প্রবীণ রাজনীতিক মুজিবুল হক রেলমন্ত্রী থাকাকালে বিয়ে করে তোলপাড় ফেলে দিয়েছিলেন। সেই পথেই হাঁটলেন বিপত্নীক বর্তমান রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন।
মন্ত্রী বিয়ে করতে যাচ্ছেন বা বিয়ে করে ফেলেছেন- এমন খবর আগেই এসেছে গণমাধ্যমে। এবার বিয়েটা কীভাবে হলো তা জানা গেল কনে শাম্মী আক্তার মনির ভাইয়ের বরাতে।
শাম্মীর বাড়ি দিনাজপুরের বিরামপুর উপজেলায়। তবে থাকেন রাজধানীর উত্তরায়। চাকরি করতেন ঢাকায় ক্যামব্রিয়ান স্কুল অ্যান্ড কলেজে।
চাকরির পাশাপাশি আইন পেশায় ক্যারিয়ার গড়ার চেষ্টা করতে থাকেন শাম্মী। একপর্যায়ে হাইকোর্টে এক সিনিয়রের সঙ্গে কাজও করতে থাকেন।
মন্ত্রী নিজেও একজন আইনজীবী। সুপ্রিম কোর্টে তার নামডাকও আছে বেশ। আর তার কাছ থেকে অভিজ্ঞ পরামর্শ নিতে গিয়ে দেখা দুজনের।
খুব বেশি দিন আগের কথা নয়। দিন বিশেক আগে পরিচয় দুজনের।
মন্ত্রী তার জীবনসঙ্গিনীকে হারিয়েছেন ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর জাতীয় নির্বাচনের আগে আগে। আর শাম্মীও বিচ্ছেদের পর থেকে একা।
পরস্পরকে ভালো লেগে যায়। আর একপর্যায়ে তারা সিদ্ধান্ত নেন হাতে হাত রাখার।
এই বয়সে উদ্দাম প্রেম তো মানায় না। তাই বিয়েটাও হয়ে গেল কদিন যেতে না যেতেই।
গত ৫ জুন ঢাকার হেয়ার রোডে মন্ত্রীর সরকারি বাসভবন তন্ময়ে পারিবারিকভাবেই হয় বিয়ে।
কনে শাম্মী আক্তারের বড় ভাই জাহিদুল ইসলাম মিলন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমার বোন শাম্মী ঢাকার উত্তরায় থাকে। সে আইন বিষয় পড়াশোনা শেষ করে হাইকোর্টে এক সিনিয়রের সঙ্গে প্র্যাকটিস করছে।
‘আইনি বিষয়ে পরামর্শ নিতে ২০ দিন আগে রেলমন্ত্রীর কাছে যায় সে। আমার বোনকে মন্ত্রীর পছন্দ হয়। পারিবারিকভাবে গত ৫ জুন তাদের বিয়ে হয়।’
বিয়েতে ছিলেন মিলন নিজেও। বরপক্ষে ছিলেন বিচারপতি ইজারুল হক ও তার স্ত্রী। কনেপক্ষে মিলন ছাড়াও ছিলেন তার আরেক ভাই।
বিয়ের মধ্যস্থতা করেছেন বিরামপুর পৌরসভার সাবেক মেয়র লিয়াকত আলী টুটুল। তিনি বলেন, ‘আলোচনা ঢাকায় ওরা শুরু করেছে। কিন্তু আমি মেয়ের পক্ষ থেকে ঘটকের দায়িত্ব পালন করেছি।’
তিনি বলেন, ‘রেলমন্ত্রীর পক্ষ থেকে পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছিল। তখন মেয়ের পক্ষ থেকে আমাকে ঘটকের দায়িত্ব পালনের জন্য বলা হয়েছিল। আমি সেই দায়িত্ব পালন করেছি।’
শাম্মীর বাবার বাড়ি বিরামপুর উপজেলা নতুন বাজার এলাকায়। তিনি ওই এলাকার মৃত আব্দুর রহিমের মেয়ে।
দুই ভাই ও এক বোনের মধ্যে শাম্মী আক্তার মেজো।
বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডে (পিডিবি) লাইনম্যান পদে চাকরির সুবাদে আব্দুর রহিম বিরামপুরে আসেন। তারপর সেখানে নতুন বাজার এলাকায় জায়গা কিনে বাড়ি করে স্থায়ী হন।
