একাদশ জাতীয় সংসদের বাজেট অধিবেশনে সবার সমালোচনায় বিদ্ধ হলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। কেউ কেউ তাকে বিশ্বের সবচেয়ে ‘নির্লজ্জ’ মন্ত্রী এবং মন্ত্রণালয়ের ‘দুর্নীতিবাজ সিন্ডিকেটের সর্দার’ হিসেবে উল্লেখ করে তার পদত্যাগ দাবি করেছেন।
চলমান করোনাভাইরাস পরিস্থিতি, স্বাস্থ্য খাতের নানা অনিয়ম, অদক্ষতা ও দুর্নীতি, সংসদে দেয়া স্বাস্থ্যমন্ত্রীর বক্তব্য, হাসপাতালগুলোতে অক্সিজেনের অভাব, ভ্যাকসিন সংগ্রহে ব্যর্থতা, মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিক রোজিনা ইসলামকে আটকে রেখে নির্যাতন ইত্যাদি বিষয়ে সংসদ সদস্যরা স্বাস্থ্যমন্ত্রীর কড়া সমালোচনা করেন।
প্রশ্ন তোলা হয় দায়িত্ব পালনে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর সদিচ্ছা ও দক্ষতা নিয়েও। বাজেট আলোচনায় অংশ নিয়ে বিএনপি, জাতীয় পার্টি, গণফোরাম, জেপি, জাসদ, ওয়ার্কার্স পার্টির সংসদ সদস্য ছাড়াও সরকারদলীয় কয়েকজনও স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে সমালোচনার তির ছুড়েছেন।
শনিবার বাজেট অধিবেশনের সমাপনী দিনে বক্তব্যে জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, ‘এই করোনা পরিস্থিতিতে আজ পর্যন্ত স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে দেখলাম না কোনো হাসপাতালে গিয়ে তাদের সেবা কার্যক্রম বা নাগরিকের অভিযোগের খোঁজ নিতে। তিনি ঘরে বন্দি হয়ে ভিডিও কনফারেন্স করেন। অথচ হাসপাতালে অক্সিজেনের অভাবে মানুষ মারা যাচ্ছে।
‘উনি যে কী মানুষ, আমি বুঝলাম না। ওনার কোনো লজ্জা-শরম নাই। উনি মানুষ হলে রিজাইন করতেন।’
বিএনপির সংসদ সদস্য হারুনুর রশীদ বলেন, ‘স্বাস্থ্যমন্ত্রী সংসদে দাঁড়িয়ে মিথ্যা বক্তব্য দিয়ে পুরো হাউসকে অপমান করেছেন।… মন্ত্রণালয়ে গিয়ে ওনাকে পাওয়া যায় না…। আবার উনি বলে বেড়ান সংসদ সদস্যরা তাকে কিছু জানান না।’
এর আগে ৩০ জুন স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের ‘ছাঁটাই প্রস্তাব’ নিয়ে আলোচনার সময় জাতীয় পার্টির পীর ফজলুর রহমান বলেন, ‘কতবার ডিও (ডেমি অফিশিয়াল) লেটার দেব? আমার এলাকার হাসপাতালে অ্যাম্বুলেন্স নেই, ডাক্তার কবে পাব? এক্স-রে মেশিন কবে পাব? রেডিওলজিস্ট কবে পাব? স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে যতবার বলি, উনি ডিও লেটার দিতে বলেন। কতবার দেব?’
