গত ডিসেম্বরে তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেবলুত সাবুসোলুর ঢাকা সফরের প্রধান লক্ষ্যই ছিল অস্ত্র বিক্রি। সে সময় আলোচনা কতটা ফলপ্রসূ হলো, সে বিষয়ে কোনো পক্ষ থেকেই মেলেনি বক্তব্য। তবে ছয় মাস যেতে না-যেতেই দুই পক্ষে হলো চুক্তি।
২৯ জুনের এই চুক্তির পর বিবৃতিতে বলা হয়, অস্ত্র আসবে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে।
তবে তুরস্কে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত আর তুর্কি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বক্তব্য থেকে বাংলাদেশ কোন ধরনের অস্ত্র আনবে, সে বিষয়ে কিছু আভাস পাওয়া যায়।
তুরস্কে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মুসদ মান্নান গত ফেব্রুয়ারিতে তুর্কি সংবাদমাধ্যম আনাদুলু এজেন্সিকে দেয়া সাক্ষাৎকারে দেশটি থেকে ড্রোন প্রযুক্তি আমদানিতে ঢাকার আগ্রহের কথা জানান।
তিনি বলেন, ‘তুরস্কের ড্রোন বিশ্বমানের। প্রতিরক্ষা বাহিনীগুলোর প্রয়োজন অনুযায়ী আমরা ভবিষ্যতে আধুনিক সরঞ্জাম নেয়ার বিষয় বিবেচনা করতে পারি।’
সেনা প্রশিক্ষণেও বাংলাদেশের আগ্রহ আছে বলে জানান রাষ্ট্রদূত। তিনি বলেন, ‘তুরস্কের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে বাংলাদেশের সেনা, নৌ ও বিমানবাহিনীর সদস্যরা লাভবান হবেন।’
বাংলাদেশ চীন, ইতালি, রাশিয়া, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, সার্বিয়া, ইউক্রেন, যুক্তরাষ্ট্র এবং জার্মানিতে উৎপাদিত অস্ত্র ব্যবহার করে। সুইডেনভিত্তিক সিপরির দেয়া তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশ তুরস্কের কাছ থেকে বড় রেঞ্জের মিসাইল কিনছে।
টিআরজি থ্রি জিরো জিরো নামের মিসাইল সিস্টেমটি জুনের ২১ তারিখে বাংলাদেশে সরবরাহ করা হয় বলে তুরস্কের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক টুইট বার্তায় বলা হয়েছে।
২০১৯ সালেও বাংলাদেশ বিমানবাহিনী, নৌবাহিনীও মিসাইল সিস্টেম কিনেছে দেশটি থেকে।
ডিফেন্সিয়া ডট নামে সামরিক একটি ওয়েবসাইটের তথ্য বলছে, বাংলাদেশ তুরস্কের কাছ থেকে এয়ারক্রাফট, এরিয়াল ভেহিক্যাল, এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম, আর্মার্ড ভেহিক্যাল, অ্যাটাক হেলিকপ্টার, আর্টিলারি সিস্টেম, ইলেকট্রিক্যাল ওয়ারকেয়ার সিস্টেম, রেডিও কমিউনিকেশন সিস্টেম ক্রয়ের বিষয়ে আগ্রহ প্রকাশ করেছে।
গত ২৩ ডিসেম্বর ঢাকা সফরে এসে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেনের সঙ্গে বৈঠকের পর তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, তার দেশের তৈরি অস্ত্র মানসম্পন্ন এবং দামে কম। বাংলাদেশ এই অস্ত্র কিনে লাভবান হতে পারে। তিনি বাংলাদেশের কাছে অস্ত্র বিক্রির পাশাপাশি সামরিক খাতে বাংলাদেশকে যৌথ বিনিয়োগেরও প্রস্তাব দেন।
সেদিন বাংলাদেশের সঙ্গে সামরিক ও বাণিজ্যিক ক্ষেত্রে নতুন যুগের সূচনা চায় জানিয়ে তুর্কি মন্ত্রী বলেন, ‘তুরস্কের যুদ্ধাস্ত্র বিশ্বের অন্যতম সেরা, দাম কম, কোনো আগাম শর্ত নেই। আমি নিশ্চিত, বাংলাদেশ এ ক্ষেত্রে লাভবান হবে।’
এর পরই দেশটিতে বাংলাদেশি রাষ্ট্রদূত মুসদ মান্নান তুরস্ক থেকে উচ্চপ্রযুক্তির ড্রোনসহ অন্যান্য সামরিক সরঞ্জাম কিনতে ঢাকার আগ্রহ প্রকাশ করেন।
