রূপগঞ্জে হাশেম ফুডস লিমিটেডের কারখানায় আগুন লাগার পর ভেতরে আটকা পড়াদের আর্তনাদ শুনেছেন রহিমা। তিনি থাকেন কারখানাটির এক শ গজের ভেতরে পারভিন ভিলা নামে একটি বাসায়।
রহিমা বলেন, ‘আগুন লাগায় সব ওয়ার্কার জানালার দিকে আইয়া দাঁড়ায়। জানালার কাছে দাঁড়াইয়া দম নিতেছিল। ধোঁয়া আর আগুন বাড়া শুরু হইলে সবাই চিল্লান শুরু করে। ছোড ছোড বাচ্চাগুলান জানালার বাইরে হাত বাড়াইয়া ডাকতেছিল, তাদের নামাইয়া আনতে কইতেছিল।’
কারখানার শ্রমিকদের অনেকেই শিশু বলে জানা গেছে।
বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টা ৪২ মিনিটে আগুনের সূত্রপাত হয়। নিচতলায় লাগা আগুন ছড়িয়ে পড়ে ছয়তলা ভবনের পুরোটিতে। আগুনে দিশেহারা অনেকে তৃতীয় ও চতুর্থ তলা থেকে লাফিয়ে নিচে পড়ে। পঞ্চম ও ষষ্ঠ তলায় থাকা ২৫ জনের মতো শ্রমিক ভবনের ছাদের গেটের তালা ভেঙে ওপরে যান। তাদের উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিস।
আগুনের ঘটনায় লাফিয়ে নিচে পড়ে আহত তিনজন ঢাকা মেডিকেলে নেয়ার পর মারা যান।
এ ছাড়া চতুর্থ তলা পর্যন্ত আগুন নিয়ন্ত্রণে আসার পর ৪৯ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়, যাদের কাউকেই চেনা যাচ্ছে না।
সিঁড়ির গেটে তালা দেয়া হয় আগুন লাগার পর
কারখানার চতুর্থ তলার এক জায়গা থেকেই ৪০টির বেশি মরদেহ উদ্ধার করা হয় বলে জানিয়েছেন ফায়ার সার্ভিসের উদ্ধারকাজে থাকা কর্মীরা। কারখানার ভেতরে কোনো সমস্যা হলেই সিঁড়ির গেটগুলোতে তালা দেয়া হয় বলে জানিয়েছেন সেখানকার কর্মীরা। গতকালও আগুন লাগার পর গেটে তালা দেয়া হয় বলে ভেতরে আটকে থাকা শ্রমিকরা ফোনে বাইরে থাকা স্বজনদের জানিয়েছেন।
আগুন লাগে ভবনের নিচতলা থেকে। ফলে অন্য ফ্লোরের শ্রমিকরা ওপরে ওঠার চেষ্টা করেছেন।
ভবনের চতুর্থ তলায় কাজ করতেন আছমা। রাত ৮টা থেকে সকাল ৮টা পর্যন্ত কাজ ছিল তার।
আছমা বলেন, ‘আগুন লাগার পর চারতলায় সিঁড়ির গেটে তালা দিয়ে দিছিল। লোকজন উপরে যাইতে পারছিল না। সবাই দম নিতে জানালার দিকে আইছিল।’
কারখানার ভেতরে আটকে পড়া কর্মীরা তালা দেয়ার কথা মোবাইল ফোনে জানিয়েছিলেন বলে জানান আছমা।
স্মৃতিও দেখেছেন অসহায় শিশু কর্মীদের কান্না
হাশেম ফুডস লিমিটেডের কারখানাটিতে দুই শিফটে কাজ চলছিল। সকাল ৮টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত নিচতলার নুডলস ও মেকারনি সেকশনে কাজ করছিলেন ১৩ বছর বয়সী স্মৃতি। বিকেলের দিকে অনেকে ছুটি চাওয়ায় স্মৃতি ও তার সেকশনে থাকা সবাইকে ৪টার দিকে ছুটি দেয়া হয়।
ছুটি পেয়ে কারখানার কাছেই বাসায় ফেরার পর ৫টা ৪২ মিনিটে চিৎকার শুনে বাসার বাইরে আসেন স্মৃতি। তাকিয়ে দেখেন ধোঁয়া। তার সমবয়সী কর্মীরা ভবনের জানালাগুলোর পাশে এসে সাহায্য চেয়ে কাঁদছিলেন।
