মুজিব বর্ষে গৃহহীনদের মধ্যে বিনা মূল্যে বিতরণ করা বেশ কিছু ঘরে ত্রুটি, ধস ও ফাটল ধরার ছবি গণমাধ্যমে ভাইরাল হওয়ার পর প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে পাঁচটি দল গঠন করে জেলায় জেলায় পাঠানো হয়েছে।
কোথায়, কী কারণে এ ঘটনা ঘটেছে, সেটি খতিয়ে দেখে সরকারপ্রধানকে প্রতিবেদন দেবে তারা।
আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের পরিচালক মাহবুব হোসেনের নেতৃত্বে শুক্রবার মুন্সিগঞ্জ জেলার সদর উপজেলায় পৌঁছায় দুটি দল। তারা উপহারের বাড়িগুলো পরিদর্শন ও উপকারভোগীদের সঙ্গে মতবিনিময় করে।
সেখানে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর উপ-প্রেস সচিব হাসান জাহিদ তুষার, আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের উপ-প্রকল্প পরিচালক মোহাম্মদ জাহেদুর রহমান, মুন্সিগঞ্জের জেলা প্রশাসক কাজী নাহিদ রসুল, প্রধানমন্ত্রীর সহকারী প্রেস সচিব এ বি এম সরওয়ার-ই-আলম সরকারসহ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও মাঠ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
এ সময় বাড়ি নির্মাণে অনিয়মের কথা জানতে পারে দল দুটি। আর এই বাড়ি নির্মাণে জড়িত সরকারি কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেয়া হয়।
পরিদর্শক দলের প্রধান ও দেশজুড়ে বাড়ি নির্মাণ প্রকল্পের পরিচালক মাহবুব হোসেন বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে আমি যে তথ্য পেয়েছি, ওখানে ইটের সলিং দেয়ার কথা, সেটা তারা দেয়নি। ঢালাইটাও মানসম্মত না। সেটি পাওয়ার পর কমিটির পরামর্শ অনুযায়ী মেরামত শুরু করা হয়েছে। মুন্সিগঞ্জ সদরে এ কাজের সঙ্গে যারা সম্পৃক্ত ছিল তারা সবাই ওএসডি হয়েছেন।’
তিনি বলেন, ‘উপজেলা প্রশাসন, জনপ্রতিনিধি সবাই মিলে কিন্তু কাজটা করছেন। এই করোনাকালীন ১ লাখ ১৮ হাজার ৩৮০টি ঘর দেয়া, এটা কম কথা নয়। তাদের কাজকে আমরা অবশ্যই সাধুবাদ জানাই এবং কৃতজ্ঞতা জানাই। কিন্তু আমাদের মনটাই খারাপ হয় যখন আমরা দুই-চারটা সমস্যার কথা শুনি।’
তবে যেখানে অনিয়ম হয়েছে, সেই গজারিয়ার বালুয়াকান্দি ও সদর উপজেলার সিলই ইউনিয়নে যায়নি দল দুটি।
বালুয়াকান্দিতে নদীর তীরে মাটি ভরাট করে নির্মাণ করা হয়েছে ঘরগুলো। মাটি সরে ধসে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে সেগুলো। এরই মধ্যে কয়েকটি পিলার ভেঙে গেছে।
সিলই ইউনিয়নের ৫০টি ঘরের মেঝে ফেটে গেছে এরই মধ্যে। ঘরগুলো যত উচ্চতায় নির্মাণের কথা ছিল, ততটা হয়নি।
গৃহহীনদের ঘর: উচ্ছ্বাস পরিণত হয়েছে ক্ষোভে
দেশে একজনও গৃহহীন থাকবে না, এমন উচ্চাভিলাষী পরিকল্পনা নিয়ে সরকার নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য মানসম্পন্ন ঘর নির্মাণ করে দেয়ার উদ্যোগ নেয়ার পর প্রশংসিত হয়েছে।
প্রথম দফায় ২৩ জানুয়ারি ৬৬ হাজার গৃহহীন পরিবারকে ঘর হস্তান্তর করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ২০ জুন দ্বিতীয় দফায় আরও ৫৩ হাজার ৩৪০ ভূমিহীন-গৃহহীন পরিবারকে দেয়া হয় ঘর।
