ছয় মাসের মধ্যে চীনের সাংহাই বা থাইল্যান্ডের ব্যাংকক শহরের মতো ঢাকার বিমানবন্দর সড়কটি দৃষ্টিনন্দন করে ডিজিটাল সড়কে রূপান্তরের কাজ শুরু হয় ২০১৭ সালের শুরুতে।
তবে ২০২১ সালের জুন মাসের শেষ দিকে এসেও শেষ হয়নি ‘বনানী ওভারপাস থেকে বিমানবন্দর মোড় সৌন্দর্যায়ন’ শীর্ষক প্রকল্পের কাজ। কবে নাগাদ কাজ শেষ হবে, তাও বলতে পারছেন না সংশ্লিষ্টরা।
চীনের ফুজহৌ রিয়েলিসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সহায়তায় এ কাজ করছে ভিনাইল ওয়ার্ল্ড গ্রুপ নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। বিতর্কের মুখে কয়েক বছর আগে প্রকল্পের আওতায় বনসাই লাগানোর কাজ বন্ধ করে দেয় তারা।
তবে বনানী থেকে বিমানবন্দর পর্যন্ত ছয় কিলোমিটারে চলতে থাকে শোভাবর্ধন ও ডিজিটাল সড়কে রূপান্তরের কাজ।
প্রকল্প বাস্তবায়ন সংশ্লিষ্টরা বলছেন, হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের থার্ড টার্মিনাল ও ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ প্রকল্প চলমান হওয়ায় সৌন্দর্যবর্ধন প্রকল্পের কাজ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এই দুটি মেগা প্রকল্প শেষ না হওয়া পর্যন্ত সড়কটিকে পূর্ণাঙ্গ ডিজিটাল রূপ দেয়া ও এর সৌন্দর্যবর্ধন সম্ভব হচ্ছে না।
বিমানবন্দরের থার্ড টার্মিনালের কাজ শেষ হওয়ার কথা ২০২৩ সালের জুনে। আর ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের (বিমানবন্দর থেকে তেজগাঁও পর্যন্ত) কাজ শেষ হওয়ার কথা ২০২২ সালের মার্চ থেকে এপ্রিলে।
এমন পরিস্থিতিতে ২০২৩ সালের জুন মাসের আগে সৌন্দর্যবর্ধন প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কোনো সুযোগ নেই বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
নিউজবাংলাকে তারা জানান, ২০১৬ সালের জুলাইয়ে র্যাডিসন হোটেলের সামনে শুরু হয় সৌন্দর্যবর্ধনের পাইলট প্রকল্প। সেটি সফল হওয়ার পর ২০১৭ সালের জানুয়ারিতে ‘বনানী ওভারপাস থেকে বিমানবন্দর মোড় সৌন্দর্যায়ন প্রকল্প’ নামের এই প্রকল্প শুরু হয়। ছয় মাসের মধ্যে শেষ করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে কাজ শুরু করে ভিনাইল ওয়ার্ল্ড গ্রুপ।
পুরো কাজ তত্ত্বাবধানে আছে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর (সওজ)। ভিনাইল ওয়ার্ল্ড গ্রুপ তাদের করপোরেট সামাজিক দায়বদ্ধতা (সিএসআর) ফান্ড থেকে ৯০ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করার কথা জানায়।
সওজের সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী, বাস্তবায়নের পর ১০ বছর পর্যন্ত প্রকল্পের রক্ষণাবেক্ষণ করবে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি। সে জন্য বছরে ৫ কোটি টাকা হিসাবে ১০ বছরে ৫০ কোটি টাকা ব্যয় হবে।
সব মিলিয়ে প্রকল্পটির জন্য সিএসআর ফান্ড থেকে ১৪০ কোটি টাকা ব্যয় করবে প্রতিষ্ঠানটি। বিনিময়ে প্রকল্প উদ্বোধনের পর থেকে সড়কের বিভিন্ন স্থানে তারা দোকান ও বিজ্ঞাপন ভাড়া দিয়ে ‘কিছুটা’ খরচ তুলবে।
সম্প্রতি বিমানবন্দর সড়ক ঘুরে দেখা যায়, বনানী লেভেল ক্রসিং থেকে শুরু করে বিমানবন্দর মোড় পর্যন্ত সড়কের পাশে বেশ কয়েকটি স্থানে যাত্রীছাউনি, বসার বেঞ্চ স্থাপন করা হয়েছে। সৌন্দর্যবর্ধনে বিভিন্ন ধরনের গাছও লাগানো হয়েছে।