জাতীয় পার্টির আরেক সদস্য ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী বলেন, ‘স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় টাকা খরচ করতে পারেনি। ফেরত দিয়েছিল। এটা আমরা চাই না। খরচ করতে না পারলে এখানে ৩৫০ জন এমপিকে ভাগ করে দেন। আমরা খরচ করি। স্বাস্থ্যসেবা আমরা দেখব। আপনাদের দরকার নেই। ডাক্তার-নার্স নিয়োগ করতে পারছেন না। ৩৫০ এমপিকে দায়িত্ব দেন। আমরা নিয়োগের ব্যবস্থা করি।’
এদিন স্বাস্থ্য খাতের বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ তুলে ধরে বিএনপির রুমিন ফারহানা বলেন, ‘স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে এই যে বরাদ্দ দিচ্ছি, সেটা কোথায় যাচ্ছে? বরাদ্দ খরচ করার সক্ষমতা মন্ত্রণালয়ের আছে কি না, সেই প্রশ্ন চলে আসছে।’
বিএনপির হারুনুর রশীদ বলেন, ‘স্বাস্থ্য খাত সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। দুর্নীতি দূর করতে হলে ডালপালা কেটে লাভ নেই। গাছের শিকড় উপড়ে ফেলতে হবে। স্বাস্থ্যের কেনাকাটায় ব্যাপক অনিয়ম হয়েছে। দুর্নীতি নিয়ে নতুন করে বলার কিছু নেই।’
গত ৭ জুনও অধিবেশনে মহামারির এই সময়ে স্বাস্থ্য খাতে ‘অব্যবস্থাপনার’ অভিযোগে সংসদে মন্ত্রী বিরোধীদের তোপের মুখে পড়েন। যদিও সেদিন স্বাস্থ্যমন্ত্রী দাবি করেন, করোনাভাইরাস মোকাবিলায় বাংলাদেশ ‘খুবই সফলতা’ দেখিয়েছে।
সেদিনও স্বাস্থ্য খাতকে ঢেলে সাজানোর আহ্বান জানিয়ে বিএনপির সংসদ সদস্য হারুনুর রশীদ বলেন, ‘কেনাকাটায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় দুর্নীতির ডিপো। কীভাবে এই মন্ত্রণালয়ের সংস্কার করবেন, তা স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে সুস্পষ্টভাবে জানাতে হবে।
‘স্বাস্থ্য খাত নিয়ে কথা বলতে বলতে বেহাল হয়ে গেছি। স্বাস্থ্য বিভাগকে সংস্কারের আওতায় আনতে হবে। বেহাল দশা থেকে রক্ষা করতে কমিটি গঠন করতে হবে।’
বিএনপির সংরক্ষিত নারী আসনের সদস্য রুমিন ফারহানা বলেন, জিডিপির অন্তত ৫ শতাংশ এই খাতে বরাদ্দ দেয়া উচিত ছিল। দক্ষিণ এশিয়ায় সব দেশে বরাদ্দ বাংলাদেশের চেয়ে অনেক বেশি।
‘করোনাকালে ভারত স্বাস্থ্য খাতে আগের বছরের তুলনায় ১৩৭ শতাংশ বেশি বরাদ্দ দিয়েছে। বাংলাদেশে বেড়েছে মাত্র ১২ শতাংশ। করোনাকালেও বরাদ্দ বাড়ানো হয়নি। যেটুকু বরাদ্দ দেয়া হয়েছে তাও ব্যবহার হয়নি।’
১০ মাসে স্বাস্থ্য খাতে বার্ষিক উন্নয়ন পরিকল্পনা এডিপির মাত্র ২৫ শতাংশ ব্যয় হয়েছে দাবি করে রুমিন ফারহানা বলেন, ‘এখন আবার নতুন বরাদ্দ চাইছে। কেন, ৭৫ শতাংশ অব্যবহৃত রয়ে গেছে তার জবাব স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে দিতে হবে।’
রুমিন বলেন, প্রধানমন্ত্রী একাধিকবার জেলায় জেলায় আইসিইউ স্থাপন করতে বলেছেন। কিন্তু দেড় বছরে মাত্র ৫টি জেলায় নতুন আইসিইউ স্থাপন করা হয়েছে।
সচিবালয়ে সাংবাদিক রোজিনা ইসলামকে হেনস্তার সমালোচনা করে বিরোধী দল জাতীয় পার্টির সংরক্ষিত আসনের রওশন আরা মান্নান প্রশ্ন তোলেন, ‘আইন কেন নিজের হাতে তুলে নেয়া হলো? নিজেরা কেন অত্যাচার করল?’
সরকারি নথি ‘চুরির চেষ্টার’ অভিযোগে গত ১৭ মে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের এক কর্মকর্তার কক্ষে সাংবাদিক রোজিনা ইসলামকে প্রায় সাড়ে পাঁচ ঘণ্টা আটকে রাখা হয়।
পরে রাতে তাকে শাহবাগ থানায় পাঠানো হয় এবং অফিশিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্ট ও দণ্ডিবিধির কয়েকটি ধারায় তার বিরুদ্ধে মামলা করা হয়।
বিএনপির সংসদ সদস্য মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘সচিব পর্যায়ের একজন কর্মকর্তা সাংবাদিক রোজিনা ইসলামের গলা চিপে ধরে হেনস্তা করেছেন, এটা হতে পারে না।’
বিরোধী দল জাতীয় পার্টির জ্যেষ্ঠ সংসদ সদস্য কাজী ফিরোজ রশীদ বলেন, ‘অসুস্থ মানুষ, তাও মহিলা, তাকে এভাবে হেনস্তা করা যায়? এটা নিয়ে জাতিসংঘ, সারা পৃথিবী কথা বলল। আমাদের মুখটা কোথায় গেল?’
