্মীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল ও অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিসের সেবামূলক কার্যক্রম চালিয়ে আসছে।
গত বছরে করোনা মহামারি শুরু হলে প্রথম থেকেই সামনের সারিতে থেকে কাজ করেছে প্রতিষ্ঠানটি।
দাহ বেড়েছে পোস্তগোলা শ্মশানে
রাজধানীর পোস্তগোলা শ্মশানঘাটের মরদেহ সৎকারের দায়িত্বপ্রাপ্ত মিলন লাল ডোম। করোনা মহামারির কারণে ওই শ্মশানঘাটে মৃতদেহ দাহ করার সংখ্যা বেড়েছে বলে নিউজবাংলাকে জানিয়েছেন তিনি।
চলতি মাসের প্রথম ১০ দিনে সেখানে ৪১টি মৃতদেহ দাহ করা হয়েছে। ২৮ জুলাই পর্যন্ত দাহ হয়েছে ৮৬টি মৃতদেহ। এদের মধ্যে সর্বোচ্চ ৩৫ জন করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন বলে জানান মিলন লাল ডোম।
তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এখন করোনায় মৃত্যুর সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। আগে প্রতি মাসে এই শ্মশানঘাটে লাশ আসত ৫০টি। এখন আসে একশর বেশি। বেশিরভাগই করোনা।’
মিলন বলেন, ‘করোনা মরদেহের সৎকার আলাদা হয়। স্বাস্থ্যবিধি মেনে পিপিই পরে নিজের সুরক্ষা নিশ্চিত করে আমরা সৎকারের কাজ করি।’
পোস্তগোলা শ্মশানঘাটে ২০২০ সালের জুলাই থেকে ২০২১ সালের জুন পর্যন্ত এক বছরে ১ হাজার ৮৬টি লাশ সৎকার করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
ঢাকার কবরস্থানে দাফন বেড়েছে
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) ছয়টি কবরস্থান রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে উত্তরা ৪ নং সেক্টর কবরস্থান, উত্তরা ১২ নং সেক্টর কবরস্থান, উত্তরা ১৪ নং সেক্টর কবরস্থান, বনানী কবরস্থান, মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থান ও রায়েরবাজার কবরস্থান।
করপোরেশনের তথ্য অনুসারে, জুলাইয়ের ১১ তারিখ পর্যন্ত উত্তরা ১৪ নং সেক্টর, বনানী, মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী ও রায়েরবাজার কবরস্থানে ৩৬টি করোনা আক্রান্ত মরদেহ দাফন করা হয়েছে। এর মধ্যে সর্বোচ্চ রায়েরবাজার কবরস্থানে দাফন হয়েছে ৩১টি মরদেহ।
আরও পড়ুন:দেশে গত বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা থেকে গতকাল শুক্রবার সকাল ৮টা পর্যন্ত একদিনে আরও ১০ জনের শরীরে করোনাভাইরাস পাওয়া গেছে। ১৯৯ জনের নমুনা পরীক্ষা করে এই রোগী শনাক্ত হয়। এ নিয়ে মোট আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২০ লাখ ৫২ হাজার ৭৩ জনে। এ সময়ে করোনায় আক্রান্ত হয়ে একজনের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল শুক্রবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে পাঠানো করোনাবিষয়ক নিয়মিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, নতুন করে করোনা আক্রান্ত ১০ জনসহ চলতি বছর এখন পর্যন্ত মোট রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫২৮ জনে। এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় একজনের মৃত্যু হওয়ায় ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ২৯ হাজার ৫১৯ জনে দাঁড়িয়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, দেশে করোনাভাইরাস মহামারির শুরু থেকে এখন পর্যন্ত মোট শনাক্তের হার ১৩ দশমিক ৪ শতাংশ। আর গত ২৪ ঘণ্টায় শনাক্তের হার ৪ দশমিক ২ শতাংশ।
প্রসঙ্গত, ২০২০ সালের ৮ মার্চ দেশে প্রথম ৩ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়। এর ১০ দিন পর ওই বছরের ১৮ মার্চ দেশে এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে প্রথম একজনের মৃত্যু হয়। ২০২১ সালের ৫ ও ১০ আগস্ট দুদিন করোনায় সর্বাধিক ২৬৪ জন করে মারা যান।
গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলায় দিন দিন বাড়ছে ডেঙ্গুরোগীর সংখ্যা। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোতো ডেঙ্গুরোগীর সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। গত ৩ দিনে ডেঙ্গুরোগী শনাক্ত হয়েছে ১০ জন। গত ২২ থেকে ২৪ জুন পর্যন্ত এই ৩ দিনে ১০ জন ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়েছেন বলে হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়।
কাপাসিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. হাবিবুর রহমান জানান, গত রোববার থেকে আমরা সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে ডেঙ্গুরোগীর তথ্য সংগ্রহ করে জেলা সিভিল সার্জন অফিসে প্রেরণ করেছি। তিনি জানান, আমাদের কাছে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী গত রোববার কাপাসিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ১ জন, হেলথ কেয়ার ডায়াগনস্টিক অ্যান্ড ডায়াবেটিক সেন্টারে ২ জন, রেডিয়াম ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ২ জন, হেলথ কেয়ার ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ২ জন ডেঙ্গুরোগী পাওয়া গেছে।