এরই মধ্যে গত ২৯ জুন আঙ্কারায় তুরস্কের সঙ্গে ‘উল্লেখযোগ্য’পরিমাণ সামরিক সরঞ্জাম কেনার চুক্তি করে বাংলাদেশ। ‘ফোর্সেস গোল ২০৩০’পূরণের অংশ হিসেবে গত ২৯ জুন আঙ্কারায় এ চুক্তি হয়।
অনুষ্ঠানে তুরস্কে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মুসদ মান্নান ও ডিফেন্স অ্যাটাশে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল রাশেদ ইকবালসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।
তুরস্কের অস্ত্রের ক্রেতা তুর্কমেনিস্তান, আজারবাইজান, কাজাখস্তান, সৌদি আরব, সংযুক্ত আবর আমিরাত, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া ও ফিলিপাইন। এ ছাড়া পাকিস্তান, আফগানিস্তান, ইয়েমেন, তিউনিসিয়াও।
তবে দেশটির অস্ত্রের সবচেয়ে বড় বাজার তুর্কমেনিস্তান ও আজারবাইজান। এর পরই মধ্যপ্রাচ্যের দেশ কাতার তুরস্ক থেকে বেশি অস্ত্র কিনে থাকে।
এই অস্ত্র কেনার বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল আবদুর রশীদ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমরা যদি কোনো সিঙ্গেল কান্ট্রি থেকে অস্ত্র কিনি, তাহলে যেকোনো সময়ই এতে বিপদ হতে পারে। একটা সোর্স থেকে কিনলে যেকোনো সময় যদি ওই সোর্স অসহযোগিতা করে, তাহলে বিপদে পড়তে হয়। অনেক সোর্স থেকে তা কিনলে একটি সোর্স বন্ধ হয়ে গেলেও অন্য সোর্স থেকে তা পাওয়ার সুযোগ থাকে। এ জন্য আমরা বিভিন্ন সোর্স তৈরি করছি। আমি বলব, এটা আমাদের দেশের জন্য ভালোই।’
তিনি মনে করেন, তুরস্কের অস্ত্র বাংলাদেশকে বলিয়ান করবে, বিশেষ করে মিয়ানমারের চাপ মোকাবিলায় ভূমিকা রাখবে।
তিনি বলেন, ‘তুরস্ক থেকে সম্প্রতি যে অস্ত্র আমাদের দেশে এসেছে, তার একটি হাইরেঞ্জের (দূরপাল্লার) রকেট লঞ্চার, যার রেঞ্জ সম্ভবত ১২০ মাইল, যা কখনোই আমাদের কাছে ছিল না। রোহিঙ্গা সমস্যা সৃষ্টি হওয়ার পরে মিয়ানমারের সঙ্গে আমাদের শক্তি প্রদর্শনের বিষয়টি সামনে চলে এসেছে। সে জন্য অস্ত্র কেনার সময় এ বিষয়টি মাথায় রেখেই সেনাবাহিনী তাদের অস্ত্র কিনবে। যাতে মিয়ানমারের কাছে যে অস্ত্র আছে, আমাদের অস্ত্র যেন কমপক্ষে তাদের সমান মানের বা ছাড়িয়ে যায়।’
আরেক সামরিক বিশ্লেষক মেজর জেনারেল (অব.) মোহাম্মদ আলি শিকদার বলেন, ‘তুরস্ক থেকে এই প্রথম আর্মস কেনা হচ্ছে, তা কিন্তু না। আশির দশকে আমরা যখন সেনাবাহিনীতে ছিলাম, তখনও কিন্তু তা কেনা হয়েছে, বিশেষ করে ভারী অস্ত্র; যাকে আমরা আর্টিলারি গান বলি। আমরা তা ব্যবহারও করেছি।
‘তুরস্ক কিন্তু ন্যাটোভুক্ত দেশ। তারা ইউরোপের অংশ। তাদের অস্ত্রের টেকনোলজির উৎস হলো ইউরোপ। অস্ত্রের কার্যকারিতা নির্ভর করে তার ব্যবহারের ওপর। তারা অস্ত্র উৎপাদনে বিশ্বব্যাপী উল্লেযোগ্য ও পরীক্ষিত।’
আবদুর রশীদের মতো তিনিও একাধিক দেশ থেকে অস্ত্র আনার পক্ষে। বলেন, ‘আমাদের অস্ত্রের সোর্সের ডাইভারসিফিকেশন থাকতে হবে। আমরা চায়নার ওপর নির্ভরশীল ছিলাম। তুরস্ক থেকে যে অস্ত্র আসছে, তা আমাদের জন্য বড় ধরনের সুযোগ। তুরস্ক নতুন সোর্স হিসেবে আমাদের জন্য ভালোই হবে।’
তুরস্ক কী সামরিক সরঞ্জাম তৈরি করে
গত এক দশকে তুরস্কের সামরিক শিল্প অনেকটাই এগিয়েছে। ২০২৩ সাল নাগাদ সামরিক খাত থেকে ২৬ দশমিক ৯ বিলিয়ন ডলার আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে।