নূরুল ইসলাম সুজনের স্ত্রী নিলুফার জাহান ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে মারা যান। তাদের এক ছেলে ও দুই মেয়ে রয়েছে।
বিশিষ্ট আইনজীবী ৬৫ বছর বয়সী নূরুল ইসলামের বাড়ি পঞ্চগড়ে। পঞ্চগড়-২ (বাদা-দেবীগঞ্জ) আসন থেকে নবম, দশম এবং একাদশ জাতীয় সংসদের সদস্য নির্বাচিত হন তিনি। ২০১৮ সালে নির্বাচিত হওয়ার পর রেলমন্ত্রী হন তিনি।
শাম্মী আক্তারেরও এটি দ্বিতীয় বিয়ে।
মিলন জানান, কুষ্টিয়ায় বিয়ে হয়েছিল তার বোনের। কিন্তু বনিবনা হয়নি। ২০১১ সালে বিচ্ছেদ ঘটে। ওই ঘরে একটি মেয়ে রয়েছে। এরপর থেকে মেয়েকে নিয়ে ঢাকায় থাকেন শাম্মী। চাকরির পাশাপাশি আইন পেশায় নিজেকে তৈরি করতে থাকেন।
রেলমন্ত্রী আগের দিন যা বলেন
বৃহস্পতিবার মন্ত্রীর সঙ্গে কথা হয় নিউজবাংলার। বিয়ে যে তিনি করে ফেলেছেন, সেটি অবশ্য জানাননি। হাসতে হাসতে বলেন, ‘বিয়ের চাঁদ উঠছে উঠছে করছে।’
কবে আসবে সেই মাহেন্দ্রক্ষণ?-এমন প্রশ্নে কিছুটা রহস্য রেখেই তিনি বলেন, ‘সূর্য যখন উঠবে বা চাঁদ যখন উঠবে, তখন আপনারা সবাই দেখবেন। এখন চাঁদ উঠবে উঠবে করছে। হা হা হা…।’
বিয়ে নিয়ে কথোপকথনের এই কথা প্রকাশের অনুমতিও দিয়েছেন মন্ত্রী।
এর আগের রেলমন্ত্রী মুজিবুল হক ৬৭ বছর বয়সে বিয়ে করেছিলেন। চিরকুমার সংঘের সদস্য এই রাজনীতিকের ওই বিয়ে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছিল।
আরও পড়ুন:কুমিল্লায় দিদার সার্বিক গ্রাম উন্নয়ন সমবায় সমিতির ৫৭তম বার্ষিক সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার সদর দক্ষিণ উপজেলার বলরামপুর দিদার সমিতির সম্মেলন কক্ষে এ সাধারণ সভার আয়োজন করা হয়। দিদার সমিতির চেয়ারম্যান জিএম নোমানের সভাপতিত্বে সাধারণ সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা হাজী আমিনুর রশিদ ইয়াসিন।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা সমবায় কর্মকর্তা মোঃ সালমান ইকবাল, সদর দক্ষিণ উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা শরিফুল ইসলাম ভুঁইয়া। কুমিল্লা পল্লী উন্নয়ন একাডেমি বার্ডের কর্মচারী এসোসিয়েশনের সভাপতি মো. জাকির হোসেন, ম্যানেজার মোস্তফা কামাল, সমিতির সহ সভাপতি মো. সৈয়দ, মো. রেজাউল করিম, কামাল হোসেন, হারিজ মিয়া, আ. মমিন, জিয়াউর রহমান জিয়া, জাকির হোসেন রনি, জান্নাতুল ফেরদৌস লিজা, এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন সাধারণ সদস্য প্রায় ১২ শতাধিক। বক্তারা বলেন, দিদার সার্বিক গ্রাম উন্নয়ন সমবায় সমিতি হলো বাংলাদেশের একটি সমবায় ভিত্তিক জন-কল্যাণমূলক সংগঠন। ওই সমিতির প্রাথমিক সল্প সদস্যদের উদ্যোগে ১৯৬০ সালে এ সমিতির যাত্রা শুরু হয়। শুরুতে গ্রামের চায়ের দোকানের মালিক মোহাম্মদ ইয়াছিন তার দোকানে আগত ৮ জন রিকশা ও ভ্যান চালক মো. বেনু মিয়া, মো. নুরু মিয়া, মো. আতর আলী, মো. নিলু মিয়া, মো. চরু মিয়া, মো. অহিদ মিয়া, মো. আব্দুল খালেক এবং মো. রফিক মিয়াকে নিয়ে প্রত্যেক সদস্য প্রতিনিদিন ১ আনা করে জমা রাখবে। এই শর্তে ১৯৬০ সালের ৯ অক্টোবর ৯ সদস্যবিশিষ্ট এই সমবায় সমিতিটির গোড়া পত্তন করেন তৎকালীন ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ ড. আখতার হামিদ খান।
দিদার সমিতি মানব সেবায় অনন্য সাধারণ অবদানের জন্য ১৯৮৪ সালে ‘পল্লী উন্নয়নে স্বাধীনতা পুরস্কার’ অর্জন করে।
অরাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠন শিকড়ের হাত ধরে স্বাবলম্বীর যাত্রায় অংশীজন হচ্ছেন সমাজের পিছিয়ে পড়া ও হতদরিদ্র পরিবার। স্বেচ্ছাসেবী এ সংগঠনটির পক্ষ থেকে বিভিন্ন সময় স্বাবলম্বী হওয়ার জন্য সেলাই মেশিন ও ছাগল বিতরণ করা হচ্ছে এসব পরিবারের মাঝে। সেই ধারাবাহিকতায় এবার ১০টি পরিবারের নারী সদস্যদের মাঝে দেয়া হয়েছে সেলাই মেশিন। শনিবার জেলা সদরের কানাইপুর ইউনিয়নের কানাইপুর উচ্চ বিদ্যালয় থেকে সমাজের অ-স্বচ্ছল দশজন নারীকে কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে ১০টি সেলাই মেশিন দেয়া হয়। সংগঠনটি ২০২০ সালের ২৬ মার্চ যাত্রা শুরু করে এবং ২০ তম কর্মসূচি হিসেবে সেলাই মেশিন দেয়া হয় বলে প্রতিষ্ঠাতা ও পরিচালক (প্রধান) শফিকুল ইসলাম খোকন জানান।
তিনি বলেন- সমাজের অসহায় অ-স্বচ্ছল মানুষদের স্বাবলম্বি করার প্রচেস্টা থেকে আমাদের এই যাত্রা। বিগত দিনে আমরা ১৯টি কর্মসূচি বাস্তবায়ন করেছি, তার মধ্যে রয়েছে- ছাগল বিতরন, সেলাই মেশিন বিতরন, গ্রামের ছোট টং দোকানদারকে মুলধনী পন্য বিতরন। এছাড়াও ঈদে খাদ্যসামগ্রী ও পূজায় শাড়ি বিতরন, স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীদের মাঝে শিক্ষা উপকরন, স্কুল পোষাকসহ প্রয়োজনীয় সামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে।
এ কর্মসূচিতে উপস্থিত থেকে সেলাই মেশিনগুলো তুলে দেন শিকড়ের পরিচালনা পর্ষদ (নীতি-নির্ধারনী ফোরাম) এর প্রধান ও কানাইপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধাব শিক্ষক শাহ মো. শাহজাহান মোল্যা, প্রতিষ্ঠাতা শফিকুল ইসলাম খোকন, প্রতিষ্ঠাকালীন সদস্য মো. আশরাফুল আলম কাজল, মো. তোফাজ্জেল হোসেন, মো. কামাল হোসেন মিয়া, প্রদীপ সাহা, মো. হাবিবুর রহমান সাইফুল, মো. সেলিম মিয়া, মো. মুজিবুর রহমান মিয়া, মুহাম্মদ জাকারিয়া আসিফ, মো. ফজলুর রহমান সুমন, মো. সবুজ মোল্যা প্রমুখ।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেছেন, লালনের গান শুধুই সুর নয়-তা অত্যন্ত উচ্চমাত্রার সংগীত, যার মধ্যে রয়েছে গভীর দার্শনিক, রাজনৈতিক এবং সর্বোপরি মানবিক মূল্য। তার গানে যে মানবতার কথা বলা হয়েছে, তা আজকের পৃথিবীতেও সমানভাবে প্রাসঙ্গিক।
