সারা দেশে করোনা সংক্রমণ যখন হু হু করে বাড়ছে, তখন কঠোর লকডাউন শিথিল করার সিদ্ধান্ত কেন নিল সরকার?
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, একদিকে জনস্বাস্থ্য আরেক দিকে ঈদ উৎসবে মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রার তাগিদ, এ নিয়ে কয়েক দিন ধরে দোটানায় ভুগছিলেন নীতিনির্ধারকরা।
বিশেষ করে কোরবানির পশুর কেনাবেচা ঠিকমতো না হলে বিপুলসংখ্যক খামারির অপূরণীয় আর্থিক ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা। এবার কোরবানির জন্য খামারগুলোয় ১ কোটি ২০ লাখ পশু প্রস্তুত করা হয়েছে। কোরবানিতে পশুর বাণিজ্য হয় প্রতিবছর ৪০ থেকে ৫০ হাজার কোটি টাকার।
১২ দিন ধরে শাটডাউন চলমান থাকলেও করোনাভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ে নেই আশার খবর। সংক্রমণ ও মৃত্যুর সংখ্যা বেড়েই চলেছে।
সোমবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, আগের ২৪ ঘণ্টায় পরীক্ষা বিবেচনায় করোনা শনাক্তের হার ৩১ দশমিক ২৪ শতাংশ।
এ অবস্থায় জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শাটডাউন প্রত্যাহারের কোনো অবকাশ নেই।
তবু বৃহস্পতিবার থেকে ঈদ ছুটি পর্যন্ত শাটডাউন শিথিল করে দেশবাসীকে ঈদ পালনের সুযোগ দেয়ার নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এখন শুধু প্রজ্ঞাপন জারির অপেক্ষা।
এ সময়ে শর্ত সাপেক্ষে চলবে গণপরিহন। খুলে দেয়া হবে দোকানপাট, শপিং মল। তবে ঈদের পর ফের ১৪ দিনের জন্য শাটডাউন দেয়া হবে। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ সূত্রে এ বিষয়ে নিশ্চিত হয়েছে নিউজবাংলা।
কেন শিথিল করা হচ্ছে?
শাটডাউন শিথিলের পেছনে বড় কারণ ঈদুল আজহা।
কোরবানির পশু ঘিরে হাজার কোটি টাকার বাণিজ্য, খামারি, ক্রেতা-বিক্রেতা সবার কথা ভেবে এমন সিদ্ধান্তে এসেছে সরকার। এর সঙ্গে আছে প্রিয়জনদের কাছে গিয়ে ঈদ উদযাপনের প্রবণতা।
শাটডাউন শিথিলের বিষয়ে স্পষ্ট করে কিছু বলতে রাজি হননি করোনা পরিস্থিতি ও বিধিনিষেধ আরোপ নিয়ে সরকারের উচ্চপর্যায়ের কমিটির আহ্বায়ক এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।
তিনি জানান, জীবিকা এবং জীবনের তাগিদে সবদিক বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত জানাবে সরকার।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘(কোরবানি ঈদের) অল্প কয়েক দিন রয়েছে। অনেকগুলো ফ্যাক্টর এখানে রয়েছে। এই যে খামারিরা তাদের পশুগুলো এত দিন ধরে কোরবানির জন্য তৈরি করেছে, এই খামারিরা যদি বিক্রি করতে না পারেন, তাহলে আগামী আরও এক বছর… এই ষাঁড় গরু তো দুধ দেয় না, বিক্রি করে যা পাওয়ার সেটা পেতে হবে। না হলে আরও এক বছর পালতে হবে এই ষাঁড় গরু।’
ব্যবসায়ীদের দিক থেকে চাপ আছে বলে ইঙ্গিত দিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘দোকানমালিক সমিতির যারা আছেন, তারা কিন্তু এই দুই ঈদের জন্য বসে থাকেন। এসব কিছু চিন্তাভাবনা করে জীবিকা এবং জীবনের তাগিদে যা কিছু প্রয়োজন, সেগুলো মাথায় রেখে যা কিছু করার নির্দেশনা দেবে।’
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ যথাসময়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে সরকারের সিদ্ধান্ত জানাবে বলেও জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, ঈদে ঘরমুখী মানুষের চাপ সামাল দিয়ে যাত্রা নির্বিঘ্ন করতেই এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
