ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেননি। তবুও মেধা তালিকায় ১২তম স্থান অর্জন করেন এক শিক্ষার্থী।
জালিয়াতির মাধ্যমে মেধা তালিকায় স্থান করে নেয়ার বিষয়টি ধরে ফেলেন গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের একজন শিক্ষক। বিষয়টি গণমাধ্যমে আসার পর ওই অভিযুক্ত শিক্ষার্থী আর ভর্তি হতে আসেননি। তবে বিষয়টি কেন গণমাধ্যমে এলো তা নিয়ে ওই শিক্ষককে বিভাগীয় শাস্তি দিতে তৎপর হয়েছে কর্তপক্ষ। ঘটনাটি কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের।
ভুক্তভোগী ওই শিক্ষক গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মাহবুবুল হক ভূঁইয়া। তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়ার সুপারিশ করেছে সিন্ডিকেট।
তবে যাদের গাফিলতির কারণে ভর্তি পরীক্ষা ছাড়াই মেধা তালিকায় এক শিক্ষার্থী ১২তম হয়েছে তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। যার ফলে বিষয়টি এখন টক অব দ্য কান্ট্রিতে পরিণত হয়েছে।
এর মধ্যে আইন ও সালিশ কেন্দ্রসহ (আসক) বেশ কয়েকটি মানবাধিকার প্রতিষ্ঠান ওই শিক্ষকের পক্ষে দাঁড়িয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের তদন্ত কমিটির সূত্র জানায়, ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের বি ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় আবেদন করেন এক শিক্ষার্থী। তবে আবেদন করলেও ওই শিক্ষার্থী পরীক্ষায় উপস্থিত হননি। ফল প্রকাশের পর দেখা যায়, পরীক্ষা না দিয়েও ওই শিক্ষার্থী মেধা তালিকায় ১২তম স্থান অধিকার করেছেন।
এই অসঙ্গতির বিষয়টি বি-ইউনিট কমিটিকে জানান প্রবেশপত্র বাছাই কমিটির সদস্য সচিব মাহবুবুল হক ভূঁইয়া। পরে গণমাধ্যমে ঘটনাটি ভালোভাবেই প্রচার হয়।
এ ব্যাপারে দুটি তদন্ত কমিটি করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন—কাদের গাফিলতির কারণে এমন ঘটনা ঘটলো এবং গণমাধ্যমে ঘটনাটি কীভাবে এলো।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষক জানান, ‘চারটি ধাপের পরে একজন শিক্ষার্থীকে ভর্তি পরীক্ষার ভাইবার জন্য ডাকা হয়। প্রথম ধাপে ভুল হলে অবশ্যই দ্বিতীয় ধাপে ধরা পড়বে। নয়তো তৃতীয় কিংবা চতুর্থ ধাপে। কোনো ধাপেই যখন একজন শিক্ষার্থীর পরীক্ষা না দেয়ার বিষয়টি ধরা পড়ল না তখন এখানে জালিয়াতির আশ্রয় ছাড়া অন্য কোন কাকতালীয় বিষয় হতে পারে না।’
এমন ঘটনার পরই বিভিন্ন গণমাধ্যমে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে পরীক্ষা না দিয়ে মেধা তালিকায় ১২তম হওয়ার বিষয় নিয়ে খবর প্রচার হয়।
এর ফলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কে এই ঘটনা গণমাধ্যমকে জানিয়েছে তা বের করার জন্য একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। যেখানে প্রথম তদন্ত কমিটি এ ঘটনা গণমাধ্যমে প্রকাশ হওয়ার ক্ষেত্রে মাহবুবুল হক ভূঁইয়া জড়িত থাকার কোনো প্রমাণ পায়নি।
পরে বিশ্বদ্যিালয় থেকে উচ্চতর তদন্ত কমিটি গঠন করে। দ্বিতীয় তদন্ত কমিটি সাংবাদিকের সঙ্গে ফোনালাপ এবং গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে মাহবুবুল হককে দায়ী করে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়।
এই প্রতিবেদনের ভিত্তিতে মাহবুবুল হক ভূঁইয়ার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়ার সুপারিশ করে বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেট।
তিন সদস্য বিশিষ্ট উচ্চতর দ্বিতীয় তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক ড. আসাদুজ্জামান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ভর্তি পরীক্ষায় অংশ না নিয়েও একজন শিক্ষার্থীর ১২তম হওয়ার বিষয়টিতে দায়িত্বে গাফিলতি ধরা পড়েছে।’
