আন্তর্জাতিক নারী পাচারকারী চক্রের অন্যতম হোতা নদী আক্তার ইতি শুধু ভারতেই নারী পাচার করতেন না; মালয়েশিয়া ও দুবাইয়েও তার তৎপরতা বিস্তৃত ছিল।
মঙ্গলবার সকালে রাজধানীর শ্যামলীর নিজ কার্যালয়ে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে তেজগাঁও বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মো. শহিদুল্লাহ বলেন, ‘নদী ভারত, মালয়েশিয়া ও দুবাইয়ের নারী পাচারকারী চক্রের সমন্বয়ক হিসেবে কাজ করতেন।’
‘পাচারকৃত ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে নদীর ১০টির মতো ছদ্মনাম জানা গেছে।’
সোমবার বিকেলে নড়াইল ও যশোর সীমান্ত এলাকা নদীসহ নারী পাচারকারী চক্রের সাত সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে মোবাইল ফোন, জাতীয় পরিচয়পত্র, ভারতীয় আধার কার্ডসহ নগদ অর্থ জব্দ করা হয়।
নদী ছাড়া গ্রেপ্তার অন্যরা হলেন আল আমিন হোসেন, সাইফুল ইসলাম, আমিরুল ইসলাম, পলক মণ্ডল, তরিকুল ইসলাম ও বিনাশ শিকদার।
ডিএমপির তেজগাঁও বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মো. শহিদুল্লাহ প্রেস ব্রিফিংয়ে আরও বলেন, ভারতফেরত পাচার হওয়া তরুণীর অভিযোগের অনুসন্ধান করতে গিয়ে এই চক্রের সন্ধান পায় হাতিরঝিল থানার পুলিশ।
‘পাচারের উদ্দেশ্যে আনা মেয়েদের যশোর সীমান্তে বাড়িতে রেখে সুযোগমতো ভারতে পাচার করত চক্রটি। পাচারকৃত প্রত্যেক মেয়ের জন্য স্থানীয় এক ইউপি সদস্য এক হাজার টাকা করে নিতেন। পাচারকালে কোনো মেয়ে বিজিবির কাছে আটক হলে সেই ইউপি সদস্য তাকে আত্মীয় পরিচয় দিয়ে ছাড়িয়ে নিয়ে আসতেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘২০০৫ সালে সন্ত্রাসী রাজীব হোসেন নামের এক ব্যক্তির সঙ্গে নদীর বিয়ে হয়। ২০১৫ সালে রাজীব পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে মারা যান।
‘এরপর থেকেই নদী পাচারকারী চক্রের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন। পাচারকৃত ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে নদীর ১০টির মতো ছদ্মনাম জানা যায়। নদী ভারত, মালয়েশিয়া ও দুবাইয়ের নারী পাচারকারী চক্রের সমন্বয়ক হিসেবে কাজ করতেন।’
শহিদুল্লাহ বলেন, ‘পাচার হওয়া নারীদের কাছে তিনি নদী হিসেবে পরিচয় দিলেও ভারতে তাকে সবাই ইতি নামে চেনে। ভারতীয় আধার কার্ডে তার নাম জয়া আক্তার জান্নাত। বাংলাদেশি পাসপোর্টে তার নাম নূরজাহান। সাতক্ষীরা সীমান্তে তার নাম জলি, যশোর সীমান্তে তিনি প্রীতি নামে পরিচিত।’
গ্রেপ্তার অন্য আসামিদের নারী পাচারে ভূমিকা
ডিসি মো. শহিদুল্লাহ ব্রিফিংয়ে জানান, গ্রেপ্তার আল আমিন হোসেন ২০২০ সালে ঈদুল আজহার চার দিন পর নারী পাচার করতে গিয়ে বিএসএফের গুলিতে আহত হন। তিনি পাচারের উদ্দেশ্যে আনা মেয়েদের তার বাড়িতে রেখে সুযোগমতো ভারতে পাচার করতেন। তিনি নারী পাচারের পাশাপাশি মাদক ব্যবসায় জড়িত। তার নামে যশোরের শার্শা থানায় দুটি মাদক মামলা রয়েছে।
গ্রেপ্তার সাইফুল ইসলামের শার্শার পাঁচভূলট বাজারে মোবাইল ফোন রিচার্জ ও মোবাইল ব্যাংকিংয়ের ব্যবসা আছে। মানব পাচারে জড়িত ইসরাফিল হোসেন খোকন, আব্দুল হাই, সবুজ, আল আমিন ও একজন ইউপি সদস্য তার মাধ্যমে মানব পাচার থেকে অর্জিত অর্থ বিকাশে লেনদেন করেন। পুলিশের উপস্থিতি টের পেলে তিনি মানব পাচারে জড়িত ব্যক্তিদের সতর্ক করে দেন। বিকাশ ট্রানজেকশনে ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটি জব্দ করা হয়েছে। গ্রেপ্তার পলক মণ্ডল যশোরের মনিরামপুরের ঢাকুরিয়া স্কুল থেকে এসএসসি পাস করে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের উত্তর চব্বিশ পরগনা জেলার গাহঘাটা থানার নলকড়া গ্রামে নানাবাড়িতে যান। সেখানে আবার পঞ্চগ্রাম স্কুলে ক্লাস সেভেনে ভর্তি হয়ে মাধ্যমিক পাস করেন।