দুই মাস আগে রোজার ঈদে বাসসহ সব ধরনের গণপরিবহন বন্ধ রেখেছিল সরকার। কিন্তু এসব বাধা উপেক্ষা করে ঈদের আগে ঘরমুখী হয় মানুষ। ফেরিঘাটে ঘরমুখী মানুষের ভিড় সামাল দিতে হিমশিম খেয়েছিল সরকার। কর্তৃপক্ষের অনুরোধ তোয়াক্কা না করে বাড়িমুখী হয়েছিল লাখ লাখ মানুষ।
গত ১২ মে মাদারীপুরের বাংলাবাজারে দুটি ফেরি থেকে হুড়োহুড়ি করে নামতে গিয়ে ভিড়ের চাপে পাঁচজনের মৃত্যু হয়। ওই ঘটনায় পদদলিত হয়ে আহত হয় অর্ধশতাধিক। এসব ঘটনা এড়াতে এবারের ঈদে গণপরিবহন চালু রাখতে চাচ্ছে সরকার।
বর্তমান সময়ে করোনার যে উচ্চগতির সংক্রমণ দেখা যাচ্ছে, সেটার কারণ হিসেবে রোজার ঈদে সরকারের নিষেধাজ্ঞা তোয়াক্কা না করে মানুষের বাড়ি ফেরাকে দোষারোপ করছেন কর্মকর্তারা।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের একজন কর্মকর্তা নিউজবাংলাকে বলেন, রোজার ঈদে মানুষজন যেভাবে বাড়ি গিয়েছেন, সে বিষয়গুলোকে এবার চিন্তায় রেখেছেন সরকারের নীতিনির্ধারকরা। তাই গণপরিবহন খুলে দেয়াকে অপেক্ষাকৃত ভালো সিদ্ধান্ত হিসেবে দেখছেন তারা।
আরও পড়ুন:প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সাপ্তাহিক ছুটি দুদিন বহাল রেখেই শিক্ষাপঞ্জির অন্যান্য ছুটি কমিয়ে আনা হবে বলে জানিয়েছেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার।
রোববার (৭ সেপ্টেম্বর) সচিবালয়ে আন্তর্জাতিক স্বাক্ষরতা দিবস উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা জানান।
উপদেষ্টা বলেন, ‘আমি মনে করি, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মূল কাজই হচ্ছে স্বাক্ষরতা। স্কুল স্তরে যদি স্বাক্ষরতা করতে হয়, কতগুলো প্রতিবন্ধকতা আমাদের পার হতে হচ্ছে। কেন আমরা সহজে এগোতে পারছি না। এই বিষয়গুলো আমি আপনাদের সামনে প্রকাশ করতে চাই।’
তিনি বলেন, ‘স্কুলে যদি পড়াশোনা হতে হয় তবে প্রয়োজনীয় একটি শর্ত হচ্ছে কন্ট্রাক্ট আওয়ার, অর্থাৎ একজন শিক্ষক ছাত্রকে কতটুকু সময় দিতে পারছেন। এই কন্ট্রাক্ট আওয়ার প্রথমত নির্ভর করছে কত দিন স্কুল খোলা থাকে। আপনারা ক্যালেন্ডার দেখেন, ৩৬৫ দিনের মধ্যে আমার স্কুল খোলা থাকে মাত্র ১৮০ দিন। খেয়াল করেছেন ব্যাপারটা? পড়াশোনাটা যে হবে, স্কুল কত দিন খোলা পাচ্ছি? এর মানে আমাদের অনেক অপ্রয়োজনীয় ছুটি রয়ে গেছে।’
‘আমরা চেষ্টা করছি ছুটি যদি কিছু কমিয়ে আনা যায়। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে ঐক্যবদ্ধভাবে এটা করছি, কারণ বিচ্ছিন্নভাবে করলে হবে না।’
ছুটি কমানোর ক্ষেত্রে সাপ্তাহিক ছুটি দুই দিন থেকে কমিয়ে এক দিন করার চিন্তা আছে কিনা— জানতে চাইলে উপদেষ্টা বলেন, ‘আপাতত লক্ষ্যমাত্রা হচ্ছে ক্যালেন্ডারে ছুটি কিছুটা কমানো। আমরা যদি সাপ্তাহিক ছুটি দুই দিনকে এক দিন করতে চাই, সেটা সব ধরনের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান যেহেতু একই রকম তাই প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আলাদাভাবে করা কঠিন। শিক্ষকদের পক্ষ থেকে এক ধরনের দাবি আছে, শিক্ষকরা হচ্ছেন ভ্যাকেশন ডিপার্টমেন্টে, নন-ভ্যাকেশন হতে চাইলে এটা সঙ্গে সরকারের আর্থিক সংশ্লেষের প্রসঙ্গ আছে। ফলে এ ধরনের একটা চিন্তা আছে, তবে এ বিষয়ে আমরা সিদ্ধান্ত নিতে পারিনি। তবে আমাদের ক্যালেন্ডারে যে ছুটি আছে সেক্ষেত্রে আমাকে কিছুটা কমিয়ে আনব।’
কোন কোন দিন ছুটি কমাবেন সেটা ঠিক হয়েছে কিনা— জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটা চূড়ান্ত হলে আপনাদের জানিয়ে দেব।’
সরকারি স্বাস্থ্যসেবা সহজলভ্য করে গর্ভকালীন মাতৃ মৃত্যুহার, অপুষ্টি জনিত শিশু মৃত্যুর হার কমানোসহ সংক্রামক রোগের সংক্রমন প্রতিরোধে ঝিনাইদহে স্বাস্থ্য ও পুষ্টি বিষয়ক কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে। রোববার সকালে হরিণাকুন্ডু উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স মিলনায়তনে এ কর্মশালার আয়োজন করে অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশন (এসডিএফ)। এতে হরিণাকুন্ডু উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা.আলমগীর হোসেন, পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা নাছরীনসহ এসডিএফ'র জেলা ব্যবস্থাপক মাহমুদ হাসান, জেলা স্বাস্থ্য ও পুষ্টি কর্মকর্তা ডা. অনুদীপা রানী, আইটি এন্ড এসআইএস মো. সাদ আহম্মেদ, ক্লাস্টার অফিসার বাণী বৈরাগীসহ অন্যান্যরা বক্তব্য রাখেন।
উপজেলা পর্যায়ের স্বাস্থ্য বিভাগের সরকারি প্রতিনিধি ও এসডিএফ-এর কর্মকর্তাদের অংশগ্রহণে আয়োজিত এ কর্মশালায় পুষ্টি ও স্বাস্থ্যসেবা সহজলভ্য করার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দিক তুলে ধরা হয়। কর্মশালায় এসডিএফ-এর পক্ষ থেকে খাদ্য ও পুষ্টি, অপুষ্টিজনিত সমস্যার প্রতিকার, কিশোর-কিশোরীদের পুষ্টির গুরুত্ব, ইপিআই কর্মসূচির মাধ্যমে রোগ প্রতিরোধ, স্বাস্থ্যসম্মতভাবে হাত ধোয়ার অভ্যাস এবং বসতভিটায় পুষ্টিবাগান স্থাপনের মাধ্যমে খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করার বিষয়গুলো বিশেষভাবে উপস্থাপন করা হয়। কর্মশালাটি সংশ্লিষ্টদের মধ্যে স্বাস্থ্য ও পুষ্টি বিষয়ে সচেতনতা বাড়াতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
কর্মশালায় অংশগ্রহণকারীদের এসব গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সচেতন করার পাশাপাশি বাস্তব জীবনে তা প্রয়োগ করার জন্য প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়।
দীর্ঘ ৮ বছর পর আগামী ৮ই সেপ্টেম্বর ঠাকুরগাঁওয়ে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে জেলা বিএনপির দ্বি-বাষিক সম্মেলন। এই সম্মেলন ঘিরে নেতা-কর্মীদের মধ্যে উচ্ছাস, উৎসাহ-উদ্দীপনা বিরাজ করছে।
সর্বশেষ ২০১৭ সালে বিএনপির সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছিল। এরপর আওয়ামী লীগ সরকারের বিভিন্ন বাঁধার মুখে আর হতে পাড়েনি কোন সম্মেলন। এবারে অভ্যুত্থানে পরে অনেকটাই আন্দন ও উৎসাহ নিয়েই প্রস্তুতী চলছে এই সম্মেলনের। ইতিমধ্যে মঞ্চ তৈরীর কাজ চলছে। শহরের বিভিন্ন স্থানে টাঙ্গানো হয়েছে ব্যানার ফেস্টুন। তবে প্রার্থী,কাউন্সিলর ও বিএনপির বিভিন্ন স্থরের নেতারা বলছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সিদ্ধান্তই হবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত।
সম্মেলনের নির্বাচন কমিশনের দেয়া তথ্য মতে, সম্মেলনে ১১ জন প্রার্থী মনোনয়ন নিয়েছিলেন। এর মধ্যে ৬ জন প্রার্থী মনোনয়ন প্রত্যাহারও করেছেন। সবশেষ সভাপতি পদে রয়েছেন ১জন ও সাধারণ সম্পাদক পদে প্রতিদ্বন্ধিতা করবেন ৪জন প্রার্থী। এছাড়া সম্মেলনে কাউন্সিলর রয়েছেন ৮০৮জন।
সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে যুক্ত হবেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। এছাড়া সম্মেলনের উদ্বোধন করবেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। প্রধান বক্তা হিসেবে থাকবে দলটির ভাইস চেয়ারম্যান সামসুজ্জামান দুদু। এছাড়াও রংপুর বিএনপির তিনজন সাংগঠনিক সম্পাদক সহ বিভিন্ন স্থরের নেতাকর্মীরা থাকবেন।
সম্মেলনের প্রার্থীরা বলছেন বিএনপির এই সম্মেলন আগামী জাতীয় নির্বাচনে জোড়ালো ভূমিকা রাখবে। দলের গুরুত্বপূর্ণ পদে যেই আসুক না কেন মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলামের নির্দেশেই এগিয়ে যাবে দলটি।
এদিকে সম্মেলনের কাউন্সিলর ও বিএনপির বিভিন্ন স্থরের নেতা-কর্মীরা বলছেন,এই সম্মেলনের মাধ্যমেই জেলায় আরো বেশি শক্তিশালী হবে বিএনপি। আমরা প্রত্যাশা করছি কর্মীবান্ধব নেতৃত্বই আসবে এই সম্মেলন থেকে। তবে মহাসবিচ মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর যা বলছেন তাই মাথা পেতে নেবে সকলে। তঢাগীদের দলে পদ পদবিতে জায়গা হবে এটাই প্রত্যাশা দলের নেতাকর্মীদের।
সম্মেলনের নির্বাচন কমিশন অ্যাডভোকেট বদিউজ্জামান চৌধুরী বলেন,সম্মেলন নিয়ে সকল প্রস্তুতী সম্পূর্ণ রয়েছে বলে জানালেন নির্বাচন কমিশনার। আমরা আশা করছি একটি সুষ্ঠু সুন্দর সম্মেলন উপহার দিতে পাড়বো।
ঠাকুরগাঁও পুলিশ সুপার শেখ জাহিদুল ইসলাম বলেন, সম্মেলন ঘিরে পুলিশের পক্ষ থেকে নিরাপত্তার জন্য বিভিন্ন স্থরের নেয়া হয়েছে ব্যবস্থা। পুলিশের পাশাপাশি সেনাবাহিনীও থাকবে আমাদের সাথে।
ঢাকা কেরানীগঞ্জে ঘটে গলো এক হৃদয়বিদারক ঘটনা ঘটেছে। শনিবার (৭ সেপ্টেম্বর) ভোরের কোনো এক সময়ে মাত্র দুই বছর বয়সী শিশু আব্দুর রহমানকে প্রাণ হারাতে হয়েছে তার নিজের মায়ের হাতে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, রাত আনুমানিক ৪:০০ ঘটিকা থেকে সকাল ৭:০০ ঘটিকার মধ্যে আব্দুর রহমানকে তার মা মোছাম্মৎ আতিয়া শারমিন নিজের বাসায় প্রাণঘাতী আঘাত করেন এবং টুকরো করে খাটের নিচে রেখে দেন। পরে স্থানীয়রা শিশুটির মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশকে খবর দেয়।
খবর পেয়ে কেরানীগঞ্জ কলাতিয়া পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মোহাম্মদ নিরু মিয়ার নেতৃত্বে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে, এবং লাশ উদ্ধার করে সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ (মিটফোর্ড হাসপাতালে) প্রেরণ করে।
এব্যাপারে কেরানীগঞ্জ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুল হক ডাবলু বলেন, ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে দেখা যাচ্ছে, শিশুটির মা মানসিক অসুস্থ ছিলেন। আমরা মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছি। ঘটনার সঙ্গে জড়িত সকলকে আইনের আওতায় আনা হবে।
স্থানীয়রা জানান, শিশুটির মা দীর্ঘদিন ধরে মানসিক ভারসাম্যহীনতায় ভুগছিলেন। ঘটনায় এলাকায় শোক ও ক্ষোভের ছায়া নেমে এসেছে। অনেকেই বলছেন, সন্তানের নিরাপদ আশ্রয় মায়ের কোলে হলেও এ ঘটনা মানবিকতার সীমা ছাপিয়ে গেছে।
