লক্ষ্মীপুর-২ (সদরের একাংশ ও রায়পুর) আসনে উপনির্বাচনের পাশাপাশি রামগতি ও কমলনগর উপজেলার ছয়টি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন সোমবার। প্রতিটি কেন্দ্রকে ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করে সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ ভোট গ্রহণের লক্ষ্য নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করেছে প্রশাসন। কেউ অপ্রীতিকর কর্মকাণ্ডের চেষ্টা করলে কঠোর হাতে দমনের হুঁশিয়ারী দিয়েছেন জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার।
প্রতিটি কেন্দ্রে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে আইনশৃংখলা বাহিনীর সার্বক্ষণিক টহল নিশ্চিত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন কুমিল্লা আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা দুলাল তালুকদার।
টানা বৃষ্টি উপেক্ষা করে নির্বাচনী কাজে নিয়োজিতরা রোববার দুপুর থেকে উপনির্বাচনের প্রতিটি কেন্দ্রে ভোটের সামগ্রী পৌঁছানো শুরু করেছেন। উপনির্বাচনে ভোট হবে ইভিএমে।
নৌকা প্রতীক নিয়ে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী নুর উদ্দিন চৌধুরী নয়ন এবং লাঙ্গল প্রতীকে জাতীয় পার্টির শেখ মো. ফায়িজ উল্যাহ শিপন উপনির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। বিএনপি এ নির্বাচনে প্রার্থী দেয়নি।
আঞ্চলিক নির্বাচন অফিস জানায়, লক্ষ্মীপুর-২ আসনে ভোটার সংখ্যা ৪ লাখ ২ হাজার ৯২৩ জন। এর মধ্যে পুরুষ ২ লাখ ৪ হাজার ৪৬০ জন এবং নারী ভোটার ১ লাখ ৯৮ হাজার ৪৬৩ জন। কেন্দ্রের সংখ্যা ১৩৬টি।
সোমবার সকাল ৮ থেকে ভোটগ্রহণ শুরু হয়ে টানা বিকেল ৪টা পর্যন্ত চলবে।
নির্বাচনী এলাকার লোকজন জানান, উপনির্বাচন ও ইউপি নির্বাচন নিয়ে তেমন আগ্রহ নেই ভোটারদের। তবুও যারা কেন্দ্রে যাবেন তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের দাবি জানিয়েছেন ভোটাররা।
জাতীয় পার্টির প্রার্থী শেখ ফয়েজের অভিযোগ, আওয়ামী লীগ প্রার্থীর কর্মীরা তার নেতাকর্মীদের হুমকি-ধামকি দিচ্ছেন। তার কর্মীদের ভোটকেন্দ্র যেতে নিষেধ করা হয়েছে। তারপরও নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াবেন না তিনি। শেষ পর্যন্ত মাঠে থাকবেন বলে জানিয়েছেন।
ভোটারদের মাঝে কোন ধরনের ভয়ভীতি নেই উল্লেখ করে আওয়ামী লীগ প্রার্থী নুর উদ্দিন জানান, মানুষের মাঝে ভোটের আমেজ দেখা দিয়েছে। কখন ভোটাররা কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দিবেন, সে অপেক্ষা করছে মানুষ। বিজয়ের ব্যাপারে শতভাগ আশাবাদী তিনি।
এ দিকে রামগতি ও কমলনগর উপজেলার ছয় ইউনিয়ন পরিষদে ভোটগ্রহণ হচ্ছে একই দিনে। কমলনগরের তোরাবগঞ্জ, চরফলকন, হাজিরহাট এবং রামগতির চরবাদাম, চরপোড়াগাছা ও চররমজি ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে ৪০ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। মোট ভোটার এক লাখ ২৩ হাজার ৩১৪।
বিএনপি ইউপি নির্বাচনে অংশ না নিলেও ছয় ইউনিয়নে রয়েছে আওয়ামী লীগের একাধিক বিদ্রোহী প্রার্থী। নির্বাচনী এলাকার লোকজন জাজান, আওয়ামী লীগ মনোনীত ও বিদ্রোহী প্রার্থীদের নিয়ে নেতাকর্মীদের মধ্যে রয়েছে বিরোধ। প্রার্থীরা একে অপরের বিরুদ্ধে হামলা, পাল্টা হামলা ও হুমকি-ধামকির অভিযোগ তুলেছেন। প্রতিটি ইউনিয়নে প্রচার-প্রচারণা ও গণসংযোগে হামলার ঘটনা ঘটেছে একাধিকবার।
তোরাবগঞ্জ ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী চেয়ারম্যান প্রার্থী ফয়সাল আহমদ রতনের অভিযোগ, আওয়ামী লীগের প্রার্থী মির্জা আশ্রাফুল জামাল রাসেলের সমর্থকদের হামলা-মামলার ভয়ে তার কর্মীরা আত্মগোপনে চলে গেছেন। সুষ্ঠু ভোটের বিষয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী ও স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থীরা।