এসবের ফাঁকে ফাঁকে বিভিন্ন অবকাঠামো গড়ে তোলা হয়েছে। কোথাও তোলা হয়েছে ভবনের ভিত্তি, কোথাও দেয়াল। এর কোনোটিতেই যত্নের কোনো ছাপ নেই।
ডিজিটাল সড়ক হিসেবে ওয়াইফাই সুবিধা থাকার কথা থাকলেও কোথাও ওয়াইফাই সংযোগ পাওয়া যায়নি। কোনো যাত্রীছাউনির কাজই শতভাগ শেষ হয়নি।
ছাউনিতে মোবাইল ফোনের চার্জের পয়েন্ট থাকলেও সেগুলো ঢাকা রয়েছে। কয়েকটি যাত্রীছাউনিতে রয়েছে ‘অত্যাধুনিক স্ক্রিন’, যেগুলোতে মাঝেমধ্যে বিজ্ঞাপন চলতে দেখা যায়।
প্রকল্প এলাকায় কয়েকটি পাবলিক টয়লেট রয়েছে। রয়েছে আরও কিছু অবকাঠামো। তবে টয়লেটসহ এসব অবকাঠামো তালাবদ্ধ।
নিকুঞ্জ গেটের কাছে নজরে পড়ে মুক্তিযুদ্ধের ওপর নির্মিত একটি ভাস্কর্য, যার নাম ‘বীর’। তবে আর্মি গলফ ক্লাবের সামনে শেওড়া এলাকায় এবং বিমানবন্দরের থার্ড টার্মিনালের সামনে কোনো ধরনের সৌন্দর্যবর্ধনের কাজ চোখে পড়েনি।
কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের সামনে একটি ফার্মেসি এবং ঠিক বিপরীত পাশে একটি মিনি ফাস্টফুডের দোকান দেখা যায়।
ফার্মেসির এক কর্মচারী নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এই দোকানের মালিক ভিনাইল ওয়ার্ল্ড গ্রুপের মালিক আবেদ মনসুর সাহেব। উনিই এটা দেখাশোনা করেন। আর ওই পাশের ফাস্টফুডের দোকানও মনসুর সাহেবের কাছের লোক চালায়।’
কুড়িল বিশ্বরোড বাসস্ট্যান্ডে কথা হয় সোহেল শাহরিয়ার নামে এক চাকরিজীবীর সঙ্গে।
তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমার কর্মস্থল কারওয়ান বাজার আর বাসা কুড়িল কাজী বাড়ি এলাকায়। প্রতিদিনই আমাকে এখানে এসে বাসে উঠতে হয়। গত কয়েক বছর ধরেই দেখছি এখানে অর্ধেক কাজ করে রাখা হয়েছে।
‘যাত্রীছাউনি বানাইছে। কিন্তু কাজ শেষ করে নাই। পত্রিকায় দেখেছিলাম এই রেললাইনের ওপর একটা ওভারব্রিজ হবে। কই? হইল না তো। কয়েক বছর আগেই শুনেছিলাম, ছয় মাসেই নাকি এটা ডিজিটাল সড়ক হবে। কই? হইল না তো।’
ছয় মাসে কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও ৫৪ মাসেও কেন হয়নি, তা জানতে কথা হয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ভিনাইল ওয়ার্ল্ড গ্রুপের সিইও আবেদ মনসুরের সঙ্গে।
নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘এই প্রকল্প এলাকার কিছু জায়গায় থার্ড টার্মিনালের কাজ চলছে। কিছু জায়গায় এলিভেটেড এক্সপ্রেসের কাজ চলছে। কিছু জায়গায় রেলের কাজও চলছে। এসব জায়গা ছাড়া আমাদের প্রায় সব কাজই শেষ।
‘ওই সব জায়গায় আমরা কাজ করছি না। কারণ আজ কাজ ধরলে কালই দেখা যাবে মেগা প্রকল্পের জন্য খোঁড়াখুঁড়ি শুরু হচ্ছে। এতে শুধু শুধু টাকার অপচয় ছাড়া আর কিছুই হবে না।’
ভিনাইল ওয়ার্ল্ড গ্রুপের সিইও আবেদ বলেন, ‘ওইগুলো হলো জাতীয় প্রকল্প। ওই প্রকল্প বন্ধ করে তো আর আমার এই ছোট প্রকল্পের কাজ করতে পারি না। তা ছাড়া ওই সব প্রকল্পের কর্তৃপক্ষ তাদের কাজ শুরু করার আগেই আমাদের জানিয়ে দিয়েছে কোথায় কোথায় তারা কাজ করবে। তাই ওই সব জায়গায় আমরা কাজ করিনি।
‘তবে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আমাদের কথা হয়েছে। তারা যখন উপরের গার্ডারের কাজ শেষ করবে, তখন তাদের আর নিচে কাজ থাকবে না। তখনই আমরা আমাদের কাজ শেষ করব।’