বেনাপোলের ইসরাফিল হোসেন খোকন, ভারতে অবস্থানকারী বকুল, তাসলিমা, যার আরেক নাম বিউটি ও চক্রের অন্য সদস্যদের সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রয়েছে। আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা নিতে আসা গ্রাম্য দরিদ্র মেয়েদের বেঙ্গালুরুতে তাসলিমা বা বিউটির কাছে পাঠানোর মাধ্যমে তার নারী পাচারে হাতে খড়ি। পরবর্তী সমযে বাংলাদেশ থেকে পাচারকৃত মেয়েদের আধার কার্ড প্রস্তুত করে দেয়ার পাশাপাশি ‘সেফ হোম’-এ অবস্থান এবং বেঙ্গালুরুতে নির্ধারিত স্থানে পাঠানোর দায়িত্ব নেন তিনি।
এ ছাড়া তিনি ভারতীয় আধার কার্ড ও ভারতের নির্বাচন কমিশনের দেয়া আইডি কার্ডধারী। তিনি উত্তর প্রদেশের গোরাক্ষপুর জেলার বড়ালগঞ্জ থানার নেওয়াদা গ্রামেও থেকেছেন। তার কাছ থেকে তার ভারতীয় আধার কার্ড, ভারতে নির্বাচন কমিশনের দেয়া আইডি কার্ড, ভারতীয় আয়কর বিভাগের দেয়া আইডি কার্ড, ভারতীয় সিম কার্ড ও একজন ভিকটিমের আধার কার্ড জব্দ করা হয়েছে।
গ্রেপ্তার বিনাশ সিকদার নড়াইলে দশম শ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়া করেছেন। তিনি বেনাপোলে বাসা ভাড়া নিয়ে পাসপোর্ট ফরম পূরণের কাজ করেন। তার স্ত্রী সোনালী সিকদার ভারতীয় নাগরিক। বেনাপোলে পাসপোর্ট ফরম পূরণের কাজ করতে গিয়ে ইসরাফিল হোসেন খোকন, আব্দুল হাই সবুজ ও মানব পাচারে জড়িত আরও কয়েকজনের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। সেই পরিচয়ের সূত্র ধরে মানব পাচারে তিনি জড়িয়ে পড়েন। যশোর ও নড়াইল থেকে বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে ভারতে উচ্চ বেতনে চাকরি বা প্রলোভন দেখিয়ে আনা নারীদের ইসরাফিল হোসেন খোকন, আল আমিন, তরিকুল, আমিরুল ও আরও কয়েকজনের মাধ্যমে সীমান্ত পার করে ভারতীয় দালালদের কাছে পৌঁছে দেন তিনি। তার কাছ থেকে বাংলাদেশি জাতীয় পরিচয়পত্র, পাসপোর্ট এবং দুটি মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়েছে।
গ্রেপ্তারকৃতদের কাছ থেকে যেসব আধার কার্ড ও অন্যান্য কাগজপত্র জব্দ করা হয়েছে, এসব ভারতীয়রা করেছেন নাকি বাংলাদেশি কেউ করে দিয়েছেন? এমন প্রশ্নের জবাবে তেজগাঁও বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মো. শহিদুল্লাহ বলেন, ‘এগুলো তৈরিতে ভারতীয় লোকেরা সহায়তা করেছে।’
নদীর সঙ্গে টিকটক হৃদয়ের ঘনিষ্ঠতা ছিল উল্লেখ করে ডিসি শহিদুল্লাহ বলেন, ‘নদী, হৃদয় বাবুসহ আরও দুয়েকজনের নাম আগে উল্লেখ করেছিলাম। তাদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে এবং তাদের সহযোগিতায় নদীরা নারী পাচার করেছেন।’
ভারতে যে ভিডিওটি ভাইরাল হয়েছে, ওই ভিডিওর সঙ্গে নদীর সম্পৃক্ততা কতটুকু? এ বিষয়ে তেজগাঁও ডিসি বলেন, ‘টিকটক হৃদয়ের সঙ্গে যেহেতু নদীর সংশ্লিষ্টতা রয়েছে, সেহেতু ওই ভিডিওর সঙ্গেও নদীর সম্পৃক্ততা রয়েছে বলে আমরা জানতে পেরেছি।’