প্রথম পর্বে ঘর নির্মাণে বরাদ্দ দেয়া হয় ১ লাখ ৭০ হাজার টাকা। সে সময় বেশ কিছু এলাকায় ঘর নির্মাণে ত্রুটির সংবাদ আসার পর স্থানীয় প্রশাসনের দাবির মুখে দ্বিতীয় পর্বে ঘর নির্মাণে অতিরিক্ত বরাদ্দ দেয়া হয় ২০ হাজার টাকা।
তবে প্রথম পর্বের তুলনায় দ্বিতীয় পর্বের ঘরগুলোতে অনিয়মের তথ্য আসছে বেশি।
নির্মাণের সময়েই ধসে পড়ার ঘটনা ঘটেছে একাধিক এলাকায়। কোথাও কোথাও পিলার ভেঙে গেছে, কোথাও কোথাও দেয়ালে বিশাল ফাটল ধরেছে, কোথাও কোথাও মাটি ধসে গেছে বৃষ্টিতে। পলেস্তরা খসে পড়ার কথা বলছেন উপকারভোগীরা।
এই ঘরগুলো বরাদ্দ দেয়ার সময় মানুষ আপ্লুত হয়েছে, গৃহহীনরা তাদের সারা জীবনের আশ্রয়হীনতার দুঃখ ভুলে কিছুটা হলেও স্বাচ্ছন্দ্যে বাকি জীবন পার করার স্বপ্ন দেখার কথা জানিয়েছেন। তবে এসব ঘরের অনেকগুলোর করুণ চিত্রে মানুষ আবার ক্ষুব্ধ হয়েছেন আর সেটি সামাজিক মাধ্যমে তারা প্রকাশও করছেন।
এ অবস্থায় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় তৎপর হয়ে ঘরগুলো পরিদর্শনে কমিটি গঠন করে। এই প্রকল্প সরকারপ্রধানের দীর্ঘ প্রচেষ্টার ফল। বিতর্ক এড়াতে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি বা রাজনীতিকদের না জড়িয়ে কাজের দায়িত্ব দেয়া হয়েছিল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের। কিন্তু একাধিক এলাকায় নানা অজুহাতে উপকারভোগীদের কাছ থেকে টাকা আদায় এমনকি ঘর বিক্রি করে দেয়ার খবরও এসেছে।
এরই মধ্যে একাধিক ইউএনওর বিরুদ্ধে নেয়া হয়েছে ব্যবস্থা। এখন পর্যন্ত পাঁচজন ইউএনওকে প্রত্যাহার করে ওএসডি করা হয়েছে।
এই পরিস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে শুক্রবার সকালে একযোগে পাঁচটি দল সারা দেশের বিভিন্ন জেলার উদ্দেশে রওনা দেয়।
প্রথম দফায় সারা দেশের বিভিন্ন জেলা-উপজেলাকে পাঁচটি ব্লকে ভাগ করে যাচাই-বাছাই কাজ শুরু করবে এসব দল।
কোন দল যাবে কোথায়
মুন্সিগঞ্জ যাওয়া দুটি দল এই জেলা থেকে আলাদা হয়ে যাবে বিভিন্ন জেলায়।
মাহবুব হোসেনের নেতৃত্বে একটি টিম টাঙ্গাইলের মির্জাপুর এবং বগুড়ার সদর, শেরপুর ও শাহজাহানপুর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় নির্মিত ও নির্মাণাধীন বাড়িগুলো দেখতে যাবে।
আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের উপ-প্রকল্প পরিচালক মোহাম্মদ জাহেদুর রহমানের নেতৃত্বে অপর দল যাবে হবিগঞ্জ সদর, মৌলভীবাজার সদর ও সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলায়।
বাকি তিনটি দলের মধ্যে আশ্রয়ণ প্রকল্পের প্রকৌশলী আবুল কালাম আজাদের নেতৃত্বে একটি দল ময়মনসিংহ ও জামালপুর; উপ-প্রকল্প প্রকৌশলী মো. আনোয়ার হোসেনের নেতৃত্বে একটি দল নীলফামারী ও লালমনিরহাট আর সহকারী প্রকল্প পরিচালক বদরুল আলমের নেতৃত্বে একটি দল পাবনা, মানিকগঞ্জ, নাটোরের বিভিন্ন এলাকার বাড়ি সরেজমিনে পরিদর্শনে গেছে।
মুন্সিগঞ্জে আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাড়ি ঘুরে মাহবুব হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, ‘আজকে থেকে দলগুলোর পরিদর্শন শুরু হয়েছে। পর্যায়ক্রমে সব জেলায় যাবে। বিশেষ করে যেসব এলাকায় এ কথাগুলো (অনিয়মের অভিযোগ) উঠছে যে এ কথাগুলো সঠিক কি না। সেটা যাচাইয়ের জন্য কমিটি করে তদন্ত করতে বলি।’