উপদেষ্টা শুক্রবার রাতে কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে ঐতিহাসিক ছেঁউড়িয়ায় অবস্থিত লালন একাডেমি প্রাঙ্গণে জাতীয় পর্যায়ে লালন সাঁইয়ের ১৩৫তম তিরোধান দিবস উপলক্ষে বিশেষ অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানটি আয়োজন করেছে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় আর ব্যবস্থাপনায় রয়েছে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা বলেন, এবারই প্রথমবারের মতো ফকির লালন সাঁইয়ের তিরোধান দিবস দলীয় প্রভাবমুক্ত এবং রাষ্ট্রীয়ভাবে পালিত হচ্ছে। এটি একটি ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত। তিনি বলেন, সরকার মনে করে, লালনের দর্শন এবং অবদান শুধু জাতীয় পর্যায়ে সীমাবদ্ধ রাখার নয়। ভবিষ্যতে যে সরকারই আসুক, লালনের সঙ্গে তাদের কোনো বিরোধ থাকবে না — কারণ লালন কোনো দলীয় আদর্শের প্রতিনিধিত্ব করেন না, তিনি মানবতার প্রতীক।
ভিডিও বার্তায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তৃতা করেন সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী। তিনি বলেন, লালন সাঁই আমাদের দেশের অন্যতম বড় দার্শনিক ও ভাবুক। তার জীবনদর্শন ও আদর্শ আমাদের আত্মস্থ করা প্রয়োজন। এবারই প্রথমবারের মতো জাতীয় পর্যায়ে লালন তিরোধান দিবস উপলক্ষে অনুষ্ঠান উদযাপিত হচ্ছে, যা অত্যন্ত গৌরবের বিষয়।
কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক আবু হাসনাত মোহাম্মদ আরেফীনের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তৃতা করেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মো: মফিদুর রহমান। আন্তর্জাতিক খ্যাতিমান লেখক ও গবেষক লালন বক্তৃতার মুখ্য আলোচক প্রফেসর গায়ত্রী চক্রবর্তী স্পিভাক, বিশিষ্ট কবি, লেখক ও চিন্তক এবং লালন বিশেষজ্ঞ ফরহাদ মজহার, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক আ আল মামুন। এসময় স্বাগত বক্তৃতা করেন বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক কবি রেজাউদ্দিন স্টালিন।
তিনদিনব্যাপী এই অনুষ্ঠানমালায় দেশব্যাপী লালন অনুসারী, সাধক, গবেষক এবং সাংস্কৃতিক কর্মীরা অংশগ্রহণ করবেন। লালন সাঁইয়ের জীবন দর্শন, মানবতা ও সাম্যের বাণীকে জাতীয়ভাবে স্মরণ ও উদযাপনের উদ্দেশে প্রতিবছরের মতো এবারও এ আয়োজনটি অনুষ্ঠিত হচ্ছে অত্যন্ত ভাবগম্ভীর পরিবেশে।