সব মিলিয়ে খুব সামান্য কিছু কাজ বাকি আছে বলে দাবি করেন তিনি।
আবেদ মুনসুর বলেন, ‘প্রকল্পটি আমরা আমাদের কোম্পানির সিএসআর ফান্ড থেকে বাস্তবায়ন করছি। তাই আমরা এখানে আমাদের লাভ-লোকসানের কথা ভাবি না।’
প্রকল্প বাস্তবায়নের আগেই দোকান ভাড়া আর বিজ্ঞাপন প্রচারের কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ওই ফার্মেসিও আমাদের সিএসআর ফান্ডের টাকায় করা। এখানে কমন কিছু ওষুধ আছে, যেগুলো আমাদের সবারই প্রয়োজন হয়।
‘সেগুলো আমরা এখানে অনেক কম টাকায় বিক্রি করি। যে বিজ্ঞাপন ভাড়া পাই, তা আমাদের মোট বিনিয়োগের তুলনায় খুবই সামান্য। এটা লাভের জন্য করছি না।’
আবেদ মনসুর বলেন, ‘এখানে আমরা প্রকল্প বাস্তবায়ন করছি ৯০ কোটি টাকায়। বছরে ৫ কোটি টাকা ব্যয় হবে রক্ষণাবেক্ষণের জন্য।
‘মোট ১০ বছর এই রক্ষণাবেক্ষণ বাবদ আমাদের খরচ হবে ৫০ কোটি টাকা। সব মিলিয়ে আমাদের খরচ হবে ১৪০ কোটি টাকা। এসবই আমাদের কোম্পানির সিএসআর ফান্ডের।’
প্রকল্পের পুরো কাজ তত্ত্বাবধানে আছে সওজ। বিভাগের ঢাকা জোনের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী সবুজ উদ্দিন খান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে ও বিমানবন্দরের থার্ড টার্মিনালের কাজ চলার কারণে এসব এলাকায় খোঁড়াখুঁড়ি চলছে।
‘কোথাও পাইলিং হয়েছে, কোথাও পাইলিং হবে, যে কারণে সৌন্দর্যবর্ধন প্রকল্পের অনেক জায়গায় অর্ধেক কাজ হয়ে পড়ে আছে। এই খোঁড়াখুঁড়ির মধ্যে তো আর আমরা এই কাজ করতে পারি না। মেগা প্রকল্পগুলোর কাজ শেষ হলে আমরা এই কাজ এগিয়ে নেব।’
প্রকল্পের কাজ শেষ না হওয়ার আগেই দোকান চালু ও বিজ্ঞাপন প্রচারের জন্য ভিনাইল ওয়ার্ল্ড গ্রুপ অনুমতি নিয়েছে কি না, তা জানতে চাওয়া হয় সওজের প্রকৌশলীর কাছে।
জবাবে তিনি বলেন, ‘এতে ওইভাবে আমাদের অনুমোদন নেই। কিন্তু যেহেতু নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান অনেক টাকা ইনভেস্ট করছে, তাই তারা এটা করছে মনে হয়।’
প্রকল্পে যা যা হওয়ার কথা
‘বনানী ওভারপাস থেকে বিমানবন্দর মোড় সৌন্দর্যায়ন প্রকল্প’ নামে বনানী লেভেল ক্রসিং থেকে বিমানবন্দর মোড় পর্যন্ত ছয় কিলোমিটার সড়কে ডিজিটাল সেবার সুবিধা রেখে অবকাঠামো স্থাপনের কথা রয়েছে।
এই সড়কের দুই পাশে বিভিন্ন স্থানে থাকবে ১২টি মিনি পাহাড়ি ঝরনা। ফুটপাতে থাকবে দৃষ্টিনন্দন ফুল, সবুজ পাতার বাহার।
বাসের জন্য অপেক্ষমাণ যাত্রীদের জন্য থাকবে ১২টি ডিজিটাল যাত্রীছাউনি, যেখানে থাকবে ওয়াইফাই ও মোবাইল চার্জের সুবিধা। থাকবে বিশুদ্ধ পানিও।
কয়েকটি ব্রেস্ট ফিডিং পয়েন্ট থাকবে সড়কের পাশে। থাকবে ডিজিটাল পুলিশ বক্সও।
নিকুঞ্জ থেকে বিমানবন্দর পর্যন্ত থাকবে সাইকেল লেন। ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন ও ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের চেতনার প্রকাশ থাকবে সড়কের তিনটি ভাস্কর্যে।
নির্দিষ্ট দূরত্বে থাকবে বিজ্ঞাপনের ডিজিটাল বিলবোর্ড, ডিজিটাল ডাস্টবিন, ডিজিটাল ট্রাফিক সাইন, স্বয়ংক্রিয় ধুলা পরিষ্কারের যন্ত্র, এলইডি স্ট্রিট লাইট, এলইডি অর্নামেন্টাল গার্ডেন লাইট।