‘কোনভাবেই ভর্তি পরীক্ষার কমিটি এ দায় এড়িয়ে যেতে পারে না। পাশাপাশি একজন শিক্ষার্থীর একটি বিষয় বিচ্ছিন্ন বা কাকতালীয় হতে পারে। সেক্ষেত্রে ওই একজনের বিষয়টা যদি গণমাধ্যমে ভর্তি জালিয়াতি হিসেবে ঢালাওভাবে প্রচার হয় সেটাও ঠিক না। তাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনাম ক্ষুন্ন হয়। আমার তদন্ত কমিটি দুইটা বিষয়কে প্রাধান্য দিয়ে তদন্ত করেছি। একটা হচ্ছে কাদের গাফিলতির কারণে একজন শিক্ষার্থী ভর্তি পরীক্ষা ছাড়া ১২তম হলো? আর এই একটা ঘটনাকে কেন্দ্র করে কারা গণমাধ্যমে ভর্তি পরীক্ষাকে জালিয়াতি উল্লেখ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনাম নষ্ট করার চেষ্টা করেছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘সেক্ষত্রে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক মাহবুবল হক ভুঁইয়ার সম্পৃক্ততার প্রমাণ পাওয়া গেছে। আমরা তদন্ত রিপোর্ট পেশ করেছি বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেটের কাছে। সেখানে কিছু সুপারিশ উল্লেখ করেছি। দুইটি বিষয়কে কীভাবে সমাধান করে ভবিষ্যতের জন্য আরও সর্তক থাকা যায় তাও তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছি।’
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মাহবুবুল হক ভূঁইয়া নিউজবাংলাকে জানান, ‘গণমাধ্যমে খবরটির আসার সঙ্গে আমি জড়িত নই। এ বিষয়ে আমি সংবাদ সম্মেলন করে বিস্তারিত জানিয়েছি। তদন্ত কমিটিও প্রমাণ করতে পারেনি আমার জড়িত থাকার বিষয়টি। তবুও শুনেছি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আমার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।’
বিষয়টি উপাচার্যকে জানানো হয়েছে কিনা জানতে চাইলে মাহবুবুল হক ভুইয়া বলেন, ‘আমি ও আমার সহকর্মীরা ভিসি স্যারের কাছে সব জানিয়েছি।’
এ ব্যাপারে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. এমরান কবির চৌধুরী বলেন, ‘আসলে শিক্ষককে বিভাগীয় শাস্তি দেয়া বা জালিয়াতির মাধ্যমে শিক্ষার্থীকে মেধা তালিকায় স্থান দেয়ার বিষয়গুলো ঠিক না।’
‘প্রথমে বলব, একজন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ না নিয়ে মেধা তালিকায় এলে তা থেকে অবশ্যই দায়িত্ব অবহেলার বিষয়টি সামনে আসে। দ্বিতীয়ত গণমাধ্যমে বিষয়টিকে যেভাবে রটানো হয়েছে তাও ঠিক হয়নি। আমরা একটা প্রসেসের মাধ্যমে এগিয়ে যাচ্ছি। এখানে নিরপক্ষ তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। তারা বিভিন্ন বিষয় সুপারিশ করেছেন। আমি বলব, কারো প্রতি অন্যায় করা হবে না। তবে আমরা শেষটা এমনভাবে করতে চাই যেন ভবিষ্যতে কেউ দায়িত্ব অবহেলা কিংবা বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনাম নষ্ট হয় এমন কোন কাজ না করেন। সুন্দর সমাধানই আমাদের লক্ষ্য।’
আরও পড়ুন:চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইয়াহ্ইয়া আখতার। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে বুধবার এই নিয়োগ দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সরকারি সাধারণ বিশ্ববিদ্যালয় শাখার উপসচিব মো. শাহীনুর ইসলাম স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে এই নিয়োগ দেয়া হয়।
উপাচার্য নিয়োগের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের (ভারপ্রাপ্ত) রেজিস্ট্রার কে এম নূর আহমদ ও উপ-সচিব মো. শাহীনুর ইসলাম। উপসচিব বলেন, ‘অধ্যাপক ইয়াহ্ইয়া আখতারকে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য পদে সাময়িকভাবে নিয়োগ দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।’