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেছেন, জুলাই সনদ স্বাক্ষর হওয়ার পর দেশে নির্বাচন নিয়ে আর কোন সমস্যা নেই। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারির মধ্যেই অনুষ্ঠিত হবে বলে বিএনপি প্রত্যাশা করে।
শনিবার বেলা ১১টায় চুয়াডাঙ্গা শহরের বড় বাজার এলাকায় নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নিয়ে এ কথা বলেন তিনি।
জুলাই সনদে স্বাক্ষর না করা প্রসঙ্গে দুদু বলেন, সবার গণতান্ত্রিক অধিকার আছে। সকলের ভিন্নমত পোষনের সুযোগ আছে। যেসব দল ভিন্নমত পোষণ করে জুলাই সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে যায়নি আমাদের ধারণা তারা ভবিষ্যতে স্বাক্ষর করবে। কেননা, প্রধান উপদেষ্টা ও জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের চেয়ারম্যান বলেছেন, যেসব দল স্বাক্ষর করেনি, তাদের জন্য ভবিষ্যতেও সুযোগ আছে।
বিএনপি সরকার গঠন করলে ঘোষিত ৩১ দফা বাস্তবায়ন করে দেশের উন্নয়ন গতিশীলতা প্রতিষ্ঠিত হবে বলেও মন্তব্য করেন শামসুজ্জামান দুদু।
নির্বাচনী প্রচারণায় উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক অ্যাড. ওয়াহেদুজ্জামান বুলা, জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাড. শামীম রেজা ডালিম, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক এম এ তালহাসহ বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) ইতিহাসে একসময়কার প্রাণকেন্দ্র ‘জব্বার মোড়’ এখন বিলীন হওয়ার পথে।
ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের চলমান উন্নয়ন প্রকল্পের অংশ হিসেবে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম গেট (কেবি কলেজ মোড়) থেকে ফসিল মোড় পর্যন্ত চার লেন বিশিষ্ট সড়ক নির্মাণ কাজের ফলে বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন আসছে। এই প্রকল্পের আওতায় জব্বার মোড় হয়ে যাওয়া সড়কের দুই পাশের দোকানগুলো স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
পরিকল্পনা অনুযায়ী, মোড়ের পূর্ব পাশের দোকানগুলো বিশ্ববিদ্যালয়ের জিমনেশিয়ামের সামনে স্থানান্তর করা হচ্ছে, আর পশ্চিম পাশের দোকানগুলোকে সামান্য পেছনের দিকে সরিয়ে রাখা হবে। উন্নয়ন কার্যক্রমের এই ধাপটি মূলত যান চলাচলের সুবিধা ও নগর অবকাঠামোর আধুনিকায়নের লক্ষ্যেই নেওয়া হয়েছে।
এই মোড়ের অন্যতম পুরনো ও জনপ্রিয় খাবারের স্থান ছিল ‘জব্বার হোটেল’। হোটেলটির বর্তমান মালিক মাহবুব আলম, যিনি শিক্ষার্থীদের কাছে পরিচিত ‘হাবিব’ নামে, বলেন, ‘আমি গত চার বছর ধরে জব্বার হোটেল চালাচ্ছি। চার বছর আগে দোকানটি নতুন করে গড়ে এখানে ব্যবসা শুরু করি। কিছুদিন আগে রাস্তার কাজের জন্য দোকান ভাঙতে হয়, এরপর এই নতুন জায়গায় স্থানান্তরিত হয়েছি। এখানে এসেছি মাত্র দুই মাস হলো। শুরুতে তিন মাস সময় লেগেছিল সবকিছু গুছাতে, তখন আর্থিকভাবে বেশ ক্ষতিগ্রস্ত হই। আমার ১৭ জন স্টাফেরও তখন অনেক কষ্ট হয়েছিল।’
