গত বুধবার রাতে ঘটে যাওয়া ভয়াবহ নির্যাতনের কথা বলতে গিয়ে বারবার বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছিলেন বাংলা চলচ্চিত্রের জনপ্রিয় তারকা পরীমনি।
তিনি ঘটনার কথা বলতে গিয়ে বারবার বলতে থাকেন, ‘আমি বলতে পারতেছি না, আমি বলতে পারতেছি না।’
মিনিট ১৫ কথা বলেছেন পরী। এর মধ্যে তিনি কতবার কেঁদেছেন, তার হিসাব নেই। কখনও কেঁদেছেন নীরবে, কখনও ডুকরে।
রোববার রাতে পরীমনি তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগ এনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্দেশে একটি চিঠি পোস্ট করেন।
সেখানে কে তাকে ধর্ষণ ও হত্যার চেষ্টা করেছেন, সে বিষয়ে কিছু জানাননি।
পরে রাত ১০টার দিকে গণমাধ্যমকর্মীরা হাজির হন তার বনানীর বাসায়।
তিনি জানান, বুধবার রাত ১২টার সময় তিনি তার পূর্বপরিচিত অমি এবং কস্টিউম ডিজাইনার জিমিকে নিয়ে আশুলিয়ার বিরুলিয়ায় যান।
কেন গিয়েছিলেন, এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘কাজের ব্যাপারে গিয়েছিলাম। অমি অনেক দিন থেকেই বলছিল একটা কাজ করতে হবে। কিন্তু সময়ের কারণে কাজের ব্যাপারে কথা বলতে পারছিলাম না। কিন্তু শেষ পর্যন্ত পরিচিত বলে কাজের জন্য কথা বলতে রাজি হই।’
বোট ক্লাবে যাওয়ার পরেই ঘটনা মোড় নেয় অন্যদিকে।
সেখানে আগে থেকে উপস্থিত ছিলেন চার থেকে পাঁচ ব্যক্তি। তারা বসতে বলে প্রথমে কফি ও পরে কোক খাওয়ার প্রস্তাব দেন।
কফি আসতে দেরি হচ্ছে বলে দেয়া হয় কোক। কিন্তু সেই কোকের স্বাদ ছিল সন্দেহজনক।
ক্লাবের ভেতরে থাকা ‘মুরব্বি’ গোছের একজন নিজের নাম নাসির উদ্দিন আহমেদ বলে জানান। পরীমনি বলেন, তারা কথাবার্তার একপর্যায়ে তার মুখে মদের বোতল ঠেলে দেন। জিমিকে মারধর করেন ব্যাপকভাবে।
সঙ্গে থাকা জিমিকে নির্যাতন করা হয় বলেও আকার-ইঙ্গিতে বলেন পরী। বলেন, এরপর তাকেও নানা আজেবাজে কথা বলা হয়েছে। একপর্যায়ে সেখানে কী হয়েছে, সেটা তার মনে নেই।
এরপর তিনি নিজেকে খুঁজে পান তার গাড়িতে। তখন তার গায়ের কাপড় ছিল ছেঁড়া ও ভেজা।
পরীমনির আশঙ্কা, যিনি তাকে কাজের কথা বলে নিয়ে গিয়েছিলেন সেই অমি এর সঙ্গে জড়িত। আর পুরোটাই পরিকল্পিত।
যা যা হয়েছে
ক্লাবে যাওয়ার পর কী হয়েছে, সেটা জানান পরীমনি।
বলেন, ‘একটু মুরব্বি ধরনের মানুষ। আমি দাদা বলে সম্বোধন করে সালাম দিলাম।
‘আমাদেরকে বসতে বললেন। আমরা ওই রকম পরিবেশে বসার জন্য প্রিপেয়ার্ড ছিলাম না।
‘জিমি আমাকে বলে, দায়িত্ব আমার, আমি কথা বলছি ওদের সাথে। অন্য একদিন বসব।’
ওদের একজন তখন বলেন, ‘আরে বসেন না, গ্লাস দাও, এই সেই।’
পরী বলেন, ‘আম্মু অসুস্থ যাই।’
এরপর তাদেরকে বলা হয়, ‘ঠিক আছে, কফি খাও।
‘বলছে (ওয়েটারদের) কফি নিয়া আস।’
পরী বলেন, ‘বললাম ঠিক আছে কফি খাওয়া যায়। আমি বসে আছি। কিন্তু দেরি হচ্ছিল।
‘তখন বারবার বলছি, আরেক দিন কফি খাব, কোনো সমস্যা নাই।…কফির আগে কোক চলে আসে। কোকটা ওরা গ্লাসে ঢালে।‘
সেই কোকে কিছু একটা মেশানো ছিল বলে ধারণা পরীর। বলেন, ‘এটা কোক, কিন্তু কেমন লাগতেছে! কফিও চলে আসে।
‘কফি আবার দুইটা কাপের মধ্যে মিলানো হয়। জিমি ফার্স্ট টাইম কফি আর পরে কোক ট্রাই করে। বলে, এটা কেমন জানি।’
জিমি তখন বলেন, ‘আপু তুমি দেখ এটা কফি না।’
পরী বলেন, ‘আমি মুখে নিয়ে.. টিস্যু ছিল সামনে, টিস্যুতে মুখটা মুছি।’
তখন তারা রিঅ্যাক্ট করে। বলে, ‘এটা বোট ক্লাবের কফি, মুছে ফেললেন?’