তবে হামলা-মামলাসহ ভয়ভীতি দেখানোর অভিযোগ অস্বীকার করে আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান প্রার্থী মির্জা আশ্ররাফুল উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে নৌকায় ভোট চেয়েছেন। তিনি জানান, বিজয় হলে এলাকায় উন্নয়নমূলক কাজ অব্যাহত থাকবে। বন্ধ হবে চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসী।
একই কথা বলছেন অন্য উপজেলায় আওয়ামী লীগ মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থীরা।
লক্ষ্মীপুর-২ আসনে উপনির্বাচনে রিটার্নিং অফিসার ও কুমিল্লা আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা দুলার তালুকদার জানান, অবাধ ও শান্তিপূর্ণ ভোট গ্রহণের সব ধরনের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। প্রতিটি কেন্দ্র ঝুঁকিপূর্ণ বিবেচনা করে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। প্রতিটি কেন্দ্রে আইনশৃংখলা বাহিনীর পাশাপাশি নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োজিত রয়েছেন।
লক্ষ্মীপুরের জেলা প্রশাসক (ডিসি) আনোয়ার হোছাইন আকন্দ ও পুলিশ সুপার (এসপি) ড. এএইচ এম কামরুজ্জামান জানান, ভোটাররা যেনো নিরাপদে কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দিতে পারে, সে ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হয়েছে। সে অনুযায়ী আইনশৃংখলা রক্ষা বাহিনী ও নির্বাহী ম্যাজিস্টেটরা প্রস্তুত আছেন।
কেউ কোন ধরনের অপ্রীতিকর কর্মকাণ্ডের চেষ্টা করলে কঠোর হাতে দমন করা হবে বলে হুঁশিয়ারী দেন ডিসি-এসপি।
২০১৮ সালে আওয়ামী লীগের সমর্থন নিয়ে লক্ষ্মীপুর-২ আসন থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী কাজী শহিদ ইসলাম পাপুল সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। গত ২৮ জানুয়ারি মানব ও অর্থ পাচারের দায়ে পাপুলকে চার বছরের সশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেয় কুয়েতের আদালত। একই সঙ্গে তাকে ১৯ লাখ কুয়েতি রিয়াল জরিমানা করা হয়। এরপর আপিলে সাজা তিন বছর বাড়িয়ে সাত বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়।
২৩ ফেব্রুয়ারি পাপুলের সংসদ সদস্য পদ বাতিল করে গেজেট প্রকাশ করে সংসদ সচিবালয়। ৩ মার্চ লক্ষ্মীপুর-২ আসনের উপনির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন।
আরও পড়ুন:অধূমপায়ীদের সুরক্ষা এবং তামাকের ক্ষতিকর প্রভাব মোকাবেলায় মৎস্য অধিদপ্তরের অফিস প্রাঙ্গণ শতভাগ তামাকমুক্ত রাখার বিষয়ে করণীয় নির্ধারণে এক মতবিনিময় সভার আয়োজন করে তামাক বিরোধী সংগঠন তাবিনাজ (তামাক বিরোধী নারী জোট)। সভাটি আজ বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫) মৎস্য অধিদপ্তরের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় সভাপতিত্ব করেন মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মোঃ আব্দুর রউফ। এতে আরও উপস্থিত ছিলেন পরিচালক (প্রশাসন), পরিচালক (অভ্যন্তরীণ মৎস্য), প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা, উপপরিচালক, সিনিয়র সহকারী পরিচালক, সহকারী পরিচালক ও উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তাসহ প্রায় ৪০ জন কর্মকর্তা।
মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ আতাউর রহমান মাসুদ। তিনি তামাকজাত দ্রব্যের ভয়াবহ ক্ষতিকর দিক এবং এর বহুমুখী প্রভাব নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন। তাবিনাজের পরিচালক সীমা দাস সীমু তার বক্তব্যে ধোঁয়ামুক্ত ও ধোঁয়াযুক্ত তামাকজাত দ্রব্য এবং গবেষণালব্ধ তথ্য তুলে ধরেন। তাবিনাজ কর্মী শারমিন কবীর বীণা গ্রামীণ তামাক চাষ ও এর ক্ষতিকর দিক নিয়ে আলোকপাত করেন।
উন্মুক্ত আলোচনায় অংশগ্রহণকারীরা অফিস প্রাঙ্গণ শতভাগ তামাকমুক্ত রাখতে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশ ও কর্মপরিকল্পনা দেন।