নিহত শিশুর বাবা টুটুল সাংবাদিকদের বলেন, আমি কখনো ভাবিনি এমন ভয়াবহ ঘটনা ঘটবে। আমার ছেলে আর ফিরে পাব না। আশা করি ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত হবে এবং ভবিষ্যতে কেউ এভাবে সন্তানকে হারাবে না।
ঢাকা-চট্টগ্রাম জাতীয় মহাসড়কের ফেনীর লেমুয়া হাফেজিয়া মাদ্রাসা এলাকায় সড়ক দুর্ঘটনায় ২ জন নিহত ও একজন আহত হয়েছেন। নিহতরা হলেন শ্যামলী পরিবহন বাস এর সুপারভাইজার ও হেলপার এবং ড্রাইভার গুরুতর আহত হয়েছেন।
রবিবার (৭ সেপ্টেম্বর) ভোর বেলায় ঢাকা-চট্টগ্রাম জাতীয় মহাসড়কের ফেনীর লেমুয়া হাফিজিয়া মাদ্রাসা এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস ও হাসপাতাল সূত্র জানায়, রবিবার (৭ সেপ্টেম্বর) ভোর পাঁচটার দিকে শ্যামলী পরিবহনের একটি বাস ফেনীর দিকে আসছিল। ঢাকা-চট্টগ্রাম জাতীয় মহাসড়কের ফেনীর লেমুয়া হাফেজিয়া মাদ্রাসার সামনে দ্রুতগতির শ্যামলী পরিবহনের বাসটি দাড়িয়ে থাকা একটি ট্রাকের পিছনে ধাক্কা দেয়। এতে শ্যামলী পরিবহনের সামনের অংশ দুমড়ে মুচড়ে যায় । ঘটনাস্থলে বাসের হেলপার নিহত হন এবং দুইজন আহত হন। হতাহতদের ফেনী ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক বাসের সুপারভাইজারকে মৃত ঘোষণা করেন।
নিহত বাসের সুপারভাইজার পাবনা সাথীয়া উপজেলার রঘুনাথপুর এলাকার ওয়াজেদ আলীর ছেলে রবিউল ইসলাম বাবু (৩৮)। অপর নিহত হেলপার সিরাজগঞ্জ জেলার শাহজাদপুর থানার গরিয়াপুরের শেখ মোঃ শাহাদাতের ছেলে মো: ইয়াহিয়া রাফি (১৮) ।
গুরুতর আহত হন বাসের ড্রাইভার । তিনি যশোর জেলার ঝিকরগাছা চাসরা মোবারকপুর গ্রামের মৃত: আবদুল আলী মোল্লার ছেলে মো: রফিক (৬০)। গুরুতর আহত হওয়ায় তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
ফেনী ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স সিনিয়র স্টেশন অফিসার মো: আবদুল মজিদ বলেন, দুর্ঘটনার খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে গাড়ি থেকে আহত ও নিহতদের উদ্ধার করে ফেনী ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়।
ফেনী মহিপাল হাইওয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) হারুন অর রশিদ বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে গাড়ি দুটি সরিয়ে আহত ও নিহতদের উদ্ধার করে ফেনী ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়। গাড়ি দুটি উদ্ধার করা হয়েছে। তদন্ত পূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে
রাজশাহী মহানগরীতে ধর্ষণ মামলার মূলহোতাসহ তিন আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব-৫।
আজ রোববার সকাল পৌনে ৬টার দিকে আরএমপির চন্দ্রিমা থানাধীন উজিরপুর এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, চন্দ্রিমা থানাধীন সাজ্জাদ আলীর ছেলে আরিয়ান শাফী ওরফে আরিফ (২৬), ভদ্রা জামালপুর এলাকার আলমের ছেলে শান্ত (২৫), বোয়ালিয়া থানাধীন কাদিরগঞ্জ গ্রেটাররোড এলাকার আসিফ হাসান সোহেলের ছেলে পিয়াম (২৫)।
পরে র্যাব-৫ এর মিডিয়া সেল থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।