পরী তখন ‘স্যরি' বলেন।
জিমি তখন বলেন তিনি, বাথরুমে যাবেন।
পরী বলেন, ‘আমাকে বসায়ে রেখে বলে, আরে আপনি কেন যাবেন, এমন বলে জিমিকে নিয়ে দুইজন বাথরুমে গেল।
‘কয়েক মিনিট পরে জিমি চিল্লাতে চিল্লাতে বাথরুম থেকে বের হলো।
‘ওইটা দেখার পর আমি আর কোনো কথা বলতে পারি নাই’ এটুকু বলে কাঁদতে থাকেন পরীমনি। কিছুক্ষণ নীরবে কাঁদেন। পরে কাঁদতে থাকেন উচ্চৈঃস্বরে।
বলেন, ‘(জিমিকে দেখে) কেউ বলতে পারত না। আমি শকড হয়ে গিয়েছিলাম। আমি বসেছিলাম।‘
জিমি তখন পরীকে বলেন, ‘আপি চলো, আপি চলো, আমাকে বাসায় নিয়ে যাও।’
পরী বলেন, ‘ওর অবস্থা আমি আপনাদেরকে বলতে পারতেছি না ভাইয়া,’ এটা বলে আবার কাঁদতে থাকেন।
একপর্যায়ে চিৎকার করে কাঁদতে কাঁদতে পরী বলতে থাকেন, ‘যখন আমি উঠে চলে আসতেছি, তখন আমার চেয়ারের ওপরে চেয়ারে… চেয়ারের মধ্যে লাত্থি মেরে… আমি চলে আসি পেছনে।’
কিছুক্ষণ থেমে আবার কাঁদতে কাঁদতে তিনি বলেন, ‘লাইনগুলো কীভাবে বলতে হবে, আমি না আসলে বলতে পারতেছি না।’
এরপর পরী আবার উচ্চৈঃস্বরে কাঁদতে থাকেন। চিৎকার করে বলতে থাকেন, ‘আমি বলতে পারতেছি না, আমি বলতে পারতেছি না।’
পরে আবার বলেন, ‘আমি কারে বলব?’
তখন পরীকে বলা হয়, ‘তুই কি মদ খাস না?’
পরী আবার বলেন, ‘আমি বলতে পারতেছি না, ভাইয়া আমাকে মাফ করেন।’
‘আম্মু আমি পারব না’-পাশে থাকা নির্মাতা চয়নিকা চৌধুরীকে লক্ষ্য করে বলেন পরীমনি।
চয়নিকা বলেন, ‘না বললে তো ওরা জানবে না।’
পরী বলেন, ‘আমি কেমনে বলব? এটা ওরা বুঝছিল যে আমি বলতে পারব না, আমি চুপ হয়ে যাব। আমি কেমনে বলব?’