দেশটি রস্ক ড্রোন, রকেট লাঞ্চার, স্বল্প পাল্লার মিসাইল, সাঁজোয়া যান, হেলিকপ্টার, ট্যাংক ইত্যাদি উৎপাদন করছে। তাদের টি-ওয়ান টু নাইন হেলিকপ্টার একসঙ্গে আটটি অ্যান্টিট্যাংক মিসাইল, ১২টি নিয়ন্ত্রিত নিক্ষেপণযোগ্য রকেট ও অটোমেটিক গানের জন্য ৫০০টি গুলি বহন করতে পারে।
এই হেলিকপ্টার প্রচণ্ড গরম ও ঠাণ্ডায় বিরূপ পরিবেশে রাতের আঁধার বা দিনের আলোতে ভূমি থেকে অনেক উচ্চতায় অভিযান পরিচালনা করতে সক্ষম বলে গত ডিসেম্বরে ‘বিবিসি বাংলা’র এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। টি-ওয়ান ফাইভ ফাইভ ফিরটিনা মিসাইল ৩০ সেকেন্ডের মধ্যে ৪০ কিলোমিটার দূরের লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে পারে।
বাংলাদেশের সঙ্গে তুরস্কের অস্ত্র বিক্রির চুক্তি এখনো আলোচনার পর্যায়ে আছে। তুরস্ক মূলত সামরিক ড্রোন, রকেট লঞ্চার, মিসাইল, হেলিকপ্টার, সাঁজোয়া যান, যুদ্ধজাহাজ ও ট্যাংক বিক্রি করতে চাইছে।
কতটা কার্যকর তুর্কি সামরিক সরঞ্জাম
‘বিবিসি বাংলা’র ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, সম্প্রতি তুর্কি সমরাস্ত্রের বড় ধরনের ব্যবহার হয়েছে সিরিয়া ও নাগারনো কারাবাখের যুদ্ধে। তুরস্ক সিরিয়ার যুদ্ধে অপারেশন অলিভ ব্রাঞ্চে কুর্দিদের বিরুদ্ধে নিজস্ব সমরাস্ত্র ব্যবহার করে সফল হয়েছে। নাগারনো কারাবাখের যুদ্ধে আজারবাইজান তুরস্কের সরবরাহ করা ড্রোন ব্যবহার করে ফরাসি সহায়তাপুষ্ট আর্মেনিয়াকে পরাজিত করেছে।
তুরস্কের মধ্যাঞ্চলে অবস্থিত কিরিক্কিল প্রদেশে গড়ে উঠেছে তুর্কি সামরিক শিল্প। এখানে আছে মেকানিক্যাল অ্যান্ড কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রি করপোরেশন বা এমকেইকে। এই করপোরেশন বেশ কয়টি অস্ত্র কারখানা পরিচালনা করে। এই নগরীতেই ২০১৪ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় তুরস্কের প্রথম বিশেষায়িত বাণিজ্যিক এলাকা ওআইজেড, যেখানে কেবল অস্ত্র কারখানাই থাকবে।
১৯৮০-এর দশকে বেশ কয়েকটি ন্যাটো সদস্যদেশ যুক্তরাষ্ট্রের ওপর নির্ভরতা কমিয়ে নিজেরাই সমরাস্ত্র তৈরির উদ্যোগ নেয়। তুরস্ক তার একটি। প্রতিরক্ষা খাতে বিদেশনির্ভরতা কমিয়ে তারা দেশেই প্রয়োজনীয় প্রতিরক্ষা সামগ্রী উৎপাদনের বিশাল পরিকল্পনা নিয়ে কাজ শুরু করে।
২০০৩ সালে একে পার্টি ক্ষমতায় আসার পর এই খাতে আরো বেশি গুরুত্ব দেয় দেশটি। শুরুতে সাঁজোয়া যান দিয়ে শুরু করলেও এখন ট্যাংক, মিসাইল, রকেট লঞ্চার, ড্রোন সবকিছুই তৈরি হচ্ছে তুরস্কের বিভিন্ন শিল্পপ্রতিষ্ঠানে।
স্থলযুদ্ধের বিভিন্ন উপকরণ নির্মাণ দিয়ে শুরুর পর যুদ্ধজাহাজ, অ্যাটাক হেলিকপ্টার এমনকি সর্বাধুনিক ফাইটার জেটও নির্মাণ করছে তারা। পাশাপাশি ইলেকট্রনিক ওয়ারফেয়ারের বিভিন্ন প্রযুক্তিও উৎপাদন করছে দেশটি। ২০২০ সালের শেষ দিকে এসে দেশটির দুটি প্রতিষ্ঠান যৌথভাবে টর্পেডো উৎপাদনের ঘোষণাও দিয়েছে। হেলিকপ্টার ড্রোন, মনুষ্যবিহীন নৌযানেরও সফল পরীক্ষা চালিয়েছে। বর্তমানে তারা মনোযোগ দিয়েছে মনুষ্যবিহীন সাঁজোয়া যান, আন্ডারগ্রাউন্ড অ্যান্ড টানেল ওয়ারফেয়ার উইপন্স এবং ট্যাংকবিধ্বংসী অস্ত্র উৎপাদনে।
আরও পড়ুন:মিয়ানমারের অভ্যন্তরে চলমান সংঘাতের জের ধরে প্রতিবেশী দেশটির সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিপির আরও ১৩ জন সদস্য বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে।