নিকুঞ্জ অংশে শিশুদের জন্য থাকবে কিড জোন। পুরো সড়ক থাকবে ক্লোজড সার্কিট টেলিভিশন (সিসিটিভি) ক্যামেরার আওতায়।
উপজেলা নির্বাচন থেকে মন্ত্রী ও এমপিদের স্বজনরা সরে না দাঁড়ালে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
রাজধানীর ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে বুধবার দলের সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ হুঁশিয়ারি দেন।
কাদের বলেন, ‘দলীয় সংসদ সদস্য এবং মন্ত্রীদের নিকটাত্মীয় এবং স্বজনদের প্রার্থী না হতে দলীয় যে নির্দেশনা, তা না মানলে সময়মতো সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। উপজেলা নির্বাচনের প্রথম পর্যায়ে প্রার্থিতা প্রত্যাহারের সময় পেরিয়ে গেছে। এদের মধ্যে অনেকেই বলেছেন যে, আমরা বিষয়টি আরও আগে অবহিত হলে আমাদের সিদ্ধান্ত নিতে সুবিধা হতো। তারপরও কেউ কেউ প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেছেন, কেউ কেউ করেননি।
‘নির্বাচন কমিশনে সময়সীমা শেষ হয়ে গেলে কেউ ইচ্ছা করলে প্রার্থিতা প্রত্যাহার করতে পারেন। এ বিষয়টা চূড়ান্ত হতে নির্বাচন পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। এখানে কেউ অমান্য করলে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়ার সুযোগ আছে দলে; সময়মতো সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।’
দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের বিষয়ে কাদের বলেন, ‘আমাদের দলে ডিসিপ্লিনারি অ্যাকশনের বিষয়টি আছে। দল যার যার কর্মকাণ্ড বিবেচনায় বিভিন্ন সময় বিভিন্ন কৌশলে ডিসিপ্লিনারি অ্যাকশন নিয়ে থাকে। চূড়ান্ত পর্যায়ে যারা প্রত্যাহার করবে না, এ ব্যাপারে দলের সিদ্ধান্ত সময়মতো নেয়া হবে।’
চূড়ান্ত পর্যায়ে এসেও কেউ প্রার্থিতা প্রত্যাহার না করলে দল থেকে বহিষ্কার করা হবে কি না, এমন প্রশ্নে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘সাধারণ ক্ষমা একটা বিশেষ পরিস্থিতিতে দলীয় রণকৌশল। সেটা হতেই পারে। সেটা দলের সভাপতি নিতে পারেন। নির্বাচন হওয়া পর্যন্ত প্রার্থিতা প্রত্যাহারের সুযোগ আছে।’
বিএনপির সমাবেশের দিনে আওয়ামী লীগেরও সমাবেশ থাকে—সাংবাদিকের এমন প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বিএনপির সন্ত্রাস থেকে জনগণকে রক্ষায় কর্মসূচি দেয় আওয়ামী লীগ। বিএনপি একতরফা সমাবেশ করতে গেলে সন্ত্রাস, আগুন সন্ত্রাসের আশঙ্কা থেকেই যায়। জনগণের জানমাল রক্ষায় সরকারি দল হিসেবে আমাদের দায়িত্ব আছে।
‘আমরা মাঠে থাকলে তারা এসব অপকর্ম করতে মানসিকভাবে চাপে থাকবে। সে জন্য আমরা কর্মসূচি দিই। বিএনপির চোরাগোপ্তা হামলা প্রতিহত করতে জনগণের স্বার্থে আমাদের কর্মসূচি থাকা উচিত।’
আরও পড়ুন:গ্যাস পাইপলাইনের জরুরি কাজের জন্য বুধবার তিন ঘণ্টা রাজধানীর কয়েকটি এলাকায় গ্যাস থাকবে না।
এদিন দুপুর ২টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত এ অবস্থা বিরাজ করবে।
তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের তথ্য অনুযায়ী, যেসব এলাকায় সব শ্রেণির গ্রাহকদের গ্যাস সরবরাহ বন্ধ থাকবে সেগুলো হলো- শনির আখড়া, বড়ইতলা, ছাপড়া মসজিদ, দনিয়া, জুরাইন, ধোলাইরপাড় ও কদমতলী।