সেদিনের ঘটনায় আবার ফিরে যান পরীমনি।
বলেন, ‘চেয়ারের ওপরে এখানে পা তুলে দিছে। আমার দাঁত এখনও নড়তেছে। এখনও ব্যথা, বোতল মুখে ভরে দিছে, মদ খাইতে হবে।’
আবার কাঁদতে কাঁদতে বলেন, ‘আমার নাক দিয়া বের হইছে।’
সে সময় পরীকে হত্যার হুমকি দেয়া হয় বলে জানান তিনি। বলেন, ‘বলছে, এইখানে ডোবা আছে, কাইটা তিন শ টুকরা কইরা ভাসায়া দিব।
‘বেনজীর আহমেদ তোর বাপ লাগে? তোরে বাঁচাইব? তোর বেনজীর আহমেদরে ফোন দে’- এই কথা বলে সেই ব্যক্তি তার ফোন ছুড়ে মারেন পরীমনির দিকে।
এর আগে সঙ্গে থাকা জিমির ফোন তারা ফেলে দেয়। কারণ, তিনি ভিডিও করছিলেন।
পরী বলেন, ‘জিমিরে অনেক মারছে ভাইয়া।’
তখন জিমিকে উদ্দেশ করে আজেবাজে কথা বলা হয়।
পরী বলেন, ‘এই কে এই হিজড়া-জিমিকে এসব এসব কথা বলছে।
‘বলে বামেরটা ভালো লাগে, ডানেরটা ভালো লাগে?’
পরীমনি তখন বলেন, ‘আমি বলতে পারব না, মারেন, মারেন, মাইরা ফালান না কেন। আমি অ্যাকটিং করি। আমাকে মাইরা ফেলেন ভাইয়া, এই দিন আমি দেখতে চাই না। আমি জানি না এই দিন আসবে। আমারে মাইরা ফেলেন ভাই।’
পরীমনি বলেন, তাকে বলা হয়, ‘ন্যাকামি করস, ন্যাকামি করস?
‘এখানে খাইতে পারবি না, নিতে পারবি না, কী কী বলছে, আমি না বলতে পারতেছি না ভাইয়া, আমার বলতে ইচ্ছা করতেছে না, আমি বলতে পারতেছি না’-এটা বলে আবার ডুকরে কাঁদতে থাকেন পরীমনি।
পরে বলেন, ‘আপনারা ৫ মিনিট কেমনে দেখতেছেন। আমি চার দিন ধরে.. আমি পাগল হয়ে গেছি ভাইয়া। আমি সুস্থ নাই মানসিকভাবে। আমি না পাগল হয়ে গেছি ভাইয়া, আমি পাগল হয়ে গেছি। আমার জায়গায় থাকলে আপনারা কেউ কথা বলতে পারতেন না।’
কে সেই ব্যক্তি
পরীমনি বলেন, ‘নাসির উদ্দিন মাহমুদ।’
উত্তরা বোট ক্লাবের ওয়েবসাইটে গিয়ে নাসির উদ্দিন আহমেদ নামে একজনকে পাওয়া যায়। তিনি সেই ক্লাবের সাবেক প্রেসিডেন্ট।
নাসির জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য। তিনি কুঞ্জ ডেভেলপার্স লিমিটেডের চেয়ারম্যান। উত্তরা ক্লাব লিমিটেডের ২০১৪-১৫ ও ২০১৫-১৬ সালে প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি। ছিলেন লায়ন ক্লাব ইন্টারন্যাশনালের ডিস্ট্রিক্ট চেয়ারম্যান।
তার সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
নাসির উদ্দিনকে আগে থেকে চিনতেন কি না, এমন প্রশ্নে পরীমনি বলেন, ‘না, না না না না।’
তিনি যে নাসির উদ্দিন সেটা কীভাবে জানলেন, এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘এটা উনি বলছে। উনি বলছে আমি এই ক্লাবের প্রেসিডেন্ট, এই খানের প্রেসিডেন্ট।
‘অকথ্য ভাষায় কী কী বলছে, আমি বলতে পারতেছি না ভাইয়া, আমি এই করব, সেই করব, দেখি তোকে কে আটকায়?’
