প্রিয় লেখক মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়। অনেকের মতে, কিংবা তর্ক সাপেক্ষে, মানিক শুধু গদ্যকার হিসেবে নজরুল-রবীন্দ্রনাথের চেয়েও বড়। ফ্যান্টাসির বাইরে জীবনঘনিষ্ঠতার বলেই তিনি শক্তিশালী।
তার সর্বশ্রেষ্ঠ প্রজেক্ট ‘পদ্মা নদীর মাঝি’, সুন্দরতম স্বপ্ন ‘ময়নাদ্বীপ’। শ্বাপদসংকুল ঝোপঝাড় পরিষ্কার করে দ্বীপ কিনে তার চেনা মানুষগুলোকে একত্র করেছেন ময়নাদ্বীপের বাসিন্দা হিসেবে। প্রজেক্টের অংশ হিসেবে মানিক তৈরি করেছেন হোসেন মিয়া, কুবের মাঝি, কপিলার মতো চরিত্র। যাদের পূর্ণতা পেয়েছে ওই ময়নাদ্বীপ কেন্দ্র করে, ময়নাদ্বীপে গিয়ে। একটি পরিপূর্ণ সমাজের স্বপ্ন তিনি দেখিয়েছেন পদ্মা নদীর মাঝিতে।
জীবন সাহিত্যের মলাটের সুন্দরতম গল্প নয়। অধিকন্তু সাহিত্যই দিনশেষে নিয়তির হাতে সঁপে দেয়া যাপিত অপূর্ণাঙ্গ মানবজীবনের প্রতিচ্ছবি।
কাকতালীয়ভাবে, জীবনকালে দেখা সুন্দরতম একটি গদ্যের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার সৌভাগ্য হলো মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘরগুলো করতে গিয়ে। ফরিদপুরের ছোট আলফাডাঙ্গা উপজেলায় ৬০০টি ঘর এনে দিয়েছেন জেলা প্রশাসক স্যার, জুন মাস নাগাদ শেষ হয়ে যাবে ৫০০ ঘরের কাজ, মাটিভরাট ও স্থিতিকরণহেতু বাকি কাজ জুলাই মাস নাগাদ শেষ হবে বলে আশা করা যায়। সবগুলো ঘর করতে গিয়ে উপজেলা প্রশাসন উদ্ধার করেছে ৫০ একরের বেশি বেহাত হয়ে যাওয়া সরকারি খাসজমি।
যা হোক, মোট ৬০০ ঘরের মধ্যে ২০০ ঘর নিয়ে গোপালপুর ইউনিয়নের চরকাতলাসুর গ্রামে একই জায়গায় গড়ে তোলা হচ্ছে প্রজেক্ট ‘স্বপ্ননগর’, ৭০০ মিটার ব্যাসার্ধের মধ্যেই থাকবে আরও ৫০টি ঘর। এই ২৫০ ঘর নির্মাণ করা আমাদের দায়িত্ব, এটা হয়তো সবাই করে, ঘর তৈরি বাদে বাকি সব কর্মযজ্ঞে আমরা সাহিত্যকথার ছোটখাটো চরিত্র।
একদম শুরুর দিকে মোটামুটি হত্যা-হুমকি মাথায় নিয়ে ৩১ একর খাসজমি উদ্ধার। এই কাজ খুব কঠিন। ম্যাকিয়াভেলি বলেছেন, মানুষ তার বাপের সম্পত্তি হারানোর ব্যথার চেয়ে বাপ হারানোর ব্যথা দ্রুত ভুলে যায়।
আমার মনে হয়েছে, কেউ কোনোভাবে সরকারি সম্পত্তি হস্তগত করলে তা বাপের সম্পত্তি হিসেবে গণ্য করে। এই উদ্ধার করা সম্পত্তির ঝোপঝাড় কেটে ঘরের কাজ শুরু।
এখানে ঘর করলেও সে অর্থে জায়গাটি প্রতিষ্ঠিত গ্রোথ সেন্টার নয়। আর এখানেই আসলে কাজ করার সুযোগ। ২০০টি পরিবারের মধ্যে ১৭০টির মতো মুসলিম পরিবারের জন্য প্রয়োজন মসজিদ-ঈদগাহ। ৩০টি সনাতন ধর্মাবলম্বী পরিবারের জন্য প্রয়োজন প্রার্থনাগৃহ।
আশপাশে নেই কোনো উচ্চ বিদ্যালয়, কিছু দূরে রয়েছে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়। বাজার তিন কিলোমিটার দূরে। নতুন বাসিন্দাদের দরকার নাগরিক সুযোগসুবিধা। শিশুদের দরকার খেলার মাঠ। তাই প্রয়োজন সমন্বিত কর্মপরিকল্পনা।
তবে এটি পরিকল্পনা বা ভবিষ্যৎচিন্তা হিসেবে সীমাবদ্ধ নেই। ইতোমধ্যে নির্মাণ করা হয়েছে ১৬ শতাংশ জমিজুড়ে মসজিদ ও ঈদগাহ। ৮ শতাংশ জমির বাউন্ডারি রেখে নির্মাণ করা হয়েছে মন্দির।