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, রাষ্ট্রপতি ও চ্যান্সেলরের অনুমোদনক্রমে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় আইন ১৯৭৩ এর ১২(২) ধারা অনুযায়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইয়াহইয়া আখতারকে বিশ্ববিদ্যালয়ে সাময়িকভাবে উপাচার্য পদে পাঁচ শর্তে নিয়োগ প্রদান করা হলো।
শর্তগুলো হলো- উপাচার্য পদে এই নিয়োগ যোগদানের তারিখ থেকে কার্যকর হবে; উপর্যুক্ত পদে তিনি তার অবসর অব্যবহিত পূর্ব পদের সমপরিমাণ বেতন-ভাতাদি প্রাপ্য হবেন; তিনি বিধি অনুযায়ী পদসংশ্লিষ্ট অন্য সুবিধা ভোগ করবেন; বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে তিনি সার্বক্ষণিকভাবে ক্যাম্পাসে অবস্থান করবেন এবং রাষ্ট্রপতি ও চ্যান্সেলর প্রয়োজনে যে কোনো সময় এ নিয়োগ বাতিল করতে পারবেন।
প্রফেসর ড. ইয়াহ্ইয়া আখতার ১৯৮২ সাল থেকে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে রাজনীতি বিজ্ঞান বিভাগে শিক্ষকতা করছেন। তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিষয়ে বিএ অনার্স এবং এমএ, কানাডায় ইউনিভার্সিটি অফ ওয়াটারলু থেকে একই বিষয়ে দ্বিতীয় এমএ এবং অস্ট্রেলিয়ার ইউনিভার্সিটি অফ সিডনি থেকে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন।
আরও পড়ুন:জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন উপাচার্য (ভিসি) হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. জাহাঙ্গীর আলম। তাকে নিয়োগ দিয়ে বুধবার প্রজ্ঞাপন জারি করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
নিয়োগের শর্তে বলা হয়েছে, ভাইস-চ্যান্সেলর হিসেবে তার নিয়োগের মেয়াদ যোগদানের তারিখ থেকে চার বছর হবে। উপর্যুক্ত পদে তিনি তার বর্তমান পদের সমপরিমাণ বেতন-ভাতাদি পাবেন। তিনি বিধি অনুযায়ী পদসংশ্লিষ্ট অন্যান্য সুবিধা ভোগ করবেন।
তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে সার্বক্ষণিকভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে অবস্থান করবেন। রাষ্ট্রপতি ও চ্যান্সেলর প্রয়োজনে যে কোনো সময় এ নিয়োগ বাতিল করতে পারবেন।
কয়েক দফা পেছানোর পর অবশেষে দেশের নয়টি কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে। আগামী ২৫ অক্টোবর এই ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। এদিন বেলা ১১টায় সারাদেশে একযোগে কৃষিগুচ্ছের ভর্তি পরীক্ষা নেয়া হবে।
চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ও অ্যানিম্যাল সায়েন্সেস বিশ্ববিদ্যালয়ের (সিভাসু) ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য এবং কেন্দ্রীয় ভর্তি কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. কামালের সভাপতিত্বে বুধবার অনুষ্ঠিত কেন্দ্রীয় ভর্তি কমিটির এক জুম সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) দুজন সদস্য, গুচ্ছভুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর উপাচার্য, ইউজিসির সচিব, সিভাসুর রেজিস্ট্রার এবং ভর্তি পরীক্ষা সংক্রান্ত টেকনিক্যাল কমিটির সদস্যরা সভায় উপস্থিত ছিলেন।
ভর্তি পরীক্ষা সংক্রান্ত অন্যান্য শর্ত অপরিবর্তিত থাকবে। এ সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য কৃষি গুচ্ছের ভর্তির ওয়েবসাইটে পাওয়া যাবে।
কৃষি গুচ্ছভুক্ত দেশের নয়টি বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদন প্রক্রিয়া গত ২২ এপ্রিল শুরু হয়ে ৩০ মে পর্যন্ত চলে। এতে ৭০ হাজারের বেশি শিক্ষার্থী আবেদন করেন।
প্রকাশিত ভর্তি বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী গত ৩০ মে ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। তবে তা কয়েক দফা পেছানোর পর অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত করে আয়োজক ভর্তি কমিটি।