তারা বৃহস্পতিবার টেকনাফের নাফ নদীতে বাংলাদেশ কোস্টগার্ডের কাছে আত্মসমর্পণ করে বলে জানান বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবির) জনসংযোগ কর্মকর্তা শরিফুল ইসলাম।
তিনি জানান, পরবর্তীতে কোস্টগার্ড উক্ত বিজিপি সদস্যদেরকে বিজিবির নাইক্ষ্যংছড়ি ব্যাটালিয়নের (১১ বিজিবি) কাছে হস্তান্তর করে। বর্তমানে বিজিপির মোট ২৭৪ জন সদস্য বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। তাদের মধ্যে বুধবার একজন ও আগের দিন আসা ৪৬ জন রয়েছে।
অভ্যন্তরীণ সংঘাতের মুখে বুধবার বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তপথে বিজিপির এক সদস্য বাংলাদেশে আশ্রয় নেন। মঙ্গলবার সীমান্ত পাড়ি দিয়ে এপারে চলে আসেন আরও ৪৬ জন বিজিপি সদস্য। বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ-বিজিবি তাদের সবাইকে হেফাজতে নিয়েছে।
আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ও স্থানীয়রা জানায়, মিয়ানমারের অভ্যন্তরে জান্তা বাহিনীর সঙ্গে আরাকান বিদ্রোহীদের গোলাযোগ চলছে৷ মঙ্গলবার রাতেও সীমান্তের ওপারে ব্যাপক গোলাগুলির শব্দ শোনা গেছে। সংঘাতে আরাকান বিদ্রোহীদের সঙ্গে টিকতে না পেরে প্রাণ বাঁচাতে পালিয়ে বাংলাদেশ আশ্রয় নিচ্ছে মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষীরা।
রাজধানীর পশ্চিম ভাষানটেকে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণের ঘটনায় দগ্ধ এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ৪ জনে।
ছয় বছর বয়সী লামিয়া শুক্রবার সকাল সাড়ে ৬টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) মারা যায়।
এর আগে ১২ তারিখ ভোর চারটার দিকে ভাষানটেকে সিলিন্ডার বিস্ফোরণে আগুনে দগ্ধ হন একই পরিবারের ছয়জন। পরে তাদের শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের ভর্তি করানো হয়।
ওই দিন দগ্ধ হয়েছিলেন মেহেরুন্নেসা (৬৫), সূর্যবানু (৩০), লিজা আক্তার (১৮), লামিয়া (৭), সুজন (৮), মোহাম্মদ লিটন (৫২)।
দগ্ধদের বাড়ির কেয়ারটেকার মো. সিফাত জানিয়েছিলেন, মশার কয়েল জ্বালাতে গেলে ঘরের মধ্যে থাকা গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণ ঘটে, এতে একই পরিবারের ছয়জন দগ্ধ হন।
ঘটনার পরদিন শনিবার শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে মারা যান দগ্ধ ৬৫ বছর বয়সী মেহেরুন্নেছা। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সোমবার রাত সোয়া সাতটার দিকে মারা যান লিটনের স্ত্রী সূর্যবানু। মঙ্গলবার সকাল ৬টার দিকে মারা যান লিটন।
বতর্মানে চিকিৎসাধীন রয়েছেন প্রাণ হারানো লিটন ও সূর্য বানুর দুই সন্তান লিজা (১৮), ও সুজন (৮)।
শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের আবাসিক চিকিৎসক তরিকুল ইসলাম বলেন, ‘মিরপুরের ভাষানটেকে সিলিন্ডার বিস্ফোরণের ঘটনায় ছয়জন বার্ন ইনস্টিটিউটে এসেছিল। আজ সকালের দিকে লামিয়া নামে এক শিশু মারা যায়। তার শরীরে ৫৫ শতাংশ দগ্ধ ছিল।’
তিনি জানান, বর্তমানে চিকিৎসাধীন দুইজনের অবস্থাও আশঙ্কাজনক।
আরও পড়ুন:চলমান তাপপ্রবাহে চাঁপাইনবাবগঞ্জের প্রধান অর্থকরী ফসল আমের গুটি ঝরে পড়া নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন আম বাগান মালিক ও ব্যবসায়ীরা। এমনিতেই এ বছর মুকুল এসেছিল কম, গাছে যে কয়টা আমের গুটি টিকে আছে, তাপদাহের প্রভাবে সেগুলোর বৃদ্ধিও ঠিকমত হচ্ছে না বলে দাবি বাগান মালিকদের। এরই মধ্যে রোদের তাপে শুকিয়ে সেগুলো ঝরে পড়তে শুরু করেছে।