১ দশমিক ৫ একর জমিজুড়ে স্থাপন করা হয়েছে বাজার, চান্দিনা ভিটির কাজ চলছে। দুই একর জমি রাখা হয়েছে স্কুল ও খেলার মাঠের জন্য। এগুলোর ভূমি উন্নয়নের কাজ চলমান। প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা দিতে কমিউনিটি ক্লিনিকের জন্য ৮ শতাংশ জায়গা আলাদা করে ভূমি উন্নয়ন করে রাখা হয়েছে। এটি কেন্দ্রীয় সরকারের বিষয় হওয়ায় কিছুটা সময় লাগবে হয়তো।
অদূরে ৯ একর জমিজুড়ে নানা প্রজাতির দেশীয় গাছপালা রোপণের মাধ্যমে ইকোপার্ক গড়ে তোলার কাজ শুরু হচ্ছে। সবকিছুর পর যেখানে যেতে হবে, সেই কবরস্থানের জন্য নির্ধারণ করা হয়েছে ৫০ শতাংশ জমি।
কমিউনিটি ক্লিনিক বাদে বাকি সবকিছুর কাজ শেষ হবে জুলাই মাসের মধ্যেই। ২৮টি গভীর নলকূপ স্থাপনের কাজ শেষ হবে ১৫ জুনের মধ্যে। নির্মাণ করা সব ঘরে বিদ্যুৎ পাওয়া যাবে এ মাসের মধ্যেই। ঘর বাদে বাদবাকি সব পরিকল্পনার অর্থসংস্থানের ব্যবস্থা করে দিচ্ছেন স্থানীয় সংসদ সদস্য, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন চেয়ারম্যান।
স্বপ্ননগরের আলাদা বৈশিষ্ট্য হচ্ছে বেদখল খাসজমির প্রাচুর্য থাকায় ২০০টি পরিবারের মধ্যে ১৫০ পরিবার পাচ্ছে ৩ শতাংশ করে জমি। বাকিরাও ঘরসহ ২ শতাংশ জমির পাশে পাবে ব্যবহারযোগ্য কমন স্পেস, যাতে তারা করে নেবে হাঁস-মুরগি, গরু-ছাগলের ছোট খামার ও অল্পবিস্তর মৌসুমি সবজির চাষবাস করার সুযোগ।
প্রকল্প ঘিরে থাকছে প্রশস্ত চলাচলের রাস্তা। আপাতদৃষ্টিতে উপজেলা পর্যায় থেকে যা যা করা সম্ভব সবই শেষ হবে জুলাই মাসের মধ্যে।
মধুমতী নদীভাঙনের কবলে নিঃস্ব হওয়া কিংবা স্থায়ী ঠিকানাহীন মানুষগুলোর ঠাঁই হচ্ছে এই স্বপ্ননগরে।
মানিকের ময়নাদ্বীপের তিনি শেষ দেখাননি। একেকটি সমাজ ও সভ্যতার শেষ কথা বলে কিছু নেই। ভাঙাগড়াই এর নিয়তি। মার্ক্সবাদী দৃষ্টিতে দেখলে মানিক হয়তো সফল হননি, তিনি ময়নাদ্বীপকে দেখিয়েছিলেন কুবেরের চোখে, যেখানে হোসেন মিয়া সামন্তপ্রভু।
আবার হয়তো তিনি সফল, প্রাণহীনের মাঝেও প্রাণের সূচনারেখা তিনি দেখিয়েছেন। দেখিয়েছেন ব্যক্তিপ্রচেষ্টা সভ্যতা গড়ে তুলতে পারে না, কিন্তু শুরুর বাঁশি তো বাজাতেই পারে। ধনঞ্জয়, গনেশ, আমিনুদ্দি, রাসু, পীতম মাঝি, বশির, এনায়েত এদের কেউ কেউ, আবার এদের বাইরেও অনেকে ময়নাদ্বীপে গিয়েছিল। কেউ কেউ পালিয়েছেন, আবার মানিক নিজেই ময়নাদ্বীপ থেকে বের করে দিয়েছেন অনেককে।
প্রজেক্ট স্বপ্ননগরের গদ্যটি লিখেছেন জেলা প্রশাসক স্যার। স্বপ্ননগর নামটিও তার দেয়া। আমরা কেউ কেউ তার দুই-একটি চরিত্র, যাদের স্যারের গল্পের প্লটের প্রয়োজনে কিছু কিছু ভূমিকা আছে। মানিকের গল্পে হোসেন মিয়া, কুবেরের পরিবর্তে রহিম মিয়া বা যে কাউকে বসালেও গল্পের ক্ষতিবৃদ্ধি হতো না। আমাদের ক্ষেত্রেও তা-ই। ঔপন্যাসিক যেভাবে চাইবেন সেভাবেই এগোবে তার প্লটের চরিত্রগুলো।
আমার ধারণা, এই স্বপ্ননগর সফল হবে, হয়তো কখনও ভাঙবে আবার সময় তার নিজ প্রয়োজনেই অনেক দূর এগিয়ে নেবে। ইচ্ছে আছে, যদি বেঁচে থাকি, যেখানেই থাকি দুই-চার বছর পর পর হয়তো লুকিয়ে দেখে যাব। হিসাব করে দেখব, কতটুকু শোরগোল বেড়েছে স্বপ্ননগরে, কয়টি নতুন প্রাণের সঞ্চার হয়েছে, আর স্বপ্ননগরের ওই গোরস্থানের স্থায়ী বাসিন্দাই বা হয়েছে কজন?