আপনি কি এর আগে কখনও দেখেছেন?-এমন প্রশ্নে পরীমনি বলেন, ‘আমি তো জানতামই না যে সেখানে তারা থাকে।’
সেখান থেকে মুক্তি কীভাবে
পরীমনি জানেন না, কীভাবে তিনি সেখান থেকে এসেছেন।
তিনি জানান, রাতে একপর্যায়ে তিনি নিজেকে তার গাড়িতে আবিষ্কার করেন।
পুলিশের সহযোগিতা মেলেনি
পরীমনি জানান, তিনি সে সময় জরুরি নম্বর ৯৯৯-এ কল দেন। তখন সেখান থেকে ঠিকানা জানতে চাওয়া হয়।
পরী তাদের বলেন, ‘উত্তর থানা না দক্ষিণ থানা আমি জানি না। এটা বোট ক্লাব।’
তবে পুলিশ যায়নি।
এরপর তিনি বাসায় চলে আসেন। সেখানে কথা বলেন তার মামা দিপুর সঙ্গে।
তিনি বলেন, বাসায় এসে দিপুকে তিনি থানায় নিয়ে যেতে বলেন।
বনানী থানায় গিয়েও প্রত্যাশিত সহযোগিতা না পাওয়ার অভিযোগ করেন পরী।
তিনি অভিযোগ দিতে গেলে পরে কী হয়েছে, এমন প্রশ্নে পরী বলেন, ‘আমাকে বলা হয়েছে, স্যার ১০টায় আসবেন।
‘আমি বলছি আমি ফিজিক্যালি আনফিট। আমি ঠিক নাই ভাইয়া, আমাকে কী কী খাওয়ানো হয়েছে আমি জানি না। আমার না অস্থির লাগতেছিল। আমার কেমন লাগতেছিল আমি নিজেই বুঝতে পারতেছিলাম না।’
এরপর পুলিশকে হাসপাতালে নেয়ার অনুরোধ করেন পরী। বলেন, ‘হসপিটালে নিয়ে যান আমাকে; টেস্ট করার জন্য। পয়জন খাওয়ালে তো আমি মরে যাব, আমাকে সেভ করেন।’
পরীকে সেখান থেকে নেয়া হয় বসুন্ধরা এলাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে। কিন্তু সেখানে তাকে রেখে পুলিশ চলে আসে।
পরে পরী ভয় পেয়ে সেখান থেকে চলে আসেন।
বলেন, ‘তখন আমি ভয় পেয়েছিলাম। আমি সেখানে গিয়ে কী করব? যদি আমাকে ইনজেক্ট করে মেরে ফেলা হয়?...উল্টাপাল্টা চিন্তা আসছে। হতে পারে ড্রাগের কারণে।’
কী বলছে বনানী থানা?
পরীমনির এই অভিযোগ নিয়ে বনানী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নূরে আজমের সঙ্গে একাধিকবার কথা হয়েছে নিউজবাংলার।
পরীমনি যে তার থানায় গিয়েছিলেন, সেটি প্রথমে তিনি স্বীকারই করেননি। প্রথমে বলেন, তিনি খোঁজ নিয়ে জানাবেন।
পরে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘না, থানায় এ বিষয়ে কোনো অভিযোগ আসে নাই।’
আরও পড়ুন:মুক্তির আগ থেকেই তুমুল আলোচনায় ছিল ভারতের দক্ষিণের কন্নড় সিনেমা কেজিএফ চ্যাপ্টার টু।
যেমনটি আলোচনায় ছিল, বাস্তবেও ঠিক তেমনই ঘটছে। গত ১৪ এপ্রিল মুক্তির পর থেকেই বক্স অফিসে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে কেজিএফ টু।
ইতোমধ্যে হিন্দি ভার্সনে রেকর্ড গড়েছে সিনেমাটি। ৭ দিনে ২৫৫ কোটি রুপি আয় করেছে। যা বাহুবলি টুর রেকর্ডও ভেঙেছে।
হিন্দি ছাড়াও সিনেমাটি কন্নড়, তেলেগু, তামিল ও মালায়ালাম ভাষায় মুক্তি পেয়েছে। সব মিলিয়ে প্রথম সপ্তাহের শেষে সিনেমাটি বিশ্বব্যাপী ৭০০ কোটি রুপির বেশি ব্যবসা করেছে।
ভারতীয় চলচ্চিত্র বাণিজ্য বিশ্লেষক মনোবালা বিজয়বালান বৃহস্পতিবার দুপুরে এক টুইটে এ তথ্য জানিয়েছেন।
#KGFChapter2 ZOOMS past ₹700 cr milestone mark.