শুক্রবার বিকেলে স্মৃতি তার বাসার সামনে দাঁড়িয়ে বলেন, ‘কপালে মরণ ছিল না। ছুটি দেয়ায় বাইচ্চা গেছি।’
খাবারের কারখানাজুড়ে কেমিক্যাল আর প্লাস্টিক
প্লাস্টিক দানা, বোতল, কর্ক, পলিথিন, কার্টন, মবিল ও কেমিক্যাল ভর্তি ছিল নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের সজীব গ্রুপের প্রতিষ্ঠান হাশেম ফুডের কারখানাটি। বিভিন্ন ধরনের রাসায়নিক দ্রব্য থাকায় আগুন নেভাতে ফায়ার সার্ভিসের বেগ পেতে হয়েছে।
শুক্রবার বিকেলে কারখানাটিতে গিয়ে দেখা গেছে, ভেতরে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে বিভিন্ন কেমিক্যালের ড্রাম, কনটেইনার ও প্লাস্টিকের বোতল।
কারখানাটিতে জুস, লাচ্ছি, সেমাইসহ বিভিন্ন পণ্য বোতলজাত ও প্যাকেজিং করা হতো। এসব পণ্যের গায়ে লেবেল লাগানো হতো, পলি করা হতো। প্যাকেট করা হতো কারখানার ভেতরে।
ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক (অপারেশন ও মেইনটেন্যান্স) লেফটেন্যান্ট কর্নেল জিল্লুর রহমান বলেন, আগুনের কারণ অনুসন্ধানে তাকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি করেছে ফায়ার সার্ভিস।
তিনি বলেন, ‘ঘটনাস্থলে আমরা কাজ করছি। এখন আগুন নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। তবে আগুন এখনও পুরোপুরি নির্বাপণ হয়নি। নির্বাপণের চেষ্টা চলছে।
তিনি বলেন, ভবনের চারটি ফ্লোর থেকে ৪৯টি মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। আরও ৩ জন হাসপাতালে নেয়ার পর মারা গেছেন।
কোন ফ্লোরে কী ছিল
ছয়তলা ভবনটিতে সজীব গ্রুপের বিভিন্ন খাদ্যপণ্য উৎপাদন হতো।
কারখানার শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, নিচতলায় বিভিন্ন পণ্যের কার্টন রাখা হতো। এক পাশে ছিল নুডলস ও মেকারনি তৈরির সেকশন। দ্বিতীয় তলায় টোস্ট, বিস্কুটসহ বিভিন্ন বেকারিপণ্য তৈরির কাজ চলত। তৃতীয় তলায় ছিল লাচ্ছা সেমাই ও বিভিন্ন জুস তৈরির মেশিন। চতুর্থ তলায় চকলেট, ললিপপ ও চকোচকোসহ আরও কয়েকটি খাদ্যপণ্য তৈরির মেশিন।
পঞ্চম তলায় চানাচুর ও ষষ্ঠ তলায় ছিল গুদাম। এ ছাড়া ছয়তলা ভবনের ছাদের একটি অংশে ছিল আরও একটি গুদাম।
আরও পড়ুন:বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, বিএনপি কোনো বিভাজনের রাজনীতি করে না। বিএনপি সব ধর্মের মানুষ, বর্ণের মানুষকে নিয়ে সুখী ও সমৃদ্ধ দেশ গড়ে তোলবে। নতুন বাংলাদেশ গড়তে হলে কোনো বিভাজন করা যাবে না।
গতকাল শনিবার জেএমসেন হলে জন্মাষ্টমী উপলক্ষে চার দিনব্যাপী অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় দিন ধর্ম সম্মেলন ও সাধু সন্ত ঋষি বৈষ্ণব মহাসম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশের সংবিধান মানলে অবশ্যই অসাম্প্রদায়িক হতে হবে। বাংলাদেশের সংবিধান অসাম্প্রদায়িক চেতনার কথা পুরোপুরি বলা আছে। সুতরাং অসাম্প্রদায়িক মুখে নয়, প্রকৃত অসাম্প্রদায়িক হলে দেশে কোনো হানাহানি থাকবে না। একইভাবে সংখ্যালঘু শব্দও আমি মানি না। সংখ্যালঘু বলতে কোনো শব্দ নেই। আমরা সবাই বাংলাদেশি এবং বাংলাদেশি হিসেবে সবার অধিকার নিশ্চিত করা যেকোনো সরকারের দায়িত্ব।