স্বাস্থ্যমন্ত্রীর উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আপনি একজন সজ্জন ব্যক্তি। আপনার বাবা আমার সঙ্গে মন্ত্রী ছিলেন। আপনাকে আমি চিনি। অত্যন্ত ধনাঢ্য পরিবারের ছেলে আপনি। কিন্তু আপনার তো কর্তৃত্ব নেই, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে যা হচ্ছে!
‘হাসপাতালে অক্সিজেন নেই। এখন দরকার অক্সিজেন। সেটা না এনে আনা হচ্ছে এমআরআই, সিটিস্ক্যান মেশিন। পাঠানো হচ্ছে উপজেলায়। তারা সব সাজিয়ে রেখে দিয়েছে। চালাতে পারে না।’
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও সংসদে বিরোধীদলীয় উপনেতা জি এম কাদের বলেন, যারা পুকুর চুরি করছেন, তারা বেরিয়ে যাচ্ছেন। যারা এসব প্রকাশ করছেন, তারা নানা সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন। অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা জবাবদিহি নিশ্চিতে কাজ করে। সাংবাদিকদের এটুকু সুযোগ দেয়া সমাজের দায়িত্ব।
তিনি আরও বলেন, প্রস্তাবিত বাজেটে স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ জিডিপির শূন্য দশমিক ৮৩ শতাংশ। এটা ৪ থেকে ৫ শতাংশ দেয়া উচিত ছিল। করোনা মহামারির কারণে বাড়ানো উচিত ছিল। কমপক্ষে জিডিপির ২ শতাংশ হওয়া উচিত। করোনা নিয়ন্ত্রণে এলে অর্থনীতি চাঙা হবে। তাই স্বাস্থ্যের দিকে খেয়াল করতে হবে। এটাকে অবহেলা করা উচিত নয়। কিন্তু অবহেলা করা হচ্ছে।
আলোচনায় অংশ নিয়ে বিএনপির সংসদ সদস্য হারুন অর রশীদ বলেন, ‘স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে ঢেলে সাজাতে হবে। এটা সংস্কার করতে হবে। বাংলাদেশের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় দুর্নীতির ডিপো। এই দুর্নীতি কীভাবে সংস্কার করবেন, এ ব্যাপারে আমাদের সুস্পষ্টভাবে জানাবেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী।’
তিনি বলেন, ‘স্বাস্থ্য বিভাগ সত্যিকারভাবে আজ ভারতনির্ভর হয়ে গেছে। এতে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার ভারতে চলে যাচ্ছে। যদি আমরা সত্যিকার অর্থে স্বাস্থ্য বিভাগকে ঢেলে সাজাতে পারি, সংস্কার করতে পারি, তাহলে বিদেশে স্বাস্থ্য খাতে যে ব্যাপক টাকা চলে যায়, তা যাবে না।’
সেদিন বিএনপির সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা বলেন, ‘করোনাকাল হওয়া সত্ত্বেও এ বছর আমরা স্বাস্থ্য ও শিক্ষার মতো বেসিক জিনিসগুলোর ওপর যদি নজর না দিই, ভৌত অবকাঠামোর দিকে যদি আমরা সারা দিন তাকিয়ে থাকি, তাহলে করোনা বলেন আর যা-ই বলেন দেশের সাধারণ মানুষের কোনো উপকার হবে না।
‘১০ হাজার মানুষের মাথাপিছু ডাক্তার আছে মাত্র পাঁচজন। আর নার্স আছে মাত্র তিনজন। এই অপ্রতুল জনগণ নিয়ে কীভাবে হাসপাতালগুলো চলবে? কীভাবে আমরা স্বাস্থ্য খাতকে ঢেলে সাজাব? কীভাবে আমরা সাধারণ মানুষকে সেবা দেব?’