কোনো অনিয়ম সহ্য করা হবে না জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এটা প্রধানমন্ত্রীর প্রকল্প, স্বপ্নের প্রকল্প। একটা গরিব লোক যিনি ঘর পাচ্ছেন, এটা তার একটা স্বপ্নের সূচনা হয়। কাজেই এটা নিয়ে আমরা কোনো অবহেলা করব না এবং কোনো অবহেলা সহ্য করব না।’
বিভিন্ন জেলা-উপজেলায় নির্মিত এবং নির্মাণাধীন বাড়িগুলোর নির্মাণশৈলী ও গুণগত মান, অনুমোদিত ডিজাইন ও প্রাক্কলন অনুযায়ী হয়েছে কি না, তা যাচাই করা এবং ছবিসহ প্রতিবেদন তৈরির নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
কী আছে প্রকল্পে
‘অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নে শেখ হাসিনা মডেল’ বাস্তবায়নে আশ্রয়ণ প্রকল্পের আওতায় এ পর্যন্ত সর্বমোট ১ লাখ ১৮ হাজার ৩৮০টি পরিবারকে ২ শতাংশ খাসজমিসহ দুই কক্ষবিশিষ্ট আধা পাকা বাড়ি দেয়া হয়েছে।
‘বাংলাদেশের একজন মানুষও গৃহহীন থাকবে না’- প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এ নির্দেশনা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে দেশে ২ লাখ ৯৩ হাজার ৩৬১টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবার এবং জমি আছে ঘর নেই অথবা অত্যন্ত জরাজীর্ণ ঘর- এ রকম ৫ লাখ ৯২ হাজার ২৬১টি পরিবারের তালিকা করা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে সবাইকে বাড়ি নির্মাণ করে দেবে সরকার।
আরও পড়ুন:দল হিসেবে আওয়ামী লীগের বিচারকাজের আনুষ্ঠানিক তদন্ত শুরু করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা। এর আগে তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগ দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল। মঙ্গলবার সকালে তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগ দেয়া হয়।
এর আগে, এনডিএম-এর চেয়ারম্যান ববি হাজ্জাজ গত বছরের (২ অক্টোবর) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর বরাবর লিখিত অভিযোগ জমা দেন। অভিযোগে বলা হয়েছে, আওয়ামী লীগসহ ১৪টি রাজনৈতিক দল গণহত্যার সরাসরি হুকুমদাতা হিসেবে দায়ী।
চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম বলেছেন, আমরা অভিযোগের ভিত্তিতে প্রাথমিক তদন্ত শুরু করছি। এটি পুরোদমে শুরু হলে বিষয়টি কতদূর পর্যন্ত যেতে পারে, তা আমরা তখন জানাতে পারব।
"একদিন এই পৃথিবী গড়েছো, আজ আমি স্বপ্ন গরবো,সযত্নে তোমায় রাখবো আগলে"
এই স্লোগানকে সামনে রেখে জেলা প্রশাসন ও জেলা সমাজসেবা কার্যালয় পিরোজপুরের আয়োজনে ৩৫ তম আন্তর্জাতিক প্রবীণ দিবস পালিত হয়েছে।
মঙ্গলবার (০৭ অক্টোবর)সকাল দশটায় পিরোজপুর জেলা সার্কিট হাউস এর সামনে থেকে একটি র্যালি বের হয়ে পিরোজপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয় সামনে এসে শেষ হয়।