লেখক: উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, আলফাডাঙ্গা, ফরিদপুর
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে ব্যাটারী চালিত অটোরিক্সা ও মাইক্রোবাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে ২ জন নিহত হয়েছে।
সোমবার রাতে উপজেলার তারাবো এলাকায় এ দূর্ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন, তারাবো সুলতানবাগ এলাকার দৈনিক ইনকিলাব পত্রিকার সাবেক রূপগঞ্জ প্রতিনিধি মরহুম আবুল হাসান আসিফের ছেলে শাহরিয়ার হাসান আকাশ (২৯) ও অটোরিক্সা চালক অজ্ঞাত (৩৫)।
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয়রা জানান, সোমবার রাতে তারাবো বিশ্বরোড এলাকা থেকে অটোরিক্সা যোগে তারাবো সুলতানবাগ এলাকার বাড়িতে ফিরছিলেন শাহরিয়ার হাসান আকাশ (২৯) ও তার বন্ধু সায়মন (২৯), তামিম সরকার (২৯)। পথিমধ্যে সাইফিং ফ্যাক্টরীর সামনে একটি হাইয়েস মাইক্রোবাসের সাথে অটোরিক্সাটির মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষে অটোরিক্সাটি দুমড়েমুচড়ে যায়।
এ সময় ঘটনাস্থলেই নিহত হয় অটোরিক্সা চালক অজ্ঞাত (৩৫) এবং আহত হয় অটোরিক্সার যাত্রী শাহরিয়ার হাসান আকাশ (২৯) ও তার বন্ধু সায়মন (২৯), তামিম সরকার (২৯)। তাদের মধ্যে শাহরিয়ার হাসান আকাশ ও তার বন্ধু তামিম সরকারকে গুরুত্বর আহত অবস্থায়
স্থানীয়রা উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা শাহরিয়ার হাসান আকাশকে মৃত ঘোষনা করেন।
এ ব্যাপারে রূপগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) লিয়াকত আলী বলেন, দূর্ঘটনার পর হাইয়েস মাইক্রোবাসের চালক মাইক্রোবাসটি নিয়ে পালিয়ে যাওয়ায় তাকে গ্রেফতার করা সম্ভব হয় নি।
শেরপুরের ঝিনাইগাতীর দুটি গুচ্ছগ্রাম - গোমড়া ও কান্দুলীর বাসিন্দারা দীর্ঘদিন ধরে কুরবানীর মাংস থেকে বঞ্চিত ছিল। গোমড়া গুচ্ছগ্রামের বাসিন্দারা এক যুগ এবং কান্দুলী গুচ্ছগ্রামের বাসিন্দারা গত ৬ বছর ধরে কুরবানীর মাংস পায়নি। তবে এবার ‘দৈনিক বাংলাদেশের খবর’ পত্রিকায় বিষয়টি প্রকাশিত হওয়ার পর স্থানীয় সংগঠন ও দাতাদের উদ্যোগে এই দুটি গ্রামের মানুষ কোরবানির মাংস পেয়েছে।
গোমড়া গুচ্ছগ্রামের স্বামী পরিত্যাক্তা আঙ্গুরী বেগম (৭০) বলেন, ‘১২ বছর ধরে আমরা কোরবানির মাংসের স্বাদ পাইনি। এবার রক্তসৈনিক ফাউন্ডেশন আমাদের জন্য গরু দিয়েছে। আল্লাহ তাদের ভালো রাখুন।’
গুচ্ছগ্রামের সাধারণ সম্পাদক আলী বলেন, ‘আমাদের এলাকার অনেক গরিব মানুষ আছে যারা কোরবানি দিতে পারে না। এই উদ্যোগ আমাদের জন্য আশীর্বাদ স্বরূপ। আমরা সংগঠনটির কাছে কৃতজ্ঞ।’
ঝিনাইগাতী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আশরাফুল আলম রাসেল বলেন, ‘গুচ্ছগ্রামের দুঃস্থ মানুষেরা দীর্ঘদিন ধরে কোরবানির মাংস থেকে বঞ্চিত ছিল। স্থানীয় সংগঠন ও দাতাদের এই উদ্যোগ প্রশংসনীয়। আমরা সামাজিক সংগঠনগুলোর সঙ্গে কাজ করে সবাইকে কোরবানির মাংসের আওতায় আনার চেষ্টা করব। আমাদের বিভাগীয় কমিশনার স্যারও গোসত পাঠাচ্ছেন। যদি কোনো অসহায় মানুষ কোরবানির মাংস না পেয়ে থাকে, আমরা নিশ্চিত করব যেন তারা গোসত পায়।’
পত্রিকায় খবর প্রকাশের পর রক্তসৈনিক বাংলাদেশ ফাউন্ডেশন সংগঠনটি বিষয়টি নজরে নিয়ে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেয়। সংগঠনের সভাপতি রাজিয়া সামাদ ডালিয়া গোমড়া গুচ্ছগ্রামের বাসিন্দাদের জন্য একটি গরু কোরবানির ব্যবস্থা করেন।