তবে সংসদ সদস্যদের এসব প্রশ্নের কোনো জবাব দেননি স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। প্রসঙ্গ এড়িয়ে তিনি বলেন, স্বাস্থ্যসেবা একটি ব্যাপক কর্মযজ্ঞ। দেড় বছর ধরে করোনা চলছে। তারা সেবা দিয়ে যাচ্ছেন।
করোনা মোকাবিলায় সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগের কথা তুলে ধরে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, চলমান অবস্থাতেও দেশে ওষুধের কোনো ঘাটতি হয়নি। অক্সিজেনের অভাব কখনোই হয়নি। আমেরিকায় যে চিকিৎসা, এখানেও একই চিকিৎসা হয়েছে। ভ্যাকসিন কার্যক্রম চলমান আছে। এসব কারণে মৃত্যুর হার দেড় শতাংশ। বিশ্বে এই হার আড়াই শতাংশ।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী দাবি করেন, করোনা মোকাবিলায় বাংলাদেশ খুবই সফলতা দেখিয়েছে। এ কারণে দেশের মানুষের জীবনযাত্রা প্রায় স্বাভাবিক।
মন্ত্রীর এমন জবাব পেয়ে সংসদে হইচই শুরু করেন বিরোধীদলীয়রা। জবাবে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘তাদেরও দায়িত্ব রয়েছে, শুধু ঢালাও অভিযোগ করলে হবে না। সব এমপি তো হাসপাতালের চেয়ার। উন্নয়ন কমিটির সঙ্গে আমরা জড়িত। আপনারা প্রত্যেকে দায়িত্বে আছেন। এই বিষয়গুলো আপনাদেরই দেখার কথা। মেশিন চলে না। লোক লাগবে। এগুলো তো আপনাদের দেখতে হবে।
‘কিন্তু আপনারা তো সেটা দেখেন না। নার্স, ডাক্তার বা যন্ত্রপাতি লাগলে তো আপনাদের বলতে হবে। শুধু অভিযোগ দিলে তো হবে না। যা যা প্রয়োজন আছে তার ব্যবস্থা করা হবে।’
এ সময় বিরোধী দলের বেঞ্চ থেকে হইচই শুরু হয়। স্বাস্থ্যমন্ত্রীর বক্তব্যের বিরোধিতা করেন জাতীয় পার্টি ও বিএনপির সদস্যরা। স্বাস্থ্যমন্ত্রী একটু থেমে গেলে সামনে বসা তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী তাকে বক্তব্য চালিয়ে যেতে ইশারা করেন।
জাহিদ মালেক বলেন, ‘সব লকডাউন। আপনারা কেউ তো বাইরে (দেশের বাইরে) যেতে পারননি। সেবা কোথায় নিচ্ছেন? সব বাংলাদেশের হাসপাতালেই সেবা নিচ্ছেন। যেতে তো পারছেন না কোথাও। হাসপাতাল সেই সেবা দিতে পারে বিধায় আপনারা সেবা নিচ্ছেন, ভালো আছেন।’
আরও পড়ুন:
দেশের বিভিন্ন প্রান্তে চলছে দাবদাহ। এ সময়ে অগ্নিকাণ্ড থেকে বাঁচতে করণীয় কী কী, তা জানিয়েছেন ফায়ার সার্ভিস মিডিয়া সেলের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. শাহজাহান শিকদার।
এক ভিডিওবার্তায় তিনি বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলেছেন, যা তার ভাষায় তুলে ধরা হলো নিউজবাংলার পাঠকের জন্য।
বিদ্যুৎ ব্যবহারে সতর্কতা
সম্মানিত দর্শকমণ্ডলী, প্রচণ্ড তাপদাহ চলছে এবং এটি আরও কিছুদিন ধরে কন্টিনিউ করতে পারে। এ সময় কিন্তু অগ্নিদুর্ঘটনার ঝুঁকি মারাত্মকভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। সে জন্য এই তাপদাহের সময় অগ্নিদুর্ঘটনা থেকে বেঁচে থাকার জন্য আমাদের আরও বেশি সতর্ক হওয়া লাগবে।
বিশেষ করে বিদ্যুৎ ব্যবহারের ক্ষেত্রে অধিক সতর্ক হওয়া লাগবে। বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম এবং যন্ত্রাংশ ব্যবহারের সময় এটি একটানা দীর্ঘসময় ব্যবহার না করে মাঝে মাঝে বিরতি দেয়া লাগবে এবং এগুলো যারা পরিচালনা করেন, শ্রমিক যারা তাদেরও কিন্তু দীর্ঘসময় ধরে একটানা কাজ না করিয়ে মাঝে মাঝে তাদেরকেও বিরতি দিতে হবে। তাহলে কিন্তু অগ্নিদুর্ঘটনার শঙ্কা হ্রাস পাবে এবং সীমিত থাকবে।
বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম ত্রুটিমুক্ত রাখা