তিনি বলেন, সামগ্রিকভাবে আমরা একটা জাতি, একটা দেশ, একটা সমাজ। যারা সাম্প্রদায়িক রাজনীতি করে তারা বারবার ধ্বংস হয়েছে, আবার বারবার নতুনভাবে শুরু করার চেষ্টা করেছে। কিন্তু এ দেশের সাধারণ মানুষ সাম্প্রদায়িকতাকে মনেপ্রাণে ঘৃণা করে। আজকের বাংলাদেশে আমরা যেখানে দাঁড়িয়ে আছি সেখানে নতুন বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করছে সবাই। মানুষের মধ্যে অনেক দাবি সৃষ্টি হয়েছে, অনেক প্রত্যাশা জাগ্রত হয়েছে।
“যদি নতুন বাংলাদেশ গড়তে হয় তবে কোনো বিভাজন করা যাবে না। দেশে সবার ধর্ম থাকবে, সংস্কৃতি থাকবে। সবাই তাদের নিজ নিজ ধর্মীয় উৎসব পালন করবে। এটার সঙ্গে গণতন্ত্রের কোনো সংঘর্ষ থাকতে পারে না। জাতি হিসেবে, রাজনীতিবিদ হিসেবে আমাদের সহনশীল হতে হবে। ধর্ম যেমন মানুষের ভিন্ন ভিন্ন হয় রাজনৈতিক মতভেদও ভিন্ন ভিন্ন হবে। কিন্তু দেশের স্বার্থে, জনগণের স্বার্থে সবাইকে এক হতে হবে।
শ্রী শ্রী জন্মাষ্টমী উদযাপন পরিষদ বাংলাদেশ কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক লায়ন আর কে দাশ রুপুর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে মঙ্গল প্রদীপ প্রজ্জ্বালন করেন বাঁশখালী ঋষিধামের মোহন্ত শ্রীমৎ স্বামী সচিদানন্দ পুরি মহারাজ। স্বাগত বক্তব্য রাখেন শ্রী শ্রী জন্মাষ্টমী উদযাপন পরিষদ বাংলাদেশ কেন্দ্রীয় কমিটির কার্যকরী সাধারণ সম্পাদক বিপ্লব দে পার্থ।
মাচার ওপরে সবুজ পাতা। নিচে ঝুলে আছে কালো রঙের তরমুজ। গাছ থেকে ছিঁড়ে না পড়ে সেজন্য প্রতিটি তরমুজে দেওয়া হয়েছে জালি। এমন দৃশ্য নওগাঁর পত্নীতলা, মহাদেবপুর, রাণীনগর ও সদর উপজেলার মাঠে মাঠে। এসব জমিতে আগে পটল ও করলা চাষ করলেও এখন বর্ষা মৌসুমে 'মার্সেলো’ জাতের তরমুজ চাষ করেছেন চাষিরা।
মাচায় ও মালচিং পদ্ধতিতে উচ্চ ফলনশীল হাইব্রিড মার্সেলো জাতের তরমুজ চাষে সফলতা পেয়েছেন নওগাঁর চাষিরা। এই পদ্ধতিতে চাষ করা তরমুজের অধিক ফলনে তারা খুশি।
জানা গেছে, এসব তরমুজ অত্যন্ত সুস্বাদু ও সুমিষ্ট হওয়ায় বাজারে চাহিদা বেশি। সঙ্গে লাভও বেশি। লম্বাটে ডিম্বাকৃতির এই তরমুজের ভেতরের অংশ গাঢ় লাল রঙের। মার্সেলো জাতের প্রতিটি তরমুজের ওজন হয়ে থাকে ৩-৫ কেজি। আর প্রতি বিঘায় দেড় থেকে দুই হাজারটি তরমুজ পাওয়া যায়।
এছাড়া মার্সেলো জাতের এই তরমুজ উচ্চমাত্রায় ভাইরাস সহনশীল। প্রতিদিনই আগ্রহী চাষিরা বর্ষাকালীন তরমুজের ক্ষেত দেখতে ভিড় করছেন জমিতে। গত জুন মাসে তরমুজের চারা রোপণ করা হয়েছে। গাছ লাগানোর ৬৫-৭০ দিনের মধ্যে ফল উঠানো যায়।