কাপাসিয়া উপজেলার সরকারি - বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে জ্বরে আক্রান্ত হয়ে অনেকেই রক্ত পরীক্ষা করেছেন। রক্ত পরীক্ষার পর এক দিনে ৫ জনের ডেঙ্গু শনাক্ত হয়েছে। ২৩ জুন, সোমবার কাপাসিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ১ জন, রেডিয়াম ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ১ জন, ইরাম ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ১জনসহ মোট ৩ জন ডেঙ্গুরোগী শনাক্ত হয়েছে। তাছাড়া গত মঙ্গলবার হেলথ কেয়ার ডায়াগনস্টিক অ্যান্ড ডায়াবেটিক সেন্টারে ২ জন মহিলার রক্ত পরীক্ষার পর ডেঙ্গু শনাক্ত হয়েছে।
করোনা সংক্রমণের নতুন ঢেউয়ের মধ্যে দেশে নতুন করে কারো মৃত্যু হয়নি। বুধবার (২৫ জুন) সকাল ৮টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ১৯ জনের শরীরে প্রাণঘাতী ভাইরাসটি শনাক্ত করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানিয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ৪১২ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। পরীক্ষার বিপরীতে শনাক্তের হার ৪ দশমিক ৬১ শতাংশ।
দেশে এখন পর্যন্ত ২০ লাখ ৫২ হাজার ৬৩ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে এখন পর্যন্ত মারা গেছেন ১৯ জন। আর দেশে ভাইরাসটিতে মোট ২৯ হাজার ৫১৮ জনের মৃত্যু হয়েছে।
গত কয়েক সপ্তাহ ধরে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে এডিশ মশাবাহিত রোগ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত ও মুত্যৃর সংখ্যা বেড়েই চলেছে। চলতি বছরে ডেঙ্গু যেনো ভয়বহ রূপ ধারণ করতে যাচ্ছে।
এদিকে গত মঙ্গলবার সকাল ৮টা থেকে গতকাল বুধবার সকাল ৮টা পর্যন্ত একদিনে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে নতুন করে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৩২৬ জন। সবচেয়ে বেশি ১১৮ জন আক্রান্ত হয়েছেন বরিশাল বিভাগে। এই সময়ে ডেঙ্গু আক্রান্ত ২ জনের মৃত্যু হয়েছে।
গতকাল বুধবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোলরুম থেকে পাঠানো ডেঙ্গুবিষয়ক এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে বরিশাল বিভাগে ১১৮ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ৪৩ জন, ঢাকা বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৪৩ জন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে ৪৫ জন, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে ২৬ জন, খুলনা বিভাগে ১৬ জন, রাজশাহী বিভাগে ২৯ জন, ময়মনসিংহে ৫ জন ও সিলেট বিভাগে একজন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
এদিকে, গত ২৪ ঘণ্টায় ৩১৯ জন ডেঙ্গুরোগী হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়েছেন। চলতি বছর ছাড়পত্র পেয়েছেন ৭ হাজার ৭৪৯ জন। চলতি বছরের ২৫ জুন পর্যন্ত মোট ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন ৮ হাজার ৮৭০ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ৩৬ জনের।
২০২৪ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হন মোট এক লাখ এক হাজার ২১৪ জন এবং মৃত্যুবরণ করেন ৫৭৫ জন। এর আগের বছর ২০২৩ সালে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মোট এক হাজার ৭০৫ জনের মৃত্যু হয়। ওই বছর ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন মোট তিন লাখ ২১ হাজার ১৭৯ জন।
এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্তের হার বেড়েই চলেছে। সোমবার (২৩ জুন) সকাল থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় কারো মৃত্যু হয়নি। আর এই সময়ের মধ্যে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন আরও ৩৯৪ জন। আর চলতি সপ্তাহের এই কয়েকদিনে রোগটিতে মৃত্যু হয়েছে তিনজনের।
সোমবার (২৩ জুন) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ অ্যান্ড ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের সংবাদ বিজ্ঞপ্তি থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
গত ২৪ ঘণ্টায় বরিশাল বিভাগে সবচেয়ে বেশি আক্রান্তের ঘটনা ঘটে। এ সময়ের মধ্যে বিভাগটিতে আক্রান্ত হয় সর্বোচ্চ ১৫৭ জন।