অন্যদিকে কান্দুলী গুচ্ছগ্রামে শাহ অলি উল্লাহ ইসলাম সেন্টার বাংলাদেশের তত্ত্বাবধানে এবং অরফান শেল্টার ফাউন্ডেশন, যুক্তরাজ্যের আর্থিক সহায়তায় একটি গরু কোরবানি দেওয়া হয়। স্থানীয়রা জানান, গত ৬ বছর ধরে এই গ্রামে কুরবানীর মাংস বণ্টন হয়নি। এবার দাতাদের সহযোগিতায় গ্রামবাসী মাংস পেয়ে খুশি।
এই উদ্যোগের মাধ্যমে ঝিনাইগাতীর দুটি গুচ্ছগ্রামের বাসিন্দারা দীর্ঘদিন পর কুরবানীর মাংস পেয়ে আনন্দিত। স্থানীয়রা আশা প্রকাশ করেছেন, ভবিষ্যতে আর কেউ যেন কুরবানীর মাংস থেকে বঞ্চিত না হয়।
ভারতের বিভিন্ন স্থানে করোনা ভাইরাসের সংক্রমন দেখা দেয়ায় বেনাপোল চেকপোষ্টে সতর্কতা জারি করা হয়েছে। স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হচ্ছে ভারত ফেরত পাসপোর্ট যাচ্ছিদের। জেনেটিক সিকুয়েন্স পরীক্ষার মাধ্যমে জানা গেছে, এসব স্থানে ওমিক্রন ধরনের (variant) LF.7, XFG, JN.I and NB.1.8.1 উপধরনের (Sub variant), কারণে সংক্রমণ বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রতিবেশী দেশসমুহে সংক্রমণ বাড়লে বাংলাদেশেও সেই সংক্রমণের আশঙ্কা থাকে। এই সংক্রমণ এড়াতে দেশের সকল নৌ, স্থল ও আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর সমুহে স্ক্রিনিংসহ স্বাস্থ্য সুরক্ষা বিধি মানার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। চলতি মাসের ৪ জুন রোগ নিয়ন্ত্রণ স্বাস্থ্য অধিদপ্তর মহাখালীর পরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. ফরহাদ হোসেন স্বাক্ষরিত এক আদেশ জারি করা হয়েছে।
এমতাবস্থায় ভারতসহ বিভিন্ন সংক্রমিত দেশ থেকে আগত সন্দেহজনক যাত্রীদের দেশের স্থল, নৌ বন্দর এবং বিমান বন্দরের ইমিগ্রেশন ও আইএইচআর হেলথ ডেস্কের সহায়তার বিষয়ে স্বাস্থ্য বার্তা প্রদান এবং স্বাস্থ্য পরীক্ষা নিবিড়ভাবে পরিচালনা করার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।
আজ রোববার সকাল ১১টার দিকে বেনাপোল চেকপোস্ট ইমিগ্রেশনে সরেজমিনে দেখা যায়, মেডিকেল ডেস্কে দায়িত্বে থাকা উপ-সহকারি কর্মকর্তাদের ভারত থেকে ফিরে আসা যাত্রীদের করোনার উপসর্গ আছে কিনা তা যাচাই-বাছাইসহ শরীরের তাপমাত্রা মাফতে দেখা গেছে।
ভারত ফেরত যাত্রী পরিতোষ মন্ডল জানান, দশদিন আগে চিকিৎসার জন্য ভারতে গিয়েছিলাম। আজ দেশে ফিরলাম। বাংলাদেশের মতো ভারতের কোথাও করোনা বা ওমিক্রনের পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেনি।
ভারত ফেরত যাত্রী সীমা রানি বলেন, একমাস চিকিৎসার পর আজ দেশে ফিরে আসলাম। ভারতের কোথাও নতুন করে করোনার প্রভাব ছড়িয়েছে শুনিনি। দেশে আসার পর দেখছি করোনার পরীক্ষা করছে।
বেনাপোল ইমিগ্রেশনের উপ-সহকারি মেডিকেল অফিসার আব্দুল মজিদ বলেন, ভারতে জেনেটিক সিকুয়েন্স পরীক্ষার মাধ্যমে জানা গেছে ভারতের কিছু কিছু স্থানে ওমিক্রন ধরনের (variant) LF.7, XFG, JN.I and NB.1.8.1 উপধরন (Sub variant) সংক্রমণ বৃদ্ধি পেয়েছে। দেশে করোনার এ ধরনটি যাতে ছড়াতে না পারে সেজন্য স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে সতর্কতার জন্য ভারত ফেরত প্রত্যেক যাত্রীকে আমরা স্বাস্থ্য পরীক্ষা করছি। আমাদেরকে পরিচালক স্যার নির্দেশনা দিয়েছেন যদি কারও শরীরে করোনা বা ওমিক্রনের উপধারার উপসর্গ পাওয়া যায় তাহলে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আইসোলেশন করার পরামর্শ দিয়েছেন।