সকল ধরনের বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম ত্রুটিমুক্ত আছে কি না, এখনই চেক করতে হবে। ত্রুটিপূর্ণ থাকলে তা বদলে ফেলতে হবে। একটি বৈদ্যুতিক লাইন থেকে অথবা একটি মাল্টিপ্লাগ থেকে অতিরিক্ত সংযোগ নেয়া যাবে না। এই জাতীয় সংযোগ থেকে কিন্তু দুর্ঘটনার আশঙ্কা থাকে।
বৈদ্যুতিক লাইন ব্যবহারে সতর্কতা
বৈদ্যুতিক লাইন ব্যবহারের ক্ষেত্রে যখন ব্যবহার বন্ধ হয়ে যাবে, সব ধরনের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন রাখতে হবে। অফ করে রাখতে হবে।
রান্নার ক্ষেত্রে সতর্কতা
এ ছাড়া আমরা আবাসিক ভবনে যারা রান্নার কাজ করি, রান্না রেখে দূরে সরে যাওয়া যাবে না। রান্না শেষে অবশ্যই চুলা পুরোপুরি নিভিয়ে ফেলতে হবে এবং গ্রামেগঞ্জে রান্না করছি যেখানে ছাই যেন উত্তপ্ত না থাকে, ছাইও নিশ্চিন্তভাবে নিভিয়ে ফেলতে হবে।
ধূমপান পরিহার
আবাসিক ভবন ও কারখানায় কোনোভাবেই কিন্তু ধূমপান করা যাবে না। অপরিহার্য ক্ষেত্রে বাইরে যারা ধূমপান করবেন, বিড়ি-সিগারেটের শেষ অংশ সতর্কভাবে, সচেতনভাবে নিভিয়ে ফেলতে হবে এবং গাড়িতে চলাচলের সময় ধূমপান করে যেখানে সেখানে কিন্তু সিগারেটের অংশ ফেলা যাবে না।
বারবিকিউ পার্টি না করা
বাড়ির ছাদে, বারান্দায় অথবা আশপাশে দাহ্য বস্তু আছে, এমন খোলা জায়গায় এ সময় বারবিকিউ পার্টি করবেন না। কারণ একটি স্ফূলিঙ্গ উড়ে গিয়ে ভয়াবহ অগ্নিদুর্ঘটনার সৃষ্টি করতে পারে। এই সময় ক্যাম্প ফায়ার, ফানুস ওড়ানো অথবা আতশবাজিকে পুরোপুরি না বলুন।
গাড়িতে অবস্থান ও পার্কিংয়ে সতর্কতা
ফিলিং স্টেশন থেকে তেল ও গ্যাস সংগ্রহের সময় অনুগ্রহপূর্বক কেউ গাড়িতে অবস্থান করবেন না। সবাই সচেতন থাকবেন। বিশেষ করে ফিলিং স্টেশনের মালিক এবং যারা কর্মরত আছেন, তাদের এ ব্যাপারে অধিক মনোযোগী হওয়া প্রয়োজন।
এ সময় সরাসরি রোদ পড়ে এমন জায়গায় গাড়ি পার্কিং করবেন না। গাড়ি ছায়ার মধ্যে পার্কিং করবেন বা যেখানে ছায়া আছে, এমন জায়গায় গাড়ি পার্ক করবেন।
আগুন নিয়ে খেলা পরিহার
এ সময় বাচ্চাদের আগুন নিয়ে খেলতে দেবেন না এবং আপনার হাতের কাছে অগ্নিনির্বাপণ সরঞ্জাম সংরক্ষণ করুন। সরঞ্জাম ত্রুটিমুক্ত আছে কি না, তা পরীক্ষা করুন এবং এগুলোর সামনে কোনো ব্যারিয়ার তৈরি করবেন না।
ফায়ার সার্ভিসের সহায়তা পেতে
আপনার সতর্কতা এবং আপনার প্রতিবেশীকে সতর্ক করার মধ্য দিয়ে কিন্তু নিরাপদ থাকা সম্ভব। এ ছাড়া আপনার এবং আপনার পরিবারের সকল সদস্যের মোবাইলে নিকটস্থ ফায়ার স্টেশনের ফোন নম্বর সেভ করে রাখুন। যেকোনো সময় ফায়ার সার্ভিসকে দ্রুত রেসপন্স করার জন্য ১৬১৬৩ হটলাইন অথবা জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ কিংবা নিকটতম ফায়ার স্টেশনের ফোন নম্বরে দ্রুত কল করুন এবং ফায়ার সার্ভিসের সেবা গ্রহণ করুন।
আরও পড়ুন:ঈদুল ফিতরকেন্দ্রিক যাত্রায় দেশের সড়ক-মহাসড়কে ৩৯৯টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৪০৭ জন নিহত ও এক হাজার ৩৯৮ জন আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি।
যাত্রীদের স্বার্থ সংরক্ষণ নিয়ে কাজ করা সংস্থাটির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী শনিবার সকালে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য তুলে ধরেন।
ঈদযাত্রায় অন্যান্য পথে দুর্ঘটনার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘একই সময়ে রেলপথে ১৮টি দুর্ঘটনায় ২৪ জন নিহত, ২১ জন আহত হয়েছে। নৌপথে দুটি দুর্ঘটনায় সাতজন নিহত, পাঁচজন আহত হয়েছে।