র্যাব জানায়, ২২ বছর বয়সী এক নারীর সঙ্গে মূলহোতা আরিয়ান শাফীর ফেসবুকের মাধ্যমে পরিচয় হয়। একপর্যায়ে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। সম্পর্কের জেরে গত ৩০ আগস্ট বিকেলে আরিয়ান শাফী দেখা করার কথা বলে ওই নারীকে মতিহার থনাধীন ভদ্রা ব্রিজের উপর ডাকে। ভুক্তভোগী দেখা করতে গেলে আরিয়ান বন্ধুর বৌয়ের জন্মদিনের কেক কাটার কথা বলে তাকে রেস্টুরেন্টে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে। এ সুযোগে আরিয়ান তাকে রিকশা করে কুমারপাড়া আলুপট্টি মোড়ে পদ্মা মন্দিরের সামনে এজাহারভুক্ত ৪ নম্বর আসামি আজোয়াদ আব্দুল্লাহর বাড়িতে নিয়ে ধর্ষণ করে। সেখানে পূর্ব থেকে অবস্থান করা আসামি শান্ত ও পিয়ামও ওই নারীকে ধর্ষণ করে ভিডিও ধারণ করে। এ ঘটনা কাউকে না জানাতে আসামিরা ভুক্তভোগীকে হুমকি দেয়।
গত ৩ সেপ্টেম্বর আরিয়ান ওই নারীকে আবার দেখা করার কথা বলে। দেখা না করলে তার ভিডিও সামজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেয়। এ ঘটনার পর ভুক্তভোগী নারী বোয়ালিয়া মডেল থানায় ধর্ষণের মামলা করেন। এরপর পুলিশ ও অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পাশাপাশি র্যাব ছায়া তদন্ত শুরু করে। এর ধারাবাহিকতায় অভিযান চালিয়ে ওই তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
র্যাব জানায়, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামিরা সংঘবদ্ধ ধর্ষণের কথা স্বীকার করেছে। আসামিদের বোয়ালিয়া থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
আবাহমান গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্যবাহী খেলা নৌকাবাইচ। প্রযুক্তির ছোঁয়ায় বাংলার অনেক অতীত হারিয়ে গেলেও বর্ণিল নৌকাবাইচ এখনও টিকে আছে। শনিবার শরীয়তপুরের দাদপুর ভাষানচরের কীর্তিনাশা নদীতে অনুষ্ঠিত হয়েছে গ্রামীণ ঐতিহ্যের নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতা।
দুপুরে শুরু হওয়া এ প্রতিযোগিতা ঘিরে নারী-পুরুষ, তরুণ-তরুণীসহ নানান বয়সের মানুষ নদীর দুই পাড়ে ভিড় করে।
নৌকাবাইচ শুরুর তিন ঘণ্টা আগে থেকেই নদীর তীর মানুষে পরিপূর্ণ হয়ে যায়। জায়গা সংকুলান না হওয়ায় ইঞ্জিন চালিত ট্রলার, বড় নৌকা, গাছ ও ভবনে উঠে মানুষ নৌকাবাইচ উপভোগ করেন।
প্রতিযোগিতায় অংশ নেন শরীয়তপুরসহ পার্শ্ববর্তী জেলার অসংখ্য মাঝিদল। বিশাল নৌকায় বৈঠা হাতে তরুণ ও অভিজ্ঞ মাঝিরা সমানতালে ছন্দ মিলিয়ে বৈঠা চালান। এ সময় বাদ্যযন্ত্রের তালে তালে বৈঠার মন মাতানো শব্দের সঙ্গে উল্লাসে ফেটে পড়েন দর্শনার্থীরা। তারা নেচে-গেয়ে আনন্দ উল্লাস করে ঐতিহ্যবাহী নৌকাবাইচ উপভোগ করেন।
নৌকা বাইচকে কেন্দ্র করে নদীর দুই পাড়ে বসে অস্থায়ী মেলা। স্থানীয় পিঠা-পুলি, ঝালমুড়ি, ফুচকা ও বিভিন্ন খাবারের দোকানে জমে ওঠে মেলা। শিশু-কিশোরদের জন্য খেলনা ও বেলুন নিয়ে বিক্রেতারাও ভিড় করেন মেলায়।
আয়োজকদের পক্ষে উপজেলার আঙ্গারিয়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও বিএনপি নেতা আব্দুর রব হাওলাদার বলেন, নৌকা বাইচ শুধু বিনোদনের জন্য আয়োজন করা হয়নি, এটি গ্রামীণ ঐতিহ্য, ভ্রাতৃত্ববোধ এবং ঐক্যের প্রতীক। প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে এই ঐতিহ্য ধরে রাখতে প্রতিবছরই এ আয়োজন করা হয়। আগামী বছরগুলোতে আরও বড় পরিসরে এই ঐতিহ্য ধরে রাখা হবে।
দিনভর প্রতিযোগিতা শেষে বিজয়ী দলের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করা হয়।
মন্তব্য