রাণীনগরের মার্সেলো তরমুজ চাষি নিরাঞ্জন চন্দ্র প্রামানিক জানান, তিনি প্রতিবছর উপজেলা কৃষি অফিসের পরামর্শে নতুন নতুন ফসল চাষ করে থাকেন। এরই ধারাবাহিকতায় এবার কৃষি অফিসের সার্বিক সহযোগিতায় ২৫ শতক জমিতে রাসায়নিক সার ও কীটনাশকের ব্যবহার ছাড়াই বিষমুক্ত মার্সেলো তরমুজ চাষ করেছেন। বাজারে প্রতি কেজি তরমুজ বিক্রি হচ্ছে ৫০-৫৫ টাকায়। কম পরিশ্রমে ভালো দাম পেয়ে খুশি তিনি।
তিনি বলেন, আমরা জানি তরমুজ চাষ হয়ে থাকে গ্রীষ্মকালে। কিন্তু আমাদের এ বরেন্দ্র জেলায় বর্ষাকালে তরমুজের চাষ করা দেখে প্রতিদিন তার তরমুজের ক্ষেত দেখতে ও পরামর্শ নিতে আসছেন নতুন নতুন কৃষি উদ্যোক্তারা। তাদের পরামর্শসহ সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছি।
তরুণ কৃষি উদ্যোক্তা কামাল মাহমুদ শিপন বলেন, নিরাঞ্জন দাদার তরমুজের ক্ষেত দেখে খুবই ভালো লাগছে। তার সঙ্গে অনেক কথা হলো এই তরমুজের বিষয়ে। খেয়ে দেখলাম খুব সুস্বাদু ও মিষ্টি। আগামী বছর দুই বিঘা জমিতে এই তরমুজ চাষ করবো আশা করি।
উপজেলার কাশিমপুর ডাঙ্গাপাড়া গ্রামের দম্পতি আলেক বেগ ও কুলসুম বানু বলেন, আগে আমরা বাজার থেকে তরমুজ কিনে আনতাম। এখন দেখি গ্রীষ্মকালের তরমুজ বর্ষাকালে ধরেছে থোকায় থোকায়। অবাক করা বিষয়। খুব সুন্দর লাগছে দেখে। দুটি তরমুজ কিনলাম ৫০ টাকা কেজি দরে। দুটি তরমুজের ওজন ৮ কেজি।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক আবুল কালাম আজাদ বলেন, বিষমুক্ত তরমুজ চাষ করতে মাচায় ও মালচিং পদ্ধতিতে উচ্চ ফলনশীল মার্সেলো জাতের তরমুজ চাষ করা হয়েছে জেলার ৪টি উপজেলায়। ভেতরে গাঢ় লাল রঙের এ তরমুজের স্বাদ খুব ভালো। কম খরচের পাশাপাশি বর্ষাকালে এই তরমুজ চাষ হওয়ায় কৃষকরা বেশ আগ্রহ দেখাচ্ছেন। তাই কৃষকরা বর্ষাকালীন তরমুজ চাষের দিকে ঝুঁকছেন। তাদের আরও উৎসাহ দিতে আমরা কাজ করছি। তাদের সার্বিক সহযোগিতা করছে কৃষি বিভাগ। সূত্র: বাসস
ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানির খবরে দুদিনের ব্যবধানে দিনাজপুরের হিলিতে দেশীয় পেঁয়াজের দাম কমেছে কেজিতে ১০ টাকা করে। সরবরাহের এমন ধারা অব্যাহত থাকলে ও ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানির পরিমাণ বাড়লে দাম আরো কমবে বলে দাবি বিক্রেতাদের। এদিকে পেঁয়াজের দাম কমায় খুশি নিম্ন আয়ের মানুষ।
সরেজমিন হিলি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বাজারে প্রতিটি দোকানেই আগের তুলনায় দেশীয় পেঁয়াজের সরবরাহ বেড়েছে। সেই সঙ্গে দাম পূর্বের তুলনায় কমতির দিকে রয়েছে। দুদিন পূর্বে প্রতি কেজি পেঁয়াজ ৭০ টাকা দরে বিক্রি হলেও বর্তমানে তা কমে ৬০ থেকে ৬৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এতে আগের তুলনায় ক্রেতা সমাগম বেশি, এছাড়া ক্রেতারা পরিমাণে বেশিও কিনছেন।