সাতক্ষীরা ও যশোর এলাকায় মানব পাচারের সঙ্গে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সম্পৃক্ততা পাওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেবেন কি না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানতে পেরেছি, স্থানীয় কিছু জনপ্রতিনিধি পাচারকাজে জড়িত রয়েছেন। তবে তদন্তের শেষ পর্যায়ে বলতে পারব কারা কারা পাচারে সহযোগিতা করেছেন। যাদের বিরুদ্ধে মানব পাচারের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যাবে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
যেভাবে পাচার
যে তরুণীর মামলায় নদী গ্রেপ্তার হয়েছেন, তার ছদ্মনাম সায়মা। তিনি জানান, চার বোনের মধ্যে তিনি মেজো। থাকতেন রাজধানীর মাতুয়াইলে। তার বাবা টাইলস মিস্ত্রি। ২০১৪ সালে বাবা-মায়ের বিবাহবিচ্ছেদ হয়। মা আরেকজনকে বিয়ে করেন। মা ও সৎবাবার সঙ্গে চার বোন কাজলায় থাকতে শুরু করেন।
ফেসবুকে ভারতপ্রবাসী নদীর সঙ্গে পরিচয় হয় সায়মার। তিনি জানান, বেঙ্গালুরুতে বিউটি পারলারে লোক নেবে। মাসে ৩০ হাজার টাকা বেতন। ৫ জন মেয়ে নেবে।
এই প্রস্তাব সায়মা তার মাকে জানালে তিনি রাজি হননি। কিন্তু বড় বোন সংসারের অভাব-অনটনের কথা চিন্তা করে মাকে রাজি করান।
সায়মা জানান, নদীর কথামতো যশোরের বেনাপোল এলাকার ইসরাফিল হোসেন খোকন তার বড় বোনকে ফোন করেন।
পরে নদীর নির্দেশনা মতো তার বড় বোন ২০২০ সালের ২০ নভেম্বর রাতে যশোরের উদ্দেশে বাসযোগে যাত্রা শুরু করেন। ভোর সাড়ে ৫টার দিকে খোকনের নির্দেশনা মোতাবেক যশোরের শার্শা এলাকায় বাস থেকে নামেন তার বড় বোন।
সেখান থেকে তরিকুল নামে একজনের ইজিবাইকে আল-আমিন নামে একজনের বাসায় যান বোন।
২১ নভেম্বর রাত ১০টার দিকে বেনাপোল সীমান্তের দিকে যাওয়ার সময় শেষবার বোনের সঙ্গে কথা হয় সায়মার। পরের দিন তার ইমো নম্বরে ফোন করেন নদী। কিন্তু তিন-চার দিন পর বোনের খোঁজ নিতে নদীর ইমো নম্বরে ফোন দিয়ে বন্ধ পান তিনি।
ছোট বোন ও খালাকে পাচারের ফাঁদ
১০-১২ দিন পর আবার নদীর ভারতীয় ইমো নম্বরে ফোন করে সেটি বন্ধ পাওয়া যায়। এরপর বিউটি নামে আরেকজনের ইমো নম্বরে ফোন করলে তিনি জানান, তার বড় বোন অসুস্থ। হাসপাতালে ভর্তি আছে। চিকিৎসা হচ্ছে। তবে সেখানে দেখাশোনা করার মতো লোক নেই।
এ কথা শুনে সায়মা ও তার ছোট খালা ভারত যেতে চান।
২০২০ সালের ১৬ ডিসেম্বর মগবাজারের নূরজাহান আবাসিক হোটেলের সামনে নদীর সঙ্গে দেখা হয় তার ও ছোট খালার। নদী সিএনজিচালিত অটোরিকশায় সেখান থেকে তাদের কল্যাণপুরে নিয়ে যান। এরপর যশোরের বেনাপোলের দুটি টিকিট করে বাসে উঠিয়ে দিয়ে জানান, সকালের দিকে তার লোক এসে তাদের নিয়ে যাবেন।
২০২০ সালের ১৮ ডিসেম্বর রাত সাড়ে ১০টার দিকে হেঁটে হেঁটে সীমান্ত পাড়ি দেন তারা।
ভারতে বিউটি পারলারে কাজের কথা বলে বেঙ্গালুরুর ইলেকট্রনিক সিটির একটি বাসায় সায়মাকে এবং তার খালাকে কেরালার একটি হোটেলে পাঠানো হয়। সেখানে তাদের দুজনের ওপরই যৌন নির্যাতন চালানো হয় বলে মামলায় অভিযোগ করা হয়।
সেখানে হৃদয় বাবু, সাগর, আখিল, রুবেল ওরফে রাহুল, সবুজ বিউটির বাসায় এসে সায়মার বোনকে খুব মারধর করেন।
পরে তাকে ও তার সঙ্গে কয়েকজনকে চেন্নাই, কেরালা ও বেঙ্গালুরুর বিভিন্ন হোটেলে ও ম্যাসেজ সেন্টারে পাঠানো হয়। একপর্যায়ে তার পেটে বাচ্চা আসে।
গত ২ মে বেঙ্গালুরুর একটি ম্যাসেজ সেন্টারের জানালা ভেঙে পালাতে সক্ষম হন। আর ট্রেনে কলকাতা এসে ৬ মে বাংলাদেশে আসেন।
পালিয়ে আসা এই তরুণী জানান, বেঙ্গালুরুতে অবস্থানকালে কৌশলে সবার নাম ও মোবাইল নম্বর সংগ্রহ করে রাখেন।