ভারতের বিভিন্ন স্থানে করোনা ভাইরাসের সংক্রমন দেখা দেয়ায় বেনাপোল চেকপোষ্টে সতর্কতা জারি করা হয়েছে। স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হচ্ছে ভারত ফেরত পাসপোর্ট যাচ্ছিদের। জেনেটিক সিকুয়েন্স পরীক্ষার মাধ্যমে জানা গেছে, এসব স্থানে ওমিক্রন ধরনের (variant) LF.7, XFG, JN.I and NB.1.8.1 উপধরনের (Sub variant), কারণে সংক্রমণ বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রতিবেশী দেশসমুহে সংক্রমণ বাড়লে বাংলাদেশেও সেই সংক্রমণের আশঙ্কা থাকে। এই সংক্রমণ এড়াতে দেশের সকল নৌ, স্থল ও আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর সমুহে স্ক্রিনিংসহ স্বাস্থ্য সুরক্ষা বিধি মানার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। চলতি মাসের ৪ জুন রোগ নিয়ন্ত্রণ স্বাস্থ্য অধিদপ্তর মহাখালীর পরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. ফরহাদ হোসেন স্বাক্ষরিত এক আদেশ জারি করা হয়েছে।
এমতাবস্থায় ভারতসহ বিভিন্ন সংক্রমিত দেশ থেকে আগত সন্দেহজনক যাত্রীদের দেশের স্থল, নৌ বন্দর এবং বিমান বন্দরের ইমিগ্রেশন ও আইএইচআর হেলথ ডেস্কের সহায়তার বিষয়ে স্বাস্থ্য বার্তা প্রদান এবং স্বাস্থ্য পরীক্ষা নিবিড়ভাবে পরিচালনা করার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।
আজ রোববার সকাল ১১টার দিকে বেনাপোল চেকপোস্ট ইমিগ্রেশনে সরেজমিনে দেখা যায়, মেডিকেল ডেস্কে দায়িত্বে থাকা উপ-সহকারি কর্মকর্তাদের ভারত থেকে ফিরে আসা যাত্রীদের করোনার উপসর্গ আছে কিনা তা যাচাই-বাছাইসহ শরীরের তাপমাত্রা মাফতে দেখা গেছে।
ভারত ফেরত যাত্রী পরিতোষ মন্ডল জানান, দশদিন আগে চিকিৎসার জন্য ভারতে গিয়েছিলাম। আজ দেশে ফিরলাম। বাংলাদেশের মতো ভারতের কোথাও করোনা বা ওমিক্রনের পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেনি।
ভারত ফেরত যাত্রী সীমা রানি বলেন, একমাস চিকিৎসার পর আজ দেশে ফিরে আসলাম। ভারতের কোথাও নতুন করে করোনার প্রভাব ছড়িয়েছে শুনিনি। দেশে আসার পর দেখছি করোনার পরীক্ষা করছে।
বেনাপোল ইমিগ্রেশনের উপ-সহকারি মেডিকেল অফিসার আব্দুল মজিদ বলেন, ভারতে জেনেটিক সিকুয়েন্স পরীক্ষার মাধ্যমে জানা গেছে ভারতের কিছু কিছু স্থানে ওমিক্রন ধরনের (variant) LF.7, XFG, JN.I and NB.1.8.1 উপধরন (Sub variant) সংক্রমণ বৃদ্ধি পেয়েছে। দেশে করোনার এ ধরনটি যাতে ছড়াতে না পারে সেজন্য স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে সতর্কতার জন্য ভারত ফেরত প্রত্যেক যাত্রীকে আমরা স্বাস্থ্য পরীক্ষা করছি। আমাদেরকে পরিচালক স্যার নির্দেশনা দিয়েছেন যদি কারও শরীরে করোনা বা ওমিক্রনের উপধারার উপসর্গ পাওয়া যায় তাহলে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আইসোলেশন করার পরামর্শ দিয়েছেন।
কোরবানির ঈদের আগ মুহূর্তে চট্টগ্রাম নগরীতে জমে উঠেছে পশুর হাট। এবার চাহিদা বেশি ছোট ও মাঝারি আকারের গরুর।
টানা ছয়দিন বৃষ্টির পর বুধবার সকাল থেকে তা কিছুটা কমায় হাটমুখো হয়েছেন ক্রেতারা। তবে এর মাঝেও থেমে থেমে চলা গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি ভোগাচ্ছে ক্রেতা-বিক্রেতাদের।
কাদা আর গরুর হাটের আবর্জনা মাড়িয়ে হাটগুলোতে চলছে দরদাম। জমে উঠেছে বেচাকেনাও। ৮০ হাজার থেকে দেড় লাখ টাকার মধ্যে ছোট ও মাঝারি আকারের গরুর চাহিদা এবার সবচেয়ে বেশি।
বুধবার বিকালে নগরীর বিবিরহাট গরুর বাজারে ঘুরে দেখা গেছে, এই হাটে বেশিরভাগ গরু এসেছে উত্তরের বিভিন্ন জেলা থেকে। পাশাপাশি চট্টগ্রামের বিভিন্ন উপজেলা থেকেও গরু নিয়ে হাটে এসেছেন ব্যাপারিরা।