সুপারিশসমূহ:
১. অফিস প্রাঙ্গণে ধূমপানের জন্য কোনো স্মোকিং জোন থাকবে না।
২. ক্যান্টিনে তামাকজাত দ্রব্য বিক্রি সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ করা হবে।
৩. দেশব্যাপী মৎস্য অধিদপ্তরের সকল অফিস প্রাঙ্গণকে শতভাগ তামাকমুক্ত এলাকা হিসেবে ঘোষণা করা হবে।
৪. সকল অফিস প্রাঙ্গণে ‘তামাকমুক্ত এলাকা’ লেখা সম্বলিত সাইনেজ প্রতিস্থাপন করা হবে।
সভায় উপস্থিত কর্মকর্তারা তামাকমুক্ত পরিবেশ গড়ে তোলার প্রয়াসে সর্বাত্মক সহযোগিতা অব্যাহত রাখার আশ্বাস প্রদান করেন।
অধিভুক্ত কলেজের শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যতের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় দক্ষ মানবসম্পদ হিসেবে গড়ে তুলতে স্নাতকে (অনার্স) তথ্য প্রযুক্তি ও ইংরেজি বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
আধুনিক পাঠ্যক্রম প্রণয়নের পাশাপাশি তা বাস্তবায়নে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে প্রয়োজনীয় সহায়তা ও শিক্ষার্থীদের সহযোগিতা দেওয়া হবে।
রাজধানীর মোহাম্মদপুর কেন্দ্রীয় কলেজে গতকাল বুধবার জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় ও সরকারের এটুআই প্রকল্পের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম আমানুল্লাহ এসব কথা বলেন।
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন শিক্ষাক্রমের আইসিটি বিষয়ের ‘টিচিং, লার্নিং অ্যান্ড অ্যাসেসমেন্ট স্ট্র্যাটেজি’ শীর্ষক এ কর্মশালার প্রথম সেশনে সভাপতিত্ব করেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব ও এটুআই প্রোগ্রামের প্রকল্প পরিচালক মো. রশিদুল মান্নাফ কবীর।
উপাচার্য বলেন, কলেজগুলোতে তথ্য প্রযুক্তি শিক্ষাদানে শিক্ষক সংকটসহ নানা সমস্যা রয়েছে। এ বিষয়ে সহায়তার জন্য জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় দেশের সব টেকনিক্যাল কলেজ ও কম্পিউটার কাউন্সিলের সাথে আলোচনা করছে।
তিনি আরও বলেন, দেশের কলেজ শিক্ষার্থীদের মেধার ঘাটতি নেই। সঠিক দিকনির্দেশনা পেলে তারা সহজেই তথ্য প্রযুক্তিতে দক্ষ হয়ে উঠবে।
শিক্ষার্থীদের জন্য আধুনিক, সময়োপযোগী ও কর্মমুখী তথ্য প্রযুক্তি পাঠ্যক্রম প্রণয়নে সরকারের এটুআই প্রোগ্রাম ও শিক্ষাবিদদের প্রতি আহ্বান জানান অধ্যাপক এ এস এম আমানুল্লাহ।
কর্মশালার দ্বিতীয় সেশনে সভাপতিত্ব করেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. নুরুল ইসলাম।
দিনব্যাপী এ কর্মশালায় দেশের বিভিন্ন কলেজের ৮টি বিভাগের ৪০ জন তথ্য প্রযুক্তি ও বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক অংশগ্রহণ করেন। প্রশিক্ষক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, ড. নাজমা তারা এবং মির্জা মোহাম্মদ দিদারুল আনাম।
এছাড়া জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন দপ্তরের পরিচালক ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে উপদেষ্টা পরিষদের সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়।
আজ ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫ তারিখ দুপুর ১২টায় বেবিচক সদরদপ্তরে বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক) এর চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মোঃ মোস্তফা মাহমুদ সিদ্দিক, বিএসপি, জিইউপি, এনডিসি, এএফডব্লিউসি, এসিএসসি, পিএসসি (Air Vice Marshal Md Mostafa Mahmood Siddiq, BSP, GUP, ndc, afwc, acsc, psc) এর সাথে পাকিস্তান সিভিল এভিয়েশন অথরিটির মহাপরিচালক জনাব নাদির শাফি দার (Mr. Nadir Shafi Dar) এক সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন।