২২ জন ও ১৪ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা
সায়মার করা মামলায় ২২ আসামির নাম উল্লেখ করা হয়েছে। তারা হলেন নদী, ইসরাফিল হোসেন ওরফে খোকন, তরিকুল, আল-আমিন, আব্দুল হাই ওরফে সবুজ, সাইফুল, তাসলিমা ওরফে বিউটি, বিনাশ শিকদার, আমিরুল, মেম্বার, আনিস, আলম, মেহেদী হাসান বাবু, মহিউদ্দিন, সালাম, বকুল ওরফে ছোট খোকন, পলক মণ্ডল, রিফাদুল ইসলাম হৃদয় ওরফে টিকটক হৃদয়, আখিল, সাগর, রুবেল ওরফে রাহুল ও সবুজ।
হাতিরঝিল থানায় করা আরেক মামলায় টিকটক হৃদয়সহ ১৪ আসামির নাম উল্লেখ আছে। অপর ১৩ জন হলেন ইসরাফিল হোসেন ওরফে খোকন, তরিকুল, আল-আমিন, আব্দুল হাই ওরফে সবুজ, আমিরুল, সাইফুল, পলক মণ্ডল, বকুল ওরফে ছোট খোকন, সাগর, সবুজ, রুবেল ওরফে রাহুল, আখিল ও ডালিম।
নির্বাচন কমিশন কারও কোনো অন্যায় চাপের কাছে নতি স্বীকার করবে না বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন। ত্রয়োদশ জাতীয় নির্বাচন উপলক্ষে উপজেলা নির্বাহী অফিসারদের (ইউএনও) নির্বাচন ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত (টিওটি) প্রশিক্ষণের আয়োজন করা হয়। গতকাল বুধবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচনি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট (ইটিআই)-এ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য সিইসি এ কথা বলেন।
এ এম এম নাসির উদ্দিন উপজেলা নির্বাহী অফিসারদের উদ্দেশে করে বলেন, ‘এই ম্যাসেজটা আপনাদের দিতে চাই যে, আপনারা কোনো চাপের কাছে নতি স্বীকার করবেন না। সম্পূর্ণভাবে আইন অনুযায়ী নিজের সিদ্ধান্তে অটল থাকবেন। আমাদের পক্ষ থেকে সার্বিক সহযোগিতা দেওয়া হবে। নির্বাচন কমিশনও কারও কোনো অন্যায় চাপের কাছে নতি স্বীকার করবে না। তা ছাড়া আমরাও আপনাদের অন্যায় কোনো আদেশ দেব বা হুকুম দেব না। আপনারা ধরে রাখতে পারেন, রিলেভেন্ট টু ইলেকশন (নির্বাচন সম্পর্কিত) যে আইন প্রচলিত আছে সেই আইন অনুযায়ী আমাদের নির্দেশনা যাবে বা আপনারা সেভাবে দায়িত্ব পালন করবেন। একটা সুন্দর ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন উপহার দিতে পারার চেষ্টা করবেন।’
সিইসি বলেন, আমরা কামনা করি, আপনারা আইনসম্মতভাবে, নিরপেক্ষভাবে এবং পেশাদারিত্বের সঙ্গে (প্রফেশনালি) কাজ করবেন। আমরা নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখছি। এই দেশের এই দুরবস্থার মূল কারণ হলো, আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল না থাকা। যে জাতি আইনের প্রতি যতটা শ্রদ্ধাশীল, সেই জাতি তত সভ্য। সভ্য দুনিয়া আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকে। আমাদের এই কালচারটা কাল্টিভেট করতে হবে।’
সিইসি আরও বলেন, ‘আমরা চাই সর্বস্তরের মানুষ আইন মেনে চলবে। আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকবে এবং সর্বক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠা করবে। যে গন্ডির মধ্যে আমার কাজ থাকবে সেখানেই আমি আইনকে বাস্তবায়ন করব। আমরা চাইব আপনারা আইনদের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থেকে আপনাদের দায়িত্ব পালন করবেন।’