আরও পড়ুন:জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) নতুন দুই উপ-উপাচার্য ও কোষাধ্যক্ষ নিয়োগ দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
বুধবার মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের উপ-সচিব শাহীনুর ইসলাম স্বাক্ষরিত পৃথক তিনটি প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে এই নিয়োগ দেয়া হয়।
নিয়োগপ্রাপ্তরা হলেন- প্রো-উপাচার্য (প্রশাসন) পদে প্রাণরসায়ন ও অনুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক সোহেল আহমেদ, প্রো-উপাচার্য (শিক্ষা) পদে উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক মাহফুজুর রহমান এবং ট্রেজারার পদে গণিত বিভাগের অধ্যাপক এবং গাণিতিক ও পদার্থ বিষয়ক অনুষদের ডিন অধ্যাপক আব্দুর রব।
প্রজ্ঞাপনগুলোতে বলা হয়, এই নিয়োগ চার বছরের জন্য হলেও রাষ্ট্রপতি বা আচার্য যে কোনো সময় এ নিয়োগ বাতিল করতে পারবেন। তাদের বেতন হবে বর্তমান বেতনের সমান। বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন-বিধি ছাড়াও ভাইস-চ্যান্সেলর কর্তৃক প্রদত্ত ক্ষমতা ও দায়িত্ব পালন করবেন তারা। এছাড়াও ক্যাম্পাসে অবস্থান করতে হবে তাদের।
প্রসঙ্গত, গত ৫ আগস্ট স্বৈরাচার সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে দেশ ছাড়ার পর ওই সরকারের আমলে বিভিন্ন পদে নিয়োগপ্রাপ্তরা একে একে পদত্যাগ করা শুরু করেন। এর ধারাবাহিকতায় ৭ আগস্ট জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, ১৩ আগস্ট প্রো-উপাচার্য (শিক্ষা) এবং ১৯ আগস্ট প্রো-উপাচার্য (প্রশাসন) ও ট্রেজারার পদত্যাগ করেন।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) উপাচার্য নিয়োগ দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারির দাবিতে কমপ্লিট শাটডাউন ঘোষণা করেছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটক আটকে মানববন্ধন ও শহীদ মিনারে প্রতিবাদ সমাবেশ শেষে প্রশাসনিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছেন।
মঙ্গলবার সকাল ১০টা থেকে বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের জিরো পয়েন্টে মূল ফটকের সামনে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন শিক্ষার্থীরা। এরপর বিকেল ৪টায় আবার প্রতিবাদ সমাবেশ করেন বিশ্বিবদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা। এ কর্মসূচি শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে দেয়া হয়।
মানববন্ধনে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘আজকের (১৭ সেপ্টেম্বর) মধ্যে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ভিসি, প্রো-ভিসি নিয়োগ দিতে হবে। অন্যথায় আগামীকাল বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ের সব একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম বন্ধ থাকবে।’
এ সময় শিক্ষার্থীরা ‘ভিসি নিয়ে নয়-ছয় আর নয় আর নয়, ‘ঢাবি রাবি ভিসি পেল, চবি কেন পিছিয়ে গেল’, ‘আর নয় বিজ্ঞাপন, দিতে হবে প্রজ্ঞাপন’, ‘ঢাবি রাবি স্বর্গে, চবি কেন মর্গে’, ‘শিক্ষার্থীদের লক্ষ্য, ভিসি হবে দক্ষ’ ইত্যাদি স্লোগান দেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘গত বৃহস্পতিবার ভিসি নিয়োগের একটি গুঞ্জন শোনা যায়। রোববার ভিসি নিয়োগের প্রজ্ঞাপন আসার কথা থাকলেও এখন পর্যন্ত আসেনি। আমাদের সাথে এই প্রজ্ঞাপন-প্রজ্ঞাপন খেলা বন্ধ করুন। ভিসি নিয়োগ না হওয়া পর্যন্ত আমাদের এই কর্মসূচি চলবে।’
মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা আরও বলেন, ’আমরা ক্লাসে যাওয়ার জন্য মুখিয়ে আছি কিন্তু এখনও আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে ভিসি নিয়োগ দেয়া হচ্ছে না। আমরা কি আন্দোলনই করে যাব শুধু?