সাক্ষাৎকালে বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যে সরাসরি বিমান চলাচল পুনঃস্থাপন বিষয়ে ফলপ্রসূ মতবিনিময় হয় এবং উভয় পক্ষই এ বিষয়ে আগ্রহ প্রকাশ করেন। বৈঠকে ভবিষ্যতে বিমান চলাচল খাতে প্রযুক্তি ও অভিজ্ঞতা বিনিময়, সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং পারস্পরিক সহযোগিতার ক্ষেত্রগুলো আরও সুদৃঢ় করার ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়।
উভয় পক্ষ আশা প্রকাশ করেন যে, বিমান চলাচল পুনঃস্থাপন হলে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য, পর্যটন ও জনগণের পারস্পরিক যোগাযোগ আরও বৃদ্ধি পাবে।
এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন বেবিচক এর উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাবৃন্দ এবং PIA এর CEO ।
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনার জন্য প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস আজ বিকেল ৫টায় সাতটি রাজনৈতিক দল ও একটি সংগঠনের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন।
রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং জানিয়েছে, বৈঠকে অংশ নেন- এবি পার্টি, নাগরিক ঐক্য, গণসংহতি আন্দোলন, গণঅধিকার পরিষদ, এলডিপি, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, জাতীয় গণফ্রন্ট এবং হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ।
এরআগে গত রোববার প্রধান উপদেষ্টা বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী ও এনসিপি’র সঙ্গে বৈঠক করেন।
ধারাবাহিক এই বৈঠক আসন্ন নির্বাচনের প্রস্তুতিতে গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি হিসেবে দেখা হচ্ছে।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-৩ গঠন করা হতে পারে বলে জানিয়েছেন আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল।
আজ সকালে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের ভবন ও সংলগ্ন এলাকা পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি।
এ সময় আইন উপদেষ্টা বলেন, মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছি আমরা। বিগত সরকারের হত্যা, গুম, নির্যাতনসহ সব ধরনের অপরাধের বিচারের বিষয়ে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
আইন উপদেষ্টা বলেন, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ভবন সংলগ্ন টিনশেড ভবন খালি হয়ে গেলে আমরা আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-৩ গঠন করতে পারি। এটি করা গেলে গুমসহ অন্যান্য আন্তর্জাতিক অপরাধের বিচার কাজ দ্রুত করা যাবে।
তিনি আরো বলেন, মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলা নিয়ে বেশ আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করছেন আমাদের বিচারকসহ প্রসিকিউশন ও তদন্ত টিম।
আইন উপদেষ্টা বলেন, দেশের ও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের স্বার্থে আমাদের যে ন্যায়বিচার আছে, আইনের শাসন আছে ও মানবাধিকার আছে এটাকে প্রতিষ্ঠিত করার স্বার্থে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে এক হাজারেরও বেশি ছাত্র-জনতাকে হত্যা এবং হাজারও মানুষকে পঙ্গু করার ভয়াবহ মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার অপরিহার্য-অনিবার্য। সেই বিচারকার্যের প্রথম থেকেই আমরা অবিচল আছি। বিচারের যে গতি আছে সেটা নিয়েও আমরা সন্তুষ্ট আছি।
অন্তর্বর্তী সরকারের আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল ও গণপূর্ত উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ভবন আজ পরিদর্শন করেন। এসময় তাদের সঙ্গে অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলামসহ অপর প্রসিকিউটররা উপস্থিত ছিলেন।