র্যালি শেষে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের শহীদ আব্দুর রাজ্জাক-সাইফ মিজান স্মৃতি সভাকক্ষে এক আলোচনা অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়, জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের উপ পরিচালক মোঃ ইকবাল কবির এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পিরোজপুরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আশরাফুল আলম খান,
এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক(সার্বিক) মোঃ আলাউদ্দিন ভূইয়া জনি,জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মোঃ ইব্রাহিম খলিল, সহকারী পরিচালক জাকির হোসেন হাওলাদার,সদর উপজেলা সমাজসেবা অফিসার মোঃ মতিউর রহমান প্রমুখ।
বক্তব্য রাখেন,রিসোর্ট ইমিগ্রেশন সেন্টার(রিক) এর আন্তর্জাতিক সমন্বয়ক ফারুক আহমেদ,প্রবীণ হিতৈষী সংঘের সাংগঠনিক সম্পাদক গাজী খায়রুল আলম, নবীনদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন পিরোজপুর সরকারী বালিকা বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী গাজী বেনজীর সাইয়্যেদা।
বক্তারা বক্তব্যে প্রবীনদের বিভিন্ন সমস্যার কথা তুলে ধরেন এবং তাদের সাথে ভালো ব্যবহার ও তাদের প্রতি যথাযথ সম্মান ও মর্যাদা দেয়ার ব্যাপারে গুরুত্বারোপ করেন।
জেলা প্রশাসক প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রবীণদের এই সমাজের গুরুত্ব নিয়ে ব্যাপক আলোচনা করেন এবং নবীনদের উদ্দেশ্যে বলেন সব সময় প্রবীণদের প্রতি সম্মান ও মর্যাদা দিতে।
এছাড়াও তিনি বলেন ইতিমধ্যে জেলায় প্রবীনদের জন্য একটি প্রবীণ পার্ক নির্মান করেছি,ভবিষ্যতে তাদের জন্য সেখানে একটি পাঠাঘারের ব্যবস্থা করা হবে, এছাড়াও যাদের বয়স ৭০ বছরের উর্ধ্বে তাদের প্রত্যেককে একটি করে স্বাস্থ্য কার্ড দ্রুত সময়ের মধ্যে প্রদান করা হবে যাতে এরা সুন্দরভাবে স্বাস্থ্য সেবা নিতে পারে।
উল্লেখ্য উক্ত দিবসটি ছিলো ০১ অক্টোবর কিন্তু মন্ত্রণালয়ের নির্দেশক্রমে ০৭ অক্টোবর পালন করা হয়।
কুমিল্লার চান্দিনায় সুদের টাকা আদায়ের জন্য আলী আকবর (৭০) নামে এক বৃদ্ধকে বিদ্যুতের খুঁটির সাথে বেঁধে নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় এলাকাজুড়ে আলোচনা সমালোচনা চলছে। খবর পেয়ে মূল হোতা বোরহান উদ্দিন (২৫) কে আটক করেছে পুলিশ। গতকাল ৬ অক্টোবর সকালের ঘটনা ঘটে।
পরে রাত ১১ টায় বৃদ্ধকে নির্যাতনকারী সুদের কারবারি বোরহানকে তার নিজ বাড়ি থেকে আটক করেন চান্দিনা থানার উপ-পরিদর্শক (এস.আই) ইমাম হোসেন।
বোরহান উদ্দিন কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলার মাইজখার ইউনিয়নের রসুলপুর গ্রামের আবুল কালাম এর ছেলে।
চান্দিনা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. জাবেদ উল ইসলাম জানান- চান্দিনা থানার রসুলপুর গ্রামে সুদের টাকা আদায়ের জন্য এক বৃদ্ধকে বৈদ্যুতিক খুঁটির সাথে বেঁধে নির্যাতনের ঘটনার সংবাদটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক ভাইরাল হয়েছে। বিষয়টি আমাদের নজরে আসার পর রাতেই অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করা হয়েছে। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