হিলি বাজারে পেঁয়াজ কিনতে আসা হায়দায় আলী বলেন, গত কয়েকদিন ধরে হঠাৎ করে পেঁয়াজের দাম ঊর্ধ্বমুখী হতে শুরু করেছে। ৫০ টাকা কেজির পেঁয়াজ দাম বাড়তে বাড়তে ৭৫ টাকা কেজিতে উঠে যায়। পেঁয়াজ খুবই জরুরি নিত্যপ্রয়োজনীয় হওয়ায় বাধ্য হয়ে এক কেজির জায়গায় হাফ কেজি কিনছিলাম। তবে দুদিন ধরে পেঁয়াজের দাম কিছুটা নিম্নমুখী হতে শুরু করেছে, বর্তমানে ৬০ থেকে ৬৫ টাকায় নেমেছে। হিলি বাজারের পেঁয়াজ বিক্রেতা আবুল হাসনাত বলেন, বিদেশ থেকে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ থাকলেও পর্যাপ্ত পরিমাণে দেশীয় পেঁয়াজের সরবরাহ থাকায় বেশ কিছুদিন ধরেই দাম স্থিতিশীল ছিল। কিন্তু বর্তমানে মৌসুম শেষের দিকে হওয়ায় বাজারে দেশীয় পেঁয়াজের সরবরাহ কমতে শুরু করেছে। এতে মোকামে প্রতিদিনই পেঁয়াজের দাম বাড়ছিল। আর তাই বাজারেও পণ্যটির দাম বাড়ছিল। দাম নিয়ন্ত্রণে সম্প্রতি সরকার পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি দিতে শুরু করেছে। গত বৃহস্পতিবার সোনা মসজিদ বন্দর দিয়ে ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি শুরু হয়েছে। রোববার থেকে হিলিসহ দেশের অন্যান্য বন্দর দিয়ে পেঁয়াজ আমদানি শুরু হবে। এমন খবরে মোকামে যারা দেশীয় পেয়াজ মজুদ করছিল তারা সেসব পেঁয়াজ বাজারে ছাড়তে শুরু করেছে। এতে সরবরাহ বাড়ায় দাম কিছুটা কমতে শুরু করেছে। দু'দিন আগেও যেখানে মোকামে প্রতি মণ পেঁয়াজ আমাদের কিনতে হয়েছিল ৩ হাজার ২শ টাকা সেটি এখন কমে ২ হাজার ২শ টাকা হয়েছে। আমদানির খবরেই পেঁয়াজের দাম মণপ্রতি ১ হাজার টাকা করে। কমে গেছে। কম দামে কিনতে পারায় আমরাও এখন কম দামে বাজারে বিক্রি করতে পারছি।
জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর দিনাজপুরের সহকারী পরিচালক বোরহান উদ্দিন বলেন, কেউ যাতে কোনো পণ্যের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টির মাধ্যমে দাম বাড়াতে না পারেন সেজন্য আমরা নিয়মিতভাবে বাজারগুলোয় অভিযান পরিচালনা করছি। তারা কী দামে পণ্য কিনছেন কী দামে বিক্রি করছেন সে সম্পর্কিত তথ্য যাচাইবাছাই করছি। কারো বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হলে আর্থিক জরিমানা করা হচ্ছে।
দেশে প্রতিদিন প্রায় ছয় কোটি ডিম উৎপাদন হলেও তা দিয়ে চাহিদা পূরণ হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার।
পুষ্টি নিরাপত্তা প্রসঙ্গে এই উপদেষ্টা বলেন, ‘বর্তমানে দেশে মাথাপিছু গড় মাংস খেতে পারে মাত্র ২০০ গ্রাম। এখনো বহু পরিবার আছে যারা সপ্তাহে বা মাসে একদিন মাংস খায়।”
গতকাল শনিবার সকালে ঢাকা সেন্ট্রাল গার্লস হাই স্কুলে নবনির্মিত ছয় তলা একাডেমিক ভবনের উদ্বোধন ও এসএসসি-২০২৫ সালের কৃতি শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
উপদেষ্টা বলেন, মাছ উৎপাদনের ক্ষেত্রে