আশপাশের এলাকায় গ্যাস সরবরাহে চাপ কম থাকতে পারে জানিয়ে গ্রাহকদের সাময়িক অসুবিধার জন্য দুঃখ প্রকাশ করে তিতাস গ্যাস।
রাজধানীর সদরঘাটের শ্যামবাজার ঘাটে একটি লঞ্চে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে।
মঙ্গলবার দুপুর ১২টা ৫৫ মিনিটে ওই আগুনের খবর পায় ফায়ার সার্ভিস। এমভি বাঙালি নামের লঞ্চটিতে কোনো যাত্রী ছিল না।
ফায়ার সার্ভিসের গণমাধ্যম কর্মকর্তা তালহা বিন জসিম জানিয়েছেন, দুপুর ১টা ৫ মিনিটে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় চারটি ইউনিট। পরে যোগ দেয় আরও একটি ইউনিট।
তিনি জানান, দুপুর পৌনে ২টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে। লঞ্চটির তৃতীয় তলায় আগুনের সূত্রপাত। আগুনের কারণ ও বিস্তারিত তথ্য তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি।
ফায়ার সার্ভিস জানিয়েছে, লঞ্চটি নোঙর করা ছিল। হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করতে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে (পিএমও) গেছেন কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানি।
মঙ্গলবার দুপুরে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পৌঁছালে শেখ হাসিনা আমিরকে টাইগার গেটে ফুলের তোড়া দিয়ে স্বাগত জানান। খবর বাসসের
তারা সেখানে একান্ত বৈঠকেও মিলিত হবেন। পরে তারা দুই দেশের মধ্যে চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষর প্রত্যক্ষ করবেন।
পিএমও ত্যাগের আগে আমির টাইগার গেটে রক্ষিত ভিজিটরস বুকেও সই করবেন। এরপর তিনি বঙ্গভবনে যাবেন যেখানে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন কাতার আমিরের সম্মানে মধ্যাহ্নভোজের আয়োজন করেছেন।
সন্ধ্যায় আমির একটি বিশেষ বিমানে কাতারের উদ্দেশে যাত্রা করবেন।
রাষ্ট্রপতি মো.সাহাবুদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ আমন্ত্রণে কাতারের আমির সোমবার দু দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে ঢাকা এসেছেন।
আগামী ২৬ এপ্রিলের (শুক্রবার) শান্তি ও উন্নয়ন সমাবেশ স্থগিত করেছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। পুলিশের অনুমতি না পাওয়ায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক মো. রিয়াজ উদ্দিন রিয়াজ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘সমাবেশের অনুমতি চেয়ে পুলিশের কাছে আবেদন করা হয়েছিল, কিন্তু অনুমতি দেয়া হয়নি। ফলে সমাবেশ আপাতত স্থগিত। শান্তি সমাবেশের তারিখ পরে জানানো হবে।’
প্রসঙ্গতঃ ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের আয়োজনে বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে এ শান্তি সমাবেশ অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল।
রোববার (২১ এপ্রিল) এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ শান্তি ও উন্নয়ন সমাবেশের ঘোষণা দেয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) বেলা ৩টা থেকে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ করা হবে।
অবশ্য এর আগে গত শনিবার (২০ এপ্রিল) চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াসহ দলের নেতা-কর্মীদের মুক্তির দাবিতে ২৬ এপ্রিল বিকেলে নয়াপল্টনে সমাবেশ ডেকেছিল বিএনপি। পরে তাপপ্রবাহের কারণ দেখিয়ে সোমবার তা স্থগিত করে দলটি।