তিনি আরও বলেন, ‘এখানে ব্যবসা এখনো পুরোপুরি জমে ওঠেনি, পরিচিতি তৈরি হতে সময় লাগছে। তবুও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা আমার হোটেলে খেতে পছন্দ করে। তাদের সঙ্গে আমার সম্পর্ক ভালো। আমি চেষ্টা করি যেন তারা ভালো খাবার পায়, কারণ অনেকেই বাড়ি থেকে দূরে থাকে। যখন দেখি আমার হোটেলের খাবার খেয়ে অনেক শিক্ষার্থী জীবনে ভালো করছে, সেটাই আমার সবচেয়ে বড় আনন্দ। আশা করি সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ব্যবসা আরও ভালো হবে, আর জব্বার হোটেল আবারও শিক্ষার্থীদের পছন্দের জায়গা হয়ে উঠবে।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আরাফাত বলেন, ‘আমরা প্রথম বর্ষে ভর্তি হয়ে যখন বাকৃবিতে আসি, তখনই সবাই বলত-‘চলো, জব্বারের দিকে যাই’। এখন নতুন জায়গায় গেলে হয়তো সেই আগের আবহটা থাকবে না। তবু আশা করি, নতুন জায়গাতেও সেই আন্তরিকতা থাকবে।’
সময়ের সঙ্গে জীবনের নানা দিক বদলে গেলেও—রাস্তা, ভবন ও মানুষের জীবনযাত্রার মতো—কিছু স্থান থেকে যায় চিরস্মরণীয় হয়ে। বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ঐতিহ্যবাহী জব্বার মোড় এমনই এক জায়গা, যা প্রজন্মের পর প্রজন্মের শিক্ষার্থীর হাসি, বন্ধুত্ব ও আবেগের সাক্ষী। বিশ্ববিদ্যালয় উন্নয়নের পথে এগিয়ে চললেও, জব্বার মোড়ের আড্ডা, গল্প আর সম্পর্কের উষ্ণতা আজও বাকৃবির সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের অংশ হয়ে আছে। সময়ের দাবিতে এই স্থানের পরিবর্তন অনিবার্য হলেও, প্রজন্মের স্মৃতি ও অনুভূতিতে ভরা জব্বার মোড় আগামী দিনগুলোতেও শিক্ষার্থীদের মনে অমলিন হয়ে থাকবে।
ডেমরা-রূপগঞ্জ-কালীগঞ্জ সড়কের দক্ষিণ নবগ্রাম থেকে মাঝিনা নদীরপাড় পর্যন্ত দুই কিলোমিটার সড়ক নির্মাণে ধীরগতিতে যাত্রীদের দুর্ভোগ বেড়েই চলছে। পরশি-মুড়াপাড়া জিসি ভায়া রূপগঞ্জ সড়ক ১৪ দশমিক ২৭০ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের ও লিংক রোড হিসেবে ফজুরবাড়ি থেকে কাঞ্চন সেতু পর্যন্ত ৪ দশমিক ৩৫০ কিলোমিটারসহ ১৮ দশমিক ৬২০ কিলোমিটার সড়ক নির্মাণ কাজ চলছে। সড়ক নির্মাণে ধীরগতি থাকায় মানুষের দুর্ভোগ বেড়েই চলছে। এলজিইডির এ প্রকল্পের বাঘবের থেকে ফজুরবাড়ি ও ফজুরবাড়ি থেকে কাঞ্চন সেতু পর্যন্ত নির্মাণকাজ এগিয়েছে। কিন্তু মুশুরী ফজুরবাড়ি থেকে রূপগঞ্জ খেয়াঘাট ও হাবিবনগর এলাকায় সৃষ্ট গর্তে হাঁটু সমান পানি জমে সড়কে চলাচল একেবারেই অনুপযোগী হয়ে পড়ছে। ২৬ কিলোমিটার দৈর্ঘ্য এ সড়কের ৬টি কালভার্ট নির্মাণকাজও চলছে ধীরগতিতে। এলাকাবাসীর আবেদন-নিবেদনেও কোন কাজে আসছে না।