আমের গুটি যাতে শুকিয়ে না যায়, তার জন্য বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ হচ্ছে, তাপদাহ থেকে আমের গুটি বাঁচাতে গাছের গোড়ায় নিয়মিত পানি সেচ দিতে হবে; প্রয়োজনে গাছে পানি স্প্রে করার পরামর্শও তাদের।
‘আমের রাজধানী’ খ্যাত চাঁপাইনবাবগঞ্জে এবার কিছুটা দেরিতেই এসেছিল মুকুল। পরিমাণেও ছিল অন্য বছরের তুলনায় বেশ কম। তারপরও শুরু থেকেই বাড়তি যত্নে বাগানগুলোতে মুকুল থেকে আস্তে আস্তে বড় হচ্ছে আম। তবে কয়েক দিনের তীব্র তাপপ্রবাহ ভীষণ শঙ্কায় ফেলেছে বাগান মালিক ও ব্যবসায়ীদের। গাছে থাকা আমের গুটির বৃদ্ধি ও টিকে থাকা নিয়ে তারা পড়েছেন দুশ্চিন্তায়।
জেলার মহারাজপুর এলাকার আম বাগান মালিক রাজন ইসলাম বলেন, ‘খরার কারণে আমের গুটির বড় হচ্ছে না, বোটা শুকিয়ে ঝরে পড়ছে। আকাশের পানি না হলে হয়? সেচ দিয়াও খুব বেশি কাজ হচ্ছে না, শ্যালো (সেচ পাম্প) যতক্ষণ চলছে ততক্ষন পানি থাকছে। বন্ধ করলেই সব তিলিকে (দ্রুত) শুষে লিছে (নিচ্ছে)।’
আম সংগঠনের নেতারাও বলছেন একই কথা। এ বছরের শুরু থেকেই বৈরী আবহাওয়ার কারণে তারা আমের কাঙ্ক্ষিত ফলন নিয়ে দুশ্চিন্তায় ছিলেন। চলমান তাপপ্রবাহ তাদের সেই দুশ্চিন্তাকে আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জের আম ফাউন্ডেশনের সদস্য সচিব আহসান হাবিব নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এমনিতেই এ বছর শীতের কারণে মুকুল আসতে দেরি হয়েছে, তার ওপর মার্চ মাসে অসময়ের বৃষ্টিতে একবার মুকুল ঝরে যায়।
‘তখন বৃষ্টির দরকার ছিলো না, তাই বৃষ্টির কারণে মুকুলের ক্ষতি হয়েছিল, আর এখন বৃষ্টির অভাবে গাছে যে কয়টা আমের গুটি ছিল, তাও ঝরে যাচ্ছে। তাপপ্রবাহ আরও কিছুদিন চললে ব্যবসায়ীদের আরও ক্ষতির মুখে পড়তে হবে।’
তিনি বলেন, ‘এমনিতেই এ বছর আম উৎপাদনের খরচ সব ক্ষেত্রেই বেড়ে গেছে। আবার এখন সেচ দেয়ার জন্য অনেকের খরচ আরও বাড়ছে। সবমিলিয়ে এ বছর খুব বেশি স্বস্তিতে নেই আম বাগান মালিক ও ব্যবসায়ীরা। অনেকেই আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়ছেন।’
তবে এখনই আশাহত না হয়ে বাগানের সঠিক পরিচর্যা চালিয়ে যাওয়া ও তাপপ্রবাহ যতদিন চলবে ততদিন পর্যন্ত বাগানে সেচ দেয়া, তাপমাত্রা আরও বাড়লে সকালে বা বিকেলে গাছে সরাসারি পানি স্প্রে করার পরামর্শ দিয়েছেন চাঁপাইনবাবগঞ্জ আঞ্চলিক উদ্যানতত্ত্ব গবেষণা কেন্দ্রের মূখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মো. মোখলেসুর রহমান।
বাগান মালিকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘চাঁপাইনবাবগঞ্জের বড় গাছগুলোতে এবার মুকুল কম এসেছে, তবে ছোট গাছে ভালো মুকুল আছে। সঠিকভাবে পরিচর্যা করা গেলে কৃষি বিভাগ যে সাড়ে চার লাখ টন আমের উৎপাদন লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করেছে, তার কাছাকাছি অন্তত যাওয়া যাবে বলে আশা করছি আমরা।’
আরও পড়ুন:ঢাকার সাভারে তালাবদ্ধ একটি ফার্নিচারের গোডাউনে জমে থাকা গ্যাস বিস্ফোরণে দগ্ধ হয়েছেন তিনজন।
আশুলিয়ার কুরগাঁও আমতলা এলাকার মো. শামসুদ্দি্নের বাড়িতে বৃহস্পতিবার বিকেলে এ ঘটনা ঘটে।