সিইসি আরও বলেন, নির্বাচনের মধ্যে সমন্বয়টা একটা বড় জিনিস। আপনারা যেহেতু উপজেলা পর্যায়ে নিয়োজিত আছেন। সমন্বয়ের দায়িত্বটা মূলত আপনাদের উপরে নির্ভর করে। সুতরাং নির্বাচনের সময়ও এই সমন্বয়টা খুবই জরুরি। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, প্রিসাইডিং অফিসার ও কেন্দ্রীয় মনিটরিং সেলের সাথে সমন্বয় করতে হবে। জেলার যে ইলেকশন মনিটরিং সেল থাকবে ওটার সাথে সমন্বয়। এই সার্বিক সমন্বয়টা আপনাদের খুব সিরিয়াসলি করতে হবে। এই দায়িত্বটা আপনাদের কাঁধে নিতে হবে। যেকোনো ক্রাইসিস হলে আপনারা চেষ্টা করবেন শুরুতেই যাতে এটার সমাধান করা যায়।
ইসি সচিবালয়ের সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন আব্দুর রহমানেল মাছউদ, নির্বাচন কমিশনার বেগম তাহমিদা আহমদ, নির্বাচন কমিশনার মো. আনোয়ারুল ইসলাম সরকার এবং নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ।
বেগম তাহমিদা আহমদ বলেন, আমরা সাহসী হব, তবে অতি সাহসী না। অতীতে অতি উৎসাহী হয়ে অনেকে অনেক কিছু করেছেন। এবার এসব করা যাবে না।
তিনি বলেন, আগের প্রশিক্ষণ ভুলে গিয়ে এখন যেই প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে সেটি নিতে হবে। আগের নির্বাচন আমরা সবাই মিলে নষ্ট করেছি।
নির্বাচন কমিশনার মো. আনোয়ারুল ইসলাম সরকার বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনের আপনাদের প্রতি ম্যাসেজ হচ্ছে সামনের নির্বাচন নিয়ে ভয়ের কোনো কারণ নেই। সঠিক কাজ করবেন, ইসি আপনাদের সঙ্গে আছে। কিন্তু উদ্দেশ্যমূলক কোনো কাজ করলে সাংঘাতিক পেরেশানিতে পড়বেন। আর সঠিকভাবে কাজ করার জন্য যা যা সহায়তা লাগে তা আমরা দেব।’
তিনি আরও বলেন, ‘সাহসের সঙ্গে নিরপেক্ষভাবে কাজ করতে হবে। চাকরির মান-মর্যাদা রক্ষার জন্য এবং অস্তিত্বের প্রশ্নে আমাদের না করার কোনো বিকল্প নেই। নির্বাচনের একটা আবহ সৃষ্টি করতে হবে।’
মো. আনোয়ারুল ইসলাম সরকার বলেন, সুশৃঙ্খল পরিবেশ ভালো নির্বাচনের জন্য অপরিহার্য। মোবাইল কোর্ট আয়নার মতো স্বচ্ছ হতে হবে। পক্ষপাতিত্ব করা যাবে না। এখন থেকে মোবাইল কোর্ট রেগুলার করতে হবে। এই নির্বাচনে যারা ভালো দায়িত্ব পালন করবে তাদের জন্য পুরস্কারের ব্যবস্থা করা হবে।
ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ বলেন, ‘নির্বাচন মাঠে যারা আছেন তারা যেন তাদের আচরণবিধি মেনে চলেন। প্রশাসন কঠোরভাবে নিরপেক্ষভাবে কাজ করে যাবে। এবারের নির্বাচনে সমন্বিতভাবে মাঠ প্রশাসন যে, একটা দৃষ্টান্তমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠিত করতে পারি তা আমরা দেখিয়ে দেব।’
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার বলেছেন, তামাকমুক্ত সমাজ গঠনে জনমত ও জনসচেতনতা গড়ে তুলতে হবে। এক্ষেত্রে চিকিৎসকরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারেন।
গতকাল বুধবার রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশ আয়োজিত ‘অসংক্রামক রোগ প্রতিরোধ ও তরুণদের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধনের প্রয়োজনীয়তা, ‘তরুণ চিকিৎসকদের ভূমিকা ও প্রত্যাশা’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
ডা. বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার বলেন, একজন ধূমপায়ী চিকিৎসক রোগীকে ধূমপানে বাঁধা দিলে তিনি গ্রহণ করবেন না। তাই চিকিৎসকদেরকে ধূমপান পরিহার করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শ্রেণিকক্ষে পাঠদানের সময় ও এসেম্বলিতে তামাকের ক্ষতিকারক দিকগুলো তুলে ধরতে হবে। এছাড়া শিক্ষকদের প্রশিক্ষণের সময়েও এ বিষয়ে সচেতনতা গড়ে তুলতে হবে। এ সময় উপদেষ্টা তামাকমুক্ত বিদ্যালয় ক্যাম্পাস গড়ে তুলতে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণের প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