জামালপুর থেকে তিনদিন আগে এই হাটে আসা বিক্রেতা সালাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “২২টা গরু নিয়ে আসছি। এখন পর্যন্ত চাইরটা বেচছি। লোকজন দাম বলে কম।
“দুই লাখ ২০ হাজার টাকা একটা গরুর দাম চাইলাম। কাস্টমাররা ১ লাখ ৪০ হাজার পর্যন্ত বলছে। এই দামে গরু বেচা সম্ভব না। আরেকটু বাড়তি পেলে বিক্রি করতাম।”
তবে পাল্টা অভিযোগ ক্রেতাদের; বলছেন- বিক্রেতারা দাম ছাড়ছে না; ঈদের আগের দুই দিনের বাজার পরিস্থিতি দেখার অপেক্ষায় বিক্রেতারা।
এই হাট থেকে দেড় লাখ টাকায় একটি গরু কিনে ফেরার পথে নগরীর কাপাসগোলা এলাকার বাসিন্দা তরিকুল ইসলাম বুধবার বলেন, “গরুর দাম গতবারের তুলনায় কিছুটা বেড়েছে। তবে খুব বেশি না।
“বাজারে অনেক গরু আছে। আজকে একটা কিনলাম। কালকে বাজার দেখে আরেকটা কিনব।”
বুধবার নগরীর আতুরার ডিপো থেকে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে বিবিরহাটে গরু কিনতে আসা আকবর হোসেন বলেন, “একটার সময় হাটে আসছি। ৩ ঘণ্টা ঘুরে বেশ কয়েকটা গরু দেখলাম। বাজারে গরু আছে পর্যাপ্ত। কিন্তু ব্যাপারিরা দাম ছাড়ছে না।
“তারা মনে করছে কাল-পরশু দুইদিন সময় হাতে আছে। আমরাও অপেক্ষা করব। কালকে দেখেশুনে কিনব।”
বুধবার দুপুরে গিয়ে নগরীর সবচেয়ে বড় কোরবানি পশুর হাট সাগরিকা গরুর বাজারেও প্রায় একই চিত্র দেখা গেছে। সেখানে কুষ্টিয়া, ফরিদপুর, পাবনা, সিরাজগঞ্জ, চাঁপাইনবাবগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে বড় আকারের গরু নিয়ে এসেছে ব্যাপারিরা।
সাগরিকা গরুর বাজারে কুষ্টিয়া থেকে ৪৫টি গরু নিয়ে আসা সিরাজুল আলম বলেন, “চারদিন হলো আসছি। আমাদের বেশিরভাগই বড় গরু। বৃষ্টি বেশি থাকায় এতদিন হাটে লোকজন আসেনি।
“কালকে আর আজকে মিলে মাঝারি সাইজের ৫টা গরু বেচছি। বড় গরুর পার্টি আজকে কেবল আসা শুরু করছে। তারা দর দেখতেছে। কালকে থেকে হয়ত কিনবে।”
সাগরিকা গরু বাজারের হাসিল গ্রহণকারী সাজ্জাদ হোসেন বলেন, “হাটে প্রচুর গরু আছে। এতদিন আবহাওয়া খারাপ থাকায় লোকজন খুব একটা আসেনি। আজকে আসতেছে। বেচাকেনাও হচ্ছে। শহরের লোকজন কোরবানের ২-৩ দিন আগেই গরু কেনে।
“আমাদের হাটে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা আছে। গরুর স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য মেডিকেল টিমও আছে। এখন পর্যন্ত সব ভালোভাবে চলছে।”
বিবিরহাট গরু বাজারের নিরাপত্তা নিশ্চিতে বুধবার বিকালে একটি দলকে টহল দিতে দেখা গেছে। তারা ক্রেতা-বিক্রেতাদের সঙ্গে আলাপ করেন। হাটের বাইরেও সেনা সদস্যদের উপস্থিতি দেখা যায়।
এ হাটে গরুর চিকিৎসা দিতে চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ও অ্যানিমেল সাইন্সেস বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষার্থীর একটি দল কাজ করছে।
এই দলের সদস্য সুব্রমনিয়ম বড়ুয়া বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, দূর-দূরান্ত থেকে গরুগুলো দীর্ঘ সময় ধরে গাড়িতে করে এখানে আনা হয়। পাশাপাশি গত কয়েকদিন টানা বৃষ্টি পড়েছে।
“একারণে কিছু কিছু গরুর শরীরে তাপমাত্রা বৃদ্ধি ও ঠান্ডাজনিত সমস্যা দেখা যাচ্ছে। এরকম গরু চিহ্নিত হলে জ্বরের ওষুধ ও অ্যান্টি হিস্টামিন ইনজেকশন দেওয়া হচ্ছে।”
চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে ২০টি গরু নিয়ে গত ২৯ মে বিবিরহাটে এসেছেন আবদুস সামাদ ও তার সঙ্গীরা। সেখানে গরুগুলোর পাশেই খালি জায়গায় নিজেদের জন্য খাবার রান্নার কাজও চলছিল।