‘সড়ক, রেল ও নৌপথে সর্বমোট ৪১৯টি দুর্ঘটনায় ৪৩৮ জন নিহত ও ১ হাজার ৪২৪ জন আহত হয়েছে।’
যাত্রী কল্যাণ সমিতির সমিতির সড়ক দুর্ঘটনা মনিটরিং সেলের প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে মোজাম্মেল বলেন, ‘প্রতি বছর ঈদকেন্দ্রিক সড়ক দুর্ঘটনা আশঙ্কাজনক হারে বেড়ে যাওয়ায় সংগঠনটি ঈদযাত্রায় সড়ক দুর্ঘটনা, অতিরিক্ত ভাড়া আদায় ও যাত্রী হয়রানীর বিষয়টি দীর্ঘদিন যাবত পর্যবেক্ষণ করে আসছে। পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, এবারের ঈদে লম্বা ছুটি থাকায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ২০ শতাংশ মানুষের বেশি যাতায়াত হয়েছে। বর্তমান সরকারের বিগত ১৫ বছরে ধারাবাহিক উন্নয়নের ফলে দেশের সড়ক-মহাসড়কের অবস্থা আগের তুলনায় ভালো থাকায় যানবাহনে গতি বেড়েছে।
‘দেশের সবকটি সড়ক-মহাসড়কের পাশাপাশি পদ্মা সেতুতে মোটরসাইকেলের অবাধ চলাচলের কারণে মোট যাত্রীর সাত দশমিক পাঁচ শতাংশ মোটরসাইকেলে যাতায়াত করেছে। সরকারের বিভিন্ন নিয়ন্ত্রক সংস্থা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মাঠে থাকলেও অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের নৈরাজ্য ও পথে পথে যাত্রী হয়রানি চরমে উঠেছিল। গণপরিবহনগুলোতে ঈদকে কেন্দ্র করে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের নৈরাজ্যর কারণে বাসের ছাদে, ট্রেনের ছাদে, খোলা ট্রাকে, পণ্যবাহী পরিবহনে যাত্রী হয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দরিদ্র লোকজনের ঈদে বাড়ি যেতে হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘ঈদযাত্রা শুরুর দিন ৪ এপ্রিল থেকে ঈদ শেষে কর্মস্থলে ফেরা ১৮ এপ্রিল পর্যন্ত বিগত ১৫ দিনে ৩৯৯টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৪০৭ জন নিহত ও ১ হাজার ৩৯৮ জন আহত হয়েছে। বিগত ২০২৩ সালের ঈদুল ফিতরে ৩০৪টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৩২৮ জন নিহত ও ৫৬৫ জন আহত হয়েছিল।
‘বিগত বছরের সঙ্গে তুলনা করলে এবারের ঈদে সড়ক দুর্ঘটনা ৩১ দশমিক ২৫ শতাংশ, প্রাণহানি ২৪ দশমিক ০৮ শতাংশ, আহত ১৪৭ দশমিক ৪৩ শতাংশ বেড়েছে।’
আরও পড়ুন:সারা দেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেতে পারে ও সেই সঙ্গে অস্বস্তি বাড়তে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
রাষ্ট্রীয় সংস্থাটি শনিবার সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ৭২ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে এমন বার্তা দিয়েছে।
পূর্বাভাসে সিনপটিক অস্থান নিয়ে বলা হয়েছে, পশ্চিমা লঘুচাপের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে।
শনিবারের তাপমাত্রা নিয়ে পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, সারা দেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা সামান্য বৃদ্ধি পেতে পারে। জলীয় বাষ্পের আধিক্যের কারণে অস্বস্তি বাড়তে পারে।
তাপপ্রবাহ নিয়ে বলা আছে, রাজশাহী, পাবনা ও টাঙ্গাইল জেলাসহ খুলনা বিভাগের ওপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ এবং চাঁদপুর ও মৌলভীবাজার জেলাসহ ঢাকা ও রাজশাহী বিভাগের অবশিষ্টাংশ এবং বরিশালের ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে যা অব্যাহত থাকতে পারে।