অধ্যাপক ডা. খন্দকার আব্দুল আউয়াল রিজভীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ সেলের কর্মসূচি পরিচালক শেখ মোমেনা মনি, ঢাকার বিভাগীয় কমিশনার সরফ উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী, জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ সেলের মহাপরিচালক মো. আখতারুজ্জামান, সিটিএফকে, বাংলাদেশের লিড পলিসি অ্যাডভাইজার মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন।
ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতাল ও রিসার্চ ইনস্টিটিউটের চিকিৎসক ডা. ফারজানা রহমান মুনমুন অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।
হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় প্রায় ১২ হাজার কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করেছে রপ্তানিকারকদের সংগঠন এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ইএবি)। এই পরিস্থিতিতে অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত পণ্যের বিপরীতে বিমা দাবি দ্রুত নিষ্পত্তি ও বিমার বাইরে করা পণ্যের ক্ষেত্রে সরকারি বিশেষ তহবিল গঠন করে ক্ষতিপূরণ ও সহায়তা নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি।
গতকাল সোমবার রাজধানীর কারওয়ান বাজারে হোটেল সোনারগাঁওয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি জানান ইএবি সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম। সংবাদ সম্মেলনে তৈরি পোশাক, বস্ত্রকল, ওষুধ, চামড়াসহ বিভিন্ন খাতের ব্যবসায়ী নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
লিখিত বক্তব্যে মোহাম্মদ হাতেম বলেন, বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ব্যবসায়ীরা শঙ্কিত। এর মাধ্যমে নিরাপত্তা ব্যবস্থার ব্যাপক দুর্বলতা প্রকাশ পেয়েছে। এ ঘটনায় প্রাথমিকভাবে ১২ হাজার কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়ে থাকতে পারে।
তিনি বলেন, এই অগ্নিকাণ্ডে স্পষ্ট যে কার্গো ভিলেজের নিরাপত্তা ব্যবস্থা কার্যকর নয়। নিরাপত্তা ঘাটতির কারণে কেবল ব্যবসায়িক ক্ষতি নয়, আন্তর্জাতিক ক্রেতাদের কাছেও বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। দীর্ঘদিন ধরে রপ্তানিকারকরা কার্গো ভিলেজে নিরাপত্তাহীনতা, গুদাম ব্যবস্থাপনায় অব্যবস্থাপনা ও মালামাল চুরির অভিযোগ জানিয়ে আসলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেয়নি।
সংবাদ সম্মেলনে ইএবি বলেছে, ওষুধ, তৈরি পোশাক, কৃষিপণ্য, ফলমূল, হিমায়িত খাদ্য ও অন্যান্য রপ্তানিকারক খাত এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এই ঘটনায় বিদেশি ক্রেতারা বাংলাদেশের রপ্তানি পণ্যের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত হতে পারেন, যা ভবিষ্যতে রপ্তানি চুক্তি ও অর্ডারে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে ইএবি সভাপতি বলেন, আগুনের ঘটনাটি যথাযথ গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করতে হবে এবং দ্রুত তদন্ত সম্পন্ন করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে, যাতে ভবিষ্যতে এ ধরনের অঘটন আর না ঘটে।