প্রসঙ্গত, বোরহান দীর্ঘদিন যাবৎ এলাকায় সুদে টাকা বিনিয়োগ করেন। আলী আকবর তার ছেলে কে বিদেশে পাঠাতে বোরহানের কাছ থেকে টাকা নেয়। নির্ধারিত সময়ে টাকা পরিশোধে ব্যর্থ হওয়ায় সোমবার (৬ অক্টোবর) সকালে তাকে বাড়ি থেকে ধরে এনে রাস্তার পাশের একটি বিদ্যুতের খুঁটির সাথে বেঁধে নির্যাতন করা হয়।
বিরল প্রজাতির পাখি শামুকখোল। গ্রামের একটি পুকুর পাড়ের গাছে বাসা বেঁধেছে হাজার হাজার শামুকখোল পাখি। নিরাপদ আশ্রয় পেয়ে প্রায় দুই দশক ধরে বছরের নির্দিষ্ট সময় পাখিগুলো এখানে বসবাস করে। সে জন্য গ্রামটি পরিচিতি পেয়েছে পাখির গ্রাম হিসেবে। সকালে এসব পাখির কিচিরমিচির শব্দে ঘুম ভাঙে স্থানীয়দের। এ ছাড়া জেলার বিভিন্ন এলাকার মানুষ পাখিগুলোকে দেখতে আসেন। বলছি, জয়পুরহাটের ক্ষেতলালের কানাইপুকুর গ্রামের কথা। আর এখানে পাখি দেখতে প্রতিবছর ভিড় জমান দর্শনার্থীরা।
জানা যায়, উপজেলার আলমপুর ইউনিয়নের কানাইপুকুর গ্রামের বাসিন্দা জাহাঙ্গীর আলমের বাড়ির পাশে রয়েছে একটি পুকুর। সেই পুকুরের চারপাশে প্রায় ৫ বিঘা জমির ওপর বট, নিম, তেঁতুল, আম, বাঁশঝাড়সহ বিভিন্ন গাছ রয়েছে। এসব গাছে একটা সময় রাতচরা পাখি বাসা বেঁধেছিল। এরপর সাদা বকের পর ধীরে ধীরে সেখানে রাজত্ব চলে আসে শামুকখোল পাখির দখলে। প্রায় দুই দশক ধরে শামুকখোল পাখির স্থায়ী অভয়াশ্রমে পরিণত হয়েছে এই স্থানটি।
এই শামুকখোল পাখিগুলো গাছের মগডালে নিজেদের আপন খেয়ালে বাসা বেঁধে আসছে। এ ছাড়াও এখানে রয়েছে বক, কানা বক, শঙ্খ চোরা, পানকৌড়ি ও হরিয়াল। তবে এর মধ্যে শামুকখোল রয়েছে সবচেয়ে বেশি। পাখির কিচিরমিচির ডাক সবসময় মুখরিত করে রাখে গ্রামবাসীকে। তাই নিজের সন্তানের মতো লালন করেন তারা পাখিদের। অন্যদিকে গাছে গাছে পাখিরা ডিম থেকে ফুটাচ্ছে বাচ্চাও।
জয়পুরহাট সদর উপজেলা থেকে পাখি দেখতে এসেছেন দর্শনার্থী আসাদুজ্জামান রাশেদ। তিনি বলেন, একসঙ্গে এত পাখি অন্য কোথাও দেখা যায় না। এখানে হাজার হাজার পাখি দেখলাম। দেখে মনটা ভরে গেল।
কালাই উপজেলা থেকে দেখতে এসেছেন দর্শনার্থী আবুল বাশার লাইফ। তিনি বলেন, শামুকখোল পাখি এখন আর কোথাও দেখা যায় না। এখানে পাখি কলোনির কথা শুনে দেখতে আসছি। কাছ থেকে এত পাখি দেখে খুব ভালো লাগছে। কেউ পাখিদের বিরক্ত করে না। সরকারের উচিত পাখিগুলো সংরক্ষণ করার জন্য উদ্যোগ নেওয়া।
কানাইপুকুর গ্রামের স্থানীয় বাসিন্দা তামিম আহম্মেদ বলেন, পাখিগুলো আমাদের গ্রামকে মুখরিত করে রাখে। কেউ যেন পাখিগুলোর কোনো ক্ষতি করতে না পারে সে বিষয়ে আমরা সবাইকে সচেতন করি। এপ্রিল মাসের দিকে পাখিগুলো এখানে এসে গাছে গাছে বাসা বাঁধে। এরপর জুন মাসের দিকে ডিম থেকে বাচ্চা ফুটায়। সেই বাচ্চাগুলো বড় হয়ে উড়াল শিখতে শিখতে শীত চলে আসে। তখন তারা এখান থেকে অন্যত্র চলে যায়। পাখিগুলো চলে গেলে আমাদের অনেক খারাপ লাগে।