— Manobala Vijayabalan (@ManobalaV) April 21, 2022
২০১৮ সালের শেষের দিকে মুক্তি পায় প্রশান্ত নীল পরিচালিত এই ফ্র্যাঞ্চাইজির প্রথম সিনেমা কেজিএফ চ্যাপ্টার ওয়ান।
মুক্তির পর শুধু ভারতে নয়, বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে থাকা ভারতীয় সিনেমাপ্রেমীদের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলেছিল এটি। বক্স অফিসে গড়েছিল ইতিহাস।
গ্যাংস্টারদের নিয়ে গল্পের এই সিনেমায় দুর্দান্ত মারকুটে অভিনয় দিয়ে পুরো ভারত মাতিয়েছিলেন কন্নড় সুপারস্টার যশ। শুধু তা-ই নয়, এই সিনেমা দিয়ে দেশের বাইরেও লাখো ভক্ত-অনুরাগী জুটিয়েছেন এই অভিনেতা।
যশ বাদেও কেজিএফ চ্যাপ্টার টু-তে আরেক মুখ্য ভূমিকায় রয়েছেন বলিউড অভিনেতা সঞ্জয় দত্তকে। এ ছাড়া এতে গুরুত্বপূর্ণ সব চরিত্রে অভিনয় করেছেন রাবিনা ট্যান্ডন, প্রকাশ রাজ, শ্রীনিধি শেট্টির মতো তারকারা।
আরও পড়ুন:করোনাভাইরাস সংক্রমণের কারণে স্থগিত থাকা ২৭তম কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব শুরু হচ্ছে আগামী ২৫ এপ্রিল নজরুল মঞ্চে। উৎসব চলবে ১ মে পর্যন্ত।
অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করবেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বলিউড অভিনেতা ও আসানসোল লোকসভা উপনির্বাচনে বিজয়ী তৃণমূল এমপি শত্রুঘ্ন সিনহা।
আরও উপস্থিত থাকবেন অভিনেতা রঞ্জিত মল্লিক, প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়সহ অনেকে।
উৎসব কমিটির চেয়ারম্যান পরিচালক রাজ চক্রবর্তী বলেন, ‘করোনার বিধিনিষেধ শিথিল হলেও আমাদের সাবধানে থাকতে হবে। সাবধানতার কথা বিবেচনা করেই এবার বাইরের কাউকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি।’
কিংবদন্তি পরিচালক সত্যজিৎ রায়ের জন্মশতবর্ষের শ্রদ্ধায় উৎসবের উদ্বোধনী ফিল্ম হিসেবে একই সঙ্গে নজরুল মঞ্চ ও রবীন্দ্র সদনে দেখানো হবে সত্যজিৎ রায় পরিচালিত অরণ্যের দিনরাত্রি।
পরিচালক অরিন্দম শীল সাংবাদিক সম্মেলনে বলেন, ‘সত্যজিৎ রায়ের জন্মশতবর্ষ উপলক্ষে সত্যজিতের সঙ্গে কাজ করা জীবিত শিল্পী ও কলাকুশলীদের এবার সংবর্ধনা দেয়া হবে।
এবার সত্যজিৎ রায় স্মারক বক্তব্য দেবেন পরিচালক সুজিত সরকার। সত্যজিতের জীবন ও কাজের ওপর প্রদর্শনীও থাকছে উৎসবে।
চলচ্চিত্র উৎসবের থিম ‘কান্ট্রি ফিনল্যান্ড’। কলকাতা শহরের ১০ হলে ৪০ দেশের ১৬৩টি সিনেমা দেখানো হবে এবারের উৎসবে।
২৭তম কলকাতা চলচ্চিত্র উৎসবে আটটি বিলুপ্তপ্রায় ভাষার সিনেমা দেখানো হবে। ভাষাগুলো হলো বোরো, টুলু, রাজবংশী, সান্তাড়, ও কোঙ্কনী ও কুড়ুম্বা।
চিদানন্দ দাশগুপ্ত, বুদ্ধদেব দাশগুপ্ত, দিলীপ কুমার, স্বাতীলেখা সেনগুপ্ত ও নিকোলাস জাঙ্কসোকে নিয়ে প্রদর্শনীর ব্যবস্থা থাকছে।
শিশির মঞ্চে তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরে কলকাতা চলচ্চিত্র উৎসবের প্রস্তুতি নিয়ে সাংবাদিক সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সংস্কৃতি দপ্তরের সচিব শান্তনু বসু, মন্ত্রী বিরবাহা হাঁসদা, উৎসব কমিটির চেয়ারম্যান রাজ চক্রবর্তী, পরিচালক গৌতম ঘোষ, পরিচালক অরিন্দম শীল, হরনাথ চক্রবর্তী, অভিনেত্রী জুন মালিয়া।