এ সময় কার্গো ভিলেজের আধুনিকায়ন ও নিরাপত্তা ব্যবস্থার উন্নয়ন, ওষুধ শিল্পের জন্য আলাদা শীততাপনিয়ন্ত্রিত গুদাম স্থাপন, নিরাপদ দূরত্বে রাসায়নিক গুদাম নির্মাণ ও সম্পূর্ণ অটোমেটেড ও আধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর গুদাম ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
উল্লেখ, গত শনিবার দুপুর আড়াইটার দিকে বিমানবন্দরের কার্গো এলাকায় আকস্মিকভাবে আগুন লাগে।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। ফাইল ছবি
আগামী ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজনে সরকারের প্রস্তুতি রয়েছে বলে পুনরায় জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
তিনি বলেন, “আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজনে আমাদের কোনো সমস্যা হবে না। সরকারের সার্বিক প্রস্তুতি রয়েছে।”
আজ সোমবার সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আইনশৃঙ্খলা বিষয়ক কোর কমিটির সভা শেষে আয়োজিত এক ব্রিফিংয়ে তিনি এ কথা বলেন।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা নির্বাচনের সফল আয়োজনের জন্য সংশ্লিষ্ট সকলের সহযোগিতা, বিশেষ করে গণমাধ্যমের সহযোগিতা কামনা করেন।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে বডিওর্ন ক্যামেরা কেনা হবে এবং এ বিষয়ে সরকার ৪০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে।
তিনি আরও বলেন, বিগত তিনটি সাধারণ নির্বাচনে দায়িত্ব পালনকারীদের আগামী সংসদ নির্বাচনে দায়িত্ব থেকে বিরত রাখা হবে। সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে।
হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডসহ সাম্প্রতিক কিছু বড় অগ্নিকাণ্ডের পেছনে নাশকতা আছে কিনা- এমন প্রশ্নে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জানান, এসব ঘটনা তদন্তের জন্য একাধিক কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর আগুন লাগার প্রকৃত কারণ জানা যাবে।
তিনি বলেন, আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে বিদেশে অবস্থিত বাংলাদেশি মিশনগুলোতে ই-পাসপোর্ট সেবা চালু করা হবে।
প্রবাসীদের জন্য পাসপোর্ট ফি কমানো এবং বিমান ও বিমানবন্দরে সর্বোত্তম সেবা প্রদানের বিষয়টি সরকার বিবেচনা করছে বলেও তিনি জানান। সূত্র: বাসস
নির্বাচন কমিশনার ইসি মো. আনোয়ারুল ইসলাম সরকার। ফাইল ছবি
আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগ অংশগ্রহণ করতে পারবে না বলে মন্তব্য করেছেন নির্বাচন কমিশনার ইসি মো. আনোয়ারুল ইসলাম সরকার।
তিনি বলেন, ‘আইনগতভাবে আওয়ামী লীগের কার্যক্রম স্থগিত রয়েছে। স্থগিত দল হওয়া মানে তাদের যাবতীয় কার্যক্রম স্থগিত। তাই আগামী নির্বাচনে তারা অংশগ্রহণ করতে পারবে না।’
তিনি আজ রোববার সকালে সিলেটে সাংবাদিকদের এই কথা বলেন।
নির্বাচন কমিশনার জেলা পুলিশ লাইনে নির্বাচনী দায়িত্ব সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনে পুলিশের দক্ষতা বৃদ্ধিতে আয়োজিত প্রশিক্ষণের উদ্বোধন করেন।
জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)’র প্রতীক সম্পর্কে তিনি বলেন, প্রতীক নির্ধারণ সংবিধান ও নির্বাচনী বিধিমালার আওতায় করা হয়। শাপলা প্রতীক সেই তালিকায় নেই।
তাই তা বরাদ্দ দেওয়ার সুযোগও নেই।