দগ্ধ তিনজনকে ঢাকার শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়েছে।
দগ্ধ দুজনের পরিচয় পাওয়া গেছে, যারা হলেন গোডাউনের ম্যানেজার মো. সুমন (৩০) ও প্রতিবেশী ভাড়াটিয়া বৃদ্ধা মাজেদা বেগম (৫৫)। দগ্ধ আরেকজন ফার্নিচার কিনতে আসা ক্রেতা, যার বিস্তারিত পরিচয় জানা সম্ভব হয়নি।
জিরাবো মডার্ন ফায়ার সার্ভিসের সিনিয়র স্টেশন অফিসার আবু সায়েম মাসুম বলেন, ‘(বৃহস্পতিবার) বিকেলে আমরা বিস্ফোরণের খবর পেয়ে ওখানে গিয়ে দেখি, ততক্ষণে স্থানীয়রা আগুন নিভিয়ে ফেলেছে। মূলত একটি আবাসিক ভবনে একটি ফার্নিচারের গোডাউন ভাড়া দিয়েছিল মালিক। বিকেলে ওই গোডাউন খুলে একজন ক্রেতাকে ফার্নিচার দেখাতে নিয়ে যান দোকানের ম্যানেজার সুমন।
‘এ সময় কোনোভাবে আগুনের স্পর্শে গোডাউনের মধ্যে বিস্ফোরণে আগুন ধরে যায়। তখন গোডাউনে থাকা দুইজনকে দেখতে গিয়ে প্রতিবেশী ভাড়াটিয়া এক বৃদ্ধা দগ্ধ হয়েছেন। পরে তাদের ঢাকার শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটে পাঠানো হয়।’
বিস্ফোরণের কারণ জানতে চাইলে ফায়ার সার্ভিসের এ কর্মকর্তা বলেন, ‘ঈদের আগে থেকে ফার্নিচারের গুদামটি বন্ধ থাকায় ভেতরে গ্যাস জমেছিল। ওই কক্ষে তিতাসের আবাসিক সংযোগসহ রান্নার চুলাও ছিল। সম্ভবত ওই গ্যাস লাইনের লিকেজ থেকে জমা গ্যাসে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে।’
আরও পড়ুন:ঝালকাঠির গাবখান সেতুর টোল প্লাজায় বুধবার দুপুরে সিমেন্টবাহী ট্রাকের চাপায় ১৪ জন নিহত হন। ওই সময় সড়কের পাশে বসে ভিক্ষা করছিলেন ৪৫ বছর বয়সী শারীরিক প্রতিবন্ধী শহিদুল ইসলাম। এ দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান তিনিও।
শহিদুলের বাড়িতে বৃহস্পতিবার বিকেলে গিয়ে দেখা যায়, তার মানসিক প্রতিবন্ধী স্ত্রী হেনারা বেগম স্বামী হারানোর শোকে কাতর। দুই বছর বয়সী মেয়েকে কোলে নিয়ে বিলাপ করে বলছেন, ‘আমার মাইয়ারে এতিম কইরা আমার স্বামী মইরা গ্যাছে। ওষুধের দোকানে টাকা পাইবে, আমি হেই টাকা কেমনে দিমু। আমি কী খামু, কেমনে মনুরে খাওয়ামু।’
কিছুক্ষণ পরেই আবার ভুলে যাচ্ছেন স্বামীর মৃত্যুর কথা।
শহীদুলের পরিবার সূত্রে জানা যায়, জন্ম থেকে দুটি পা অচল থাকায় কোনো কাজ করতে পারতেন না শহিদুল। ৮ বছর বয়স থেকে ঝালকাঠির গাবখান ফেরিঘাটে ভিক্ষা করা শুরু করেন তিনি। বছর দশেক আগে ঝালকাঠি সদর উপজেলার নেছারাবাদ গ্রামের শ্রমিক আশ্রাফ আলির মানসিক প্রতিবন্ধী মেয়ে হেনারাকে বিয়ে করে শহিদুল সংসার জীবন শুরু করেন।
শহীদুলের ভাইয়েরা জানান, সরকার থেকে পাওয়া প্রতিবন্ধী ভাতা এবং ভিক্ষা করে যে টাকা আয় হতো তা দিয়েই কোনোরকম চলতো শহিদুলের। তিন ভাইয়ের মধ্যে শহিদুল বড়। বাকি দুই ছোট ভাই সাইদুল খান এবং সাদ্দাম খান পৃথক সংসার করেন। তারা দুজনেই গাবখান সেতুর টোল প্লাজার কর্মী হিসেবে কাজ করেন।
গাবখান সেতুর টোল প্লাজার পাশে বসে অন্যদিনের মতো বুধবার ভিক্ষা করছিলেন শহিদুল। দুপুর পৌনে দুইটায় নিয়তির কাছে হেরে যান তিনি। সিমেন্ট বোঝাই একটি ট্রাক চাপা দেয় শহিদুলকে। আহত অবস্থায় তাকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে ঘণ্টাখানেক পর তার মৃত্যু হয়।