এই পাখি কলোনির পৃষ্ঠপোষক জাহাঙ্গীর আলম বলেন, এই অতিথি পাখিগুলো এখানে প্রায় ২০ বছর ধরে বাস করে আসছে। এরা সাধারণত এপ্রিল থেকে অক্টোবর পর্যন্ত এখানে অবস্থান করে। পাখিগুলোকে কেউ কখনো বিরক্ত করে না। এ জন্য এরা এখানে নিরাপদে ও নির্বিঘ্নে বাসা বাঁধতে পারে। আমরা পারিবারিকভাবে এই পাখি কলোনি দেখাশোনা করি। এই পাখিগুলো সাধারণত সব জায়গায় বাসা বাঁধে না। এরা আমাদের এখানে বাসা বেঁধেছে এটা আমাদেরও একটা গর্বের বিষয়। এজন্য আমার ভালো লাগা কাজ করে।
ক্ষেতলাল উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. পলাশ চন্দ্র রায় বলেন, অতিথি পাখি কলোনিটি পরিদর্শন করেছি। পাখিগুলো যদি অসুস্থ হয় তাহলে চিকিৎসা বা কোনো পরামর্শের প্রয়োজন হলে আমরা সহযোগিতা করব।
বাংলাদেশ জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি মহসিনা বেগম বলেন, শামুকখোল পাখি বাংলাদেশে আসে প্রজননের উদ্দেশ্যে। বাচ্চা বড় হয়ে উড়তে শিখলে তারা চলে যায় রাশিয়ার সাইবেরিয়া অঞ্চলের দিকে। এরা সাধারণত কলোনিয়াল ভাবে বাস করে। নিরাপদ আশ্রয় ও পরিমিত খাবার পেলে এরা অনেক দিন থেকে যায়। সরকারের সহযোগিতা পেলে এটি পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে উঠতে পারে।
ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলকভাবে আয়োজনের লক্ষ্যে মঙ্গলবার (৭ অক্টোবর) নির্বাচন বিশেষজ্ঞ ও নারী নেত্রীদের সঙ্গে সংলাপে বসছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। দিনব্যাপী এ সংলাপ দুই ধাপে অনুষ্ঠিত হবে।
ইসির জনসংযোগ শাখার সহকারী পরিচালক মো. আশাদুল হক জানান, সকাল সাড়ে ১০টা থেকে বেলা সাড়ে ১২টা পর্যন্ত নির্বাচন বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে এবং দুপুর আড়াইটা থেকে বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত নারী নেত্রীদের সঙ্গে সংলাপে বসবে কমিশন।
ইসির সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিতব্য সংলাপগুলোতে সভাপতিত্ব করবেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দীন। এতে চার নির্বাচন কমিশনার এবং ইসির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত থাকবেন।
সকালের অধিবেশনে নির্বাচন বিশেষজ্ঞদের মধ্যে সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার মোহাম্মদ আবু হেনা, সাবেক নির্বাচন কমিশনার ও অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নৌপরিবহন উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেনসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা অংশ নেবেন।
বিকেলের অধিবেশনে নারী নেত্রীদের সঙ্গে সংলাপে বসবে নির্বাচন পরিচালনার দায়িত্বে থাকা সংস্থাটি। দুটি অধিবেশনে মিলিয়ে মোট ৪০ জন অংশগ্রহণকারী তাদের মতামত ও পরামর্শ দেবেন বলে জানা গেছে।
জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ২৮ সেপ্টেম্বর থেকে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের সঙ্গে ধারাবাহিক সংলাপ করছে নির্বাচন কমিশন। ওইদিন সুশীল সমাজ, বুদ্ধিজীবী ও শিক্ষাবিদদের সঙ্গে সংলাপ হয়। গত ৬ অক্টোবর গণমাধ্যমের প্রতিনিধিদের সঙ্গে সভা করেছে ইসি।
আগামী দিনে মুক্তিযোদ্ধা, রাজনৈতিক দলসহ অন্যান্য অংশীজনদের সঙ্গেও বসবে কমিশন। প্রধান নির্বাচন কমিশনার জানিয়েছেন, সংলাপ থেকে পাওয়া গঠনমূলক পরামর্শগুলো বাস্তবায়নের চেষ্টা করা হবে।