রাজধানীর গুলিস্তানে গোলাপ শাহ মাজারের সামনে থেকে অজ্ঞাত এক ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
সোমবার সকাল ৯টার দিকে ৪০ বছর বয়সী ওই ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার করে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের মর্গে পাঠানো হয়।
শাহবাগ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মোহাম্মদ আরিফ নেওয়াজ বলেন, আমরা খবর পেয়ে ঘটনাস্থল গোলাপ শাহ মাজার সংলগ্ন ফুটপাত থেকে ওই মরদেহ উদ্ধার করি,পরে আইনি প্রক্রিয়া শেষে ঢাকা মেডিক্যালের মর্গে পাঠানো হয়।
তিনি বলেন, আশেপাশের লোকদের সাথে কথা বলে জানতে পারি, মৃত ব্যক্তি ভবঘুরে প্রকৃতির ছিলেন। ভিক্ষাবৃত্তি করতেন এবং সেখানে ঘুমাতেন। তার পরিচয় এখনো জানা যায়নি তবে জানার চেষ্টা চলছে।
এসআই বলেন, সিআইডির ক্রাইম সিনকে খবর দেয়া হয়েছে। ফিঙ্গারপ্রিন্টের মাধ্যমে হয়তো তার পরিচয় জানা যেতে পারে। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ হাসপাতালের জরুরি বিভাগ মর্গে রাখা হয়েছে।
সপ্তাহের দ্বিতীয় কর্মদিবসে নিম্ন মানে শীর্ষে না থাকলেও অস্বাস্থ্যকরই রয়ে গেছে ঢাকার বাতাস।
সুইজারল্যান্ডভিত্তিক বাতাসের মানবিষয়ক প্রযুক্তি কোম্পানি আইকিউ এয়ারের র্যাঙ্কিংয়ে বাংলাদেশ সময় সোমবার সকাল ৯টা ৫৯ মিনিটে ১২০ স্কোর নিয়ে ১২২টি শহরের মধ্যে বায়ুর নিম্ন মানে অষ্টম ছিল ঢাকা।
একই সময়ে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় অবস্থানে ছিল নেপালের কাঠমান্ডু, চীনের বেইজিং, ও থাইল্যান্ডের চিয়াং মাই।
আইকিউএয়ার জানিয়েছে, আজ দিনের ওই সময়ে ঢাকার বাতাসে অতি ক্ষুদ্র কণা পিএম২.৫-এর উপস্থিতি ছিল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) আদর্শ মাত্রার চেয়ে ৮ দশমিক ৭ গুণ বেশি।
নির্দিষ্ট স্কোরের ভিত্তিতে কোনো শহরের বাতাসের ক্যাটাগরি নির্ধারণের পাশাপাশি সেটি জনস্বাস্থ্যের জন্য ভালো নাকি ক্ষতিকর, তা জানায় আইকিউএয়ার।
কোম্পানিটি শূন্য থেকে ৫০ স্কোরে থাকা শহরগুলোর বাতাসকে ‘ভালো’ ক্যাটাগরিতে রাখে। অর্থাৎ এ ক্যাটাগরিতে থাকা শহরের বাতাস জনস্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর নয়।
৫১ থেকে ১০০ স্কোরে থাকা শহরগুলোর বাতাসকে ‘মধ্যম মানের বা সহনীয়’ হিসেবে বিবেচনা করে কোম্পানিটি।
আইকিউএয়ারের র্যাঙ্কিংয়ে ১০১ থেকে ১৫০ স্কোরে থাকা শহরগুলোর বাতাসকে ‘সংবেদনশীল জনগোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর’ ক্যাটাগরিতে ধরা হয়।
১৫১ থেকে ২০০ স্কোরে থাকা শহরের বাতাসকে ‘অস্বাস্থ্যকর’ ক্যাটাগরির বিবেচনা করা হয়।
র্যাঙ্কিংয়ে ২০১ থেকে ৩০০ স্কোরে থাকা শহরগুলোর বাতাসকে ‘খুবই অস্বাস্থ্যকর’ ধরা হয়।
তিন শর বেশি স্কোর পাওয়া শহরের বাতাসকে ‘বিপজ্জনক’ হিসেবে বিবেচনা করে আইকিউএয়ার।
আজ সকাল ৯টা ৫৯ মিনিটে ঢাকার বাতাসের স্কোর ছিল ১২০। এর মানে হলো ওই সময়টাতে সংবেদনশীল জনগোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর ছিল ঢাকার বাতাস।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য