ছোট ভাই সাদ্দাম বলেন, ‘আমি বুধবার টোলের ডিউটি শেষ করে দুপুরে বাড়ি এসে গোসলে যাই। হঠাৎ বিকট শব্দ শুনতে পাই। দৌড় দিয়ে টোলের সামনে গিয়ে দেখি, আমার ভাই ট্র্রাকের নিচে চাপা পড়ে আছে। স্থানীয়রা তাকে ট্রাকের নিচ থেকে বের করার চেষ্টা চালাচ্ছে। পরে তাকে উদ্ধার করে বরিশাল শেবাচিমে নিয়ে গেলে ডাক্তাররা চিকিৎসার চালায়। কিছুক্ষণ পরেই ভাই আমাদের ছেড়ে চলে যায়।’
আরও পড়ুন:স্মরণকালের রেকর্ড বৃষ্টিপাতে নজিরবিহীন বন্যা দেখা দিয়েছে সংযুক্ত আরব আমিরাতের (ইউএই) দুবাই শহরে, তবে এ বৃষ্টিতে শহরটিতে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশিদের তেমন ক্ষতি হয়নি বলে জানিয়েছেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী শফিকুর রহমান চৌধুরী।
কুশিয়ারা ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সেন্টারে বৃহস্পতিবার দুপুরে সিলেট ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির তৃতীয় সমাবর্তন অনুষ্ঠানে এক প্রশ্নের জবাবে সাংবাদিকদের কাছে তিনি এ মন্তব্য করেন।
প্রতিমন্ত্রী শফিকুর রহমান চৌধুরী আরও বলেন, ‘আমরা আরব আমিরাতের সঙ্গে সবসময় যোগাযোগ রাখছি। এখন পর্যন্ত বন্যায় বাংলাদেশি প্রবাসীদের বড় কোনো ক্ষতি হওয়ার খবর পাইনি।’
ইসরাইলে ইরানের হামলায় মধ্যপ্রাচ্যে নতুন করে অস্থিরতা দেখা দেয়ার প্রসঙ্গে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘যুদ্ধ বাধলে তো সবারই ক্ষতি। তার প্রভাব আমাদের ওপরও পড়বে, তবে এখন পর্যন্ত এর কোনো প্রভাব পড়েনি।’
সমাবর্তন উৎসবে সভাপতির বক্তব্যে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী শফিকুর রহমান চৌধুরী শিক্ষার্থীদের আগামীর স্মার্ট বাংলাদেশের যোগ্য নাগরিক হয়ে গড়ে উঠতে প্রযুক্তিগত জ্ঞান অর্জনের পাশাপাশি মানবিক মানুষ হয়ে গড়ে উঠার আহ্বান জানান।
এতে সমাবর্তন বক্তা হিসেবে বক্তৃতা করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের সাবেক অধ্যাপক, বরেণ্য ইতিহাসবিদ, লেখক এবং বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালসের বঙ্গবন্ধু চেয়ার প্রফেসর ডক্টর সৈয়দ আনোয়ার হোসেন। বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ অ্যাক্রেডিটেশন কাউন্সিলের চেয়ারম্যান প্রফেসর ডক্টর মেসবাহ উদ্দিন আহমদ এবং ইউজিসির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান প্রফেসর ডক্টর মোহাম্মদ আলমগীর।
এ ছাড়াও সম্মানিত অতিথি ছিলেন সিলেট ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি ট্রাস্টের প্রধান উপদেষ্টা এমপি শফিউল আলম চৌধুরী এবং ট্রাস্টের চেয়ারপারসন (অতিরিক্ত দায়িত্ব) শামীম আহমদ। সমাবর্তন উৎসব শুরু হয় মহান জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মাধ্যমে।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. আশরাফুল আলম এবং ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ প্রফেসর নিতাই চন্দ্র চন্দ।
সভাপতির বক্তব্যে শফিকুর রহমান চৌধুরী বলেন, ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ গড়ার সংগ্রামে সন্ধিৎসু ও দেশপ্রেমিক শিক্ষার্থীর ভূমিকা অনস্বীকার্য।
তিনি আরও বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়গুলো থেকে মানসম্মত ধীমান শিক্ষার্থী সৃষ্টির লক্ষ্যে শিক্ষা, গবেষণা, উদ্ভাবনসহ নানান নিরীক্ষাধর্মী কর্মযজ্ঞে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সম্পৃক্ত করার কোনো বিকল্প থাকতে পারে না। সিলেট ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর স্মার্ট বাংলাদেশের লক্ষ্য পূরণে মানবসম্পদ সৃষ্টির মাধ্যমে এ মহাযজ্ঞে কৃতিত্বের ছাপ রাখবে।’