চলতি বছরের শুরুর দিকে বলিউড অভিনেত্রী প্রিয়াঙ্কা চোপড়া জানান যে, তার এবং নিক জোনাসের জীবনে সন্তান এসেছে। সারোগেসির মাধ্যমে তারা মা-বাবা হয়েছেন। তবে ছেলে না মেয়ে সন্তান তা জানাননি তিনি।
সেসময় বিভিন্ন সূত্রের বরাত দিয়ে ভারতীয় একাধিক সংবাদমাধ্যম জানায়, কন্যা সন্তানের মা-বাবা হয়েছেন তারকা দম্পতি।
কিন্তু কখনো সন্তানের নাম কিংবা ছবি, কোনোটাই প্রকাশ্যে আনেননি অভিনেত্রী।
তবে দেশটির একাধিক সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, প্রিয়াঙ্কা-নিক তাদের মেয়ের নাম কী রেখেছেন তা এবার প্রকাশ্যে। তারকা দম্পতি কন্যার নাম রেখেছেন মালতী মারি চোপড়া জোনাস।
জন্ম সনদও নাকি হাতে পেয়েছে হলিউড কেন্দ্রিক একটি সংবাদ সংস্থা। সেই সূত্রেই জানা গেছে এই নাম।
সংস্কৃত এবং ল্যাটিন দুই শব্দ মিশিয়ে মেয়ের নাম রেখেছেন প্রিয়াঙ্কা-নিক। সংস্কৃতে ‘মালতী’ শব্দের অর্থ হল একরকম সুগন্ধযুক্ত ছোট সাদা ফুল অথবা চাঁদের আলো।
অন্যদিকে ‘মারি’ শব্দের অর্থ সমুদ্রকে রক্ষা করে যে নারী। মূলত মাতা মেরিকে অনেক সময় এই আখ্যা দেয়া হয়। যিশুর মাতা মেরিকে ফ্রাঞ্চে ‘মারি’ বলা হয়।
যদিও আনুষ্ঠানিকভাবে এখনও মেয়ের নাম বা ছবি কোনোটাই প্রকাশ্যে আনেননি তারকা জুটি।
যুক্তরাষ্ট্রের সান দিয়াগো শহরের এক হাসপাতালে গত ১৫ জানুয়ারি জন্ম হয়েছে নিক-প্রিয়াঙ্কার মেয়ের।
এরপর ২২ জানুয়ারি ইনস্টাগ্রামে এক পোস্টে সারোগেসির মাধ্যমে সন্তান হওয়ার কথা প্রকাশ্যে আনেন প্রিয়াঙ্কা।
প্রিয়াঙ্কার হাতে রয়েছে বেশ কয়েকটি আন্তর্জাতিক প্রোজেক্ট। এর মধ্যে টেক্স অফ ইউ রয়েছে মুক্তির অপেক্ষায়। পাশাপাশি আমাজনের টিভি সিরিজ সিটাডেল-এর শুটিংও শেষ করেছেন অভিনেত্রী।
সম্প্রতি এক পান মসলার কোম্পানির বিজ্ঞাপন করেন বলিউডের অভিনেতা অক্ষয় কুমার। শাহরুখ খান, অজয় দেবগনের মতো বলিউড তারকারা আগে থেকেই সেই সংস্থার ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর।
তবে অক্ষয় এই বিজ্ঞাপনে অংশ হওয়ায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নানা প্রতিক্রিয়া জানান তার ভক্ত-অনুরাগীরা। তাই তাদের ভাবনাকে সম্মান জানিয়ে ক্ষমা চেয়ে সেই সংস্থা থেকে নিজেকে সরিয়ে নিলেন অভিনেতা।
নিজের স্বাস্থ্য এবং শরীরচর্চা নিয়ে অত্যন্ত সজাগ অক্ষয়। যা তার চারপাশের লোকজন এবং অনুরাগীদেরও অনুপ্রেরণা জোগায়। তাই তিনি এই ধরনের বিজ্ঞাপনে অংশ নেয়ায় রুষ্ট হন অনেকেই।
এ জন্য বুধবার গভীর রাতে এক টুইট বার্তায় বিজ্ঞাপন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা করেন অক্ষয়।
সেই পোস্টে ক্ষমা প্রার্থনা করে অভিনেতা লেখেন, ‘আমি ক্ষমাপ্রার্থী। আমার অনুরাগী, শুভাকাঙ্ক্ষীসহ সবার কাছে ক্ষমা চাচ্ছি। গত কয়েক দিন ধরে আপনাদের কাছে থেকে যে প্রতিক্রিয়া পেয়েছি তা আমাকে গভীরভাবে প্রভাবিত করেছে। আমি তামাকজাত পণ্যের বিজ্ঞাপন কখনই করিনি এবং কোনো দিন করব না। বিমন ইলাইচির সঙ্গে আমার চুক্তি নিয়ে আপনাদের আবেগ বুঝতে পারছি। সেই আবেগকে সম্মান জানিয়েই বিনয়ের সঙ্গে সরে দাঁড়াচ্ছি।’