বাংলাদেশ তুলনামূলক ভালো অবস্থানে আছে। মাছ, মাংস, দুধ, ডিম আমাদের পুষ্টির উৎস। তাই শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার পাশাপাশি পুষ্টির দিকটিও বিবেচনায় রাখতে হবে।'
তিনি বলেন, ‘চব্বিশের জুলাই গণঅভ্যুত্থানে বহু তরুণ শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষ শহীদ হয়েছেন। অনেকে হাত-পা-চোখ হারিয়ে আজীবন পঙ্গুত্ব বরণ করেছেন। তাদের ত্যাগকে স্মরণ রেখে এমন বাংলাদেশ গড়ে তুলতে হবে, যেখানে মানুষের অধিকার কখনো ক্ষুণ্ণ হবে না।'
তিনি বলেন, “বেগম রোকেয়া মুসলিম মেয়েদের জন্য স্বাধীন পরিবেশ দিয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছিলেন, সেখানে পড়ালেখার পাশাপাশি বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিচালিত হতো। কেবল বই পড়া দিয়ে সবকিছু জানা সম্ভব নয়, কারণ ইতিহাস বারবার বিকৃত হয়েছে। তাই শিক্ষকদের দায়িত্ব হচ্ছে, শিক্ষার্থীদের প্রকৃত শিক্ষা দিয়ে দেশ ও জাতি সম্পর্কে সচেতন করে তোলা।”
নারী শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার প্রসঙ্গে উপদেষ্টা বলেন, 'স্কুলের ভেতরে ও বাইরে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন ও স্থানীয় রাজনৈতিক নেতাদের দায়িত্ব নিতে হবে। ইভটিজিংয়ের কারণে মেয়েদের পড়াশোনা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে—নতুন বাংলাদেশে এটা হতে দেওয়া যাবে না।
পরিবেশ সুরক্ষায় শিক্ষার্থীদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, 'সপ্তাহে অন্তত একদিন স্কুল ও এলাকায় পরিবেশ রক্ষায় কার্যক্রম চালাতে হবে। পাশাপাশি পলিথিন ও প্লাস্টিকের ব্যবহার কমাতে হবে। কারণ এগুলো মানব স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর।'
নারী শিক্ষার্থীদের আত্মবিশ্বাসী আত্মপ্রত্যয়ী হয়ে ওঠার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, 'নারী নির্যাতন আইন সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করতে হবে এবং বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে শিক্ষক, অভিভাবক ও সমাজকে একসঙ্গে সচেতন হতে হবে।
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে আজ পরিকল্পনা কমিশনে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
কক্সবাজার বিমানবন্দরে অক্টোবরের মাঝামাঝি সময়ে আংশিকভাবে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট চলাচল শুরুর হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মো. মোস্তফা মাহমুদ সিদ্দিকী।
রবিবার দুপুরে কক্সবাজার বিমানবন্দর পরিদর্শন শেষে এ কথা জানান তিনি।
চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মো. মোস্তফা মাহমুদ সিদ্দিকী বলেন, 'আমরা আজকে বিমানবন্দরের দ্বিতীয় টার্মিনাল ও সাগরের বুকে নির্মিত হওয়া রানওয়ের কাজের অগ্রগতি পরিদর্শন করেছি। তাতে মনে হয়েছে আগামী অক্টোবরের মাঝামাঝি সময়ে আংশিকভাবে কক্সবাজার বিমানবন্দর থেকে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট পরিচালনা করা সম্ভব হবে।