‘বাংলাদেশের অন্য সব স্বায়ত্তশাসিত বিশ্ববিদ্যালয়ে ভিসি নিয়োগ দেয়া হলেও আমরা এখনো ভিসি পাইনি। অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে আমাদের অনুরোধ অতিসত্বর ভিসি নিয়োগ দিয়ে একাডেমিক কার্যক্রম চালু করার। আমরা শিক্ষার্থী, আমাদের জায়গা হচ্ছে পড়ার টেবিলে। আমাদেরকে পড়ার টেবিলে ফিরিয়ে নিন।’
আরও পড়ুন:তরুণ লেখকদের সংগঠন বাংলাদেশ তরুণ কলাম লেখক ফোরাম, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার ২০২৪-২৫ কার্যবর্ষের কার্যনির্বাহী কমিটি গঠন হয়েছে। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ রাজীবকে সভাপতি এবং ফার্মেসি বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী আল মাসুম হোসাইনকে সাধারণ সম্পাদক মনোনীত করা হয়েছে।
মঙ্গলবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সংগঠনের সভাপতি আমজাদ হোসেন হৃদয় ও সাধারণ সম্পাদক ইমরান উদ্দিন এ তথ্য জানান।
বিজ্ঞপ্তিতে নতুন সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে আগামী সাত কর্মদিবসের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করে কেন্দ্রীয় দপ্তর সেলে জমা দিতে বলা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, ‘সুপ্ত প্রতিভা বিকশিত হোক লেখনীর ধারায়’ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে ২০১৮ সালের ২৩ জুলাই যাত্রা শুরু করে সংগঠনটি। তরুণ লেখকদের পরামর্শ দেয়া, পত্রিকায় লেখা প্রকাশে সহযোগিতা করাসহ লেখালেখি বিষয়ক সভা, সেমিনার ও কর্মশালার আয়োজন করে থাকে বাংলাদেশ তরুণ কলাম লেখক ফোরাম।
বর্তমানে দেশের সরকারি, বেসরকারি ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়সহ মোট ১৮টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এ সংগঠনের কার্যক্রম চলমান।
মাদারীপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের উদ্যোগে আয়োজিত কাওয়ালি অনুষ্ঠানে বহিরাগতদের হামলার অভিযোগ উঠেছে। ছাত্র আন্দোলনের তিনজন আহত হয়েছেন। পরে সেনাবাহিনী ও সদর থানা পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পণ্ড হয়ে যায় অনুষ্ঠান।
রোববার বিকেলে মাদারীপুর শিল্পকলা একাডেমীতে দু’দফায় এই হামলার ঘটনা ঘটে।
পুলিশ ও আয়োজকরা জানান, স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা দেশ থেকে পালানোর পর অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের এক মাস পূর্তি উপলক্ষে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের উদ্যোগে কাওয়ালি সংগীতানুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
রোববার বেলা ২টার দিকে শিল্পকলা একাডেমীতে অনুষ্ঠান শুরুও হয়। হঠাৎ জুবায়ের আহমেদ নাফিজ, মুন্না কাজীসহ বেশকিছু লোক অনুষ্ঠানস্থলে এসে আয়োজকদের ওপর হামলা করে। এতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মী নেয়ামত উল্লাহ ও আশিকুল তামিম আশিক আহত হন। সেনাবাহিনী ও সদর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
তবে অনুষ্ঠান পণ্ড হয়ে যায়। বিষয়টি সমাধানের জন্যে দুপক্ষের লোকজন নিয়ে বসেও কোনো ফল আসেনি। পরে সন্ধ্যার দিকে বাড়ি ফেরার পথে ইখতিয়ার আহমাদ সাবিদ নামে আরেকজন আয়োজককে ইট দিয়ে মাথা ফাটিয়ে দেয় প্রতিপক্ষ। পরে আহতদের উদ্ধার করে মাদারীপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
আয়োজকদের একজন আব্দুর রহিম বলেন, ‘যারা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শুরু থেকে সম্পৃক্ত রয়েছে, তাদের নিয়েই সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। কিন্তু কয়েকজন নিজেদের ছাত্র আন্দোলনের কর্মী দাবি করে অনুষ্ঠানে আমাদের ওপর হামলা করে। এদের মধ্যে বেশ কয়েকজন ছাত্রলীগের কর্মী রয়েছে। আমরা এদের বিচার দাবি করছি।’
তবে হামলাকারী জুবায়ের আহমেদ নাফিজ দাবি করেছেন, তিনি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সঙ্গে ছিলেন। তাকে না জানিয়ে কাওয়ইল গানের আয়োজন করায় বিষয়টি ভিন্নভাবে দেখা হয়েছে।
মাদারীপুর সদর থানার ওসি এইচএম সালাউদ্দিন বলেন, ‘অনুষ্ঠানস্থলে আসার আগেই হামলার ঘটনা ঘটেছে। তবে আসার পর আর কোনো ঘটনা ঘটেনি। আহতরা অভিযোগ দিলে বিষয়টি তদন্ত করে মামলা নেয়া হবে।’
মন্তব্য