বৃষ্টিপাত নিয়ে বলা আছে, ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের দু এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রবৃষ্টি হতে পারে। এ ছাড়া দেশের অন্য স্থানে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে।
আরও পড়ুন:কদিন ধরেই তীব্র গরম। দেশের কোথাও মাঝেমধ্যে বৃষ্টি হচ্ছে, তবে গরম অবশ্য কমছে না। আবহাওয়া আপাতত এমনই থাকবে।
শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে এ তথ্য দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, কুমিল্লা ও কিশোরগঞ্জ অঞ্চলসহ ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের দু-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে।
এতে বলা হয়, একই সঙ্গে কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলাবৃষ্টি হতে পারে। এ ছাড়া দেশের অন্যত্র অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে।
অধিদপ্তর বলছে, রাজশাহী, পাবনা ও টাঙ্গাইল জেলাসহ খুলনা বিভাগের ওপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ এবং চাঁদপুর ও মৌলভীবাজার জেলাসহ ঢাকা ও রাজশাহী বিভাগের অবশিষ্টাংশ ও বরিশাল বিভাগের ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সারা দেশে দিনের তাপমাত্রা সামান্য বৃদ্ধি পেতে পারে এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। জলীয় বাষ্পের আধিক্যের কারণে অস্বস্তি বৃদ্ধি পেতে পারে।
আবহাওয়ার সার্বিক পর্যবেক্ষণে বলা হয়, লঘুচাপের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে।
আগামী পাঁচ দিনের পূর্বভাসে বলা হয়েছে, তাপপ্রবাহ প্রায় একই রকম থাকতে পারে। আবহাওয়ায় তেমন পরিবতর্তন আসবে না।
দেশে চলমান দাবদাহ শুক্রবার থেকে পরবর্তী ৭২ ঘণ্টা অব্যাহত থাকতে পারে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর।
রাষ্ট্রীয় সংস্থাটি শুক্রবার তাপপ্রবাহের সতর্কবার্তায় এ কথা জানায়।
আবহাওয়াবিদ ড. মুহাম্মদ আবুল কালাম মল্লিক স্বাক্ষরিত সতর্কবার্তায় বলা হয়, ‘দেশের ওপর দিয়ে চলমান তাপপ্রবাহ আজ (১৯ এপ্রিল, ২০২৪) হতে পরবর্তী ৭২ ঘণ্টা অব্যাহত থাকতে পারে এবং তাপমাত্রা আরও বৃদ্ধি পেতে পারে।
‘জলীয় বাষ্পের আধিক্যের কারণে অস্বস্তি বৃদ্ধি পেতে পারে।’
৭২ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাস
আবহাওয়া অধিদপ্তর শুক্রবার সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ৭২ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে সিনপটিক অবস্থা নিয়ে বলেছে, লঘুচাপের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে রয়েছে।
তাপপ্রবাহ বা দাবদাহের বিষয়ে বলা হয়, বাগেরহাট, যশোর, চুয়াডাঙ্গা ও কুষ্টিয়া জেলার ওপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। অন্যদিকে দিনাজপুর, রাঙ্গামাটি, চাঁদপুর, খুলনা, সাতক্ষীরা, বরিশাল ও পটুয়াখালী জেলা এবং ঢাকা ও রাজশাহী বিভাগের ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। এটি অব্যাহত থাকতে পারে।
আরও পড়ুন:প্রথম ধাপের উপজেলা নির্বাচনে মোট বৈধ প্রার্থী দাঁড়িয়েছে এক হাজর ৭৮৬ জন। মাঠ পর্যায় থেকে পাঠনো তথ্য একীভূত করার পর এ তথ্য জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনের অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ।