সরেজমিনে দেখা গেছে, এ সড়কের দক্ষিন নবগ্রাম, ভিংরাবো, হাবিবনগর, ইছাখালী, ফজুরবাড়ি এলাকার বেহাল দশার কারণে ভোগান্তি এখন চরমে। তবে সড়ক নির্মাণে জমির জটিলতা, সড়কের মাঝখানে ৩০-৩২টি বৈদ্যুতিক খুঁটি থাকায়, বাঘবের এলাকার বিএনপি নেতাকর্মীদের জমির ক্ষতিপূরণ বিল না দেওয়া ও অতিবর্ষণে কাজের বিলম্ব হচ্ছে বলে নির্মাণকারি প্রতিষ্ঠান দাবি করেছে। এ প্রকল্পে ১৮ দশমিক ৬২০ কিলোমিটার দৈর্ঘ্য, ২৪ ফুট প্রস্থ ও উভয় পাশে তিন ফুট করে ছয় ফুট ফুটপাত সড়ক নির্মাণ করা হচ্ছে।
এছাড়া চারটি ইউড্রেন নির্মাণ, ৪ দশমিক ৫০ কিলোমিটার বক্স ড্রেইন নির্মাণ, দুইটি বক্স কালভার্ট নির্মাণ ও ১২ মিটার আরসিসি গার্ডার ব্রিজ নির্মাণ করা হবে। এসব কাজে ব্যয় ধরা হয়েছে ৮৫ কোটি টাকা।
এ সড়ক নির্মাণে ২০২৩ সালের ৭ জুন ন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট ইঞ্জিনিয়ার্স লিমিটেড দায়িত্ব পায়। তারা একই বছর ২৯ মে নির্মাণকাজ শুরু করে। ২০২৪ সালের ২৮ মে নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার কথা। পরে জমির জটিলতা ও অতি বর্ষণসহ নানা প্রতিক‚লতায় নির্মাণকাজের সময় বৃদ্ধি করা হয়। সে অনুযায়ী ২০২৪ সালের ডিসেম্বর মাসে নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার কথা ছিলো। এরপরেও নানা জটিলতায় নির্মাণ কাজের সময় বৃদ্ধি করা হয়। সে অনুযায়ী গত ৩০জুন নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু নির্মাণকাজ ধীরগতিতে চলায় চলাচলে মানুষের এখন চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। বিশেষ করে রূপগঞ্জ থানা ভবনের দক্ষিণ পাশ থেকে মুশুরি কবরস্থান পর্যন্ত এ সড়কে চলাচল একবারেই অনুপযোগী।
রাতের আঁধারে মালবাহী ভারী যান চলাচল করায় সড়কটিতে গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। সামান্য বৃষ্টিতেই এসব গর্তে পানি জমে থাকে। কোথাও হাঁটু সমান পানি আর কাদা মাটিতে পরিণত হয়। তখন যানবাহন চলাচল অনুপযোগী হয়ে পড়ে। এ সময় চরম ভোগান্তিতে পড়ে যাত্রীরা।
রূপগঞ্জের দক্ষিণ নবগ্রাম, মাইফরাসপাড়া, ইছাখালী, পাড়াগাঁও, বড়ালু, ডাক্তারখালী এলাকায় সড়কের বিভিন্ন স্থানে গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। সৃষ্ট গর্তে কোথাও হাঁটু সমান পানি। প্রতিদিনই হালকা পরিবহন উলটে দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে। রাস্তার দুই পাশ দিয়ে পথচারীরা চলাচল করতে পারছে না। পাকা রাস্তার মাঝখানে কাঁদার ছড়াছড়ি। তাতে এলাকাবাসীর দুর্ভোগ বেড়েই চলছে। পাথরবাহী লরি ও মালবাহী ট্রাক অবাধে চলাচল করার কারণে সড়কের এমন বেহাল অবস্থা হয়েছে বলে স্থানীয়দের দাবি। এতে লোকজনের ভোগান্তিও চরমে পৌঁছেছে।