রমজানের আগে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজনের পরিকল্পনা করছে নির্বাচন কমিশন। এ লক্ষ্যে ডিসেম্বরের প্রথমার্ধে তফসিল ঘোষণা করার কথা রয়েছে।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে (আইসিটি) কারো বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল হলে তিনি সংসদ সদস্য হওয়ার বা থাকার যোগ্য হবেন না বলে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে আইন মন্ত্রণালয়।
সোমবার (৬ অক্টোবর) আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগের মুদ্রণ ও প্রকাশনা শাখা এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করেছে।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিলের পর অভিযুক্ত ব্যক্তি নিম্ন লিখিত অবস্থানগুলোতে থাকার জন্য অযোগ্য বিবেচিত হবেন। তিনি জাতীয় সংসদের সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হওয়া বা থাকার যোগ্য হবেন না। স্থানীয় সরকার সংস্থাগুলোর সদস্য, কমিশনার, চেয়ারম্যান, মেয়র বা প্রশাসক হিসেবে নির্বাচিত বা নিয়োগপ্রাপ্ত হতে বা থাকতে পারবেন না। প্রজাতন্ত্রের কোনো চাকরিতে নিয়োগপ্রাপ্ত হতে পারবেন না। এছাড়া অন্য কোনো সরকারি পদে অধিষ্ঠিত হতে পারবেন না।
এতে আরও বলা হয়েছে, উপধারা (১) এ যা কিছুই থাকুক না কেন, ট্রাইব্যুনাল কর্তৃক কোনো ব্যক্তি অব্যাহতি বা খালাসপ্রাপ্ত হলে, উক্ত ব্যক্তির ক্ষেত্রে এই ধারা প্রযোজ্য হবে না।
ভবিষ্যত বিএনপি সম্পর্কে তারেক রহমান বলেছেন, আমরা দুটো বিষয় নিয়ে খুব গর্ব ও অহংকার করি। একটি হলো বাংলাদেশের গার্মেন্টস শিল্পে, অপরটি হলো প্রবাসীদের পাঠানো রেমিটেন্স। এ দুটিই বিএনপি শুরু করেছিলো। গার্মেন্টস শিল্পের প্রসার বিএনপির আমল থেকেই শুরু হয়েছিলো। ১৯৭৪ সালে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ করেছিলেন শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান।
মঙ্গলবার সকাল ৯টায় বিবিসি বাংলার সাক্ষাৎকারের দ্বিতীয় পর্বে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, রাজনৈতিক দৃষ্টিকোন থেকে যদি আমার দেখি। যখন সব দল নিষিদ্ধ করে বাকশাল গঠন করা হয়েছিলো। পরবর্তীতে বিএনপি ক্ষমতায় এসে বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছিলো। বিএনপি অতীত থেকে শিক্ষা নিয়ে ভবিষ্যত কর্মপরিকল্পনা নিয়ে এগিয়ে যাবে। বিএনপির প্রধান লক্ষ্য হবে গণতন্ত্রের শক্তিশালী বুনিয়াত তৈরি করা।
অন্তর্বর্তী সরকারের নিরপেক্ষতা নিয়ে অনেক আগে তারেক রহমান প্রশ্ন তুলেছিলেন, কেন তিনি নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন, সে প্রসঙ্গে তারেক রহমান বলেন, আমি যখন একথাটা বলেছিলাম তখন তারা নির্বাচনের ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট কোন রোডম্যাপ ঘোষণা করেনি, স্বাভাবিক ভাবেই সবার মনেই এই প্রশ্না জেগেছিল। তবে ড. ইউনূস যখন মোটামোটিভাবে নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করলেন তখন সন্দেহ অনেটাই কেটে গেল।
মন্তব্য