তিনি জানান, প্রথম ধাপে চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছিলেন এক হাজার ৮৯০ জন। এদের মধ্যে বাছাইয়ে ১০৪ জনের মনোনয়নপত্র বাতিল, আর বৈধতা পেয়েছে এক হাজার ৭৮৬ প্রার্থীর।
নির্বাচন কমিশন ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, রিটার্নিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ১৮ থেকে ২০ এপ্রিল পর্যন্ত আপিল করা যাবে। আপিল নিষ্পত্তি ২১ এপ্রিল, প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময় ২২ এপ্রিল। এরপর প্রতীক বরাদ্দ ২৩ এপ্রিল এবং ১৫০ উপজেলায় ভোটগ্রহণ হবে আগামী ৮ মে।
অপপ্রচার রোধে প্রশিক্ষণের প্রয়োজন হলে ভারতীয় প্রতিষ্ঠানের সহায়তা নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত।
বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে প্রতিমন্ত্রীর নিজ দপ্তরে ভারতের হাইকমিশনার প্রণয় কুমার ভার্মার সৌজন্য সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন।
আরাফাত বলেন, ‘অপপ্রচার রোধে ভারতের কিছু প্রতিষ্ঠান কাজ করে। তারা কীভাবে কাজ করে, তাদের অভিজ্ঞতা এবং প্রক্রিয়া-পদ্ধতি বিনিময় জানা-বোঝার চেষ্টা করব। এক্ষেত্রে কোনো প্রশিক্ষণের প্রয়োজন হলে আমরা তাদের কাছ থেকে সহায়তা নেব।’
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ এবং ভারতের মধ্যে যেসব কো-অপারেশন আছে, সেসব নিয়ে আলোচনা হয়েছে। বিশেষ করে বিটিভিতে দুই ঘণ্টার একটি চাংক নিয়ে আমরা আন্তর্জাতিক সংবাদ বিশ্লেষণ, চলমান ঘটনাপ্রবাহ এবং সংবাদ উপস্থাপনা শুরু করতে যাচ্ছি। সেক্ষেত্রে ভারতের যে সংবাদ সংস্থাগুলো আছে, বিশেষ করে এএনআইয়ের সঙ্গে কোলাবরেশন করা যায় কি না, তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
‘যেহেতু বিটিভি ইন্ডিয়াতে দেখানো হয়, সেহেতু দুই ঘণ্টার এ চাংক আমরা ধীরে ধীরে দুই, তিন, চার ঘণ্টা পর্যন্ত বাড়াব। আমরা আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী করতে চাচ্ছি, যেখানে দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশের খবর থাকবে। এর বাইরেও বিভিন্ন দেশের খবর থাকবে।’
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা চেষ্টা করব ভারতীয় দর্শকদের আকৃষ্ট করতে। এ ছাড়া ইন্ডিয়ান ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন নিয়ে ইনস্টিটিউশন আছে, তাদের সঙ্গে কোলাবরেশন করা, বিভিন্ন ধরনের প্রোগ্রাম ও ট্রেনিং করা।’
‘সম্প্রতি মুজিব শিরোনামের যে সিনেমাটি সহ-প্রযোজনা হয়েছে, এমন অন্য কোনো সিনেমায় সহ-প্রযোজনার সুযোগ আছে কি না তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে’- যোগ করেন প্রতিমন্ত্রী।
ভারতের সিনেমা যেহেতু বাংলাদেশের বাজারে চলে সেহেতু বাংলাদেশেরও ভালো মানের সিনেমা ভারতে চালানোর বিষয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘দর্শককে জোর করে কিছু দেখানো যায় না। বাজারে কোনো জিনিসের চাহিদা থাকলে তা স্বয়ংক্রিয়ভাবেই যাবে-আসবে। সিনেমা যেহেতু প্রোডাক্ট, সেহেতু ভারতের বাজারে দর্শক থাকলে অবশ্যই যাবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘যে বিষয়গুলো নিয়ে আমাদের আরও কো-অপারেশনের সুযোগ আছে, সেসব নিয়ে আমরা আলোচনা করেছি। আমি মনে করি- বাংলাদেশ এ বিষয়ে বেশি লাভবান হবে। কারণ ভারতের ফিল্মে, টেলিভিশনে বা অন্যান্য জায়গায় যে অভিজ্ঞতা আছে, তা আমরা যত বেশি নেয়ার চেষ্টা করা যায়। দেশের উন্নয়নের জন্য এসব জরুরি।’
আরও পড়ুন:
মন্তব্য