আবদুস সামাদ বলেন, “এতদিন বৃষ্টিতে খুব কষ্ট পাইছি। কালকে থেকে বিক্রি শুরু হইছে। আজ পর্যন্ত ১১টা গরু বিক্রি করছি। বাকি গরু আশা করি, কালকের মধ্যে বিক্রি হয়ে যাবে।”
হাটের বাইরে গরু সাজানোর গলার মালা বিক্রি বাড়ায় খুশি বিক্রেতা মো. শফিও খুশি বেচাকেনা জমে ওঠায়। দেড়শ থেকে তিনশ টাকার মধ্যে মালা বিক্রি করছেন তিনি।
গরুর সাজসজ্জা সামগ্রী বিক্রেতা মো. শফি বলেন, “গতকাল প্রায় ১০ হাজার টাকার মাল বেচেছি। আজকেও বিক্রি ভালো। বৃষ্টির কারণে সমস্যা হচ্ছে। বৃষ্টি বাড়লে মানুষ হাটে কম আসে।”
বিবিরহাট বাজার লাগোয়া বাইরের গলিতে বিক্রি হচ্ছে ছাগল। সাড়ে ১৯ হাজার টাকায় একটি ছাগল কেনা হাটহাজারী উপজেলার বাসিন্দা মো. কামাল বলেন, “বাড়ি যাবার পথে ছাগল কিনে নিলাম। গরু কিনব গ্রামে খামারির বাড়ি থেকে।”
জেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের হিসাব অনুযায়ী, চট্টগ্রাম জেলায় এবার কোরবানির জন্য প্রস্তুত করা পশুর সংখ্যা মোট ৮ লাখ ৬০ হাজার ৮৬২টি। জেলায় এবার কোরবানির পশুর সম্ভাব্য চাহিদা ৮ লাখ ৯৬ হাজার ২৬৯টি। সে হিসাবে জেলায় এবার ৩৫ হাজার পশুর ঘাটতি আছে।
জানতে চাইলে চট্টগ্রামের জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. আলমগীর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “নগরীর হাটগুলোতে দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে ৪০ হাজারের বেশি গরু এসেছে আজকে পর্যন্ত। আরো আসতে পারে। কাজেই এবার গরুর স্বল্পতা হবে না।
“গত বছরের তুলনায় এবার গরুর দাম সামান্য বেড়েছে। এটা সহনীয় পর্যায়ে আছে। হাটগুলোতে বিক্রিও শুরু হয়েছে। হাটে আসা গরু-মহিষে তেমন কোনো রোগের প্রার্দুভাব দেখা যায়নি।”
প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের হিসাবে, ২০২৪ সালে জেলায় কোরবানি হয়েছিল ৮ লাখ ১৮ হাজার ৪৬৮টি পশু।
কুষ্টিয়া দৌলতপুর উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর ও ভেটেরিনারী হাসপাতালে উন্নত জাতের ঘাস চাষ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় খামারীকে সরকারি বরাদ্দকৃত অর্থের কম দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে।
তথ্যমতে, ২০২৪-২৫ অর্থ বছরে প্রাণিপুষ্টির উন্নয়নে উন্নত জাতের ঘাস চাষ সম্প্রসারণ ও লাগসই প্রযুক্তি হস্তান্তর ‘‘শীর্ষক” প্রকল্পেরে আওতায় দৌলতপুর উপজেলার ১৪ টি ইউনিয়ন থেকে প্রতি ইউনিয়নে ২জন করে নির্বাচিত ২৮ জন খামারীকে উচ্চ উৎপাদনশীল জাতের ঘাস চাষ প্রর্দশনী প্লট স্থাপন বাবদ জনপ্রতি ৫ হাজার টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। কিন্তু সরকারি এ বরাদ্দকৃত অর্থ উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা খামারীদের প্রদান করেন জনপ্রতি ৪৪০০ টাকা। এতে খামারিদের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।
রামকৃঞ্চপুর ইউনিয়নের সোনাতলা গ্রামের খামারী ময়না খাতুনের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, কত টাকা বরাদ্দ সেটা ঠিক জানিনা, তবে গত বছর ও এবছর ৪৪০০ টাকা করে মোট ৮৮০০ টাকা আমাকে দিয়েছে।
মরিচা ইউনিয়নের মাজদিয়াড় গ্রামের খামারী জোয়াদুর রহমানসহ একাধিক খামারীর সাথে কথা হলে তারা বলেন, আমাদের বরাদ্দ ৫০০০ টাকা থাকলেও বিভিন্ন খাত দেখিয়ে গত বছর ও এবছর ৪৪০০ টাকা করে ৮৮০০ টাকা সকলকে দিয়েছে। কেন কম দিলো সেটা আমরা জানিনা।