ওই বিজ্ঞাপন থেকে পাওয়া টাকা সমাজসেবার কাজে দান করে দেবেন বলেও জানিয়েছেন অক্ষয়।
তিনি লেখেন, ‘বিজ্ঞাপনের পারিশ্রমিক বাবদ পাওয়া টাকা দান করে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। ওই সংস্থা হয়তো বিজ্ঞাপনটির সম্প্রচার চালিয়ে যাবে, অন্তত আইনিভাবে চুক্তির মেয়াদ শেষ না পর্যন্ত। তার দায় আমারই। তবে কথা দিচ্ছি, আগামী দিনে কাজের ব্যাপারে অত্যন্ত সতর্ক থাকব। বিনিময়ে আপনাদের ভালোবাসা এবং শুভেচ্ছা প্রার্থনা করি।’
তবে সংস্থাটির সঙ্গে চুক্তির মেয়াদ কবে শেষ, তার উল্লেখ করেননি অক্ষয়।
আরও পড়ুন:২০১৮ সালের শেষের দিকে মুক্তি পায় ভারতের দক্ষিণের কন্নড় ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির বিগ বাজেটের সিনেমা কেজিএফ চ্যাপ্টার ওয়ান।
মুক্তির পর শুধু ভারতে নয়, বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে থাকা ভারতীয় সিনেমাপ্রেমীদের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলেছিল এটি। বক্স অফিসে গড়েছিল ইতিহাস।
গ্যাংস্টারদের নিয়ে গল্পের এই সিনেমায় দুর্দান্ত মারকুটে অভিনয় দিয়ে পুরো ভারত মাতিয়েছিলেন কন্নড় রকিং স্টার যশ। শুধু তা-ই নয়, এই সিনেমা দিয়ে দেশের বাইরেও লাখো ভক্ত-অনুরাগী জুটিয়েছেন এই অভিনেতা।
এরপর আবার ১৪ এপ্রিল কেজিএফ চ্যাপ্টার টু মুক্তির পর ঝড় তুলেছে বক্স অফিসে। জনপ্রিয়তা আর খ্যাতির শীর্ষে এখন যশ। তার সঙ্গে যখন অভিনয় করতে মুখিয়ে আছেন একাধিক অভিনেত্রী, কিন্তু তিনি কার সঙ্গে অভিনয় করার অপেক্ষায় রয়েছেন।
সেই অভিনেত্রী আর কেউ নন তিনি বলিউডের মাস্তানি দীপিকা পাডুকোন। ভারতীয় এক সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে এই ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন যশ।
সেই সাক্ষাৎকারে যশ জানান, যদি সুযোগ দেয়া হয় তাহলে দীপিকা পাডুকোনের সঙ্গে কাজ করতে চান তিনি। আর তার বিপরীতে অভিনয় করেই বলিউডে পা রাখতে চান তিনি।
শুধু দর্শকদের নয় অনেক তারকারও পছন্দের অভিনেত্রী দীপিকা। তার সঙ্গে স্ক্রিন শেয়ারের ইচ্ছা প্রকাশ করেন অনেকেই। এবার সেই তালিকায় যোগ হল কেজিএফ তারকা যশ।
আরও পড়ুন:বিগত কয়েক বছরে বলিউডের চেয়ে বেশি সাড়া ফেলছে ভারতের দক্ষিণী সিনেমা। তার উদাহরণ বাহুবলী, পুষ্পা, আরআরআর, কেজিএফসহ অনেক সিনেমা। বর্তমানে বক্স অফিসে চলছে দক্ষিণী কন্নড় সিনেমা কেজিএফ টু-এর ঝড়।
কন্নড়, তেলেগু, তামিল, মালয়ালাম ও হিন্দি ভাষায় মুক্তি পেয়েছে সিনেমাটি। এতে প্রধান ভূমিকায় অভিনয় করেছেন কন্নড় রকিং স্টার যশ। আর অন্যতম আরেক প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেছেন সঞ্জয় দত্ত।