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘নির্বাচন ফেব্রুয়ারিতে না হওয়ার মতো কোনো পরিস্থিতি তৈরি হয়নি। রমজানের আগেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।’
নির্বাচনকে সামনে রেখে সব বাহিনী প্রস্তুত রয়েছে এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি কোনো চ্যালেঞ্জ হিসেবে থাকবে না বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
ইসি আনোয়ারুল বলেন, ‘অতীতের মতো বিতর্কিত নির্বাচন আর হবে না। সবার সহযোগিতায় একটি সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘বিতর্কিত বা প্রশ্নবিদ্ধ কোনো কর্মকর্তা যাতে নির্বাচনী দায়িত্বে না থাকেন, সে বিষয়ে নির্বাচন কমিশন কঠোর অবস্থানে রয়েছে।’ সূত্র: বাসস
ছবি: বাসস
হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণে পাঁচ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, কমিটির আহ্বায়ক করা হয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের যুগ্ম সচিব মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান পাটওয়ারীকে।
অন্য সদস্যরা হলেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের প্রথম সচিব মুঃ রইচ উদ্দিন খান ও মোঃ তারেক হাসান এবং ঢাকা কাস্টম হাউসের যুগ্ম কমিশনার মুহাম্মদ কামরুল হাসান। কমিটির সদস্য সচিব হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন অর্থ মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের উপসচিব পঙ্কজ বড়ুয়া।
কমিটি দ্রুততম সময়ের মধ্যে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ করে সরকারের কাছে প্রতিবেদন দেবে।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডও বিশেষ ব্যবস্থায় ঢাকা কাস্টম হাউসে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম অব্যাহত রাখার উদ্যোগ নিয়েছে। সূত্র: বাসস
গত ১৬ অক্টোবর, ২০২৫ তারিখে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড SRO No-404-Law/2025 এর মাধ্যমে বাংলা ভাষায় প্রণীত আয়কর আইন, ২০২৩ এর Authentic English Text সরকারি গেজেট আকারে প্রকাশ করেছে।
আয়কর অধ্যাদেশ, ১৯৮৪ বাতিল করে ২০২৩ সালে বাংলা আয়কর আইন, ২০২৩ প্রণয়ন করার পর হতেই বিদেশি বিনিয়োগকারীগণ সরকারি গেজেট নোটিফিকেশনের মাধ্যমে আয়কর আইনের Authentic English Text প্রকাশের দাবি জানাচ্ছিলেন।
আয়কর আইনের Authentic English Text না থাকায় বিদেশী বিনিয়োগকারীগণ আইনের সঠিক ব্যাখ্যা ও অনুশীলনের বিষয়ে সংশয়ের মধ্যে থাকতেন এবং বিভিন্ন আইনি জটিলতার সম্মুখীন হতেন।
আয়কর আইনের Authentic English Text সরকারী গেজেটে প্রকাশ হবার ফলে দেশী-বিদেশি বিনিয়োগকারীগণ আয়কর আইন সম্পর্কে স্বচ্ছ ব্যাখ্যা পাবেন বিধায় করদাতাগণের আস্থা অধিকতর বৃদ্ধি পাবে এবং আইন প্রয়োগের ক্ষেত্রে দ্ব্যর্থবোধকতা দূর করে স্বচ্ছতা ও সঠিকতা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।
কাস্টমস আইন, ২০২৩ এবং মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক আইন, ২০১২ এর Authentic English Text সরকারি গেজেটে প্রকাশের প্রক্রিয়া প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে। অচিরেই এই দুটি আইনের Authentic English Text সরকারি গেজেট আকারে প্রকাশের মাধ্যমে দেশি-বিদেশী বিনিয়োগকারীগনের দীর্ঘদিনের অপেক্ষার অবসান ঘটবে মর্মে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড আশা করছে।
মন্তব্য