এবিষয়ে উপজেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের কমিউনিটি এক্সট্রেনশন এজেন্ট শাহারুল ইসলামের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি কিছু জানিনা স্যার যা বলেছে আমি তাই করেছি, আপনি স্যারের সাথে কথা বলেন।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিসার ডাঃ মোঃ মাহমুদুল ইসলাম খামারীদের প্রাপ্য অর্থ কম দেয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, অডিট ও মাঠ পর্যায়ে যাতায়াতের জন্য টাকা কম দেয়া হয়েছে। এসকল খরচ তো আমি পকেট থেকে দেবনা। তাই খামারীদের ৬০০ টাকা করে কম দেয়া হয়েছে। আপনি অফিসে আসেন কথা বলি।
ভারতের মেঘালয় ও আসামের পাহাড়ি অঞ্চল থেকে নেমে আসা উজানি ঢল ও টানা বৃষ্টির কারণে সিলেটের প্রধান দুটি নদী সুরমা ও কুশিয়ারার পানি হঠাৎ বেড়ে গেছে। এতে করে জেলার নিম্নাঞ্চলগুলোতে নতুন করে বন্যার শঙ্কা তৈরি হয়েছে।
গতকাল সোমবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত নদী দুটির চারটি পয়েন্টে বিপৎসীমার উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হতে দেখা গেছে। সিলেট পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্রে জানা গেছে, সুরমা নদীর কানাইঘাট পয়েন্ট এবং কুশিয়ারা নদীর অমলশিদ, শেওলা ও ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে।
গতকাল সাড়ে ১২টা পর্যন্ত পানি উন্নয়ন বোর্ডের দেওয়া তথ্যে জানা যায়, কানাইঘাটে সুরমা নদীর পানি বইছে ১৩ দশমিক ৬২ মিটার উচ্চতায়। যেখানে বিপৎসীমা হচ্ছে ১২ দশমিক ৭৫ মিটার। অমলশিদে কুশিয়ারা নদীর পানি বইছে ১৭ দশমিক ২৫ মিটার উচ্চতায়, যেখানে বিপৎসীমা ১৫ দশমিক ৪০ মিটার। শেওলায় কুশিয়ারা নদীর পানি ১৩ দশমিক ৫১ মিটার উচ্চতায় বইছে, যেখানে বিপৎসীমার চেয়ে ০ দশমিক ৪৬ মিটার ওপরে রয়েছে। ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টে কুশিয়ারার পানি বইছে ৯ দশমিক ৭৯ মিটার উচ্চতায় যা বিপৎসীমার চেয়ে ০ দশমিক ৩৪ মিটার বেশি।
পাউবো কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ভারতের পাহাড়ি এলাকা থেকে নেমে আসা অতিরিক্ত পানি এবং টানা বৃষ্টিপাতের কারণে নদনদীগুলোর পানি দ্রুত বাড়ছে। বিশেষ করে উজানের ঢলের প্রভাব বেশি পড়ছে সীমান্তবর্তী পয়েন্টগুলোতে।
এদিকে, জেলার ধলাই নদীর পানিও বাড়তে শুরু করেছে। তবে কিছুটা স্বস্তির খবর হলো—সারি, ডাউকি ও সারি-গোয়াইন নদ-নদীর পানি কমতির দিকে আছে।
জকিগঞ্জ উপজেলার কসকনকপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা আব্দুল হান্নান বলেন, প্রতিবারের মতো এবারও ভারতের দিক থেকে হঠাৎ করে ঢল নামায় কুশিয়ারা নদীর পানি খুব দ্রুত বাড়ছে। নদীর পাড়ঘেঁষে অনেক ঘরবাড়ি আছে, এখনই পানি না নামলে কয়েকদিনের মধ্যেই প্লাবিত হওয়ার ভয় আছে। আগে থেকে যদি সঠিক ব্যবস্থা না নেওয়া হয়, তাহলে অনেক ক্ষতি হয়ে যাবে।
এদিকে সিলেট জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোকে সতর্ক রাখা হয়েছে। নিচু এলাকা ও প্লাবনপ্রবণ অঞ্চলের বাসিন্দাদের প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে।
সিলেটের জেলা প্রশাসক শের মাহবুব মুরাদ বলেন, বন্যা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ ও মোকাবিলায় আমরা সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে রয়েছি। প্রত্যন্ত ও প্লাবনপ্রবণ এলাকার বাসিন্দাদের সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। প্রয়োজনে তাদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়ার জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি রাখা হয়েছে।
মন্তব্য