বলিউড ও দক্ষিণী ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির মধ্যে পার্থাক্য কোথায়? সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে তা নিজের অভিমত জানিয়েছেন সঞ্জয় দত্ত।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে দেয়া সেই সাক্ষাৎকারে সঞ্জয় দত্ত বলেন, ‘আমার মনে হয় হিন্দি ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি হিরোইজম ভুলতে বসেছে, কিন্তু দক্ষিণী ইন্ডাস্ট্রি বীরত্বকে এখনও ভুলে যায়নি। আমি বলছি না যে স্লাইস অফ লাইফ খারাপ। কিন্তু আমরা কেন আমাদের উত্তরপ্রদেশ, বিহার, ঝাড়খণ্ড, রাজস্থানের দর্শকদের ভুলে গিয়েছি, যারা আমাদের দর্শকমহলের একটি বড় অংশ।
‘আমি আশা করি, হিন্দি ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে সেই প্রবণতা ফিরে আসবে। আগে আমাদের স্বতন্ত্র প্রযোজক এবং অর্থদাতা ছিল, যা ফিল্ম স্টুডিওগুলোর করপোরেটাইজেশনের অবসান ঘটিয়েছে। করপোরেটাইজেশন ভালো, তবে এটি সিনেমার পছন্দের ক্ষেত্রে হস্তক্ষেপ করা উচিত নয়।’
উদাহরণ দিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘দেখুন এস এস রাজমৌলির নির্দিষ্ট প্রযোজক রয়েছেন, যারা তার দৃষ্টিভঙ্গিতে সম্পূর্ণ বিশ্বাস রাখেন। আমাদের সঙ্গে আগেকার দিনে গুলশান রাই, যশ চোপড়া, সুভাষ ঘাই এবং যশ জোহরের মতো প্রযোজকও ছিলেন। তারা যে সিনেমাগুলো তৈরি করেছেন তা দেখুন। দক্ষিণে তারা কাগজে স্ক্রিপ্ট দেখে, এখানে আমরা কাগজে পরিসংখ্যান দেখি।’
সঞ্জয়কে পরবর্তী সময়ে যশ রাজ ফিল্মসের ব্যানারে নির্মিতব্য পৃথ্বীরাজ সিনেমায় দেখা যাবে। এতে আরও রয়েছেন অক্ষয় কুমার, মানুষী চিল্লার, সাক্ষী তানওয়ার এবং সোনু সুদ। এ ছাড়া শামশেরায় দেখা যাবে তাকে।
আরও পড়ুন:ভারতের দক্ষিণী সিনেমার জনপ্রিয় অভিনেত্রী কাজল আগারওয়াল মা হয়েছেন। মঙ্গলবার সকালে তার কোলজুড়ে এসেছে ফুটফুটে পুত্রসন্তান। মা ও সন্তান দুজনেই সুস্থ আছেন।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে এ তথ্য জানিয়েছেন অভিনেত্রীর বোন নিশা আগারওয়াল।
এটি জীবনের সেরা সুখবর উল্লেখ করেন নিশা। এর আগে তিনি ইনস্টাগ্রামে লিখেছিলেন, ‘এটি একটি আনন্দের দিন, একটি বিশেষ খবর আপনাদের সঙ্গে ভাগ করে নেয়ার অপেক্ষা সইছে না।’
চলতি বছর জানুয়ারিতে অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার খবর জানিয়েছিলেন কাজল। ২০২০ সালের অক্টোবরে প্রেমিক গৌতম কিসলুর সঙ্গে সাত পাকে বাঁধা পড়েন অভিনেত্রী। এবার তাদের পরিবারে এলো নতুন সদস্য। তা নিয়ে ব্যাপক উচ্ছ্বসিত তারকাদম্পতি।
অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় গৌতম কিসলু তাকে যেভাবে দেখভাল করেছেন, তাতে ভীষণ খুশি অভিনেত্রী। গত সপ্তাহে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে স্বামীকে ধন্যবাদ জানিয়ে একটি আবেগঘন বার্তাও লিখেছিলেন কাজল।
সেখানে তাকে তিনি লিখেছিলেন, ‘আমাদের সন্তান আসার আগে কতটা যত্ন নিচ্ছ আমার, আমি জানতে চাই, তুমি ঠিক কতটা অসাধারণ একজন মানুষ আর কতটা অসাধারণ একজন বাবা হতে চলেছ।’
শিগগিরই কাজলকে দেখা যাবে চিরঞ্জীবী এবং রামচরণ অভিনীত আচার্য সিনেমায়। ২৯ এপ্রিল প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পাবে সিনেমাটি।
মন্তব্য