২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, এর দলীয় ক্যাডার ও সরকারের অনুগত প্রশাসনসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে একের পর এক অভিযোগ জমা পড়ে। দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে এসব অপরাধের বিচার কাজ চলছে।
অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠানে জনগণই মুখ্য ভূমিকা রাখবে বলে মন্তব্য করেছেন স্বরাষ্ট্র ও কৃষি উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল মোঃ জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী (অব.)।
উপদেষ্টা আজ সিলেট জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে এক মতবিনিময় সভায় এ কথা বলেন।
মতবিনিময় সভায় সিলেট বিভাগের সকল জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার, র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব), বাংলাদেশ বর্ডার গার্ড (বিজিবি), আনসার-ভিডিপি, কারা অধিদপ্তর, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তর, ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তর, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর এবং কৃষি মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন সিলেট জেলার বিভিন্ন দপ্তর ও সংস্থার কর্মকর্তাবৃন্দ অংশগ্রহণ করেন।
উপদেষ্টা বলেন, একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের মাধ্যমে রাজনৈতিক সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করে জনগণের আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নই বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান লক্ষ্য। তিনি বলেন, নির্বাচন সুষ্ঠু করতে মাঠ প্রশাসন ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য শুধু নির্বাচন কমিশনের প্রস্তুতি যথেষ্ট নয়, মাঠ প্রশাসন ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে যথাযথ প্রস্তুতি নিতে হবে। জনগণ যেন নির্ভয়ে নির্বাচন কেন্দ্রে উপস্থিত হয়ে ভোট প্রদান করতে পারে সেরকম পরিবেশ তৈরি করতে প্রশাসন এবং আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে একযোগে কাজ করতে হবে। সকলের সহযোগিতায় সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভবপর হবে।
পুলিশসহ বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিয়োগ ও পদায়ন সম্পর্কে উপদেষ্টা বলেন, এবার বিভিন্ন বাহিনীর নিয়োগ প্রক্রিয়া ও পদায়ন অনেক স্বচ্ছ হয়েছে। তাই সবাইকে নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালন করতে হবে। মাদককে দেশের সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থার জন্য অন্যতম হুমকি উল্লেখ করে তিনি আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে মাদক ব্যবসায়ীদের প্রতি জিরো টলারেন্স দেখানোর নির্দেশনা দেন। এছাড়া পরিবেশ রক্ষায় সিলেটের পাথরখেকোদের বিরুদ্ধে সবসময় সজাগ থাকার কথা বলেন।
দেশের সার্বিক অর্থনীতিতে কৃষির গুরুত্ব তুলে ধরে লেফটেন্যান্ট জেনারেল মোঃ জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী (অব.) বলেন, কৃষকরাই এদেশের খাদ্য নিরাপত্তার মূল কারিগর। তাই উৎপাদন বাড়ানোর পাশাপাশি কৃষকেরা যেন তাদের উৎপাদিত পণ্যের ন্যায্যমূল্য পায় সেটি নিশ্চিত করতে হবে। উপদেষ্টা এসময় পতিত কৃষিজমিগুলো আবাদের আওতায় আনার জন্য সংশ্লিষ্টদের আহ্বান জানান।
সভায় উপস্থিত কর্মকর্তাবৃন্দ সিলেটের সার্বিক আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি ও এর চ্যালেঞ্জগুলো তুলে ধরে বিভিন্ন মতামত প্রদান করেন। উপদেষ্টা সকল চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় যৌক্তিক পদক্ষেপ নেওয়ার আশ্বাস প্রদান করেন। মতবিনিময় সভা শেষে উপদেষ্টা উপস্থিত সাংবাদিকদের ব্রিফিং করেন।
উপদেষ্টা এর আগে বিজিবি'র সিলেট সেক্টর হেডকোয়ার্টার্স এবং সিলেট পুলিশ লাইন পরিদর্শন করেন।
মন্তব্য