এক প্রশ্নের জবাবে বেবিচক চেয়ারম্যান বলেন, 'কত শতাংশ কাজ শেষে তা বলা না গেলেও তবে মাঝামাঝি সময়ে শুরু করা সম্ভব। যার জন্য আমাদের প্রস্তুতি শেষের পথে।
পরিদর্শনকালে কক্সবাজার বিমানবন্দরের প্রকল্প পরিচালক মোহাম্মদ ইউনূছ ভুঁইয়া, বিমানবন্দরের ব্যবস্থাপক গোলাম মোর্তজা হাসানসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
কিংবদন্তি ক্রিকেটার শচীন টেন্ডুলকারের ঘরে এবার বাজতে যাচ্ছে বিয়ের শানাই। তবে বোন সারা টেন্ডুলকার নয়, প্রথমেই আংটি বদল করলেন ছেলে অর্জুন টেন্ডুলকার। ২৫ বছর বয়সেই বাগদান সম্পন্ন করেছেন তিনি। পাত্রী ভেটেরিনারি চিকিৎসক সানিয়া চান্দোক।
গণমাধ্যমের খবরে জানা যায়, পারিবারিকভাবে সম্পন্ন হওয়া এই বাগদান অনুষ্ঠানে দুই পরিবারের ঘনিষ্ঠজনরা উপস্থিত ছিলেন। দীর্ঘদিন ধরেই অর্জুন-সানিয়ার সম্পর্ক ছিল। এর আগে একাধিকবার অর্জুনের ম্যাচে দেখা গেছে সানিয়াকে। সারার সঙ্গেও তার ঘনিষ্ঠ বন্ধুত্ব রয়েছে।
সানিয়া চান্দোক ভারতের খ্যাতনামা ব্যবসায়ী রবি ঘাইয়ের নাতনি। তাদের হোটেল ও আইসক্রিম ব্যবসা রয়েছে। পশু চিকিৎসক হওয়ার পাশাপাশি সানিয়া একজন উদ্যোক্তাও। তার নিজস্ব পোষা প্রাণীর স্কিন কেয়ার ও স্পা সেন্টার পরিচালনা করেন তিনি। বয়সে তিনি অর্জুনের চেয়ে এক বছরের বড়।
অর্জুন অবশ্য বাবার মতো আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে নাম করতে পারেননি। তবে ঘরোয়া ক্রিকেটে তিনি নিয়মিত খেলছেন গোয়ার হয়ে। ২০২৩ সালে আইপিএলে মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের হয়ে অভিষেক হয় বাঁহাতি এই অলরাউন্ডারের। এখনও পর্যন্ত আইপিএলে তিনি খেলেছেন ৫ ম্যাচে নিয়েছেন ৩ উইকেট। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ১৭ ম্যাচে সংগ্রহ করেছেন ৫৩২ রান ও নিয়েছেন ৩৭ উইকেট। ঘরোয়া ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি মিলিয়ে ম্যাচ সংখ্যা ৪২।
আইপিএল থেকে অর্জুনের আয় দাঁড়িয়েছে প্রায় ১ কোটি ৪০ লাখ টাকা। বর্তমানে মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের কাছ থেকে তিনি বছরে ৩০ লাখ টাকা পান। ঘরোয়া ক্রিকেট থেকে আসে আরও প্রায় ১০ লাখ টাকা। সব মিলিয়ে বছরে প্রায় ৪০ লাখ টাকার মতো আয় করেন তিনি।
তবে পারিবারিক সূত্রেই অর্জুনের সম্পদ এখন প্রায় ২২ কোটি টাকা। বর্তমানে তিনি থাকেন মুম্বাইয়ের সেই বাড়িতে, যেটি ২০০৭ সালে শচীন কিনেছিলেন প্রায় ৩৯ কোটি টাকায়। ছোটবেলা থেকেই বিলাসবহুল পরিবেশে বেড়ে ওঠা অর্জুনের জীবনযাত্রা তাই নিজের আয়ের সঙ্গে তুলনামূলক নয় বলেই মনে করছে গণমাধ্যম।
মন্তব্য