সমাবর্তনে ফল ২০০৯ থেকে স্প্রিং ২০২১ পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচটি বিভাগের মোট ৬ হাজার ৭২৩ জন শিক্ষার্থী গ্র্যাজুয়েট সনদ অর্জন করেন। এ ছাড়াও চ্যান্সেলর, ভাইস চ্যান্সেলর, চেয়ারম্যান, ডিন এবং স্পেশাল অ্যাপ্রিসিয়েশন অ্যাওয়ার্ড ক্যাটাগরিতে মোট ৩৪ জন শিক্ষার্থীকে এ অনুষ্ঠানে পদক প্রদান করা হয়।
নেত্রকোণার মোহনগঞ্জে পারিবারিক গাছ থেকে পাড়া নারকেল নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে কয়েক দফা সংঘর্ষে নারীসহ আটজন আহত হয়েছেন।
তাদের মধ্যে সেলিম মিয়া নামে গুরুতর আহত একজনকে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। অন্যরা স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি আছেন।
এ ঘটনায় দায়ের করা মামলায় সেলিম মিয়ার ভাই মজনু মিয়াকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
মোহনগঞ্জ থানার ওসি মো. দেলোয়ার হোসেন বৃহস্পতিবার দুপুরের দিকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি জানান, পৌর শহরের টেংগাপাড়া এলাকায় বুধবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে ও বৃহস্পতিবার সকালে দুই দফা সংঘর্ষে আটজন আহত হন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বুধবার বিকেলে নিজেদের পারিবারিক গাছ থেকে নারকেল পাড়েন সেলিম। সেই নারকেল অপর তিন ভাই মজনু মিয়া, ফজলুর রহমান ও আজিজুল হকের বাসায় ভাগ করে দেন, তবে ভাগ কম বেশি হওয়ায় কারণে ভাতিজারা সেলিমের সঙ্গে তর্কাতর্কি শুরু করেন। একপর্যায়ে সেলিমকে তারা মারধর করে সামান্য আহত করেন।
এ ঘটনায় ওই রাতে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। পরদিন সকালে সেলিম দোকানে গেলে তার হাতে ও পিঠে ক্ষুরের আঘাতে গুরুতর জখম করে প্রতিপক্ষের লোকজন।
আহত সেলিমের পক্ষের লোকজন জানায়, অপর তিন ভাই ও ভাতিজারা মিলে সেলিম ও তার শ্বশুর-শ্বাশুড়ির ও শ্যালিকার ওপর হামলা চালান।
এদিকে সেলিমের বড় ভাই ফজলুর রহমান বলেন, ‘প্রথমে নারকেল নিয়ে ভাতিজারা সেলিমকে কিছুটা হেনস্তা করে। আমরা রাতে বিষয়টা সমাধান করব ভেবেছি, কিন্তু রাতে বড়কাশিয়া থেকে সেলিমের আত্মীয়রা এসে বাড়িতে ঢুকে নারী-পুরুষ সবাইকে ক্ষুর ও রামদা দিয়ে কোপানো শুরু করে। এতে আমাদের পক্ষের চারজন গুরুতর আহত হয়। ক্ষুরের আঘাতে রাজিমুলের পেট বের হয়ে গেছে। হাত কেটেছে একজনের।
‘নিজেদের লোকজনের এমন রক্তাক্ত অবস্থা দেখে আমাদের ঘরের ছেলেরা উত্তেজিত হয়ে মারধর করতে গেলে তারা ঘরের দরজা লাগিয়ে ফেলে। সেলিম ছাড়া অন্যদের মারধরের ঘটনা সাজানো। এ ঘটনায় আমাদের পক্ষ থেকেও মামলার আবেদন করা হচ্ছে।’
এদিকে রাতের ঘটনায় সেলিম মিয়া বাদী হয়ে মজনু মিয়াসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করেন। পরে সকালে মজনু মিয়াকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে নেত্রকোণা জেলার মোহনগঞ্জ থানার ওসি মো. দেলোয়ার হোসেন জানান, এ ঘটনায় থানায় দায়ের করা মামলায় মজনু মিয়া নামে একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য