এলাকাবাসীর অভিযোগ ডেমরা-রূপগঞ্জ-কালীগঞ্জ সড়ক সংস্কার কাজ ঠিকাদারির গাফিলতি ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নজরহীনতায় ভোগান্তি বেড়েছে দ্বিগুণ। প্রতিনিয়তই এ সড়কে ঘটছে ছোট-বড় দুর্ঘটনা। ব্যাহত হচ্ছে এ সড়কে যাতায়াত করা শিক্ষার্থীদের পাঠদান। দ্রুত সড়কের সংস্কার কাজ শেষ করার দাবি করেন এলাকাবাসী।
ন্যাশনাল ডেভেলাপমেন্ট ইঞ্জিনিয়ার্স লিমিটেডের দায়িত্বরত কর্মকর্তার সঙ্গে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করলেও তাকে পাওয়া যায়নি।
রূপগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী আকতার হোসেন বলেন, নান প্রতিকোলতায় সড়ক নির্মাণ কাজ ব্যাহত হলেও শিগগিরই দ্রুত গতিতে কাজ চলবে।
রূপগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাইফুল ইসলাম জয বলেন, সড়ক নির্মাণকাজ দ্রুত সম্পূর্ন করার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আগামী এক মাসের মধ্যেই এ সড়কের নির্মাণ কাজ সম্পূর্ণ হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
গত ১৬ অক্টোবর, ২০২৫ তারিখে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড SRO No-404-Law/2025 এর মাধ্যমে বাংলা ভাষায় প্রণীত আয়কর আইন, ২০২৩ এর Authentic English Text সরকারি গেজেট আকারে প্রকাশ করেছে।
আয়কর অধ্যাদেশ, ১৯৮৪ বাতিল করে ২০২৩ সালে বাংলা আয়কর আইন, ২০২৩ প্রণয়ন করার পর হতেই বিদেশি বিনিয়োগকারীগণ সরকারি গেজেট নোটিফিকেশনের মাধ্যমে আয়কর আইনের Authentic English Text প্রকাশের দাবি জানাচ্ছিলেন।
আয়কর আইনের Authentic English Text না থাকায় বিদেশী বিনিয়োগকারীগণ আইনের সঠিক ব্যাখ্যা ও অনুশীলনের বিষয়ে সংশয়ের মধ্যে থাকতেন এবং বিভিন্ন আইনি জটিলতার সম্মুখীন হতেন।
আয়কর আইনের Authentic English Text সরকারী গেজেটে প্রকাশ হবার ফলে দেশী-বিদেশি বিনিয়োগকারীগণ আয়কর আইন সম্পর্কে স্বচ্ছ ব্যাখ্যা পাবেন বিধায় করদাতাগণের আস্থা অধিকতর বৃদ্ধি পাবে এবং আইন প্রয়োগের ক্ষেত্রে দ্ব্যর্থবোধকতা দূর করে স্বচ্ছতা ও সঠিকতা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।
কাস্টমস আইন, ২০২৩ এবং মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক আইন, ২০১২ এর Authentic English Text সরকারি গেজেটে প্রকাশের প্রক্রিয়া প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে। অচিরেই এই দুটি আইনের Authentic English Text সরকারি গেজেট আকারে প্রকাশের মাধ্যমে দেশি-বিদেশী বিনিয়োগকারীগনের দীর্ঘদিনের অপেক্ষার অবসান ঘটবে মর্মে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড আশা করছে।
মন্তব্য