বিজ্ঞপ্তি থেকে পাওয়া তথ্যানুসারে, গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে দেশের বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি ভর্তি হয়েছেন ৩৯৪ জন। নতুন আক্রান্তের মধ্যে ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ৯২ জন। আর ঢাকার বাইরের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন আরও ৩০২ জন।
বিজ্ঞপ্তি থেকে পাওয়া তথ্য অনুসারে, চলতি বছর আক্রান্ত হয়ে এখন পর্যন্ত ৩৪ জনের মৃত্যু হয়েছে, যাদের মধ্যে ৫০ শতাংশ পুরুষ এবং ৫০ শতাংশ নারী।
বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ২৪ জুন পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন মোট ৮ হাজার ৫৪৪ জন। এর মধ্যে ৫৫ দশমিক ৬ শতাংশ পুরুষ এবং ৪৪ দশমিক ৪ শতাংশ নারী।
বরিশাল বিভাগের বরগুনায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে বৃদ্ধা রাবেয়া (১০০) মারা গেছেন। গতকাল সোমবার ভোরে তিনি বরগুনা ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন। সরকারি হিসাব অনুযায়ী এ নিয়ে বিভাগে ডেঙ্গুতে ৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। তাদের মধ্যে বরগুনার বাসিন্দাই রয়েছে ৬ জন। এদিকে গত রোববার সকাল ৮টা থেকে সোমবার সকাল ৮টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় বরিশাল বিভাগের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলা হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন আরও ১২৬ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী। একই সময়ে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছে ১২৯ জন।
বরিশাল বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. শ্যামল কৃষ্ণ মন্ডল এ তথ্য নিশ্চিত করে জানান, সোমবার ভোরে মৃত্যু হওয়া শতবর্ষী রাবেয়া বেগম বরগুনা সদরের বাসিন্দা। তাকে গত রোববার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল।
স্বাস্থ্য বিভাগে তথ্য মতে, গত ২৪ ঘণ্টায় বরিশাল শেরেবাংলা চিকিৎসা মহাবিদ্যালয় (শেবাচিম) হাসপাতালে ১৩ জন ভর্তি হয়েছে। এছাড়া বরিশাল জেলার বিভিন্ন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হয়েছে ৮ জন।
পটুয়াখালী জেলার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে ৭ জন, পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৪ জন, ভোলা সদর হাসপাতালে ৫ জন ভর্তি হয়েছে। পিরোজপুরে ১৬ জন ও বরগুনায় ৭৩। তবে গত ২৪ ঘণ্টায় ঝালকাঠিতে কেউ আক্রান্ত হয়নি।
বরিশাল বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. শ্যামল কৃষ্ণ মন্ডল বলেন, বর্তমানে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হওয়ার সংখ্যা উদ্বেগ ও আশংকাজনক। এ পরিস্থিতি থেকে বেরুতে হবে। তাই মশার বিস্তার রোধ করতে বাড়ির আশে-পাশে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করতে হবে। মশার কামড় থেকে নিজেকে রক্ষায় ব্যবস্থা নিতে হবে।
এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গু জ্বরে ঊর্ধ্বগতির আক্রান্তের হারের মধ্যে দেশে আরও দুইজনের মৃত্যু হয়েছে। রবিবার (২২ জুন) সকাল থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় এই মৃত্যু হয়। আর এই সময়ের মধ্যে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন আরও ৩৯২ জন।
সোমবার (২৩ জুন) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ অ্যান্ড ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের সংবাদ বিজ্ঞপ্তি থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
গত ২৪ ঘণ্টায় ঢাকা সিটি করপোরেশন ও বরিশাল বিভাগে এসব মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। আর আক্রান্তের হারে সর্বোচ্চ অবস্থানে রয়েছে বরিশাল বিভাগ। এই সময়ের মধ্যে বিভাগটিতে নতুন করে মশাবাহিত রোগটিতে আক্রান্ত হয়েছেন ১২৬ জন।
বিজ্ঞপ্তি থেকে পাওয়া তথ্যানুসারে, গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে দেশের বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি ভর্তি হয়েছেন ৩৯২ জন। নতুন আক্রান্তের মধ্যে ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ৮৬ জন। আর ঢাকার বাইরের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন আরও ৩০৬ জন।
বিজ্ঞপ্তি থেকে পাওয়া তথ্য অনুসারে, চলতি বছর আক্রান্ত হয়ে এখন পর্যন্ত ৩৪ জনের মৃত্যু হয়েছে, যাদের মধ্যে ৫০ শতাংশ পুরুষ এবং ৫০ শতাংশ নারী।
বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ২৩ জুন পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন মোট ৮ হাজার ১৫০ জন। এর মধ্যে ৫৯ শতাংশ পুরুষ এবং ৪১ শতাংশ নারী।
মন্তব্য